জার্মানির বাভারিয়া প্রদেশের প্রাচীন এক শহর রেগেন্সবুর্গ। রাজধানী মিউনিখ থেকে ১২৫ কিলোমিটার দূরে দানিয়ুব নদীর তীরে গড়ে উঠেছে এই ঐতিহাসিক শহর। নগরটি সভ্যতার ক্রমবিকাশের সময়কার অনেক ঐতিহ্য আর ঐতিহাসিক সব নিদর্শনের সাক্ষী হয়ে রয়েছে।
ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের এক অনন্য মিশেল রেগেন্সবুর্গ
জার্মানির দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত বাভারিয়া প্রদেশটি দেশটির বৃহত্তম প্রদেশ। ষষ্ঠ শতাব্দীতে ডিউক সাম্রাজ্যের অধীনে বাভারিয়ার গোড়াপত্তন ঘটে। পরে প্রদেশটি রোমান সাম্রাজ্যের অধীনে চলে আসে। এরপর বহুকাল স্বাধীন রাজ্য হিসেবে বাভারিয়া তার নিজের স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বাভারিয়া জার্মানির একটি প্রদেশ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হয়।
এই বাভারিয়া প্রদেশের অন্তর্গত প্রাচীন এক শহর রেগেন্সবুর্গ। শহরের বেশিরভাগ মানুষ রোমান ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বী। বাভারিয়ার অঞ্চলের এই শহরটি জার্মানির অন্য শহরগুলো থেকে বেশ আলাদা। সভ্যতা ও সংস্কৃতিতে এই নগরীর এক নিজস্ব স্বকীয়তা রয়েছে। মধ্যযুগের অনেক নিদর্শন শহরের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে।
মিউনিখ থেকে প্রাচীন এই শহরটিতে পৌঁছতে ঘন্টা দেড়েক সময় লাগে। পাথরের দেয়াল দিয়ে ঘেরা সুরক্ষিত এক জনপদ এই রেগেন্সবুর্গ। জার্মান ভাষায় ‘বুর্গ’ কথাটির অর্থ শহর বা নগর। পুরো শহর পাথরে বাঁধানো। শহরে ঢোকার মুখের চোখে পড়বে পুরনো টাউন হলের বিশাল এক ঘড়ি। শহরের দু’ধারে পরিপাটি করে সাজানো একশো-দেড়শো বছরের পুরনো বাড়িগুলো প্রাচীন স্থাপত্যকলার সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। পুরনো দোতলা, তিনতলা বাড়িগুলোর ত্রিকোণাকৃতি ছাদগুলো টালি দিয়ে বাঁধানো।
বাড়িগুলোর আশেপাশে মাঝেমাঝে উঁকি দিচ্ছে চা, কফির রেস্তোরাঁ আর পর্যটকদের জন্য সাজিয়ে রাখা নানা রকমের স্যুভেনিরের দোকান। শহর ধরে হাঁটতে থাকলে আরও চোখে পড়বে ত্রয়োদশ এবং চতুর্দশ শতকের তৈরি অভিজাত সব গির্জা। এছাড়া নগরীর দু’পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া দানিয়ুব এবং রিজেন নদীর অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশ বিদেশের বহু পর্যটক এখানে ভিড় করেন।
শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা খরস্রোতা দানিয়ুব নদী
এই শহরেই বিখ্যাত দানিয়ুব নদীর দেখা মেলে। এই নদী যেন ইউরোপিয়ান শিল্পী-সাহিত্যিকদের এক প্রেরণার নদী। দানিয়ুবকে নিয়ে তৈরি হয়েছে অসংখ্য গান, ছবি, বই আর সিনেমা। এই নদী জার্মানির প্রান্তে অবস্থিত ব্ল্যাক ফরেস্ট অঞ্চল থেকে যাত্রা শুরু করে পূর্ব ও পূর্ব-দক্ষিণ দিকে প্রায় ২,৮৬০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে দশটি দেশ- জার্মানি, অস্ট্রিয়া, স্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি, ক্রোয়েশিয়া, সার্বিয়া, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, মলদোভা এবং ইউক্রেনের গা ছুঁয়ে বয়ে গেছে আর সবশেষে তা কৃষ্ণ সাগরে এসে মিশেছে।
এই নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা অসংখ্য শহর ও জনপদের মধ্যে রয়েছে চার-চারটি দেশের রাজধানী- ভিয়েনা (অস্ট্রিয়া), ব্রাতিস্লাভা (স্লোভাকিয়া), বুদাপেস্ট (হাঙ্গেরি) এবং বেলগ্রেড (সার্বিয়া)। এই রেগেন্সবুর্গ শহরেই দানিয়ুবের অপর দুই শাখা নদী নাব এবং রেগেন এসে মিশেছে।
মধ্যযুগের এক অনন্য নিদর্শন সেন্ট পিটার্স ক্যাথিড্রাল
প্রাচীন রেগেন্সবুর্গ শহরের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ সেন্ট পিটার্স ক্যাথিড্রাল। গথিক স্থাপত্যে তৈরি গির্জাটি সমগ্র বাভারিয়া অঞ্চলের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গথিক স্থাপত্যের এক নান্দনিক নিদর্শন হিসেবে পরিচিত। ৮ম শতাব্দীর শুরুর দিকে এই ক্যাথিড্রাল নির্মিত হলেও ত্রয়োদশ শতকের শুরুর দিয়ে আগুন লেগে এটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। পরে গির্জাটি ১৫২০ সালের দিকে পুনরায় নির্মাণ করা হয়। দানিয়ুবের তীরে নির্মিত দর্শনীয় এই ক্যাথিড্রালের ১০৫ মিটার সুউচ্চ ও সুদৃশ্য দুটি চূড়া অনেক দূর থেকে দেখা যায়।
ক্যাথিড্রালের ভেতরে রয়েছে অসংখ্য সুন্দর স্মৃতিসৌধ আর রঙিন কাচ বসানো নকশাদার জানলা। ক্যাথিড্রালের সামনে পাথুরে বাঁধানো চত্বর। আর তার পাশে সরু রাস্তায় পরপর সাজানো রেস্তোরাঁ। ক্যাথিড্রালে আগত পর্যটকদের জন্য যেন একটু বিশ্রাম আর চা-কফিতে নিজেদেরকে তরতাজা করে তোলার জন্য এই ব্যবস্থা।
ওল্ড স্টোন ব্রিজ
দানিয়ুব নদীর ওপর তৈরি ওল্ড স্টোন ব্রিজটি রেগেন্সবুর্গের একটি বিশেষ দর্শনীয় স্থান। ১১৩৫ থেকে ১১৪৬ সালের মধ্যে ব্রিজটি সম্পূর্ণ পাথর দিয়ে তৈরি হয়েছিল। মধ্যযুগীয় দর্শনীয় ব্রিজগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। মধ্যযুগের প্রকৌশলীদের এক বিস্ময়কর সৃষ্টি এই সেতু। ১,০১৭ ফুট দীর্ঘ পাথরের সেতুটিতে ১৬টি কলাম রয়েছে। ১৯৩০ এর দশক পর্যন্ত দানিয়ুব নদীর ওপর এই সেতুটিই রেগেন্সবুর্গের একমাত্র সেতু ছিল। ব্রিজের ওপর থেকে পুরনো শহরের ছবি তোলার জন্য অনেক পর্যটকেই এখানে ভিড় করেন।
ক্রুজে করে দানিয়ুব নদীতে ভ্রমণ পর্যটকদের আর এক বাড়তি আকর্ষণ। দানিয়ুবের চারপাশের প্রকৃতির অনাবিল সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভ্রমণার্থীরা খুবই উৎসুক থাকেন। ক্রুজে করে বেড়াতে বেড়াতে দানিয়ুব নদীর তীরে গড়ে ওঠা প্রাচীন রেগেন্সবুর্গ শহরের নানা দর্শনীয় স্থান, যেমন- এথেন্সের পার্থেননের অনুরূপ ১৮৩০ সালে নির্মিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দর্শনীয় ওয়ালহাল্লা মন্দির, সপ্তদশ শতকে তৈরি টাওয়ার ক্লক, ব্রিজ টাওয়ার মিউজিয়াম, শহরের প্রাচীনতম টাওয়ার পোর্টা প্রেটোরিয়া, ১৬২০ সালে নির্মিত ঐতিহাসিক সল্ট ওয়্যারহাউস উল্লেখযোগ্য। এছাড়া দানিয়ুব নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে ঐতিহাসিক জাহাজের জাদুঘর। ১৯২৩ সালে এই জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে অনেক পুরাতন জাহাজের নানা নির্দশন সংরক্ষিত রয়েছে। এছাড়া এই জাদুঘরে জাহাজশিল্পের ক্রমবিকাশ সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
দানিয়ুব নদীর তীরে চার একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত হার্জগস্পার্ক পর্যটকদের নিরিবিলি সময় কাটানোর এক অন্যতম প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থান। ১২৯৩ সালে এই বোটানিক্যাল গার্ডেনটি গড়ে তোলা হয়। বাগানে শোভা পাচ্ছে মধ্যযুগের নির্মিত এক প্রাচীন টাওয়ার। বাগান জুড়ে আল্পাইনের সারি, রডোডেনড্রন আর নানা রঙের গোলাপ ফুলে বাগানের বর্ণিল শোভা দর্শনার্থীদের মোহিত করে রাখে। এই বাগানের একটু দূরেই রয়েছে ইতিহাস আর ঐতিহ্যের এক নিদর্শন ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম।
হাইদাপ্লাৎজ
একে রেগেন্সবুর্গ শহরের প্রাণকেন্দ্র বলা চলে। জার্মান ভাষায় ‘platz’ শব্দের অর্থ স্থান। জার্মানিসহ ইউরোপের অনেক প্রাচীন শহর এরকম এক একটি পাথরে বাঁধানো প্রশস্ত প্রাঙ্গনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। এই প্রাঙ্গনের চারদিকে রয়েছে শহরের নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রাসাদ, গির্জা, লাইব্রেরি, গ্রন্থাগার, সরকারি-বেসরকারি নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক দালান প্রভৃতি।
হাইদপ্লাৎজ প্রাঙ্গণটির চারপাশে থাকা এসব বাড়ি, প্রাসাদগুলো বেশ প্রাচীন হলেও রক্ষণাবেক্ষণের কারণে সবসময় তা নতুনরূপে পর্যটকদের কাছে ধরা দেয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে রেগেন্সবুর্গ শহরটির বিভিন্ন জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও প্রাচীন শহরটির তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। ফলে প্রাচীন সব নিদর্শনের শহর রেগেন্সবুর্গ ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সিটির মর্যাদা পেয়েছে।
টাউন হল
হাইদপ্লাৎজের প্রাসাদগুলোর মধ্যে অন্যতম টাউন হল। এখানে রয়েছে দ্বিতীয় শতাব্দীর রোমান টাওয়ার, ৯৮৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে নির্মিত ডিউক সম্রাটদের বাসস্থান। টাউনহলের মাঝের প্রাচীনতম অংশটি ত্রয়োদশ শতকে তৈরি হয়েছিল। ১৬৬৩ থেকে ১৮০৬ সাল পর্যন্ত এর প্রধান হলঘরটিতে বাভারিয়ার পার্লামেন্ট বসতো। এখন তা পার্লামেন্ট জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়েছে।
এর একটু দূরে ষোড়শ শতাব্দীতে গেস্ট হাউস হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া একটি প্রাসাদ যা বর্তমানে হোটেল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কথিত রয়েছে, সম্রাট পঞ্চম কার্ল পার্লামেন্ট চলাকালে এই গেস্ট হাউসে অবস্থান করতেন। বাভারিয়া এবং তার আশেপাশের সম্রাটরা এখানে রাত কাটিয়েছেন। এই ওল্ড টাউনের কাছে অবস্থিত জ্যোতির্বিজ্ঞানী জোহানস কেপলারের বাড়ি, চতুর্দশ এবং অষ্টাদশ শতকে তৈরি ঐতিহাসিক নানা স্থাপনা যা পর্যটকদের নিয়ত আকর্ষণ করে থাকে।
জাদুঘর ও আর্ট গ্যালারি
বলা হয়ে থাকে, একটি শহরকে অল্প সময়ে জানতে হলে সেই শহরের জাদুঘরগুলো পরিদর্শন করা উচিত। রেগেন্সবুর্গ শহরকে জানার জন্য শহর জুড়ে রয়েছে দর্শনীয় সব জাদুঘর। তার মধ্যে বাভারিয়ান হিস্ট্রি মিউজিয়াম, রেগেন্সবুর্গ মিউজিয়াম এবং ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম অব বাভারিয়া অন্যতম। বাভারিয়ান হিস্ট্রি মিউজিয়াম জার্মানির অন্যতম এক সমৃদ্ধশালী জাদুঘর। জাদুঘরটিতে ১৮০০ শতক থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ের অনেক ঐতিহাসিক নির্দশন সংরক্ষিত রয়েছে। বাভারিয়ার প্রাচীন সংস্কৃতি, ভাষা, ঐতিহ্যগত পোশাক, স্থানীয়দের হস্তনির্মিত নানা নির্দশন এবং ঐতিহ্যময় খেলাধুলার নানা উপকরণ এখানে সংরক্ষিত রয়েছে। জাদুঘরে আগত দর্শনার্থীরা এর মধ্য দিয়ে এখানাকার সামাজিক রীতিনীতি, কৃষ্টি এবং ঐতিহ্য সম্পর্কে সম্যক ধারণা পেতে পারেন।
১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত বাভারিয়ান ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে এই নগরীর ভূতাত্ত্বিক নানা ইতিহাস সংরক্ষিত রয়েছে। এছাড়া অনেক প্রাচীন ঐতিহাসিক সংগ্রহ, বই, এখানকার বনজঙ্গলে বিচরণ করা পশুপাখিদের নমুনা এখানে সংরক্ষণ করা রয়েছে। ত্রয়োদশ শতকে নির্মিত সেন্ট স্যালভেটর মনস্ট্রিতে গড়ে তোলা হয়েছে রেগেন্সবুর্গ হিস্ট্রি মিউজিয়াম। এই জাদুঘরটিতে শিল্প ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সাথে সাথে শহরটির প্রাচীন ইতিহাসকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এখানে প্রস্তর ও রোমান যুগের অসংখ্য বিরল হস্তনির্মিত সামগ্রী, অস্ত্র, চিত্রকলা ও ভাস্কর্যের সংগ্রহ রয়েছে, যা এককথায় অনবদ্য।
রেগেন্সবুর্গ শহরে অবস্থিত আর্ট ফোরাম ইস্ট জার্মানি গ্যালারিতে ইউরোপিয়ান চিত্রকলার এক অনন্য নিদর্শন সংরক্ষিত রয়েছে। পূর্ব ইউরোপের অনেক জার্মান-প্রভাবিত সাংস্কৃতিক অঞ্চলের শিল্পীদের নানা চিত্রকর্ম, ভাস্কর্য এখানে সংরক্ষিত রয়েছে। এই আর্ট গ্যালারি জাদুঘরে দু’হাজারেরও বেশি পেইন্টিংয়ের একটি চিত্তাকর্ষক সংগ্রহের পাশাপাশি প্রায় ৫০০টি ভাস্কর্য, স্কেচ এবং অঙ্কন এখানকার ১৫টি গ্যালারিতে ছড়িয়ে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ত্রয়োদশ শতকে তৈরি প্রাচীন সেন্ট উলরিখ গির্জায়ও খ্রিস্টীয় সময়ের নানা পেইন্টিং, ভাস্কর্যের বৃহৎ সংগ্রহ রয়েছে।
রেগেন্সবুর্গের এসব ইতিহাস ও ঐতিহ্যসম্পন্ন স্থাপনা, মনস্ট্রি, জাদুঘর পর্যটকদের নিয়মিত আকর্ষণ করে বলে এখানে পর্যটকদের আগমন সারাবছরই লেগে থাকে। রেগেন্সবুর্গের নারী এবং পুরুষেরা খুব উচ্ছল। উৎসবের সময় তারা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে ব্যাগপাইপ ও অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রের সাথে প্রাচীন লোকগীতির সুরে নেচে বেড়ান। এর মধ্যে দিয়ে তারা জীবনের জয়গান গেয়ে যান। আর সেই উদ্দামতা নগরীতে আসা সকল দর্শনাথীদের মাঝে উৎসারিত হয়। এভাবে মায়াময় শহরটি প্রতিনিয়ত যেন হাতছানি দিয়ে বিশ্বের সকল পর্যটককে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে।