শপ লিফটার্স: নিয়তির নির্মম পরিহাসের এক গল্প
গল্পটা একটি অতি সাদামাটা নিম্নবিত্ত পরিবারের। দারিদ্রতা ও অভাবকে নিত্যদিনের সাথী করে জীবন সংগ্রামে সংঘর্ষ করে টিকে ছিল এ পরিবারটি। পেটের ক্ষুধা নিবারণের তাগিদে পরিবারের প্রায় সব সদস্যই কোনো না কোনো উপায়ে উপার্জন করতে বাধ্য ছিল। কিন্তু শুধু খাদ্যই তো একটি পরিবারের তো বেঁচে থাকার নিমিত্তে একমাত্র চাহিদা হতে পারে না। তাই দৈনন্দিন জীবনের সাথে মিলেমিশে থাকা নানা ছোট-বড় প্রয়োজন মেটাতে সৎ পথে আয় করা ছাড়াও তাদের বেছে নিতে হয়েছিল সামান্য ছলচাতুরীর আশ্রয়। পরিবারের দুই পুরুষমানুষ, ওসামু ও শোতা প্রায়ই বিভিন্ন সুপার শপ অথবা দোকানে ঢুকে কেনাকাটা করার ভান করে এপাশ-ওপাশ ঘুরে ঘুরে কতৃপক্ষের চোখকে ফাঁকি দিয়ে নিজেদের চাহিদামতো জিনিসপত্র ব্যাগে ভরে ফেলত। এ কাজটি করার সময় তারা হাত দিয়ে সাংকেতিক ভাষায় কথা বলে পরস্পরের সাথে তথ্য আদানপ্রদান করত। এমনকি চুরি করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়া এড়াতে দুজন দুজনকে চারপাশের পরিস্থিতি সম্পর্কে সর্তক করে থাকত। অনেকটা প্রফেশনাল চোরদের মতো অতি সাবধানতা অবলম্বন করে জনসম্মুখে দোকান থেকে বেরিয়ে আসত তারা। এরপর ফিরে যেত নিজেদের ছোট্ট কুটিরে। হয়তো কখনো যাবার পথে রাস্তা থেকে পকেটের অর্থ খরচ করে পরিবারের সবার জন্য মজাদার কোনো খাবার কিনে নিত। তারা জানে, বাড়িতে তিনজন পথ চেয়ে বসে তাদের ফেরার অপেক্ষায়। বাড়ি গিয়ে নিজেদের সাথে নিয়ে আসা টুকিটাকি জিনিস পরিবারের সাথে ভাগ বন্টন তো করতই, পাশাপাশি সবাই একসাথে বসে পেটপুরে খাওয়াদাওয়াও করত। পরিবারটি হয়তো অর্থাভাব ছিল, হয়তো তাদের জীবনযাত্রার মান তেমন ভালো ছিল না৷ কিন্তু পরিবার হিসেবে তারা ছিল সুখী। ভালোবাসা, ঐক্যতা, দায়িত্বশীলতার কোনো খাঁজ ছিল সেখানে৷ হয়তো সকলের রাতে ঘুমানোর জন্য আলাদা আলাদা পরিপাটি শোবার ঘর ছিল না, কিন্তু প্রত্যেকের মনের ভেতর একে অপরের প্রতি স্নেহের কোনো কমতি ছিল না। আপাতদৃষ্টিতে মনে হবে যে, একজন বয়স্কা, তার ছেলে ও ছেলের বউ ও তাদের দু ছেলে-মেয়েকে নিয়ে গড়ে উঠা একটি অতি সাধারণ পরিবার এটি। কিন্তু বাস্তবচিত্র? সে গল্পের দিকে না হয় পরে যাওয়া যাবে