২০১১ সালে গাদ্দাফীর বিরুদ্ধে ন্যাটোর বিমান হামলায় অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু কোনো মার্কিন যোদ্ধা সরাসরি গাদ্দাফীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল কিনা, এরকম কোনো প্রমাণ নেই। শুধু একজন বাদে- ম্যাথিউ ভ্যান ডাইক। সামরিক বাহিনীর সদস্য না হয়েও শখের যোদ্ধা ম্যাথিউ সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে লিবিয়াতে গিয়েছিলেন, বিদ্রোহীদেরকে অস্ত্রের ট্রেনিং দিয়েছেন, বিদ্রোহীদের সাথে মিলে গাদ্দাফীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন এবং গাদ্দাফীর সৈন্যদের হাতে ধরা খেয়ে ছয় মাস জেলও খেটেছেন।
মোটর সাইকেলে মধ্যপ্রাচ্য ভ্রমণ
ম্যাথিউ ভ্যান ডাইকের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরে। ছোটবেলা থেকেই তিনি অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় ছিলেন, কিন্তু বাস্তবে ভিডিও গেমের বাইরে কোনো অ্যাডভেঞ্চার তার করা হয়ে ওঠেনি। কৈশোরে লরেন্স অফ অ্যারাবিয়া সিনেমা দেখে মধ্যপ্রাচ্যের জীবনের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং পরবর্তীতে জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মধ্যপ্রাচ্যের উপর ব্যাচেলর এবং মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। পড়াশোনা শেষ করে ম্যাথিউ একটি মোটর সাইকেল এবং হ্যান্ডহেল্ড ক্যামেরা নিয়ে মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকা ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন। সে সময় তিনি মৌরিতানিয়া, মরক্কো, তিউনিসিয়া, লিবিয়া, মিসর, জর্ডান, সিরিয়া, ইরাক, ইরান, আফগানিস্তান জুড়ে মোটর সাইকেলে করে প্রায় ৩৫,০০০ মাইল ঘুরে বেড়ান।
ম্যাথিউ যখন তার মোটরসাইকেলে চড়ে মধ্য আফ্রিকা চষে বেড়াচ্ছিলেন, তখন মৌরিতানিয়াতে তার সাথে পরিচয় হয় নুরি নামের এক লিবিয়ানের সাথে। নুরি এবং তার চাচাতো ভাইয়েরা সেসময় মূলত পায়ে হেঁটে আফ্রিকা ঘুরে বেড়াচ্ছিল। তিনি নুরির দলকে বর্ণনা করেন বড় বড় চুল-দাঁড়ি বিশিষ্ট হিপ্পি গোষ্ঠী হিসেবে, যারা শান্তি এবং ভালোবাসার কথা প্রচার করত। নুরি ম্যাথিউকে লিবিয়া ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানায়।
২০০৭ সালে নুরি লিবিয়াতে যান। সেসময় মার্কিনীদেরকে লিবিয়ার টুরিস্ট ভিসা দেওয়া হতো না। ফলে নুরি বর্ডার গার্ডকে বড় অংকের টাকা ঘুষ দিয়ে ম্যাথিউকে লিবিয়াতে প্রবেশের ব্যবস্থা করে দেয়। ম্যাথিউ নুরি এবং তার চাচাতো ভাইদের সাথে সময় কাটান, তাদের সাথে মোটর সাইকেলে চড়ে পুরো লিবিয়া ঘুরে বেড়ান, বিভিন্ন জায়গায় গাদ্দাফীর বিলবোর্ডের সামনে ছবি তোলেন। একসাথে সময় কাটাতে গিয়ে তাদের মধ্যে চমৎকার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। ম্যাথিউর ভাষায়, তিনি ছোটকাল থেকে অনেকটা একা একা বড় হয়েছেন, স্কুলে তার তেমন কোনো বন্ধু ছিল না। নতুন পরিচয় হওয়া এই লিবিয়ান বন্ধুরা ছিল তার কাছে আমেরিকান যেকোনো বন্ধুর চেয়ে অনেক কাছের।
যুদ্ধের জন্য লিবিয়া যাত্রা
২০১১ সালে যখন আরব বসন্ত শুরু হয়, তখন সব ভ্রমণ শেষ করে ম্যাথিউ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসছিলেন। তিনি তার গার্লফ্রেন্ডের সাথে মিলে ভবিষ্যৎ জীবনের পরিকল্পনা করছিলেন। কিন্তু ঠিক এই সময় ফেব্রুয়ারির ১৭ তারিখে লিবিয়ার বেনগাজিতে মানুষ গাদ্দাফীর বিরুদ্ধে মিছিল বের করে। প্রথম দুই-তিন দিন মিছিলগুলো নিরস্ত্র এবং শান্তিপূর্ণ থাকলেও গাদ্দাফীর সেনাবাহিনী মেশিনগান এবং অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট গান দিয়ে মিছিলের উপর গুলি করে। নিহত হয় প্রচুর নিরস্ত্র সাধারণ জনতা।
ম্যাথিউ ইন্টারনেটে তার লিবিয়ান বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করতে শুরু করেন। তারা তাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে থাকে। কারো প্রতিবেশী মারা গেছে, কারো চাচাতো ভাইকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং টর্চার করা হয়েছে। তার বন্ধু তারেক তাকে জানায়, সে যখন মিছিলে গিয়েছিল, তখন তার পাশেই দুজন গাদ্দাফীর স্নাইপারদের গুলিতে নিহত হয়।
সে সময় বিদ্রোহের মাত্র শুরু ছিল। তখনও শুধু টিভিতে নিন্দা জানানো ছাড়া ন্যাটো, আমেরিকা বা অন্য কেউ কোনো ভূমিকা নেয়নি। ফেব্রুয়ারির ২৬ তারিখে ম্যাথিউর এক বন্ধু তাকে জিজ্ঞেস করে, কেন তাদের জন্য কেউ কিছু করছে না। সাথে সাথে ম্যাথিউ সিদ্ধান্ত নেন, আর কেউ না করলেও তিনি তার বন্ধুদের সাহায্যে এগিয়ে যাবেন। তার ভাষায়, টিভিতে অপরিচিত কাউকে মরতে দেখা, আর নিজের পরিচিতরা যখন তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, তাদের অসহায়ত্বের কথা বর্ণনা করে, দুটো সম্পূর্ণ ভিন্ন অভিজ্ঞতা। সেদিন বিকেলেই তিনি মিসরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন বর্ডার পাড়ি দিয়ে লিবিয়াতে প্রবেশ করার জন্য।
লিবিয়ার যুদ্ধে অংশগ্রহণ
মার্চের শুরুর দিক তখন। বিদ্রোহীরা কারো সাহায্য ছাড়াই গাদ্দাফীর সৈন্যদেরকে পরাজিত করে বিশাল পূর্বাঞ্চল মুক্ত করে ফেলেছিল। ম্যাথিউ যখন নূরিকে জানিয়েছিলেন যে তিনি বেনগাজিতে আসছেন, নূরি বলেছিল, “চলে এসো, কোনো ব্যাপার না।” শুনে ম্যাথিউর ধারণা হয়েছিল বেনগাজির পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক এবং নুরিও তার আগের স্বভাব অনুযায়ী কাজকর্মহীনভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু নুরির সাথে যখন ম্যাথিউর দেখা হলো, তিনি দেখলেন, আগের সেই হাসিখুশি হিপ্পি স্বভাবের নুরি এখন পুরোপুরি বিদ্রোহী যোদ্ধা। তার গায়ে আর্মির ক্যামোফ্ল্যাজ জ্যাকেট, মাথায় আর্মির হ্যাট।
সে সময় বিদ্রোহীদের হাতে তেমন কোনো অস্ত্রশস্ত্র ছিল না। পদত্যাগ করা সৈন্যদের হাতের হালকা এবং মাঝারি অস্ত্র, আর গাদ্দাফীর সৈন্যদের ফেলে যাওয়া, ক্যান্টনমেন্ট থেকে লুট করা আর গাদ্দাফীর বম্বিং করা অস্ত্রভাণ্ডারের ধ্বংসাবশেষ থেকে খুঁজে যা পাওয়া যাচ্ছিল, তা দিয়েই তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল। ইরাক এবং আফগানিস্তানে ভ্রমণের সময় সেখানকার মার্কিন সেনাদের সাথে কিছু দিন কাটানোর সুবাদে ম্যাথিউর কিছুটা মিলিটারি অভিজ্ঞতা ছিল। তিনি দেখলেন, নুরীদের গ্রুপের কারো সেই অভিজ্ঞতাটুকুও নেই। তাদের অনেকেই জীবনে কখনও রাইফেল স্পর্শ করেনি। তারা ছোট ছোট গ্রুপে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সংগঠিত হয়ে, একটি করে পিকআপ ট্রাক এবং মেশিনগান জোগাড় করে যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে। ম্যাথিউ তাদেরকে মেশিনগান চালানোর উপর ট্রেনিং দিয়ে আসন্ন যুদ্ধের জন্য তাদেরকে প্রস্তুত করতে লাগলেন।
প্রাথমিক ধাক্কা সামলে ততদিনে গাদ্দাফী বাহিনী ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তারা বিদ্রোহীদের দখলে চলে যাওয়া শহরগুলো একে একে পুনরুদ্ধার করে দ্রুত বেনগাজির দিকে এগিয়ে আসতে লাগল। ম্যাথিউ বেনগাজিতে পৌঁছানোর সপ্তাহ দুয়েক পরেই, মার্চের ১৩ তারিখে নুরি তাকে তার কয়েকজন বন্ধুর সাথে ব্রেগা ফ্রন্টলাইনে পাঠালো সেখানকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য। সে নিজে রয়ে গেল আরো অস্ত্র জোগাড় করার জন্য। ব্রেগাতে পৌঁছতে না পৌঁছতেই ম্যাথিউর দল গাদ্দাফীর সৈন্যদের প্রচণ্ড আক্রমণের মুখে পড়ল। মাথায় আঘাত পেয়ে ম্যাথিউ অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলেন।
বন্দী জীবন
ম্যাথিউর জ্ঞান ফিরল বন্দী অবস্থায় পিকআপ ট্রাকে। তাকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় গাদ্দাফীর সবচেয়ে শক্তিশালী ঘাঁটি, তার জন্মস্থান সিরতে, এবং পরবর্তীতে ত্রিপলিতে। প্রাথমিকভাবে তাকে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে কর্মকর্তারা যখন তার সাথে থাকা ভিডিও রেকর্ডারটা চালিয়ে দেখল, তখনই তাদের কাছে সব পরিস্কার হয়ে গেল। এক কর্মকর্তা তাকে বলল, “ইউ উইল নেভার সি অ্যামেরিকা অ্যাগেইন।” তারা ম্যাথিউকে পাঠাল লিবিয়ার সবচেয়ে কুখ্যাত কারাগার, ত্রিপলির আবু সেলিম কারাগারে, যেখানে ১৯৯৬ সালে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ১,২৭০ বন্দীকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হয়েছিল। ২০১১ সালের বিদ্রোহের পেছনে এই নিহত বন্দীদের আত্মীয়-স্বজনদের একটি বড় ভূমিকা ছিল।
ম্যাথিউর দিন কাটতে লাগল আবু সেলিম কারাগারের ২.২ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১.২ মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট ছোট একটি কক্ষে। মাসের পর মাস বন্দী থাকতে থাকতে তার হ্যালুসিনেশন শুরু হল। তিনি প্রায় সময়ই দরজার ফাঁক দিয়ে দেখতেন, সামনের গার্ডরা টিভি দেখছে। সেখানে দেখা যেত হিলারি ক্লিন্টন বলছেন যে, গাদ্দাফীর সরকারের সাথে ম্যাথিউকে মুক্ত করার জন্য বন্দী বিনিময় চুক্তির ব্যাপারে আলোচনা চলছে। প্রতিদিনের সংবাদেই সিএনএন এবং বিবিসিতে ম্যাথিউর কথা থাকত। সংবাদে দেখা যেত বিভিন্ন জায়গায় মানুষ ম্যাথিউর মুক্তির জন্য আন্দোলন করছে। কিন্তু মুক্তি পাওয়ার পর ম্যাথিউ বুঝতে পেরেছিলেন, বাস্তবে এসবের কিছুই হয়নি। সবই ছিল তার কল্পনা।
মুক্তি লাভ এবং আবারও যুদ্ধ
ম্যাথিউ বন্দী হয়েছিলেন মার্চের প্রথম দিকে। আগস্টের ২৪ তারিখে ত্রিপলির পতনের পরপরই আবু সেলিম কারাগারের গার্ডরা পালিয়ে যায় এবং সেখানে অবস্থিত বন্দীরা তালা ভেঙে বেরিয়ে আসে। অন্যদের সাথে মুক্তি পান ম্যাথিউও। ত্রিপলির করন্থিয়া হোটেলে তিনি সাংবাদিকদের কাছে সাক্ষাৎকার দেন। সবাই ভেবেছিল, এবার বুঝি তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাবেন। কিন্তু ম্যাথিউর বন্ধু নুরির যুদ্ধ তখনও শেষ হয়নি। তখনও গাদ্দাফীর জন্মস্থান সিরত সহ আরও তিনটি শহর গাদ্দাফীর দখলে রয়ে গিয়েছিল। কাজেই নুরির সাথে পুনরায় যুদ্ধের ময়দানে ফিরে গেলেন ম্যাথিউ।
এবার তিনি পুরোপুরি যোদ্ধা হিসেবে আবির্ভূত হলেন। রাসলানুফ ভিত্তিক আলি হাসান আল-জাবের ব্রিগেডে যোগ দিলেন তিনি। বিদ্রোহীদের মতো পোশাক-আশাক, মাথায় তাদের মতো পাগড়ি, কাঁধে কখনও কালাশনিকভ রাইফেল, কখনও সাব-মেশিনগান। লিবিয়ানরা যখন তাকে জিজ্ঞেস করত তিনি সাংবাদিক কিনা, তিনি উত্তর দিতেন, “লা, আনা থোওয়ার।” অর্থাৎ, “না, আমি বিপ্লবী।”
নুরি এবং ম্যাথিউদের ব্রিগেডটি এবার গাদ্দাফীর জন্মস্থান সিরতের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। ম্যাথিউর দায়িত্ব ছিল প্রধানত পিকআপ ট্রাকের উপর স্থাপন করা দোশকা মেশিনগান আর ১২.৫ মিমি অ্যান্টি এয়ারক্রাফট গান থেকে ফায়ার করা, আর মাঝে মাঝে সম্মুখ যুদ্ধে আরপিজি নিক্ষেপ করা। সিরত যুদ্ধে বিদ্রোহীদের সাথে তিনি গাদ্দাফী বাহিনীর বিরুদ্ধে ৪০টির মতো যুদ্ধে অংশ নেন। অবশেষে ২০ অক্টোবর, সিরতে গাদ্দাফীর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে যুদ্ধ শেষ হলে নভেম্বরে তিনি আমেরিকায় ফেরত যান।
পরবর্তী জীবন
মোটর সাইকেলের ভ্রমণের দিনগুলো থেকে থেকে শুরু করে যুদ্ধের শেষ পর্যন্ত ম্যাথিউর সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিল একটি হ্যানহেল্ড ক্যামেরা। তার মোটর সাইকেল অভিযান শুরুই হয়েছিল মূলত মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করার উদ্দেশ্যে। কিন্তু লিবিয়া যুদ্ধের আগে তিনি ডকুমেন্টারিটি নির্মাণে হাত দিতে পারেননি। অবশেষে লিবিয়ার যুদ্ধক্ষেত্রের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা ক্যামেরায় ধারণ করার পর সেগুলো নিয়ে অস্কার মনোনীত পরিচালক মার্শাল কারি ২০১৪ সালে একটি ডকুমেন্টারি নির্মাণ করেন, যার নাম Point and Shoot। ডকুমেন্টারিটিতে তার যুদ্ধের অভিজ্ঞতা বিস্তারিত উঠে আসে।
লিবিয়া যুদ্ধই অবশ্য ম্যাথিউর সর্বশেষ অ্যাডভেঞ্চার ছিল না। লিবিয়ার পর তিনি সিরিয়াতে যান সেখানকার বিদ্রোহীদেরকে সাহায্য করার জন্য। সেখানে তার বন্ধু, সাংবাদিক জেমস ফলিকে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস হত্যা করলে তিনি তার নেতৃত্বে ইরাকের খ্রিস্টান যোদ্ধাদের সমন্বয়ে একটি আইএস বিরোধী ব্রিগেড তৈরি করেন।
ম্যাথিউ ভ্যান ডাইকের সত্যিকার উদ্দেশ্য নিয়ে বিতর্ক আছে। অনেকে তাকে সিআইএর এজেন্ট বলে সন্দেহ করে। তিনি নিজেও বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে এবং ডকুমেন্টারিতে স্বীকার করেছেন যে, তার সিআইএতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে ছিল। মাস্টার্সে তিনি থিসিস হিসেবে “আল কায়েদা কেন আমেরিকার উপর আক্রমণ করে” শিরোনাম বাছাই করেছিলেন যেন সহজে সিআইএর নজরে পড়েন।
তিনি সিআইএতে যোগ দেওয়ার জন্য ইন্টারভিউও দিয়েছিলেন। কিন্তু তার বক্তব্য অনুযায়ী তিনি লাই ডিটেক্টর টেস্টে আটকে যান। তবে তিনি আসলেই সিআইএ এজেন্ট কিনা, এ ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। গাদ্দাফী প্রশাসনও প্রায় ছয় মাস আটকে রাখলেও তার বিরুদ্ধে গোয়েন্দাগিরির কোনো অভিযোগ আনেনি।