Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

রানী রানাভেলোনা: রক্ত দিয়ে হাত ধুয়েছিলেন যে রানী

“কখনো ভেবো না যেন যে আমি একজন দুর্বল এবং অজ্ঞ মহিলা, এই বিশাল সাম্রাজ্য আমার দ্বারা পরিচালনা সম্ভব না। আমি এখানে আমার জনগণের ভাগ্য ফেরাতে এবং নিজের নাম উজ্জ্বল করতে শাসন করবো। আমি কোনো ঈশ্বরের উপাসনা করবো না, বরং আমার পূর্বপুরুষেরাই আমার ঈশ্বর! সুদূরে সমুদ্র পর্যন্ত আমার রাজ্যসীমা এবং আমি আমার রাজ্যের এক চুলও ছেড়ে দেবো না!”

কথাগুলো রাজ্যাভিষেকের সময় বলেছিলেন একজন তেজস্বী রানী, যিনি ইতিহাসে পরিচিত হয়ে আছেন ‘রানাভেলোনা দ্য ক্রুয়েল’ নামে। আফ্রিকার দেশ মাদাগাস্কারের রানী প্রথম রানাভেলোনা ক্ষমতায় আরোহণ করেই ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, তিনি দুর্বল চিত্তের নারী নন, তিনি তেজস্বিনী। তার তেজোদীপ্ত হাতে তিনি শাসন করেছেন ভ্যানিলা মটরশুঁটির জন্য বিখ্যাত বিশাল এক দ্বীপ রাষ্ট্র মাদাগাস্কার। সেখানে তিনি মানুষের রক্তে দেশের আবর্জনা ‘ধুয়েছেন’! সমুদ্রতীরটি সাজিয়েছিলেন লম্বা লম্বা বাঁশের আগায় মানুষের মাথার খুলি গেঁথে দিয়ে! বাঁশের আগায় নীরবে লটকে থাকা খুলিগুলোই যেন কোনো নতুন মানুষ দেখলে সরব হয়ে উঠতো। আর জানিয়ে দিত একটা মৌন বার্তা, “সাবধান হে, এটা ‘ফিমেল ক্যালিগুলা’র রাজত্ব!”

রাণী রানাভেলোনা (১৭৭৮-১৮৫৮); source: historyofroyalwomen.com

১৭৮৭-১৮১০ সাল পর্যন্ত মাদাগাস্কারের রাজা ছিলেন রাজা আন্দ্রিয়ানাম-পোইনিমেরিনা। তার রাজ্যের এক গরীব গ্রাম্য দম্পত্তি আদ্রিয়ানসালামাঞ্জাকার ও রাবোদোনান্দ্রিয়ান্তোমপোর ঘরে ১৭৭৮ সালে মাদাগাস্কারের আম্বাতোমানৈনাতে জন্মগ্রহণ করেন প্রিন্সেস রানাভেলোনা মাঞ্জাকা (অপর নামগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর এবং সহজ বটে!)। তার ডাকনাম প্রিন্সেস রামাভো। কৃষকের মেয়ের নামের আগে ‘প্রিন্সেস’ এলো কী করে, তা ভাবছেন? দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া রানাভেলোনার ভাগ্য খুলে যায় তার শৈশবেই, যখন তার বাবা রাজা আন্দ্রিয়ানাম-পোইনিমেরিনাকে গুপ্তচর দ্বারা হত্যা করার একটি ষড়যন্ত্র প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন। এতে করে রাজা খুশি হয়ে নিজের ছেলে প্রিন্স রাদামার সাথে আদ্রিয়ানসালামাঞ্জাকার মেয়ে রানাভেলোনার বাগদান করিয়ে দেন। আর রানাভেলোনা হয়ে যান প্রিন্সেস রানাভেলোনা!

দরিদ্র কৃষকের পরিবারে জন্ম নেয়া রানাভেলোনা ছিলেন আমৃত্যু নিরক্ষর। যদিও তার শৈশবে মাদাগাস্কারে কোনো লিখিত ভাষার প্রচলন হয়নি, তথাপি তিনি রানী হবার পরেও আর শিক্ষাগ্রহণে কোনোরূপ আগ্রহ দেখাননি। অন্যদিকে রানীদের যেমন রূপ গল্পে বা ইতিহাসে শুনে থাকি, মুখশ্রীও তার তেমন দর্শনীয় ছিল না। ফলে রাদামার সাথে বাগদান তার জীবনে একপ্রকার অভিশাপ হয়ে আসে। একে তো কৃষকের নিরক্ষর কন্যা, তার উপর রূপবতী নন। ফলে রানাভেলোনাকে নিতান্ত বাধ্য হয়ে বিয়ে করেন রাদামা। দাম্পত্য জীবনেও রানাভেলোনার সুখ আসেনি। তাদের কোনো সন্তানও ছিল না। অন্যদিকে রাদামা রানাভেলোনার পর বিয়ে করেছিলেন গুনে গুনে আরো ১১টি! সম্ভবত রানাভেলোনার জন্য এটাই সান্ত্বনার বিষয় ছিল যে তিনি রাদামার ঘরে সকলের পূর্বে এসেছেন! আর দাম্পত্যসুখ বঞ্চিত রানাভেলোনা দিন দিন ক্ষমতালোভী ও কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে ওঠেন, যিনি তার ১১ সতীনের উপর চালাতেন নানা মানসিক অত্যাচার!

রাদামা এবং রানাভেলোনা; source: commons.wikimedia.org

রাজা আন্দ্রিয়ানাম-পোইনিমেরিনা তার মৃত্যুর আগে রাদামাকে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী ঘোষণা করে দিয়ে যান। আবার রাদামার পরে শুধুমাত্র রানাভেলোনার ঘরের সন্তানই সিংহাসনে বসবে এই ঘোষণাও দেন রাজা। কিন্তু রানাভেলোনা ছিলেন নিঃসন্তান। ১৮১০ সালে রাজা আন্দ্রিয়ানাম-পোইনিমেরিনা মৃত্যুবরণ করলে নিয়মানুযায়ী রাদামা ক্ষমতা গ্রহণ করেন। কিন্তু বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেননি রাদামা। ১৮২৮ সালে তার মৃত্যু হলে ক্ষমতায় আরোহণ করেন রানাভেলোনা। যেহেতু তার সন্তানই সিংহাসনের প্রকৃত উত্তরাধিকারী, তাই সন্তান না থাকায় সিংহাসনে বসতে তার কোনো বাধা ছিল না। কিন্তু রাদামার মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধে কিছু রাজকর্মীর মধ্যে। সিফিলিস কিংবা সিরোসিস থেকে শুরু করে চায়ের সাথে রানীর মিশিয়ে দেয়া সায়ানাইড, রাদামার মৃত্যুর জন্য ছড়াতে থাকে অদ্ভুত সব গল্প। তবে তার মৃত্যু হয়েছিল দুঃসহ যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। শোনা যায় অসহনীয় ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে নিজেই নিজের মুন্ডুচ্ছেদ করেন রাদামা!

রাদামার মৃত্যু নিয়ে সবচেয়ে বেশি সন্দেহবাদী ছিলেন তার ছোটভাই, যিনি রানাভেলোনাকে উচ্ছেদ করে ক্ষমতা গ্রহণের জন্য বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তবে রানাভেলোনা যে কতটা চতুর, তা বোঝা যায় বিদ্রোহ ঘোষণার পর। রাদামার আঠারো বছরের শাসনকালে দাম্পত্যসুখ বঞ্চিত রানাভেলোনা হয়ে উঠেছিলেন হিংসাপরায়ণ। আর মনে মনে কষেছেন ভবিষ্যতের ছক। সেই ছকের প্রাথমিক কাজটা তিনি করেছিলেন অত্যন্ত দক্ষতার সাথে। ক্ষমতা গ্রহণের আগে রাজপ্রাসাদের প্রায় ৩০ বছরের জীবনে তিনি বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন রাজ্যের সব প্রভাবশালী মন্ত্রী, তান্ত্রিক (উল্লেখ্য, তান্ত্রিকদেরকে সেখানে রাজারাও সমীহ করতেন!) এবং বড় বড় ব্যবসায়ীদের সাথে। ফলে প্রধান সেনাপতিদেরকেও হাত করে নিতে তার সময় লাগেনি বেশি। ৪৬ বছর বয়সে রানাভেলোনা যখন মাদাগাস্কারের সিংহাসনে আরোহণ করেন, তখন তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে সুবিধা করার কোনো সম্ভাবনাই ছিল না রাদামার ছোট ভাইয়ের। ফলে শীঘ্রই রাদামার ছোট ভাই মারা পড়লেন, রাজ্য থেকে বিতাড়িত হলেন কিংবা নির্বাসিত হলেন তার সমর্থকরা। আর রাদামার মৃত্যুর সকল গুজব ধামাচাপা দিয়ে ক্ষমতায় জেঁকে বসলেন রানাভেলোনা।

সৈন্যসামন্ত নিয়ে ভ্রমণ করছেন রাণী রানাভেলোনা; source: Historic Mysteries

যেদিন থেকে রানাভেলোনা মাদাগাস্কারের ক্ষমতায় বসেন, সেদিন থেকে মাদাগাস্কারে রক্তপাত একটা সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়। রাজ্যাভিষেক করেছিলেন তিনি একটি বিশাল ষাঁড়ের তাজা রক্তে হাত ধুয়ে। সেই হাত পরবর্তীতে যে কত সহস্রবার মানুষের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে, তারও হিসাব নেই। নৃশংসতার শুরুটা তিনি করেছিলেন নিজের পরিবার তথা রাজপরিবার থেকেই। রাদামার ছোটভাইকে হত্যা করার মাধ্যমে তার যে ‘রাজশত্রু’ নিধন মিশন শুরু হয়, রাজপরিবারের সর্বশেষ শুভাকাঙ্ক্ষীকে হত্যা করার মাধ্যমে তা শেষ হয়। রাদামা বা তার পূর্বসূরীদের চিহ্ন একেবারে মুছে দিয়ে রাজবংশের একমাত্র প্রতিনিধি হয়ে ওঠেন রানাভেলোনা। আর তার এই নিধনযজ্ঞও ছিল অত্যন্ত বর্বর। তান্ত্রিকরা তাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, রাজবংশের সদস্যদের রক্তপাত ঘটানো অমঙ্গল হতে পারে। রানাভেলোনা তাই হয়তো আর রক্তপাত ঘটালেন না। তিনি রাজপরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে হত্যা করালেন ফাঁসিতে ঝুলিয়ে কিংবা উপবাসে রেখে! হত্যা হয়েছে তো কী, রক্তপাত যে হয়নি!

রানাভেলোনা যখন ক্ষমতায় বসেন, তখন ইউরোপে উপনিবেশবাদ ডালপালা মেলতে শুরু করেছে সবে। এ সময় তিনি স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের সাথে নিজের সম্পর্ক আরো পাকাপোক্ত করতে সমর্থ হন, যারা ছিলেন তার ক্ষমতার প্রধান উৎস। ব্যবসায়ীরা ইউরোপীয় উপনিবেশ বা বাণিজ্য কোনোটাই পছন্দ করতেন না। রানাভেলোনা দ্রুত তাদেরকে সন্তুষ্ট করতে মাদাগাস্কার থেকে সকল বিদেশীদের বের করে দিলেন, উপনিবেশের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করলেন এবং ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সাথে বিদ্যমান ‘মাদাগাস্কার চুক্তি’ বাতিল করলেন। এ সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে সবচেয়ে নিন্দিত তার একটি পদক্ষেপ ছিল, খ্রিস্টধর্মের বিরুদ্ধে যাওয়া। তিনি মাদাগাস্কারের উপজাতীয় ঐতিহ্যবাহী ধর্ম ও সংস্কৃতির বিপরীতে খ্রিস্টান মিশনারিদের খ্রিস্টধর্ম প্রচার কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি। ফলে তিনি দেশে খ্রিস্টধর্ম নিষিদ্ধ করেন। অনেক খ্রিস্টধর্মাবলম্বীকে হত্যাও করেন। এমনকি তিনি ‘অগ্নিপরীক্ষা’ ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনেন। এই পন্থায় কোনো ব্যক্তির বিচার যুক্তি তর্ক আর প্রমাণের ভিত্তিতে নয়, বরং তাকে অত্যন্ত বিষাক্ত বিষ পান করানো হতো। যদি বিষপানের পরও কোনো ব্যক্তি বেঁচে যায় তাহলে সে নিষ্পাপ বলে প্রতীয়মান হবে! এ ব্যবস্থায় কোনো অভিযুক্ত ব্যক্তিই যে নির্দোষ প্রমাণিত হয়নি, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

পাহাড় থেকে ফেলে হত্যা করা হচ্ছে; source: Historic Mysteries

রানাভেলোনার এহেন আচরণে (চুক্তিভঙ্গ, খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধাচরণ) ক্ষুব্ধ হয়ে মাদাগাস্কারের বন্দর নগর তামাতায়ে আক্রমণ করে ফরাসীরা। রানাভেলোনার সৈন্যরা প্রতিরোধ গড়ে তুললেও যুদ্ধের এক পর্যায়ে শহরের ক্ষমতা প্রায় দখল করেই ফেলেছিল ফারাসী বাহিনী। কিন্তু সৈন্যদের মধ্যে ম্যালেরিয়া ছড়িয়ে পড়লে অধিকাংশ সৈন্য মারা যায় এবং ফরাসী বাহিনী পিছু হটে। ১৮৩৫ সালে ফরাসী বাহিনী ব্রিটিশদের সাথে জোট বেঁধে এক বিশাল সৈন্যবহর নিয়ে মাদাগাস্কারের দিকে পুনরায় রওনা দেয়। এত শক্তিশালী বাহিনীর সাথে যে সুবিধা করা যাবে না, সেটা অনুধাবন করতে পেরেছিলেন রানাভেলোনা। তিনি তখন ভয় দেখানোর কৌশল অবলম্বন করলেন। শতাধিক ইউরোপীয়র কাটা মুন্ডু লম্বা বাঁশের আগায় গেঁথে দিলেন সমুদ্রের দিকে মুখ করে। ব্যাস, এতেই কাজ হয়ে গেলো! ‘সাহসী’ ফরাসী-ব্রিটিশ জোটবাহিনী মাদাগাস্কারের সমুদ্রতটে নোঙর করে যখন কাটা মুন্ডুর এমন বীভৎস দৃশ্য দেখলো, তখন তারা যুদ্ধে না জড়িয়ে দেশে ফিরে যাবার সিদ্ধান্ত নিলো! এ ঘটনার পর রানাভেলোনা তার প্রজাদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।

source: dubsism.wordpress.com

রাণী রানাভেলোনার বয়স বাড়ার সাথে সাথে যেন মস্তিস্কবিকৃতিও ঘটতে শুরু করেছিল। প্রথমে তিনি দেশ থেকে খ্রিস্টানদের চলে যেতে বলেন এবং বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত করে হত্যা করেন কিছু মানুষ। কিন্তু এতে যে পরিতৃপ্ত হতে পারছিলেন না তিনি। তাই সরাসরি হিটলারিয় পন্থায় ইহুদি নিধনের মতো করে খ্রিস্টান নিধন শুরু করেন। এ সময় তিনি দশ হাজারের বেশি খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষ হত্যা করেন। তিনি এতটাই আক্রমণাত্মক হয়ে যান যে তার নিজের প্রজারাও অনেক সময় তুচ্ছ কারণে তার বর্বর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তার নির্যাতনের ধরনও ছিল গা শিউরে ওঠার মতো। এসব বর্বর পন্থার জন্যই তিনি ‘ফিমেল ক্যালিগুলা’ খেতাব পান। এখানে রানাভেলোনার কিছু বর্বর অত্যাচারের পন্থা উল্লেখ করছি।

  • অভিযুক্তকে উঁচু পাহাড় থেকে সমস্ত শরীর দড়ি দিয়ে বেঁধে ঝোলানো হতো। তারপর তার পরিবারের সদস্যদের দিয়ে জোরপূর্বক সে দড়ি কর্তন করানো হতো (পরিবারের অন্য সদস্যদেরকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে) এবং দড়িতে বাঁধা ব্যক্তিটি পাহাড় থেকে পড়ে মৃত্যুবরণ করতো!
  • প্রায় হাজারখানেক মানুষ হত্যা করা হয়েছিল জীবন্ত সেদ্ধ করে, পুড়িয়ে কিংবা মাটিতে পুঁতে ফেলে!
  • মুন্ডুচ্ছেদ করে হত্যা করা ছিল সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত পদ্ধতি।
  • ‘অগ্নিপরীক্ষায়’ বিষ পান করানোর ব্যাপারে উপরেও আলোচনা করা হয়েছে।
  • রানাভেলোনার আরো একটি নিজস্ব ‘মস্তিস্কপ্রসূত’ নির্যাতন পন্থা ছিল বন্দীদেরকে অমানুষিক পরিশ্রম করানো। তিনি মাদাগাস্কারের গহিন জঙ্গলে বিষাক্ত সাপ আর মশামাছি পূর্ণ স্থানে বন্দীদেরকে কাজে লাগিয়ে দিতেন। সেখানে তারা অসুখে, সাপের কামড়ে, ম্যালেরিয়ায় কিংবা প্রয়োজনীয় খাদ্যের অভাবে কাজ করতে করতে মারা যেত!

বন্দীদের দিয়ে করানো হচ্ছে অমানুষিক পরিশ্রম; source: Historic Mysteries

১৮৫৮ সালে যখন ৮০ বছর বয়সী রানী রানাভেলোনা মৃত্যুবরণ করেন, তখন তার মনে ছিল রাজ্যের প্রশান্তি। নিজের পৈশাচিকতার জন্য অনুতাপ তিনি বোধ করেননি। হয়তো করার অবকাশ পাননি। কারণ ইউরোপীয় উপনিবেশবাদকে সফলভাবে থামিয়ে দিয়ে আফ্রিকায় যে দৃষ্টান্ত তিনি স্থাপন করেছিলেন, সেটা নিয়েই নিজেকে সর্বদা সফল ভাবতে ভালোবাসতেন রাণী রানাভেলোনা। তার মৃত্যু পরবর্তী সময়ে আরো ৩০ বছর কোনো ইউরোপীয় মাদাগাস্কারে প্রবেশ করতে পারেনি। তার উত্তরসূরীদের মধ্যে আরো দুজন ‘রানাভেলোনা’ নাম গ্রহণ করলে তাকে রাণী ‘প্রথম রানাভেলোনা’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

ফিচার ছবিঃ badassoftheweek.com

 

Related Articles