ভারতে করোনার ডাবল ও ট্রিপল মিউটেশন: শংকায় বিশ্ব পরিস্থিতি

পুরো বিশ্ব স্থবির হয়ে আছে করোনার ভয়াল সংক্রমণে। এ COVID-19 এর জন্য মূলত দায়ী SARS-CoV-2 নামক করোনাভাইরাস। মানবদেহে আক্রমণ করে থেমে থাকে না ভাইরাস, ক্রমাগত জেনেটিক পরিবর্তন এনে ক্রমশই আরো ভয়ংকর হয়ে উঠছে। যার প্রভাব স্পষ্ট হয়ে উঠছে বিশ্বব্যাপী করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে।

সম্প্রতি ভারতে করোনাভাইরাসের একটি ‘ডাবল মিউট্যান্ট’ ভ্যারিয়েন্ট বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বর্তমানে ভারতের বাইরেও বেশ কিছু দেশে এই ভ্যারিয়েন্টটির অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে। মনে করা হচ্ছে, প্রচলিত করোনা ভ্যাক্সিনগুলো ভাইরাসটির এ নতুন ভ্যারিয়েন্টটির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বেশ অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারে। ফলে দরকার হতে পারে আরো শক্তিশালী কোনো ভ্যাক্সিনের! 

ডাবল মিউটেশন কী?

করোনাভাইরাস একপ্রকারের RNA ভাইরাস। এ ভাইরাসের বহিরাবরণ থেকে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সূঁচালো বেরিয়ে আসা অংশগুলোকে বলা হয় স্পাইক। আর এ স্পাইক তৈরি হয় গ্লাইকোপ্রোটিন (শর্করা আর আমিষের সংমিশ্রণ) দিয়ে।

Structure of corona virus
করোনা ভাইরাসের গঠনে স্পাইক প্রোটিন; Image Source: Wikimedia Commons

ভাইরাসটি তার এ সূঁচালো অংশ দিয়ে মানবদেহ কোষের ACE2 রিসেপ্টরের সাথে সংযোগ স্থাপন করে দেহে প্রবেশ করে। এরপরই নিয়মিতভাবে ভাইরাসের RNA বিভাজন শুরু করে দেয়। বিভাজনে তৈরি হওয়া নতুন ভাইরাসের ক্ষেত্রে কিন্তু সব সময়ই আসল ভাইরাসের RNA এর মত RNA তৈরি হয় না। অনুলিপির ক্ষেত্রে তাই RNA এর গঠনে পরিবর্তন বা ভুলত্রুটি দেখা দেয়। ভাইরাসের RNA এর গঠনের পরিবর্তনে একটু নতুন ধরনের RNA বিশিষ্ট ভাইরাস তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়াকে বলা হয় মিউটেশন। এ মিউটেশন আবার বিভিন্ন ধরনের (E484Q, L452R) হতে পারে।

এখানে উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন ১২৭৩টি অ্যামাইনো অ্যাসিডের চেইনে গঠিত। আর এ অ্যামাইনো অ্যাসিডের স্বাভাবিক ক্রমের ব্যতিক্রম ঘটানোর মাধ্যমেও এর মিউটেশন হতে পারে। যেমন: E484Q মিউটেশনে ১২৭৩টি অ্যামাইনো অ্যাসিডের মধ্যে ৪৮৪ নম্বরে গ্লুটামিক অ্যাসিড (E) থাকার কথা কিন্তু এখানে গ্লুটামিন(Q) অ্যামাইনো অ্যাসিড চলে এসেছে। আবার L452R মিউটেশনে ৪৫২ নম্বর স্থানে লিউসিন (L) অ্যামাইনো অ্যাসিডটি আরজিনিন (R) অ্যামাইনো অ্যসিড দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয়েছে। ফলশ্রুতিতে ভাইরাসের RNA-তেও একসময় পরিবর্তন আসে।

আর মিউটেশনের মাধ্যমে RNA এর গঠনে পরিবর্তন হওয়া এসব ভাইরাসকে তখন বলা হয় ভ্যারিয়েন্ট। SARS-CoV-2 ভাইরাসেও এ প্রক্রিয়ার ব্যতিক্রম ঘটেনি। ফলে যুক্তরাজ্য ভ্যারিয়েন্ট (B.1.1.7), সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট (B.1.351), ব্রাজিলিয়ান ভ্যারিয়েন্ট (P.1) এর মতো ভিন্ন ভিন্ন ভ্যারিয়েন্ট তৈরি হয়েছে। ফলে ভাইরাসটি ক্রমশ নিজের মধ্যে পরিবর্তন এনে ক্রমশ আরো শক্তিশালী হয়ে উঠছে। স্পাইক প্রোটিনে পরিবর্তন এনে ভিন্ন উপায়ে আরো শক্তিশালী ভাবে মানবদেহে প্রবেশ করছে। ফলে কোনো কোনো ভ্যাক্সিন এসব নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অক্ষম হয়ে পড়ছে। এ জন্যই বিভিন্ন দেশে ভ্যাক্সিনের প্রয়োগ স্থগিত করার মতো ঘটনাও ঘটছে।

সম্প্রতি ভারতে B.1.617 নামের একটি ভ্যারিয়েন্টে ডাবল মিউটেশন শনাক্ত হয়েছে। সেজন্য একে ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্টও বলা হচ্ছে। ডাবল মিউটেশন মানে এ ভাইরাসে যে শুধু দুবার মিউটেশন ঘটেছে এমনটা নয়। গত বছরের তথ্যানুযায়ী মোট ১৩টি মিউটেশনের মধ্য দিয়ে গেছে এ ভাইরাস। এর মধ্যে চার ধরনের মিউটেশন ঘটেছে ভাইরাসটির সূঁচালো স্পাইক প্রোটিনের অংশে। এ চার ধরনের মিউটেশনের মধ্যে দুই ধরনের মিউটেশন (E484Q, L452R) একসাথে ভারতীয় B.1.617 এ ভ্যারিয়েন্টে ঘটেছে।

এর মধ্যে L452R ধরনের মিউটেশন ইতোমধ্যেই ক্যালিফোর্নিয়াতে দেখা দিয়েছে, আর E484Q মিউটেশনের অনুরূপ মিউটেশন দেখা গেছে সাউথ আফ্রিকা এবং যুক্তরাজ্যের  ভ্যারিয়েন্টে। কিন্তু এ দু’ধরনের মিউটেশন একসাথে ভারতীয় এ  B.1.617 ভ্যারিয়েন্টটিতে ঘটেছে বলে এখানে ডাবল মিউটেশন এর কথা বলা হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে এতে আরো ভয়ংকর রূপ ধারণ করতে পারে ভাইরাসটি।

ডাবল মিউটেশনের প্রভাবে কী ক্ষতি হতে পারে?

ডাবল মিউটেশনের প্রভাব নিয়ে গবেষণা এখনও চলমান। কিছু মিউটেশনে ভাইরাস ক্রমশ দুর্বল হয়ে যায় আবার কিছু ক্ষেত্রে তা ভাইরাসকে আরো শক্তিশালী করে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে গবেষণায় ডাবল মিউটেশনের মধ্যে L452R মিউটেশনটির প্রভাব শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।

এ মিউটেশনটির কারণে ভাইরাসের সংক্রমণ প্রায় ২০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ৫০% এরও বেশি কমে যেতে পারে বলে মনে করেন গবেষকরা। ফলে দ্রুত সংক্রমণের পাশাপাশি আক্রান্ত ব্যক্তির অবস্থা দ্রুত খারাপ হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।

ভারতে করোনার ডাবল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত; Image Source: moneycontrol.com

ভারতে এ ভ্যারিয়েন্টের মিউটেশন গত বছরের শেষে শনাক্ত হলেও সম্প্রতি এটি এর বিরুপ প্রভাবের কারণে আলোচনায় এসেছে। ইতোমধ্যে ভারতের দশটিরও বেশি অঙ্গরাজ্যে শনাক্ত হয়েছে এটি। যেখানে জানুয়ারি মাসে এ ডাবল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়েন্টটির সংক্রমণের  কোনো অস্তিত্বই ছিল না ভারতে, সেখানে এপ্রিল মাসেই ৫২% নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সে শনাক্ত হয়েছে এটি। মহারাষ্ট্র রাজ্যে ৬০% নমুনায় এই ডাবল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়েন্টটি শনাক্ত হয়েছে। ভারতে নতুন করোনা ঢেউয়ের কেন্দ্রস্থল মনে করা হচ্ছে মহারাষ্ট্র রাজ্যকে।

এমনিতে বর্তমানে ভারতে প্রকোপ আকার ধারণ করেছে করোনা। ব্রাজিলকে সরিয়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসতে পারে- নতুন এ ডাবল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়েন্টটির জন্য কি ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ কিনা? গবেষকরা মনে করেন, নতুন এ ভ্যারিয়েন্টটি ভারতে করোনার এ দ্বিতীয় ঢেউকে উস্কে দিচ্ছে। এর পাশাপাশি মাস্ক পরায় উদাসীনতা, সামাজিক দূরত্ব না মেনে চলা প্রভৃতিও নতুন করে করোনার প্রকোপের জন্য দায়ী। তবে নতুন এই ডাবল মিউট্যান্টটিই শুধুমাত্র দায়ী কিনা সে সম্পর্কে আরো গবেষণার প্রয়োজন বলে মনে করেন গবেষকরা। বর্তমানে যে হারে এটি ছড়াচ্ছে তা নিশ্চয়ই ভারতের জন্য বিরাট উদ্বেগ এর জায়গা হতে পারে।

পরবর্তীতে অবশ্য ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (ICMR) থেকে জানানো হয় যে, ভারত বায়োটেক এর তৈরিকৃত কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিন ‘কোভ্যাক্সিন’ ডাবল মিউট্যান্ট এ ভ্যারিয়েন্টটিকে সম্পূর্ণ প্রশমিত করতে সক্ষম।

শুধু কি ভারতেই?

গতিশীল বিশ্বায়নের এ পৃথিবীতে মানুষের জীবনযাপনের অভ্যাসের কারণে ভাইরাসকে আবদ্ধ রাখা চ্যালেঞ্জিং। মানুষের অধিক মাত্রায় ও স্বল্প সময়ে দূরদূরান্তে যাতায়াতের কারণে বর্তমান এই ভ্যারিয়েন্টও তাই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ কমপক্ষে ১০টির মতো দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ক্রমশ এর সংক্রমণ দেশগুলোতে বেড়েই চলেছে। অর্থাৎ, ঝুঁকি এখন আর একটি স্থানে নেই, আরো ১০টি স্থানেও তৈরি হয়েছে।  

সম্প্রতি যুক্তরাজ্য নতুন এ ভ্যারিয়েন্টটির বিস্তার রোধে ভারতকে লাল-তালিকাভুক্ত করে সে দেশের নাগরিকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। নিউজিল্যান্ড সাময়িকভাবে ভারতীয়দের সে দেশে প্রবেশ বন্ধ রেখেছে। অন্যদিকে হংকং ২০ এপ্রিল থেকে ১৪ দিনের জন্য ভারত, পাকিস্তান, ও ফিলিপাইন এ তিন দেশের ফ্লাইটে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

নতুন ভ্যারিয়েন্টটির প্রকোপ বাড়ার পরপরই বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফ্লাইট বন্ধ রাখা হয়েছিল। ইতোমধ্যে বাংলাদেশও ২৬ এপ্রিল থেকে ১৪ দিনের জন্য বাংলাদেশ-ভারত স্থল সীমান্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। নতুন এ ভ্যারিয়েন্টটির বিস্তারে এশিয়ায় করোনার ভয়াবহতা নতুন রূপ ধারণ করবে বলে আশংকা করা হচ্ছে

এবার ট্রিপল মিউটেশন?

ডাবল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়েন্টের রেশ কাটতে না কাটতে ট্রিপল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়েন্টের মারাত্মক সংক্রমণ দেখা দিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। নতুন এ ভ্যারিয়েন্টটিকে (B.1.618) ‘বেঙ্গল স্ট্রেইন’ বলেও অভিহিত করা হচ্ছে। আগের ডাবল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়েন্টে যেমন দুটি প্রধান মিউটেশনের সমন্বয় ঘটেছিল তেমনিভাবে এখানে তিনটি প্রধান মিউটেশন ও দুটি অ্যামাইনো অ্যাসিডের বিলুপ্তি (Deletion) ঘটেছে। তিনটি প্রধান মিউটেশনের সমন্বয় হওয়ার জন্য একে ট্রিপল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়েন্টও বলা হচ্ছে। ডাবল বা ট্রিপল মিউট্যান্টে যে আর অন্য কোনো মিউটেশন হচ্ছে না, তা  না। বরং ইতিমধ্যে ছড়িয়ে গিয়েছে এমন প্রচলিত দুটো বা তিনটি মিউটেশনের উপস্থিতির কারণেই যথাক্রমে ডাবল বা ট্রিপল মিউট্যান্ট বলা হচ্ছে।

এখানে মূলত স্পাইক প্রোটিনের ১৪৫তম ও ১৪৬তম স্থানে যথাক্রমে টাইরোসিন ও হিস্টিডিন অ্যামাইনো অ্যাসিডের বিলুপ্তি (Deletion) ঘটেছে। আর মিউটেশন তিনটি হচ্ছে-

  • মিউটেশনে ১২৭৩টি অ্যামাইনো অ্যাসিডের মধ্যে ৪৮৪তম স্থানটি গ্লুটামিক অ্যাসিডের পরিবর্তে লাইসিন অ্যামাইনো অ্যাসিড দ্বারা দখল হয়ে যাচ্ছে।
  • V382L মিউটেশন। এখানে V382L মিউটেশনে ৩৮২তম স্থানে ভ্যালিন অ্যামাইনো অ্যাসিডের স্থানে লিউসিন বসে যাচ্ছে।
  • ফিউশান পেপটাইডে D614G মিউটেশন। এখানে ৬১৪তম অ্যামাইনো অ্যাসিডের স্থানে অ্যাস্পার্টিক অ্যাসিডের পরিবর্তে গ্লাইসিন জায়গা দখল করে।   

এভাবে স্পাইক প্রোটিনে পরিবর্তন এনে করোনা ভাইরাস আরো শক্তিশালী হয়ে উঠছে। ফিউশান পেপটাইডে পরিবর্তন এনে খুব সহজে আর দ্রুত মানবদেহে প্রবেশ করতে পারছে। ফলে খুব দ্রুত সংক্রমণ বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু এবং ২৪-৫০ বছর বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে আশংকাজনক হারে এর সংক্রমণ বাড়ছে বলে মনে করছেন ভারতীয় গবেষকরা। 

ভারতে গত বছরে পশ্চিমবঙ্গে একটি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সে এই ভ্যারিয়েন্টটি শনাক্ত করা হলেও বর্তমান মার্চ মাস হতে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে থাকে। বর্তমানে যা পশ্চিমবঙ্গসহ দিল্লি ও মহারাষ্ট্রেও শনাক্ত হয়েছে। বিশেষ করে দিল্লি ও পশ্চিমবঙ্গে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে এ ভ্যারিয়েন্টটি। দেখা দিয়েছে অক্সিজেন সংকট। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, সুইজারল্যান্ড, ও ফিনল্যান্ডেও ভ্যারিয়েন্টটির সংক্রমণ ঘটেছে বলে মনে করছেন গবেষকরা।

নতুন করোনা ভ্যারিয়েন্ট কি পৃথিবীকে নতুন কোনো পরীক্ষায় ফেলতে যাচ্ছে? Image Source: usnews.com

নতুন এ ভ্যারিয়েন্টটির E484K মিউটেশন ইতিপূর্বে ব্রাজিলিয়ান ও সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টেও দেখা গিয়েছে। এই E484K মিউটেশনের কারণে নতুন এ ভ্যারিয়েন্টটি মানবদেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থেকে পালাতে সক্ষম। ফলে খুব দ্রুতই সংক্রমিত হতে পারে ভাইরাসটি। একপর্যায়ে ভ্যাক্সিনের কার্যকারিতাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে। কোনো ব্যক্তি যদি আগে কোনো ভ্যাক্সিন নিয়েও থাকেন বা অন্য কোনো ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা আক্রান্ত হন তারপরও এ নতুন ট্রিপল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়েন্টটির দ্বারা পুনরায় সংক্রমণ ঘটতে পারে।

তবে ভাইরাসের ক্রমাগত মিউটেশনের কারণে নতুন নতুন তথ্য প্রতিনিয়তই জমা হচ্ছে গবেষকদের কাছে। তাই ভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা বিষয়ে বিস্তর গবেষণার সুযোগ দেখছেন বিজ্ঞানীরা। তারপরেও ক্রমাগত ভাইরাসের রূপ বদল আর বিভিন্ন দেশে সংক্রমণের ছড়িয়ে পড়া ভিন্ন কিছুরই ইঙ্গিত বহন করে। ফলে নতুন করে এশিয়াসহ পুরো বিশ্ব করোনার আরও একটি ভয়াবহ প্রকোপ দেখতে যাচ্ছে কিনা তা সময়ই বলে দেবে।

একটুখানি আশার আলো

করোনাভাইরাসের এমন নিত্য নতুন পরিবর্তনে বর্তমানে এমন একটি ভ্যাক্সিনের খুবই প্রয়োজন যেটি কিনা সকল ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সক্ষম হবে। এক্ষেত্রে আশার আলো দেখাচ্ছেন ইউনিভার্সিটি অফ ভার্জিনিয়া হেলথের গবেষক স্টিভেন এল. জাইখনার এবং ভার্জিনিয়া টেকের গবেষক জিয়াং-জিন মেং। 

সকল ভ্যারিয়েন্টকে দমনকারী সুপার ভ্যাক্সিন কি আলোর মুখ দেখবে? Image Source: India Today

মনে করা হচ্ছে, তাদের তৈরিকৃত এ ভ্যাক্সিন কোভিড-১৯ এর জন্য দায়ী সকল স্ট্রেইনের বিরূদ্ধেই লড়াইয়ে সক্ষম হবে। আলোচিত এ সুপার ভ্যাক্সিনটি ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের ‘ভাইরাল ফিউশান পেপটাইড’ নামক একটি অংশকে টার্গেট করে। আর এ ‘ভাইরাল ফিউশান পেপটাইড’ অংশটি সকল করোনা ভাইরাসের মধ্যেই রয়েছে। এ কারণেই মনে করা হচ্ছে, এটি সার্বজনীনভাবে করোনার সকল স্ট্রেইনের বিরুদ্ধেই প্রতিরক্ষা দানে সক্ষম হবে। 

ভ্যাক্সিনটির কার্যকারিতা প্রমাণে তারা মানুষ ও শূকরের মধ্যে পৃথক পৃথক গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে শূকরের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ের গবেষণায় সফলতা মিললেও মানবদেহে প্রয়োগ উপযোগী করার জন্য আরো বিস্তারিত গবেষণা ও হিউম্যান ট্রায়ালের প্রয়োজন বলে মনে করেন গবেষকরা।

This article is written in the Bengali language. It describes the double and triple mutant variant of the covid-19 across the world. 

Feature Image: theconversation.com

References are hyperlinked with the text in the article.

Related Articles

Exit mobile version