সকলেই জানি ইংরেজি বর্ণমালায় মোট বর্ণ ২৬টি। কিন্তু দুই শতক আগেও এমন কিছু বর্ণ ব্যবহৃত হতো ইংরেজিতে যা আমাদের পরিচিত বর্ণমালায় এখন আর নেই। কেমন ছিল সে বর্ণগুলো আর কেনইবা ইংরেজিতে এখন আর সেগুলো ব্যবহৃত হয় না? তার কারণ অনুসন্ধান করা হবে এখানে। এরকম ১০টি বর্ণের সাথে পরিচিত হবো এখন।
১. লং এস (Long S)
এখনকার ব্যবহারের s ছাড়াও তখন আরো একটি s ছিল। একে বলা হতো লং (long) বা মিডায়াল (medial) বা ডিসেন্ডিং (descending) s। পরিচিত s টির নাম ছিলো শর্ট (short), টারমিনাল (terminal) বা রাউন্ড (round) s। এই দুই এস-এর কোনটি কখন ব্যবহৃত হবে তার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম ছিল। যেমন শব্দে একটি এস থাকলে তা হবে লং এস। কিন্তু কোনো শব্দে দুটি এস হলে প্রথমটি হবে লং এস এবং দ্বিতীয়টি হবে শর্ট এস। এছাড়াও আরো বেশ কিছু জটিল নিয়ম এবং ব্যতিক্রম কিছু।
এখানে লং এস ব্যবহারের কিছু নমুনা দেখবো। নিচের ছবিটিতে যে লিরিক এবং উপরে বর্ণনা দেখা যাচ্ছে, তাতে বেশ কিছু জায়গায় লং এস-এর ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। আপনি সবগুলো খুঁজে পেলেন তো? মোট আটটি আছে।
নিচের ছবিটির উপরের অংশ এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার ৫ম সংস্করণ। এটি ১৮১৭ সালে প্রকাশিত। ব্রিটানিকার এই ৫ম সংস্করণেই আমরা সর্বশেষ দেখতে পাই লং এস। তারপর থেকে তার সকল এস-কে বদলে ফেলে শর্ট এস-এ। নিচের অংশটি ১৮২৩ সালে প্রকাশিত ৬ষ্ঠ সংস্করণ, কোনো লং এস নেই।
১৯ শতকের শুরুর দিকে এভাবেই একে একে কমে আসতে থাকে লং এসের ব্যবহার। তৎকালীন ভাষাবিদদের দাবি ছিল, এতে করে ভাষা আরো সহজ সাবলীল হয়েছিল। প্রিন্টিং প্রেস এবং মেশিনগুলো দুটো এসের বদলে শুধুমাত্র শর্ট এস ব্যবহার করছিল। কারণ f এর সাথে লং এস এর পার্থক্য করা খুব মুশকিল ছিল। তবে হাতের লেখায় এ পরিবর্তন আসতে আরো অনেক সময় লাগে, উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধেও লং এসের ব্যবহার পাওয়া যায়।
২. অ্যাম্পারস্যান্ড (Ampersand)
অনেকেই এটির সাথে পরিচিত এবং অনেক সময়ে ব্যবহারও করেছি। কিন্তু হয়তো জানি না এটি আদতে একটি বর্ণ এবং ইংরেজি বর্ণমালার অন্তর্গতও ছিল। তা হলো অ্যাম্পারস্যান্ড বা Ampersand। এই অ্যাম্পারস্যান্ড ছিলো ইংরেজি বর্ণমালার সাতাশতম বর্ণ।
অ্যাম্পারস্যান্ডকে লেখা হতো & দিয়ে এবং এটি ব্যবহার করা হতো and বা ‘এবং’ বোঝাতে। তাই শিশুরা বর্ণমালা পড়ার সময় তা সুরে সুরে তা উচ্চারণ করতো এভাবে, ‘এক্স, ওয়াই, জি অ্যান্ড পার সে অ্যান্ড’ বা ‘X, Y, Z, and, per se, and’। এখানে X, Y, Z, and, per se, and হলো লাতিন শব্দগুচ্ছ যার অর্থ হলো by itself বা নিজেই। সুরে সুরে আবৃত্তি করাতে and, per se, and কে মনে হতো ampersand।
আঠারো শতকের মাঝের দিকে বর্ণমালা থেকে অ্যাম্পারস্যান্ডকে বাদ দেওয়া হয়। ধারণা করা হয়, ১৮৩৫ সালে কপিরাইট করা অ্যালফাবেট গানের অত্যাধিক জনপ্রিয়তার জন্য অ্যাম্পারস্যান্ড ধীরে ধীরে বর্ণমালা থেকে বিদায় নেয়।
৩. থর্ন (Thorn)
দেখতে খানিকটা p এর মতো হলেও সামান্য পার্থক্য ছিল এর। একে লেখা হতো এভাবে, Þ বা þ। TH এর স্থলে ব্যবহৃত হতো থর্ন। যেমন, the কে লেখা হতো ‘þe’। কিন্তু তা-ই যদি হবে, তবে নিচের ছবিগুলোয় þ এর জায়গায় y আসলো কেন?
তার কারণটি হলো, জার্মান আর ইতালীয় টাইপরাইটারে কোনো þ ছিল না। তাই তারা তা þ এর জায়গায় Y ব্যবহার করতো।
৪. দ্যাট (That)
থর্ন এবং অ্যাম্পারস্যান্ড বর্ণ দুটির সাথে বেশ মিল ছিলো এ বর্ণটির। দেখতে থর্নের মতো, বাড়তি একটি দাগ এবং অ্যাম্পারস্যান্ডের মতো ‘that’ শব্দটির বিকল্প হিসেবে এটির ব্যবহার হতো, তাই এর নামটিও ছিলো that।
৫. এথ (ETH)
এথ বর্ণটিও ব্যবহৃত হতো TH বোঝাতে, তবে একটু অন্য রকম TH। ফোনেটিক্স অনুসারে TH এর উচ্চারণ দু’ভাবে হতে পারে। প্রথমত, Thing এর উচ্চারণ ‘থিং’ এবং Other এর উচ্চারণ ‘আদার’। শেষোক্ত TH এর বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হতো ð বা Ð।
৬. অ্যাশ (ash)
a এবং e এর মাঝামাঝি উচ্চারণের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতো æ বা অ্যাশ। যেমন: cat কে লেখা হতো cæt। পুরাতন ইংরেজিতে অ্যাশ বর্ণমালার অংশ ছিল এবং আঠারো শতাব্দীর শুরুর দিক থেকে এর ব্যবহার ধীরে ধীরে কমে আসতে থাকে।
৭. ইথেল (ethel)
ইথেলকে প্রকাশ করা হতো এভাবে- œ। দেখতে যেহেতু অ্যাশ-এর মতো, উচ্চারণও হতো তেমন। কিন্তু খানিকটা দীর্ঘ করে। আমাদের হ্রস্ব-ই এবং দীর্ঘ-ই-র মতো। তবে লাতিন বা গ্রিক উৎপত্তি হিসেবে কখনও ইথেল এবং কখনও অ্যাশ ব্যবহৃত হতো।
৮. উইন (wynn)
উইন এর পেছনের গল্পটি বেশ মজার। আধুনিক ইংরেজির সূচনালগ্নে উু বা ওয়া প্রকাশ করার মতো কোনো বর্ণ ছিল না। তাই তারা প্রথমে শুরু করেছিল দুটো ছোট হাতের ইউ (uu) এক সাথে লিখে। কিন্তু বেশিরভাগ ভাষা পণ্ডিতেরই সেটি পছন্দ হয়নি। তারা এর বদলে প্রস্তাব করেছিলেন উইন (ƿ) বর্ণটি।
তবে সাধারণ লোকে এ নতুন বর্ণটিকে গ্রহণ করেনি। তারা দুটি ইউ একত্রে লিখতে থাকে এবং ফলশ্রুতিতে তা সামান্য পরিবর্তিত হয়ে তৈরি হয় আমাদের অতি পরিচিত ডাবল ইউ, w। পাঠক, আগে কি কখনও মনে প্রশ্ন জেগেছিলো, আমরা কেন w কে ডাবল ইউ বলি?
৯. ইয়ঘ (yogh)
খ বা ঘ জাতীয় উচ্চারণ বোঝাতে ব্যবহৃত হতো ইয়ঘ বা ȝ। কিন্তু দেখতে ইংরেজি সংখ্যা 3 এর মতো হওয়াতে তা বেশিদিন টেকেনি। এর বদলে ব্যবহৃত হতে থাকে ‘gh’। gh যে কারণে একত্রে বসতো, আধুনিক ইংরেজিতে তা-ও ফিকে হয়ে আসে দিন দিন। পরিবর্তিত হয়ে যায় gh এর উচ্চারণ। যেমন: though, daughter ইত্যাদি।
১০. এং (eng)
আলেক্সান্ডার গিল দা এল্ডাল নামে এক ইংরেজ পণ্ডিত এবং বানান বিশারদ ১৬১৯ সালে এ বর্ণটির ব্যবহার শুরু করেন। গিল ব্যবহার করতেন ng বা ং এর উচ্চারণটি প্রতিস্থাপনের জন্য। উদাহরণস্বরূপ নিচের ছবিটি দেখা যেতে পারে।
কিন্তু তখনকার দিনে এমনকি এখনও g বর্ণটি খুবই জনপ্রিয়। উপরন্তু গিল এং-এর ডিজাইন যেভাবে করেছিলেন, প্রিন্টিং প্রেসের জন্য সেভাবে তৈরি করা বেশ ঝামেলার ছিল। কেননা, বর্ণটি (ŋ) প্রায় n এর মতো এবং কিছুদিন পরই ছাপার কালির ত্রুটির কারণে তা পুরোপুরি n হয়ে যাচ্ছিল। তাই গিল ছাড়া আর তেমন বিশেষ কোনো ক্ষেত্রে এং-এর ব্যবহার দেখা যায়নি।
এ তালিকার বেশিরভাগই এসেছিলো অ্যাঙলো স্যাক্সন থেকে, যাকে আধুনিক ব্রিটিশ ইংলিশের আদি ভাষা বা উৎস বলা হয়। অনেকগুলো বর্তমানে ইংরেজি ভাষায় ব্যবহৃত না হলেও ব্যবহৃত হয় ফোনেটিক্সে, আন্তর্জাতিক ফোনেটিক অ্যাসোসিয়েশানের অনুমোদনকৃত মৌলিক উচ্চারণ প্রকাশে বর্ণগুলো ব্যবহৃত হয়।
ফিচার ইমেজ- PastiDT