মাইন্ড ইওর ল্যাঙ্গুয়েজ: ‘জলি গুড’ শো বনাম রেসিজমের অবধারণগত অসঙ্গতি

স্কুল-ঘরের একটি কক্ষে হল্লা করছে একদল লোক। সবাই বিদেশি। পোশাক-আশাক দেখে বোঝা যায়, উপমহাদেশ থেকে ইউরোপ- সব জায়গার লোকের মিলন ঘটেছে এখানে। এদের সবার উদ্দেশ্য এক। ব্রিটেনের ভাষাটা একটু ভালোমতো শেখা। দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলেন নতুন একজন আগন্তুক। ইনি পুরাদস্তুর সাহেবি পোশাক পরা। হাতে ব্যাগ। বাকি সবার হইচই থামাতে তাকে একটু বেগ পেতে হলো। নিজের পরিচয় দিলেন তিনি।

আই অ্যাম ব্রাউন।

পাশ থেকে একজন বলে উঠলেন, ‘ওহ নো! ইউ আর কামিটিং আ মিস্টেক।’

যিনি কথাটা বললেন, তার চেহারা আর বেশভূষা দেখে বোঝা যায় তিনি পাকিস্তানের নিবাসী। মাথায় জিন্নাহ টুপি, পরনে কোট-প্যান্ট। মাঝারি গড়নের বাদামি দেহসৌষ্ঠব। তার কথা শুনে প্রথম জন চোখ কুঁচকে তার দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালেন।

মিস্টেক?

ইয়েস প্লিজ। ইউ আর নট ব্রাউন। উই আর ব্রাউন। ইউ আর হোয়াইট।

মাই নেম ইজ ব্রাউন। আই অ্যাম ইওর টিচার!

ব্যারি ইভান্স Image Source: IMDb

এরকম নানা হাস্যকর মুহূর্ত আর সংলাপে ভরপুর ব্রিটিশ সিটকম মাইন্ড ইওর ল্যাঙ্গুয়েজ। ১৯৭৭ সালে দর্শক প্রথম পরিচয় লাভ করে টেলিভিশন শো’টির সাথে। ব্রিটিশ ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনে (আইটিভি) টানা দুই বছর তিনটি সিজন চলার পর সাময়িক বন্ধ হয়ে যায় শো’টি। এরপর ১৯৮৬ সালে আবার চতুর্থ সিজন শুরু হয়। কিন্তু ততদিনে কয়েকজন অভিনেতা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। তাই, প্রথম কিস্তির তিন সিজনের মতো প্রাণবন্ত হয়ে উঠতে পারেনি শেষ সিজনটি।

ভিন্স পাওয়েলের সৃষ্ট মাইন্ড ইওর ল্যাঙ্গুয়েজের গল্প এগিয়ে গিয়েছে লন্ডনের এক কলেজের ইংরেজি ভাষা শিক্ষা ক্লাসের বিদেশি শিক্ষার্থী, তাদের শিক্ষক মি. জেরেমি ব্রাউন, কলেজটির প্রিন্সিপ্যাল মিস. কোর্টনি এবং দুই কর্মচারী গ্ল্যাডিস ও সিডনিকে নিয়ে। বিদেশি ভাষা হিসেবে ইংরেজি শেখার জন্য কলেজটির একটি সান্ধ্যকালীন কোর্সে ভর্তি হয় বেশ কয়েকজন বিদেশি শিক্ষার্থী। তাদের পড়ানোর দায়িত্ব পড়ে অক্সফোর্ড থেকে পাস করে আসা ব্রাউনের ওপর। এই শিক্ষার্থীদের ইংরেজি জ্ঞান  নূন্যতম। তাদের কথাবার্তায় তা খুব স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে। তাদের মুখনিঃসৃত প্রতিটি শব্দ বা বাক্যই হাস্যরসের সঞ্চার ঘটায়। তাদের নানারকম অদ্ভুত কার্যক্রমের জন্য মাঝেমধ্যে মিষ্টি রকমের বিপদে পড়তে হয় ব্রাউনকে। এই শিক্ষার্থীদের মাথায় কখনো দুষ্টু সব আইডিয়া ভর করে আর তারা সেসব আইডিয়ার বাস্তবায়ন করে ছাড়ে। এদের জ্বালা থেকে রক্ষা পাননি মিস. কোর্টনিও। এসবের মাঝে শুধু ইংরেজিটাই শেখা হয় না।

আলি নাদিম চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশি অভিনয়শিল্পী গোলাম শাফিক; Image Source: IMDb

মি. ব্রাউনের শিক্ষার্থীরা হলেন, জিওভান্নি কাপেলো (ইতালি), ম্যাক্সিমিলিয়ান প্যাপান্ড্রিয়াস (গ্রিস), হুয়ান সার্ভেন্তাস (স্পেন), আনা শ্মিদ (জার্মানি), আলি নাদিম (পাকিস্তান), রঞ্জিত সিং (ভারত), জমিলা রাঁঝা (ভারত), চাং সু-লি (চীন), তারো নাগাজুমি (জাপান), ড্যানিয়েল ফ্যাভর (ফ্রান্স), ইঙ্গরিদ (সুইডেন), জোল্টান (হাঙ্গেরি) প্রমুখ। প্রতি সন্ধ্যায় তাদের ক্লাস শুরু হয়। এই ক্লাসগুলোই হয়ে ওঠে কৌতুকের উৎস। তাদের ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরেজি শুনে কখনো বিরক্ত, আবার কখনো বাকরুদ্ধ হয়ে যান মি. ব্রাউন। তবে তাদের ওপর তিনি রাগতেও পারেন না। তাই বলে শ্রেণীকক্ষে যে গোলমাল হয় না তা কিন্তু মোটেই নয়। বরং, শিক্ষক এক মুহূর্তের জন্য বাইরে গেলে সবাই মেতে ওঠে নিজেদের মধ্যে আড্ডায়। সিগারেট থেকে শুরু করে কখনো কখনো ওয়াইনের বোতলও বের হয়ে যায়। মাঝে মাঝে নিজেদের মধ্যে হাঙ্গামা বেধে যায়। বিশেষত, আলি-রঞ্জিতের দ্বন্দ্ব ছাড়া যেন প্রতিটি সন্ধ্যা অসম্পূর্ণ থাকে। আলী মুসলিম আর রঞ্জিত শিখ হওয়ায় তাদের মধ্যে এই নিয়ে প্রায় ঝগড়া লেগে যায়। উপমহাদেশীয় ঢং-এ একজন আরেকজনের জাত তুলে গালাগালি করে। বেচারা ব্রাউন-কে ইংরেজি শেখানোর পাশাপাশি এসবও সামাল দিতে হয়। ওদিকে মোহিনী ড্যানিয়েল-এর রূপে বিমুগ্ধ হয়ে তার সাথে ভাব জমাতে চায় ম্যাক্স আর জিওভান্নি দুজনেই। তাদের দ্বৈরথ একসময় বন্ধুত্বে পরিণত হয়। সু-লি তার প্রতিটি কথায় চীনের চেয়ারম্যান মাও-এর প্রসঙ্গ টেনে আনে। জাপানী শিক্ষার্থী, প্রৌঢ় তার কোনো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে বাও করতে ভুলে না। জমিলা-কে দেখা যায় ক্লাস করার সময়ও উল বুনতে। প্রতিটি শিক্ষার্থীর এরকম নিজস্ব সিগনেচার-অঙ্গভঙ্গি ও বুলি সিটকমটিকে দর্শকের কাছে এক নির্মল, নিরুদ্বেগ বিনোদনের উৎসে পরিণত করেছে।

সিটকমটি’র ব্রাউন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ব্রিটিশ অভিনেতা ব্যারি ইভান্স। কলেজ প্রিন্সিপ্যাল কোর্টনি’র নীরস, রুক্ষ, ও নারীবাদী চরিত্রে পাস করে গেছেন জারা নটলি। গ্ল্যাডিস, ও সিডনি চরিত্রে অভিনয় করেছেন যথাক্রমে আইরিস স্যাডলার, ও টমি গডফ্রে। আলি নাদিম চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশি অভিনয়শিল্পী গোলাম শফিক। মাইন্ড ইওর ল্যাঙ্গুয়েজ-এর পাশাপাশি তিনি আরও কয়েকটি ইংরেজি টেলিভিশন শো-তে অভিনয় করেছেন। নিজের চরিত্রে ‘জলি গুড’ পারফর্মেন্স দেখিয়েছেন শফিক সাহেব। প্রথম তিনটি সিরিজে সবার অভিনয়ই দর্শককে আকৃষ্ট করতে বাধ্য। কিন্তু চতুর্থ সিরিজে নতুন অভিনেতারা পুরনোদের কাজের মানের সাথে তাল মেলাতে পারেননি।

প্রিন্সিপ্যাল মিস. কোর্টনি; Image Source: IMDb

সাধারণ দর্শকের চোখে মাইন্ড ইওর ল্যাঙ্গুয়েজ একটি শতভাগ কমেডি শো। কারণ, এর প্রতি মিনিটে মিনিটে ছড়িয়ে আছে হাসির উপাদান। কিন্তু সচেতন দর্শক মুদ্রার অপর পিঠ-টাও দেখবেন। শো’টির যাবতীয় হাসির খোরাকের মূল উপাদান গত ভিত্তি হচ্ছে রেসিজম, অরিয়েন্টালিজম ইত্যাদি। বিদেশি চরিত্রগুলোর অপকৃষ্ট প্রদর্শনী এ শো’র মূল বৈশিষ্ট্য। মিস. কোর্টনি-কে দেখানো হয়েছে একজন নারীবাদী ও অগ্রসর মনা ব্যক্তিত্ব হিসেবে। পক্ষান্তরে, বাকি সব বিদেশি নারী চরিত্রগুলোতে তাচ্ছিল্যের মাত্রাটাই বেশি। জমিলাকে আমরা দেখি একজন আত্মমগ্ন, সেকেলে, গোবেচারা ও গতানুগতিক ভারতীয় নারী হিসেবে। ফরাসী শিক্ষার্থী ড্যানিয়েলকে দেখানো হয়েছে একজন ‘ফেম ফেটেল’ বা কুহকিনী হিসেবে, যার প্রতি বাকি পুরুষ শিক্ষার্থীরা বিশেষভাবে অনুরক্ত। তাকে নিয়ে তাদের এই মাত্রাতিরিক্ত আগ্রহ এবং তাদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব এসব বিদেশি পুরুষের নারী সম্পর্কিত দুর্বলতার দিকটিকেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত-ইঙ্গিত করে। ড্যানিয়েলকে আবার দেখা যায় বাকি সবার প্রতি বিন্দুমাত্র মনোযোগ না দিয়ে শুধু তার শিক্ষক ব্রাউনের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করতে। অর্থাৎ, সঙ্গী পুরুষ হিসেবে ইংরেজ পুরুষই তার কাছে বেশি আকর্ষণীয়। কিন্তু ব্রাউন ড্যানিয়েলের প্রতি সমরূপী মনোবাসনা পোষণ করেন না। এর ফলে ব্রাউন দর্শকের চোখে বাকিসব পুরুষের চেয়ে বেশি ‘পৌরুষ সম্পন্ন’ হয়ে ওঠেন।

সিটকমটি যখন প্রচারিত হচ্ছিল তখন চীনে মাও সে-তুংয়ের শাসন। সে সময় ইউরোপ ও আমেরিকায় সমাজতন্ত্রকে জুজুর মতো করে দেখায় স্বভাবতই এই বিশেষ রাজনৈতিক সিস্টেমকে নিয়ে সিটকমটিতে শ্লেষ করা হবে। তাই বোধহয় চীনের শিক্ষার্থী সু-লিকে সবসময় দেখা যায় মাও’র নীতিকথা ও স্তুতিবাক্য আওড়াতে। ক্লাসে শিক্ষকের কোনো প্রশ্নের জবাবে সু-লি অবশ্যই মাও’র বাণী টেনে আনবেই। মাওকে নিয়ে সু-লি’র এই প্রগাঢ় ভক্তির ব্যঙ্গাত্মক উপস্থাপন চৈনিক সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি ব্রিটিশ বা ইউরোপীয় উপেক্ষারই বহিঃপ্রকাশ।

রঞ্জিত চরিত্রে অভিনয় করেছেন শ্রীলঙ্কান অভিনেতা অ্যালবার্ট মোজেস; Image Source: IMDb

জাপানি তারো’কে দেখা যায় প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে টেবিল ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে বাও করতে। আর তা করার সময় ব্যাকগ্রাউন্ডে শোনা যায় অট্টহাস্যের রোল। পাঞ্জাবি শিখ রঞ্জিত যখন দুঃখপ্রকাশ করে তখন তাকে দেখি হাতদুটো ভারতীয় কায়দায় জোড় করে ‘আ থাউজেন্ড অ্যাপোলজিস’ বলতে। প্রাচ্যের এই স্বাভাবিক বডিলি জেসচার এই শো’তে স্রেফ বিনোদনের উৎস। তার প্রতিটি শব্দের শেষে ‘ও’ যুক্ত করে। নেটিভদের ইংরেজি উচ্চারণের এই সহজাত ভিন্নতাকে হাস্যকর ভাবে তুলে ধরা হয় বাকি সব বিদেশি শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও। যেমন- ইতালিয়ান জিওভান্নি তার অনেক শব্দের মধ্যেই ‘এইচ’ উচ্চারণ করে। জার্মান আনা’র ক্ষেত্রে দেখা যায়, সে বারবার ‘ডব্লিউ’র স্থলে ‘ভি’ এবং ‘ভি’র স্থলে ‘ডব্লিউ’ উচ্চারণ করছে। এসবের বাইরে আছে বিভিন্ন চরিত্রের নিজস্ব বুলি বা ক্যাচফ্রেইজ। আলি’র কণ্ঠে আমরা শুনি ‘জলি গুড’, ‘ওহ ব্লাইমি’, ‘ইয়েস প্লিজ’। জিওভান্নি’র ‘ওকি কোকি’, ম্যাক্সের ‘এক্সকিউজ মি’র বদলে ‘স্কুজি’, হুয়ানের ‘পর ফাভর’ ইত্যাদি গৎবাঁধা বুলিই এই সিটকমের প্রাণ ভোমরা। আর এগুলোই শেষ অব্দি শো’টিকে ঠেলে দিয়েছে রেসিস্ট বিতর্কের দিকে।

কিন্তু এই বিতর্কের বাইরে রয়েছে আরেকটি বিপরীত ডিসকোর্স। বলা হচ্ছে, মাইন্ড ইওর ল্যাঙ্গুয়েজ মোটেই জাতি বিদ্বেষপূর্ণ নয়। পলিটিকাল কারেক্টনেসের দিক থেকে ১৯৭০ এর দশকের এই টিভি শো-টিকে অনেকেই স্বাভাবিকভাবে নিয়েছেন। গৎবাঁধা কৌতুকগুলোকেও অনেকে দেখছেন সময়ের দোহাই দিয়ে। এত বছর পরে এসে এই কৌতুকগুলোকে আমাদের কাছে এখন হালকা ও চটুল বলে মনে হতেই পারে। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, আজ থেকে চার যুগ আগের রসবোধ আর একুশ শতকের এই সোশাল মিডিয়া পরিপুষ্ট, বহুমুখী বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন কৌতুক রসের মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। সোশাল মিডিয়ার কল্যাণে আমরা বর্তমানে অনেক কৌতুক বারবার শুনে অভ্যস্ত হয়ে যাই, ফলে সেগুলো আমাদের কাছে অনেক সময় পানসে হয়ে যায়। কিন্তু সত্তরের দশকে এমনটা হওয়ার সুযোগ যথেষ্ট কম ছিল। সুতরাং, মাইন্ড ইওর ল্যাঙ্গুয়েজ-এর যে কৌতুক, পানগুলো বর্তমান সময় আমাদের কাছে নীরস ও বাসি বলে বিবেচিত হচ্ছে, সেগুলো হয়তো সত্তর-আশির দশকে রস-বোধসম্পন্ন কৌতুকের মর্যাদা পেয়েছিল।

অনেক সমালোচক বলেছেন, এই শো’র কৌতুকগুলো দর্শকদের নিখাদ বিনোদন প্রদানের উদ্দেশ্য ধারণ করে, কাউকে আঘাত করা এগুলোর লক্ষ্য নয়। দ্বিতীয় সিরিজের একটি পর্বে দেখা যায়, একজন আরব শেখ তার আইরিশ ড্রাইভারকে ইংরেজি শেখানোর জন্য স্কুলে নিয়ে আসে। কারণ, আইরিশ লোকটির দুর্বোধ্য উচ্চারণ তার বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে। এ পর্বে আইরিশ লোকটির উচ্চারণ দর্শকদের মধ্যে হাসির উদ্রেক ঘটায়। অর্থাৎ শুধু ব্রিটিশ ভূখণ্ডের বাইরের মানুষদের নিয়েই সিটকমটিতে মজা করা হয়নি। শো’টির উদ্দেশ্য বিদেশিদের নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা করা নয়, বরং ইংরেজি ভাষার ওপর শ্লেষালংকার (pun) ও ভাষা-তাত্ত্বিক হিউমার দর্শককে উপহার দেওয়া। মাইন্ড ইওর ল্যাঙ্গুয়েজের মূল ফোকাস ল্যাঙ্গুয়েজের ওপর, বিদেশিদের মাইন্ড বা মানসিকতা, আচরণ ইত্যাদি’র ওপর নয়।

তাইতো আধুনিক দর্শকের মনেও কোনো বিতর্ক দাগ কাটতে পারেনি এই শো’টি নিয়ে। আইএমডিবি-তে শো-টি পেয়েছে ৮.৭ রেটিং। দর্শকদের কাছে সিরিজটি রেসিস্ট বলে মনে হয়নি বরং তারা আক্ষেপ করেছেন সিরিজটি শেষ হয়ে গেছে বলে। কিন্তু তারপরও এ সময়ের রাজনৈতিক সংঘাত পূর্ণ বিশ্বে সিটকমটি’র গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। এ সময়ে এসে এরকম একটি সংবেদনশীল টিভি সিরিজ নির্মাণ করা যাবে কিনা বা মাইন্ড ইওর ল্যাঙ্গুয়েজের মতো সমসাময়িক টিভি সিটকমগুলো পুনরায় সম্প্রচার করা যাবে কিনা তা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। মানবীয় আচরণগত বিদ্যায় অবধারণ গত অসঙ্গতি (Cognitive dissonance) বলে একটা কথা আছে। মানুষ যখন তার জ্ঞাত একাধিক তথ্যের মধ্যে সংঘাত বা বৈপরীত্য খুঁজে পায়, তখন সে অবধারণ গত অসঙ্গতিতে ভোগে। মাইন্ড ইওর ল্যাঙ্গুয়েজ দেখার সময় একজন দর্শক ঠিক এরকম দ্বান্দ্বিক মনোভাবে ভুগবেন। কারণ তিনি হয়তো শো’টি উপভোগ করবেন কিন্তু এর ভেতরকার স্টেরিও টাইপ, রেসিস্ট, অরিয়েন্টালিস্ট উপাদানগুলোও তার মনে ঠিকই খোঁচা দেবে।

This is a Bangla Language article on the British sitcom Mind Your Language. Necessary references are hyperlinked.

Featured Image: amazon.com

Related Articles

Exit mobile version