২০১৮ সালের ২৪ মার্চ, যুক্তরাষ্ট্রের সড়কে নেমে আসে দুই মিলিয়নের বেশি মানুষ। আগ্নেয়াস্ত্র ভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে একত্রিত হয়েছে তারা। এই সমস্যার সমাধান বের করতে হলে আগে খুঁজতে হবে কার হাত ধরে আসতে পারে কার্যকর সমাধান। কারো কারো মতে, নাগরিক অধিকারের তালিকা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র বহন করার অধিকার রদ করা উচিত, আবার কারো মতে, অধিক সংখ্যক লোকের কাছে পৌঁছে দেয়া উচিত এই মহামূল্যবান সম্পদ। বেশিরভাগ আমেরিকান আবার এই কোন দলের পক্ষ নেয়া উচিত, তা নিয়ে পড়ে যায় কোন্দলে।
এই বিতর্ক যদি চিরদিনের জন্য থামিয়ে দেয়া যায়, তবে কেমন হবে একবার ভাবুন তো? মানে যদি ধরণীর বুক থেকে চিরদিনের জন্য উঠে যায় বন্দুক, ফিরে আসার আর কোনো সুযোগ না থাকে এই খুনে হাতিয়ারের, তাহলে কি পাল্টে যাবে পৃথিবীর চেহারা?
বন্দুক তো আর একা একা জাদু-মন্ত্রবলে উধাও হয়ে যেতে পারে না। কিন্তু এই সমীকরণ মেলাতে হলে একটু দূরে সরিয়ে রাখতে হবে ভূ-রাজনীতিকে, যৌক্তিকভাবে চিন্তা করতে হবে আমরা কী পাচ্ছি আর কী হারাচ্ছি। একবারে গায়েব না করে বন্দুকের সংখ্যা কমিয়ে কি এই সমস্যার সুরাহা করা সম্ভব?
এই অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটে গেলে প্রথমেই যে ফলাফলটি আসবে: বন্দুকের গুলিতে আর কেউ নিহত হবে না। প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ আগ্নেয়াস্ত্রের কারণে নিহত হয়। উন্নত দেশগুলোতে আরও সুনির্দিষ্ট করে বললে কেবলমাত্র যুক্তরাষ্ট্রেই নাগরিকদের কাছে রয়েছে ৩০০ থেকে ৩৫০ মিলিয়ন বন্দুক! মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে আত্মহত্যা করা সেসব দেশে যেন ডাল-ভাত হয়ে গেছে। উচ্চ আয়ের অন্য যেকোনো দেশের সম্মিলিত হারেরও প্রায় ২৫ গুণ বেশি বন্দুক দ্বারা হত্যার ঘটনা ঘটে যুক্তরাষ্ট্রে।
“গুলির আঘাতে এ দেশে গড়ে প্রতিদিনে প্রায় ১০০ জন মারা যায়,” বলেন জেফরি সোয়ানসন, উত্তর ক্যারোলিনার ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের আচরণ ও মনোরোগবিদ্যা বিশেষজ্ঞ তিনি। তার মতে, শুধুমাত্র বন্দুক উঠিয়ে নিলেই এই হতভাগ্য প্রাণগুলো বেঁচে যেতে পারে।
বার্ষিক খুনের কারণের তালিকা করা হলে আত্মহত্যার পরের অবস্থানেই রয়েছে বন্দুক। ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত গড়ে এক লক্ষ ৭৫ হাজার ৭০০ জন আত্মহত্যা করেছে, যার মধ্যে ৬০ শতাংশ মানুষ আগ্নেয়াস্ত্রের সাহায্য নিয়েছে। কেবলমাত্র ২০১৫ সালেই ৪৪ হাজার আমেরিকান বন্দুকের সাহায্যে নিজেদের প্রাণনাশ করেছে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, প্রতি বছর প্রায় ৮০ শতাংশ তরুণ বন্দুকের সাহায্যে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে!
দুর্ভাগ্যবশত এ ধরনের আত্মহত্যায় বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
বলছিলেন সমাজ ও অপরাধবিজ্ঞানী টম গেবর। এ বিষয়ে ‘কনফ্রন্টিং গান ভায়োলেন্স ইন আমেরিকা’ নামক একটি বই লিখেছেন তিনি।
আগ্নেয়াস্ত্রের সাহায্যে যারা আত্মহত্যা করতে চায়, তারা এতটাই নির্মমভাবে আহত হয় যে জানে বেঁচে গেলেও জাগতিক পৃথিবীর প্রতি তাদের মন আরও বিষিয়ে ওঠে।
কিছু মানুষ যেন মারা যাবে বলে আদা-জল খেয়ে নামে। এই দফা বেঁচে গেলেও আত্মহত্যার নতুন কোনো না কোনো উপায় তারা বেছে নেবেই। কিন্তু কেউ কেউ আবার মৃত্যুকে এত কাছ থেকে দেখে নতুন করে জীবন শুরু করতে উদ্যমী হয়ে ওঠে। বাকি জীবনটা বেশ সুখে, কাজের কাজ করে কাটিয়ে দেয় তারা
জানান টেড মিলার, প্যাসিফিক ইন্সটিটিউট ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইভালুয়েশনের প্রধান গবেষক।
আমাদের দেশে অসংখ্য বাচ্চার ক্ষেত্রে এমনটাই হচ্ছে।
আগ্নেয়াস্ত্রের উপর নিষেধাজ্ঞা
অস্ট্রেলিয়া প্রমাণ করেছে, সত্যিকার অর্থেই যদি অস্ত্রের ব্যবহার কমানো যায়, তবে মৃত্যুর হার উল্লেখজনকভাবে কমে যাবে। এটা আত্মহত্যা এবং গান ভায়োলেন্স, দুই ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। ১৯৯৬ সালে মার্টিন ব্র্যায়েন্ট তাসমানিয়ার পোর্ট আর্থার হিস্ট্রিক সাইটে জনসমুদ্রের উপর আকস্মিক গুলি চালানো শুরু করে। ঐ ঘটনায় ৩৫ জন নিহত ও ২৩ জন আহত হয়। অস্ট্রেলিয়ানরা এই শোককে শক্তিতে পরিণত করে।
রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ সেমি অটোমেটিক শটগান এবং রাইফেলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য একাট্টা হয়। কিছুদিনের মধ্যেই সংবিধানে নতুন আইন জারি করা হয়। জনগণের কাছ থেকে বাজারমূল্য দিয়েই সদ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপিত আগ্নেয়াস্ত্র কিনে তা ধ্বংস করে ফেলে সরকার, এই এক আইনেই দেশটিতে আগ্নেয়াস্ত্রের পরিমাণ ৩০ শতাংশ কমে যায়।
ফিলিপ আলপারস, সিডনি স্কুল অফ পাবলিক হেলথের সহযোগী অধ্যাপক, তার গবেষণায় প্রমাণ করেন যে, শুধুমাত্র আগ্নেয়াস্ত্রের সংখ্যা হ্রাস করে একটি দেশে মৃত্যুহার কমানো সম্ভব।
সেবছর অস্ট্রেলিয়ায় বন্দুকের গুলিতে নিহতের সংখ্যা ৫০ শতাংশ কমে যায়। গত ২২ বছর ধরে সেই সংখ্যা কিন্তু খুব একটা বাড়েনি।
সম্প্রতি দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আত্মহত্যা এবং গুপ্তহত্যা উভয় বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে এই মন্তব্য করেন তিনি। বিশেষ করে আত্মহত্যাকারীদের সংখ্যা কমিয়ে আনতে এটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। বন্দুকের সাহায্যে আত্মহত্যা করার প্রবণতা ৮০ শতাংশ কমে গেছে।
আত্মহত্যার পরিমাণ এতটাই কমে গেছে যে, আমরা সবাই বিস্মিত হয়ে যাই।
বলেন আলপারস। শুধু আত্মহত্যাই নয়, বন্দুক সংক্রান্ত খুনের পরিমাণও সেবছর অর্ধেক কমে যায় অস্ট্রেলিয়ায়। তাছাড়া নারী নির্যাতনকারীদের মধ্যে এমন কিছু নির্যাতকের সন্ধান পাওয়া গেছে যারা বন্দুকের সামনে দাঁড় করিয়ে মেয়েদের উপর নানাভাবে মানসিক, শারীরিক ও যৌন নির্যাতন চালাতো। অস্ত্র জমা দিতে বাধ্য হওয়ার কারণে এই অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই পেয়েছে বলে জানায় অনেক নারী।
মনস্তাত্ত্বিকদের মতে, একটি বন্দুকের উপস্থিতি মানুষকে অনেক বেশি উগ্র ও আগ্রাসী করে তোলে, যাকে বলা হয় ‘গান এফেক্ট’ বা ‘অস্ত্রের প্রভাব’। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ৫০ জন নারী তার স্বামী বা ছেলেবন্ধুর গুলিতে নিহত হয়। অস্ট্রেলিয়ার পথ ধরে তারাও হয়তো এই হার কমিয়ে আনতে পারবে। নিউ ইয়র্কের স্টেট ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রবার্ট স্পিটজার বলেন
মানুষ মারার জন্য বন্দুকের মতো কার্যকর অস্ত্র দ্বিতীয়টি নেই। কাজেই সন্ত্রাসীদের কাছে এই বস্তুকে দুষ্প্রাপ্য করে তুলতে পারলে পরিস্থিতির পরিবর্তন আসতে বাধ্য। বৈধ অস্ত্রের সংখ্যা কমে গেলে সহিংসতায় জীবন কেন্দ্রিক ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা কমে যাবে।
অভাবনীয় শান্তি
ইতিহাস বলে, মানুষের রক্তে মিশে আছে সহিংসতা। সংঘর্ষ বা সহিংসতার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র কোনো পূর্বশর্ত নয়, রুয়ান্ডার গণহত্যাই তার প্রমাণ। ডেভিড ইয়ামেন, উত্তর ক্যারোলিনার ওয়েক ফরেস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বলেন,
আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াও যে নির্বিচারে বর্বরতা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব, রুয়ান্ডার দিকে তাকালেই তা বোঝা যাবে। কাজেই অস্ত্র উঠে গেলে দুনিয়া থেকে যুদ্ধ-বিগ্রহ চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে, এমন মনে করার কোনো সুযোগ নেই।
সেক্ষেত্রে হয়তো তলোয়ার, তীর-ধনুকের মতো প্রাচীন যুগের অস্ত্রগুলো আবার ফিরে আসার সম্ভাবনা কম থাকলেও বিস্ফোরক, ট্যাঙ্ক, মিসাইল, পারমাণবিক নানা অস্ত্র জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। আর খুন করা যাদের নেশা এবং পেশা, তারা নতুন কোনো না কোনো পন্থা আবিষ্কার করেই ছাড়বে।
শুধু আগ্নেয়াস্ত্র বন্ধ করে শান্তি আনা আক্ষরিক অর্থেই সম্ভব না। তবে এই একটি কাজ করেই শান্তির পথে অনেকটা এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। সুদান, সোমালিয়া কিংবা লিবিয়ার মতো দেশগুলোতে আগ্নেয়াস্ত্রের একরকম ছড়াছড়ি দেখা যায়। অস্ত্র গায়েব করে দিতে পারলে এখানকার মিলিশিয়ারা অনেকাংশে পঙ্গু হয়ে যাবে। সহজেই বহনযোগ্য এমন কার্যকর অস্ত্র, যা কিনা চাইলেই সরকার বা পুলিশের কাছ থেকে চট করে লুকিয়ে ফেলা যায়, তার বিকল্প খুঁজে বের করা খুব একটা সহজ হবে না। এখানে সুবিধার ব্যাপারটা যেমন আছে, তেমনি মিলিশিয়াদের দমন করতে সরকার পক্ষও যে বন্দুক ছাড়া হিমশিম খাবে, তা ভেবে দেখবার বিষয় বটে।
প্রাকৃতিক পরিবেশ
বন্দুক না থাকলে জীবজগতেও মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে। একদিকে পশু পাচারকারী এবং শিকারিদের খপ্পর থেকে রেহাই পাবে অসংখ্য বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির জীব, যার কারণে বৈচিত্র্যময় প্রাণীজগতের ভাণ্ডার হবে সুরক্ষিত। অপরদিকে ভয়ঙ্কর বন্যপ্রাণীর হাত থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করা হয়ে যাবে কষ্টসাধ্য।
চট্টগ্রামের গহীন জঙ্গলগুলোর কথা একবার ভেবে দেখুন। হঠাৎ করে বন্য হাতির দল তাণ্ডব চালায় এসব এলাকায়। লোকালয়ে ঢুকে উজাড় করে দেয় গ্রামের পর গ্রাম। গুলির শব্দে বা অনেক সময় বাধ্য হয়ে পাগলা হাতির মাথায় গুলি করে বাঁচাতে হয় স্থানীয়দের। যদি বন্দুকই না থাকে, তাহলে এদের আটকাবেন কী দিয়ে? মেরু ভাল্লুক, বিষাক্ত সাপ অ্যানাকোন্ডা কিংবা জাগুয়ারের মতো প্রাণীতে ভরপুর অ্যামাজন বা আফ্রিকার ঘন জঙ্গলে বন্দুক ছাড়া বিচরণ করার কথা বিশাল বুকের পাটাওয়ালা কোনো দক্ষ শিকারিও কল্পনা করতে পারবে না। তাহলে বন্দুক কি একদম গায়েব করা ফেলা উচিত হবে?
অর্থনৈতিক যত মারপ্যাঁচ
এবার আসা যাক অস্ত্রকে ঘিরে মূল প্রসঙ্গে। প্রকাশ্যে ঢাকঢোল পিটিয়ে বলা না হলেও একথা সবাই জানে যে, বিশ্বের উন্নত অনেক দেশের অর্থনীতির মূল চাবিকাঠি অস্ত্র ব্যবসা। ইরাক, ইরান বা সিরিয়ায় না হয় তেলের খনি আছে, কিন্তু কোরিয়া বা আফগানিস্তানের মতো রুক্ষ প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত দেশগুলোতে যুদ্ধ শুরু হলে আমেরিকার এত হস্তক্ষেপের অন্যতম প্রধান কারণ অস্ত্র বাণিজ্য। বন্দুক তৈরি করা হয় খুন করার জন্য। কিন্তু এর সাথে জড়িত রাজনৈতিক অর্থনীতি একেকটি দেশের মানচিত্রই পাল্টে দিতে পারে।
‘ফায়ারআর্ম ইন্ডাস্ট্রি ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন’ নামক একটি আগ্নেয়াস্ত্র বিপণন ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থার মতে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর প্রতক্ষ্যভাবে বৈধ উপায়ে ২০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের অস্ত্র লেনদেন করে তারা। অবৈধ উপায়ে কালোবাজারে বিক্রি হয় আরও প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার, কাগজে-কলমে যার কোনো অস্তিত্ব বা প্রমাণ থাকে না। আমেরিকার অর্থনীতিতে অস্ত্র যে কত বড় ভূমিকা রাখছে, ন্যূনতম ৫০ বিলিয়ন ডলারের এই হিসাবটিই তার ছোটখাটো একটি প্রমাণ।
এ তো গেল শুধু অস্ত্র কেনাবেচার বৈধ-অবৈধ হিসেব। প্রতি বছর অস্ত্রের আঘাতে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ও তাদের পুনর্বাসন মিলিয়ে খরচ হয় আরও প্রায় ১০.৭ বিলিয়ন ডলার। আর চুপিসারে রাজনৈতিক মারপ্যাঁচে যেসব ক্ষয়ক্ষতি হয় তার সার্বিক ভর্তুকিতে যায় প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলার! গেবর বলেন,
যুক্তরাষ্ট্র যদি অস্ত্র সহিংসতার মেডিকেল আর পুনর্বাসন বিষয়ক আর্থিক খরচটা মন দিয়ে দেখে, তাহলেই তারা নির্ঘাত আঁতকে উঠবে। শুধু আর্থিক ক্ষতিই নয়, বিচার ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সহিংসতার শিকার সেই মানুষগুলোর পারিবারিক জীবনের যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যায়, তার ভর্তুকি দেয়া এক কথায় অসম্ভব।
অস্ত্র না থাকলে মানুষ অনেক বেশি নিরাপদ বোধ করবে এমন একটি গবেষণাভিত্তিক তথ্য জানিয়েছেন মিলার। তিনি বলেন,
বিছানায় শুয়ে গুলির আওয়াজ শুনে ট্রমায় ভুগতে হবে না, এমন একটি প্রজন্ম যদি আমরা বিশ্বব্যাপী নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অনেকাংশেই নির্ভার হওয়া যাবে।
সব বয়সী আমেরিকানদের মধ্যে যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে, হতে পারে সেটা স্কুল, কলেজ, মুভি থিয়েটার কিংবা নাইটক্লাবে, অনাহূত বন্দুকধারীর আকস্মিক আক্রমণে প্রাণ হারানোর আশঙ্কা কাজ করে বলে জানান গেবর।
অধিকাংশ জনগণ যেখানে অস্ত্র না থাকলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবে, বিশ্বের মোড়লরা সেখানে খালি হাতে ঘুরতে গিয়ে অসহায় হয়ে অরক্ষিত অনুভূতির ফাঁদে পড়বে।
বিশেষ করে প্রতিরক্ষার সাথে জড়িতরা খানিকটা যেন শূন্যতার মধ্যে পড়ে যাবে। তবে তাদের এই সমস্যার প্রতিষেধক হিসেবে তলোয়ার কিংবা অন্য যেকোনো কম বিপজ্জনক অস্ত্র দিয়ে কাজ চালানো যেতে পারে।
মতামত দেন ইয়ামেন। বন্দুকধারীদের মধ্যে যে গান কালচার নামক এক ধরনের অভিজাত সংস্কৃতি আছে, তার প্রকোপ থেকে অবশ্য রক্ষা পাবে সাধারণ মানুষ।
বন্দুক, তলোয়ার কিংবা পারমাণবিক বোমা- কোনোটিই কিন্তু একা একা চলতে পারে না। এদের চালাতে হয় এবং চালানোর কাজটি করে মানুষ নামক দুপেয়ে এক বুদ্ধিমান প্রাণী। এই বুদ্ধিমান প্রাণী যদি যাবতীয় অস্ত্রের সদ্ব্যবহার করে, তাহলে আর দুনিয়া থেকে কোনো কিছু গায়েব করার দরকারই হবে না। আর তারা যদি নিজেদের ক্ষমতার দাপট টিকিয়ে রাখতে চায়, তাহলে আগ্নেয়াস্ত্র কেন, একটি পাথরও হয়ে উঠতে পারে প্রাণঘাতী। সুতরাং অস্ত্রের পরিমাণ কমানো যেমন একটি ভালো উদ্যোগ হতে পারে, তারচেয়েও ভালো উদ্যোগ হবে মানুষের বিবেক-বুদ্ধির যথাযথ ব্যবহার করা।