পাঠকেরা অনেকেই হয়ত আছেন যাদের মনে কোনো না কোনোদিন এই প্রশ্নটি এসেছে যে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ বা ক্যারিবীয় দ্বীপে কৃষ্ণকায় আফ্রোদের ভীড়ে এত এত ভারতীয় নাম কেন। ভৌগোলিকভাবে সম্পূর্ণ বিপরীত দুটো অবস্থানে থেকেও কীভাবে যোগসূত্র স্থাপন হলো দু’অঞ্চলের মাঝে! ভূগোল বা ইতিহাসে ভালো জ্ঞান রাখেন, এমন অনেক পাঠকই জানেন, ইন্দোনেশিয়া, ফিজি, মরিশাসের মতো অপ্রতিবেশী ভূখণ্ডেও কয়েক পুরুষ যাবত বাস করছেন লাখ লাখ ভারতীয়। পেছনের কারণটি অবশ্যই ঐতিহাসিক। আজকের লেখাটি ক্যারিবীয় অঞ্চলের ভারতীয়দের থিতু হবার সেই আখ্যান নিয়েই।
কেন ঘটলো ভারতীয় অভিবাসন
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের প্রায় সকল দ্বীপই তখন ছিলো ব্রিটিশ উপনিবেশ। সেখানে ঔপনিবেশিকেরা শক্তিশালী চিনিশিল্প গড়ে তুলেছিলো, যার পুরো কৃতিত্বই ছিলো ১৫ শতকে সেখানে পা রাখা আফ্রিকান শ্রমিকদের। ১৮৩৮ সালে তাদের দাসপ্রথা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। এই মুক্ত শ্রমিকেরা তখন অতি নিম্ন মজুরির দরুন একে একে কাজ ছেড়ে দিতে থাকে। ফলে হুট করেই চিনি শিল্পে দেখা দেয় নিদারুণ শ্রমিক সংকট। সংকট আসন্ন বুঝতে পেরে কিছু সময় আগে থেকেই ব্রিটিশরা ভুলিয়ে-ভালিয়ে আমেরিকান, জার্মান, পর্তুগিজ, চীনা শ্রমিকদের বিশাল বেতনে ক্যারিবীয় দ্বীপে নিয়োগ করতে চেয়েছিলো। কিন্তু উচ্চ মজুরী সত্ত্বেও তাদের কেউই থিতু হননি সেখানে।
তখন জন গ্ল্যাডস্টোন নামক এক ক্যারিবিয়ান ঔপনিবেশিক প্রশাসকের চোখ পড়লো দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও অশিক্ষায় জর্জরিত ভারতের দিকে। ব্রিটিশ সরকার ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে তিনি অনুমতি চাইলেন ভারতীয় শ্রমশক্তি আমদানির, মিলেও গেলো অনুমতি। ভারতে মধ্যস্থতাকারী ঠিকাদার ও অভিবাসন-দালালদের মাধ্যমে শ্রমিক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হলো পুরোদমে। এ পরিকল্পনাটি যেহেতু গ্ল্যাডস্টোন সাহেবের মস্তিষ্কপ্রসূত, তাই ভারতীয় শ্রমিক অভিবাসনের ঐতিহাসিক ঘটনাকে ‘গ্ল্যাডস্টোন এক্সপেরিমেন্ট’ও বলা হয়।
অবশেষে পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপে ‘পূর্ব ভারতীয়’ পদচিহ্ন
গত ৫ মে পালন করা হয়েছিলো ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে প্রথম ভারতীয়বাহী জাহাজ ভেড়ার ১৮০ বছর পুর্তি। ১৮৩৮ সালে মাদ্রাজ বন্দর থেকে ছেড়ে আসা ভারতীয় শ্রমিকবাহী জাহাজ নোঙর করে ব্রিটিশ গায়ানাতে। নারী-পুরুষসহ জাহাজে ছিলেন ৩০ জন ভারতীয়, যার মধ্যে মাত্র ৫ জন পুরুষ ব্যতীত সকলেই শিশু, কিশোর বা অনুর্ধ্ব ৩০ বছর বয়সী। ৫ জন ভারতীয় নৌযাত্রার মধ্যেই মারা যান, বাকিরা মোটামুটি সুস্থ-সবল দেহেই পা রেখেছিলেন নতুন সে ভূখণ্ডে। কলকাতা বন্দর থেকে আফ্রিকা আর দক্ষিণ আটলান্টিক ঘুরে ৩ মাসের যাত্রায় ত্রিনিদাদের পোর্ট অব স্পেনে ভারতীয় বোঝাই ৪১৫ টনের দ্বিতীয় জাহাজটি নোঙর করেছিলো ঠিক সাত বছর পর, ৩০ মে। ১১,০০০ মাইল পাড়ি দিয়ে প্রথমে পালতোলা জাহাজে ও পরে বাষ্পীয় ইঞ্জিনচালিত জাহাজে আসত শ্রমিকবাহী চালান। এ কাজে শুরুতে মাদ্রাজ বন্দর ব্যবহার করা হলেও পরবর্তীতে ব্যবহার করা হতো কলকাতা বন্দর।
কারা এলেন, কেন এলেন
অভিবাসনের ঠিকাদার ঔপনিবেশিক দালালদের উদ্দেশ্যে পঙ্কিলতা থাকলেও অসহায় মানুষগুলোর চোখে নতুন ভোরের স্বপ্নে কোনো খাদ ছিলো না। দালালদের কাছে তারা শুনতেন, ওপারে মহাসাগরটা পেরোলেই মিলবে জমিন, যেখানে সোনা ফলে! কেউ শিকার হয়েছিলেন মিথ্যা প্রলোভনের, কেউবা অপহরণের! কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশটি এসেছিলো স্বেচ্ছায়। কারো পেটে এক বেলা খাবার জুটতেই প্রাণ ওষ্ঠাগত, কেউবা ঋণের দায়ে জর্জরিত; আবার অভাবে পড়ে পতিতাবৃত্তিতে নামা নারীরাও পিতৃ-পরিচয়বিহীন সন্তানকে নিয়ে পড়েছিলেন অকুল পাথারে। এমন ভাগ্যাহতরাই সেদিন দলে দলে উঠে পড়েছিলেন দূরদেশের জাহাজে। এদের মধ্যে উত্তর প্রদেশ, বিহারের বাসিন্দার সাথে অল্প কিছু বাঙালি ও তামিল ছিলো, যাদের প্রায় ৮৬ ভাগ ছিলেন হিন্দু এবং ১৪ ভাগ মুসলিম।
ভীনদেশে বাঁধিনু ঘর!
প্রথম আগমনের পরবর্তী ৭২ বছরে তদানীন্তন ব্রিটিশ গায়ানায় আড়াই লাখ, ত্রিনিদাদে দেড় লাখ, জ্যামাইকায় ৩৬,০০০ এবং ডমিনিকা, সেন্ট কিটস ও নেভিস, গ্রেনাডাসহ অন্যান্য দ্বীপে শ’ থেকে হাজারখানেক ভারতীয় পা রেখেছিলেন। ১৯১৭ সালে শুধু গায়ানা থেকেই ৭৫,০০০ সহ অন্যান্য দ্বীপ মিলিয়ে প্রায় ৯০,০০০ ভারতীয় নিজ দেশে ফিরে আসেন। বাকিরা স্থায়ীভাবে থেকে যান ক্যারিবীয় দ্বীপেই। দুটো কারণ রয়েছে থেকে যাওয়ার। এক, ক্যারিবীয় দ্বীপে অনেকেরই ভাগ্য ফিরেছিলো, যারা জানতেন যে দেশে গেলে পুনরায় শূন্য থেকে তাদের শুরু করতে হবে। দুই, বেশিরভাগ ভারতীয়ই এখানে এসেছিলেন অবিবাহিত অবস্থায়, একদম তরুণ বয়সে। তারা ক্যারিবীয় দ্বীপে বিয়েথা করে থিতু হয়ে যান।
স্বাধীন নাগরিক থেকে দাস: শ্রমিক ভারতীয়দের নয়া জীবন
ভারতীয় শ্রমিকরা এই মর্মে চুক্তির অধীন ছিলেন যে, ১০ বছর সেখানে কাজ করবার পর তারা ভারতে ফিরে যেতে পারেন অথবা করশোধের দ্বারা নিজেদের মুক্ত করতে পারেন; চুক্তির ব্যত্যয় ঘটলে জেলের বিধানও ছিলো। যাকে ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ হিউ টিঙ্কার ‘দাসপ্রথার নয়া সংস্করণ’ হিসেবে অভিহিত করেন। তাদেরকে পুরো বিশ্ব থেকে রাখা হয়েছিলো বিচ্ছিন্ন, অনেকটা খামারের পশু-পাখির মতো ছিলো সে জীবন। ওদিকে বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাবে কলেরার মতো নানা রোগ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়লে মৃত্যুহার একলাফে বেড়ে দাঁড়ায় ত্রিশভাগে। চিনি শিল্পের পাশাপাশি ভারতীয়রা মূলত গবাদি পশুপালন ও মুটেগিরিই করতেন। এসব নিয়েই ক্যারিবীয় দ্বীপে নবজীবনের অভ্যুদয় ঘটেছিলো ভারতীয়দের।
দূর ভূখণ্ডে ‘মিনি ভারত’ কায়েম
ভারতীয়রা সেখানে ধানের আবাদ ও ভারতীয় গাছ লাগাতে শুরু করলেন। এমনকি বাড়ির বাইরে গরুপালনও করতে লাগলেন ঐতিহ্যবাহী কায়দায়। এতদিন পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ নামেই ‘ভারত’ ছিলো, এসব কাজের দরুন তা আক্ষরিকভাবেই ‘মিনি ভারত‘-এ পরিণত হলো অঞ্চলভেদে। বলা হয়ে থাকে, খ্রিস্টান মিশনারিরা বহু চেষ্টা করেও উপমহাদেশে নাকি তেমন একটা গতি করতে পারেনি! ক্যারিবীয় দ্বীপেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। ভারতীয় হিন্দু বা মুসলিমদের খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত করতে খুব একটা সফল সেখানেও হয়নি মিশনারীরা। তবে ত্রিনিদাদের কানাডীয় মিশন স্কুলগুলো এক্ষেত্রে কিছুটা সফল ছিলো। ভারত থেকে মোল্লা-পণ্ডিতেরা প্রায় আসতেন অভিবাসীদের ধর্ম ‘তদারকে’। মুসলিমরা তাদের শিশুদের আরবি, উর্দু শেখাতেন এবং ক্ষেত্রবিশেষে ভারত পাঠাতেন ধর্মীয় তালিমের জন্য। অন্যদিকে হিন্দুরা পালন করতেন দীপাবলি (দেওয়ালি) এবং পূজা-পার্বণে করতেন রামায়ণের মঞ্চায়ন।
নবসৃষ্ট সাংস্কৃতিক রূপ
সাংস্কৃতিক একাত্মকরণকে ভারতীয়-ক্যারিবীয়রা উপলক্ষ করলেন শ্রান্ত জীবনে দু’দণ্ড প্রশান্তির। শিয়া মুসলিমদের আশুরা উৎসবে তাই মুসলিমদের সাথে কেবল ভারতীয় হিন্দুরাই নয়, বরং সম্মীলন ঘটত আফ্রিকান খ্রিস্টান ও চীনা বৌদ্ধ শ্রমিকদেরও। একত্রে ক্যারিবিয়ান সাগরের নীলতটে তাজিয়া মিছিল নিয়ে ছুটতেন তারা। মুসলিম শ্রমিকদের ভেতর কঠোরভাবে ধর্মপালনের রেওয়াজ ওভাবে ছিলো না বিধায় অমুসলিমদের উৎসবে তারাও পানাহারে যোগ দিতেন। ১৯৪০ পর্যন্ত স্বীকৃতি না মিললেও তারও বেশ আগে থেকেই সেখানে শুরু হয়েছিলো হিন্দু-মুসলিম বিয়ে। এভাবে নিজ ভূখণ্ড ভারতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা জিইয়ে রাখা দুটি ধর্মীয় গোষ্ঠী পরভূমে এসে হলো এককাট্টা!
উৎসব আয়োজনের বাহানায় ঔপনিবেশিক শোষকদের প্রতি বিতৃষ্ণাজ্ঞাপনের একটি উপলক্ষ পেত ভারতীয়সহ অন্যান্য ক্যারিবীয় অভিবাসীরা। ফলে কার্যকরী শ্রমিক অসন্তোষও দেখা গেছে, যা ঔপনিবেশিক কাঠামোর অন্তরাত্মায় কাঁপন ধরিয়েছিলো। স্বাভাবিকভাবেই তা সহ্য হবার কথা নয় শোষকদের। তাই ১৮৮৪ সালে পরিকল্পিতভাবে দাঙ্গাও লাগানো হলো আশুরা উৎসবে। তবুও ১৮৯০ থেকে পুরোদমে চলে আসছে এই উৎসব। এ সাংস্কৃতিক আত্মীকরণের দরুন একটি বিশেষ ব্যাপার ঘটেছে, রাম ও গাঁজাকে ভারতীয় অভিবাসীরা নিজেদের করে নেয়। অন্যদিকে তাদের ভাত, রুটি, ডাল, তরকারির সংস্কৃতি থেকে রকমারি-মশলাদার তরকারির রসনা লুফে নেয় অভারতীয় অভিবাসীরা।
ভারতীয়দের ক্রমোন্নতি ও মূলধারায় প্রতিষ্ঠা
কঠোর পরিশ্রমের দ্বারা কিছু ভারতীয় অল্প সময়েই বেশ ধনীও হয়েছিলেন। গায়ানায় প্রথম ভারতীয় মিলিয়নিয়ার ছিলেন রাসুল মারাজ। রাসুল ১৮৮০ সালে কুলি হিসেবে পেশাজীবন শুরু করে পরবর্তীতে ঘোড়ার গাড়ির ব্যবসায় লগ্নি করেন। ১৯১৭ সাল নাগাদ তিনি একটি বড়সড় দোকানের মালিক বনে যান। এই ব্যক্তির চেষ্টায় ধান, কোকো, কফি ও নারিকেল তেল উৎপাদনে প্রাণ ফিরে আসে গায়ানায়। এখনো তাঁকে মনে রেখেছে গায়ানার ভারতীয় প্রজন্ম!
এরপর ধীরে ধীরে শহরায়নের প্রভাব পড়তে শুরু করলো ক্যারিবীয় দ্বীপে। ১৯৪০-৫০ এর দিকে চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তা, বণিক, রাজনীতিকসহ নানা পেশার উত্থানে গড়ে উঠতে লাগলো সচেতন শহুরে মধ্যবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্রেণী। ভারতীয়দের এ উত্থান ঠিক হজম হচ্ছিলো না আফ্রো-ক্যারিবিয়ানদের। তাদের মধ্যকার এ স্নায়ুযুদ্ধ ঔপনিবেশবিরোধী সংগ্রামকে বাধাগ্রস্থ করেছিলোও বৈকি। আর স্বাধীনতা পাবার পর তো ক্যারিবীয় দ্বীপরাষ্ট্রগুলোতে আফ্রো-ক্যারিবীয় ও ভারতীয়-ক্যারিবীয়রা একরকম একাধিক ছিটমহলে বিভাজিত হয়েই থাকলো।
খ্যাতিমান ভারতীয়-ক্যারিবীয়রা
প্রগতিশীল উন্নত ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ গঠনে রক্ষণশীল এই আফ্রো-ক্যারিবীয়দের চেয়ে ভারতীয়, চীনা ও পর্তুগিজ বংশোদ্ভূতদের অবদান তো কম নয়! এ কারণে গর্বের সাথে স্বাতন্ত্র্য নিয়েই টিকে আছেন ভারতীয়রা। বরং ত্রিনিদাদ এন্ড টোবাগো, গায়ানা ও সুরিনামের মতো বড় দ্বীপরাষ্ট্রগুলোতে আজ ভারতীয়রাই সংখ্যাগুরু। ক্যারিবীয় দ্বীপে শিক্ষা, সাহিত্য, শিল্প, অর্থনীতি, ব্যবসা, রাজনীতি- এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে পা পড়েনি ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের।
কিংবদন্তী নোবেলজয়ী ঔপন্যাসিক ভি এস নাইপল (যিনি ঢাকা লিট ফেস্টের ২০১৬ আসরেও এসেছিলেন), সাবেক কমনওয়েলথ মহাসচিব শ্রীদত রামপাল, গায়ানার রাষ্ট্রপতি ছেড্ডি জাগানদের যারা চেনেন না, তাঁদের জন্য তো ক্রিকেটের মহারথী শিবনারায়ণ চন্দরপল, রামনরেশ সারওয়ান কিংবা হালের সুনীল নারায়ণ, দিনেশ রামদিন, দেবেন্দ্র বিশুরা আছেনই। ধ্রপদী ক্রিকেটের ভক্ত হলে তো ক্যারিবীয় ক্রিকেটের স্বর্ণযুগের অন্যতম অধিনায়ক রোহান কানাইকেও আপনার চেনার কথা ভালো করেই!
লাগবে নাকি নাগরিকত্ব?
প্রতিষ্ঠিত রিয়েল এস্টেট প্রজেক্টে টাকা বিনিয়োগ করবার শর্তে নাগরিকত্ব পাওয়ার কথা কি শুনেছেন এর আগে? না শুনলে এবার হচ্ছে আপনার কানের ‘অভিষেক’! অ্যান্টিগা, বারবুডা, সেন্ট কিটস এন্ড নেভিসে অন্তত ৪ লাখ মার্কিন ডলার (৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা) ও ডমিনিকায় ১ লাখ ডলার (৮৬ লাখ টাকা) বিনিয়োগ করলেই আপনি পেয়ে যাবেন সে দেশের নাগরিকত্ব। বলে রাখা ভালো, আপনাকে এজন্য অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হতে হবে।
২০১৩ এর মার্চে এই অফার চালু করেছে দেশগুলো। অবকাঠামোগত উন্নয়নের উদ্দেশ্যে এই দ্বীপরাষ্ট্রগুলো তাক করেছে ভারতীয় ও চীনা নাগরিকদের বিনিয়োগকে। কেন শুধু তাদেরকেই? কেননা, দেশগুলোর মতে, ভারত ও চীনের লোকেদের পাশ্চাত্যের প্রতি আসবার একটা স্বাভাবিক ঝোঁক রয়েছে। সেই সঙ্গে উক্ত দ্বীপরাষ্ট্রসমূহের জনসংখ্যার একটা বড় অংশ ভারতীয় ও চীনা বংশোদ্ভূত। সুতরাং অভিবাসী আহবানে সাংস্কৃতিক ভারসাম্যে তেমন একটা পরিবর্তন হবে না দেশটির মূলধারায়। বিশেষত ভারতীয়রা আকৃষ্ট হচ্ছেন আরেকটি সুবিধার প্রতি। ক্যারিবিয়ান এ দেশগুলোর পাসপোর্ট থাকলে ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইউরোপ, সিঙ্গাপুর, হংকংসহ ১০০-১২৬ টি দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন; অন্যদিকে ভারতের পাসপোর্টে সেই সংখ্যাটা মাত্র ৫৫! ক্যারিবিয়ান পাসপোর্টের এই সুবিধা নিতে চাইলে অবশ্য আপনাকে খোয়াতে হবে ভারতীয় পাসপোর্ট, কেননা ভারতে দ্বৈত নাগরিকত্বের কোনো সুযোগ নেই।
ফিচার ইমেজ: Caribbean Atlas