করোনাভাইরাস থেকে সৃষ্ট রোগ কভিড-১৯ বিশ্বব্যাপী একটি মহামারি হিসেবে হাজির হয়েছে। কিন্তু এই বিষয়ে সচেতনতার অভাব দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে। সোশ্যাল মিডিয়ায় পরস্পরবিরোধী বিভ্রান্তিকর তথ্য ভেসে বেড়াচ্ছে। বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হওয়ার কারণে আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি অন্য অনেক দেশের চেয়ে বেশি। তাই করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনসচেতনতা গড়ার উদ্দেশ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইট থেকে এই লেখাটি অনুবাদ করা হলো।
যেহেতু বৈশ্বিক মহামারি একটি পরিবর্তনশীল ব্যাপার, তাই করোনাভাইরাসের ব্যাপারে নতুন বৈজ্ঞানিক তথ্য পাওয়া গেলে এসব পরামর্শের কোনো কোনোটি বদলেও যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সচেতন পাঠকদের উচিত হবে লাইভ আপডেট ও প্রয়োজনীয় তথ্যের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে এবং রোর বাংলার ‘করোনার আক্রমণ: ইতিবৃত্ত, সতর্কতা ও সাম্প্রতিক‘ কালেকশনে নিয়মিত চোখ রাখা।
নতুন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যেসব মৌলিক প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ নিতে হবে
কভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের ব্যাপারে সাম্প্রতিকতম তথ্য সম্পর্কে অবহিত থাকুন। এসব তথ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে, গণমাধ্যমে এবং আপনার জাতীয় ও স্থানীয় জনস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের কাছে পাওয়া যাবে। সংক্রমিত হওয়া অধিকাংশ মানুষ সাময়িক অসুস্থতার পর ভালো হয়ে যায়। কিন্তু অনেকের জন্যই এ সংক্রমণ মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে। তাই নিম্নোক্ত পরামর্শগুলো মেনে নিজের যত্ন নিন ও অন্যদেরকে রক্ষা করুন।
বারবার হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন
নিয়মিতভাবে বারবার স্যানিটাইজার দিয়ে অথবা সাবান-পানির মাধ্যমে হাত পরিষ্কার করুন।
কেন?
যদি আপনার হাতে ভাইরাস থেকে থাকে, সাবান-পানি বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করলে, সেগুলো মরে যাবে।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন
আপনার, আর হাঁচি-কাশি দেয়া যেকোনো ব্যক্তির মধ্যে ১ মিটার (৩ ফিট) দূরত্ব বজায় রাখুন।
কেন?
কেউ হাঁচি বা কাশি দিলে, তাদের নাক-মুখ থেকে তরলের ছোট ছোট ফোঁটা ছড়িয়ে দেয়। এতে ভাইরাস থাকতে পারে। আপনি যদি তার খুব কাছাকাছি থাকেন, আপনার শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে এই ফোঁটাগুলো ভেতরে চলে যেতে পারে। কাশতে থাকা ব্যক্তিটি অসুস্থ হলে সেসব ফোঁটায় কভিড-১৯ ভাইরাস থাকতে পারে।
নিজের চোখ, নাক, ও মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন
হাত দিয়ে নিজের নাক, মুখ ও চোখ স্পর্শ থেকে বিরত থাকুন।
কেন?
আপনার হাত নানা জায়গা স্পর্শ করে এবং ভাইরাস তুলে নিতে পারে। একবার সংক্রমিত হয়ে গেলে, আপনার হাত থেকে চোখ, নাক, কিংবা মুখে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। সেখান থেকে, ভাইরাস আপনার দেহে প্রবেশ করতে পারে। এবং আপনাকে অসুস্থ করে তুলতে পারে।
শ্বাস-প্রশ্বাসের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসম্মত ভদ্রতা চর্চা করুন
এটা নিশ্চিত করুন যে আপনি এবং আপনার আশেপাশে থাকা লোকজন শ্বাস-প্রশ্বাসের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসম্মত ভদ্রতা চর্চা করেন। মানে, হাঁচি-কাশি দেয়ার সময় কনুই বাঁকিয়ে হাত দিয়ে মুখ আড়াল করা অথবা ফেসিয়াল টিস্যু পেপার ব্যবহার করা। তারপর তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবহৃত টিস্যু ডাস্টবিনে ফেলা।
কেন?
তরলের ছোট ছোট ফোঁটা ভাইরাস ছড়াতে পারে। শ্বাস-প্রশ্বাসের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসম্মত ভদ্রতা চর্চার মাধ্যমে আপনি আপনার আশেপাশে থাকা লোকজনকে ঠাণ্ডা, ফ্লু, আর কভিড-১৯এর মতো ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচাতে পারেন।
আপনার যদি জ্বর, সর্দি-কাশি থাকে বা শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, জলদি ডাক্তার দেখান
শরীর ভালো না বোধ করলে ঘরে থাকুন। তবে জ্বর কিংবা সর্দি-কাশি হলে, বা শ্বাস নিতে কষ্ট হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। স্থানীয় স্বাস্থ্য-কর্তৃপক্ষের দিকনির্দেশনা অনুসরণ করুন।
কেন?
আপনার এলাকার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি কী, সেটি সবচেয়ে ভাল জানবেন জাতীয় ও স্থানীয় স্বাস্থ্য-কর্তৃপক্ষ। দ্রুত যোগাযোগ করলে যিনি আপনাকে স্বাস্থ্যসেবা দেবেন, তার পক্ষে আপনাকে সঠিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়াটা সহজ হবে। এটা আপনাকে যেমন বাঁচাবে, তেমনি ভাইরাস ও অন্যান্য সংক্রমণের ছড়িয়ে পড়াটাও রোধ করবে।
অবহিত থাকুন এবং যিনি আপনাকে নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা দেন, তার পরামর্শ মেনে চলুন
কভিড-১৯ এর সাম্প্রতিক খবরাখবরের দিকে খেয়াল রাখুন। নিজেকে এবং অন্যদেরকে কীভাবে কভিড-১৯এর হাত থেকে বাঁচাতে হবে, সে ব্যাপারে আপনার নিয়োগদাতা, জাতীয় ও স্থানীয় স্বাস্থ্য-কর্তৃপক্ষ, এবং যিনি আপনাকে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন, তার পরামর্শ মেনে চলুন।
কেন?
আপনার এলাকায় কভিড-১৯ ছড়িয়েছে কি না, সে ব্যাপারে আপনাকে সবচেয়ে ভালো তথ্য দিতে পারবে জাতীয় ও স্থানীয় স্বাস্থ্য-কর্তৃপক্ষ। আপনার এলাকার মানুষদের নিজেদেরকে রক্ষা করতে কী করা উচিত, এ ব্যাপারেও সবচেয়ে ভালো পরামর্শ তারাই দিতে পারবে।
কভিড-১৯ ছড়াচ্ছে এমন কোনো স্থানে অবস্থান করছেন, বা সম্প্রতি (গত ১৪ দিনের মধ্যে) সেখানে ছিলেন, এমন মানুষদের জন্য প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ
- ওপরের দিকনির্দেশনাগুলো মেনে চলুন।
- মাথা ব্যথা এবং নাকে হালকা তরল জমার মতো মৃদু উপসর্গও যদি দেখা দেয়, এবং এর কারণে আপনি যদি অসুস্থ বোধ করেন, ঘরে থাকুন।
কেন?
অন্যদের সংস্পর্শ বাঁচিয়ে চলা এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়া এই কেন্দ্রগুলোকে আরো দক্ষভাবে কাজ করতে সহায়তা করবে, এবং আপনাকে ও অন্যদেরকে কভিড-১৯ ও অন্যান্য ভাইরাস থেকে বাঁচাবে।
- জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাস নিতে কষ্ট হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। এগুলো শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সংক্রমণ বা অন্যান্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির ব্যাপার হতে পারে। যিনি আপনাকে নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা দেন, তার সাথে দ্রুত যোগাযোগ করুন। সম্প্রতি আপনি কোথাও ভ্রমণ করলে বা কোনো ভ্রমণকারীর সাথে আপনার সাক্ষাৎ হলে সে ব্যাপারে তাকে জানান।
কেন?
দ্রুত যোগাযোগ করলে যিনি আপনাকে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন, তার পক্ষে আপনাকে সঠিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়াটা সহজ হবে। এটা কভিড-১৯ এবং অন্যান্য ভাইরাসের সম্ভাব্য ছড়িয়ে পড়াটাও প্রতিরোধ করতে সহায়তা করবে।
মাস্ক ব্যবহার প্রসঙ্গে
কখন মাস্ক পরবেন?
প্রাথমিকভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতামত ছিল-
- আপনি যদি সুস্থ হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার মাস্ক পরার প্রয়োজন হবে শুধু একটি ক্ষেত্রেই – যদি আপনি কভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে, এমন কাউকে দেখাশোনার দায়িত্বে থাকেন।
- হাঁচি বা সর্দিকাশি থাকলে।
- সাবান-পানি বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করার পাশাপাশি মাস্ক পরলেই কেবল মাস্ক পরাটা কাজে আসবে।
- আপনি যদি মাস্ক পরেন, তাহলে এটি কীভাবে মুখে লাগাতে হবে আর কীভাবে ফেলে দিতে হবে, সেটি আপনাকে যথাযথভাবে জানতে হবে।
পরবর্তীতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিভিন্ন গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে সংক্রমণের ঝুঁকি কমানোর স্বার্থে মাস্ক ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দেয় এবং পাবলিক প্লেস তথা জনসমাগম হয় এমন স্থানে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেয়।
যেভাবে মাস্ক পরবেন, ব্যবহার করবেন, খুলে ফেলবেন, ও ফেলে দেবেন
- মাস্ক পরার আগে সাবান-পানি বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে নিন।
- মাস্ক দিয়ে নাক ও মুখ ঢাকুন এবং আপনার মুখ ও মাস্কের মধ্যে কোনো ফাঁকা নেই, এটা নিশ্চিত করুন।
- মুখে পরে থাকা অবস্থায় মাস্কটি হাত দিয়ে স্পর্শ করবেন না। যদি করতেই হয়, সাবান-পানি বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করুন।
- ময়লা হয়ে গেলেই পুরনো মাস্ক খুলে ফেলে নতুন মাস্ক পরুন। ওয়ান-টাইম-ইউজ মাস্ক বারবার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
- মাস্ক খুলে ফেলার ক্ষেত্রে – পেছন থেকে খুলুন (সামনের অংশ স্পর্শ করবেন না)। ময়লার বালতি বা বাস্কেটে ফেলে দিন। সাবান-পানি বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করে নিন।
করোনাভাইরাস বিষয়ে প্রচলিত কিছু গুজব ও বাস্তবতা
- গুজব – গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় কভিড-১৯ ছড়ায় না।
বাস্তবতা – এখন পর্যন্ত এই ধারণার পক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। করোনাভাইরাস যেকোনো এলাকায় ছড়াতে পারে। যেসব এলাকার আবহাওয়া গরম ও আর্দ্র, সেসব এলাকাতেও।
- গুজব – ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় বা তুষারপাতে করোনাভাইরাস মরে যায়।
বাস্তবতা – ঠাণ্ডা আবহাওয়া নতুন করোনাভাইরাসকে মেরে ফেলতে পারে বা অন্যকোনো অসুখ সারিয়ে দিতে পারে, এমনটি বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৩৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাহ্যিক তাপমাত্রা বা আবহাওয়ার কোনো প্রভাব এর ওপর পড়ে না।
- গুজব – গরম পানিতে গোসল করলে করোনাভাইরাস ঠেকানো যাবে।
বাস্তবতা – না, যাবে না। গোসলের সময় ব্যবহৃত পানির তাপমাত্রা যা-ই হোক, আপনার দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৩৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসই থাকবে। আসলে, খুব গরম পানি দিয়ে গোসল করলে ক্ষতি হতে পারে আপনার শরীরের, শরীর পুড়ে যেতে পারেন।
- গুজব – মশার মাধ্যমে নতুন করোনাভাইরাস ছড়ায়।
বাস্তবতা – এখন পর্যন্ত এই ধারণার পক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
- গুজব – হাত শুকানোর যন্ত্র করোনাভাইরাসকে মেরে ফেলায় কার্যকর।
বাস্তবতা – না, কার্যকর নয়।
- গুজব – ইউভি ল্যাম্প নতুন করোনাভাইরাসকে মেরে ফেলতে পারে।
বাস্তবতা – না। বরং এটা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। কারণ ইউভি ল্যাম্প থেকে তেজস্ক্রিয়তা নির্গত হয়।
- গুজব – নতুন করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে থার্মাল স্ক্যানার কাজে আসে।
বাস্তবতা – আংশিক সত্য। নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ফলে জ্বর এসেছে, শুধু এমন লোকজনকে শনাক্ত করার ক্ষেত্রেই থার্মাল স্ক্যানার কাজে আসে। কিন্তু আক্রান্ত হলেও এখনো জ্বর ওঠেনি, থার্মাল স্ক্যানার এমন কাউকে শনাক্ত করতে পারে না।
- গুজব – সারা দেহে অ্যালকোহল বা ক্লোরিন স্প্রে করলে নতুন করোনাভাইরাস মরে যায়।
বাস্তবতা – না, মরে না। যেসব ভাইরাস ইতোমধ্যেই আপনার শরীরে ঢুকে গেছে, সেগুলোকে মারার সাধ্য অ্যালকোহল বা ক্লোরিনের নেই। চোখমুখ বা কাপড়ে এসব স্প্রে করাটা বরং ক্ষতিকর হতে পারে। মনে রাখবেন, সংক্রমণ রোধে অ্যালকোহল বা ক্লোরিন ভূমিকা রাখে বটে, কিন্তু ব্যবহারটা হওয়া চাই যথাযথ দিকনির্দেশনা মেনে।
- গুজব – নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন নতুন করোনাভাইরাসের হাত থেকে বাঁচায়।
বাস্তবতা – না, নিউমোনিয়া বা অন্য কোনো রোগের ভ্যাকসিন নতুন করোনাভাইরাসের হাত থেঁকে বাঁচাবে না। এই ভাইরাসটা এতটাই নতুন এবং আলাদা যে, এর জন্য নতুন ভ্যাকসিন প্রয়োজন। গবেষকরা ২০১৯ নতুন করোনাভাইরাসের একটা ভ্যাকসিন আবিষ্কার করা চেষ্টা করছেন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ-ব্যাপারে তাদেরকে সাহায্য করছে।
- গুজব – নাকে নিয়মিত স্যালাইন লাগালে নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচা যাবে।
বাস্তবতা – এখন পর্যন্ত এই ধারণার পক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
- গুজব – রসুন খেলে নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকানো যাবে।
বাস্তবতা – রসুন স্বাস্থ্যকর খাবার। এর কিছু এন্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যও আছে। কিন্তু বর্তমান প্রাদুর্ভাব থেকে এমন কোনো প্রমাণ মেলেনি যে, রসুন খেলে নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকানো যাবে।
- গুজব – নতুন করোনাভাইরাসে শুধু বয়স্ক লোকেরাই আক্রান্ত হবে।
বাস্তবতা – যেকোনো বয়সের মানুষ নতুন করোনাভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। তবে অ্যাজমা, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ আছে এমন বয়স্ক মানুষদের ঝুঁকি বেশি এবং এরা সংক্রমিত হলে তীব্র অসুস্থতায় পড়তে পারেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ হলো, সব বয়সের মানুষদের উচিত নিজেদেরকে এই ভাইরাস থেকে রক্ষা করা। উদাহরণস্বরূপ হাত পরিষ্কার করা ও শ্বাসপ্রশ্বাসের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসম্মত ভদ্রতা চর্চার কথা ওপরে বলা হয়েছে।
- গুজব – অ্যান্টিবায়োটিক খেলে করোনাভাইরাস ঠেকানো যাবে বা সংক্রমিত হলেও রোগ ভালো হয়ে যাবে।
বাস্তবতা – না। অ্যান্টিবায়োটিক ভাইরাসের বিরুদ্ধে কোনো কাজে আসে না। এগুলো শুধু ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজে আসে।
- গুজব – নতুন করোনাভাইরাস ঠেকানোর বা এর চিকিৎসা করার ওষুধ এসে গেছে।
বাস্তবতা – এখনো আসেনি।
ভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তিদের যথাযথ যত্নের প্রয়োজন। অসুস্থ মানুষদের প্রয়োজন সর্বোচ্চ সহায়তামূলক সেবা। কিছু সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা তদন্তাধীন আছে, ক্লিনিকাল ট্রায়ালের ভেতর দিয়ে যাদের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হচ্ছে। বেশ কিছু সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সাথে মিলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই বিষয়ে গবেষণা ও উন্নয়ন (আরএন্ডডি) প্রচেষ্টা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
করোনাভাইরাসের কোনো উপসর্গ দেখা দিলে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) হটলাইনের নম্বরগুলোতে যোগাযোগ করা যাবে। হটলাইনের নম্বরগুলো হলো-
০১৯৪৪৩৩৩২২২ ০১৪০১১৮৪৫৫১ ০১৪০১১৮৪৫৫৪ ০১৪০১১৮৪৫৫৫ ০১৪০১১৮৪৫৫৬ ০১৪০১১৮৪৫৫৯ ০১৪০১১৮৪৫৬০ ০১৪০১১৮৪৫৬৩ ০১৪০১১৮৪৫৬৮ ০১৯২৭৭১১৭৮৪ ০১৯২৭৭১১৭৮৫ ০১৯৩৭০০০০১১ ০১৯৩৭১১০০১১ ০১৫৫০০৬৪৯০১ ০১৫৫০০৬৪৯০২ ০১৫৫০০৬৪৯০৩ ০১৫৫০০৬৪৯০৪ ০১৫৫০০৬৪৯০৫
এছাড়া, স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্বাস্থ্য বাতায়নের হটলাইন নম্বর- ১৬২৬৩।