Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ইমরান কি আসলেই ‘তালেবান খান’ বা ‘পাকিস্তানি ট্রাম্প’?

ছিলেন পাকিস্তানের কিংবদন্তী ক্রিকেটার, বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। এখন হতে চলেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। খেলোয়াড় ও রাজনৈতিক জীবন দুই ক্ষেত্রেই জনপ্রিয়তা পেলেও পার্থক্যও আছে দুই জীবনে। প্রথম জীবনে ইমরান ছিলেন মোটামুটি সর্বস্বীকৃত-সজ্জন। কিন্তু রাজনীতিবিদ ইমরান ততটাও ‘সর্বজনশ্রদ্ধেয়’ নন। ইমরান যদিও একবার তালেবানকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ বলেছিলেন, তা সত্ত্বেও নিন্দুকের ‘তালেবান খান’ তকমা থেকে যেন তার মুক্তি মিলছে না। উগ্রপন্থীদের সমঝে চলা বা সেনাবাহিনীর আজ্ঞাবাহী হওয়ার অভিযোগ তো আছেই। সেই সঙ্গে ইমরানের বিজয়কে ট্রাম্পের সাথে তুলনা করে কেউ কেউ ইমরানকে বলছেন ‘পাকিস্তানি ট্রাম্প’। নিন্দুকরা কেন এমন কঠোর এই নেতার প্রতি? উত্তর খোঁজা হবে আজকের লেখায়। 

২০১৩ সালে মার্কিন বাহিনীর ড্রোন হামলায় নিহত হন পাকিস্তানি তালেবান কম্যান্ডার ওয়ালি-উর-রেহমান। তখন ইমরান খান এক টুইট বার্তায় বলেছিলেন-

“ড্রোন হামলায় শান্তিকামী নেতা ওয়ালি-উর-রেহমানকে হত্যার মাধ্যমে প্রতিশোধ যুদ্ধ ও মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হলো যোদ্ধাদের। একদমই মানা যাচ্ছে না।”

মে-তে নির্বাচনে জিতে সবেই ক্ষমতায় এসেছিলেন নওয়াজ শরীফ। তিনিসহ পাকিস্তানের রাজনীতিক পর্যায়ের শীর্ষ ব্যক্তিবর্গ চাইছিলেন তালেবানের সাথে শান্তি-আলোচনার মাধ্যমে টেবিলেই সব সমাধা হোক। উপজাতি এলাকায় নতুন করে সহিংসতা যে করেই হোক এড়াতে চাইছিলেন তারা। এসবের মধ্যেই আবারও মার্কিন ড্রোন হামলা। নভেম্বরে নিহত হলেন পাকিস্তান তালেবানের হাকিমুল্লাহ মেহসুদ।

উল্লেখ্য, সরকারের সাথে শান্তি আলোচনায় যেতে একেবারেই নারাজ ছিলেন তালেবান নেতা মোল্লা ফজলুল্লাহ (নামটি মাথায় রাখুন)। তার লোকেরাই হামলা চালিয়েছিলো কিশোরী মালালা ইউসুফজাইয়ের ওপর। অন্যদিকে তখন অবধি এই হাকিমুল্লাহ মেহসুদই সরকারের সাথে অস্ত্রবিরতি চুক্তির ব্যাপারে নমনীয় ছিলেন। অথচ মেহসুদকে হত্যা করা হলো। এবারও আমেরিকার তীব্র সমালোচনা করলেন ইমরান।

তালেবান নেতা সামি-উল-হকের সাথে আলোচনায় ইমরান; Image Source: Shiite News

উত্তর ওয়াজিরিস্তানসহ খাইবার পাখতুনখোয়া ও উপজাতীয় বেল্টে অব্যহত মার্কিন ড্রোন হামলার কট্টর সমালোচকে পরিণত হন তিনি। নভেম্বরে খাইবার পাখতুনখোয়ার আফগান সীমান্তে ন্যাটো ঘাঁটিমুখী গ্যাস-পানি সরবরাহ লাইন বন্ধ করে দেয় তার দলের সরকার। ইমরানের যুক্তি ছিলো, এভাবে পাইকারি দরে হত্যা-হামলা করে মার্কিন-বিরোধী ভাবাবেগ তৈরি ছাড়া কিচ্ছু হবে না। পাকিস্তান সেনাবাহিনীসহ অনেক সাধারণ পাকিস্তানির মতে, এই তালেবান বিদ্রোহীদের থামাতে বল প্রয়োগের কোনো বিকল্প ছিলো না বা নেই। কিন্তু ইমরান গেরিলাযুদ্ধে কোনো সমাধান দেখেননি। তার বক্তব্য ছিলো, ১৯ শতকে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীই যেখানে উপজাতি এলাকায় সুবিধে করতে পারেনি, আমাদেরও পারার কারণ নেই, কারণ গেরিলাযুদ্ধে তালেবানরা ‘মাস্টার’!  তবে সেসময়ের ব্রিটিশ বাহিনীর সাথে বর্তমান সময়ের পাক-মার্কিন বাহিনীর সক্ষমতা ও যুদ্ধপ্রযুক্তির পার্থক্য বোধ হয় মাথায় রাখেননি ইমরান।

ইমরানের এ ড্রোন-হামলা বিরোধিতা শুরু হয়েছিলো আরো আগে থেকেই। তার দাবি অনুযায়ী শুরুটা ২০০৪ সালে। ২০১২ সালের অক্টোবরে ইমরান খান ইসলামাবাদ থেকে তালেবান-অধ্যুষিত দক্ষিণ-ওয়াজিরিস্তানে ‘শান্তির সপক্ষে যাত্রা’র ডাক দেন। সেখানে যোগ দেন তার দলের কর্মী, মার্কিন শান্তিকামী এক্টিভিস্টদের দল ‘পিঙ্ক কোড’, ব্রিটিশ আইনজীবী ক্লাইভ স্মিথসহ অনেকে। এই ‘শান্তি-যাত্রা’র বিরোধিতা করেছিলো তালেবান। ইমরানের মার্কিন-হামলা বিরোধিতাকে তারা রাজনৈতিক স্টান্টবাজি হিসেবে আখ্যা দেয়!

সে সময়েই মার্কিন দূতাবাস থেকে চাউর হয়, আত্মঘাতী বোমা হামলা হতে চলেছে সে যাত্রায়। তখন ব্রিটিশ গণমাধ্যম টেলিগ্রাফকে তালেবান নেতৃত্ব জানায়, “যদিও বা এমন শান্তিযাত্রা আমরা আশা করেছিলাম ধর্মীয় নেতাদের থেকে, তবু ইমরান যেহেতু করছেন, তাই তাকে সাধুবাদ জানাই”। সেই সঙ্গে তাদের তরফ থেকে ইমরানকে সবরকম নিরাপত্তার আশ্বাস দেয় তালেবান। যা-ই হোক, সব শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়েছিলো।

সেই শান্তি-যাত্রায় ইমরান; Image Source: CNN

ফ্ল্যাশব্যাক পেরিয়ে আবারও আসা যাক ঘটনাক্রমে। মাথায় রাখতে বলেছিলাম মালালার ওপর হামলাকারীদের নেতা ও তালেবান আমির মোল্লা ফজলুল্লাহর নাম। আগেই বলা হয়েছিলো, শান্তি আলোচনার বিরোধী ছিলেন তিনি। সেই ফজলুল্লাহর অনুমোদনেই ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সরকার পক্ষের সাথে আলোচনার জন্য ৫ জন ‘মধ্যস্থতাকারী’র নাম ঘোষণা করে তালেবান। তালিকায় ৩ জন ধর্মীয় নেতার সঙ্গে ছিলেন একজন জামাত-ই-ইসলামীর নেতা ও বিস্ময়করভাবে ইমরান খান। দেড় দিন বাদে অবশ্য পার্টির পক্ষ থেকে বিবৃতি আসে, তালেবানের প্রতিনিধি হচ্ছেন না ইমরান। যদিও পার্টির পক্ষ থেকে তালেবানের এ প্রস্তাবকে তারিফ করা হয়েছিলো। তালেবানের প্রতিনিধি হোন বা না হোন, আস্থার জায়গাটা যে ইমরান ঠিকই পেয়েছেন, এ ঘটনায় তার প্রমাণ পেলো তালেবানপক্ষীয় ও বিরোধী উভয় শিবিরই।

ইসলামাবাদে শান্তি-আলোচনায় সরকার ও তালেবান পক্ষের দূতেরা; Image Source: Deutsche Welle

তালেবানদের শান্তি-আলোচনায় রাজি হওয়ায় যেন আত্ম-সাফাইয়ের সেরা উপলক্ষ পেলেন ইমরান খান। মার্চ মাসে বললেন, তাকে ‘তালেবান খান’ বলাটা ভারত-মার্কিন লবির প্রোপাগান্ডা ছাড়া কিছুই নয়। তালেবানরা কেবল মার্কিন ড্রোন হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবেই সহিংস হচ্ছে বলে অভিমত তার। তিনি বলেন

“শরিয়াহ আইন প্রতিষ্ঠার জন্যই তালেবান সন্ত্রাস চালাচ্ছে বলে যারা গান ধরেছিলো, পাকিস্তানি সংবিধান মেনে আলোচনায় বসতে চেয়ে তাদের মোক্ষম জবাব দিয়েছে তালেবান।”

ইমরান খানের বক্তব্য অনুযায়ী, তালেবানদের নাকি একটাই চাওয়া, পাকিস্তান তালেবানের বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন যুদ্ধ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করুক। তবে পাকিস্তান এই দাবি মেনে নিলে তালেবান যে শরিয়াহ আইন প্রতিষ্ঠাসহ অন্যান্য বুনিয়াদি দাবি আর করবে না, সে ব্যাপারে ইমরান কীভাবে নিশ্চিত, তা-ও প্রশ্নসাপেক্ষ।

২০১৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ইমরান প্রথমবারের মতো বলেছিলেন, পাকিস্তানি তালেবানদেরও দেশটিতে অফিস খুলতে দেয়ার অনুমতি দেয়া উচিত। এমনকি টেলিভিশন-রেডিওতেও পূর্বশর্ত ছাড়া তাদের বলবার সুযোগ দেয়া উচিত। তাঁর যুক্তি ছিলো, আমেরিকা যদি আফগান তালেবানকে কাতারে অফিস খুলে দিতে পারে, তো পাকিস্তান তালেবানও কেন বঞ্চিত থাকবে! যদিও পাদটীকা হিসেবে তিনি এটাও জুড়ে দিয়েছিলেন, তালেবান কেউ সংবিধান অবজ্ঞাকারী হলে সেক্ষেত্রে কোনো ছাড় নয়। পরের বছর মার্চে ইমরানের দলের প্রভাবশালী নেতা ও খাইবার পাখতুনখোয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী শওকত ইউসুফজাই জানালেন, তাঁর দল নাকি সবসময়ই প্রদেশটির রাজধানী পেশোয়ারে তালেবানের অফিস খোলা সমর্থন করে এসেছে। অর্থাৎ ড্রোন হামলার নিন্দার বাইরেও তালেবানকে বাড়তি খাতিরদারিও যেন করছিলো ইমরান খানের দল।

দারুল উলুম হক্কানিয়া; Image Source: Dawn

এ বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে পেশোয়ারে অবস্থিত সামি-উল-হকের মাদরাসা ‘দারুল উলুম হক্কানিয়া’তে মোটা অঙ্কের অনুদান দেয় ইমরান খানের দল পিটিআই। সব মিলিয়ে অঙ্কটা প্রায় ৫৮ কোটি পাকিস্তানি রুপি। উল্লেখ্য, এই সামি-উল-হকের পরিচিতি ‘তালেবানদের পিতা’ হিসেবে! সমসাময়িককালে বিবিসি হার্ডটকে ইমরান খান তালেবান এলাকার বিচারসালিশি পদ্ধতিরও সাফাই গান।  

নির্বাচনের মাত্র ২২ দিন আগে ৩ জুলাই বেলুচিস্তানে এক সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন ৪৯ জন। যদিও আইএস এর দায় স্বীকার করে, তারপরও ইমরান এ ঘটনায় দায়ী করেন মুসলিম লীগকেই। তবে কি ইমরান কখনোই সন্ত্রাসবাদের জন্য উগ্রপন্থী বা তালেবানদের দায়ী করেননি? করেছেন। ২০১৬ সালে জুলাইতে আলজাজিরা সাংবাদিক মেহদি হাসানকে দেওয়া এক লাইভ সাক্ষাৎকারে ইমরান তালেবানকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন-

“যারাই নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করবে, তারাই সন্ত্রাসী।”

তাকে ‘তালেবান খান’ তকমা দেওয়ার সমালোচনা করে তিনি একে ‘ননসেন্স’ আখ্যা দেন।

জুলাইতেই পাকিস্তানের ব্লাশফেমি আইন ২৯৫(সি)-এর সাফাই গাইবার পাশাপাশি তিনি সেদেশের উদারবাদীদের ‘Westoxified’ বা ‘পশ্চিমা বিষাক্রান্ত’ বলে অভিহিত করেন। অভিযোগ আছে এই আইনটির ফলেই উগ্রপন্থীরা বিপক্ষ মতাদর্শের কাউকে নির্বিচারে হত্যায় আশকারা পাচ্ছে; ১৯৯০ থেকে এখন অবধি ৬৯টি হত্যাও তারই প্রমাণ। উল্লেখ্য, পাকিস্তানে এই আইনটির বিপক্ষে সর্বশেষ যে রাজনীতিক কথা বলেছিলেন, সেই সালমান তাসীরকে ২০১১ সালে হত্যা করা হয়। এরপর থেকে কোনো রাজনীতিবিদই সচরাচর এই আইনটির বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে ইসলামপন্থীদের চটাতে চান না।

সালমান তাসীর হত্যার প্রতিবাদে জনতা; Image Source: Amnesty International

জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে সামাজিক গণমাধ্যমের কল্যাণে ইমরানের দ্বিতীয় স্ত্রী রেহাম খানের লেখা একটি বইয়ের পিডিএফ ছড়িয়ে পড়ে। আত্মস্মৃতিমূলক বইটিতে সাবেক এ সংবাদপাঠিকা ইমরানকে কোকেন ও যৌনাসক্ত হিসেবে অভিহিত করেন। বইটিকে শুরু থেকেই মুসলিম লীগের চাল বলে আসছিলো পিটিআই ও তার সমর্থকেরা। তবে দুই দশক আগেও অক্সফোর্ড-গ্র্যাজুয়েট ইমরানের ‘প্লেবয়’ ইমেজ, লন্ডনের বিলাসী জীবন, ব্রিটিশ ধনীর-দুলালী জেমাইমা গোল্ডস্মিথকে বিয়ে করে আভিজাত্যের ষোলকলা পূর্ণ করবার ব্যাপারে সকলেই অবগত। সেই জায়গা থেকে হুট করে ইমরানের ধর্মপ্রবণ হয়ে যাওয়া, তালেবানের আস্থাভাজন হওয়া এবং দিনশেষে উগ্র ডানপন্থীদের সাথে জোট বেধে সরকার গঠন করতে যাওয়া খানিকটা বিস্ময়ের জন্মই দেয় বৈকি।

প্রথম স্ত্রী জেমাইমার সাথে ইমরান; Image Source: Telegraph

নির্বাচনে জিততে ইমরানের হাতিয়ার ছিলো তিনটি: আমেরিকা-বিরোধী ভাবাবেগ, পাকিস্তানী দুর্নীতিগ্রস্থ ও পরিবারতান্ত্রিক রাজনৈতিক কাঠামোর বিরোধিতা এবং ইসলামপন্থীদের তোষণ। পুরো ‘পপুলিস্ট স্ট্র্যাটেজি’ যাকে বলে। সেদিক থেকে ইমরানের মিল পাওয়া যায় ট্রাম্পের সাথে। ট্রাম্পও পপুলিজমের ব্যাকরণ মেনে মুসলিম-বিদ্বেষী ও অভিবাসন বিরোধী মার্কিন ভাবাবেগকে উসকে দিয়ে জনসমর্থন আদায় করেছিলেন। দুজনই রাজনীতিতে আসার আগেই গণমাধ্যমে ছিলেন ‘স্টার’। তাই মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন-ও প্রশ্ন তুলেছে- ইমরান কি তবে ‘পাকিস্তানের ট্রাম্প’? তবে ট্রাম্পের সাথে এক জায়গায় পার্থক্যও আছে ইমরানের। ট্রাম্পের নেপথ্যশক্তি ছিলো দেশটির বুর্জোয়া শিল্পপতিরা। অন্যদিকে ইমরানের ক্ষেত্রে সেটি পাকিস্তান সেনাবাহিনী।

খেলোয়াড়ি জীবনে ম্যাচ পাতানোসহ অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার বদনাম আছে পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের ব্যাপারে। সেদিক থেকে ইমরান ঐভাবে বিতর্কিত হননি কোনোদিনই। কিন্তু রাজনৈতিক মাঠ যে বড্ড কর্দমাক্ত। এখানে তাই নিজ দোষেই হোক কিংবা অজ্ঞাতসারে, পূর্বতন জীবনের পরিষ্কার ইমেজটি ধরে রাখতে পারেননি ইমরান। তবে নিন্দুকের দেওয়া ‘তালেবান খান’ বা ‘পাকিস্তানি ট্রাম্প’ অভিধা কতটা যথার্থ, তা নির্ণয়ের ভার পাঠকের কাছেই রইলো।  

Featured Image from: firstpost.com

Related Articles