২০১৯, ১৫ নভেম্বর; দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে সামোয়ার অন্তর্গত দ্বীপ উপলু (Upolu)।
সরকারি কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ এক সভা বসেছে সামোয়ার দ্বিতীয় জনবহুল এই সবুজ দ্বীপে। দরজায় করা নাড়ছে এক মহামারী। কার্যকর ভ্যাক্সিন থাকলেও কিছু কারণে বড় একটি জনগোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে এর আওতার বাইরে রয়ে গেছে। তাই মহামারী ছড়িয়ে পড়লে অনেক শিশুর মৃত্যুর আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ। ফলে সন্ধ্যা নাগাদ তার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন।
কিন্তু কী এই মহামারী? তিন মাস আগে নিউজিল্যান্ড ফেরত এক নাগরিক লাল লাল ফোস্কা নিয়ে এখানে প্রবেশ করে। তখন নিউজিল্যান্ডে চলছিল হামের মহামারী। সেই নাগরিকের একই অসুখ সন্দেহ করলেও জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তারা আর কোনো পদক্ষেপ নেননি।
২রা অক্টোবর নাগাদ আরো সাতজনের হাম (Measles) ধরা পড়ল। শিশুদের ক্ষেত্রে এর প্রকোপ বেশি, এবং স্কুল থেকেই এই রোগ ছড়ানোর হার অধিক। সেখানে কেবল পুরষ্কার বিতরণীর মতো জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়। তবে এই আদেশ পালিত হয় ঢিলেঢালাভাবে।
নভেম্বরের শুরুতে রোগীর সংখ্যা ৭১৬ জনে গিয়ে ঠেকল। মাত্র ১,৯৭,০০০ জনসংখ্যার দ্বীপে যা প্রায় ০.৪% রোগাক্রান্তের হার নির্দেশ করে। ছোঁয়াচে রোগের জন্য জনসংখ্যার তুলনায় এই হার উদ্বেগের।
সুখের কথা হলো- সরকার তড়িৎ ব্যবস্থা নেয়। ভ্যাক্সিন বাধ্যতামূলক করা হলো। যারা টিকা নেয়নি তাদের বাড়িতে টাঙিয়ে দেয়া হলো লাল পতাকা। সেই নিশানা দেখে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিকে দিলেন। সংক্রমণ বন্ধ করতে জারি করা হলো লকডাউন। জনগণও এবার তা মোটামুটি যথাযথভাবে পালন করে। রাস্তাঘাট খালি হয়ে যায়, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট আপাতত বাতিল করা হয়।
দেড় মাস পর জরুরি অবস্থা তুলে নেয় সরকার। হিসেবে দেখা যায়, মোট ৫,৬৬৭ জন হামে আক্রান্ত হয়েছে। ১৫ বছরের নিচে শতকরা ৮ ভাগকেই ধরেছে এই রোগ। এদের ৮১ জন মারা গেছে।
প্রশ্ন উঠতে পারে- হাম তো প্রতিরোধযোগ্য ব্যাধি। শিশুবয়সে টিকা দিলে তো হামের ঝুঁকি কমে যায়। তাহলে মহামারীর কথা উঠছে কেন? এর কারণ যে সময়ের কথা বলা হচ্ছে, তখন দ্বীপের মাত্র ৩০% মানুষ হামের টিকা নিয়েছিল। বছরখানেক আগেও যে হার ছিল প্রায় ৮০-৯০ ভাগ।
কিন্তু কেন মানুষ টিকা নিচ্ছিল না? এর পেছনে ছিল হামের ভ্যাক্সিন বিষয়ে ভীতি। ২০১৮ সালে হামে, মাম্পস আর রুবেলার টিকা (MMR vaccine) নেয়ার পর দুজন শিশু মারা যায়। টিকা দেবার আগে এর প্রস্তুতপ্রণালী যথাযথভাবে অনুসরণ না করায় এই ঘটনা ঘটে। এজন্য নরহত্যার অভিযোগে দুজন নার্স বিচারের মুখোমুখি হন। তাদের কারাদণ্ড প্রদান করে আদালত।
কিন্তু ক্ষতি ততক্ষণে যা হবার হয়ে গেছে। মানুষের মনে ভ্যাক্সিনের প্রতি অহেতুক ভীতি তৈরি হয়। সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে ছড়িয়ে পড়ে নানারকম অযৌক্তিক তত্ত্ব। ফলে হুট করেই হামের টিকা নেবার প্রবণতা নিম্নমুখী হয়ে যায়। ফলে নিউজিল্যান্ড থেকে আমদানি করা ভাইরাস পেয়ে যায় উর্বর এক ক্ষেত্র।
কিন্তু মহামারী শেষ হলেও রয়ে যায় নতুন আরেক হুমকি। একে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ইমিউন অ্যামনেসিয়া (immune amnesia) বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বিস্মরণ বলা যায়। এখন পর্যন্ত কেবল হামের জীবাণু, মিজলস ভাইরাসের ক্ষেত্রেই এটি দেখা গেছে। মহামারী যত না মারাত্মক, ইমিউন অ্যামনেসিয়া তার থেকেও বেশি মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে।
মিজলস ভাইরাস
হামের জন্য দায়ী মিজলস ভাইরাস আরএনএ জাতীয় ভাইরাস। ছোঁয়াচে ভাইরাসের মধ্যে এটি প্রথম সারিতে। বাতাসের মাধ্যমে একজন থেকে আরেকজনে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে মিজলস। প্রায় দুই ঘণ্টা বাতাসে ভেসে বেড়ানোর ক্ষমতা আছে তার।
ইমিউন অ্যামনেসিয়া
ইমিউন অ্যামনেসিয়া আবিষ্কৃত হয়েছে সবে নয় বছর আগে। বিজ্ঞানীরা দেখতে পান- মিজলস আমাদের শরীরের বিশেষ কিছু রক্তকণিকা, যা মেমোরি সেল নামে পরিচিত, তা ধ্বংস করে দেয়। এই রক্তকণিকাগুলোর মূল কাজ আমাদের শরীরে কোনো রোগজীবাণু ঢুকলে তাদের চিনে রাখা, যাতে দ্বিতীয়বার তাদের দেখা পাওয়ামাত্র দ্রুত রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় করা যায়। ফলে অসুস্থতা ঘটানোর আগেই ঝেটিয়ে বিদেয় করা যাবে এদের।
সহজ কথায়, মিজলস আক্রান্ত হলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পূর্বের সকল রোগজীবাণুর কথা বেমালুম ভুলে যায়। অনেকটা শিশু অবস্থায় ফিরে যায় তা। এই বিস্মরন স্থায়ী। কাজেই নতুন করে আবার সব রোগজীবাণু চিনতে হয়।
গবেষণার ফলাফল
মিজলসের এই ক্ষমতা তাত্ত্বিকভাবে প্রমাণিত হলেও গবেষণার দরকার ছিল। ২০১৩ সালে নেদারল্যান্ডসে হামের মহামারী দেখা দিলে বিজ্ঞানীরা সেই সুযোগ পেয়ে যান। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রোগতত্ত্বের সহকারী অধ্যাপক মাইকেল মিনার নেতৃত্বে গবেষকদল কাজে নেমে পড়লেন।
নেদারল্যান্ডসে এই মহামারী দেখা দিয়েছিল অর্থোডক্স প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে। তারা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ভ্যাক্সিন গ্রহণ করত না। তাদের প্রায় ২৬০০ লোকের মধ্যে হাম ছড়িয়ে পড়ে। চিকিৎসার কারণে এদের থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছিল।
মিনার দল তিনটি স্কুল বেছে নেয়। এসব স্কুলের ৭৭ জন শিশুর রক্ত পরীক্ষা করে তারা। এরা কেউই হামের টিকা নেয়নি। হাম দেখা দেবার আগের ও পরের রক্তের নমুনা নেয়া হয়। তুলনার জন্য ৩৩ জন টিকাপ্রাপ্ত শিশুর টিকা নেবার আগের ও পরের নমুনাও সংগ্রহ করা হলো।
তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে বিজ্ঞানীরা দেখলেন- ভ্যাক্সিন পায়নি এমন শিশুদের ক্ষেত্রে হাম থেকে সেরে ওঠার দুই মাস পর তাদের শরীরে বিভিন্ন অ্যান্টিবডির পরিমাণ প্রায় ৭০% কমে গেছে। এসব অ্যান্টিবডির বিভিন্ন রোগজীবাণুর বিরুদ্ধে তাদের সুরক্ষা দিচ্ছিল। যারা ভ্যাক্সিন পেয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এরকম কোনো সমস্যা হয়নি। বানরের উপর পরীক্ষা চালিয়েও একইরকম ফলাফল পেলেন তারা।
মিনার দলের সংগৃহীত নমুনা দিয়ে ভিন্ন কিছু পরীক্ষা চালান আরেকদল গবেষক। তারা প্রমাণ পান- মিজলস আমাদের মেমোরি সেল নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ায় ভূমিকা রাখে। ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর দুদলের গবেষণাই সায়েন্স অ্যান্ড সায়েন্স ইমিউনোলজি জার্নালে প্রবন্ধাকারে প্রকাশিত হয়। এর ভিত্তিতে ক্যানাডার ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মানসুর হারেফার বলেন যে মিজলস আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অনেকটা ডিফল্ট মুডে পাঠিয়ে দেয়। তা এমন অবস্থায় চলে যায় যেন কখনো কোনো জীবাণুর সংস্পর্শে আসেনি।
ততদিনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও নড়েচড়ে বসেছে। কারণ সেই বছরের প্রথম ছয় মাসে গত তের বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক হামের রোগী নথিভুক্ত করেছে তারা। ফলে মিজলস ভাইরাস নতুন করে বড় আকারে মাথাচাড়া দিচ্ছে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়। সামোয়ার মহামারী এই আশঙ্কাকে সত্যে প্রমাণ করে।
কীভাবে হয় এই বিস্মরণ
আগেই বলা হয়েছে, মিজলস বাতাসে ছড়ায়। শ্বাসনালীর মধ্যে দিয়ে মানবদেহে প্রবেশ করে এই ভাইরাস। এরপর ফুসফুসে এসে ম্যাক্রোফেজ নামে একধরনের কোষকে আক্রান্ত করে। এই কোষে ভর করে চলে যায় লসিকা গ্রন্থি বা লিম্ফ টিস্যুতে (lymph tissue)। এখানে তারা দু’ধরনের রক্তকণিকার সংস্পর্শে আসে।
আমাদের শ্বেত রক্তকণিকার মধ্যে বি আর টি-লিম্ফোসাইট (T-cells and B-cells) নামে দু’প্রকারের কণিকা রয়েছে। টি-লিম্ফোসাইটের একটি ধরন হলো মেমোরি সেল, যা মূলত তথ্যকেন্দ্রের কাজ করে। শরীরে প্রথম কোনো জীবাণু প্রবেশ করলে মেমোরি সেল তৈরি হয়, যা সেই জীবাণুর স্মৃতি ধারণ করে। দ্বিতীয়বার একই জীবাণুর দেখা পেলেই তারা পূর্বের সঞ্চিত তথ্য ব্যবহার করে তড়িৎ এবং অধিক শক্তিশালী প্রতিরোধ তৈরি করতে পারে।
বি লিম্ফোসাইট থেকে অ্যান্টিবডি প্রস্তুতকারক কোষের সৃষ্টি হয়। শরীরে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটলে এই কোষ তৈরি হয়, যার অ্যান্টিবডি বহিরাগত জীবাণু দূর করতে কাজ করে। জীবাণুর বিরুদ্ধে মেমোরি সেল থাকলে এই অ্যান্টিবডি তৈরি হয় অধিক দ্রুততায় এবং পরিমাণও হয় বেশি।
মিজলস যখন টি আর বি সেল আক্রমণ করে, তখন তারা শরীরে থাকা মেমোরি সেল ও অ্যান্টিবডি তৈরিকারক সেলগুলোতেও প্রবেশ করে। ফলে শরীর থেকে ভাইরাসকে দূর করতে হলে এই কোষগুলোও মেরে ফেলতে হবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক তা-ই করে। শরীরের আনাচেকানাচে থেকে মিজলস আক্রান্ত সমস্ত কোষ ধ্বংস করে ফেলে।
স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে রোগ সেরে গেলে নতুন করে মেমোরি সেল ও অন্যান্য সেল তৈরি হয়। মিজলসের ক্ষেত্রেও তা ঘটে। কিন্তু পার্থক্য হলো- হাম থেকে সেরে ওঠার পর যে মেমোরি সেল তৈরি হয়, তাতে একমাত্র মিজলসের স্মৃতি থাকে, বাকি সব মুছে যায়।
মিজলসের এ এক অদ্ভুত ক্ষমতা। নেদারল্যান্ডসের এরাসমাস বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক রিক ডি সোয়ার্টের মতে, আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে এই ভাইরাস সক্রিয় করে নিজের বিরুদ্ধে, কিন্তু নিষ্ক্রিয় করে দেয় অন্য রোগজীবাণুর বিপক্ষে। বিজ্ঞানীরা একে ‘মিজলস প্যারাডক্স’ নাম দিয়েছেন।
কতদিন থাকে এই বিস্মরণ
ইমিউন অ্যামনেসিয়া স্থায়ী। সুতরাং আমাদের শরীরকে সব শুরু করতে হয় আবার প্রথম থেকে। জন্ম নেয়ার পর নানারকম সংক্রমণ সয়ে আমাদের রোগ প্রতিরোধ পরিপক্ব হয়েছিল। সেই প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে আবারো যেতে হয়। কিন্তু কতদিন লাগতে পারে নতুন করে রোগ প্রতিরোধের তথ্যকেন্দ্র তৈরি হতে?
আটলান্টার এমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের নিয়ে মাইকেল মিনা পরিসংখ্যানের একটি মডেল উপস্থাপন করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য আর ডেনমার্কের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে তারা জানিয়েছেন- মিজলসের ফলে সৃষ্ট বিস্মরণের মেয়াদ গড়ে ২৭ মাসের মতো। সর্বোচ্চ পাঁচ বছর লাগতে পারে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পূর্বাবস্থায় ফেরত যেতে। এর ভিত্তিতে বিজ্ঞানীরা মত প্রকাশ করেছেন, গড়ে ২-৩ বছর লাগে নতুন করে মেমোরি সেল তৈরি হতে।
কেন গুরুত্বপূর্ণ
সবচেয়ে ছোঁয়াচে ভাইরাসের মধ্যে অন্যতম মিজলস। টিকার সহজপ্রাপ্যতা সত্ত্বেও নতুন করে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ২০১৯ সালের প্রথম চার মাসের মিজলস আক্রান্তের সংখ্যা আগের বছরের একই সময়ের থেকে ৩০০ গুণ বেশি। ব্রাজিল, ফিলিপাইন্স, ভেনেজুয়েলা, ইউক্রেন, আমাদের প্রতিবেশী ভারতসহ অনেক দেশই আছে হুমকিতে। ফ্রান্স, গ্রীসসহ পাশ্চাত্যের কিছু দেশও ছোট আকারে সংক্রমণের শিকার হয়েছে।
এটা সত্যি যে মিজলসের প্রাণসংহারি ক্ষমতা কম। তবে গবেষকদের মতে, মিজলসের প্রধান হুমকি এর রোগসৃষ্টির শক্তি নয়, বরং ইমিউন অ্যামনেসিয়া। এর ফলে মিজলস থেকে সেরে ওঠা রোগী পরবর্তীতে খুব সাধারণ কোনো রোগে মারা পড়তে পারেন। বিজ্ঞানীদের ধারণা, ব্যাপকভাবে মিজলসের টিকা প্রয়োগের আগে শিশুমৃত্যুর কারণের অন্যতম এই ইমিউন অ্যামনেসিয়া। অনেকে বলে থাকেন, মিজলস বাদ দিয়ে বাকি মৃত্যুর কারণের শতকরা ৫০ ভাগের প্রতিনিধিত্ব করে এটি।
বর্তমানে পৃথিবী কোভিড অতিমারির ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে কোভিড থেকে সেরে ওঠা এবং টিকাপ্রাপ্ত মানুষদের মধ্যে মিজলস সংক্রমিত হলে কোভিড প্রতিরোধ ভেঙে পড়ে। শরীর থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায় কোভিডের মেমোরি সেল ও অ্যান্টিবডি। কোভিডের হার্ড ইমিউনিটির যে কথা আমরা বলছি তা একেবারেই কাজ করবে না যদি কোভিডের পাশাপাশি মিজলসের মহামারী দেখা দেয়।
সামোয়ার উদাহরণ টেনে আনা যায়। সরকারের তড়িৎ পদক্ষেপে মিজলসের পর সেখানে কোভিড মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারেনি। কিন্তু যদি তা হতো তাহলে গবেষকদের ধারণা রোগীর সংখ্যা ৮% আর মৃত্যুর সংখ্যা ২% বেড়ে যেত।
আজকের যুগে ভ্যাক্সিনের বিরুদ্ধে নানারকম গুজব রটানোর ফলে টিকা নিতে অনেকের মধ্যে অনীহা তৈরি হচ্ছে। মিজলসের টিকা না নিলে এর ফলাফল হতে পারে ভয়াবহ। এমনকি অন্যান্য টিকা নেয়া হলেও যদি মিজলস বাদ থাকে তাহলে ইমিউন অ্যামনেসিয়ার প্রভাবে সেসব টিকার দ্বারা অর্জিত প্রতিরোধ ক্ষমতাও বিলুপ্ত হয়ে যাবে। সুতরাং আমাদের অবশ্যই সচেতন হতে হবে।