বর্তমান বিশ্বে মানবসৃষ্ট যতগুলো সমস্যা পৃথিবী ধ্বংসের কারণ হতে পারে, তাদের মধ্যে সমুদ্র দূষণ অন্যতম। অথচ একটা সময় ছিল যখন সমুদ্র ছিল মানুষের নিকট এক রহস্যময় জগতের নাম। তবে আজ সমুদ্রের প্রতিটি দ্বীপের অবস্থান মানুষের নখদর্পণে। এমনকি সমুদ্রের তলদেশ নিয়েও মানুষের গবেষণার অন্ত নেই। এ সত্ত্বেও সমুদ্র দূষণ প্রতিরোধে মানুষ একদমই উদাসীন। গত কয়েক দশক ধরে এই দূষণের মাত্রা জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে মানুষ যে ইচ্ছাকৃতভাবে সমুদ্র দূষণ করছে তা কিন্তু নয়। বরং সভ্যতার উৎকর্ষতা সাধনে তাদের খামখেয়ালিপনা এর জন্য দায়ী।
বর্তমানে পৃথিবীতে প্রতিবছর প্রায় ১৪ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক বর্জ্য সমুদ্রে পতিত হয়। তবে ঐ বর্জ্যের সবটুকু সমুদ্রে সরাসরি নিক্ষেপ করা হয় না। কোনো দেশই জাহাজ ভর্তি করে প্লাস্টিক বর্জ্য সমুদ্রে ফেলে দিয়ে আসে না। বরং এর মূল উৎস হলো আমাদের বাড়ির পাশের নর্দমা। যত্রতত্র ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক বোতল ও ব্যাগের বড় একটি অংশ আশেপাশের নর্দমায় পতিত হয়। সেগুলো নর্দমার পানিতে ভাসতে ভাসতে নদী-নালা হয়ে সমুদ্র গিয়ে জায়গা করে নেয়।
অন্যদিকে নদী-নালা ব্যবহার না করে সরাসরি সমুদ্রে অনেক কিছু নিক্ষেপ করাকে ওশেন ডাম্পিং বলে। বর্তমানে মাছ ধরার নৌকা, প্রমোদতরী, তেলবাহী জাহাজ ও অন্যান্য জলযান সমুদ্রে সরাসরি বিভিন্ন দূষণকারী পদার্থ নিক্ষেপ করছে। ১৯৭২ সালের আগে সমুদ্র দূষণ নিয়ে পৃথিবীতে কোনো আন্তর্জাতিক আইন ও নীতিমালা ছিল না। ফলে মানুষ বিভিন্ন ধরনের আবর্জনা সরাসরি সমুদ্রে নিক্ষেপ করতো। এমনকি তারা রাষ্ট্রীয়ভাবে সমুদ্রে তেজস্ক্রিয় পারমাণবিক বর্জ্য নিক্ষেপেও পিছপা হয়নি।
আধুনিক জীবনে আমাদের নিত্যব্যবহার্য দ্রব্যাদির মধ্যে প্লাস্টিক একটি অভিশাপের নাম। বিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার পর থেকে প্লাস্টিক দূষণ ইতিমধ্যে বৈশ্বিক রূপ লাভ করেছে। পৃথিবীতে এই দূষণের দ্বারা প্রভাবিত নয় এমন জনপদ খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। তবে সমুদ্রের বুকে প্লাস্টিকের উপস্থিতি আরো ভয়ানক, সমুদ্রের পানি দূষিত করার সাথে সাথে অসংখ্য জলজ প্রাণীর জন্য মৃত্যু ডেকে আনে।
তবে সমুদ্রে প্লাস্টিকের পরিমাণ আসলে যে কত তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। ২০১৫ সালের একটি গবেষণা অনুযায়ী, সমুদ্রে প্রায় ১৫০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক রয়েছে। আর এই পরিমাণ প্লাস্টিকের ৮০ শতাংশ স্থলভাগের বিভিন্ন উৎস বিশেষ করে শহরগুলো থেকে নদীনালার মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে সমুদ্রে পতিত হয়েছে। বর্তমান দূষণধারা বজায় থাকলে ২০৪০ সাল নাগাদ উক্ত পরিমাণটি ৬০০ মিলিয়ন টনে পৌঁছে যাবে।
সমুদ্রে অসংখ্য প্লাস্টিক বোতল, ব্যাগ, বাক্স, যানবাহনের টায়ার, মাছ ধরার জাল, দড়ি ও অন্যান্য প্লাস্টিক বর্জ্য দেখতে পাওয়া যায়। তবে সেই বর্জ্যাদি স্বীয় আকৃতিতে স্থায়ী না থেকে একটা সময় স্রোত ও সূর্যরশ্মির কারণে ক্ষুদ্র কণায় রূপান্তরিত হয়। উক্ত ক্ষুদ্র কণা মাইক্রো প্লাস্টিক নামে পরিচিত। এর আকৃতি সাধারণত ৫ মিলিমিটার ব্যাসের মধ্যে হয়ে থাকে। এত ক্ষুদ্রাকৃতির হওয়ার ফলে এগুলো পানিতে দ্রবীভূত হয়ে গেছে বলে মনে হয়। তাই পানির উপরিভাগে ভাসমান অবস্থায় থাকা সত্ত্বেও মাইক্রো প্লাস্টিক অন্যান্য ভাসমান আবর্জনার মতো তুলে আনা অসম্ভব। তবে এগুলোর উপস্থিতি সমুদ্রে সর্বত্র সমান নয়।
সমুদ্রকে প্লাস্টিক ভাগাড়ে পরিণত করার একটি প্রকৃত রূপায়ন হলো গারবেজ প্যাচ। স্রোতের কারণে ময়লা-আবর্জনা, অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্লাস্টিক, সমুদ্রে কোনো একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে জড়ো হওয়ার মাধ্যমে গারবেজ প্যাচ সৃষ্টি হয়। তবে একে সমুদ্র মাঝে আবর্জনার বিশাল পাহাড় বলে ভাবলে ভুল হবে। যেমন- আকৃতিতে সর্ববৃহৎ দ্য গ্রেট প্যাসিফিক গারবেজ প্যাচে আনুমানিক ১.৮ ট্রিলিয়ন প্লাস্টিক টুকরোর ৯৪ শতাংশই মাইক্রো প্লাস্টিক। প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত ১.৬ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার আয়তনের উক্ত গারবেজ প্যাচ টেক্সাসের আয়তনের প্রায় দ্বিগুণ এবং ফ্রান্সের তিনগুণ। পৃথিবীতে মোট পাঁচটি গারবেজ প্যাচ রয়েছে। এগুলোর পানিতে মাইক্রো প্লাস্টিকের পরিমাণ এত বেশি যে সেই পানি প্লাস্টিক স্যুপ বলে পরিচিতি পেয়েছে।
নদী দূষণের শেষ পরিণতি সমুদ্র দূষণ। পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি শহর কোনো না কোনো নদীর তীরে অবস্থিত। প্রাচীনকাল থেকেই সেই শহরগুলোর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নির্ভরশীল ছিল পার্শ্ববর্তী নদীর উপর। আর এটাই ছিল সবচেয়ে সহজ পন্থা। তবে যুগের পরিবর্তনে শহরগুলোতে উৎপাদিত বর্জ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে হাজার গুণ। বর্তমানে শহরগুলোর গৃহস্থালি ও কলকারখানার বিপুল পরিমাণ বর্জ্য নিঃসরণ এবং পয়ঃনিষ্কাশন করা হয় পার্শ্ববর্তী নদীতে। তবে নদী দূষণের মাধ্যমে সমুদ্র দূষণের দায় শুধুমাত্র শহরগুলোর উপর বর্তায় না।
আধুনিক যুগে মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণের প্রধান মাধ্যম কৃষিকাজের রূপ ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন রাসায়নিক সার এবং অন্যদিকে রোগবালাই দমনে বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। স্পষ্টত, উভয়ের ব্যবহার পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। আর সেচ ব্যবস্থাপনা, অতিবৃষ্টি ও বন্যার দরুন সেই সব ক্ষতিকর পদার্থ নদীনালায় পতিত হয়ে সমুদ্রে পৌঁছে যাচ্ছে। এছাড়া পৃথিবীর অনেক গবাদিপশুর খামার থেকে পশুর বর্জ্য ও মলমূত্র নদীতে ফেলা হয়। আর নদীতে এই ধরনের বর্জ্য অপসারণের ফলে সমুদ্রে ভয়াবহ পরিবেশগত বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়।
সমুদ্রকে ভাগাড়ে পরিণত করার আরেকটি রূপায়ন হলো ডেড জোন (Dead Zone) তথা মৃত অঞ্চল। এটি সমুদ্রের এমন একটি এলাকা যেখানে অক্সিজেন ঘাটতির কারণে কোনো প্রকার জলজ প্রাণী বাঁচতে পারে না। এ জাতীয় অঞ্চল সৃষ্টির অন্যতম কারণ হলো ইউট্রোফিকেশন (Eutrophication), এর দ্বারা পানিতে নাইট্রোজেন ও ফসফরাসের মতো অন্যান্য পুষ্টিকর পদার্থের পরিমাণ বৃদ্ধির মাধ্যমে অক্সিজেনের ঘাটতি হওয়ার প্রক্রিয়া উদ্দেশ্য। সাধারণত যেকোনো জলাধারে শৈবালের পরিমাণ অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়াকে ইউট্রোফিকেশনের অন্যতম লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়। শৈবাল পানির উপরিভাগে স্তর তৈরি করে তলদেশে থাকা জলজ প্রাণীর স্বাভাবিক জীবনচক্রে বাধা প্রদান করে।
যদিও প্রাকৃতিকভাবে সমুদ্রে ডেড জোন সৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু কৃষিকাজে ব্যবহৃত সার মিশ্রিত মাটি ও পানি নদীতে পতিত হওয়ার ফলে বর্তমানে এর পরিমাণ অস্বাভাবিক আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে শহরগুলো থেকে নদীতে নিষ্কাশিত দূষিত পানি ও ক্ষতিকর কেমিক্যাল অক্সিজেন ঘাটতি ঘটিয়ে ডেড জোন সৃষ্টি করতে পারে। বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় চারশত ডেড জোন রয়েছে। তবে ঋতু পরিবর্তনের ফলে এদের অবস্থান ও প্রকৃতি পরিবর্তিত হয়।
অন্যদিকে সমুদ্রে ডেড জোনের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় তেল নিঃসরণের কারণেও। গত কয়েক দশকে ঘটে যাওয়া তেলবাহী জাহাজ দুর্ঘটনার মাধ্যমে পরিস্থিতির ভয়াবহতা স্পষ্ট। এছাড়া সুন্দরবনের ভিতর তেলবাহী কার্গো দুর্ঘটনা বিষয়টি আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। তেলবাহী জাহাজ দুর্ঘটনা ছাড়াও আরো কয়েকভাবে সমুদ্রে তেল নিঃসরণের ঘটনা ঘটে থাকে।
২০১০ সালের ২০ এপ্রিল, মেক্সিকো উপসাগরে অবস্থিত ডিপওয়াটার হরাইজন নামক একটি তেলের খনিতে সমুদ্রে তেল উত্তোলনের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটে। প্রায় ৮৭ দিন ধরে আনুমানিক ৪ মিলিয়ন ব্যারেল তেল মেক্সিকো উপসাগরে। উক্ত দুর্ঘটনার ফলে আশেপাশের জীববৈচিত্র্য ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এমনকি এখন পর্যন্ত এর প্রভাব বিদ্যমান। তবে দুর্ঘটনা ছাড়াও পৃথিবীব্যাপী গভীর সমুদ্রে স্থাপিত তেল উত্তোলন খনি থেকে নিয়মিত ভিত্তিতে সমুদ্রে অপরিশোধিত তেল নিঃসরণ হয়।
অন্যদিকে সমুদ্রে চলাচল করা জাহাজের ইঞ্জিন ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ চালনায় ব্যবহৃত তেলও সমুদ্রে নিঃসরণ করা হয়। আর এ জাতীয় নিঃসরণ নাবিকদের অবহেলায় অথবা সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃত উভয়ভাবেই ঘটতে পারে। এমনকি আন্তর্জাতিক আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন করেও তা বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। তবে সমুদ্রে চলাচল করা আরও অনেক জলযান আছে যেগুলো তেল নিঃসরণের পাশাপাশি আরও অনেকভাবে সমুদ্র দূষণ করে থাকে।
বর্তমানে সমুদ্রে যত প্লাস্টিক সরাসরি নিক্ষেপ করা হয় তার প্রায় পুরোটার জন্য দায়ী মাছ ধরার নৌকা ও জাহাজসমূহ। প্রতিবছর প্রায় ৭ লক্ষ টন প্লাস্টিকের জাল, দড়ি, ফাঁদ ও অন্যান্য মাছ ধরার সরঞ্জাম সমুদ্রে ফেলা হয় এগুলো থেকে। ফেলে দেওয়া নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে ভেসে বেড়ানো ঐসব মাছ ধরার সরঞ্জামের কারণে সমুদ্র দূষিত হওয়ার পাশাপাশি হাজার হাজার জলজ প্রাণীর মৃত্যু ঘটায়। বিশেষ করে পানিতে ফেলে দেওয়া জালের সাথে জড়িয়ে গিয়ে মারা যাওয়া প্রাণী প্রায়ই সমুদ্রের বুকে ভাসমান অবস্থায় কিংবা সমুদ্র সৈকতে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
একবিংশ শতাব্দীর সূচনালগ্ন থেকে প্রমোদতরীতে সমুদ্র ভ্রমণ ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ভাসমান শহর হিসেবে আখ্যা পাওয়া এ ধরনের জাহাজ সাধারণত তিন থেকে সাত হাজার যাত্রী পরিবহনে সক্ষম। তবে একটি শহরের নাগরিকদের মতোই এই জাহাজগুলোর যাত্রীদের দৈনন্দিন কার্যাবলীর ফলে বিপুল পরিমাণ ময়লা-আবর্জনা সৃষ্টি হয়। আর গত কয়েক দশকে সেই ময়লা-আবর্জনা সরাসরি সমুদ্রে নিক্ষেপ করা হয়েছে। এমনকি কয়েকটি প্রমোদতরী পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান সমুদ্র দূষণের দায়ে বড় অংকের জরিমানাও প্রদান করেছে।
বিংশ শতাব্দীর সত্তরের দশক পর্যন্ত সমুদ্র দূষণ নিয়ে পৃথিবীতে কোনো আন্তর্জাতিক আইন ও নীতিমালা ছিল না। ফলশ্রুতিতে সমুদ্রে কিছু নিক্ষেপ করা ছিল অত্যন্ত স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে এক্ষেত্রে আবর্জনা ছিল সর্বশেষ আশংকার বিষয়। কারণ ১৯৪৬-৫৮ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র প্রশান্ত মহাসাগরে তেজস্ক্রিয় পারমাণবিক বর্জ্য সরাসরি নিক্ষেপ করেছে। এছাড়া বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশ সোমালিয়ার সমুদ্রতটে অবৈধভাবে পারমাণবিক বর্জ্য ও অন্যান্য বিষাক্ত পদার্থ নিক্ষেপ করেছে। অন্যদিকে সম্প্রতি জাপান সরকার ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্রের দূষিত পানি প্রশান্ত মহাসাগরে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে রাষ্ট্রীয়ভাবে এই ধরনের সমুদ্র দূষণ খুবই কম হলেও অন্য যে উপায়গুলোর মাধ্যমে সমুদ্র দূষিত হচ্ছে তার দায় পৃথিবীর রাষ্ট্রগুলো এড়াতে পারে না।
সৌভাগ্যক্রমে সমুদ্র এখনো পর্যন্ত পরিপূর্ণভাবে ভাগাড়ে পরিণত হয়নি। তবে এভাবে চলতে থাকলে সেই দিন আর বেশি দূরে নয়। কিন্তু কথা হলো, গোটা সমুদ্র দূষিত হলে মানুষের কী হবে? কারণ, সমুদ্রের যতটুকু অঞ্চল দূষিত হয়েছে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সামুদ্রিক জীবনের পাশাপাশি স্থলভাগের জীবনকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে। যেমন- সমুদ্রে ভাসমান তেল সামুদ্রিক প্রাণীর শরীরে লেগে যায় এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে মৃত্যু ঘটায়। এছাড়া আমাদের খাবার টেবিলে পরিবেশিত সামুদ্রিক মাছের শরীরে বিজ্ঞানীরা মাইক্রো প্লাস্টিকের উপস্থিতি লক্ষ্য করেছেন।
সমুদ্র দূষণ প্রতিরোধ মানুষের একান্ত কর্তব্য। আর এই কর্তব্য পালনের সূচনা হওয়া উচিত ব্যক্তি পর্যায় থেকে। সবাইকে এই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে যে, আমার ব্যবহৃত প্লাস্টিক পণ্যের বর্জ্য যেন যত্রতত্র না ফেলি। অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত সমুদ্র দূষণ প্রতিরোধে সবচেয়ে বড় নিয়ামক। রাষ্ট্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে নদীতে বর্জ্য অপসারণ, সমুদ্রে তেল নিঃসরণ এবং মাছ ধরার নৌকা থেকে আবর্জনা নিক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। এছাড়া প্রমোদতরীগুলোতে স্বয়ংক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্থাপন এবং কৃষিকাজে সার ও কীটনাশক ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই পৃথিবীর সর্ববৃহৎ নিরবচ্ছিন্ন জলাধারটি রক্ষা করা সম্ভব হবে।