ইংরেজি ‘কাল্ট’ শব্দের বাংলা অর্থ করলে দাঁড়ায় বিশেষ মতবিশ্বাস ও এই মতবিশ্বাসে বিশ্বাসী কোনো সংঘ। বইয়ের আলোচনায় হঠাৎ সংঘের আলাপ আনার ব্যাপারে কারো কারো ভ্রুকুঞ্চিত হতে পারে, তবে এটুকু নিশ্চিত করে বলা যায়- এটি একদমই অপ্রাসঙ্গিক আলাপ নয়। সংঘের আলাপ যেহেতু তোলা হলোই, আরেকটু বিশেষভাবে এই আলাপ এগোনো প্রয়োজন। তবে সারা বিশ্বে টিকে থাকা ভূরি ভূরি সংঘের আলাপ আমরা এখানে আনব না, আমরা প্রাসঙ্গিকভাবেই আজকের আলোচনায় শুধুমাত্র ভারতবর্ষের বিশেষ মতবাদে বিশ্বাসী সংঘগুলো আলোচনায় রাখব। তবে যে বই নিয়ে আজ কথা বলছি, সেখানে অবশ্য ‘কাল্ট’ এর অর্থ করতে গিয়ে সংঘ অপেক্ষা গুপ্তসংঘকেই জোরালোভাবে বোঝানো হয়েছে।
ভারতবর্ষের নানা সময়ে নানা রকম গুপ্তসংঘের অস্তিত্ব ছিল বলে নানা ঐতিহাসিকগণ একমত হয়েছেন। সেসব গুপ্তসংঘের পেছনে অবশ্য নানা রকম কাহিনী চালু আছে। সেসব কাহিনীর সবকটিই যে আবার সত্যি এমনটাও কিন্তু নয়। এসবের বেশিরভাগই এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে ছড়িয়েছে নানা লোককথার মাধ্যমে। তবে সেসব লোককথার মধ্যে বেশ কিছু সত্যের অস্তিত্বও একেবারে অস্বীকার করা যায় না। এই যেমন ঠগীদের কথাই ধরা যাক। ত্রয়োদশ থেকে উনিশ শতাব্দী অব্দি ঠগীরা বেশ প্রভাবের সাথেই ভারতবর্ষে টিকে ছিল। মূলত দেবী ‘কালী’র উপাসক হিসেবে তারা নিজেদের পরিচয় দিত। তবে ঠগীদের আসল পরিচয় ছিল সোজা বাংলায় একটা মাফিয়া চক্র। মূলত দলবেঁধে ঘুরে বেড়িয়ে ডাকাতি আর এরপর খুনই ছিল ঠগীদের নেশা। কোনো কোনো ঐতিহাসিকের মতে, প্রায় বিশ লক্ষ খুনের দায় আছে এই ঠগীদের। ভারতবর্ষে এরকম আরো যেসব গুপ্তসংঘের নাম জানা যায় সেসবের মধ্যে দাইয়ান, রাজনীশপুরাণ আর ব্রাহ্মকুমারীরাও উল্লেখযোগ্য।
বইয়ের আলোচনায় গুপ্তসংঘের আলাপ তোলার কারণ ব্যাখ্যা করা যাক এবার। রবিন জামান খান রচিত ‘২৫শে মার্চ’ আসলে এরকমই এক গুপ্তসংঘ ঘিরে আবর্তিত এক বই। বইয়ে তিনি যে গুপ্তসংঘের উপর আলোকপাত করেছেন, সেটারও অস্তিত্ব হিসেবে তিনি দেখিয়েছেন এই ভারতবর্ষকেই। বইয়ের শুরুতেই তিনি অবশ্য পরিষ্কার করেছেন, ভারতবর্ষে নানা রকম গুপ্তসংঘের অস্তিত্ব থাকলেও তিনি যে গুপ্তসংঘের কথা বইয়ে বলেছেন, সেটা নিতান্তই কাল্পনিক। ‘লেখকের কথা’ অংশেই সেটার প্রমাণ পাওয়া যায়।
“ভারতবর্ষ জুড়ে একসময় বিভিন্ন গুপ্তসংগঠন এবং কাল্টের রাজত্ব ছিল। এমনকি ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধেও গড়ে উঠেছিল অসংখ্য বিদ্রোহী সংগঠন এবং গোপনসংঘ। কথিত আছে, প্রাচীন ভারতের এসব কাল্টের ভেতরে কিছু কিছু কাল্টের অস্তিত্ব এই একবিংশ শতাব্দীতেও টিকে আছে, যারা তাদের পুরনো অভ্যাস, রীতি-রেওয়াজ এবং রহস্য আজও সঙ্গোপনে ধরে রেখেছে। তবে এই বইতে বর্ণিত মূল কাল্টটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক।”
বইয়ের চরিত্র
‘পঁচিশে মার্চ’ একটি ঐতিহাসিক থ্রিলার হওয়ায় এই বইয়ের চরিত্রগুলোর সময় মোটেও একটি নির্দিষ্ট ফ্রেমে বাঁধা থাকেনি। বইয়ের চরিত্রগুলোর মোট সময়ের ব্যপ্তি তাই অনেক বেশি অংশ জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। আসলে শুধু চরিত্র নয়, বইয়ের কাহিনীর সময়ও অনেক বেশি টাইমফ্রেমে ছড়ানো।
হাসান
বইয়ের মূল যে চরিত্রগুলো পুরো উপন্যাসে ছড়িয়ে রয়েছে, তাদের একজন হাসান। হাসান মূলত একজন উন্নাসিক সাংবাদিক যে কিনা ফ্রিল্যান্স ভিত্তিতে কাজ করে। ক্যারিয়ারের শুরুতে একটি নির্দিষ্ট পত্রিকার হয়ে কাজ করলেও পরে এক অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়িয়ে সে কাজটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। অবশ্য বইতে পাঠকের সাথেও হাসানের পরিচয় হয় আরেক অপ্রীতিকর ঘটনার মধ্য দিয়ে, যা আদতে একটি খুন। পুরো বইয়ে হাসান চরিত্রটি স্বমহিমার একটি জায়গা দখল করে থাকে। বইয়ের অনেকগুলো পুরুষ চরিত্রের মাঝে কোন চরিত্রকে ‘নায়ক’ আখ্যা দেওয়া যায় সেটি নিয়ে খানিকটা দ্বিধা থাকলেও ‘হাসান’ চরিত্রের মাঝে পুরো বই জুড়েই আসলে হিরোইজমের অভাব ছিল না। বরং বলা যায়, বইয়ের বেশ কিছু জায়গায় হাসানের বুদ্ধিমত্তা পাঠককে বেশ চমৎকৃত করবে।
অরনী
বইয়ের আরেকটি মুখ্য চরিত্র অরনী। সে আমেরিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে। ‘অরনী’ মূলত বইতে হাসানের সহচরিত্র হিসেবেই বিরাজ করে। বইয়ের শুরুতেই দেখা যায়- মায়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে আমেরিকা থেকে ছুটে আসে অরনী। তবে দেশে ফিরেই তাকে একটি বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখে পড়তে হয়। বলা যায়, এই ঘটনা দিয়েই আসলে অরনীর পুরো গল্পে প্রবেশ ঘটে। এরপর গল্পের প্লট এগিয়ে গেছে এই কাহিনীর ছকে বেঁধেই। অরনী চরিত্রটির মাঝে কখনও কখনও নিজ সত্তা নিয়ে বেশ সজাগ ভূমিকা চোখে পড়ে। যেমন- বইয়ের কোনো কোনো জায়গায় নারী বিষয়ক হেয় কথার শক্ত প্রতিবাদ করতে দেখা যায় অরনীকে। সেই হিসেবে অরনীকে আধুনিক মননের একটি চরিত্র বললে অবশ্য ভুল হবে না। তবে এই মননের সাথে অরনীকে বেশ শক্ত একটি চরিত্র হিসেবেও দাঁড় করিয়েছেন লেখক। হাসানের সহচরিত্র হিসেবে কাজ করলেও তাই বুদ্ধিমত্তা আর শক্তিমত্তায় ‘অরনী’ চরিত্রটি ‘হাসান’ চরিত্র থেকে একদমই পিছিয়ে নেই। খুব সম্ভবত লেখক যখন ‘অরনী’ চরিত্রের ছক কষেছিলেন, সেখানে লিঙ্গবিষয়ক বৈষম্য দূর করতে চেয়েছিলেন। তবে এসব কিছু ছাড়িয়ে সবচেয়ে চোখে যা পড়ে তা হলো অরনীর সাহস। সাহসের দিক দিয়ে অরনী কখনও কখনও বইয়ের সব চরিত্রকেও ছাড়িয়ে যায়।
মনিরুজ্জামান
মনিরুজ্জামান চরিত্রের সময় মূলত ১৯৭১ সাল। আরো বিশেষভাবে বললে ১৯৭১ সালের পঁচিশে মার্চের কালরাত্রি। বইয়ে মনিরুজ্জামান চরিত্রের মধ্যে জেদি এবং দুঃসাহসী মনোভাব চোখে পড়ে। তবে তার যে গুণ পাঠককে সবচেয়ে বেশি নাড়া দেবে সেটি তার বন্ধুবাৎসল্য। বন্ধুপ্রতিম এই মনিরুজ্জমান কঠোরতার পাশাপাশি কোমলতাতেও সিদ্ধহস্ত। আসলে মনিরুজ্জামান একটি পরিস্থিতির দাবি মেটানো চরিত্র। পঁচিশে মার্চের ভয়াল রাতে কখনও তিনি নিজের কঠোর রূপ সামনে নিয়ে আসেন, আবার কখনও তার মধ্যে নিজ স্ত্রী আর ছাত্রের প্রতি দেখা যায় অপরিসীম মমতা। মনিরুজ্জামান পেশাগতভাবে এই বইয়ে একজন শিক্ষক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতাকালে পঁচিশে মার্চের কালরাত্রিতে পাকিস্তানী মিলিটারির ত্রাসের সম্মুখীন হন তিনি। লেখক মূলত এই চরিত্রের মাধ্যমেই ঐ ভয়াল রাতে পাকিস্তানী মিলিটারির চালানো নির্মম হত্যাযজ্ঞের বর্ণনার চেষ্টা করেছেন। অকুতোভয় সাহস, অসীম মনোবল, আর প্রখর বুদ্ধিদীপ্ত আচরণ বইয়ে ‘মনিরুজ্জামান’কে একদম আলাদা করে রেখেছে।
অন্যান্য চরিত্র
গল্পের প্রয়োজনে বইয়ে আরো বিভিন্ন চরিত্রের সমাহার ঘটেছে। সেসব চরিত্রের বেশিরভাগই পার্শ্বচরিত্র হিসেবে থেকে গেছে, আবার কোনো কোনো চরিত্র বিচরণ করেছে পুরো গল্প জুড়ে। আসলে ঐতিহাসিক এই থ্রিলারে প্রতিটি চরিত্রই নিজ নিজ ভূমিকা পালন করে চলে। আবার লেখককেও পরিস্থিতির দাবি মেটাতে নানারকম চরিত্রের আশ্রয় নিতে হয়েছে। যেমন, পঁচিশে মার্চের দৃশ্য বর্ণনা করতে গিয়ে লেখক এখানে পাকিস্তানি মিলিটারির নানা রকম চরিত্র তৈরি করেছেন। আবার সিপাহী বিদ্রোহ এবং সিপাহী বিদ্রোহ পরবর্তী সময়ের ক্ষুদ্র দৃশ্য বর্ণনা করতে গিয়ে লেখক এখানেও নানা ঐতিহাসিক চরিত্রের আশ্রয় নিয়েছেন। তবে পার্শ্ব-চরিত্রের মধ্যে পুরো দৃশ্য জুড়ে বিচরণ করা চরিত্র মূলত আবু, কবির ও আফরোজা। এর মধ্যে আফরোজা চরিত্রের উপস্থিতি পুরো গল্পে বেশ চমকপ্রদভাবে দেওয়া হয়েছে। গল্পের শুরুতেই আফরোজার বিয়োগান্তক পরিণতি বর্ণনা করা হলেও মূলত পুরো গল্পেই আফরোজা থেকে গেছে নিজের কর্মগুণেই।
কাহিনী
‘পঁচিশে মার্চ’ মূলত একটি ঐতিহাসিক থ্রিলার। গল্পের শুরুই হয় মূলত সিপাহী বিদ্রোহের সময়কার আন্টাঘর ময়দান দিয়ে। আন্টাঘর ময়দান ঘুরে গল্পে কখনও পঁচিশে মার্চের কালরাত্রি, আবার কখনও বর্তমান সময়ের প্লটও ঘুরপাক খেয়েছে। তবে মূল গল্পে দেখা যায় আফরোজার খুনের ফলে দেশে ছুটে আসে আফরোজার মেয়ে অরনী। দেশে ফিরেই অরনী নানারকম ঝামেলার সম্মুখীন হতে থাকে। তবে অরনীর কাছে সবচেয়ে বড় ধাঁধা হয়ে দেখা দেয় মূলত দুটো জিনিস— মৃত্যুর সময়ে আফরোজার রেখে যাওয়া একটা নোট, এবং আফরোজার খুনের দায়ে অভিযুক্ত আসামী। আসলে গল্পের শুরুতেই আফরোজার খুনের দায়ে গ্রেফতার করা হয় হাসানকে। এদিকে হাসানের সাথে আফরোজার কোনো বিরোধ তো ছিলই না, উল্টো আফরোজার সবচেয়ে কাছের মানুষ ছিল হাসান। অরনীর কাছে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দেয়- হাসান কেন আফরোজাকে খুন করতে যাবে? গল্পে অবশ্য হাসানের প্রতি অরনীর প্রবল বিশ্বাস চোখে পড়ে, আর এ কারণেই হয়তো অরনী হাসানের খুন না করার স্বীকারোক্তিকে বিশ্বাস করে ফেলে। তবে হাসানকে বিশ্বাস করার পর অরনী মূলত হাসানকে নির্দোষ প্রমাণ করতে বেশ কিছু শক্ত পদক্ষেপ নেয়, আর এখানেই গল্পের শুরু। অবশ্য নিজের মায়ের খুনী হিসেবে যে গ্রেফতার হয়েছে, তাকে সাহায্য করতে চাওয়ার ব্যাপারটা অরনীর জন্য শুরুতে খুব একটা সহজ ছিল না।
গল্পে দেখা যায়- আফরোজার মৃত্যুরহস্যের উদঘাটন করতে গিয়ে কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে আসে কেউটে। অরনী আর হাসানের সামনে ঐতিহাসিক এক গুপ্তসসংঘের ধাঁধা সামনে এসে পড়ে। এই ধাঁধার প্রস্তুতকারক ছিলেন আফরোজা নিজেই। মূল গল্পের পুরোটাই আবর্তিত এই গুপ্তসংঘের ধাঁধা, আর এই ধাঁধার উত্তর নিয়েই। ধাঁধার উত্তর খোঁজার জন্য হাসান আর অরনীর ছুটে চলাটাই এই গল্পের মূল প্লট। তবে প্লটকে আরো আকর্ষণীয় করতেই হয়তো দেখা যায়— অচেনা কোনো এক আগন্তুক পিছু নেয় এই দুজনের। গল্পের শুরু এরপরই!
পাঠ প্রতিক্রিয়া
’২৫ শে মার্চ’ এর সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক মূলত ইতিহাসের মিশেলে গল্প বলে যাওয়ার ছক। লেখক শুরুতেই একটি ঐতিহাসিক ঘটনা দিয়ে বই শুরু করায় পাঠকের কাছে বইটি শুরুতেই আকর্ষণীয় রূপে উপস্থাপিত হয়েছে। বইয়ের আরেক চমকপ্রদ বৈশিষ্ট্য হলো- তিনটি টাইমলাইন একই সুতোয় বেঁধে দিয়েছে বইটি। উনিশ শতকে শুরু হওয়া একটি কাল্ট ও মিথ কীভাবে বিশ শতকের মুক্তিযুদ্ধের সময় অব্দি টিকে থাকে আর সেটাই বা কীভাবে একুশ শতকের একজনের খুনের কারণ হয়— এই প্রশ্নই গল্পের মূল উপজীব্য। সিপাহী বিদ্রোহ, মুক্তিযুদ্ধ আর বর্তমান সময়— তিন শতকের তিনটি টাইমফ্রেমকে এক করার ক্ষেত্রে লেখক এককথায় দারুণ মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। তবে শুধু এক করেই লেখক থেমে থাকেননি, এই টাইমফ্রেমের ছকেই লেখক একটি থ্রিলার গল্পও রচনা করে ফেলেছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যেটা হয়, ইতিহাসের আধিক্য পাঠকের মনে বিরক্তির উদ্রেক ঘটায়। তবে ‘২৫ শে মার্চ’-এর ক্ষেত্রে ইতিহাস আশ্রিত থ্রিলার হওয়া সত্ত্বেও ইতিহাসের ঘটনাগুলো লেখক ফিকশনের মতো করে বর্ণনা করায় এই ইতিহাসের বিরক্তি পাঠক সচেতনভাবে উপচে যেতে পারবে।
তবে ইতিহাসের বিরক্তি এড়াতে পারলেও লেখার সময় লেখকের তাড়াহুড়াতে কিছুক্ষেত্রে সাহিত্যশৈলীর অভাব চোখে পড়ে। এটা পাঠকের বিরক্তির কারণ হলে সেক্ষেত্রে পাঠককে একদমই দোষ দেওয়া যায় না। লেখক সম্ভবত বইটি খুব দ্রুতই লিখতে চাচ্ছিলেন। কিছুক্ষেত্রে ঘটনা বর্ণনার ক্ষেত্রে যথেষ্ট বর্ণনার অভাবও চোখে পড়ে, পাঠককে এক্ষেত্রে পুরো দৃশ্যটা নিজের মতো করে বর্ণনা করে নিতে হয়। আবার কোনো কোনো জায়গায় ঘটনা বর্ণনার সময় লেখকের অসচেতনতাও প্রকটভাবে চোখে পড়ে। যেমন- বইয়ের একটা জায়গায় দেখা যায়— একটি চরিত্র শুধু একটা পাসওয়ার্ড দিয়েই একটা ইমেইল একাউন্টে লগইন করে ফেলে, যে ইমেইল তার নিজের ছিল না। কিন্তু ইমেইল লগ ইনের ক্ষেত্রে তো কোনোভাবেই শুধুমাত্র পাসওয়ার্ড থাকলে হবে না, সেই ডিভাইসেরও একটা এক্সেস থাকা লাগবে যা দিয়ে মূল ইমেইলে লগ ইন করা হয়েছিল। লেখক এসব ছোটখাট ব্যাপার এড়িয়ে গেছেন। আবার কোনোখানে দেখা যায়- একটি চরিত্র বন্দুক ধরে গুলি করার পর লেখক বলেছেন চরিত্রটির হাতে নাকি হাতকড়া পরানো ছিল। বইয়ের এসব জায়গা বড্ড বেশি অবাস্তব ছিল।
লেখক সম্বন্ধে
‘২৫শে মার্চ’ বইটির লেখক রবিন জামান খান। তার জন্ম ময়মনসিংহ শহরে হলেও বাবার চাকুরির সুবাদে বড় হয়েছেন বিভিন্ন জেলায়। সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন তিনি। তবে এরপরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাতত্ত্বে তিনি দ্বিতীয় মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ‘২৫শে মার্চ’ মূলত তার প্রথম মৌলিক থ্রিলার উপন্যাস। মৌলিক লেখার পাশাপাশি তিনি অনুবাদের কাজও করে থাকেন। তার মৌলিক থ্রিলার উপন্যাস মগরাজ, শব্দজাল, ২৫শে মার্চ, সপ্তরিপু, ব্ল্যাক বুদ্ধা, ফোরটি এইট আওয়ার্স, দিন শেষে, আরোহী ও অন্ধ প্রহর।