এ বছরের প্রথমার্ধ সরগরম ছিল অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদের বর্ধিত বেতনের সংবাদে। কিন্তু ফোর্বসের ২০১৬ সালের জুন মাস থেকে ২০১৭ সালের জুন মাস পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আয় করা অভিনেতাদের তালিকা আবারও প্রমাণ করে দিলো, সবকিছুর পরে হলিউড এখনও টাকা বানানোর মেশিন হিসেবেও সবার চেয়ে এগিয়ে। আমাদের এবারের আলোচনায় থাকছে এ বছরের জুলাই মাসে ফোর্বসের প্রকাশ করা সবচেয়ে বেশি উপার্জন করা অভিনেতাদের নাম এবং তাদের আয়ের পরিমাণ।
১৫. এমা স্টোন
বছরের শুরুতেই প্রথমবারের মতো সেরা অভিনেত্রী হিসেবে একাডেমি পুরস্কার জেতার পর এবারে বছরের সর্বোচ্চ উপার্জনকারী অভিনেতা-অভিনেত্রীর খাতায় নাম লেখালেন এমা স্টোন। জেনিফার লরেন্সকে টপকে তিনি এখন হলিউডের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেত্রী। গত বছর যেখানে প্রথম পনেরো জনের মধ্যে অভিনেত্রী ছিলেন মোট চারজন, সেখানে এই বছরের প্রথম পনেরো জনের মধ্যে একমাত্র অভিনেত্রী হিসেবে আছেন এমা। তার আয়ের পরিমাণ ২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২১২ কোটিরও বেশি।
‘লা লা ল্যান্ড’ সিনেমার পর তিনি এ বছর হাতে নিয়েছিলেন ‘ব্যাটল অফ সেক্সেস’ সিনেমার কাজ। এই সিনেমায় তাকে দেখা যাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত টেনিস খেলোয়াড় ‘বিলি জিন কিং’ এর চরিত্রে। এই সিনেমাটির মাধ্যমে এমাকে এবারো অস্কারে দেখার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও সম্প্রতি তিনি হাত দিয়েছেন নেটফ্লিক্সের ‘ম্যানিয়াক’ নামের নতুন একটি টিভি সিরিজে, সেখানে তার সাথে অভিনয় করবেন জোনাহ হিল এবং এতে পরিচালক হিসেবে আছেন ‘ট্রু ডিটেকটিভ’খ্যাত পরিচালক ক্যারি ফুকুনাগা। টিভি সিরিজটিতে অভিনয়ের পাশাপাশি এর নির্বাহী প্রযোজক হিসেবেও আছেন এমা নিজে।
১৪. রায়ান গসলিং
তালিকার চৌদ্দতম অবস্থানে আছেন এমা স্টোনের বিপরীতে ‘লা লা ল্যান্ড’ সিনেমায় অভিনয় করা কানাডিয়ান অভিনেতা রায়ান গসলিং। বছরের শুরুতেই সহকর্মী অস্কার জিতে নিলেও, শুধুমাত্র মনোনয়ন নিয়ে খুশি থাকতে হয়েছিল তাকে। তবে বছর শেষ না হতেই সর্বোচ্চ উপার্জনকারী অভিনেতাদের খাতায় নাম লেখান গত বছরের শীর্ষ ত্রিশের ভেতরে না থাকা রায়ান। এই বছর তার উপার্জন ২৯ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৩৬ কোটিরও বেশি।।
তবে এর পেছনে মূল কারণ হচ্ছে তার আপকামিং সিনেমা ‘ব্লেড রানার: ২০৪৯’। ২০০ মিলিয়ন ডলার বাজেটের এই সিনেমায় হ্যারিসন ফোর্ড এবং জ্যারেড লেটোর পাশাপাশি অভিনয় করছেন রায়ান গসলিং। পরিচালক টেরেন্স ম্যালিকের ‘সং টু সং’ সিনেমা বাদে এ বছর অন্য কোনো সিনেমাতে দেখা যায়নি তাকে।
১৩. স্যামুয়েল এল. জ্যাকসন
তালিকায় এবারে আছেন নব্বইয়ের দশক থেকে হলিউড দাপিয়ে বেড়ানো অভিনেতা স্যামুয়েল জ্যাকসন। ‘দ্য লিজেন্ড অফ টারজান’ আর ‘কং: স্কাল আইল্যান্ড’ এর মতো ব্লকবাস্টার সিনেমায় অভিনয় করার পরেও গত দুটি বছর প্রচণ্ড ব্যস্ততার মধ্যে গেছে মি. জ্যাকসনের; অভিনয় করেছেন সর্বমোট ৬টি সিনেমায় এবং কণ্ঠ দিয়েছেন একটি অ্যানিমেশন মুভিতে। এ বছরে তার আয়ের পরিমাণ ৩০.৫ মিলিয়ন ডলার বা ২৪৮ কোটি টাকা।
সিনেমার পাশাপাশি এ বছর বেশ কিছু বিজ্ঞাপনেও দেখা গেছে স্যামুয়েল জ্যাকসনকে। প্রত্যেক বিরতিতে একবার হলেও ক্যাপিটাল ওয়ান ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড নিয়ে টিভি পর্দায় হাজির হন তিনি এবং ক্রেডিট কার্ড হাতে তার হাসি সমৃদ্ধ পোস্টারে ছেয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরের বিলবোর্ডগুলো।
১২. টম হ্যাঙ্কস
সাম্প্রতিক সময়ে তার সিনেমাগুলোর অধিকাংশই বক্স অফিসে তেমন ঝড় না তুললেও, নিজের পকেট তেমন একটা হালকা হতে দেননি বিখ্যাত অভিনেতা টম হ্যাঙ্কস। এ বছর তার আয়ের সবচেয়ে বড় অংশ এসেছে ড্যান ব্রাউনের লেখা ট্রিলজির উপরে ভিত্তি করে তৈরি সিনেমার তৃতীয় কিস্তি ইনফার্নো দিয়ে। এছাড়া তিনি অভিনয় করেছেন ক্যাপ্টেন চেসলি সালেনবার্গারের হাডসন নদীতে বিমান অবতরণ নিয়ে উপর ভিত্তি করে নির্মিত বায়োপিক ‘সালি’তে এবং এমা ওয়াটসনের সাথে অভিনয় করেছেন ‘দ্য সার্কেল’ সিনেমায়।
তিনি আয়ের পাল্লা আরও ভারী করেছেন বেশ কয়টি টিভি ডকুমেন্টারি প্রযোজনার মাধ্যমে। এই বছর তার সর্বমোট আয় ৩১ মিলিয়ন ডলার, বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৫৮ কোটিরও বেশি।
১১. ক্রিস হেমসওয়ার্থ
সম্প্রতি মারভেল তাদের সিনেমাটিক ইউনিভার্সের প্রারম্ভিক অভিনেতাদের বেতন বাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে। যে কারণে থর চরিত্র রূপায়নকারী অভিনেতা ক্রিস হেমসওয়ার্থের এ বছরের উপার্জন ছিল আকাশছোঁয়া। সদ্য মারভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্সের তৃতীয় অ্যাভেঞ্জারস সিনেমা ‘ইনফিনিটি ওয়ারে’র অভিনয়ের কাজ শেষ করেছেন তিনি এবং চার নম্বর সিনেমাটির কাজ শুরু হয়েছে কিছু দিন হলো।
এছাড়া গত বছর ‘গোস্টবাস্টার রিবুট’ সিনেমায় অভিনয় করছেন তিনি। এই বছরের নভেম্বর মাসে আসছে থর সিরিজের তৃতীয় সিনেমা সিনেমা ‘থর: র্যাগনারক’ এবং আগামী বছরের শুরুতেই মুক্তি পাচ্ছে মারভেলের সহকর্মী মাইকেল পেনার সাথে অভিনয় করা চলচ্চিত্র ‘হর্স সোলজারস’। অন্যান্য সিনেমার পাশাপাশি মারভেলের সাথে নতুন চুক্তির ফলে তার বাৎসরিক আয় গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩১.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে অর্থাৎ প্রায় ২৫৬ কোটি টাকায়।
১০. অক্ষয় কুমার
তালিকার দশ নাম্বার অবস্থানে যিনি আছেন তিনি হলিউডের কেউ নন, আন্তর্জাতিক দর্শকদের মাঝে তার তেমন একটা পরিচিতিও নেই। তিনি হচ্ছেন ২৫ বছর ধরে বলিউডের সাথে সম্পৃক্ত থাকা ভার্সেটাইল অভিনেতা অক্ষয় কুমার। গত বছর তালিকার বারো নম্বরে থাকা এই অভিনেতা এ বছর উঠে এসেছেন প্রথম দশ জনের মধ্যে। গত এক বছরে তার আয়ের পরিমাণ ৩৫.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ প্রায় ২৯০ কোটি টাকা।
২০১৬ সালের শেষার্ধে মুক্তি পাওয়া রুস্তম থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত তিনি অভিনয় করেছেন মোট পাঁচটি সিনেমাতে। এর মধ্যে চারটি সিনেমা ইতোমধ্যে মুক্তি পেয়েছে এবং পঞ্চমটি আসছে এ বছরের শেষের দিকে। এছাড়া তার গোল্ড এবং প্যাডম্যান সিনেমার নির্মাণ কাজও চলছে।
৯. সালমান খান
অক্ষয়ের এক ধাপ উপরেই আছেন আরেকজন ভারতীয় অভিনেতা সালমান খান। গত বছর বলিউডের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উপার্জনকারী চলচ্চিত্র সুলতানে অভিনয় করা এই বলিউড সুপারস্টারের এ বছরের শুরুটা ছিল ফ্লপ সিনেমা দিয়ে। তবে সেই সিনেমার ব্যর্থতা তার আয়ে তেমন একটা প্রভাব ফেলেনি। গত এক বছরে তার আয়ের পরিমাণ ৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩০১ কোটির কাছাকাছি।
১৯৮৯ সালে ‘ম্যানে পিয়ার কিয়া’ দিয়ে বলিউডের জগতে পা রাখা এই অভিনেতা এখন পর্যন্ত অভিনয় করেছেন প্রায় ৮৫টি সিনেমাতে। এ বছরের শেষের দিকে আসছে তার ‘এক থা টাইগার’ সিনেমার সিকুয়েল ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’। এছাড়া তিনি আরও চারটি সিনেমার প্রজেক্টে কাজ করছেন, যার দুটি মুক্তি পেতে যাচ্ছে ২০১৮ সালে।
৮. শাহরুখ খান
সর্বশেষ বলিউড তারকা হিসেবে তালিকার অষ্টম অবস্থানে আছেন অভিনেতা শাহরুখ খান। রইস, জাব হ্যারি মেট সাজাল এবং টিউবলাইট সিনেমায় একটি ক্যামিও চরিত্রের পাশাপাশি কয়েক ডজন টিভি কমার্শিয়ালের ফি বাবদ এ বছর তার আয় হয়েছে প্রায় ৩৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ প্রায় ৩১০ কোটি টাকা।
তবে থেমে নেই ‘কিং খান’ খ্যাত ৫২ বছর বয়সী এই অভিনেতা। তিনি কাজ করছেন আরো তিনটি সিনেমাতে, যেগুলো ২০১৯ সালের মধ্যে মুক্তি পাবে।
৭. টম ক্রুজ
তার সিনেমা দেখার পর সমালোচকদের যা-ই প্রতিক্রিয়া হোক না কেন, দিন শেষে তার পকেটে চলে যায় মোটা অংকের একটি চেক। এমনকি সিনেমা বক্স অফিসে ঝড় না তুললেও ঝড় উঠে তার ব্যাংক একাউন্টে। তিনি হচ্ছেন আমাদের সকলেরই সুপরিচিত অভিনেতা টম ক্রুজ। বরাবরের মতো এবারও ফোর্বসের তালিকায় নিজের নাম অক্ষুণ্ণ রেখেছেন ১৯ বছর বয়সে হলিউডে আত্মপ্রকাশ ঘটানো এই অভিনেতা। মাত্র দুটি সিনেমায় অভিনয় করে এ বছর তিনি উপার্জন করেছেন ৪৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা।
সম্প্রতি ‘মিশন ইম্পসিবল ৬’ এর একটি দৃশ্য ধারণ করতে যেয়ে আহত হয়েছেন ৫৫ বছর বয়সী এই অভিনেতা। তবে বেশ দ্রুতই সেরে উঠছেন তিনি। পুরোপুরি সুস্থ হবার পর ‘টপ গান’ সিনেমার সিকুয়েলের কাজ শুরু করবেন বলে জানা গেছে।
৬. রবার্ট ডাউনি জুনিয়র
রবার্ট ডাউনির জুনিয়র হয়তো টনি স্টার্কের সমান বিলিয়নিয়ার নন, কিন্তু সবচেয়ে বেশি আয় করা অভিনেতাদের তালিকা তৈরি হবে, আর সেখানে নামে থাকবে না, তা-ই কী হয়? সেটা কল্পনাও করা যায় না। তার আয়ের গতি যেভাবে বাড়ছে, হয়তো শীঘ্রই টনি স্টার্কের ধারেকাছে চলে যাবেন তিনি। তার অভিনয় করা ‘ক্যাপ্টেন আমেরিকা: সিভিল ওয়ার’ এসেছে গত বছর, কিন্তু এখনও সেই সিনেমার লাভের বিরাট অংশ পাচ্ছেন তিনি। কীভাবে? এখনও যদি কেউ সিনেমাটি ব্লু-রে ক্যাসেট কিনে সেই টাকার একটি অংশ যাচ্ছে তার পকেটে।
২০১৭ সালে ‘স্পাইডার-ম্যান: হোমকামিং’ ছাড়াও তিনি অভিনয় করেছেন জেমি ফক্সের প্রথমবারের মতো পরিচালনা করা সিনেমা ‘অল স্টার উইকেন্ড’-এ, যদিও এর রিলিজ ডেট এখনও প্রকাশ করা হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এই বছরের শেষের দিকে মুক্তি পাচ্ছে সিনেমাটি। এছাড়া কাজ চলছে আরও দুটি অ্যাভেঞ্জারস সিনেমার এবং আরেকটি শার্লক হোমস মুভির। এ বছর তিনি সর্বমোট আয় করেছেন ৪৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ ৩৯৫ কোটি টাকা।
৫. জ্যাকি চ্যান
বেশ কিছুদিন যাবত তিনি আমেরিকান কোনো অ্যাকশন সিনেমাতে অভিনয় করেননি, তবে এ বছরই আবার হলিউডে ফিরছেন ‘দ্য ফরেইনার’ সিনেমা দিয়ে। ‘ক্যাসিনো রয়্যাল’ খ্যাত নির্মাতা মার্টিন ক্যাম্পবেল পরিচালিত এই সিনেমায় আরও অভিনয় করছেন এক সময়কার জেমস বন্ড পিয়ার্স ব্রসনান। অবশ্য হলিউডের কোনো সিনেমায় অভিনয় না করলেও জ্যাকি চ্যান কণ্ঠ দিয়েছেন দুটি অ্যানিমেশন মুভিতে। এ বছর তিনি উপার্জন করেছেন ৪৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, বাংলাদেশী টাকায় যেটি প্রায় ৪০৩ কোটি টাকা।
সম্প্রতি জানা গেছে, আগামী বছরই তার অভিনীত ‘সাংহাই ডওন’, ‘কারাতে কিড ২’ এবং ‘রাশ আওয়ার ৪’ সিনেমাগুলোর শুটিংয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে আগামী বছরের ধনী অভিনেতাদের তালিকায় জ্যাকি চ্যানের নাম আরও উপরের দিকে আসলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
৪. অ্যাডাম স্যান্ডলার
অভিনেতাদের আয় যদি সমালোচকরা নির্ধারণ করে দিতেন, তাহলে এই বছরের সবচেয়ে বেশি আয় করা অভিনেতাদের মধ্যে শীর্ষ পাঁচে থাকা তো দূরের কথা, সেই তালিকাতেই অ্যাডাম স্যান্ডলারের মতো অভিনেতা অন্তর্ভুক্ত হতে পারতেন কিনা, সন্দেহ আছে। তাই তার কপাল ভাল যে, অভিনেতাদের আয় নির্ধারণের দায়ভার সমালোচকদের হাতে নেই। কেননা তার সিনেমায় তার অভিনয় যতো ভালই হোক না কেন সেগুলোর কাহিনী বরাবরই দুর্বল। তবে এবছরে তার একটি সিনেমা সমালোচক মহলে বেশ সাড়া ফেলেছে, নাম দ্য মাইরোউইৎস স্টোরিস।
নেটফ্লিক্সের সুবাদে গত এক বছর ভালোই আয় করেছেন কমেডি ধাঁচের সিনেমায় অভিনয় করা অ্যাডাম স্যান্ডলার। এ বছর অভিনয়ের পাশাপাশি নেটফ্লিক্সের তিনটি মৌলিক সিনেমার প্রযোজনা করেছেন তিনি, যার ফলে তার আয় হচ্ছে সাড়ে ৫০ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ৪১৫ কোটি টাকা।
৩. ভিন ডিজেল
গত বছর তৃতীয় স্থান দখল করে রাখা ম্যাট ডেমনকে সরিয়ে এ বছর তার জায়গায় নিজের নাম বসিয়ে নিয়েছেন ‘ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াস’ ফ্রাঞ্চাইজের মধ্যমণি ভিন ডিজেল।
২০১৬ সালের তালিকার আট নম্বরের থাকা এই অভিনেতা ‘রিটার্ন অফ দ্য জান্ডার কেইজ’, ‘ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াস ৮’ এবং ‘গার্ডিয়ান্স অফ দ্য গ্যালাক্সি ভলিউম টু’ সিনেমাগুলোর সুবাদে এ বছর উপার্জন করেছেন ৫৪.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ প্রায় সাড়ে ৪৪৪ কোটি টাকা।
২. ডোয়াইন জনসন
গত বছর প্রথম স্থান অধিকার করে থাকা ডোয়াইন জনসন এবারে অবস্থান করছেন তালিকার দুই নাম্বারে। ‘দ্য ফেইট অফ দ্য ফিউরিয়াস’ সিনেমার মতো বক্স অফিস কাঁপানো সিনেমা দিয়ে বছর শুরু করার পরও গতবারের অঙ্কের পরিমাণের সাথে হাফ মিলিয়ন ডলারের বেশি যোগ করতে পারেননি ‘দ্য রক’খ্যাত এই হলিউড অভিনেতা। ২০১৭ সালে তার আয় ছিল ৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশী টাকার পরিমাণে প্রায় ৫৩০ কোটি টাকা।
জনসন হলিউডের পরিশ্রমী অভিনেতাদের মধ্যে একজন, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াস সিরিজের আট নম্বর কিস্তি ছাড়াও তিনি এই বছর অভিনয় করেছেন নব্বইয়ের দশকের নামকরা টিভি-শো ‘বেওয়াচ’-এর উপর ভিত্তি করে নির্মিত একই সিনেমায় এবং খেলাধুলা ভিত্তিক এক ধারাবাহিক টেলিভিশন ড্রামা ‘বোলার্স’-এ। এ বছরের শেষের দিকে ডিসেম্বর মাসে মুক্তি পাচ্ছে তার এ বছরের তৃতীয় সিনেমা ‘জুমাঞ্জি: ওয়েলকাম টু দ্য জাঙ্গল’। এছাড়া নির্বাহী প্রযোজক হিসেবে তিনি আছেন আরও বেশ কিছু প্রজেক্টে।
১. মার্ক ওয়ালবার্গ
‘ড্যাডি’স হোম ২’ আর ‘ট্রান্সফরমার: দ্য লাস্ট নাইট’ এর সুবাদে গত বছরের সবচেয়ে বেশি উপার্জনকারী অভিনেতা ডোয়াইন জনসনকে পেছনে ফেলে, এ বছর প্রথম স্থান দখল করে নিয়েছেন ‘মার্কি মার্ক অ্যান্ড দ্য ফাংকি বাঞ্চ’ ব্যান্ড দলের সাবেক র্যাপশিল্পী এবং দুই দুইবার অস্কার মনোনয়ন পাওয়া অভিনেতা মার্ক ওয়ালবার্গ। ফোর্বসের ২০১৭ সালের জরীপ অনুযায়ী, তার আয়ের পরিমাণ ৬৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৫৫৫ কোটি টাকা।
গত বছর ‘ডিপ ওয়াটার হরাইজন’ আর ‘প্যাট্রিয়টস ডে’ সিনেমা দিয়ে সমালোচকদের প্রশংসা পাওয়ার পর এ বছর নিজের পকেট ভারি করে নিলেন ২০১৬ সালের তালিকায় ১৫তম অবস্থানে থাকা বোস্টনের এই বাসিন্দা। মাত্র দুটি সিনেমায় অভিনয় করে তার গতবারের আয় ছিল ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা এ বছরের তুলনায় প্রায় অর্ধেক।
এ বছরেরই নভেম্বর মাসে আসছে তার আরেকটি সিনেমা ‘অল দ্য মানি ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’। হলিউডের বিখ্যাত নির্মাতা রিডলি স্কট পরিচালিত সেই সিনেমায় তিনি অভিনয় করেছেন ফ্লেচার চেজ চরিত্রে এবং তার সাথে সহ-অভিনেতা হিসেবে থাকার কথা ছিল আরেক খ্যাতনামা অভিনেতা কেভিন স্পেসির। কিন্তু স্পেসির নামে সম্প্রতি যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠার পর তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
এই ছিল ২০১৭ সালে সবচেয়ে বেশি আয় করা পনেরো জন অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নামের তালিকা। তবে উল্লেখ করা টাকার অংকটি তাদের ট্যাক্স প্রদানের আগের হিসেব, এর পুরোটাই তাদের পকেটে যায় না; এই টাকা থেকে ট্যাক্স ও ম্যানেজারের বেতন দেওয়ার পর যা অবশিষ্ট থাকে, সেটাই তাদের হাতে আসে।