ব্ল্যাক অ্যাডাম: এক অ্যান্টি-হিরোর উপাখ্যান

ক্রাইসিস অন ইনফিনিট আর্থ এবং ফ্ল্যাশপয়েন্টের মেজর রিবুটের মধ্য দিয়ে যাওয়ায় ডিসির বিভিন্ন চরিত্রের অরিজিনে এসেছে নানাবিধ পরিবর্তন। পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগা সেসব চরিত্রের মধ্যে ডিসির অ্যান্টি-হিরো ‘ব্ল্যাক অ্যাডাম’ অন্যতম। রিবুট বা অন্যান্য কারণে ব্ল্যাক অ্যাডাম অরিজিনের বিভিন্ন সংস্করণ কমিক বইয়ের পাতায় উঠে আসলেও, আজ শুধু গুরুত্বপূর্ণ অরিজিনগুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে।

খন্দকে দাস হিসেবে বন্দী অ্যাডাম; Image Source: Warner Bros.

ব্ল্যাক অ্যাডামের বিভিন্ন অরিজিন

Fawcett Comics

কমিকের রূপালি পাতায় ব্ল্যাক অ্যাডামের সর্বপ্রথম আবির্ভাব ঘটে ১৯৪৫ সালে, Fawcett Comics এর অন্তর্ভুক্ত ‘The Marvel Family’ কমিক বইয়ের ইস্যু ১-এ। শ্যাজাম ও এর আনুষঙ্গিক চরিত্রগুলো তখন ডিসি কমিকসের অংশ ছিল না। অটো বাইন্ডার ও সি.সি. নামক দুজন কমিকবুক লেখকের হাত ধরেই উঠে আসে ব্ল্যাক অ্যাডাম চরিত্রটি। শ্যাজাম তখনও ‘ক্যাপ্টেন মারভেল’ নামে পরিচিত। দ্য মার্ভেল ফ্যামিলির ইস্যু ১ অনুযায়ী, বহুকাল পূর্বে প্রাচীন খন্দকে ‘টেথ-অ্যাডাম’ নামে সাধারণ এক লোক বাস করত। প্রভূত ইতিবাচক গুণাবলি এবং নৈতিকতাসম্পন্ন টেথ-অ্যাডাম সর্বদাই মন্দ কাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করত। সেটা একদিন চোখে পড়ে যায় জাদুকর শ্যাজামের। শ্যাজামও তখন তার ক্ষমতা অর্পণ করা এবং প্রাচীন মিশরের রক্ষাকর্তা হিসেবে একজন সুযোগ্য উত্তরাধিকার খুঁজছিলেন। টেথ অ্যাডামের চারিত্রিক গুণাবলি ও শিষ্টাচার মুগ্ধ করল শ্যাজামকে। তাই তাকে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে বাছাই করলেন শ্যাজাম।

টেথ-অ্যাডাম জাদু-শব্দ ‘শ্যাজাম’ উচ্চারণের সাথে সাথেই পরাক্রমশালী ব্ল্যাক অ্যাডামে রূপান্তরিত হয়। বলা হয়, ক্ষমতার সাথে সাথে নাকি অনেক সময় নৈতিক অবক্ষয়ও চলে আসে। ঠিক তেমনটাই ঘটল টেথ অ্যাডামের সাথে। নিজের অতিমানবীয় শক্তি প্রথমদিকে ভালো কাজে ব্যবহার করলেও পরবর্তীতে ওই নীতি থেকে সরে আসে সে। ক্ষমতার মোহ তাকে কলুষিত করে ফেলে। ব্ল্যাক অ্যাডামের মনে হলো তাকে বিশ্ব শাসন করতে হবে। সেজন্য প্রথমেই সে মিশরের তৎকালীন ফেরাউনকে হত্যা করে সিংহাসনে আসীন হয়।

ফেরাউনকে হত্যা করছে ব্ল্যাক অ্যাডাম। দ্য মারভেল ফ্যামিলি, ইস্যু ১; Image Source: Fawcett Comics.

এই ঘটনায় প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন শ্যাজাম। যেহেতু ব্ল্যাক অ্যাডামকে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, তাই তার ক্ষমতা আর ফিরিয়ে নেওয়া যাবে না। অনন্যোপায় হয়ে তিনি অ্যাডামকে মহাবিশ্বের সবচেয়ে দূরবর্তী নক্ষত্রে নির্বাসিত করে দেন। সেখান থেকে পৃথিবীতে ফিরে আসতে ব্ল্যাক অ্যাডামের পাক্কা পাঁচ হাজার বছর সময় লেগে যায়। ফিরে আসার পর সে দেখল, শ্যাজাম তার জায়গায় তিনজন নতুন চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করেছেন। তারা হলো ক্যাপ্টেন মার্ভেল, ক্যাপ্টেন মার্ভেল জুনিয়র, এবং মেরি মার্ভেল। তখন ব্ল্যাক অ্যাডামের সাথে প্রচণ্ড সংঘর্ষ বাধে মারভেল ত্রয়ীর। যেহেতু তাদের সকলের শরীরেই দেবতাদের স্বর্গীয় শক্তি বইছে, তাই কোনো পক্ষই রণে ভঙ্গ দিতে রাজি নয়। কোনো মীমাংসা ছাড়া লেগেই রইল যুদ্ধ। তখন বিলি ব্যাটসনের চাচা আঙ্কল মারভেলকে এক কৌশল শিখিয়ে দেন শ্যাজাম। সেই কৌশল প্রয়োগ করেই ব্ল্যাক অ্যাডামের মুখ দিয়ে জাদু-শব্দ ‘শ্যাজাম’ বলাতে সক্ষম হয় আঙ্কল মারভেল। সাথে সাথে পূর্বের মনুষ্য-রূপে ফিরে আসে ব্ল্যাক অ্যাডাম। যেহেতু পাঁচ হাজার বছর ধরে সে একবারও সাধারণ মানুষের রূপে ফিরে আসেনি, আর মানুষের আয়ুও এত দীর্ঘ নয়, তাই সাথে সাথে ধুলোয় পরিণত হয় তার কঙ্কাল।

দ্য মারভেল ফ্যামিলি কমিকে অভিষেক ঘটে ব্ল্যাক অ্যাডামের; Image Source: Fawcett Comics.

Pre-crisis

ডিসি কমিকস ফোসেট কমিকসের অনেক চরিত্রের স্বত্ব কিনে নিলে এদের মধ্যে শ্যাজাম এবং তার আর্ক-এনিমি ব্ল্যাক অ্যাডামও ডিসির খাতায় নাম লেখায়। ফোসেট কমিকসে যেখানে ব্ল্যাক অ্যাডামের কাহিনি শেষ হয়, সেখান থেকেই শুরু করে ডিসি কমিকস। সেখানে ডক্টর সিভানা নামে এক ডক্টর বিশেষ এক মেশিনের মাধ্যমে তাকে পুনরায় জীবিত করে। জীবন ফিরে পেয়েই সে প্রথমে মেশিনের দফারফা করে।

ডক্টর সিভানা; Image Source: DC Comics.

Shazam! কমিক বইয়ের ২৮ নং ইস্যু অনুযায়ী, সিভানার পরামর্শে ব্ল্যাক অ্যাডাম ‘রক অভ ইটার্নিটি’ নামক স্থানে যেতে চায় শ্যাজামকে খুন করতে। কিন্তু দুর্ঘটনাবশত ব্ল্যাক অ্যাডাম ১৭৭৬ খ্রিষ্টাব্দে সময় পরিভ্রমণ করে ফেলে। কিন্তু ক্যাপ্টেন মারভেল তাকে আবার বর্তমান সময়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। ওখানে আবারও তুমুল সংঘর্ষ বাধে দুজনের মধ্যে। পুনরায় রক্ষাকর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন আঙ্কেল মারভেল। কৌশল খাটিয়ে ব্ল্যাক অ্যাডামকে জাদু-শব্দ ‘শ্যাজাম’ উচ্চারণ করিয়ে ফেলেন। ফলে সাথে সাথে ক্যাপ্টেন মারভেলের কাছে ধরাশায়ী হয় ব্ল্যাক অ্যাডাম। ক্যাপ্টেন মারভেলের কাছে বার বার হেরে যাওয়ার তেতো স্বাদ ভোগ করার পর ভিলেন ব্ল্যাক অ্যাডাম মাস্টার মাইন্ডের ‘Monster Society of Evil’ সংঘে যোগদান করে। সেখানে জাদুর অপদেবতা ‘Oggar’ মিশরের ধুলো-বালি থেকে তৈরি করে বৃহৎ এক পিশাচ বাহিনী, এবং ব্ল্যাক অ্যাডামকে বানিয়ে দেন তাদের দলপতি।

প্রি-ক্রাইসিসে ‘নাবু’ নামক এক কসমিক সত্তার সাথে তার পরিচয় হয়। ডক্টর ফেট তার ক্ষমতা পেয়েছিলেন এই নাবুর কাছ থেকেই। ফলে একসময় সে ডক্টর ফেটেরও ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে। সময়ের সাথে সাথে সেই তালিকায় যুক্ত হয় হকম্যানের নামও। হক ম্যান ও ডক্টর ফেট, দুজনেই জাস্টিস সোসাইটি অভ আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। পরবর্তীতে অ্যাডামের জন্মভূমি খান্দাক ধ্বংস হয়ে গেলে ব্ল্যাক অ্যাডাম নিজের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। ফলে জাদুকর শ্যাজাম খ্যাপাটে ব্ল্যাক অ্যাডামকে বন্দি করতে বাধ্য হয়। এখানে শেষ হয় তার প্রি-ক্রাইসিস অরিজিন।

ডক্টর ফেট; Image Source: Alpha Coders.

The Power of SHAZAM!

১৯৯৫ সালে মুক্তি পাওয়া এই কমিকের ১০ নং ইস্যুতে ব্ল্যাক অ্যাডামকে দেখানো হয়েছে কিছুটা নয়া তরিকায়, তার অরিজিনে কোনো পরিবর্তন না এনে। পার্থক্য ছিল- এখানে শ্যাজামের পিশাচ কন্যা ব্লেজ ব্ল্যাক অ্যাডামকে প্রাচীন মিশরীয় দেবতাদের ক্ষমতা উপহার দিয়েছিল। এ কারণে শ্যাজাম ব্ল্যাক অ্যাডামের কাছ থেকে শক্তিশালী ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করতে পারেনি। এখানে টেথ-অ্যাডাম জন্মগ্রহণ করেছিল ১১ সেপ্টেম্বর, ১২৭৯ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে, ফেরাউন দ্বিতীয় র‍্যামেসিসের ঘরে। এই ইস্যুতে ব্ল্যাক অ্যাডামকে পথভ্রষ্ট করার মূল কারিগর ছিল ব্লেজ। ফারাওকে গদিচ্যুত করার কুপরামর্শ ব্লেজই ব্ল্যাক অ্যাডামের কানে দিয়েছিল। বহু চেষ্টার পর শ্যাজাম ব্ল্যাক অ্যাডামের ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়ে একটা কবজে মুড়িয়ে ফেলে। এবং সেই কবজ আর ব্ল্যাক অ্যাডামকে ফারাও দ্বিতীয় র‍্যামেসিসের সমাধিখানায় বন্দী করে রাখে।

The New 52

ফ্ল্যাশপয়েন্টের রিবুটে ২০১৩ সালে আবারও পরিবর্তন আসে ব্ল্যাক অ্যাডামের অরিজিনে। সেখানে প্রাচীন খন্দক ছিল জাদুকর শ্যাজামের জন্মস্থান। খন্দকের অবস্থা তখন মারাত্মক শোচনীয়। চারিদিকে অন্যায়, অত্যাচারের রোষানল, এবং অরাজক এক পরিস্থিতি। তাই অত্যাচারী শাসকের হাতে বন্দী হবার ভয়ে সেখান থেকে ভয়ে পালিয়ে যায় শ্যাজাম। জাদুকর শ্যাজাম খন্দক ত্যাগের কয়েক বছর পরই আইবেক নামক বর্বর গোষ্ঠীর হাতে এখানকার হাজারও অধিবাসী দাসত্বের শিকলে বন্দী হয়। যার মধ্যে ছিল আমান নামে এক বালক, যাকে তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে খনির গভীরে কাজ করতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে তার উপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হতো।

কমিকের পাতায় খন্দকের রাজধানী শিরুতা; Image Source: DC Comics.

একদিন সে ক্লান্তির ভারে ভেঙে পড়লে ওখানকার এক প্রহরী তাকে মারতে উদ্যত হয়। তখনই এক লোক পেছন থেকে এসে গুঁড়িয়ে দেয় প্রহরীর মাথা। লোকটি আর কেউ নয়, আমানের নিজের মামা অ্যাডাম। আবেগাপ্লূত হয়ে চোখের জল গড়াতে লাগল আমানের। তখন তারা সেই স্থান থেকে পালিয়ে যেতে চায়। সেসময় পেছন থেকে একটা বর্শা এসে সজোরে বিঁধে যায় অ্যাডামের কোমরে। কোনোভাবে শত্রুকে পাশ কাটিয়ে ওই স্থান থেকে পালাতে পারে তারা। হঠাৎ বজ্রপাতের ঝলকে তাদের চোখ ধাঁধিয়ে যায়। নিজেদের আবিষ্কার করে বদ্ধ, গুমোট, ও অপরিচিত এক স্থানে। চারপাশে বসে আছে অদ্ভুত গোছের কিছু লোক। জায়গাটা ছিল রক অভ ইটার্নিটি, শ্যাজামের বর্তমান আবাসস্থল।

রক অভ ইটার্নিটিতে বালক আমান; Image Source: DC Comics.

শ্যাজাম আমান ও অ্যাডামকে প্রস্তাব দিল তার জাদুকরী ক্ষমতা গ্রহণের জন্য। কিন্তু ওদিকে কর্ণপাত না করে আমান তার মামাকে বাঁচানোর অনুরোধ করল। শ্যাজাম জানালো, জাদু-শব্দ ‘শ্যাজাম’ উচ্চারণ করলে দুজনেই অতিমানবীয় ক্ষমতার অধিকারী হয়ে পাবে। সাথে অ্যাডামকেও সুস্থ করে দিল শ্যাজাম। নতুন জীবন পেয়ে ক্রোধান্বিত অ্যাডাম প্রতিজ্ঞা করল, পুরো আইবেক গোষ্ঠীকে সে ধুলোয় মিশিয়ে দেবে। কিন্তু আমান তাতে বাধা দিল। বরং সে চাইল ওই শক্তিমত্তা কাজে লাগিয়ে খন্দকে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা হোক। কিন্তু অ্যাডামের মন তাতে সায় দিল না। কিন্তু ভাগ্নেও নাছোড়বান্দা। কিছুক্ষণ পর দুজন একসাথে ‘শ্যাজাম’ বলে চেঁচিয়ে উঠলে ভাগ্নের প্রাণ নিজ হাতে হরণ করল অ্যাডাম। আমানের ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে জন্ম হয় ব্ল্যাক অ্যাডামের।

জাদু-শব্দ ‘শ্যাজাম’ উচ্চারণ করছে আমান; Image Source: DC Comics.

ব্ল্যাক অ্যাডামের শক্তিমত্তা

ব্ল্যাক অ্যাডামের কাছে প্রাচীন মিশরীয় দেবতাদের কিছু ক্ষমতা বিদ্যমান। ব্ল্যাক অ্যাডামের ক্ষেত্রে Shazam এর পূর্ণরূপ মিশরীয় দেবতাদের নাম দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয়েছে।

  • S = Shu
  • H = Horus
  • A = Amun
  • Z = Zehuti
  • A = Aten
  • M = Mehen

১. Stamina of Shu – দেবতা শু-র সীমাহীন সহনশীলতা ব্যবহারের মাধ্যমে ব্ল্যাক অ্যাডাম চরম শারীরিক আক্রমণ সহ্য করে বেঁচে থাকতে পারে। তার খাওয়া, ঘুম বা শ্বাস নেওয়ার দরকার দরকার হয় না। মহাকাশে কোনোপ্রকার সাহায্য ছাড়াই বেঁচে থাকতে পারে সে। শক্তিশালী পরিপাকতন্ত্র তাকে সমস্ত শারীরিক ক্রিয়াকলাপে সাধারণ মানুষের চেয়ে অনেক বেশি শক্তি সরবরাহ করে।

২. Speed of Horus – মিশরীয় দেবতা হোরাসের দ্রুতগামী ক্ষমতা তার মধ্যে বিদ্যমান, যা তাকে হাইপারসনিক স্পিড প্রদান করেছে। গোল্ডেন এজ কমিকে সে ফ্ল্যাশের সমান গতিতে ছুটতে পেরেছিল। এ ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে সে উড়তেও পারে। সাথে সুপারহিউম্যান লেভেলের রিফ্লেক্সও আছে।

৩. Strength of Amun – আমুন হলেন প্রাচীন মিশরীয় ধর্মের দেব-সম্রাট। ব্ল্যাক অ্যাডাম আমুনের প্রচণ্ড শক্তিমত্তার একটা অংশ পেয়েছে। যা তাকে করে তুলেছে অতিমানবীয়। সে সহজেই বাঁকাতে পারে ইস্পাত, হাততালি দিয়ে শক্তিশালী শক ওয়েভ তৈরি করতে পারে। শ’খানেক টন ওজনের বস্তু ওঠানো তার বাঁ-হাতের খেল। ওই শক্তি দিয়ে অনায়াসেই সুপারম্যানকে টেক্কা দিতে পারে। অ্যাডামের শক্তিকে সাধারণত সুপারম্যান এবং ক্যাপ্টেন মার্ভেলের সাথে তুলনা করা হয়। একবার জাস্টিস লিগ, জাস্টিস সোসাইটি, দ্য গ্রেট টেন, মার্শিয়ান ম্যানহান্টার এবং টিন টাইটানসের বিরুদ্ধে সে একা লড়েছিল।

৪. Wisdom of Zehuti (Thoth) – দেবতা জেহুতির (থোথ) প্রজ্ঞা ভারী করেছে তার পাণ্ডিত্যের পাল্লা। একাধিক ভাষা জানে সে। জেহুতির জ্ঞানের দরকারে তাকে সুপরামর্শ প্রদান করে থাকে। গণিতেও সে সাধারণ মানুষের চেয়ে ঢের পারদর্শী।

৫. Power of Aten – আতেনের ক্ষমতা ব্ল্যাক অ্যাডামকে উড়তে সাহায্য করে। সে বিজলিও তৈরি করে এই ক্ষমতা কাজে লাগিয়েই। জাদু-মন্ত্র এবং আক্রমণের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলার পাশাপাশি এর সাহায্যে সে টেলিপোর্ট, রক অভ ইটার্নিটি, ডাইমেনশন, এবং সময় পরিভ্রমণের সুযোগ পায়।

৬. Courage of Mehen – এই ক্ষমতা মনস্তাত্ত্বিক এবং আধ্যাত্মিক। মেহেনের সাহস ব্ল্যাক অ্যাডামের মনে প্রচুর পরিমাণে অভ্যন্তরীণ ইচ্ছাশক্তি ও দৃঢ় সংকল্প যোগায়। ফলে সে শত্রুর মুখোমুখি হয়ে অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে লড়াই করতে পারে। কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সে পিছপা হয় না, এবং ভয়ও তাকে কাবু করতে পারে না।

জাদুকর শ্যাজাম; Image Source: DC Comics.

ব্ল্যাক অ্যাডাম একসময় বড় মাপের খলনায়ক হিসেবে কমিকের পাতায় হাজির হলেও কিছু কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে সরাসরি খলনায়কও হিসেবে অভিহিত করা যায় না। সর্বোচ্চ অ্যান্টি-হিরো বলা যায়। ফলে কমিক লেখকেরাও তাকে অ্যান্টি-হিরো হিসেবেই কমিকে গল্প তৈরি করছে। হিংস্র মনোভাবের কারণে সে তার শত্রুদের সাজা দেওয়ার চেয়ে খুন করতেই বেশি পছন্দ করে। তার স্ত্রী আইসিসকে যখন মেরে ফেলা হয়, হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ব্ল্যাক অ্যাডাম তখন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাধিয়ে ফেলে!

তার আসল উদ্দেশ্য হলো খন্দক ও এর অধিবাসীদের সর্বাধিক কল্যাণ নিশ্চিত করা। ওই লক্ষ্যে যা যা করা দরকার, সে তা-ই করতে রাজি। সেটাতে তার বিন্দুমাত্র দ্বিধা-বোধ নেই। এই কাজে কেউ বাধা দিলে তার পরিণতি হয় ভয়ানক। তার চোখে নায়ক কিংবা খলনায়ক দুটোই সমান। অবশ্য তার করণীয় মন্দ কাজগুলোর পেছনে ভালো উদ্দেশ্য নিহিত রয়েছে।

ব্ল্যাক অ্যাডাম নিয়ে নির্মিত সিনেমায় একই চরিত্রে অভিনয় করবেন ডোয়াইন জনসন; Image Source: Warner Bros.

কমিকের পাতা থেকে উঠে এসে সেলুলয়েডের পর্দায় জীবন্ত হয়েছে এই কমিকবুক চরিত্র। ডোয়াইন জনসন ব্ল্যাক অ্যাডাম চরিত্রে অভিনয়ে করেন। সাথে আছে ডক্টর ফেট, হকআই, আইসিস, সাইক্লোন, অ্যাটম স্ম্যাশার প্রমুখ। ডিসি এক্সটেন্ডেড ইউনিভার্সের ১১ তম ইনস্টলমেন্ট হিসেবে চলতি বছরের ২১ অক্টোবর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি।

Related Articles

Exit mobile version