একাডেমিক পড়াশোনা বাদেও বর্তমান প্রতিযোগিতাপূর্ণ যুগে কর্মক্ষেত্রে একজন সদ্য বের হওয়া একজন গ্র্যাজুয়েটকে মাপা হয় তার সৃজনশীলতা, পরিস্থিতির ক্রিটিকাল অ্যানালাইসিস করার সক্ষমতা এবং মূল্যবোধ বজায় রেখে গঠনমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহনের দক্ষতা দেখে। লুজলি কাপল্ড টেকনোলজিস নিবেদিত ‘পিওনেরস ৪.০’ বর্তমান তরুণ সমাজকে এমন একটি প্লাটফর্মের সুযোগ করে দেয় যেখানে তারা এসমস্ত বিষয়ে নিজের দক্ষতাকে যাচাই করার সুযোগ পায় এবং একইসাথে তাদের নেটওয়ার্কিং বাড়াতে পারে।
বুয়েট অন্ট্রাপ্রেনারশিপ ডেভেলপমেন্ট ক্লাব
অন্ট্রাপ্রেনারশিপ ডেভেলপমেন্ট ক্লাব শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত একটি ক্লাব যেটি ভিন্ন ভিন্ন চিন্তা-চেতনার মানুষজনকে একসাথে নিয়ে আসছে, যাদের একমাত্র আদর্শ নিজেদের ইচ্ছাশক্তির উপর ভিত্তি করে জীবন চালনা করা। ক্লাবটির অন্যতম মূল লক্ষ্য হচ্ছে বুয়েটের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্যোক্তা হওয়ার মানসিকতা তৈরি করা এবং ক্যাম্পাসে উদ্যোক্তাদের জন্য একটি পরিবেশ তৈরি করা।
বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তির বৈপ্লবিক সাফল্য অনিবার্য এবং প্রযুক্তির সাহায্য ও যথাযথ ব্যবহার ছাড়া কোনো জাতিই উন্নতি সাধন করতে পারবে না। তাই সময়ের চাহিদা এমন সকল চিন্তা-চেতনার মানুষদের, যারা তাদের সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে নিজ নিজ জাতিকে নেতৃত্ব দিবে। আর অর্থনৈতিক দিক দিয়ে এশিয়ার অন্যতম ভবিষ্যত পরাশক্তি হিসেবে বাংলাদেশে এ ধরনের তরুণদের আরো বেশি প্রয়োজন। তাই বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ বুয়েটেরই অন্ট্রাপ্রেনারশিপ ডেভেলপমেন্ট ক্লাব দেশের সবচেয়ে মেধাবী ও সৃজনশীল তরুণদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে, যাতে করে তারা তাদের নিজেদের অভ্যন্তরে উদ্যোক্তা হওয়ার যে সুপ্ত প্রতিভা রয়েছে তা বিকশিত করতে পারে, নেতৃত্বদানে পারদর্শী হয়ে নিত্যনতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশ ও জাতির কল্যাণে সর্বদা কাজ করতে পারে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
পিওনেরস
পিওনেরস ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় এবং তখন এটি শুধুমাত্র বুয়েটের শিক্ষার্থীদের জন্যই আয়োজন করা হয়। প্রথমবারের মতো বুয়েট প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই বিজনেস কেস কম্পিটিশনে ৬০০ বুয়েট শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। আর এই ইভেন্ট তুমুল আলোড়ন তোলে ক্যাম্পাসে, যার ফলস্বরূপ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের দেখা যায় ক্লাসরুম, লাইব্রেরি, হোস্টেল, ক্যাফেটেরিয়ায় বিজনেস কেস সলভ করতে।
এত বিশাল পরিমাণে সাড়া দেখে ২০১৭ সালে আরও বড় পরিসরে পিওনেরস ২.০ এর আয়োজন করা হয়। এবার দেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কম্পিটিশনটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। ২৫টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২,০০০ এর মত শিক্ষার্থী তখন অংশ নেয়। অংশগ্রহণের ভিত্তিতে পিওনেরস ২.০ ছিল বুয়েটের সবচেয়ে বড় একটি ইভেন্ট।
পিওনেরস ৩.০ ছিল বুয়েটে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত স্টার্টআপভিত্তিক কেস সলভিং কম্পিটিশন। তরুণদের মধ্যে তা বড় রকমের আলোড়ন তোলে এবং প্রায় ২,৮০০ এর চেয়েও বেশি শিক্ষার্থী এতে অংশ নেয়। এতগুলো দল থেকে ভালো থেকে আরও ভালো বাছাই করার জন্য স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের উচ্চপর্যায়ে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিজয়ী প্রথম তিনটি দলকে মোট ১,৭৫,০০০ টাকা প্রদান করা হয়।
পিওনেরস ৪.০
টানা চতুর্থবারের মতো আবারও পিওনেরস আয়োজিত হচ্ছে বুয়েট অন্ট্রাপ্রেনারশিপ ডেভেলপমেন্ট ক্লাব দ্বারা। এবারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে ভাবতে এবং চিন্তাশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করা। তাদেরকে নতুন ব্যবসাতে যেসমস্ত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তার সমাধান বের করতে বলা হবে। এর চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে উদ্যোক্তা বাড়ানো এবং অংশগ্রহণকারীদের মাথায় নতুন চিন্তার উদ্রেক ঘটানো। সবাই পিওনেরস ৪.০ জিতবে না ঠিক, তবে এখানে তারা যেন সামনে এগুতে পারে সে ব্যাপারে সাহায্য করাতেই প্রাধান্য দেওয়া হবে। অর্থাৎ পিওনেরস ৪.০ একটি গতানুগতিক কেস কম্পিটিশনের বদলে নতুন নতুন উদ্যোগ আর উদ্ভাবনকেন্দ্রিক হবে।
ইভেন্টটির রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়ে গিয়েছে ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ থেকে এবং শেষ হবে ৫ মার্চ, ২০২০ এ। এতে ফাইনাল রাউন্ডসহ মোট তিনটি রাউন্ড থাকবে এবং ফাইনাল রাউন্ডটি ৩ এপ্রিল, ২০২০ এ অনুষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে প্রথম রাউন্ডটি একটি অনলাইন রাউন্ড। তার আগে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা টিমগুলোকে নিয়ে ৪ মার্চ বুয়েট ক্যাম্পাসে একটি ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হবে।
রেজিস্ট্রেশনের জন্য ক্লিক করুন এখানে।
এটি একটি দলভিত্তিক কম্পিটিশন। এতে দেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বনিম্ন ৩ এবং সর্বোচ্চ ৪ জন শিক্ষার্থী মিলে ৮০০ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি প্রদান করে একটি দল গঠন করতে পারবে, এমনকি দলের সদস্য ভিন্ন ভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়েরও হতে পারে। দ্বিতীয় রাউন্ডটি একটি প্রেজেন্টেশন রাউন্ড এবং সর্বশেষে ফাইনাল রাউন্ড।
এবারও জয়ী প্রথম তিনটি দলকে মোট ১,৭৫,০০০ টাকা প্রদান করা হবে। দ্বিতীয় রানার্স আপ দল পাবে ২৫ হাজার টাকা, প্রথম রানার্স দল আপ পাবে ৫০ হাজার টাকা এবং চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ১ লক্ষ টাকা।
তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য আয়োজিত চমৎকার এই প্রতিযোগিতায় অন্যতম মিডিয়া পার্টনার হিসেবে থাকছে রোর বাংলা।