শুধুমাত্র বিশ্বকাপ আয়োজক দেশ রাশিয়া নয়, পুরো বিশ্ব আসন্ন বিশ্বকাপ জ্বরে আক্রান্ত। বর্তমানে বিশ্বকাপের সকল আয়োজন শেষ শুধুমাত্র ম্যাচগুলো মাঠে গড়ানোই বাকি। পূর্ণাঙ্গ দল ঘোষণা করে অধিকাংশ দেশ নেমে পড়েছে বিশ্বকাপ প্রস্তুতিতে। বিশ্বকাপ স্বপ্নে জয়ের ক্ষেত্রে সব দেশগুলোর আশা তাদের সেরা খেলোয়াড়কে কেন্দ্র করে। তবে দেশ সেরা খেলোয়াড় নয়, বিশ্বকাপ মঞ্চে আলো ছড়াতে পারে নাম না জানা কোনো আনকোরা খেলোয়াড় অথবা ক্লাবের হয়ে চমক জাগানো কোনো তরুণ ফুটবলার। তবে কে বা কারা এবারের বিশ্বকাপে সর্বাধিক আলো ছড়াতে পারে?
স্পেন
২০১০ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয়ের দেশ স্পেন এবারও বিশ্বকাপে অন্যতম ফেবারিট দল। এত এত প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের মধ্য থেকে সঠিক খেলোয়াড় বাছাই করতে হিমশিম খেতে হয়েছে স্পেন কোচকে। তবে যে দলটি তিনি বিশ্বকাপে নিয়ে যাচ্ছেন তার তুলনা নেই। লোপতেগুইয়ের দলে অন্যতম ভরসা ডেভিড ডি গিয়া। রামোস ও পিকের মতো বিশ্বমানের ডিফেন্সের পর ডি গিয়া রক্ষণ হিসেবে থাকা যেন জোড়া চীনের প্রাচীর। ২০১৭-১৮ মৌসুমে পুরোটা সময় ধরে অতিমানবীয় পারফর্মেন্স করা ডি গিয়া এবার স্পেনের হয়ে পুনরায় নজর কেড়ে নিতে পারেন। নতুনভাবে দৃশ্যপটে আগমন ঘটতে পারে ইনিয়েস্তা ও বুসকেটসের। স্ট্রাইকার হিসেবে দলে জায়গা হতে পারে ডিয়েগো কস্তার। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে এসে তিনি যেন নতুনভাবে নিজেকে ফিরে পেয়েছেন। এর ফলেই তিনি এবার পেয়েছেন বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ। এছাড়াও স্পেন দলে আসেনসিও ও ইসকো লক্ষ্যণীয়। আসেনসিও হয়তো সবসময় প্রথম একাদশে থাকবেন না, তবে দ্বিতীয়ার্ধে নেমে হয়ে যেতে পারেন সুপার সাব। আর আর্জেন্টিনার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করা ইসকো হতে পারেন লোপতেগুইয়ের ট্রাম্প কার্ড। তার পায়ের জাদু আর গতিতে এবার বিমুগ্ধ হতে পারে ফুটবলপ্রেমীরা।
জার্মানি
বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দল। ব্রাজিল বিশ্বকাপের দল থেকে এবারের দলটি যেন আরো পরিণত। দলে যেমন আছে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়, তেমনি আছে তারুণ্যের ছাপ। জার্মানদের ভরসা ম্যানুয়েল ন্যয়ার হয়তো খেলবেন না বিশ্বকাপের মঞ্চে। তবে এতেও যেন তাদের কোনো দুশ্চিন্তা নেই। কারণ জার্মানিদের একজন মার্ক আন্দ্রে টার স্টেগান আছে। বার্সেলোনা হয়ে চলতি মৌসুমে অসমান্য দক্ষতা দেখিয়েছেন তিনি। বিশ্বকাপও যে তার ঝলক দেখতে যাচ্ছে তা বলাই বাহুল্য।
মাঝমাঠে আছেন টনি ক্রুস, যাকে অনেকেই স্নাইপারের সাথে তুলনা করে। চুপিসারে যেন নিজের দায়িত্ব পালন করতে ভালোবাসেন। জার্মান সমর্থকদের চোখ থাকবে তারই দিকে। প্রবল কোনো ঝলক দেখতে নয়। ক্রুসের সেই লুকোছাপা রেখে খেলাই তারা বেশি উপভোগ করেন। তবে হয়তো এবার জার্মান দলে সবথেকে বেশি আলো ছড়াতে যাচ্ছে জশুয়া কিমিখ, লিওন গোরেৎজকা ও লিরয় সানে। বর্তমান ফুটবল বিশ্বে অন্যতম সেরা ফুলব্যাক হলেন কিমিখ। তবে তিনি শুধু রাইটব্যাক পজিশনে নয়, আরো বেশ কিছু পজিশনে সমান দাপটে খেলতে পারেন। বিশ্বকাপে তার এই দক্ষতা কাজে দেবে। লিওন গোরেৎজকা হয়তো শুরু থেকে থাকবেন না। তবে দ্বিতীয়ার্ধে ক্লান্ত কোনো খেলোয়াড়ের পরিবর্তে তার উপস্থিতি কার্যকরি ভূমিকা হতে পারে। এ বছর লিরয় সানে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে প্রমাণ করেছেন। ম্যানচেস্টার সিটির বামপাশে ঝড় তুলে আগাম বার্তা দিয়ে রেখেছেন, জার্মানির বামপাশের দায়িত্ব নিতে একদম প্রস্তুত। এসব তো গেলো মধ্যমাঠ আর উইঙ্গারের প্রসঙ্গ। নিয়মিত জালে বল জড়িয়ে আলো কেড়ে নিতে পারেন টিমো ওয়ার্নারও।
ব্রাজিল
স্বাভাবিকভাবে ব্রাজিলে আক্রমণ থেকে ভরসা সবই গড়ে উঠেছে নেইমারকে কেন্দ্র করে। বিশ্বকাপের আগে ইনজুরিতে পড়া নেইমার মাঠে ফিরেছেন ধারণা করা সময়ের আগেই। ২০১৪ বিশ্বকাপে নিজেকে ঠিকমতো তুলে ধরতে গেলেও ইনজুরি তা থামিয়ে দেয়। এবার নেইমার নিশ্চয়ই তা হতে দেবেন না। ব্রাজিলের হয়ে আলো কেড়ে নিতে পারেন কৌতিনহো, জেসুস ও অ্যালিসন। লিভারপুল থেকে বার্সেলোনায় দল বদল করে কৌতিনহো আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। ব্রাজিলেও সেই দুর্দান্ত কৌতিনহোর দেখা মিললে তা প্রতিপক্ষের জন্য ভয়াবহ হতে পারে। আরো আছেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। ইনজুুরির কারণে বেশ কিছুদিন মাঠের বাইরে ছিলেন। তবুও তিতের কাছে ভরসা হারাননি। ব্রাজিল হয়ে নিয়মিত গোল করা জেসুস এবারো ব্রাজিলের প্রধান স্ট্রাইকারের দায়িত্বে থাকবেন। তবে নতুনভাবে ব্রাজিল দলের হয়ে চমক দেখাতে পারে অ্যালিসন বেকার। রোমার হয়ে নিজেকে আগেই প্রমাণ করেছিলেন। এডারসনের মতো গোলরক্ষকের পরিবর্তে তাই তিতে তাকে প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এবার অ্যালিসনের পালা বড় মঞ্চে নিজেকে সঠিকভাবে প্রমাণ করতে। তিতের হাতে অন্যতম বড় একটি অস্ত্র থাকবে বেঞ্চে। দ্বিতীয়ার্ধের পর নেমে ম্যাচের ভাগ্য ঘুরিয়ে দেবার ক্ষমতা যার আছে, সেই ডগলাস কস্তাও বিশ্বকাপ শেষে হয়ে যেতে পারেন ব্রাজিল দলের নায়ক।
আর্জেন্টিনা
ব্রাজিল বিশ্বকাপে হারের পরে দলে বেশ কিছু পরিবর্তন আসলেও একটি পরিবর্তন ঘটেনি। রাশিয়া বিশ্বকাপেও আর্জেন্টিনার সবথেকে বড় ভরসার নাম লিওনেল মেসি। তবে মেসি কি গতবারের মতো এবারও সব আলো নিজের দিকে কেড়ে নেবেন? নিতেও পারেন, চলতি মৌসুম যে দুর্দান্ত কেটেছে তার। আর্জেন্টিনার বেহুলার বাসরের মতো ডিফেন্সের সামনে নিকোলাস ওটামেন্ডি একটি আশ্বাসের নাম। বর্তমানে বিশ্বের সেরা ডিফেন্ডারদের একজন তিনি। আপতদৃষ্টিতে তার সেরা পারফর্মেন্স দর্শকদের কাম্য। বিশ্বকাপের নজর কেড়ে নিতে পারেন আগুয়েরোও। ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে বেশ চমকপ্রদ একটি বছর কেটেছে তার। শেষ মুহূর্তে ইনজুরিতে আক্রান্ত হলেও আর্জেন্টিনার হয়ে দুর্দান্ত একটি বিশ্বকাপ পার করবেন অাগুয়েরো, অনেক গণমাধ্যম এমনটা ভবিষ্যদ্বাণী করছে। অদ্ভুত হলেও সত্য, এবার আর্জেন্টিনা দলে অখ্যাত একজন আলো ছড়াতে পারেন। তার নাম ক্রিশ্চিয়ান পাভন। পাভন হয়ত প্রথম একাদশে থাকবেন না। তবে দ্বিতীয়ার্ধে নেমে গোল সুযোগ তৈরি ও গোল করে সুপার সাব তকমা কেড়ে নেবার সামর্থ্য আছে আর্জেন্টিনার এ খেলোয়াড়ের।
ইংল্যান্ড
তারুণে ভরপুর একটি দল সাজিয়েছেন গ্যারেথ সাউথগেট। তবে চোখ থাকবে হ্যারি কেইনের উপর। টটেনহামের হয়ে প্রতি মৌসুমে গোলবন্যায় ভাসান দর্শকদের। তাই শুধু দলের নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় হিসেবে নয়। রাশিয়া বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে কেইনকে দেখছেন অনেকেই। জাতীয় দলে কেইনের সুবিধা হতে পারে ডেলে আলিকে পেয়ে। কারণ স্পার্সে বেশিভাগ সময়ে আক্রমণের তৈরি হয় আলি ও সমাপ্ত হয় কেইনের মাধ্যমে। রহিম স্টার্লিংও ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে দারুণ সময় পার করেছেন এ বছর। মৌসুম জুড়ে করেছেন গোল ও অ্যাসিস্ট। এবারের রাশিয়া বিশ্বকাপে ইল্যান্ডের সাফল্যের পেছনে এদের ভূমিকা থাকাই স্বাভাবিক।
ফ্রান্স
মার্সিয়েল, রাবিও ও লাপোর্তবেকে বাদ দিয়ে দল ঘোষণা করে কোচ দিদিয়ে দেশম সমালোচিত হয়েছিলেন। তবে দলটিতে ভালোভাবে লক্ষ্য করলে বোঝা যাবে ফ্রান্স দলটি শক্তি ও সামর্থ্যে বিশ্বকাপে অন্যতম ফেবারিট। দলে আছেন গ্রিজমান। ফ্রান্সের সবথেকে বড় তারকা। বিশ্বকাপ শেষে যদি তিনি সেরা খেলোয়াড়ের তালিকায় উপরের দিকে থাকেন তাতে অবাক হবার অবকাশ নেই। এছাড়াও আক্রমণের দায়িত্বে থাকবেন নাবিল ফেকির ও কিলিয়ান এমবাপ্পে। অলিম্পিক লিঁও ও পিএসজির হয়ে দুজনেই এবার নিজেদের প্রমাণ করেছেন। ফেকিরের আক্রমণ তৈরি ও এমবাপ্পের ফিনিশিং ফ্রান্সের স্কোয়াডের সবথেকে বড় শক্তি। এছাড়াও মধ্যমাঠে কান্তে ও পগবা এবং রক্ষণে উমতিতি ও ভারান এবার বিশ্বকাপে চমক দেখাতে প্রস্তুত।
পর্তুগাল
পর্তুগাল বলতে প্রথমে আসে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর নাম। পর্তুগিজদের প্রধান অস্ত্র ও সবথেকে বড় ভরসা তো তিনিই। রোনালদোর পরে পর্তুগালের হয়ে চমক দেখাতে পারেন আদ্রিয়েন সিলভা। যদিও তার কাজটা রোনালদো কেন্দ্রিক। রিয়াল মাদ্রিদের করিম বেনজেমার মতো পুরো ম্যাচে সার্পোটিং স্ট্রাইকার হিসেবেই রোনালদোকে সাহায্য করতে পারেন সিলভা। তবে নতুনভাবে আলো কেড়ে নেবার মতো উঠতি তারকা একজনই আছে। ডানপায়ের উইঙ্গার গেলসন মার্টিন্স। তার গতি দুর্দান্ত। তবে পর্তুগিজদের কোচের স্কোয়াডে প্রথমে হয়তো তিনি থাকবেন না। দ্বিতীয়ার্ধে ৬০ মিনিটের পর যখন প্রতিপক্ষের রক্ষণ কিছুটা ছন্নছাড়া ভাব আসবে, তখন গেলসনকে নামানো মূলত কোচের আসল পরিকল্পনা। শেষ মুহূর্তে তার গতি ও অ্যাসিস্ট করার দক্ষতা বেশ চমকপ্রদ হতে পারে পর্তুগালের জন্য।
বেলজিয়াম
বেলজিয়ামের আকাশে আছে কেভিন ডি ব্রুইন ও এডেন হ্যাজার্ড নামক জোড়া সূর্য। পরিচিত একটি ধ্রুবতারাও আছে, নাম তার রোমেলু লুকাকু। আর এদের নিয়ে সবথেকে বড় রক্ষাকারী আস্তরণের নাম থিবো কর্তোয়া। বেলজিয়ামের নতুন প্রজন্মের দলে যে এরাই তাদের ভরসা। থিবো কর্তোয়াকে নতুনভাবে বিশ্লেষণ করার প্রয়োজন নেই। অনেক আগে থেকেই নিজের প্রতিভা ও দক্ষতার ঝলক দেখিয়েছেন। এবারের বিশ্বকাপে সেরা গোলকিপার হবার লড়াইয়ে তিনিও একজন সুযোগ্য প্রতিযোগী। আলো কেড়ে নিতে পারেন কেভিন ডি ব্রুইন। বর্তমানে বিশ্বের সেরা মিডফিল্ডারদের একজন। মাঝমাঠ থেকে তার রক্ষণচেরা পাসই প্রয়োজন লুকাকু বা মার্টেন্সদের গোল করতে। আরো আছেন এডেন হ্যাজার্ড। গোল করতে পারেন, গোল করাতে পারেন। মেসি-রোনালদোর পরে সেরা খেলোয়াড়দের একজন হিসেবে খেতাব পাওয়া হ্যাজার্ডের বড় মঞ্চে খেলার দক্ষতা কতটুকু তা রাশিয়াতেই প্রমাণ হয়ে যাবে।
উরুগুয়ে
বিশ্বকাপে ফেবারিট দলের ভেতর উরুগুয়েকে গুরুত্ব দিয়ে ভাবা হচ্ছে না। আসলে ছোটখাটো অঘটন ঘটালেও বড় কোনো ঘটনা ঘটাবার মতো অবস্থায় নেই উরুগুয়ে। দলের শক্তিও অতটা প্রবল নয়। লুইস সুয়ারেজ ও এডিনসন কাভানিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা দলটির এখনো অন্যতম ভরসা ডিয়েগো গোডিন। গোল করে তো আলো ছড়াতেই পারেন সুয়ারেজ ও কাভানি। তবে এবার চমক দেখাতে পারেন ক্রিস্টিয়ান স্টুয়ানি। লা লিগার ক্লাব জিরোনাতে এবার দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন। গোলও করেছেন অনেকগুলো। বিশ্বকাপেও গোল করে যদি উরুগুয়েকে স্টুয়ানি এগিয়ে নেন, তাহলে অবাক হবেন না কেন?
ক্রোয়েশিয়া
আন্ডার ডগ বলতে যা বোঝায় বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়া তেমন একটা দল। যে দলে মডরিচ, রাকিটিচ ও কোভাচিচের মতো বিশ্বমানের খেলোয়াড় আছে তারা তো ভয় ছড়াবেই। এই তিনজনের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা যেমন সাহায্য করবে বিশ্বকাপে, তেমনি বিশ্বকাপে আলো ছড়ানোর ক্ষমতা আছে তিনজনেরই। এছাড়াও পুরনো সৈনিক মারিও মানজুকিচের উপর ভরসা করবে ক্রোয়েটরা। কারণ ক্রোয়েশিয়া দলে মানজুকিচ বরাবর ভালো খেলে আসছেন।
সার্বিয়া
বাকি সব দলের মতো সার্বিয়া অতো বিশ্বমানের দল নিয়ে বিশ্বকাপে যাচ্ছে না। তবে দলটি আত্মবিশ্বাসী। এই শক্তি প্রয়োগ করেই অঘটন ঘটাতে পারে দলটি। আগে থেকেই তাদের ভরসার নাম নেমানিয়া ম্যাতিচ। এবার ম্যাতিচের সাথে যুক্ত হয়েছে সার্জি মিলিঙ্কোভিচ স্যাভিচের নাম। ইতালিয়ান ক্লান লাৎসিও হয়ে দারুণ পারফর্ম করেছেন এবার। নজর কেড়ে নিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি এবং জুভেন্টাসের মতো দলের। নিজের প্রতিভার জানান দিতে দিতেই স্যাভিচ পেয়েছেন বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চ। তাই ফুটবলবোদ্ধাদের ধারণা, বিশ্বকাপেও সার্বিয়ার হয়ে আলো ছড়াবেন মিলিঙ্কোভিচ স্যাভিচ।
অন্যান্য
বাকিসব দলের ভেতর প্রথমেই আসবে মোহাম্মদ সালাহর কথা। নিজের ক্যারিয়ার সেরা ফর্মে থেকেই বিশ্বকাপে যাচ্ছেন তিনি। মিশরের মতো ছোট দল হলেও সালাহকে গোনা হচ্ছে মেসি, রোনালদো, নেইমারের কাতারেই। তবে মঞ্চ ঠিক থাকলেও সেখানে গল্প রচনা আদৌ কি সালাহ করতে পারবেন? চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে শুরুতে ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নে ছেদ পড়ে গেছে। যদি শেষপর্যন্ত সালাহ বিশ্বকাপে না খেলেন, বেদনার নীল রঙে পুড়বে পুরো ফুটবলবিশ্ব।
বিশেষভাবে বলতে হয় কোস্টারিকার কেইলর নাভাসের কথা। গত বিশ্বকাপ দিয়েই দৃশ্যপটে এসেছিলেন নাভাস। অর্জন শুধু বিশ্বকাপে সেরা গোলকিপারদের একজন হওয়া নয়, লেভান্তে থেকে রিয়াল মাদ্রিদে খেলার সৌভাগ্য হয়েছিলো তার। বর্তমানে তিনিই রিয়াল মাদ্রিদের প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক। দুর্দান্ত ফর্মেও আছেন। ধারণা করা স্বাভাবিক, বিশ্বকাপেও নজরকাড়া পারফর্মেন্স উপহার দেবেন কেইলর নাভাস।
পোল্যান্ডের হয়ে আলো ছড়ানোর মতো একজন রবার্ট লেভানডস্কি আছেন। বায়ার্ন মিউনিখের মতো পোল্যান্ডের জার্সিতেও নিয়মিত গোল করে আসছেন লেভা। তাই নজরটা তার দিকেও থাকবে। কলম্বিয়ান মিডফিল্ডার হামেস রদ্রিগেজ গতবার হয়েছিলেন সর্বোচ্চ গোলদাতা। ব্রাজিল বিশ্বকাপের মধ্য দিয়েই উত্থান হয়েছিলো তার। কলম্বিয়া বিশ্বকাপে এবারো আন্ডারডগ দেশ হিসেবে খেলবে। এবং অবশ্যই চোখ থাকবে হামেসের দিকে।
সেনেগাল সর্বশেষ বিশ্বকাপ খেলেছিলো ২০০২ সালে। আনকোরা নতুন দল নিয়ে সেবার তারা অঘটন রচনা করেছিলো। এবার রাশিয়া বিশ্বকাপেও খেলার সুযোগ হয়েছে তাদের। অঘটন প্রিয় দেশটিতে দলের তারকা ফুটবলার একমাত্র সাদিও মানে। তাদের দল সাজবেও মানেকে কেন্দ্র করে। লিভারপুলের হয়ে নিজেকে প্রমাণ করা সাদিও মানে নিশ্চয়ই তৈরি আছেন বিশ্বকাপে আলো ছড়াতে।
ফিচার ইমেজ: FIFA.com