ফুটবলে বিভিন্ন প্রতিযোগিতাকে আমরা মাঝেমধ্যেই ঘোড়দৌড়ের সাথে তুলনা করতে দেখি। স্প্যানিশ লা লিগাকে আগে বলা হতো দুই ঘোড়ার দৌড়, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বদৌলতে এখন বলা হয় তিন ঘোড়ার দৌড়। অন্যদিকে বুন্দেসলিগা আর লিগ-ওয়ানকে সবসময়ই বলতে শোনা যায় এক ঘোড়ার দৌড় হিসেবে। কারণ, সেখানে চলে একটি দলের একক আধিপত্য। শুধু লিগ নয়, ঘরোয়া কাপ প্রতিযোগিতাও আস্তে আস্তে হয়ে গিয়েছে তাদের একক সম্পত্তি। পিএসজি তাদের কাতারি মালিকের কল্যাণে এগিয়ে গেলেও বায়ার্নের এভাবে বুন্দেসলিগায় ‘স্বৈরাচারী’ হয়ে ওঠার কারণ কী? ‘বায়ার্নলিগা’ নামে জার্মানিতে আরেকটি লিগ রয়েছে বটে, তবুও বায়ার্ন মিউনিখের কল্যাণে বুন্দেসলিগার নামটাই আস্তে আস্তে যেন ‘বায়ার্নলিগা’ হয়ে যাচ্ছে।
বায়ার্ন মিউনিখ টানা কতবার বুন্দেসলিগা জিতেছে জানেন? ২০১২-১৩ মৌসুম থেকে দশবারের চ্যাম্পিয়ন তারা। বুন্দেসলিগার ইতিহাসে ৩১ বার শুধু তারাই জিতেছে এই শিরোপাটি। তার মধ্যে এই শতাব্দীতেই তারা জিতেছে ১৫ বার। আর কোনো দল পাঁচটির বেশি জিততে পারেনি। কেন এভাবে জার্মান লিগটি শুধু একটি দলের আধিপত্যেই থাকছে?
১৯৮২ সাল থেকে বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলা খেলোয়াড়দের মধ্যে প্রতিবারই কমপক্ষে একজন বায়ার্ন মিউনিখের খেলোয়াড় ছিলেন। বায়ার্ন কীভাবে এত সাফল্য নিজের করে নিচ্ছে? এখানে অনেকগুলি ব্যাপার জড়িত। অর্থনৈতিক অবস্থা তার মধ্যে একটি। বুন্দেসলিগার অন্য যেকোনো দলের তুলনায় বায়ার্ন এইদিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে। ২০২১-এর ডেলোইট মানি লিস্টে ক্লাবগুলোর র্যাংকিংয়ে বায়ার্নের অবস্থান ছিল ৩ নম্বরে। তাদের বার্ষিক আয় ছিল প্রায় ৬৩৪.১ মিলিয়ন ইউরো। তাদের কাছাকাছি অবস্থানে থাকা অন্য জার্মান দলটি ছিল বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, যারা ৩৬৫.৭ মিলিয়ন ইউরো আয় নিয়ে রয়েছে ১২তম স্থানে। এছাড়া ২২২.৮ মিলিয়ন ইউরো নিয়ে ১৬তম স্থানে রেলিগেটেড হয়ে যাওয়া শালকে-০৪ এবং ১৭৪ মিলিয়ন ইউরো নিয়ে ২০তম স্থানে রয়েছে আইনট্রাখ্ট ফ্রাংকফুর্ট।
একটি কথা রয়েছে যে সাফল্যই সাফল্য নিয়ে আসে। এইখানেও এটি অনেকাংশে প্রযোজ্য। বুন্দেসলিগায় সম্প্রচার থেকে যত আয় হয়, তার ভাগ হয় কীভাবে? ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক স্বত্ত্বের মধ্যে কেবল ২৫% দলগুলোর মধ্যে সমানভাবে ভাগ করে দেয়া হয়, বাকিটুকু পারফরম্যান্স অনুযায়ী। ঘরোয়া লিগ, ইউরোপীয় প্রতিযোগিতার সামগ্রিক পারফরম্যান্সের জন্য একটি বড় অংশ পায় দলগুলো। অন্যদিকে যুব খেলোয়াড় তৈরির জন্য দেয়া হয় খুব কম পরিমাণ অর্থ, যে কারণে ২০২০-২১ মৌসুমে যে ১,৪৪০ মিলিয়ন ইউরো আয় হয়েছে, তার সিংহভাগই পেয়েছে বায়ার্ন। বায়ার্নের এই বড় আয় শুধু তাদের পারফরম্যান্সই নয়, এর সাথে দেখতে হবে দেশে তাদের ভৌগোলিক অবস্থানটাও। বুন্দেসলিগার অন্যান্য উঁচু পর্যায়ের দলগুলো উত্তর জার্মানির হলেও বায়ার্ন দক্ষিণ জার্মানিতে অবস্থিত। এতে স্থানীয় বিশাল ফ্যানবেজ থেকেও তাদের আয় অন্যদের চাইতে অনেক বেশি।
যদিও ২০২১-২২ মৌসুম থেকে এটি পরিবর্তিত হয়ে পরবর্তী ২ মৌসুমে ৫৩% আয় সমানভাবে ভাগ হবে, পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে ৪২% ভাগ হবে, যুব খেলোয়াড় তৈরির জন্য ৩% বরাদ্দ থাকবে ও মুনাফা হিসেবে ২% দেয়া হবে। ২০২২-২৩ মৌসুম থেকে পরবর্তী ২ মৌসুমে আবার সমানভাবে ভাগ হওয়া অংশটি কমে আসবে ৫০ শতাংশে। বাকি ৩% সমানভাবে চলে যাবে বাকি তিন অংশে।
১৯৯৮ সালের আগে জার্মান ক্লাবগুলো ছিল নন-প্রফিট অর্গানাইজেশন। এরপর তাদেরকে অনুমতি দেয়া হয় পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির মাধ্যমে তাদের ফুটবলীয় কার্যক্রম চালাতে। তারা ৫০+১ নিয়ম রেখে দেয় সেখানে যাতে করে ব্যক্তিগত বিনিয়োগ হওয়ার পরও ক্লাবগুলোর মালিকানা এবং সাথে ক্লাবের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণ ক্লাব মেম্বারদের হাতেই থাকে। বায়ার্নের এত সুরক্ষিত থাকার এটিও একটি কারণ। ২০০২ সাল থেকে এটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি চালু করলেও তাদের বৃদ্ধি ছিল অন্যদের তুলনায় অনেক টেকসই। বর্তমানে ক্লাবটির কোনো দেনা নেই কারোর কাছেই। অডি, অ্যাডিডাস ও অ্যালিয়াঞ্জ কোম্পানির প্রত্যেকের অধীনে রয়েছে ৮.৩৩% শেয়ার। বাকি ৭৫% রয়েছে ক্লাবের মালিকের কাছেই। পুরো শেয়ার বিক্রির নিয়ম না থাকায় তাদের ভয়ও নেই কোনো ধনকুবেরের কাছে ক্লাবের মালিকানা হারানোর।
২০০২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তাদের আয় বেড়েছে ৩৫৫%। ২০২০ সালে ফোর্বসের দেয়া তথ্য মোতাবেক মোস্ট ভ্যালুয়েবল ফুটবল ব্র্যান্ডের তালিকায় বায়ার্ন রয়েছে ৪ নম্বরে।
ফুটবলে সাফল্য পেতে এই জিনিসগুলো খুব কাজে দিয়েছে তাদের। বায়ার্ন তাদের এই বাণিজ্যিক বিষয়গুলো তাদের অন্যান্য দিক প্রশস্ত করতে কাজে লাগিয়েছে। বৈশ্বিকভাবে এতে কোনো সমস্যাই নেই, পুরো বিশ্বেই এমনটি চলে আসছে। তবে জার্মান সোসাইটিতে আগে এমনটি চলত না; একে তো ক্লাবগুলো ছিল নন-প্রফিট অর্গানাইজেশন, সাথে তারা এটিকে বাণিজ্যিকিকরণ করার চাইতে সামাজিক কর্মকাণ্ড হিসেবেই দেখত। লাভ করার ব্যাপারটি ছিল খুবই গৌণ, একটা মোরালিটি কাজ করত সে সময়।
প্রথমবারের মতো ২০১৪ সালে বায়ার্ন নিউ ইয়র্কে তাদের প্রথম আন্তর্জাতিক অফিস চালু করে। বর্তমানে উত্তর আমেরিকায় প্রায় ৩২ মিলিয়ন অফিশিয়াল ফ্যান রয়েছে তাদের। এরপর সেখানে তারা বিটস ইলেকট্রনিকস, প্রক্টার অ্যান্ড গ্যাম্বল, ও ইএ স্পোর্টসের মতো স্পন্সরের সাথে একযোগে কাজ করা শুরু করে।
২০১৬ সালে চালু হয় তাদের সাংহাই অফিস। তারা চীনে তাদের তিনটি একাডেমি পরিচালনা করে। তারা শুধু তাদের স্বত্বগুলোর লাইসেন্স প্রদান করেনি, সাথে একটি লোকাল অবকাঠামোও তৈরি করেছে সেখানে। ২০১৫ সালে তারা তাদের চায়নিজ ওয়েবসাইট খোলে, এবং মান্দারিন ভাষায় কন্টেন্ট বানানো শুরু করে চীনের জাতীয় টেলিভিশনের জন্য। এরপর আলিবাবাতে রয়েছে তাদের একটি টিআইএমএল স্টোর, ৪.২ মিলিয়ন ফলোয়ার পায় উইবোতে, এবং শেষে টিকটকে সবচেয়ে দ্রুত ফলোয়ার বৃদ্ধি পাওয়া ক্লাবে পরিণত হয়। চীনে এই বাণিজ্যিক নীতি তাদের জন্য খুব ইতিবাচক ফলাফল নিয়ে আসে। যার দেখাদেখি ইউরোপের অন্য ক্লাবগুলোও চীনের সাথে ব্যবসা শুরু করে। কোনোভাবেই চীনের সাথে তাদের সম্পর্কের যেন বিঘ্ন না ঘটে, সেদিকেও তারা খুব কড়াভাবে লক্ষ্য রাখে।
২০০৮ সালে বায়ার্নের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তাদের বাণিজ্যিক আয় ছিল ১৫৯.৩ মিলিয়ন ইউরো, যেটি বেড়ে ২০১৯-২০ মৌসুমে দাঁড়ায় ৩৬০.৫ মিলিয়ন ইউরোতে। এই পুরো সময়ে তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের মোট বাণিজ্যিক আয় ছিল ৩৭৭.১ মিলিয়ন ইউরো। ২০১৯-২০ মৌসুমে তাদের আয় মাত্র ১৫০.২ মিলিয়ন ইউরো, যা বায়ার্নের থেকে ২১০ মিলিয়ন ইউরো কম।
তবে এই ব্যবসায়িক ব্যাপারগুলো ছাড়াও বায়ার্নের যে খেলোয়াড়ি দর্শন রয়েছে, সেটিও তাদের সাফল্য পেতে অনেক সাহায্য করেছে। বুন্দেসলিগায় বায়ার্নই একমাত্র দল, যাদের তাদের খেলোয়াড়কে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিক্রি করে দিতে হয় না। প্রিমিয়ার লিগ বলুন বা লা লিগা বা সিরি-আ, কোনো লিগেই বড় দলগুলোর মধ্যে খেলোয়াড় বেচাকেনার ব্যাপারটি স্বাভাবিকভাবে হয় না। তারা নিজেদের মধ্যে প্লেয়ার আদানপ্রদানেও আগ্রহী থাকে না। কিন্তু বুন্দেসলিগায় বায়ার্নই সর্বেসর্বা। জার্মান খেলোয়াড়দের শুধু বায়ার্নে খেলার ইচ্ছাই তাদের মনে পোষে না, সেটিকে তারা ধরে রাখে তাদের একমাত্র গন্তব্য হিসেবে, যেখানে অন্য ক্লাবগুলো কেবল তার ‘স্টেপিং স্টোন’ হিসেবে কাজ করে।
এই কারণে তাদের ঘরোয়া ট্রান্সফার পলিসি কেবল তাদের ক্লাবটিকেই শক্তিশালী করে না, সে সাথে দুর্বল করে দেয় তাদের নিচে থাকা অন্য ক্লাবগুলোকে। সাম্প্রতিক এমন ট্রান্সফারের মধ্যে রয়েছে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড থেকে রবার্ট লেভানডফস্কি, মারিও গোৎজে, স্টুটগার্ট থেকে মারিও গোমেজ, বেঞ্জামিন পাভার্ড, জশুয়া কিমিখ, বেয়ার লেভারকুসেন থেকে লুসিও, মাইকেল বালাক, শালকে থেকে লেওন গোরেৎজকা ও ম্যানুয়েল নয়্যারের ট্রান্সফার। এই দশকে তাদের মূল রাইভাল হিসেবে বুরুশিয়া ডর্টমুন্ড থাকলেও, গত ২ মৌসুমে সেই জায়গা আস্তে আস্তে নিয়ে নিচ্ছিল আরবি লাইপজিগ। সেই লাইপজিগের সেরা স্ট্রাইকার টিমো ভার্নার গত মৌসুমে চলে গিয়েছেন চেলসিতে, আর তাদের সেরা ডিফেন্ডার ডায়োট উপামেকানো প্রি-কন্ট্রাক্ট স্বাক্ষর করে ২০২১ গ্রীষ্মে চলে এসেছেন বায়ার্ন মিউনিখে। উপামেকানোকে নিয়ে আসতে বায়ার্ন তার ৪৫ মিলিয়নের রিলিজ ক্লজ পরিশোধ করে, লাইপজিগের সাথে কোনোরকম দর কষাকষিতে যায়নি। এরপর হ্যান্সি ফ্লিক জার্মানির জাতীয় দলের দায়িত্ব নেবার পর লাইপজিগের কোচ জুলিয়ান নাগেলসম্যানকে নিয়ে এসেছে বায়ার্ন। কিছুদিন বাদেই লাইপজিগের অধিনায়ক মার্সেল স্যাবিটজারকেও মাত্র ১৮ মিলিয়ন ইউরোতে দলে ভেড়ায় তারা। গত দুই মৌসুম দুর্দান্ত খেলা লাইপজিগ এখন প্রায় পঙ্গুই বলা চলে।
বুন্দেসলিগায় এখন অব্দি যত রেকর্ড ট্রান্সফার হয়েছে, তার মধ্যে প্রথম ৯টিই বায়ার্নের দখলে রয়েছে। জার্মানির যতজন গ্রেট প্লেয়ারের নাম বলবেন আপনি, দেখবেন সবাই কোনো না কোনোভাবে ক্যারিয়ারের একটি শিখরে বায়ার্নেই খেলেছেন।
এই ট্রান্সফার পলিসিতে বায়ার্নকে আবার পিএসজি, চেলসি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ম্যানচেস্টার সিটির মতো শিকারিও হিসেবে ধরা যায় না, যেখানে তারা প্রচুর টাকা খরচ করে। তাদের ট্রান্সফারের মূলনীতিই হচ্ছে স্কোয়াডে থাকা তাদের প্লেয়ারগুলোকে রিপ্লেস করে সঠিক সময়ে স্কোয়াডকে রিফ্রেশ করা। তাদের টানা সাফল্যের পেছনে এটিও একটি কারণ যে তাদের কোনো ক্রান্তিকালীন সময়ের মুখোমুখি হতে হয় না, পার করা তো দূরের ব্যাপার। হয় তারা সঠিক সময়ে খেলোয়াড় কিনে ফেলে, না হলে সেই রিপ্লেসমেন্টের ব্যাপারটিকে মাথায় রেখে খেলোয়াড় তৈরি করে। যেমন মারিও গোমেজের পরিবর্তে তারা নিয়ে এসেছিল রবার্ট লেভানডফস্কিকে, ফ্রাংক রিবেরির জায়গায় সার্জ ন্যাব্রি, আরিয়েন রোবেনের জায়গায় লেরয় সানে, আলোনসোর জায়গায় গোরেৎজকা, ভিদালের জায়গায় জশুয়া কিমিখ, এই মৌসুমে ডেভিড আলাবার জায়গায় উপামেকানো। কিমিখের বায়ার্ন ক্যারিয়ার কিন্তু শুরু হয়েছিল ফিলিপ লামের জায়গায় রাইটব্যাক হিসেবে। এই মৌসুমে মার্সেল সাবিৎজারকে কেনার কারণ হিসেবে দেখা হয়েছে ভবিষ্যতে তাকে টমাস মুলারের জায়গায় খেলানোর জন্য। বর্ষীয়ান টমাস মুলার আর যে কয়দিন রয়েছেন, সেই সময়ের মধ্যেই সাবিৎজারকে বায়ার্নের সিস্টেমের সাথে মানিয়ে নিতে হবে। যদিও ইনজুরির কারণে লাইপজিগের ঝলক তিনি বায়ার্নে দেখাতেই পারেননি।
এই ব্যাপারগুলো নিয়ে কাজ করার জন্য বায়ার্ন সমসময় ক্লাবের সাবেক খেলোয়াড়দের তাদের অথোরিটিকাল, টেকনিকাল ও বোর্ডের বড় পদের দায়িত্ব দিয়ে রাখে। ফলে তারা স্থানীয় ব্যাপারগুলো খুব ভালোভাবেই জানে, যে জন্য বোর্ড লেভেলেও বায়ার্নের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী থাকে না। যদি তাদের রাইভালরাও চায় তাদের এই সিস্টেমটি অনুসরণ করতে, তা আর সম্ভব হয় না; কারণ একটুখানি মাথা তোলা মাত্রই গাছের মাথা ছেঁটে দেয়া হয়।
এই শতাব্দীতে বায়ার্ন ছাড়া আর মাত্র চারটি ক্লাব বুন্দেসলিগা জিতেছে। তাদের মধ্যে স্টুটগার্ট এরপর দুইবার রেলিগেটেড হয়েছে, ওয়ের্ডার ব্রেমেন মধ্যসারিতে থাকার জন্য লড়াই করছে, বরুশিয়া ডর্টমুন্ড তাদের দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রাখার জন্য লড়ছে, তারা তাদের দুই সেরা অ্যাটাকারের একজনকে হারিয়েছে, আরেকজনকেও আগামী গ্রীষ্মে হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে; আর লাইপজিগ তাদের তিন সেরা খেলোয়াড় আর কোচকে হারিয়ে ধুঁকছে।
ফরাসি লিগ-ওয়ানকে ফুটবল কমিউনিটিতে সরাসরি ‘কৃষক লিগ’ বলা হয়। সেখানে জমিদার শুধু পিএসজি। অন্য ক্লাবগুলো পিএসজির সাথে প্রতিযোগিতায় শুরুতেই পিছিয়ে পরে শুধু টাকার অংকের জন্য। এত কাড়িকাড়ি খরচ করেও কিন্তু গত বছর তারা হেরে যায় লিগে। এরপর নেই কোনো চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা। কিন্তু পিএসজি যে লিগ-ওয়ানকে পঙ্গু করে দিচ্ছে, তাও নয়। শুধু আর্থিক দিক দিয়ে অসমতা থাকায় ফরাসি লিগ-ওয়ান একতরফা হয়ে যায়। পিএসজি আর বায়ার্নের পার্থক্য বলতে বায়ার্নের সমৃদ্ধ ইতিহাস আর চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা।
বায়ার্নকে চ্যালেঞ্জ করা অন্য দলগুলো যেখানে প্রতিনিয়ত রিসোর্সের অভাবে ভুগছে, সাথে সাইনিং-সেল-রিবিল্ডের চলমান চক্রে ঘুরছে, সেখানে বায়ার্নকে কোনো কিছুরই মোকাবিলা করতে হচ্ছে না। তাহলে তারা টানা ৯টা কেন, টানা যদি ২০টি লিগও জেতে, তাতেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।