প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দুর্ধর্ষ স্পাই হিসেবে আজও লোকের মুখে ঘুরে ফিরে আসে একটি নাম, মাতা হারি। জার্মানির হয়ে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির কারণে ফায়ারিং স্কোয়াডে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল আজ থেকে একশ বছর আগে, ১৯১৭ সালে। পৃথিবীর ইতিহাসের ভয়ঙ্করতম গুপ্তচরদের তালিকা করলেই সবার আগে চলে আসে তার নাম। এসপিওনাজের বেপরোয়া জগতে এমন স্পাই হিসেবে বিশেষিত হবার মত কী এমন দুর্দান্ত খেল দেখিয়েছিল মাতা হারি? আসলেই কি মাতা হারি এত ভয়ঙ্কর এক মানুষ ছিল? আদৌ কি তার গুপ্তচরবৃত্তির কারণে এদিক-ওদিক হয়ে গিয়েছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ফলাফল? চলুন জানার চেষ্টা করি কী করেছিল মাতা হারি, কেমন ছিল তার গুপ্তচর জীবন, কী স্বপ্ন দেখেছিল এই মানুষটি, কেন তার মৃত্যু হল নিষ্ঠুর বিচারে।
মার্গারেটা গিরট্রুইডা জিলে জন্মেছিল ১৮৭৬ সালের ৭ আগস্ট। তার বাবা ছিল টুপি বিক্রেতা, তবে জমকালো পোশাক আর দাম্ভিক চাল চলনে অভ্যস্ত। ফ্রিজল্যান্ড ও উত্তর-জার্মান রক্তের হলেও মার্গারেটার কালো চুল, বাদামী চোখ আর জলপাই আভার গায়ের রঙ দেখে আধা-ভারতীয় কিংবা আধা-ইন্দোনেশীয় বলে ভুল হত।
মার্গারেটার তের বছর বয়সে বাবার ব্যবসা পথে বসল। সেই সাথে ঘটল বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ। মার্গারেটার প্রতি অনুরক্ত বাবা তখন তার উপরেও মেজাজ দেখানো শুরু করল এবং দূরে সরে গেল মেয়ের কাছ থেকে। বয়স পনের হবার আগেই মারা গেল তার মা। ওই বয়সেই পাঁচ ফুট নয় ইঞ্চি দীর্ঘকায় লাজুক কিন্তু প্রাণবন্ত তরুণী মার্গারেটা একটু একটু করে বুঝতে শুরু করল পুরুষদের কাছে সে খুবই মোহনীয় এবং কামনার মানুষ হয়ে উঠছে। তার স্কুলের হেডমাস্টার পর্যন্ত তার প্রেমে পড়ে গেল। বয়স আঠারো হবার পর তাকে পাঠিয়ে দেয়া হল হেগ শহরে আত্মীয়দের সাথে থাকতে।
ওখানে গিয়ে তার মন টিকছিল না। অনভ্যস্ততায় অস্থির হয়ে উঠছিল মার্গারেটা। এমন সময় এক কাণ্ড করে বসল সে। স্থানীয় পত্রিকার এক বিজ্ঞাপনের জবাব পাঠালো। আর সেটা ছিল একটা ‘পাত্রী চাই’ বিজ্ঞাপন যেটা দিয়েছিল পাত্র স্বয়ং। “ইন্ডিজের সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন, হল্যান্ডে আছেন ছুটিতে, মনের মত একজন পাত্রী খুঁজছেন” এই ছিল বিজ্ঞাপনের ভাষা। সেই ক্যাপ্টেন রুডলফ ম্যাকলিউড এর সাথে দেখা করল মার্গারেটা, তিন মাস পর তাদের বিয়ে হয়ে গেল। পরবর্তী সাত বছর তারা ছিল তৎকালীন ডাচ ইস্ট ইন্ডিজ, যেটা আজকের ইন্দোনেশিয়া, সেখানে। দাম্পত্য জীবন এর মধ্যেই অসহনীয় হয়ে উঠেছিল মার্গারেটার কাছে। তার দুই সন্তানকে বিষ প্রয়োগ করেছিল স্থানীয় এক ভৃত্য, মারা গেল তার বড় ছেলেটা। আর ম্যাকলিউডের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছিল নিয়ম করে প্রতিদিন মার্গারেটার সাথে হিংস্র আচরণ করা। ১৯০২ সালে অবশেষে সে বিচ্ছেদে বাধ্য হল, ইতিমধ্যে তারা ফিরে এসেছিল হল্যান্ডে। ম্যাকলিউড তাদের ছোট মেয়েটিকে জোর করে রেখে দিল নিজের কাছে।
মার্গারেটার বয়স তখন ২৭, সে চলে এল প্যারিসে। তার নতুন জীবন শুরু হল শিল্পীদের মডেল হিসেবে। বেশি দিন টিকতে পারল না, আবার ফিরে গেল হল্যান্ডে। সেখানে তার দেখা হল হেনরি দ্যু মার্গুয়েরি নামক এক ফরাসি কূটনীতিকের সাথে। তার সাথেই মার্গারেটার প্যারিস ফিরে আসা হল, তার মিসট্রেস হিসেবে। এবার শুরু হল নৃত্যশিল্পী হিসেবে তার জীবনের বিখ্যাত সময়টি। মার্গুয়েরি প্যারিসের নানান মহলে তাকে পরিচয় করিয়ে দিতে লাগল গঙ্গার ধারের এক মন্দির থেকে আসা পবিত্র পূজারী হিসেবে, যার অর্চনার মাধ্যম হল নৃত্য। মার্গারেটা তার নাচের মধ্যে নিয়ে এল ইন্দোনেশিয়ায় দেখা সেই ভঙ্গিমা আর মোহনীয় মুদ্রাগুলো। সাথে যোগ করল অঙ্গাবরণ উন্মোচন করে স্বল্পবসনা নাচ যেটা দেখে মনে হত যেন এই পূজারই কোনো একটা রীতি। তুমুল জনপ্রিয় হয়ে উঠল মার্গারেটা। নতুন নাম ধারণ করল সে এবার- মাতা হারি। ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় ভাষায় যার অর্থ ‘ভোরের আলো’।
১৯০৫ থেকে শুরু করে ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবার আগ পর্যন্ত মাতা হারি উপভোগ করেছিল দুর্দান্ত সেলিব্রেটির মর্যাদা। মাদ্রিদ, মিলান, মন্টে কার্লো আর প্যারিসে সে ছিল পরম পূজনীয়। কখনো কখনো সিসিলির থিয়েটারে কিংবা অভিজাত ব্যক্তিদের প্রাসাদে গিয়েও নৃত্য উপস্থাপন করত মাতা হারি। তার নাম তখন উচ্চারিত হত ঘরে ঘরে, কেননা সে ছিল ইউরোপে স্বল্পবসনা নাচের প্রথম ও প্রবাদপ্রতীম শিল্পী, সবচেয়ে বড় কথা, সে যুগের বিখ্যাত অনেক পুরুষের পরম আরাধ্য নাম ছিল মাতা হারি।
ফ্রান্সের প্রথম সারির কূটনীতিক থেকে শুরু করে জার্মানির যুবরাজ পর্যন্ত ছিল মাতা হারির স্বপ্নে বিভোর। তার সত্যিকারের বন্ধু ছিল খুব অল্প, আর এই এগারো বছর ধরে মার্গুয়েরিই ছিল মাতা হারির নিকটতম। তার প্রতি মানুষের আকর্ষণের মূলে অবশ্যই ছিল তার মোহনীয় আর অভিনব নৃত্য প্রতিভা। নগ্নতাকে সে নিয়ে গিয়েছিল শিল্পের পর্যায়ে, ধর্মীয় অর্চনার আবরণে তার নৃত্যের মুদ্রাগুলো ছিল মনোমুগ্ধকর।
এর মধ্যেই একবার সে গেল বার্লিনে। সেখানের মেট্রোপলে নাচবার সময় তার বিরুদ্ধে অসভ্যতার অভিযোগ আসলেও এক পুলিশ অফিসারের সাথে সখ্যতা করে সেই অভিযোগ চাপা দেয়ার ব্যবস্থা করল মাতা হারি। এই ছোট্ট ঘটনাটিই তার পরবর্তী জীবনে ভয়ানক পরিণতির জন্য অনেকখানি দায়ী ছিল।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরুর সময়ে আগস্টেই মাতা হারির নিজভূমি হল্যান্ডে ফিরে যাবার সুযোগ এসেছিল। কিন্তু সে থাকতে চাইল প্যারিসে, ফলাফল, জার্মানরা দখলে নিল তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, স্বর্ণ এমনকি পোশাক পর্যন্ত। নিঃস্ব হয়ে মাতা হারি ফিরে এল হল্যান্ডে।
৩৮ বছর বয়স তখন তার, হঠাৎ সেখানে দেখা হয়ে গেল এক পুরনো প্রেমিকের সাথে। সেই প্রেমিক ছিল এক সম্ভ্রান্ত ব্যারন, আমস্টারডমে নিজ পরিবারকে রেখে হেগ শহরে মাতা হারিকে সে নিয়ে দিল একটা জাঁকজমকপূর্ণ বাড়ি। যদি সে পুরো যুদ্ধকালীন থাকত সেই বাড়িতে, তাহলে হয়ত ইতিহাসের কোনো এক কোণায় স্বল্পবসনা নৃত্যের পথিকৃৎ হিসেবেই ছোট্ট একটা জায়গা পেত মাতা হারি। কিন্তু ইতিহাস যার জন্য নির্ধারণ করেছিল বহুল উচ্চারিত কিন্তু বেদনাদায়ক এক পরিণতি, তার তো সেখানে আবদ্ধ হয়ে থাকলে চলে না।
দীর্ঘদিন একলা থাকতে থাকতে আর শুধুমাত্র সেই ব্যারনের সঙ্গ পেতে পেতে মাতা হারির বিরক্তি ধরে গেল। ১৯১৫ সালের ক্রিস্টমাসে তিন সপ্তাহের জন্য সে বেড়াতে গেল প্যারিসে। যুদ্ধ যখন গোটা ইউরোপকে পাল্টে দিচ্ছে এমন সময় মাতা হারির মত জনপ্রিয় আর পরিচিত মুখ যেখানেই থাকুক না কেন নজরদারিতে পড়ে যাবে এই স্বাভাবিক বোধটুকুকে ব্যহত করল তার উদ্ধত আর আত্মকেন্দ্রীক স্বভাব। এরপর সে গেল ইংল্যান্ড ভ্রমণে। সেখানে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা নজর রাখতে শুরু করল তার চলাফেরার উপর। তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারল মাতা হারি বার্লিনে গিয়েছিল এবং সেখানে জার্মান পুলিশ অফিসারের সাথে তার সখ্যতা হয়েছিল। এইটুকু থেকেই তারা ধরে নিল মাতা হারি একজন জার্মান এজেন্ট এবং সে অনুসারেই তারা তথ্য পাঠালো ফ্রান্সের কাছে।
কয়েক মাস পর মাতা হারি ফিরে এল প্যারিসে। দু’জন পুলিশ ইনস্পেকটর সিভিল পোশাকে তাকে অনুসরণ করছিল যারা তার গুপ্তচরবৃত্তিতে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পেল না। চারিদিকে কড়া নজরদারির কথা জেনেও সেটাকে পাত্তা না দিয়ে মাতা হারি এই অবরুদ্ধ শহরে ছয়টি মাস কাটিয়ে দিল। আর এই ছয় মাস এখানে থাকার কারণ ছিল এমন এক ঘটনা যা তার মত বারবণিতার জীবনে ঘটতে পারে, এটা সে ভাবতেও পারে নি। প্রেমে পড়েছিল সে।
প্যারিসে মাতা হারির পরিচয় হয়েছিল ভ্লাদিমির দ্যু ম্যাসলফ এর সাথে, যে ছিল ফরাসি বাহিনীতে কর্মরত ২১ বছর বয়সী এক রাশিয়ান ক্যাপ্টেন। প্রেম হয়ে গেল এই দুজনার কিন্তু ম্যাসলফকে দ্রুতই ফিরে যেতে হল যুদ্ধক্ষেত্রে। সেখানে জার্মানদের ভয়ানক মাস্টার্ড গ্যাসের আক্রমণে তার বাম চোখ নষ্ট হয়ে গেল। যুদ্ধাহত এই তরুণ মাতা হারির মনে জন্ম দিল দারুণ এক মায়ার। সেই ডাচ ব্যারনের কাছ থেকে পাওয়া অর্থের বড় অংশ সে ব্যয় করতে লাগল ম্যাসলফকে ভালো ভালো খাবার কিনে দেওয়া কিংবা তার জুয়ার ঋণ পরিশোধের জন্য।
এই দুজনের প্রেমের দৃষ্টি কিন্তু ভিন্ন ছিল। মাতা হারির বয়স তখন চল্লিশের কোঠায়, নৃত্যশিল্পীর জীবন সে ছেড়ে দিয়েছে। অভিজাত কোনো লর্ডকে বিয়ে করে সংসার করবার সম্ভাবনা তখন আর নেই বললেই চলে। কিন্তু সে জিতে নিয়েছিল হ্যান্ডসাম এক অফিসারের মন যে কিনা যুদ্ধক্ষেত্রে অন্তত একশ’ জার্মান সৈন্যের মৃত্যুর জন্য দায়ী ছিল। আর এদিকে ম্যাসলফ যদিও জানত তার প্রেমিকার সেই জৌলুস আর নেই, কিন্তু মাতা হারি তো একটা নাম! একটা ফ্যান্টাসি! যুদ্ধাহত এক সৈনিক যার পরবর্তী কাজ হতে যাচ্ছে পরিখা খননের দলে যোগ দেয়া, সেখানে যার হয়ত আর পাঁচ মাসও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই, সে মাতা হারিকে কেবল প্রেমিকা হিসেবেই পেল না, পেল এক পর আর্দ্রতায় আপন করে নেয়া বন্ধুকে। দুজনের এই প্রেমের বন্ধন যে মাতা হারিকে আটকে ফেলছিল ভয়ানক কোনো ভবিষ্যতের জালে, সে তা টেরও পায় নি।
ঘটনার সূত্রপাত হল তখন, যখন যুদ্ধক্ষেত্রের খুব কাছেই ভিত্তেল নামক জায়গায় একটা হাসপাতালে ম্যাসলফ ভর্তি হল এবং মাতা হারি তাকে দেখতে যেতে চাইল। সেখানে যেতে হলে বিশেষ পাশ দেখাবার প্রয়োজন ছিল। সেই পাশ জোগাড় করতে গিয়ে তার পরিচয় হল গিওর্গি ল্যাঁদু’র সাথে। খাটো গড়ন, যত্ন করে ছাঁটা দাঁড়ি, পরিশীলিত গোঁফ আর ঢেউ খেলানো চুলের গোয়েন্দা অফিসার ক্যাপ্টেন গিওর্গি ল্যাঁদু ছিল ফরাসি বাহিনীর একজন ক্যাপ্টেন। ১৯১৬ সালের আগস্টে প্রথম সাক্ষাতেই মাতা হারিকে সে জানাল, ব্রিটিশদের কাছ থেকে তথ্য পাওয়া গেছে যে মাতা হারি একজন জার্মান স্পাই।
ল্যাঁদু ভাবছিল, এই তো সুযোগ! মাতা হারি যদি সত্যি জার্মান স্পাই হয়, তাহলে তাকে এই সুবিধাটুকু দেয়ার বদলে ফ্রেঞ্চ স্পাই হয়ে ডাবল এজেন্টের ভূমিকা নেয়ার প্রস্তাব দেয়া যাবে। আর যদি সে জার্মান স্পাই না হয়, তাহলে তো হলই, কাজটা আরও সহজ হবে। যে করেই হোক তাকে ফরাসি গুপ্তচর বানানোর জন্য আগ্রহী ছিল ফরাসী গোয়েন্দা অফিসার ল্যাঁদু।
আলোচনা পর্বে তাই ল্যাঁদু মাতা হারিকে প্রস্তাব দিল তার এত দিনের গড়ে তোলা বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তিদের সাথে সখ্যতার সূত্র ধরে ফ্রান্সের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার জন্য। মাতা হারি জানালো সে ভেবে দেখবে যদি মূল্যটা উপযুক্ত হয়। তখনই ল্যাঁদু তাকে ভিত্তেলের সেই হাসপাতালে যাবার বিশেষ পাশ দিয়ে দিল। মাতা হারি হয়ত তার প্রেমিকের সংস্পর্শে আসার সুযোগ পেল, কিন্তু সে জানত না মৃত্যুর পরোয়ানা হাতে নিয়ে ফেলেছিল সে।
ল্যাঁদুর কাছে ভিত্তেল ছিল মাতা হারির জন্য প্রথম পরীক্ষা। যদি সে সত্যিই শুধু ম্যাসলফের প্রতি ভালোবাসার কারণে তার সাথে দেখা করে এবং তার কাছ থেকে কোনো রকম সামরিক তথ্য জোগাড় না করে, তাহলে বোঝা যাবে তাকে দিয়ে কাজ হবে। সে তার জার্মান অভিজাত ব্যক্তিদের সাথে খাতির আর জার্মান ভাষার দক্ষতার জোরে জার্মানদের অবশ্যই বিশ্বাস করাতে পারবে সে তাদেরই একজন, কিংবা যদি ব্রিটিশদের দেয়া তথ্য ঠিক হয়, সে এখনও তাদেরই একজন। এই ভেবে পরিকল্পনা প্রস্তুত করতে লাগল ল্যাঁদু।
পুলিশ রিপোর্ট জানা গেল ম্যাসলফের সাথে কাটানো একটা সপ্তাহে মাতা হারি সন্দেহজনক কিছু করেনি। তাই সে যখন ভিত্তেল থেকে প্যারিসে ফিরল, ল্যাঁদু আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে ফরাসি স্পাই হিসেবে নিযুক্ত করল। মাতা হারি ল্যাঁদুকে সরাসরি জানাল, এ কাজটি সে করতে যাচ্ছে শুধুই টাকার জন্য কারণ সে ম্যাসলফকে ভালোবাসে এবং যুদ্ধাহত হওয়ায় সে উপার্জনে অক্ষম। কিন্তু সে ম্যাসলফকে নিয়ে সংসার করার মত অর্থশালী হতে চায়। স্পাই হিসেবে মাতা হারিকে প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হল বেলজিয়ামে।
শুরু হল গুপ্তচর মাতা হারির জীবন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ৫০,০০০ সৈন্যের মৃত্যুর জন্য মাতা হারির গুপ্তচরবৃত্তিকে দায়ী করার যে কাহিনী তৈরি হয়েছিল, তা কি সত্যি, নাকি শুধুই এক স্বাপ্নিক নারীর বাঁচার আকুলতাকে ফাঁদে ফেলে তৈরি করা মিথ্যে গল্প- জানার জন্য অপেক্ষায় থাকুন পরবর্তী ও শেষ পর্বের জন্য।