বর্তমানে শ্রেণি পার্থক্য এবং বৈষম্য নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো বেশ আলোচিত হচ্ছে, মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে। ‘নাইভস আউট’ বা ‘প্যারাসাইট’ এক্ষেত্রে খুব ভালো দুটি উদাহরণ হতে পারে। কারণ দর্শক এবং সমালোচক উভয়ের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়েছে এগুলো। দুটি মুভিতেই পরিচালকরা আমাদের সমাজে বিদ্যমান দুটি সম্পূর্ণরূপে পৃথক শ্রেণির জীবনপ্রণালীর দিকে দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এই দুই শ্রেণির সংঘাত প্রাচুর্য এবং দীনতার সংঘাত। এক শ্রেণির সবকিছুই আছে, অন্য শ্রেণির কিছুই নেই।
২০১৯ সালের সিনেমা ‘নাইভস আউট’-এ আমরা দেখি, সকল সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও একদল মানুষ স্বার্থপর আচরণ করছে। তাদের চরিত্রের খারাপ দিকগুলো যেন আশেপাশের মানুষের বুকে আসলেই ছুরি বসিয়ে দিতে উদ্যত হয়। এছাড়া অভিবাসী শ্রমিকদের ব্যাপারে তথাকথিত উন্নত দেশের নাগরিকরা কতটা উদাসীন, তা-ও উঠে এসেছে এখানে। অপরদিকে ‘প্যারাসাইট’ (২০১৯) আমাদের দেখায় এক ধনী ও এক গরিব পরিবারের গল্প। এই দুই পরিবারকে ঘিরে শ্রেণি সংঘাত ও বৈষম্যের ন্যারেটিভকে সামনে রেখে অনবদ্য এক সাসপেন্স থ্রিলার তৈরি করেছেন বর্তমান সময়ের অন্যতম আলোচিত পরিচালক বং জুন-হো। দুটি মুভি পৃথিবীর দুই প্রান্তের প্রতিনিধিত্ব করে। ফলে, পৃথিবীতে বিরাজমান সামগ্রিক পরিস্থিতির একটি পরিষ্কার চিত্র ধরা দেয় দর্শকের চোখে।
জুলিয়ানো ডর্নেলস এবং ক্লেবের মেনডোনসা ফিলিও নির্মিত একই বছরের মুভি ‘বাকুরাউ’ এই ট্রেন্ডের সাথে খাপ খেয়ে যায় পুরোপুরি। এটি সামাজিক আত্মমূল্যায়নকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যায় এবং ঔপনিবেশিকতা, দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতি ও আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিকর প্রভাব সরাসরি দেখায়। আজ আমরা এই সিনেমা নিয়েই আলোচনা করতে চলেছি।
পর্তুগিজ শব্দ ‘বাকুরাউ’ অর্থ নিশাচর পাখি, এছাড়া শব্দটি দ্বারা ‘ঘরে ফেরার শেষ সুযোগ’; এই ভাবটিও প্রকাশিত হয়। অ-ব্রাজিলীয় দর্শকদের আগ্রহ সৃষ্টিতে নামটির ভূমিকা রয়েছে। ২০১৯ সালের ১৫ মে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমার দৈর্ঘ্য ১৩২ মিনিট। কান চলচ্চিত্র উৎসবে পাম ডি’অরের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মুভিটি এবং জিতে নেয় জুরি পুরস্কার। এখানে পর্তুগিজ ও ইংরেজি উভয় ভাষার ব্যবহারই পরিলক্ষিত হয়েছে। বক্স অফিসে এটি আয় করেছে ৩.৫ মিলিয়ন ডলার। পরিচালনার পাশাপাশি চিত্রনাট্যও লিখেছেন ফিলিও-জুলিয়ানো জুটি। চিত্রগ্রাহকের দায়িত্ব পালন করেছেন পেদ্রো সোতেরো এবং সঙ্গীত পরিচালনায় ছিলেন মাতেয়াস আলভেজ-টোমাজ আলভেজ সৌজা জুটি।
মুভিটির আইএমডিবি রেটিং ৭.৪। রটেন টমাটোজের টমেটো মিটারে ফ্রেশনেস ৯৩% এবং অডিয়েন্স স্কোর ৮৫%। দ্যা ক্রাইটেরিওন কালেকশন এবং ক্যানোপি, এই দুইটি স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে দেখা যাবে বাকুরাউ।মুভি হিসেবে বাকুরাউ কিছুটা অদ্ভুত প্রকৃতির। স্প্যাগেটি ওয়েস্টার্ন বা থ্রিলার ক্যাটাগরিতে ফেলা হলেও এখানে আর্টহাউজ, স্ল্যাশারহাউজ ও সায়েন্স ফিকশনের উপকরণেরও দেখা মেলে।
গল্পের সময় অদূর ভবিষ্যত এবং প্রেক্ষাপট ব্রাজিলের নির্জন, প্রত্যন্ত এক অঞ্চলে অবস্থিত ‘বাকুরাউ’ নামক এক ছোট্ট শহর। চারপাশে নিষ্প্রাণ, জনশূন্য প্রান্তরের ছড়াছড়ি থাকলেও ছায়া সুশোভিত এবং দেখতে অনেকটা গ্রামের মতো এই শহরেই তেরেসার (বারবারা কোলেন) বাড়ি। দাদীর শেষকৃত্য উপলক্ষে এখানে ফেরে সে, কিন্তু আশপাশে ঘটে যাওয়া নানা অদ্ভুতুড়ে ঘটনা তাকে বিচলিত করে। সাথে যুক্ত হয় তার প্রতিবেশীদের অস্বাভাবিক আচরণ, যা তাকে আরো ঘাবড়ে দেয়। বেশ কয়েকমাস ধরেই সরকারি সাপ্লাইয়ের পানি আসছে না গ্রামে। তাই এক ট্রাকচালকের মাধ্যমে পানি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই ট্রাকের উপর একদিন হামলা চালানো হয়।
হঠাৎ করে মানচিত্র এবং জিপিএস থেকে উধাও হয়ে যায় বাকুরাউ, মোবাইলের নেটওয়ার্কও পাওয়া যায় না! এমতাবস্থায় অপরিচিত এক দম্পতিকে শহরের ভেতর দিয়ে বাইক চালিয়ে যেতে দেখা যায়। আসলে হচ্ছেটা কী এখানে? এখানকার বাসিন্দাদের উপর কি আক্রমণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে?
এসব প্রশ্নের খুঁজতে গেলে অনেক স্পয়লারের দেখা পাবেন এই লেখায়। তাই আগে মুভিটি দেখে নেওয়ার পরামর্শ থাকবে। তবে মুভি দেখে থাকলে বা এটি সম্পর্কে আরো বিস্তারিতভাবে জানার আগ্রহ থাকলে আসুন, আলোচনা এগিয়ে নেওয়া যাক।
ফিলিও-জুলিয়ানো জুটি তাদের এই সিনেমায় রাজনৈতিক বক্তব্য ও গল্পের ভারসাম্য রক্ষা করেছেন সুনিপুণ দক্ষতায়। তবে ‘নাইভস আউট’ বা ‘প্যারাসাইট’-এর মতো কেবল শ্রেণি সংঘাত এবং বৈষম্য দেখিয়েই তারা ক্ষান্ত হননি। বরং সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সরাসরি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে নামিয়ে দিয়েছেন এখানকার চরিত্রগুলোকে। বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে বাকুরাউয়ের বাসিন্দারা স্বতন্ত্র। এখানে আছে গম্ভীর স্বরের এক ডিজে, যে এলাকার ঘোষকের দায়িত্ব পালন করে এবং স্পিকারের মাধ্যমে বিভিন্ন সংবাদ লোকজনের কাছে পৌঁছে দেয়। আমরা কঠিন মুখাবয়বের স্থানীয় ডাক্তার ডোমিঙ্গাসকে (সোনিয়া ব্রাগা) দেখি, যে মদ্যপ অবস্থায় তেরেসার সদ্যপ্রয়াত দাদীকে গালাগাল করে।
তেরেসার সাবেক প্রেমিক প্যাকোতে (টমাস অ্যাকুইনো) এখনো এখানেই আছে। এছাড়াও আছেন তেরেসার শিক্ষক পিতা এবং তার ক্লাসভর্তি কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। একটা সময় আমরা দেখি পলাতক আসামী লুঙ্গাকে (সিলভেরো পেরেইরা), যে যুদ্ধে গ্রামবাসীদের নেতৃত্ব দেয়। একজন দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদকেও দেখা যায়। টনি জুনিয়র (থারডেলি লিমা) নামের এই স্থানীয় প্রতিনিধি বাকুরাউ বা তার বাসিন্দাদের নিয়ে একটুও মাথা ঘামায় না। প্রথমদিকে দর্শকের মনে হতে পারে, এখানে কেবল এসকল অদ্ভুতুড়ে চরিত্রের কাণ্ড-কারখানাই দেখানো হবে। কিন্তু সময় গড়ানোর সাথে উন্মোচিত হয় সিনেমার মূল থিম।
টনির মতো রাজনীতিবিদের অযোগ্যতা ও নির্মমতা প্রদর্শনের মাধ্যমে আসলে মূল ভিলেনদের আগমনের পথ সুগম করা হয়েছে। এরা একদল রক্তপিপাসু পশ্চিমা মার্সেনারি, যাদের নেতৃত্বে রয়েছে ঠাণ্ডা মাথার খুনি মাইকেল (উদো কিয়ের)। এরা এই শহরকে নিজেদের টার্গেট প্র্যাকটিসের জায়গার মতো ব্যবহার করে। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা, কেউই তাদের হিংস্রতা থেকে রক্ষা পায় না। ন্যারেটিভ থেকে এক ইঞ্চিও না সরে এই মার্সেনারিদের বর্ণবাদী আচরণ এবং মনুষ্যপ্রাণের প্রতি অবজ্ঞাকে সরাসরি দেখানো হয়েছে এই সিনেমায়, যা প্রশংসার দাবি রাখে।
এসব মার্সেনারি আসলে ব্রাজিলে দীর্ঘকাল ধরে চলমান নিষ্ঠুর ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রতিভূ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ এবং মুনাফালোভী স্থানীয় বা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান বহুকাল ধরে ব্রাজিলে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। এক্ষেত্রে তারা পরিবেশের ভারসাম্য বা মানুষের জানমালের তোয়াক্কা করে না। ফলে, একদিকে যেমন সেদেশের প্রাকৃতিক সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি মারা পড়ছে অসংখ্য মানুষ।
আবার, শ্বেতাঙ্গরা যে অন্য দেশের লোকদের নিজেদের সমকক্ষ ভাবে না, মানুষ হিসেবে তাদেরও যে অধিকার আছে। তা মানে না; এর স্বরূপও উঠে এসেছে এখানে, যা দক্ষিণ আমেরিকার বহু বছর ধরে বঞ্চিত ও শোষিত হওয়ার ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। দুনিয়াব্যাপী ঔপনিবেশিকবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের রূপ আসলে একই। উড়ে এসে জুড়ে বসা ঘাতকরা নিজেদের খেয়ালখুশিমতো স্থানীয়দের উপর অত্যাচার করে, তাদের রক্ত দিয়ে হোলিখেলায় মেতে ওঠে। যা এই মুভিতে প্রতীয়মান হয়েছে মার্সেনারিদের আচরণে। এভাবেই ‘বাকুরাউ’ পেয়েছে বিশ্বজনীনতা। মনোযোগী দর্শকদের এ সিনেমা আবারও স্মরণ করিয়ে দেবে আমাদের আশপাশের জগতের নির্মমতা সম্পর্কে।
সিনেম্যাটোগ্রাফার পেদ্রো সোতেরোর মতে, ‘বাকুরাউ’ আসলে ‘সেভেন সামুরাই’ (১৯৫৪) মুভির একটি রঙিন অ্যাডাপ্টেশনের মতো। তবে এখানে কোনো অভিজ্ঞ যোদ্ধাদল গ্রামবাসীর জন্য ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হবে না। বরং গ্রামবাসীকেই নিজেদের জন্মভিটা বাঁচাতে হবে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী এবং দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদদের হাত থেকে। আর ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচাগ্র মেদিনী’, এ অগ্নিমন্ত্রে বলীয়ান হয়ে গ্রামবাসীও ঝাঁপিয়ে পড়বে নিজের জন্মস্থান রক্ষায়।
এদুয়ার্দো সেরানোর এডিটিং দর্শককে একই সাথে স্তম্ভিত এবং হতবিহ্বল করার ক্ষমতা রাখে। মুভিতে ড্রাগের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে ড্রাগের নেশায় বুঁদ হয় এই শহরের বাসিন্দারা, এমনকি নিজ শহর রক্ষার যুদ্ধের আগেও তাদের ড্রাগ নিতে দেখা যায়। তাই এর ফলে যে সাইকেডেলিক আবহের সৃষ্টি হয়, তা সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে তার কাজে। দুই আলভেজ তাদের সঙ্গীতায়োজনে ইলেকট্রনিক এবং ব্রাজিলীয় শব্দের যে সংমিশ্রণ ঘটিয়েছেন, তা মুভির আবহকে বেশ ভালোভাবে পরিপূরণ করেছে।
গল্পের প্রেক্ষাপট এবং ঘটনাবলি যে ভবিষ্যতে ঘটছে, তা ভালোভাবে বোঝা গেছে তাদের সঙ্গীতায়োজনে। এক্ষেত্রে রিটা অ্যাজেভেদোর কস্টিউম ডিজাইনও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এখানে মাতৃ চরিত্রদেরকে সাদা কোট বা পোশাকে দেখা গেছে প্রায় সবসময়ই। শহরের অন্যান্য মানুষের ক্ষেত্রে দেখা গেছে বিচিত্র বর্ণের ট্যাংক টপ এবং শার্ট। ভিনদেশী ভিলেনদেরকে দেখা গেছে ক্যামোফ্লজ গিয়ারে সজ্জিত অবস্থায়। অপরদিকে লুঙ্গার পোশাক-পরিচ্ছদে ছিল ম্যাডম্যাক্স এবং ক্লাবওয়্যারের সংমিশ্রণ।
খামতির কথা বলতে গেলে বলতে হয় এর রানটাইমের কথা। গল্প বলার ধরনে দ্রুত এবং ধীরগতির অংশসমূহের তালমিল পুরোপুরি নিখুঁত না হওয়ায় ১৩২ মিনিটকেই অনেক দীর্ঘ মনে হয়েছে। আর মার্সেনারিদের পোশাক-পরিচ্ছদ, কথাবার্তার ধরন অনেকটাই জেনেরিক, ওভার দ্য টপ ছিল।
নিজের বক্তব্যের উপস্থাপনে ‘বাকুরাউ’ আপোষহীন। দর্শকের মনে প্রভাব ফেলার একটি সুযোগও হাতছাড়া করেনি এটি। তরুবিহীন প্রান্তরের মোহনীয় দৃশ্য বা ব্রাগা আর কিয়েরের মরণপণ লড়াইয়ের দৃশ্য; যেটিই হোক, এই মুভির মূল উদ্দেশ্য দর্শককে মুগ্ধ করা এবং ভাবানো৷ আর তাই এর পুরোটা জুড়েই রয়েছে ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ। এই ক্রোধ অন্যের কারণে নিজেদের স্বকীয়তা হারানোর এবং ব্যর্থ রাজনৈতিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। ব্রাজিলের বর্তমান রক্ষণশীল সরকার যে জোর করে বিভিন্ন অনুশাসন জনগণের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে, তার বিরুদ্ধে ‘বাকুরাউ’-এর মাধ্যমে আওয়াজ তুললেন জুলিয়ানো এবং ফিলিও। বিদেশী বেনিয়াদের কারণে ক্রমাগত যে ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে ব্রাজিল এবং অন্য কম শক্তির দেশসমূহ, তার বিরুদ্ধেও সোচ্চার ছিল ‘বাকুরাউ’।
এসব অত্যাচার এবং শোষণের বিরুদ্ধে লড়ার পথও দেখিয়েছে বাকুরাউয়ের বাসিন্দারা। শোষণ এবং অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে, নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে প্রয়োজন একতা। তাই নিজেদের পিতৃভূমি রক্ষা করতো জোট বেঁধেছে এখানকার লোকেরা।
‘বাকুরাউ’ মুভিতে যে শোষণের চিত্র দেখানো হয়েছে, তা সার্বজনীন। এর প্রমাণ আপনি পাবেন বিশ্বব্যাপী আমেরিকার খবরদারিতে, কাশ্মীরের বাসিন্দাদের সাথে ভারতের আচরণে, পাকিস্তান কর্তৃক বালুচিস্তানীদের বা চীন কর্তৃক উইঘুরদের শোষণে। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এই প্রমাণ পাবেন আদিবাসীদের সাথে তথাকথিত সচেতন লোকজন এবং বিদ্যমান ব্যবস্থার আচরণে। আর রাজনীতি ও সমাজব্যবস্থাকে তো ঘুণে ধরে ফেলেছে বহু আগেই।
এসকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পথও একটাই, একতা। নিজেরা এক হলে পৃথিবীর কোনো শক্তিই কোনো জাতি বা সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচার করতে পারবে না। এ বার্তাই তুলে ধরতে চেয়েছেন জুনিয়ানো-ফিলিও জুটি। গুটিকয়েক খামতির কথা বাদ দিলে বিষয়বস্তু এবং তার প্রকাশভঙ্গির দিক থেকে ‘বাকুরাউ’ একটি রত্ন। দর্শককে ভাবতে উৎসাহিত করা এই মুভি আরো বেশি মানুষের মনোযোগ পাওয়ার যোগ্য। তাই সময় করে দেখে নিতে পারেন এটি।