১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বাজারে আসামাত্রই মিতসুবিশি ল্যান্সার অটোমোটিভ শিল্পক্ষেত্রে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। বাজারে যে প্রতিদ্বন্দ্বীর বিশেষ অভাব ছিল, তা কিন্তু নয়। বরং সেটি সামাল দেওয়ার লক্ষ্যেই দ্রুতগামী ও নিখুঁত একটি গাড়ি হিসেবেই আবর্তিত হয় ল্যান্সার।
তারপর আর পায় কে! কৌতূহলী রেসিং ভক্তদের মধ্যে খুব দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে গাড়িটি। বসে ছিলেন না প্রস্ততকারকেরাও; সূচনালগ্ন থেকে শুরু করে মিতসুবিশি ল্যান্সার এখন পর্যন্ত নয়টি প্রজন্মের বিবর্তনের সাক্ষী হয়েছে। বিশ্বব্যাপী এর ক্রেতার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬০ লক্ষেরও বেশিতে।
ল্যান্সার বাজারে আসে তিনটি সাব ১০০ এইচপি ইঞ্জিন এবং তিনটি বডি স্টাইলের গাড়ি নিয়ে। প্রত্যেকটি ডিজাইনই তৈরি করা হয়েছিল এমনভাবে, যাতে ল্যান্সার বাজারের অন্যান্য কোম্পানির ইকোনোমি গাড়িগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে। ছোট আকারের মিনিকা কেই কার ও বিশাল গ্যালান্তের শূন্যস্থান পূরণ করতেই যেন ১৯৭৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাজারে আসে এই মিতসুবিশি ল্যান্সার এ ৭০।
যা-ই হোক, এর পাশাপাশি তারা আরো একটি গাড়ি তৈরি করেছিল; স্পোর্টিং ১৬০০ জিএসআর মডেল। মূলত এই গাড়িটির স্টিয়ারিং ধরেই ল্যান্সারের দীর্ঘ ও সফল র্যালি রেস ইতিহাসের সূচনা হয়েছিল। র্যালির জন্য এই গাড়িটির গতি ছিল একেবারে ১৬৯টি দূরন্ত ঘোড়ার গতির মতোই। গাড়িটির ওজন ছিল বেশ হালকা। কোম্পানি যখন তরুণ স্কট রেসার অ্যান্ড্রু কোয়ানের হাতে এর চাবি তুলে দিয়েছিল, তখন ফলাফল হয়েছিল বিস্ময়কর। তিনি ল্যান্সার নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসে অনুষ্ঠিত দক্ষিণ ক্রসের কঠিন এক র্যালিতে টানা পাঁচটি রেসে জয়লাভ করেন।
কাছাকাছি সময়েই অর্থাৎ ১৯৭৪ ও ১৯৭৭ সালে, কেনিয়ান রেসার জগিন্দার সিং ওয়ার্ল্ড র্যালি চ্যাম্পিয়নশিপে যোগদান করেছিলেন ল্যান্সারে চড়ে। ফলাফল, ভীষণ কঠিন এই সাফারি র্যালিতেও বিজয়ী! র্যালি রেসিং কিংবদন্তী ও গিয়ারহেড হিরো হিসেবে ল্যান্সারের সুনাম ততদিনে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে।
১৯৭৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাজারে আসে ল্যান্সারের প্রথম হ্যাচব্যাক। গাড়িটির নাম ছিল ল্যান্সার সেলেস্টে। অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের প্লাইমাউথ অ্যারোতে গাড়িটি পরিচিত ছিল ল্যান্সার ক্রাইসলার হিসেবে। ১৯৭৮ সালে এর মুখ উঁচিয়ে দেওয়া হয় এবং এতে বর্গাকৃতির হেডলাইট ও বাম্পার যুক্ত করা হয়।
এদিকে যুক্তরাজ্যে আসে একটি বিশেষ ধরনের গাড়ি, যার নাম কোল্ট ল্যান্সার ২০০০ ইএক্স টার্বো। এই গাড়িতে চিন স্পয়লার বসানো হয়েছিল বিপরীতভাবে, যাতে রাস্তা অবরোধ করে রাখা গাড়িগুলো সুবিন্যস্ত করা যায়। অনেকটা যেন অন্য সব গাড়িকে ‘আমার পথ থেকে সরে যাও’ বলে দেওয়ার এক সূক্ষ্ম উপায়। এটিই ছিল কিংবদন্তী ‘ফোরজি৬৩টি’ প্রাপ্ত প্রথম ল্যান্সার। এর ২.০ লিটার টার্বোচার্জড পাওয়ার প্ল্যান্ট, পেছনের চাকায় ১৭০ হর্সপাওয়ার চালনা করতো চমৎকারভাবে। এই গাড়ি র্যালি রেসের জন্যে নির্মিত সংস্করণগুলোর ক্ষমতা ছিল ২৮০ হর্সপাওয়ার। ল্যান্সার টার্বো গাড়িটি ১৬০০ জিএসআরের মতো করে সফলতার মুখ দেখেনি, তবে উচ্চগতির এই গাড়িটি র্যালির জগতে নিজেকে ঠিকই চিনিয়ে দিয়েছিল। আশির দশকের শেষাংশ ও নব্বইয়ের শুরুর সময় ধরে র্যালির ফ্ল্যাগশিপ বহন করেছিল মিতসুবিশি মিরেজ ও গ্যালান্তে।
১৯৯৩ সালে হঠাৎ করে সবকিছু বদলে গেল। তবে সেটা শুধু জাপানের ঘরোয়া মার্কেটের জন্য। বাজারে আসে মিতসুবিশি প্রথম ল্যান্সার ইভোল্যুশন জিএসআর। এই রোড-গোয়িং ইভোতে ছিল ২৪৪ হর্স পাওয়ার। ডব্লিউআরএক্স এর মতো প্রথম জেনারেশন ইভোরও ওজনে হালকা আলাদা একটি সংস্করণ ছিল। আরএস ডাব করে এর ওজন ২,৫৭৫ পাউন্ডের নিচে নামিয়ে প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত করে নিয়ে আসা হয়।
বছরখানেক সাফল্যের জোয়ারে ভাসার পর ১৯৯৩ সালের ডিসেম্বর মাসে পরিবর্তন এলো ইভোল্যুশনের প্রথম সংস্করণে; বাজারে এলো আপগ্রেডেড ইভোল্যুশন II । যদিও ইভো-I থেকে III পর্যন্ত গাড়ির কাঠামো একই ছিল তবে ইভো-II নিয়ন্ত্রণ ছিল ইভো-I থেকে আরো বেশি উন্নত। এছাড়া গাড়ির হুইলবেস ১০ মিলিমিটার বৃদ্ধি করে সামনে চাকা আরেকটু আগানো হয় এবং আরো বড় চাকা ব্যবহারের লক্ষ্যে সামনের ও পেছনের চাকাগুলোর মধ্যবর্তী ভেহিক্যাল ট্র্যাকের দূরত্ব বাড়ানো হয়।
মিতসুবিশির আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল ইভোল্যুশনের প্রত্যেকটি সংস্করণে ব্যতিক্রমতা নিয়ে আসার। সেই পরিকল্পনারই অগ্রদূত হিসেবে কাজ করে ইভো-II। বুস্টের প্রেশার বৃদ্ধি ছাড়াও এতে লাগানো হয় উচ্চমানের ক্যামেরা এবং ব্যাকপ্রেশার কমানোর জন্যে নিষ্কাশন সিস্টেমে আনা হয় লক্ষ্যণীয় পরিবর্তন। টর্ক অপরিবর্তিত রেখে ফোরজি৬৩টি ইঞ্জিনের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছিল প্রায় ২৫৬ বিএইচপি পর্যন্ত। এর পাশাপাশি মিতসুবিশি নিয়ে আসে সিইনাইনএ মডেলের নতুন এক ফ্রেম।
১৯৯৫ সালের মিতসুবিশির জগতে আগমন ঘটে নতুন এক দানবের। সে বছর তারা পরিচয় করিয়ে দেয় ল্যান্সার ইভোল্যুশন III এর সাথে। গাড়ির পেছনের বড়সড় উইং, ব্রেক শীতল রাখার জন্যে সামনে লাগানো হয় ভেন্টযুক্ত এয়ারড্যাম। এর পাশাপাশি যোগ হয় রকার প্যানেল এক্সটেনশন, যার কারণে গাড়ি হয়ে ওঠে আরো শক্তিশালী। অ্যারোডাইনামিকসের উন্নত ব্যবহারের পর সিক্সটিন-জি টার্বোচার্জার আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠলো মিতসুবিশি ভক্তদের মাঝে। তার উপর ২৭০ হর্সপাওয়ার, এটি দানবই বটে।
পরের বছরই ফিনিশ রেস ড্রাইভার টম ম্যাকেনিন ল্যান্সারের ইভোল্যুশনে চড়ে প্রথম চ্যাম্পিয়নশিপ রেসে যোগদান করেন এবং ১৯৯৬-৯৯ পর্যন্ত টানা চারবার বিজয়ী হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। ১৯৯৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে শুরু করে ‘৯৬ এর আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ৭ হাজার ইভো III বিক্রি হয়। নাম লেখায় সেই সময়কার সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া ইভো গাড়ির তালিকায়।
এই বিজয়ের রথে চড়েই বাজারে আগমন ঘটে মিতসুবিশি ইভোর চতুর্থ সংস্করণ, ভারী, অনমনীয় ও বিশাল ফগল্যাম্পযুক্ত ইভো IV এর। এর আগমন বদলে দিল ল্যান্সারের সম্পূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। গাড়ির ওজনের ভারসাম্য বৃদ্ধির পাশাপাশি, টর্কের স্টিয়ার রোধ করতে এর ইঞ্জিন এবং ট্রাঞ্জেক্সল ঘুরিয়ে দেওয়া হলো ১৮০ ডিগ্রী পর্যন্ত। ভিন্ন ধরনের রেসের আসরে যোগ দেওয়ার লক্ষ্যে সে বছর মিতসুবিশি নির্মাণ করে ইভোর IV এর ভিন্ন দুটি সংস্করণ, আরএস এবং জিএসআর। গাড়ি দুটোতেই ছিল নতুন প্রযুক্তির টুইন স্ক্রল টার্বোচার্জার, যার ফলে গাড়ির ক্ষমতা দাঁড়ায় ২৭৬ হর্সপাওয়ারে।
এছাড়াও ইভোর এই সংস্করণটিতে জুড়ে দেওয়া অনবোর্ড কম্পিউটারের মাধ্যমে চলমান অবস্থাতেই অন্যান্য গাড়ির গতিবেগ অনুসরণ করতে পারতো। তারপর বৈদ্যুতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত পিছনের ডিফারেনশিয়াল চাকার টর্ক স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ভাগ করে দিত কর্নারিং উন্নত করার জন্য।
১৯৯৭ সালে ডব্লিউআরসি রেসের আসরে নতুন এক নিয়ম চালু করলো। সেই নিয়ম অনুযায়ী সবগুলো গাড়িকে ‘গ্রুপ এ স্ট্যান্ডার্ড’ ফলো করতে হবে ঠিক, তবে নির্মাতারা চাইলে প্রচলিত নিয়মের বাইরে গিয়েও কিছু পরিবর্তন আনতে পারবেন তাদের গাড়িতে। মিতসুবিশি সেই সুযোগটি লুফে নিলো। ডব্লিউআরসি এর নতুন সিদ্ধান্ত মাথায় রেখেই, শুরু হলো ইভো-IVকে পুনঃডিজাইন করা। বিশেষ করে জিএসআর মডেলের গাড়িটিতে নিয়ে আশা হলো নানাবিধ পরিবর্তন। গাড়িটির অভ্যন্তরীণ সিট পাল্টে দেওয়া হলো উন্নত রিকারো সিট। গাড়ির মূল বডির সম্মুখভাগে সামান্য পরিবর্তিত করে পেছনের অংশে জুড়ে দেওয়া হলো অ্যালুমিনিয়ামের নতুন স্পয়লার।
গাড়ির চাকাগুলোকে নতুন বেম্বো ব্রেকের উপযোগী করার জন্যে, এর ট্র্যাকও আরও ০.৪ ইঞ্চি চওড়া করে দেওয়া হয় এবং চাকার ব্যাস ১৬ ইঞ্চি থেকে ১৭ ইঞ্চিতে বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও ব্রেক মাস্টার সিলিন্ডার ০.০১ ইঞ্চি বাড়ানো হয়। গাড়ির সিট, আকার, ব্রেক সবই পরিবর্তন করা হলো! টার্বোচার্জার বাকি থাকবে কেন? আরেক কাঠি বাড়িয়ে দেয়া হয় এর শ্রেষ্ঠত্বের মাত্রাও। গাড়ির টর্ক বৃদ্ধি করা হলেও অপরিবর্তিত থাকে এর হর্সপাওয়ার। এত পরিবর্তনের পরেও গাড়িটির ওজন ছিল আশ্চর্যজনকভাবে কম, ইভো-IV থেকে মাত্র ২২ পাউন্ড বেশি।
কেটে গেল আরো দুটি বছর। তারপর ১৯৯৯ সালে মিতসুবিশি সিদ্ধান্ত নিলো নতুন ইভোল্যুশন VI বাজারে নিয়ে আসার। এই সংস্করণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল গাড়ির ইঞ্জিন এবং কুলিং সিস্টেম। বড় আকৃতির ইন্টারকুলার, অয়েল কুলারের পাশাপাশি নতুন পিস্টনের সাথে আরএস মডেলে জুড়ে দেওয়া হলো নতুন প্রযুক্তির টাইটেনিয়াম-অ্যালুমিনিয়াম টারবাইন চাকা। ইভো-IV এর আগে উৎপাদিত কোনো গাড়িতে এ ধরনের চাকা ব্যবহার করা হয়নি। গাড়ির বডিতেও নিয়ে আসা হয় লক্ষ্যণীয় পরিবর্তন। বিশেষ করে সামনের বাম্পারের বিশাল ফগল্যাম্পগুলোর আকৃতি এবারে ছোট করে কোনায় সরিয়ে নেওয়া হয়, এতে করে সম্মুখভাগের বাতাস প্রবাহ বৃদ্ধি পায়।
এরপর আবার কিছুদিনের মধ্যেই জিএসআর ও আরএস মডেলের কাতারে দাঁড় করানো হয় নতুন আরেকটি মডেল আরএসটু এবং নতুন এই আরএস মডেলে বোনাস হিসেবে ছিল জিএসআর এর বেশ কিছু অপশন। ইভল্যুশনের এই নতুন সংযোজন মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছিল মার্কিন কার ভক্তদেরও। বিশেষ করে যারা আগে ইভোল্যুশন মডেলের গাড়ি নিতে চাননি।
২০০১ সালে মিতসুবিশি সিদ্ধান্ত নিলো গ্রুপ এ ক্লাস এর পরিবর্তে ডব্লিউআরসি রেস প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার। ফলে তাদেরকে প্রতিযোগিতার গাড়ি তৈরির বিশেষ নিয়মগুলো অনুসরণের প্রয়োজন ছিল না। ল্যান্সার সেডিয়ার উপর ভিত্তি করে উৎপাদন করা হলো ইভো সিরিজের নতুন গাড়ি দ্য ইভো VII। এতে করে ওজন ইভো VI থেকে বেড়ে যায় তবে কেসিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরিবর্তন সেই ঘাটতি পূরণ করে দেয়।
সবচেয়ে বড় পরিবর্তন ছিল এর নতুন জুড়ে দেওয়া একটিভ সেন্টার ডিফারেনশিয়াল এবং আরো কার্যকরী লিমিটেড-স্লিপ ডিফারেনশিয়াল। এবারেও হর্সপাওয়ার অপরিবর্তিত রেখে টার্বো বৃদ্ধি করা হয়।
২০০৩ সালে ইভোল্যুশনে আবারও আনা হলো নতুন পরিবর্তন। এবারে ট্র্যাকশন ও 6- speed ম্যানুয়াল গিয়ারবক্স সামলানোর জন্যে যোগ করা হলো স্পোর্টিং সুপার একটিভ Yaw-কন্ট্রোল। এটি বাজারে এলো ভিন্ন তিনটি মডেলে, জিএসআর, আরএস এবং এমআর। আরএস ও এমআর এই দুই মডেলেই ব্যবহার করে হয়েছিল সংশোধিত লিমিটেড-স্লিপ ফ্রন্ট ডিফারেনশিয়াল। দ্য ল্যান্সার ইভোল্যুশন VIII ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসা প্রথম ইভো মডেলের গাড়ি।
ইভোল্যুশন সিরিজের নতুন গাড়ি ইভো IX জাপানের বাজারে আসে ২০০৫ সালের মার্চ মাসে। একই দিনে ইউরোপীয় বাজারের জন্য জেনেভা মোটর শোতে গাড়িটির প্রদর্শনী করা হয়। আবার এর কিছুদিন পর নিউ ইয়র্ক আয়োজিত আন্তর্জাতিক অটো শোতে মিতসুবিশি প্রদর্শন করলো। ২.০ লিটারের ফোরজি৬৩টি ইঞ্জিনে জুড়ে দেওয়া হলো MIVEC টেকনোলোজি। এর পাশাপাশি এবারে হর্সপাওয়ারও বৃদ্ধি করা হলো ২৮৬ পর্যন্ত এবং টর্কে সামান্য পরিবর্তন আনা হলেও, প্রকৃত পরিসংখ্যানে সেটা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশী ছিল। ল্যান্সার ইভোল্যুশন IXএর মডেলগুলোর (আরএস, আইএস, এমআর) একটির পারফরমেন্স ছিল অন্যটি থেকে ভিন্ন।
২০০৫ সালে, ৩৯ তম টোকিও মোটর শোতে মিতসুবিশি পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল তাদের ইভোল্যুশনের পরবর্তী প্রজন্মের গাড়ির সাথে। সেটির নাম ছিল কনসেপ্ট X। ২০০৭ সালে উত্তর আমেরিকান আন্তর্জাতিক অটো শোতে তারা তাদের দ্বিতীয় কনসেপ্ট কার প্রোটোটাইপ-X এর প্রদর্শনী করে। নতুন এই ল্যান্সার ইভোল্যুশনে জুড়ে দেওয়া হয়েছিল নতুন ফোরবি১১টি ২.০ লিটার টার্বোচার্জড ও সম্পূর্ণ অ্যালুমিনিয়ামের আইফোর জিইএমএ ইঞ্জিন। গাড়ির পাওয়ার এবং টর্ক বাজারের উপর নির্ভর করলেও সবগুলো মডেলেই ছিল কমপক্ষে ২৭৬ হর্সপাওয়ার। তবে আমেরিকার বাজারে আসা গাড়িগুলোর হর্সপাওয়ার সামান্য বেশি ছিল। যুক্তরাজ্যে প্রস্তুতকৃত ইভো এক্স এর মডেলগুলোর দায়িত্বে ছিল মিতসুবিশি ইউকে। ইভোল্যুশনের যুক্তরাজ্যের মডেলগুলোর হর্সপাওয়ার ছিল ৩০০-৩৬০ এর মধ্যে।
অন্যদিকে আমেরিকায় উৎপাদন করা হয় দুটি ভিন্ন ধরনের ইভোল্যুশন। এর মধ্যে একটি ছিল সিক্স-স্পিড টুইন ক্লাচ স্পোর্টোনিক শিফট ট্রান্সমিশন সমৃদ্ধ এমআর মডেল। অন্যটি ফাইভ-স্পিড ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন সমৃদ্ধ জিএসআর।
দ্য ইভোল্যুশন এক্স জাপানের বাজারে আসে ২০০৭ সালের পহেলা অক্টোবর, ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে আমেরিকায়, ফেব্রুয়ারিতে কানাডা এবং মার্চ মাসে আসে যুক্তরাজ্যে। মিতুসবিশি ল্যান্সার এক্স এখনও পর্যন্ত মিতসুবিশির উৎপাদিত গাড়ির বাজারে প্রথম স্থানটি দখল করে আছে। রেসট্র্যাকের ইতিহাসেও একে আজীবন বিজয়ের অগ্রদূত হিসেবেই স্মরণ করা হবে।
ফিচার ইমেজ: mitsubishicars.com