বছরশেষে বইপ্রেমীরা থাকে সাড়া বছরের পুরষ্কৃত কিংবা জনপ্রিয় অথবা সবার চোখের আড়ালে রয়ে যাওয়া সব বইয়ের আশায়। আর এই কঠিন কাজ সহজ করে দেয় বিখ্যাত পত্রিকা দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস।
প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে একই বছরের সেরা ১০টি বইয়ের তালিকা প্রকাশ করে পত্রিকার বুক রিভিউ সেকশন কর্তৃপক্ষ, যেখানে থাকে ৫টি ফিকশন এবং ৫টি নন-ফিকশন বই। আজকের আয়োজন সাজানো হয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমসের বাছাই করা সেরা ১০টি বই নিয়ে।
ফিকশন
দ্য ক্যান্ডি হাউজ – জেনিফার ইগান
২০১০ সাল। বিস্ময়করভাবে সফল এবং চৌকষ বুদ্ধিসম্পন্ন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা বিক্স বাউটন নতুন এক ধারণার আশায় মরিয়া হয়ে আছেন। চল্লিশ বছর বয়সী বাউটনের চার সন্তান, তবে স্বভাব-চরিত্রে ব্যাপক অস্থির চিত্তের মানুষ সে। নতুন ধারণার খোঁজে একদিন পরিচিত হয় কলম্বিয়ার এক প্রফেসরের সঙ্গে পরিচয় হয়। যে কিনা মেমোরি ডাউনলোড অথবা স্মৃতিকে বিমূর্ত রূপে ধারণ করা সংক্রান্ত এক উদ্ভাবনী ও জটিল ধারণা নিয়ে কাজ করছিল।
এক দশকের ব্যবধানে বিক্সের নতুন প্রযুক্তি, ওন ইয়োর আনকনশাস ব্যাপক জনপ্রিয়তার পাশাপাশি ব্যাপক সমালোচনারও জন্ম দেয়। কেননা, বিক্সের প্রযুক্তিতে নিজের হারানো বা ভুলে যাওয়া স্মৃতিতে অ্যাক্সেস পাওয়া যায়। এছাড়াও, অন্যদের স্মৃতিতে অ্যাক্সেসের বিনিময়ে প্রতিটি স্মৃতি ভাগ করে নেওয়া যায়। জনতাকে বিমোহিত করে তার এই কৌশল। তবে সবাইকে না। কাউকে আবার হতাশার তলানিতে ফেলে দেয় নিজেরই স্মৃতি।
দুর্দান্ত আর চুম্বক আকর্ষণের মতো ন্যারেটিভ দিয়ে ইগান তার গল্পের চরিত্রগুলোর অচৈতন্যকে আয়ত্ত্ব করতে দিয়ে এত বছর ধরে চলমান তাদের জীবনের গতিপথই বদলে দিয়েছেন। ইগানের দর্শনীয় কল্পনার মাঝে ‘কাউন্টার’ আছে যা আকাঙ্ক্ষাগুলোকে ট্র্যাক করে আর ‘ইলুডারস’ যা মূলত শাস্তি দেয়ার কাজ করে। দ্য ক্যান্ডি হাউজ বইয়ে ইগান আলাদা এক জগত তৈরি করেছেন যেখানে চরিত্রগুলো বন্দি নিজেদেরই স্মৃতির মাঝে।
চেকআউট ১৯ – ক্লেয়ার-লুইস বেনেট
লন্ডনের পশ্চিমে মধ্যবিত্ত শ্রমিক শ্রেণির এক কাউন্টিতে এক স্কুল ছাত্রী তার ব্যায়ামের বইয়ের পেছনের ফাঁকা পাতায় গল্প লিখতে শুরু করে। নিত্যদিনের জীবন, হাহাকার আর কল্পনার দুনিয়ায় বুঁদ হয়ে লেখার স্ফুলিঙ্গে নেশাগ্রস্ত হয়ে সে ডুবে যায় ভিন্ন এক জগতে। বয়স বাড়তে থাকলে তার লেখাও পরিণত হতে থাকে। একইসঙ্গে তার জ্বলন্ত প্রতিভার জ্বালানী মেলে বিভিন্ন ঘটনার সূত্রপাতের মাধ্যমে।
চেকআউট ক্লার্ক হিসেবে কাজ জুটে গেলেও মন পড়ে থাকে সাহিত্যের জগতে। আর এভাবেই মিলে যায় গুড অ্যান্ড ইভিল বইয়ের একটি কপি। ধীরে ধীরে বইয়ের দুনিয়াতে নিজেকে হারিয়ে ফেলে মেয়েটি। এমনকি তার বন্ধুত্ব থেকে শুরু করে সব ধরনের সম্পর্ক ভেস্তে যায় গল্পের চরিত্রগুলোতে ডুবে গিয়ে। তার মাথায় থাকা চরিত্র এবং দৃশ্যকল্পগুলো এতটাই প্রাণবন্ত হয়ে উঠে তার চোখের সামনে ধরা দেয়। গল্প এগিয়ে চলে।
চেকআউট ১৯ হচ্ছে কল্পনাশক্তির ভিত্তিগত এক বিবৃতি। জাদু সকলের জন্য উন্মুক্ত; কিন্তু যারা আয়ত্ত করতে জানে এবং পারে কেবল তারাই ওখান থেকে বেরিয়ে আসে। জীবনও কি তা-ই নয়? পরীক্ষামূলক, পরাবস্তববাদী, অটোফিকশনাল- এসব তকমাই দেয়া যায় ক্লেয়ার-লুইস বেনেটের এই বইকে।
ডেমন কপারহেড – বারবারা কিংসলভার
গল্পটা দক্ষিণ অ্যাপালাচিয়ার পাহাড়ে। এক কিশোরী মায়ের সিঙ্গেল-ওয়াইড ট্রেলারে জন্ম নেওয়া এক ছেলের গল্প, যার বেঁচে থাকার কোনো সার্ভাইল বুদ্ধি ছাড়া আর কোনো সম্পদ নেই। লালনপালন, শিশুশ্রম, পরিত্যক্ত বিদ্যালয়, ক্রীড়া সাফল্য, আসক্তি, বিপর্যয়কর ভালোবাসাসহ সবকিছুই মোকাবিলা করে সে। একটা গোটা সমাজে অদৃশ্যের মতো নিজেকে গণনা করেও নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার এক গল্প যেখানে এমনকি ঈশ্বর নজর দেন না!
বহুকাল আগে, চার্লস ডিকেন্স প্রাতিষ্ঠানিক দারিদ্র্য থেকে বেঁচে থাকা এবং শিশুদের উপর এর প্রভাব নিয়ে নিজস্ব অভিজ্ঞতার আলোকে লিখেছিলেন ডেভিড কপারফিল্ড। যদিও ডিকেন্সের অনুকরণে লেখা নয় এই উপন্যাস, তবে এই উপন্যাস যে অনুপ্রেরণা দিয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ডেমন কপারহেড হারিয়ে যাওয়া ছেলেদের একটি নতুন প্রজন্মের কথা বলে।
দ্য ফারোজ – নামওয়ালি সার্পেল
ক্যাসান্ড্রা উইলিয়ামসের বয়স বারো; তার ছোট ভাই ওয়েন, সাত বছর বয়স। একদিন একসাথে থাকাবস্থায় এক দুর্ঘটনায় ওয়েন চিরতরে হারিয়ে যায়। তবে দুঃখজনকভাবে তার লাশের খোঁজ মেলেনি। নিখোঁজ ছেলেটি পরিবারে ফাটল ধরায়। বাবা সংসার ছেড়ে চলে যায়, অন্যত্র সংসার সাজায়। কিন্তু মা আশা ছাড়তে পারে না। নিজের সন্তান এবং অন্য সন্তানদের কথা ভেবে তিনি নিখোঁজ সন্তানদের জন্য নিবেদিত এক সংস্থা খোলেন।
ক্যাসান্ড্রা তার ভাইয়ের মৃত্যুর ট্রমা থেকে বেরোতে পারে না। যেখানেই যায়, সেখানেই নিজের মৃত ভাইয়ের চেহারা দেখতে পায়। বাসে, ট্রেনে-সব জায়গায় নিজের ভাইকে দেখতে পায় ক্যাসান্ড্রা। সেই একই চোখ, সেই একই চাহনি; মাঝে মধ্যে সে অবাক হয়ে ভাবে- সত্যিই কি এটা তার ভাই!
কিন্তু পরক্ষণেই মনে পড়ে যে তার ভাই তো মারা গেছে। তারপর একদিন এক দুর্ঘটনায়, রহস্যময় কিন্তু খুব পরিচিত এমন একজন মানুষের দেখা পায় যে কিনা পৃথিবীতে নিজের অবস্থান অতীতে কোথায় ছিল তা খুঁজে ফিরছে; তবে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে তার নামও ওয়েন।
নামওয়ালি সার্পেলের এই অদ্ভুত উপন্যাস দুঃখকে ধারণ করে নতুন এক অভিজ্ঞতা দেবে পাঠকদের। অতীত কীভাবে সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো রূপ নেয় বর্তমানকে ভেঙে দেয়, তা-ই মূলত লিখেছেন সার্পেল। ফারোজ হলো স্মৃতি এবং শোকের একটি সাহসী অন্বেষণ যা অপ্রত্যাশিতভাবে ভুল পরিচয়, দ্বৈত চেতনা এবং ইচ্ছাপূরণের গল্পে রূপ নেয়।
ট্রাস্ট – হার্ন্যান ডিয়াজ
১৯২০ সাল। চারিদিকের এত হৈ-হুল্লাড়ের মধ্যেও কম-বেশি সবাই বেঞ্জামিন এবং হেলেন রাস্কের কথা শুনেছে বা পরিচয় জানে। কেননা, বেঞ্জামিন একজন ওয়াল স্ট্রিট পুঁজিপতি এবং রাস্ক ছিলেন অভিজাতদের রাজকন্যা। একইসাথে স্বামী-স্ত্রী দুজনই অফুরন্ত সম্পদের পাহাড়চূড়ায় ছিলেন তখন। কিন্তু এত বিত্তের মধ্যে থেকেও তাদের গোপনীয়তা নিয়ে আলাপ-আলোচনা শুরু হয় চারিদিকে।
কেননা, এরই মাঝে শেয়ার মার্কেট ধসে পড়লে মিডিয়া বেঞ্জামিনকে ভ্যাম্পায়ার বা রক্তচোষা বলে আখ্যা দেয়। বেঞ্জামিনের আর্থিক কৌশল আর রাস্কের একাকিত্ব নিয়ে চারদিকে গুঞ্জন ওঠে। ঠিক একই গল্প চারজন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষদর্শী বয়ানে শোনা যায়। কিন্তু পাঠক বিশ্বাস করবে কোন গল্প? আর সত্যই বা খুঁজে বের করবে কীভাবে?
নন-ফিকশন
অ্যান ইমেনস ওয়ার্ল্ড: হাউ অ্যানিমেল সেন্সেস রিভিল দ্য হিডেন রিয়েল্ম অ্যারাউন্ড আস – এড ইয়ং
পৃথিবী এক আশ্চর্যময় দর্শনীয় স্থান। শব্দ এবং কম্পন, গন্ধ বা স্বাদ, বৈদ্যুতিক এবং চৌম্বকক্ষেত্র দিয়ে পুরো এই জগত পরিপূর্ণ। এই বিশাল মহাজগতের এই ক্ষুদ্র অনুভূতিগুলো প্রতিটি প্রাণি নিজস্ব অনন্য সংবেদনশীল ইন্দ্রিয় দিয়ে উপলব্ধি করতে সক্ষম, এড ইয়ং যার নাম দিয়েছেন ‘সেন্সরি বাবল’। আরো সহজ করে বললে, মানুষ বাদে অন্য প্রাণিরা এই বিশ্বকে কীভাবে উপলব্ধি তা-ই মূলত আমাদের বোঝাতে চেয়েছেন লেখক।
এড ইয়ং এই বইয়ের মাধ্যমে আমাদের বলেন কচ্ছপের কথা, যে প্রাণি পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রগুলোকে ট্র্যাক করতে পারে; কুমির, যে প্রাণি চোয়াল শক্ত হলেও আঁশযুক্ত মুখটি অত্যন্ত সংবেদনশীল; দৈত্যাকার স্কুইড, যে প্রাণির চোখ বিবর্তিতই হয়েছে কেবল তিমি মাছ দেখার জন্যে।
মৌমাছি ফুলে কী দেখে, কী গান পাখিরা তাদের সুরে শুনতে পায়, কুকুররা রাস্তায় কিসের গন্ধ শুঁকে বেড়ায়, অথবা বিড়াল কী করে আগাম টের পায়- এ সবকিছুই হাতে-কলমে শেখাতেই এড ইয়ংয়ের অ্যান ইমেনস ওয়ার্ল্ড বইটি লেখা।
স্টে ট্রু: অ্যা মেমোয়ার – হুয়া শু
হুয়া শু তার দৃষ্টিতে দেখা এক পৃথিবীর গল্প শেয়ার করেছেন পাঠকের সাথে। ভ্রাতৃত্বের প্রতি তার আবেগের কথা, তিনি অন্য সবার থেকে আলাদা, জাপানি হয়েও কেন কী কারণে প্রজন্মের পর প্রজন্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী- এ সবই তাকে ভাবায়, নতুনভাবে দুনিয়া চিনতে শেখায়।
কেননা, হুয়া আর কেনের মধ্যে একদা বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। সিগারেটের ধোঁয়ায় কেটে যায় কত রাত, ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূল ধরে দীর্ঘ ড্রাইভ, দৈনন্দিন কলেজ জীবনের পাঠ্যপুস্তকের সাফল্য ও ব্যর্থতা- এ সবই রসদ যোগায় তাদের বন্ধুত্বের। কিন্তু এরপরই একদিন হুয়া শু জানতে পারে কারজ্যাকিংয়ের সময় খুন হয়েছে কেন।
একসময় যে সম্পর্ক অসম্ভব মনে হয়েছিল, সেই অদ্ভুত সুন্দর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের গহিনে কী ছিল? কেন তো চলে গেছে, হুয়া শুর কি আছে কেবল একবুক স্মৃতি? কেন চলে যাওয়ার পর এবং তারও পূর্বে স্বাভাবিক আর অস্বাভাবিক, একইসাথে সাধারণ আর অসাধারণ বাস্তব জীবনের প্রতিটা দিনের গল্পই স্মৃতিকথারূপে ঠাই পেয়েছে স্টে স্ট্রু নামক এই বইয়ে।
স্ট্রেঞ্জার্স টু আওয়ারসেল্ভস: আনসেটেল্ড মাইন্ড অ্যান্ড দ্য স্টোরিজ দ্যাট মেকস আস – র্যাচেল আভিভ
সংকট কিংবা দুর্দশার সময় মানুষ কী নিয়ে ভাবতে অভ্যস্ত? তারা কীভাবে নিজেদের বুঝতে পারে? এমন সব মৌলিক প্রশ্নের উত্তর নিয়ে নিজস্ব গবেষণা, অপ্রকাশিত নিবন্ধ এবং ব্যক্তিগত স্মৃতিকথার উপর নির্ভরশীল গ্রন্থ স্ট্রেঞ্জার্স টু আওয়ারসেল্ভস।
আভিভ এক ভারতীয় মহিলার কথা বলেন যে কিনা একজন সাধুর জীবনযাপন করেন এবং কেরালার এক হিন্দু নিরাময় কেন্দ্রের মন্দিরে থাকেন; আরো বলেন এক মায়ের কথা যে কিনা সম্প্রতি সাইকোসিস (মনোব্যাধি) থেকে সেরে উঠেছেন, কিন্তু আদতে তিনি কারারুদ্ধ নিজের সন্তানের ক্ষমার অপেক্ষায়; আরো বলেন এক ধনী যুবতীর কথা যে কিনা রোগ নির্ণয়ের পর ওষুধ নেয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
মানসিক ব্যাধি সম্পর্কে আমরা যে গল্পগুলো প্রতিনিয়ত বলি সেগুলো আমাদের জীবনে কীভাবে প্রভাব ফেলে, সেই গল্পই আমাদের শুনিয়েছেন রাচেল আভিভ তার স্ট্রেঞ্জার্স টু আওয়ারসেল্ভস বইতে।
আন্ডার দ্য স্কিন: দ্য হিডেন টোল অব রেসিজম অন আমেরিকা লাইভস অ্যান্ড অন হেলদ অব আওয়ার নেশনস – লিন্ডা ভিলারোসা
২০১৮ সালে লিন্ডা ভিলারোসার নিউ ইয়র্ক টাইমস ম্যাগাজিনের প্রবন্ধে আমেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গ মা এবং শিশুদের মধ্যে মাতৃত্ব ও শিশুমৃত্যুর বিষয়ে নতুন করে এক জাগরণ সৃষ্টি হয়। পূর্বের জাতিগত বৈষম্য থেকে কৃষ্ণাঙ্গদের স্বাস্থ্যসেবার এক সংযোগ স্থাপন করেন তিনি, সমাধানের জন্য সামান্য অগ্রগতিসহই।
এখন, এই আন্ডার দ্য স্কিন গ্রন্থে, লিন্ডা ভিলারোসা আমেরিকান স্বাস্থ্য-পরিচর্যা ব্যবস্থায় এবং আমেরিকান সমাজের এমন বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছেন যে কারণে কৃষ্ণাঙ্গরা শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় ‘অসুস্থতায় বাঁচে’ এবং ‘দ্রুত মারাও যায়’।
যদিও আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের যুগে দাসত্বের যুগ বাসি হয়েছে বলে ভুল অনুমান বহন করে চলা হয়। কৃষ্ণাঙ্গদের শ্বেতাঙ্গদের কাতারে মাপা হয়। কিন্তু আদতে সত্যটা গহিন থেকে টেনে বের করেছেন লিন্ডা ভিলারোসা।
উই ডোন্ট নো আওয়ারসেল্ভস – ফিনট্যান ও’টুল
আইরিশ সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক পরিবর্তনের এই বিবরণে লেখক তার নিজস্ব অভিজ্ঞতার বুননে দেখাতে চেয়েছেন যে আয়ারল্যান্ড মাত্র এক জীবনে কী করে ক্যাথলিক ‘অচলাবস্থা’ থেকে সম্পূর্ণ উন্মুক্ত এক সমাজে প্রবেশ করেছে।
একজন সহানুভূতিশীল, তবুও খুঁতখুঁতে পর্যবেক্ষক, ও’টুল নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে বিশ্বায়নের ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে, সমস্যাগুলোর সহিংসতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে সমাধান খুঁজেন এবং একসময়ের আইরিশ ক্যাথলিক চার্চের বিস্ময়কর পতনকে চিত্রিত করেন নিজের লেখায়।
তাই হয়তো উই ডোন্ট নো আওয়ারসেল্ভস গ্রন্থটিকে ‘আধুনিক আয়ারল্যান্ডের ব্যক্তিগত ইতিহাস’ বলে আখ্যা দেয়া হয়েছে।