
কখনও তিনি সমালোচিত হয়েছেন তার আগাম তথ্য পরিবেশনের জন্য, কখনও বা বিশেষ কোনো খবর প্রকাশের জন্য সাংবাদিক হিসেবে অপদস্থও হতে হয়েছে। তারপরও তিনি সবসময় নিজের বিশ্বাসে ছিলেন অবিচল। গোপন সংবাদ পাওয়ার ব্যাপারে তার প্রখর বুদ্ধিমত্তার জন্য কেউ কেউ তাকে গুপ্তচর হিসেবেও অভিযুক্ত করে থাকেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার প্রথম স্কুপ নিউজটি করে ইতিহাসে অমর হয়ে থাকা সেই অবিসংবাদিত ব্রিটিশ সাংবাদিকের নাম ক্লেয়ার হলিংওয়ার্থ।
সমর সাংবাদিকতার ইতিহাসে তার গ্রহণযোগ্যতা ছিল প্রশ্নাতীত। তার দক্ষতা, পেশাদারী অভিজ্ঞতা এবং অসাধারণ বিশ্লেষণ ক্ষমতা সে সময়ের অন্যসব সাংবাদিকের চেয়ে তিনি অনেকখানি এগিয়ে ছিলেন। নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত হলিংওয়ার্থের জানা-অজানা নানা কাহিনী নিয়ে আজকের আয়োজন।
শৈশব-কৈশোরের সেই দিনগুলো
ক্লেয়ার হলিংওয়ার্থ ১৯১১ সালের ১০ অক্টোবর ইংল্যান্ডের নাইটন শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার ছিল জুতোর কারখানা। কারখানাটি নাইটন থেকে সিপশেড অঞ্চলে স্থানান্তরিত হওয়ায় খুব বেশিদিন নাইটনে থাকা হয়নি হলিংওয়ার্থের। শিশু বয়সে বাবার সাথে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের ঐতিহাসিক রণাঙ্গনগুলো ঘুরে বেড়াতে খুব পছন্দ করতেন।

অল্প বয়স থেকে লেখক হওয়ার খুব ইচ্ছে ছিল। কিন্তু বাবা-মায়ের তাতে খুব একটা ইচ্ছে ছিল না। তাই স্কুলের গণ্ডি পেরোতেই অনেকটা ইচ্ছের বিরুদ্ধে হলিংওয়ার্থকে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয় লাইচেস্টারের গার্হস্থ্য বিজ্ঞান কলেজে। সেখানকার পড়াশোনার অভিজ্ঞতা তার পরবর্তী জীবনে তেমন কোনো প্রভাবই ফেলেনি। এক সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে হলিংওয়ার্থ জানিয়েছিলেন,
“ওমলেট তৈরি করা যদিও একটি কাজের মধ্যে পড়ে, তা-ও গার্হস্থ্য বিজ্ঞানের শিক্ষা আমাকে ঘর-সংসারের কাজকে ঘৃণা করতে শিখিয়েছে।”
সাংবাদিকতা পেশা হিসেবে নেয়া
কলেজ পাশ করার পর মা-বাবা চেয়েছিলেন মেয়ে বিয়ে করে সংসারী হোক। কিন্তু হলিংওয়ার্থ সেই ধাতের মেয়ে নন। মা-বাবার পছন্দের ছেলের সাথে বিয়ে করার পরিবর্তে তিনি ১৯১৮ সালে ব্রিটেনে প্রতিষ্ঠিত শান্তি ও সামাজিক ন্যায়বিচার সংগঠন লিগ অব ন্যাশনস ইউনিয়ন (এলএনইউ) ওরচেস্টারশায়ারের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন।
১৯৩০ সালে হলিংওয়ার্থ স্কুল অব স্ল্যাভনিক এন্ড লন্ডনের ইস্ট ইউরোপিয়ান স্টাডিজে ভর্তি হন। এরপর যুগোস্লাভিয়ার জাগ্রেব বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর পড়াশোনার জন্য চলে যান। এই সময় তিনি নিউ স্টেটম্যান পত্রিকার জন্য ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক হিসেবে নিবন্ধ লিখতে শুরু করেন।
১৯৩৮ সালে চেকোস্লোভাকিয়ার জার্মান ভাষাভাষী সুডেনল্যান্ড অঞ্চল হিটলারের নাৎসী বাহিনী দখল করে নেয়। এ সময় হলিংওয়ার্থ হাজার হাজার চেক শরণার্থীর জন্য কাজ করতে পোল্যান্ডের ওয়ারশ’ চলে যান। ১৯৩৯ সালের মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত এই শরণার্থীদের জন্য ব্রিটিশ ভিসার ব্যবস্থা করে হিটলারের বাহিনীর হাত থেকে তাদের উদ্ধার করতে তিনি যথাসাধ্য কাজ করেন। শরণার্থীদের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে ব্রিটেনের ছোটখাট বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় নানা প্রতিবেদন লিখতে থাকেন তিনি।

১৯৩৯ সালের জুন মাসে ইংল্যান্ডের সাধারণ নির্বাচনে মেল্টনের সংসদীয় আসনে লেবার পাটির সদস্য হিসেব নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য তাকে নির্বাচিত করা হয়। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার কারণে নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় হলিংওয়ার্থের সেই নির্বাচনে আর অংশগ্রহণ করা হয়নি।
ইংল্যান্ডের সেই সময়ের জনপ্রিয় সংবাদপত্র দ্য টেলিগ্রাফের সম্পাদক আর্থার ওয়াটসন হলিংওয়ার্থের কাজকর্ম সম্পর্কে বেশ ওয়াকিবহাল ছিলেন। ১৯৩৯ সালের ২৫ আগস্ট হলিংওয়ার্থ যখন লন্ডনে আসেন, তখন টেলিগ্রাফের সংবাদদাতা হিসেবে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়। ইউরোপীয় বিভিন্ন অঞ্চলে যুদ্ধ পূর্ববর্তী পরিস্থিতি নিয়মিতভাবে কভার করার জন্য তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়। দায়িত্ব পেয়েই হলিংওয়ার্থ চলে আসেন ওয়ারশতে, সেখান থেকে ব্রিটিশ কনস্যুল জেনারেলের কাছ থেকে নেয়া সরকারি গাড়ি চালিয়ে চলে যান কাটোভিসে। ২৮ আগস্ট ইউনিয়ন জ্যাক ওড়া সেই গাড়িটি চালিয়ে তিনি জার্মান সীমান্তরক্ষীদের অবাক দৃষ্টির সামনে দিয়ে জার্মান সীমান্তে প্রবেশ করেন। তখন তার বয়স মাত্র ২৭ বছর।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর প্রথম ব্রেকিং নিউজ দিয়েছিলেন যেভাবে
ইউরোপে রাজনীতির আকাশে তখন চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় রাজনৈতিক পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছিলেন। এমনই পরিস্থিতিতে জার্মানি ও পোল্যান্ডের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানানোর জন্য হলিংওয়ার্থকে বিশেষ প্রতিবেদক হিসেবে সেখানে পাঠানো হয়। ব্রিটিশ সংবাদপত্র টেলিগ্রাফের রিপোর্টার হিসেবে তখনও তার চাকরির এক সপ্তাহও হয়নি।
১৯৩৯ সালের ২৮ আগস্ট, একাই গাড়ি চালিয়ে হলিংওয়ার্থ সড়ক পথে ২০ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে জার্মান-পোলিশ সীমান্তবর্তী এলাকায় পৌঁছান। দুই দেশের সীমান্তবর্তী পথ দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎই এক অদ্ভুত দৃশ্য তার চোখে ধরা পড়ে। জার্মান সীমান্তবর্তী পাহাড়ী অংশ তারপোলিন দিয়ে ঢাকা ছিল, যেন পোলিশ সীমান্ত থেকে জার্মানির সীমান্তবর্তী উপত্যকা অঞ্চলের কোনো দৃশ্য চোখে না পড়ে।
কিন্তু আচমকা বাতাসের এক ঝটকায় তারপোলিন উঠে যাওয়ায় হলিংওয়ার্থ দেখতে পেলেন তার নিচে গা ঢাকা দিয়ে আছে বিপুল সংখ্যক জার্মান সৈন্য, শত শত ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া যান ও কামান। যেন আগাম কোনো যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে এসব সাঁজোয়া যান উপত্যকায় লুকিয়ে রাখা হয়েছে। হলিংওয়ার্থ বুঝতে পারলেন, জার্মানি পোল্যান্ডের ওপর কোনো বড় ধরনের হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। তৎক্ষণাৎ তিনি এই বিষয়ে এক প্রতিবেদন তৈরি করে ফেললেন।
পোল্যান্ডের সীমান্তে প্রবেশ করেই হলিংওয়ার্থ তড়িঘড়ি করে তার পত্রিকার সম্পাদককে বিষয়টি জানালেন। পরদিন টেলিগ্রাফ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর প্রথম ব্রেকিং নিউজ,
“পোলিশ সীমান্তে এক হাজার যুদ্ধবাহী ট্যাঙ্ক অপেক্ষারত, টেন ডিভিশন দ্রুত আক্রমণের জন্য প্রস্তুত।”
টেলিগ্রাফের এই সংবাদের সুবাদে বিশ্ববাসী জানতে পারলো হিটলারের জার্মান বাহিনীর পোল্যান্ড আক্রমণের খবর। হলিংওয়ার্থের এই প্রতিবেদন সম্পর্কে ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান ২০১৫ সালে মন্তব্য করেছিল,
“হলিংওয়ার্থের সংবাদটি সম্ভবত আধুনিককালের সর্বশ্রেষ্ঠ স্কুপ সংবাদ।”
হলিংওয়ার্থের স্কুপ সংবাদটির দুটি অংশ ছিল। প্রথমটি প্রকাশিত হয় ২৯ আগস্ট আর দ্বিতীয়টি ১ সেপ্টেম্বর। প্রথম সংবাদে যুদ্ধ শুরুর প্রস্তুতির কথা আর দ্বিতীয়টিতে খোদ যুদ্ধ শুরু হওয়ার সংবাদ।

হলিংওয়ার্থ তার এই দুটি নিবন্ধ নিয়ে পরে একটি লেখায় লিখেছিলেন,
“ব্রিটিশ সরকারি কর্মকর্তারা তখনও বিশ্বাস করতে পারেনি যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে, তাদের ভাবনায় ছিল, যুদ্ধ শুরু হতে আরও কয়েক সপ্তাহ দেরি আছে।”
তাই ১ সেপ্টেম্বর যুদ্ধ শুরু হওয়ার খবর তিনি যখন ওয়ারশর ব্রিটিশ দূতাবাসে থাকা তার এক বন্ধুকে জানান, সেই বন্ধু প্রথমে তা বিশ্বাস করতে পারেনি। পরে হলিংওয়ার্থ তখন টেলিফোনের রিসিভারটা জানালার বাইরে মেলে ধরে সেই বন্ধুকে শোনাতে থাকেন গোলাগুলির আওয়াজ।
যুদ্ধ শুরু হওয়া সম্পর্কিত হলিংওয়ার্থের প্রতিবেদনটি পরদিন টেলিগ্রাফে স্বনামে প্রকাশিত হয়। তখন খুব কম সংখ্যক রিপোর্টারই স্বনামে লেখার সুযোগ পেতেন। সেদিন হলিংওয়ার্থ একে তার কাজের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি হিসেবে মনে করেছিলেন।
বিভিন্ন যুদ্ধের ময়দানই ছিল তার রিপোর্টিংয়ের পছন্দের জায়গা
তিনি ডেস্কে বসে কাজ করার চেয়ে যুদ্ধের ময়দানে বসে প্রতিবেদন তৈরি করা অধিক পছন্দ করতেন। দীর্ঘ চল্লিশ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে হলিংওয়ার্থ ছুটে বেড়িয়েছেন পূর্ব ইউরোপ, বলকান অঞ্চল ও উত্তর আফ্রিকা থেকে শুরু করে গ্রিস ও আলজেরীয় গৃহযুদ্ধের খবরের সন্ধানে। তার লেখায় চিত্রিত হয়েছে আরব ও ইহুদীদের বৈরিতা এবং সংঘাতের খবর, ভিয়েতনাম যুদ্ধের খবরও উঠে এসেছে তার বিভিন্ন লেখায়।

১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ কভার করতে ঘুরে বেড়িয়েছেন দুই দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোয়। পশ্চিমা যে কয়েকজন সাংবাদিক চীন থেকে নিয়মিত সংবাদ পরিবেশন করতেন, হলিংওয়ার্থ ছিলেন তাদের অন্যতম। ১৯৪১ সালে মোহাম্মদ রেজা পাহলভী ইরানের শাহ নির্বাচিত হওয়ার পর তার প্রথম সাক্ষাৎকার এবং ১৯৭৯ সালে শাহ উৎখাত হওয়ার পর তার শেষ সাক্ষাতকার নেয়া একমাত্র সাংবাদিক ছিলেন তিনি। ২০১১ সালে তার শততম জন্মদিন উপলক্ষে ডেইলি টেলিগ্রাফকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে হলিংওয়ার্থ বলেছিলেন,
“আমি অবশ্যই স্বীকার করবো যে, যুদ্ধের মধ্যে কাটানো দিনগুলোই আমার জীবনের পরম আনন্দময় মুহূর্ত।”
বিপদকে সাথে নিয়ে পথ চলা
ক্লেয়ার হলিংওয়ার্থ তার সাংবাদিক জীবনের চল্লিশ বছর কাটিয়ে দিয়েছিলেন শুধু বিপদের পেছনে ধাওয়া করে। ভিয়েতনামের যুদ্ধ কভার করতে গিয়ে একবার এক স্নাইপারের বুলেটের আঘাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পান। ব্রিটিশ সেনাদের সাথে আফ্রিকায় যাওয়ার সময় এক রাতে জার্মান গোয়েন্দাদের উপস্থিতি টের পেয়ে অন্ধকারে বালির নিচে নিঃশব্দে নিজেকে লুকিয়ে রাখেন। সেই দিনটি সম্পর্কে তিনি এক লেখায় লিখেছিলেন,
“ভয়ঙ্কর সে দিনে কারও সামান্য কাশির শব্দ সবার মৃত্যু ডেকে আনতে পারতো।”
প্রতিনিয়ত বিপদকে সঙ্গী করে পাড়ি দিয়েছেন দুর্গম সব পথ, দেখিয়েছেন অসম সাহসিকতার দুর্দমনীয় রূপ। একটি টাইপরাইটার ও প্রয়োজনে একটি রিভলবার সাথে নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন সারা বিশ্বের বিপদজনক সব অঞ্চলে।

খনিকের বিশ্রামের জন্য কখনও ট্রামে, কখনও ট্রেনের কামরায় কিংবা মরুভূমির তীব্র শীতে একটুকু উষ্ণতার জন্য গলা পর্যন্ত বালির নিচে নিজেকে ডুবিয়ে রেখেছেন। তারপরও সাংবাদিকতা পেশা ছেড়ে অন্য কোনো পেশায় যোগ দেয়ার কথা কখনও ভাবেননি। হলিংওয়ার্থ সবসময় বলতেন, সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থানগুলোতেই অসামান্য সব কাহিনী লুকিয়ে থাকে।
ব্যক্তিগত জীবন
হলিংওয়ার্থের পেশাগত জীবন যত আকষর্ণীয়, তার ব্যক্তিগত জীবন ততটাই দুঃখের। ১৯৩৬ সালে ভ্যানদেলিউর রবিনসনকে প্রথম বিয়ে করেন। কিন্তু সেই বিয়ে খুব একটা সুখকর ছিল না। স্বামীর সাথে দীর্ঘদিন একসাথে না থাকার কারণে বিয়ের ১৫ বছর পর তাদের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়।

এরপর ১৯৫০ সালে হলিংওয়ার্থ দ্বিতীয়বারের মতো আবার বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। এবার বিয়ে করেন সাংবাদিক জিওফ্রে হোয়েরকে। এই বিয়েও খুব একটা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ১৯৬৫ সালে হোয়ের মৃত্যুবরণ করেন। ২০০৪ সালে দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই প্রসঙ্গে হলিংওয়ার্থ বলেন,
“আমি যখন কোনো কাহিনীর পেছনে থাকি, তখন তার মধ্যেই থাকি, গোল্লায় যাক স্বামী, পরিবার আর অন্য কেউ।”
অবসরের শেষের দিনগুলো
সাংবাদিক পেশা থেকে অবসর নিয়ে সাংবাদিক জীবনের নানা ঘটনা নিয়ে হলিংওয়ার্থ একাধিক বই লিখেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘থ্রি উইকস ইন পোল্যান্ড’ (১৯৪০), ‘দেয়ার ইজ আ জার্মান জাস্ট বিহাইন্ড মি’ (১৯৪২), ‘দি অ্যারাবস এ্যান্ড দি ওয়েস্ট’ (১৯৫২), ‘মাও এ্যান্ড দ্য মেন এগেইনস্ট হিম’ (১৯৮৫) প্রভৃতি। জীবিত অবস্থায় একাধিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।

১৯৮২ সালে তিনি অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ারে ভূষিত হন। ১৯৯৪ সালে সাংবাদিকতার জন্য ‘জেমস ক্যামেরন অ্যাওয়ার্ড’, ১৯৯৯ সালে সাংবাদিকতা এবং সমাজসেবায় উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ব্রিটিশ টেলিভিশনের একটি চ্যানেলের পক্ষ থেকে তাকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়। ২০১৭ সালের ১০ জানুয়ারি হংকংয়ে ১০৫ বছর বয়সে প্রয়াত হন এই অসম সাহসী সাংবাদিক। মৃত্যুর শেষদিন পর্যন্ত ঘুমাতে যাওয়ার আগে তার পাসপোর্ট আর জুতাজোড়া সবসময় হাতের কাছেই রাখতেন, যদি কখনও ডাক আসে কোনো যুদ্ধক্ষেত্রে যাওয়ার!