বাছুর পূজার ঘটনা বুঝবার জন্য গত পর্বের শেষ অংশে বর্ণিত ঘটনার সময়কালটি কুরআনের দৃষ্টিকোণ থেকেও বর্ণনা করা জরুরি। তূর পাহাড়ে উঠবার আগে বনী ইসরাইলের সাথে এক জনপদের দেখা হলো, যেখানে তারা আবার দেবদেবীর পূজা করতে দেখলো, মিসরীয়দের মতো। তাতে তাদের মনেও দেবদেবী পূজার শখ জাগলো।
পরের কাহিনী কুরআনের ভাষায়, “আমি (আল্লাহ্) সাগর পার করে দিয়েছি বনী ইসরাঈলকে। এরপর তারা এমন এক সম্প্রদায়ের কাছে গিয়ে পৌঁছালো, যারা স্বহস্তনির্মিত মূর্তিপূজায় নিয়োজিত ছিল। ইহুদীরা বলতে লাগল, “হে মূসা; আমাদের উপাসনার জন্যও তাদের মূর্তির মতোই একটি মূর্তি নির্মাণ করে দিন।” মূসা বললেন, “তোমরা তো বড়ই মূর্খ। এরা (মূর্তিপূজক) ধ্বংস হবে, এরা যে কাজে নিয়োজিত রয়েছে এবং যা কিছু তারা করেছে তা ভুল! তাহলে কি আল্লাহকে ছাড়া তোমাদের জন্য অন্য কোনো উপাস্য অনুসন্ধান করবো? অথচ তিনিই তোমাদেরকে সারা বিশ্বে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন।” (কুরআন ৭:১৩৮-১৪০)
আল্লাহ্ তখন মূসা (আ) ও তাঁর অনুসারীদেরকে তূর পাহাড়ের কাছে যেতে বললেন, সেখানে তিনি মূসাকে আসমানি কিতাব তাওরাত দান করবেন। সেজন্য তৈরি হলেন মূসা (আ)। তিনি আরও কয়েকজন নেতাকে সাথে নিয়ে আগেই চলে গেলেন। পরে উম্মত ধীরে ধীরে আসবে, পেছন পেছন। আর তিনি যতদিন থাকবেন না, ততদিন তাঁর স্থলাভিষিক্ত থাকবেন তাঁর ভাই হারুন (আ)। তিনি বলে গেলেন হারুনকে (আ), “আমার সম্প্রদায়ে তুমি আমার প্রতিনিধি হিসেবে থাক। তাদের সংশোধন করতে থাকো এবং হাঙ্গামা সৃষ্টিকারীদের পথে চলো না।” (কুরআন ৭:১৪২)
আল্লাহ্ বলে দিলেন, মূসা (আ) ছাড়া কেউ যেন তূর পাহাড়ে ওঠার সাহস না করে যখন আল্লাহ্ কথা বলবেন। নেতারা নিচে থাকবেন। কেবল মূসা (আঃ) উপরে উঠবেন। তবে, আল্লাহ্ স্বকণ্ঠে কী কী বলছেন সেটা সবাই শুনতে পাবেন।
আল্লাহ্ মূসা (আ)-কে ৩০ দিন রোজা রাখতে বললেন। তিনি তা-ই করলেন। কিন্তু, এরপর আরও ১০দিন অতিরিক্ত রোজা রাখতে বললেন। সেটাও করলেন তিনি। মোট ৪০ দিন। এরপর, মূসা (আ) এর মনে হঠাৎ ইচ্ছা জাগলো নিজের প্রভুকে দেখার। তাই তিনি আল্লাহ্কে দেখার জন্য আবেদন করলেন। কিন্তু, আল্লাহ্ বললেন, তিনি চাইলেও দেখতে পাবেন না। তারপরও মূসা (আ) ফরিয়াদ করেই চললেন।
তখন আল্লাহ্ বললেন, “তুমি আমাকে কস্মিনকালেও দেখতে পাবে না, তবে তুমি পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে থাকো, সেটি যদি নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে তাহলে তুমিও আমাকে দেখতে পাবে।” (কুরআন ৭:১৪৩)
মূসা (আ) মেনে নিলেন। তারপরও তিনি আল্লাহ্কে দেখতে চান। এরপর আল্লাহ্ তাঁর নূরের অল্পখানিক উন্মোচন করলেন, আর পাহাড় বিধ্বস্ত হয়ে গেল।
কুরআনের ভাষায়, “তারপর তার পরওয়ারদিগার পাহাড়ের ওপর আপন জ্যোতির বিকিরণ ঘটালেন, সেটিকে বিধ্বস্ত করে দিলেন এবং মূসা অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল। অতঃপর যখন তার জ্ঞান ফিরে এলো, সে বললো, “হে প্রভু! তোমার সত্তা পবিত্র, তোমার দরবারে আমি তওবা করছি এবং আমিই সর্বপ্রথম বিশ্বাস স্থাপন করছি।” (কুরআন ৭:১৪৩)
এরপর মূসা (আ)-কে আল্লাহ্ তাওরাত কিতাব দান করলেন। তাওরাত বেহেশত থেকে লিখিত অবস্থায় ফলকে করে নাজিল করা হয় তূর পর্বতে। ফলকের সংখ্যা কয়টি ছিল সে ব্যাপারে ঐকমত্য নেই। কেউ কেউ বলেন, সাধারণ পাথরের তৈরি ছিল ফলকগুলো। কেউ বলেন, ফলকগুলো ছিল সবুজ জমরুদ পাথরের তৈরি।
তাওরাতের ফলকগুলো নিয়ে মূসা (আঃ) আর ইসরাইলি নেতারা ফিরতি যাত্রা শুরু করলেন। ওদিকে, মূসা (আ) এতদিন ধরে নেই দেখে ইহুদীদের মাথায় আবার দেবদেবী উপাসনার খায়েশ জেগে উঠলো। আর সে সময়ই সামেরির কাজ শুরু।
সামেরির ইতিহাসের ব্যাপারে কথিত আছে, (যদিও এর নির্ভরযোগ্যতা বিষয়ে কিছু জানা যায় না) সামেরি ছোটবেলায় ফেরেশতা জিবরাঈল (আ) কর্তৃক লালিত পালিত হন। কারণ, তার মা ফারাওয়ের ভয়ে সদ্যোজাত সামেরিকে জঙ্গলে ফেলে আসেন, আর সেখানে অসহায় সামেরিকে লালন করেন জিবরাঈল। তাই ছোট থেকেই জিবরাঈল (আ)-কে চিনতেন সামেরি। তার মা-ও মাঝে মাঝে জঙ্গলে গিয়ে দেখে আসতো। বড় হলে তাকে নিজের বাসায় নিয়ে আসেন।
বনী ইসরাইল যখন লোহিত সাগর পার হচ্ছিলো, তখন ঘোড়ায় চড়ে মানুষের ছদ্মবেশে তাদের সাথে ছিলেন হযরত জিবরাঈল (আ)। তাঁকে দেখে চিনতে পারে সামেরি। এরপর তূর পাহাড়ে যাবার নির্দেশ নিয়ে যখন জিবরাঈল (আ) আসেন, তখনও তাঁকে চিনে নিতে পারে সামেরি। সে খেয়াল করে, জিবরাইল (আ)-এর ঘোড়া যেখানে যেখানে পা ফেলছে, সেখানে সেখানে মরুর মধ্যেও ঘাস গজাচ্ছে। এটা দেখার পর তার মনের মধ্যে এ ধারণা এলো, সে জায়গার মাটিতে সম্ভবত সঞ্জীবনী ক্ষমতার কিছু যোগ হয়েছে। তাই সে সাথে সাথে মাটি কুড়িয়ে নিল। সুযোগ পেলেই সে ব্যবহার করবে সেই মাটি।
সামেরি জানতো ইহুদীদের সুপ্ত ইচ্ছা সম্পর্কে। তারা দেবমূর্তি চায়। সে ইহুদীদের কাছ থেকে নেয়া সোনার অলংকার গলিয়ে সেখানে সেই মাটি ছুঁড়ে দিল। এরপর সেটাকে বাছুরের আকৃতি দিল। অবাক ব্যাপার! সেই বাছুর তখন হাম্বা ডাক দিতে লাগলো। এ ঘটনা দেখে ইহুদীরা বিস্মিত হয়ে যায়। সামেরি এই বাছুরকে পরিচয় করিয়ে দিল তাদের ইলাহ বা মাবুদ বলে।
কুরআনের ভাষায়, অতঃপর সামেরি তাদের জন্য তৈরি করে বের করল একটি গো-বৎস, একটি দেহ, যা গরুর ডাক দিচ্ছিল। সে বলল, “এটা তোমাদের উপাস্য এবং মূসারও উপাস্য, কিন্তু মূসা নিজেই ভুলে গেছে এ উপাস্যের কথা।” (কুরআন ২০:৮৮)
আরও বলা আছে, “আর মূসার সম্প্রদায় বানিয়ে নিল তার অনুপস্থিতিতে নিজেদের অলংকারাদির দ্বারা একটি বাছুর, তা থেকে বেরুচ্ছিল হাম্বা হাম্বা শব্দ। তারা কি এটিও লক্ষ্য করল না যে, সেটি তাদের সাথে কথা বলছে না এবং তাদেরকে কোনো পথও বাতলে দিচ্ছে না? তারা সেটিকে উপাস্য বানিয়ে নিল! আসলে তারা ছিল বিপথগামী। (কুরআন ৭:১৪৮)
হারুন (আ) অনেক চেষ্টা করলেন ইহুদীদের বোঝাতে, কিন্তু তারা বুঝতেই চাইলো না। তারা শিরক করতেই থাকলো। তারা অভিযোগ করলো, মূসা (আ) তাদের ভুলে গেছেন, এজন্যই এত দেরি হয়ে গেছে, অথচ তিনি ফিরে আসলেন না। বলল, “মুসা ফিরে না আসলে আমরা এর উপাসনা ছাড়বো না।” (কুরআন ২০:৯১)
ইতোমধ্যে আল্লাহ্ মূসাকে জানালেন, তার উম্মত কী করছে। এর আগে আল্লাহ্ জিজ্ঞেস করলেন, মূসা কেন তাড়াতাড়ি চলে আসলেন তূর পাহাড়ে, তার উম্মতকে পিছনে রেখেই।
আল্লাহ: “মূসা, তোমার সম্প্রদায়কে পেছনে ফেলে তুমি ত্বরা করলে কেন?”
মূসা (আ): “এই তো ওরা আমার পেছনে পেছনে আসছে । হে আমার পালনকর্তা! আমি তাড়াতাড়ি তোমার কাছে এলাম, যেন তুমি সন্তুষ্ট হও।”
আল্লাহ: “আমি তোমার সম্প্রদায়কে পরীক্ষা করেছি তোমার চলে আসার পর এবং সামেরি তাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে।”
(কুরআন, ২০:৮৩-৮৫)
এ কথা শুনে মূসা (আ) ক্রোধান্বিত হয়ে পড়লেন। তিনি তাড়াতাড়ি যেতে লাগলেন। তিনি এত রেগে ছিলেন যে, ইহুদীদের কাছে পৌঁছাতেই তিনি হাত থেকে তাওরাতের ফলকগুলো মাটিতে ফেলে দিলেন। (কুরআন ৭:১৫০)
এরপর মাথা ধরে টান দিলেন তার ভাই হারুনের (আ), জবাব চাইলেন তার ব্যর্থতার। কিন্তু, হারুন (আ) বললেন, তিনি অনেক চেষ্টা করেছেন, কিন্তু পারেননি তাদের ফেরাতে। তখন মূসা (আ) প্রার্থনা করলেন আল্লাহ্র কাছে, যেন তিনি তাদের মাফ করে দেন। কিন্তু তিনি সামেরিকে ছাড়লেন না।
মূসা (আ) সামেরিকে জবাব দিতে বললেন। কুরআনের ভাষায় সামেরির উত্তর,
“আমি এমন কিছু দেখেছিলাম যা অন্যরা দেখেনি। এরপর আমি সেই প্রেরিত ব্যক্তির (জিবরাঈলের) পদচিহ্নের নীচ থেকে এক মুঠি মাটি নিয়ে নিলাম। তারপর আমি সেটা নিক্ষেপ করলাম। আমাকে আমার মন এই মন্ত্রণাই দিল।” (কুরআন ২০:৯৬)
ক্রোধান্বিত মূসা (আ) সামেরিকে পরকালীন শাস্তির কথা জানিয়ে দিলেন, সাথে দুনিয়ার অভিশাপের কথাও বললেন।
কুরআনের ভাষায়, মূসা (আ) বললেন, “দূর হ, তোর জন্য সারা জীবন এ শাস্তিই রইলো যে, তুই বলবি- আমাকে স্পর্শ করো না, এবং তোর জন্য একটি নির্দিষ্ট ওয়াদা আছে, যার ব্যতিক্রম হবে না (পরকালীন শাস্তির ওয়াদা)। তুই তোর সেই ‘প্রতিপালকের’ (বাছুরের) প্রতি লক্ষ্য কর, যাকে তুই ঘিরে থাকতি। আমরা সেটা অবশ্যই জ্বালিয়ে দিব। এরপর অবশ্যই এটাকে বিক্ষিপ্ত করে সাগরে ছড়িয়ে দিব।” (কুরআন ২০:৯৭)
মূসা (আ) তাই করলেন। সেই বাছুরের মূর্তি ধ্বংস করে ভাসিয়ে দেন।
রাগ পড়ে গেলে মূসা (আ) মাটি থেকে তুলে নিলেন সেই ফলকগুলো। তাওরাত কিতাব।
সামেরির কী হলো? সেটা আর বলা হয়নি কোথাও। তবে প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সামেরি (السَّامِرِيُّ) কারও নাম নয় কিন্তু। বরং সামেরিয় (শমরীয়) বা সামারিটান (Samaritan) গোত্রের একজনকে সামেরি ডাকা হয়। সেই ব্যক্তির আসল নাম কখনও জানা যায়নি। সামারিটান জাতি প্রাচীন ইসরায়েলের উত্তর রাজ্যের সাথে সম্পর্কিত। তারা নিজেদেরকে মূসা (আ) এর ধর্মের প্রকৃত অনুসারী মনে করে, ইউসুফ (আ) এর বংশধর ও উত্তরাধিকার মনে করে। তারা জেরুজালেমের বদলে মাউন্ট গেরিজিমকে তাদের ধর্মীয় কেন্দ্র মানে।
বাইবেল থেকে জানা যায়, সামারিটানরা সাধারণত বদ স্বভাবের হতো। সামারিটানরা যেহেতু নিজেদের ইউসুফ (আ) এর বংশধর ভাবে, তাই তাকে ফাঁসিয়ে দেয়া কিংবা তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া ভাইদের একজন এহুদার তীব্র বিরোধী তারা। আর এহুদা থেকেই যেহেতু ইহুদী নাম এসেছে, তাই অশমরীয় ইহুদীদের দেখতেই পারতো না তারা। তাই কালেভদ্রে কোনো খারাপ মানুষ যদি ভালো কাজ করে বসে, সাহায্য করে বসে, তাহলে তাকে ইংরেজি বাগধারায় The Good Samaritan বলা হয়, যা ব্যতিক্রম। কারণ Samaritan মানেই তো খারাপ হবার কথা!
সামেরি নামের উৎপত্তি অনেকে মনে করেন সামারিয়া শহর থেকে এসেছে। কিন্তু আসলে তা না, সামেরি জাতি নিজেদের শামেরিম (שַמֶרִים) বলে পরিচয় দেয়, যার অর্থ আইন বা সত্যের রক্ষক/অনুসারী। The Encyclopaedia Of Judaism থেকে আমরা তা-ই জানতে পারি। এ থেকেই মূলত সামেরি নামের উৎপত্তি।
ইহুদীদের তাওরাত ঘেঁটে আমরা খুঁজে পাই, মাবুদ আল্লাহ্ মূসা (আ)-কে বললেন, “এই সব লোকদের (ইহুদীদের) আমি চিনি। এরা একটা একগুঁয়ে জাতি। তাদের বিরুদ্ধে আমার রাগ আগুনের মতো জ্বলতে থাকুক।” 2018-12-08 13:43:12
সামেরি সেই লোকটির শাস্তি ছিল আজীবন একাকী থাকা। আর মূসা (আ) যে পানিতে ছুঁড়ে মারেন গোবৎস, সে পানি পান করতে বলেন সবাইকে। আল তাবারির গ্রন্থ অনুযায়ী, যারা সে পানি পান করবার পর সোনালি রং ধারণ করে চামড়ার রং, তারাই শিরকের দোষে দুষ্ট ছিল। বলা হয়, তিনি তাদের হত্যার নির্দেশ দেন।
জীবন সায়াহ্নে পৌঁছে যাওয়া মূসা (আ) এর শেষ দিনগুলোর কথা থাকছে পরের পর্বে।
এ সিরিজের আগের পর্বগুলো-
প্রথম পর্ব: ইহুদী জাতির ইতিহাস: সূচনা পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব: মিশরে যাবার আগে কেমন ছিল বনি ইসরাইল?
তৃতীয় পর্ব: হযরত ইউসুফ (আ): দাসবালক থেকে মিসরের উজির- ইহুদী জাতির ইতিহাস
চতুর্থ পর্ব: ইউসুফ-জুলেখার কাহিনীর জানা অজানা অধ্যায়
জানতে চান মসজিদুল আকসা আর বাইতুল মুকাদ্দাসের পার্থক্য কী? তবে ক্লিক করুন পড়তে-
পঞ্চম পর্ব: মসজিদুল আকসা আর বাইতুল মুকাদ্দাসের ইতিবৃত্ত
ষষ্ঠ পর্ব: দাসবন্দী বনী ইসরাইল এবং হযরত মুসা (আ:) এর জন্ম
সপ্তম পর্ব: মিসরের রাজপ্রাসাদ থেকে সিনাই পর্বত
অষ্টম পর্ব: সিনাই পর্বত থেকে ফারাওয়ের রাজদরবার
নবম পর্ব: মিসরের অভিশাপ
দশম পর্ব: দ্বিখণ্ডিত লোহিত সাগর, এক্সোডাসের সূচনা
একাদশ পর্ব: মরিস বুকাইলি আর ফিরাউনের সেই মমি
দ্বাদশ পর্ব: তূর পর্বতে ঐশ্বরিক সঙ্গ এবং তাওরাত লাভ