কিম ইল সাং ১৯৯৪ সালে ৮২ বছর বয়সে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত উত্তর কোরিয়ায় প্রায় পাঁচ দশক ক্ষমতায় থাকেন। তার শাসনামলে উত্তর কোরিয়ার সমাজের সাধারণ জনগণের ব্যক্তিগত ও কর্মজীবনের উপর রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ এমন পর্যায়ে ছিল, যা অন্য কোনো দেশের ক্ষেত্রে কল্পনাই করা যেত না। এমনকি স্ট্যালিনের রাশিয়াও এতটা কঠোর ছিল না, যার শাসন ব্যবস্থাকে উত্তর কোরিয়া অনেকটাই অনুসরণ করত। কিম ইল সাং ও তার সমর্থকরা খোদ স্ট্যালিনের চেয়েও বেশি স্ট্যালিনপন্থী হয়ে ওঠেছিলেন।
সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা
উত্তর কোরিয়ার অর্থনৈতিক ব্যবস্থা থেকে বেসরকারি ব্যবসা উঠিয়ে দেওয়া হয়। খুব অল্প কিছু পণ্য মুক্তভাবে ক্রয়-বিক্রয় করা যেত। ১৯৫৭ সালে চাল ও শস্যের বেসরকারি বাণিজ্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এতে এগুলো বিতরণ করার ক্ষমতা কেবল রাষ্ট্রের ওপর চলে আসলো। তখন থেকে প্রায় ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এসব খাদ্য সরকারি বিতরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনগণের কাছে সরবরাহ করা হতো।
প্রত্যেক উত্তর কোরীয় নাগরিক একটা টোকেনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পরিমাণ শস্যের রেশন পেতেন। ঠিক কী পরিমাণ রেশন পেতেন, তা নির্ভর করত তাদের পেশার ওপর। প্রাপ্তবয়স্ক গড়পড়তা কর্মজীবী দৈনিক ৭০০ গ্রাম শস্যের রেশন পেতেন। গৃহিণীদের জন্য সেটা বরাদ্দ ছিল ৩০০ গ্রাম। খনি শ্রমিকদের মতো যারা কঠোর শারীরিক পরিশ্রমের কাজ করতেন, তারা পেতেন দৈনিক ৯০০ গ্রাম হিসেবে।
অন্যান্য শস্যের তুলনায় কী পরিমাণ চাল রেশন পাবেন, তা অনেকটা নির্ভর করত নাগরিকদের বাসস্থানের ওপর। সত্তরের দশক পর্যন্ত উত্তর কোরিয়ায় যখন প্রাচুর্য ছিল, তখন পিয়ংইয়ংয়ের অভিজাতরা তাদের রেশনের অর্ধেকের বেশি অংশই পেতেন চাল। অন্যদিকে গ্রামবাসীদের ক্ষেত্রে প্রায় পুরো রেশনটাই থাকত ভুট্টা আর আটা দিয়ে। চালের মতো বিলাসী খাদ্য শুধু বিশেষ অনুষ্ঠানের সময়ই দেওয়া হতো।
১৯৭৩ সালে যখন অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে, তখন প্রথমবারের মতো রেশন কমানো শুরু হয়। সাধারণত যারা ৭০০ গ্রাম রেশন পেতেন, তাদের দেওয়া হলো ৬০৭ গ্রাম করে। পরবর্তীতে রেশন কমানো হয় ১৯৮৭ সালে। তখন রেশনের পরিমাণ নিয়ে আনা হয় ৫৪৭ গ্রামে। আনুষ্ঠানিকভাবে একে দেখানো হয় সরকারের কাছে নাগরিকদের ‘স্বেচ্ছা দান’ হিসেবে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে নাগরিকদের জিজ্ঞেস করা হয়নি তারা ‘দান’ করতে আগ্রহী কিনা।
শুধুমাত্র শস্যের মধ্যেই রেশন ব্যবস্থা সীমাবদ্ধ ছিল না। অন্যান্য খাবারও রেশনের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ডিম, সয়া সস, বাঁধাকপি, এবং ঐতিহ্যবাহী কোরীয় খাবারের মৌলিক উপাদানগুলোও রেশনে দেওয়া হতো। মাংস বছরে কয়েকবার অনিয়মিতভাবে দেওয়া হতো। সাধারণত বড় কোনো উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকলেই মাংস মিলত। তবে মাছ ও অন্যান্য সামুদ্রিক খাবার নিয়মিতই পাওয়া যেত। শরতের সময় আপেল, তরমুজ ও অন্যান্য ফলও বিতরণ করা হতো।
সাধারণ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোও রেশনের মাধ্যমে বিতরণ করা হতো। যদিও এগুলোর বিতরণ ব্যবস্থার মধ্যে ভিন্নতা থাকত। ষাট ও সত্তরের দশকে ভোগবাদের অন্যতম মাধ্যম ছিল হাতঘড়ি ও সাদা-কালো টেলিভিশন। এগুলো সাধারণত নাগরিকদের কর্মস্থল থেকে বিতরণ করা হতো। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দামি পণ্যগুলো সরবরাহ করা হতো ‘মহান নেতার উপহার’ হিসেবে। এ ধরনের পুরস্কার ব্যবস্থা উত্তর কোরিয়ার মতো সমাজতান্ত্রিক আদর্শভিত্তিক সমাজের জন্য প্রয়োজনীয় ছিল। কারণ এতে উত্তর কোরিয়াকে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ অব্যাহত রাখার জন্য নাগরিকদের কঠোর পরিশ্রমের মূল্য দেওয়া হতো।
তবে একটা দাবি করা হয় যে উত্তর কোরিয়ায় স্থানীয় বাজার ব্যবস্থা নিষিদ্ধ ছিল। এটা সত্য নয়। উত্তর কোরিয়ায় কখনো বেসরকারি বাজার নিষিদ্ধ ছিল না। স্বল্প পরিসরে কিছু সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে তাদের বিস্তৃতি ছিল। কিন্তু কিম ইল সাংয়ের সময়ে সাধারণ নাগরিকরা খুব কমই এসব দোকানপাট থেকে কেনাকাটা করতেন। কারণ সেখানকার পণ্য খুব ব্যয়বহুল ছিল। আশির দশকে সেখানে একটা মুরগির দাম ছিল সাধারণ চাকরিজীবীদের মাসিক বেতনের অর্ধেকের বেশি। এর থেকে তারা সরকারি বিতরণ ব্যবস্থায় যা পেতেন, তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতেন।
সরকার নিযুক্ত পেশা ব্যবস্থা
উত্তর কোরিয়ার শারীরিকভাবে সক্ষম প্রত্যেক পুরুষ নাগরিককে রাষ্ট্রের নিযুক্ত চাকরি করতে হতো, এবং এটা খুবই গুরুত্বের সাথে বাস্তবায়ন করা হতো। ১৯৫৬ থেকে ১৯৫৮ সালের মধ্যে সব ব্যক্তিগত ছোট কারখানাগুলো জাতীয়করণ করা হয়। সকল কৃষককে কৃষি সমবায়ে যোগ দিতে চাপ দেওয়া হয়। এ সকল সমবায়গুলো ছিল রাষ্ট্রীয় মালিকানার কৃষিজমির। কৃষকদেরও দৈনিক ৭০০ গ্রাম হিসেব করে রেশন দেওয়া হতো। কিন্তু শহরবাসীদের যেখানে মাসে দুই বার করে রেশন করে দেওয়া হতো, কৃষকদের ক্ষেত্রে সেটা দেওয়া হতো বছরে একবার করে, ফসল কাটার ঠিক পরপর।
কৃষকদের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কৃষিজমিতে চাষ করতে বাধ্য করা সব সমাজতান্ত্রিক দেশেই সাধারণ ঘটনা ছিল। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার ক্ষেত্রে সেটা ছিল আরো কঠোর। উত্তর কোরিয়ার কৃষকদের ব্যক্তিগতভাবে চাষাবাদ করার জন্য খুবই অল্প পরিমাণ জমি বরাদ্দ ছিল। স্ট্যালিনের আমলে সোভিয়েত ইউনিয়নের কৃষকরা যেখানে এক হাজার বর্গমিটারেরও বেশি জমি পেতেন নিজেদের ব্যক্তিগত চাষাবাদের জন্য। সেখানে উত্তর কোরিয়ার কৃষকরা ১০০ বর্গমিটারের বেশি পেতেন না। অনেক কৃষককে এই সুবিধাটাও দেওয়া হতো না। কৃষকদের অতিরিক্ত আয় বা খাদ্য উৎপাদনের সুযোগ না থাকায় তাদের সকল সময় আর শ্রম রাষ্ট্রীয় ফসল উৎপাদনের পেছনে ব্যয় করতে হতো।
সোভিয়েত ইউনিয়নের নাগরিকরা নিজেদের জন্য উপযুক্ত চাকরি খুঁজে নেওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা এমন উদার মনোভাবকে বিপজ্জনক হিসেবে দেখে। স্কুল জীবন শেষে প্রত্যেক নাগরিককে চাকরিতে পাঠানো হতো। যাদের একাডেমিক দিক দিয়ে ফলাফল ভালো ছিল এবং রাজনৈতিকভাবে বিশ্বাসযোগ্যতা ছিল, কেবল তাদের ক্ষেত্রেই কলেজে ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ মিলত। চাকরি পরিবর্তনেরও সুযোগ ছিল, তবে তা কর্তৃপক্ষের অনুমতি পাওয়া সাপেক্ষে সম্ভব হতো। এর জন্য অনেক আমলাতান্ত্রিক জটিলতা সারতে হতো। মহিলাদের ক্ষেত্রে কেবল এই ব্যবস্থা শিথিল ছিল। বিয়ের পর তাদের অনেকেই পুরোদস্তুর গৃহিণী হয়ে যেতেন। তাদের ক্ষেত্রে কাগজপত্র নিয়ে দৌড়াদৌড়ির ঝামেলা ছিল না।
কঠোর নজরদারি
কিম ইল সাংয়ের শাসনামলের সবচেয়ে অদ্ভুত বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি ছিল উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের দৈনন্দিন জীবনযাপনের ওপর কর্তৃপক্ষের নজরদারির বিস্তৃতি। ১৯৬০-১৯৯০ সাল পর্যন্ত সময়টায় দেশটার সাথে স্ট্যালিনের রাশিয়াও অনেক উদার মনোভাবের ছিল। সরকার নাগরিকদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নজরদারি করত, এবং তারা এতে সফলও হয়েছিল।
নাগরিকদের বাসস্থান পরিবর্তন করার এখতিয়ার কেবল কর্তৃপক্ষের হাতে ছিল। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া বাসস্থান ত্যাগ করা সম্ভব ছিল না। সরকার যদি মনে করত দেশের অর্থনীতির জন্য নাগরিকদের ভিন্ন কোনো স্থানের কর্মস্থলে পাঠানো উচিত, সেক্ষেত্রেই তাদের স্থান পরিবর্তন করার সুযোগ ছিল। নারীদের ক্ষেত্রে অবশ্য এটা কিছুটা শিথিল ছিল। তারা বিয়ের পর স্বামীর বাসস্থান অনুযায়ী স্থান পরিবর্তন করতে পারতেন।
শুধু দীর্ঘমেয়াদে থাকার জন্যই নয়, অস্থায়ীভাবেও তাদের এক শহর থেকে অন্য শহরে ভ্রমণ করার সুযোগ সীমিত ছিল। একজন উত্তর কোরীয় নাগরিক নিজের শহর বা গ্রাম থেকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বিশেষ অনুমতি ছাড়া বের হতে পারতেন না। কেবলমাত্র ব্যতিক্রম ছিল যেসব শহর বা গ্রামের সাথে তাদের নথিভুক্ত করা বাসস্থানের শহর বা গ্রামের সাধারণ সীমানা থাকত, সেগুলোর ক্ষেত্রেই। যদি কোনো নাগরিককে ভ্রমণের অনুমতিপত্র ছাড়া নিজের শহর বা গ্রামের বাইরে পাওয়া যেত, সেক্ষেত্রে তাকে গ্রেপ্তার করে তৎক্ষণাৎ নিজ এলাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হতো তদন্ত করে উপযুক্ত শাস্তি প্রদানের জন্য।
এই ভ্রমণের অনুমতির জন্য প্রথমে আবেদন করতে হতো কর্মস্থলের পার্টি সচিবের কাছে। এরপর আবেদনপত্র যাচাই করে দেখত স্থানীয় সরকারের সেকেন্ড ডিপার্টমেন্ট, যেখানে পুলিশ অফিসাররা কাজ করত। অনুমতিপত্রে নির্দিষ্ট করে দিন-তারিখ উল্লেখ করা থাকত, নাগরিকরা কত দিন কোথায় থাকবেন। এর সাথে ক্রয় করা টিকিট, এবং কোন হোটেলে বা কোন বন্ধু বা আত্মীয়ের বাসায় থাকবেন, সে তথ্যও দেওয়া থাকত।
পিয়ংইয়ং বা কোরিয়া সীমান্তের বেসামরিকীকৃত এলাকার (ডিমিলিটারাইজড জোন) কাছাকাছি জেলায় যাওয়ার ক্ষেত্রে ভিন্ন ধরনের অনুমতিপত্রের প্রয়োজন হতো। এর জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি নিয়ে আসা লাগত। এ ধরনের অনুমতি পাওয়া ছিল খুবই দুরূহ ব্যাপার। ভ্রমণের ক্ষেত্রে এ ধরনের কঠোর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আর কোনো সমাজতান্ত্রিক দেশে ছিল না। স্ট্যালিনের আমলে সোভিয়েত ইউনিয়নে সীমিত আকারে এমন ব্যবস্থা থাকলেও স্ট্যালিন পরবর্তী যুগে তা তুলে নেওয়া হয়।
ইনমিনবান
অভ্যন্তরীণ ভ্রমণের ক্ষেত্রে অনুমতিপত্রের ব্যবস্থা ছাড়াও নাগরিকদের ওপর নজরদারি করার জন্য ইনমিনবান বা ‘জনতার জোট’ নামে উত্তর কোরিয়ার প্রশাসনের আরেকটি উদ্ভট ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল। এর অস্তিত্ব কাগজে-কলমে এখনো বিদ্যমান আছে, তবে নব্বই দশক থেকে এর গুরুত্ব কমে যেতে থাকে।
প্রতিটি সাধারণ ইনমিনবান বিশ থেকে চল্লিশটি পরিবার নিয়ে গঠিত হতো। উত্তর কোরিয়ার বেশিরভাগ বাসস্থান ছিল একটি এলাকায় আলাদাভাবে থাকা বাড়ি। এক্ষেত্রে প্রতি ব্লকে যে কয়টি বাড়ি থাকত, তাদের সদস্যরা একটা ইনমিনবানের অন্তর্ভুক্ত হতেন। অন্যদিকে অ্যাপার্টমেন্ট ভবনগুলোর ক্ষেত্রে প্রতিটি ভবনের বাসিন্দারা একেকটা ইনমিনবানের অন্তর্ভুক্ত হতেন। তবে অ্যাপার্টমেন্টগুলো ছোট হলে পাশাপাশি দুই থেকে তিন অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের বাসিন্দারা একটা ইনমিনবানের সদস্য হতেন। ইনমিনবানের সদস্য হওয়া এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। কারণ সব লিঙ্গের সব বয়সী উত্তর কোরীয় নাগরিকই কোনো না কোনো ইনমিনবানের সদস্য হয়ে থাকেন।
প্রতিটি ইনমিনবানের প্রধান থাকেন একজন নারী। তিনি সাধারণত মধ্যবয়সী হয়ে থাকেন। তাকে বিবিধ দায়িত্ব পালন করতে হয়। তার দায়িত্বগুলোর মধ্যে থাকে প্রতিবেশীরা ঠিকমতো দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করছে কিনা। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ঠিকভাবে ময়লা পরিষ্কার করে কিনা। এছাড়া অন্যান্য দায়িত্বগুলো হয়ে থাকে সাধারণত নজরদারি সংক্রান্ত বিষয়ে। ইনমিনবান প্রধানদের অধীনে থাকা সকল সদস্যের আয়, সম্পদের পরিমাণ এবং তাদের খরচের প্রবণতা, এসব বিষয়ে ওয়াকিবহাল থাকতে হয়। তাদের প্রশিক্ষণের সময় বলা হয়- একজন ইনমিনবান প্রধানকে প্রতিটি বাড়িতে কয়টা চপস্টিক আর চামুচ আছে সে তথ্যটাও জানা থাকা লাগবে!
ইনমিনবানের কার্যক্রম তদারকি করে থাকে পুলিশবাহিনী। প্রতিটি ইনমিনবানের দায়িত্বে থাকেন একজন আবাসিক পুলিশ কর্মকর্তা, যিনি নিয়মিত ইনমিনবান প্রধানের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। তাদের আলোচনার সময় ইনমিনবান প্রধান কোনো প্রকার সন্দেহজনক কার্যক্রম দেখতে পেলে অবশ্যই পুলিশকে অবহিত করতে হয়।
ইনমিনবানের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হচ্ছে নাগরিকদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা। প্রতি সন্ধ্যায় ইনমিনবান প্রধানকে একটা রেজিস্টার খাতায় রেকর্ড তুলতে হয়, সেখানে বাইরের এলাকা থেকে আসা কোনো নাগরিক রাত কাটাবেন কিনা। যদি কোনো বাড়ির সদস্যদের আত্মীয় বা বন্ধু তাদের বাড়িতে থাকতে আসে, তবে সেই বাড়ি থেকে ইনমিনবান প্রধানের কাছে মেহমান সম্পর্কে তথ্য দিতে হয়। ইনমিনবান প্রধান ওই মেহমানের পরিচয়পত্র যাচাই করে সব তথ্য লিপিবদ্ধ করে রাখেন।
বছরে কয়েকবার ইনমিনবান প্রধানের সাথে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশবাহিনী মাঝরাতে বিচ্ছিন্নভাবে বসতবাড়িতে গিয়ে যাচাই করে দেখে সেখানে রাত কাটানো লোকদের কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা। এছাড়া তারা রেডিও সেটগুলোও পরীক্ষা করে দেখে সেখানে বিদেশি স্টেশন থেকে অনুষ্ঠান শোনার ব্যবস্থা আছে কিনা। (পরবর্তী অংশ পরের পর্বে)