প্রায় ৩২০০ বছর আগের কথা। প্রাচীন গ্রিসের থিস্যালির এক যুদ্ধ-ময়দানে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করছে এক কুকুর। রক্তমাখা ঢাল, শিরস্ত্রাণ, পড়ে থাকা তীরবিদ্ধ মৃত ঘোড়ার নিথর দেহ- একে একে সবকিছুরই গন্ধ শুঁকল কুকুরটি। হঠাৎ কাকের কর্কশ কণ্ঠ কানে আসার পরই আওয়াজমুখী হয়ে ভোঁ দৌড় লাগাল। গিয়ে দেখে, মনিবের মৃত দেহটা ছিঁড়েখুঁড়ে খাচ্ছে কাকের দল। পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে আন্দাজ করা যাচ্ছে, জায়গাটায় একটু আগেই যুদ্ধের দামামা বেজেছে, তলোয়ার-বর্শার মৃত্যুক্ষুধায় ঝরে গেছে অগণিত প্রাণ। রক্ত জোয়ারে ভেসে গেছে পুরো ময়দান, ময়দানের বাদামী ধুলো জমাট বেঁধেছে শত যোদ্ধার রক্তে।
বিস্ময়ের ঘোর কাটার সুযোগ পাবার আগেই দেখা যায়, পরদিন মুখোমুখি এগিয়ে আসছে বিশাল পদাতিক দুই সৈন্যদল। উভয়পক্ষ থেকেই রথে চেপে এগিয়ে আসলেন দুই দলপতি। তাদের একজন হলেন গ্রিক সম্রাট আগামেমনন এবং তার অপর পাশে রথে দাঁড়িয়ে থিস্যালির বাদশাহ। সমঝদারের ভঙ্গিতে উভয়েই বুঝাতে চাইলেন, কেউই বিস্তর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রাজি নন। শর্ত দেওয়া হলো, দুই দলের শ্রেষ্ঠ দুইজন যোদ্ধা একে অপরের বিরুদ্ধে লড়বেন। যদি থিস্যালির বীর যোদ্ধা জিতে যায়, তবে চিরতরে তল্পিতল্পা গুটিয়ে নিজ রাজ্যে রওয়ানা দেবেন সম্রাট আগামেমনন। আর গ্রিক বাহিনী জিতে গেলেও সে জায়গা ত্যাগ করবেন আগামেমনন, তবে মিত্রতার বন্ধনে ডাক দেয়া হলে সবসময় তাকে সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
প্রস্তাব সাদরে গ্রহণ করলেন থিস্যালির নৃপতি। গর্বে গলা ফাটিয়ে হাঁক দিলেন, ‘বোয়াগরিয়াস’। সঙ্গে সঙ্গে বিশাল-দেহী এক যোদ্ধা ভিড় ঠেলে একেবারে সামনে এসে দাঁড়ালো। থিস্যালি যোদ্ধাদের হর্ষ-ধ্বনিতে তখন কান ফেটে যাওয়ার উপক্রম।
এবার পালা আগামেমননের, ডাক দিলেন ‘অ্যাকিলিস’ বলে। কয়েকবার ডাকার পরেও দল থেকে কোনো সাড়া শব্দ এলো না। সাথে সাথে আগামেমননকে উপহাসের পাত্র বানিয়ে দিলেন থিস্যালির বাদশাহ। তখন এক বালককে পাঠানো হলো অ্যাকিলিসের খোঁজে। যুদ্ধে সাজে ঘোড়ায় চড়ে ময়দানে উপস্থিত হলেন অ্যাকিলিস। ক্রুর হাসি হাসতে থাকলেন সম্রাট আগামেমনন। গ্রিক যোদ্ধারা সবাই যে যার মতো শক্তি খাটিয়ে যারপরনাই চেঁচিয়ে উৎসাহ প্রদান করছে অ্যাকিলিসকে।
ময়দানে নামল অ্যাকিলিস ও বোয়াগরিয়াস। বিশালদেহী বোয়াগরিয়াস মুহূর্তেই কুপোকাত হলো অ্যাকিলিসের কাছে। হাজার হাজার যোদ্ধার উল্লাস তখন আশ্চর্যজনকভাবে পিনপতন নীরবতায় রূপান্তরিত হয়েছে। হর্ষধ্বনি মুহূর্তের মধ্যে পরিণত হলো বিমূর্ত হাহাকারে।
এভাবেই রূপালী পর্দায় সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা অ্যাকিলিসকে ফুটিয়ে তুলেছিল বিশিষ্ট অভিনেতা ব্র্যাড পিট। হোমারের জগদ্বিখ্যাত মহাকাব্য ‘ইলিয়াড’ চিত্রায়িত হয়েছিল সেলুলয়েডের ফিতায়।
২০০৪ সালে ওয়ার্নার ব্রাদার্সের (WB) ব্যানারে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ট্রয় সিনেমাটি। পুরো সিনেমা মহাকবি হোমারের ইলিয়াড থেকে অনুপ্রাণিত হলেও ভার্জিলের এনিডের সাথেও এর কিছু সাদৃশ্য বিদ্যমান।
কাহিনী কিছুটা এ রকম- শান্তিচুক্তির উদ্দেশ্যে গ্রিসের স্পার্টায় পাড়ি জমান ট্রয় সম্রাট প্রিয়ামের দুই পুত্র, বীরযোদ্ধা হেক্টর ও প্যারিস। স্পার্টার মসনদে তখন আসীন আছেন আগামেমননের ভাই মেনেলাউস ও তার স্ত্রী হেলেন। হেক্টর ও প্যারিসকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর পর তাদের জন্য প্রচুর খানাপিনার আয়োজন করা হয়। অনেকদিন তারা মেনেলাউসের প্রাসাদে অতিথির আদরে রইলেন। একদিন মেনেলাউস সমুদ্রযাত্রায় ক্রিটে পাড়ি জমালে, সেই ফাঁকে হেলেনকে জাহাজে তুলে নিয়ে দ্রুত ট্রয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় রাজকুমার প্যারিস।
ক্রিট থেকে স্পার্টায় ফিরে আসার পর যখন মেনেলাউস দেখলেন ধূর্ত প্যারিস তার সাথে চরম বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তখন ক্রোধে ফেটে পড়লেন তিনি। খবর পাঠানো হলো তার ভাই আগামেমননের কাছে। এতদিন মনে ট্রয় হামলার বীজ বুনে রাখা আগামেমননও সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পিছপা হলেন না। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে পৃথিবীর মানচিত্রের আরও বিস্তীর্ণ সীমারেখা নিজের অধীনে নেয়ার লোলুপ দৃষ্টি যেন আরেকবার লকলক করে উঠল।
সন্দেশ পাঠানো হলো সমস্ত গ্রিসের খণ্ড খণ্ড রাজ্য সমূহে। প্রথমদিকে ট্রয় অভিযানে যেতে রাজি ছিলেন না অ্যাকিলিস, কিন্তু নিজ মাতা সমুদ্র-দেবী থেটিসের কাছে পরামর্শ চাইলে থেটিস তাকে বললেন, “অনাগত এই যুদ্ধ স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে ইতিহাসের পাতায়, অমলিন হয়ে থাকবে পুরো যুদ্ধ-কাহিনী। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে যাবে সাহসী যোদ্ধাদের বীর-গাঁথা। তুমি চাইলে বাকি জীবনটা কোনো ঝামেলা ছাড়াই সুখে শান্তিতে এখানে কাটাতে পারবে। তোমার সন্তান-সন্ততি ও নাতি-নাতনিরা মারা যাওয়ার পর আর কেউ স্মরণে রাখবে না তোমায়। কিন্তু ট্রয়ের যুদ্ধে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তুমি ছিনিয়ে নিতে পারবে অমরত্বের চির-গৌরব, হাজার বছর পরেও তোমাকে শ্রদ্ধা করা হবে ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ একজন যোদ্ধা হিসেবে। তবে সে যুদ্ধ থেকে জীবিত ফিরে আসতে পারবে না তুমি।“
যুদ্ধ-বিগ্রহের প্রতি গভীর অনুরাগী অ্যাকিলিস স্বভাবতই যোগ দিলেন ট্রয় অভিযানে। বীরযোদ্ধা সমেত প্রায় হাজার খানেক গ্রিক যুদ্ধ-জাহাজ এগিয়ে চলল সমুদ্রের বিশাল জলরাশির বুক চিড়ে। এভাবেই শুরু হয় গ্রিস ও ট্রয়ের টানা দশ বছর ব্যাপী স্থায়ী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পৃথিবীবিখ্যাত উপাখ্যান।
সিনেমাটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল জার্মান ফিল্ম ডিরেক্টর ওলফগ্যাং পিটারসেনের ঘাড়ে। দুইবার অস্কারে মনোনয়ন পাওয়া এই ডিরেক্টর ড্যাস বুট (১৯৮১), দ্য নেভার এন্ডিং স্টোরি (১৯৮৪), এনিমি মাইন (১৯৮৫), ইন দ্য লাইন অভ ফায়ার (১৯৯৩), আউটব্রেক (১৯৯৫), দ্য পারফেক্ট স্ট্রম (২০০০) ইত্যাদি সিনেমা পরিচালনায় নিজ মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। পাশাপাশি ট্রয় সিনেমার জন্যও সিনে পাড়ায় তাকে নিয়ে আলোচনা চলবে সবসময়, তা অস্বীকার করার উপায় নেই।
বিখ্যাত সেই ট্রয় নগরীর অবয়ব তৈরি করা হয়েছিল মাল্টার মেডিটেরানিয়ান দ্বীপে ফোর্ট রিকাসোলিতে। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সিন শুট করা হয়েছে মাল্টার দক্ষিণ দিকের এক ছোট্ট শহর মেলিহা ও কমিনো দ্বীপের অভ্যন্তরে। দেবতাদের নিজ হাতে গড়া ট্রয় নগরীর প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছিল মেক্সিকোর ক্যাবো সান লুকাস-এ। প্রাচীন বিশ্বের আবহ ফুটিয়ে তুলতে পরিচালক ছিলেন পুরোপুরি সক্ষম। নিখুঁত দৃশ্যপট ছিল এই সিনেমার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। সঠিক স্থান নির্বাচনের মাধ্যমে কিছু দৃশ্য পরিচালক এমনভাবে দৃশ্যায়িত করেছেন, যা দর্শকদের আচ্ছাদন করবে পুরাকালীন সংস্কৃতির মোড়কে, নিয়ে যাবে সুপ্রাচীন গ্রিক দেশে। পর্দার পেছনের মূল হিরো বলা যায় তাকেই।
কাহিনী খুব অপ্রত্যাশিত কিছু ছিল না। তবে চিত্রনাট্য এমনভাবে এগিয়েছে, যা দর্শকের মনোযোগ ধরে রাখার জন্য যথেষ্ট। চোখ-ধাঁধানো অ্যাকশন সিকোয়েন্স, মসৃণ ক্যামেরার কাজের সাথে প্রাচীন দুনিয়ার গ্রিস ও ট্রয়ের বর্ণিল সৌন্দর্য, দর্শকের বিনোদনের ষোলকলা পূর্ণ করেছে। উপাখ্যানের সার বক্তব্য সেলুলয়েডের পর্দায় সার্বজনীনভাবে উপস্থাপন করতে পেরেছিলেন তিনি।
মর্মস্পর্শী ভাষায় রচনা করা মহাকবি হোমারের মহাকাব্য ‘ইলিয়াড’ থেকে সারাংশ বেছে নিয়ে লিখালিখিতে সম্পাদনার কাঁচি চালিয়েছেন চিত্রনাট্যকার ডেভিড বেনিয়ফ। সুবিশাল এই আখ্যানকে তিন ঘণ্টার সিনেমায় আটকানো মোটেও সহজসাধ্য কাজ নয়। তাই লণ্ঠনের আলো অন্যদিকে না ফেলে, পুরোটাই ঝুঁকানো হয়েছে গ্রিস-ট্রয়ের দশ বছরের যুদ্ধের দিকে। তবে, রক্তক্ষয়ী এই সংঘর্ষের মূল নিয়ামক ছিল দেবতাদের মাঝে বিরাজমান কলহ, স্বার্থপরতা, নির্বুদ্ধিতা, অহংকার, শঠতা ও জিঘাংসা।
প্যারিস কোন উদ্দেশ্য নিয়ে স্পার্টায় পাড়ি জমিয়েছিল, সোনার আপেল নিয়ে তিন দেবীর মাঝে বাঁধা তর্ক, যুদ্ধে দেবতাদের পক্ষপাত ও সরাসরি অংশগ্রহণ- কিছুই দেখানো হয়নি সিনেমায়। অথচ, পুরো মহাকাব্যে সবচেয়ে মুখরোচক কাহিনীগুলো কেন্দ্রীভূত হয়েছিল দেবতাদেরকে ঘিরেই। এই সিনেমা যতটা না পৌরাণিক, তার চেয়ে বেশি রাজনৈতিক ও বাস্তবিক দুনিয়ার প্রতিফলন। তাই একদিক থেকে এই সিনেমা গ্রিস ও ট্রয়ের উপাখ্যানের বিস্তারিত জানা দর্শকদের তেমন আত্মতুষ্টি যোগাতে পারেনি।
শ্রেষ্ঠাংশে অভিনয় করা ব্র্যাড পিট, এরিক বানা, অরলান্ডো ব্লুম, ব্রায়ান কক্স, ডিয়ান ক্রুগার প্রত্যেকেই তাদের চরিত্র প্রতিফলনে ঠিকঠাকমতো উৎরে গেছেন। স্বর্ণকেশী, চালচলনে উদ্ধত ভাব ধরে রাখা, সুঠাম দেহের অধিকারী বিখ্যাত হলিউড অভিনেতা ব্র্যাড পিট অ্যাকিলিস চরিত্রকে যেন পুনর্জন্ম দিয়েছেন। রগচটা স্বভাব, সতেজে দীপ্ত, কঠোর মনোভাব, যুদ্ধক্ষেত্রে একাই শত যোদ্ধাকে ধরাশায়ী করা, ক্ষিপ্রতা, লড়াই করার প্রবণতা ও অপরিমেয় শক্তি ও অহংকার- প্রত্যেকটা স্বভাবই তিনি ফুটিয়ে তুলিয়েছেন সুনিপুণভাবে, যেন এই চরিত্রটা তার জন্যই বরাদ্দ ছিল।
অস্ট্রেলিয়ান অভিনেতা ‘এরিক বানা’কে নিয়েও অত্যুক্তির কিছু নেই। পুরো উপাখ্যান জুড়ে হেক্টরকে উপস্থাপন করা হয়েছে শান্ত-শিষ্ট, হাস্যোজ্জ্বল, ঠাণ্ডা মেজাজি ও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু এক বীরযোদ্ধা হিসেবে। তার প্রসন্ন অভিব্যক্তিই ছিল তার চরিত্রের যথাযথ প্রতিরূপ। একদিকে তিনি যেমন ছিলেন পুরো রাজ্যের প্রতি দায়িত্বশীল, তেমনি নিজ পরিবারের প্রতি কর্তব্যপরায়ণ। ছোট ভাই প্যারিসকে বাঁচাতে গিয়ে আগামেমননের ভাই মেনেলাউসকে খুন করতেও তিনি সংশয়াপন্ন হননি। স্ত্রী ও সন্তানের প্রতি নিখাঁদ ভালোবাসা যেন তার কর্তব্য-বন্ধনকে আরও জোরালো করে উপস্থাপন করেছে। এছাড়াও হতবুদ্ধি প্যারিসের ভূমিকায় অরনাল্ডো ব্লুম, লাবণ্যময়ী জিউস কন্যা হেলেনের অবতারে ডিয়ান ক্রুগার, আগামেমননের চরিত্রে ব্রায়ান কক্স প্রত্যেকেই তাদের অভিনয় দক্ষতায় বিনোদন ঘটিতে পূর্ণ প্রাপ্তি যোগ করেছেন।
আমেরিকান সংগীত রচয়িতা জেমস হরনার নিজ হাতে বুনেছেন ট্রয় সিনেমার সুরমালা। প্রাচীন আবহ-গাঁথায় চিত্রনাট্যের সাথে দর্শকদের মনোনিবেশ করাতে হলে মনোমুগ্ধকর সুরের কোনো বিকল্প নেই। জেমস হরনার যেন সেটাতে সফলতার মালা পরে দেখিয়েছেন আরও একবার। এর আগে জনপ্রিয় স্পেস অপেরা স্টার ট্রেক টু, স্টার ট্রেক থ্রি, কমান্ডো, এলিয়েন্স, ব্রেইভহার্ট, অ্যাপোলো ১৩, টাইটানিক, জুমানজি, অ্যা বিউটিফুল মাইন্ড ইত্যাদি জনপ্রিয় সিনেমার মতো ফিল্ম স্কোরিং যার হাত থেকে বেরিয়ে এসেছে, তার প্রতিভা নিয়ে সন্দেহ থাকার কথা নয়। এ ছাড়াও বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বেশি আয় করা সিনেমা অ্যাভাটার এর স্কোর তিনি লিখেছিলেন মনের মাধুরী মিশিয়ে।
প্রোডাকশন ও প্রমোশন মিলিয়ে প্রায় ১৮৫ মিলিয়ন ডলার খরচ করা এই সিনেমাটি ডোমেস্টিকে ১৩৩ মিলিয়নের ডলারের (২৬.৮%) সাথে ইন্টারন্যাশনালে ৩৬৪ মিলিয়ন ডলার (৭৩.২%) আয়ের মাধ্যমে নিজ ঝুলিতে বিশ্বব্যাপী মোট ৪৯৭ মিলিয়ন ডলার পুরে নেয়। আইএমডিবিতে এখন পর্যন্ত এর রেটিং ৭.৩/১০, সমালোচকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় রোটেন টম্যাটোসের টমাটো-মিটারে এর রেটিং এখন পর্যন্ত ৫৪%, এবং মেটা-ক্রিটিকে ৫৬%।
মহাকবি হোমারের বর্ণিত এই গল্প সত্যতার কষ্টিপাথরে যাচাই করলে কতটুকু টিকবে, সে সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট ধারণা নেই। কিন্তু গ্রিস ও ট্রয়ের এই যুদ্ধ এতটাই প্রভাবশালী ছিল যে, ইতিহাস হোক বা উপকথা- দু’দিকেই সে তার আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে। আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট, জুলিয়াস সিজারের মতো মহারথীরাও অনুপ্রাণিত হয়েছেন এই যুদ্ধ-কাহিনী থেকে। বিস্মৃতির অন্তরালে হারিয়ে যাওয়া স্মৃতির মতো নয়, এই উপাখ্যান টিকে রয়েছে সদর্পে।
কেতাবি ভাষার ইতিহাস থেকে ছেঁকে আনা এই কাহিনীকে সেলুলয়েডের ফিতায় ফুটিয়ে তোলা সহজ ছিল না। অনাকাঙ্ক্ষিত আশীর্বাদ রূপে ভয়ঙ্কর এক বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়া বিখ্যাত ট্রয় নগরী, মৃত্যুকে বীরের মতো আলিঙ্গন করে নেয়া মহামতি হেক্টর-অ্যাকিলিস, ট্রোজান হর্স, বিশ্বের অন্যতম আলোচিত নারী হেলেন, মহারাজ প্রায়াম, গ্রিক সম্রাট আগামেমনন, প্রত্যক্ষ মর্মপীড়ার অনুভূতি ২০০৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ট্রয় সিনেমার মাধ্যমে জীবন্ত হয়েছে, দর্শক হিসেবে যা আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া।
আরো পড়ুন- প্যারিসের সৌন্দর্য বিচার: গ্রিস ও ট্রয়ের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ সূচনার শুরু যেখানে