গত সোয়াশ’ বছরের ইতিহাসে আমেরিকা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শত শত অভিযান চালিয়েছে, অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করেছে, বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে অর্থ এবং অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছে। এর মধ্যে প্রত্যক্ষভাবে কোনো দেশের সরকারকে উৎখাতের ঘটনাও কম নয়। মার্কিন লেখক, সাংবাদিক ও গবেষক স্টিফেন কিনজারের মতে, এখন পর্যন্ত এরকম ঘটনা ঘটেছে মোট ১৪টি, যার শুরু হয়েছিল স্বাধীন রাজ্য হাওয়াইয়ের রানি লিলিউকালানিকে ক্ষমতাচ্যুত করার মধ্য দিয়ে।
এই ১৪টি উৎখাতের ঘটনা নিয়েই স্টিফেন কিনজার (Stephen Kinzer) ২০০৬ সালে প্রকাশ করেছিলেন তার বিখ্যাত বই Overthrow: America’s Century of Regime Change from Hawaii to Iraq। বইটির প্রথম অধ্যায় অবলম্বনে হাওয়াইয়ের রানিকে ক্ষমতাচ্যুত করার মার্কিন ষড়যন্ত্র নিয়েই আমাদের এই আয়োজন। চার পর্বে সমাপ্ত লেখাটির আজ পড়ুন চতুর্থ এবং সর্বশেষ পর্ব। এ পর্বে রয়েছে হাওয়াইয়ের রানি লিলিউকালানির বিরুদ্ধে আমেরিকার অভ্যুত্থানের ইতিহাস। সবগুলো পর্ব পড়ুন এখান থেকে: প্রথম পর্ব, দ্বিতীয় পর্ব, তৃতীয় পর্ব, চতুর্থ পর্ব।
১৮৯৩ সালের ১৬ই জানুয়ারি সকাল বেলা হাওয়াইয়ের রানি লিলিউকালানির বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে বৈঠকে মিলিত হয় নবগঠিত ‘কমিটি অফ সেফটি’ এর ১৩ সদস্যের সবাই। হাওয়াইয়ের সেরা ধনকুবেরদের একজন, উইলিয়াম ক্যাসেলের বাসায় যখন তাদের বৈঠক চলছিল, তখন হঠাৎ করেই সেখানে প্রবেশ করেন রানীর পুলিশবাহিনীর প্রধান চার্লস উইলসন (Charles Burnett Wilson)।
উইলসন জানতেন, লরিন থার্স্টন এবং তার সঙ্গীরা রানীকে ক্ষমতাচ্যুত করার পরিকল্পনা করছিলেন। তাদেরকে নিবৃত্ত করার জন্য তিনি থার্স্টনকে আশ্বাস দেন, তিনি নিজে নিশ্চিত করবেন যেন রানী নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে না পারেন। প্রয়োজনে তিনি রানীকে বন্দী করে রাখবেন। তবুও যেন থার্স্টন এবং তার সঙ্গীরা রানীকে ক্ষমতাচ্যুত করার সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসে। কিন্তু থার্স্টন উত্তর দেন, তার জন্য যথেষ্ট দেরি হয়ে গেছে।
উইলসন বেরিয়ে যাওয়ার পরপরই থার্স্টন এবং তার সঙ্গীরা হাওয়াইয়ে নিযুক্ত মার্কিন দূত জন এল. স্টিভেন্সের প্রতি একটি আনুষ্ঠানিক আবেদনপত্র তৈরি করেন। নিজেদেরকে হাওয়াইয়ের নাগরিক এবং অধিবাসী পরিচয় দিয়ে তারা উল্লেখ করেন, রানী লিলিউকালানির সাম্প্রতিক গৃহীত পদক্ষেপের কারণে হাওয়াইয়ের জনগণের নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। ফলে তাদেরকে রক্ষা করার জন্য অবিলম্বে স্টিভেন্স এবং তার অধীনস্থ মার্কিন নৌবাহিনীর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
সেদিন দুপুর দুটোর সময় হাওয়াইয়ের হনলুলু অস্ত্রাগারের সামনে এক জনসভায় মিলিত হন কমিটি অফ সেফটির সদস্যরা। পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী এবার তাদের সাথে যোগ দেয় শহরের প্রায় দুই হাজার শ্বেতাঙ্গ অধিবাসী। জনসভায় যাওয়ার সময় তারা দেখতে পায়, শহরের দেয়ালে দেয়ালে রানীর পক্ষ থেকে একটি রাজকীয় ঘোষণা সাঁটিয়ে দেয়া হয়েছে যে, তিনি সংবিধান সংশোধনের পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছেন এবং ভবিষ্যতেও তিনি মন্ত্রিপরিষদের সাথে আলোচনা না করে সংবিধান সংশোধনের চেষ্টা করবেন না।
কিন্তু শ্বেতাঙ্গদের তখন আর পিছু হটার কোনো পথ ছিল না। সভায় বক্তাদের সবাই রানীর সংবিধান সংশোধনের প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা করেন। থার্স্টন রানীর পদক্ষেপকে ‘অবৈধ এবং অসাংবিধানিক’ বলে উল্লেখ করেন। রানীর আচরণকে দেশদ্রোহিতামূলক আখ্যা দিয়ে সভায় সর্বসম্মতিক্রমে কমিটি অফ সেফটিকে দায়িত্ব দেয়া হয় যেন তারা হাওয়াইয়ের ‘স্বাধীনতা এবং জান ও মালের নিরাপত্তা’ নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় যেকোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
জনসভা শেষে কমিটি অফ সেফটির সদস্যরা উইলিয়াম স্মিথের বাসায় পুনরায় মিলিত হন এবং সিদ্ধান্ত নেন, অভ্যুত্থান যথাযথভাবে সম্পন্ন করার প্রস্তুতির জন্য তাদের আরেকটি দিন সময় প্রয়োজন। তারা মার্কিন দূত জন এল. স্টিভেন্সের কাছে গিয়ে তাকে অনুরোধ করেন যেন নৌসেনা অবতরণের সময় একদিন পিছিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু তাদেরকে হতবাক করে দিয়ে স্টিভেন্স ঘোষণা দেন, আর দেরি করা যাবে না। তারা প্রস্তুত থাকুক বা না থাকুক, সেদিন বিকেলেই নৌসেনারা হাওয়াইয়ে অবতরণ করবে।
১৮৯৩ সালের ১৬ই জানুয়ারির সেই বিকেলে জন এল স্টিভেন্স পার্ল হারবারে অবস্থিত মার্কিন যুদ্ধজাহাজ বোস্টনের ক্যাপ্টেনকে উদ্দেশ্য করে একটি জরুরি নোট পাঠান। সেখানে তিনি ক্যাপ্টেনকে অনুরোধ করেন, হাওয়াইয়ে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস, কন্স্যুলেট এবং সেখানকার আমেরিকান অধিবাসীদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষার জন্য তিনি যেন অবিলম্বে তার অধীনস্থ নৌবাহিনীকে হাওয়াইয়ের মাটিতে ল্যান্ড করান।
স্টিভেন্সের অনুরোধে সাড়া দিয়ে বিকেল পাঁচটার সময় ১৬২ জন আমেরিকান সেনা এবং নাবিক হাওয়াইয়ের মাটিতে অবতরণ করে। স্থানীয় হাওয়াইয়ান আদিবাসীদের অধিকাংশই জীবনে কোনোদিন এরকম সুসজ্জিতভাবে কাউকে মার্চ করে যেতে দেখেনি। সৈন্যরা যখন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাদের সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল, তখনও তারা বুঝতে পারছিল না, তাদের উদ্দেশ্য কী। কিন্তু তাদের কাছে সবকিছুই দিবালোকের মতো পরিষ্কার হয়ে যায়, যখন তারা কমিটি অফ সেফটির সদস্যদেরকে সৈন্যদের আগমনে উচ্ছ্বাস করতে দেখে।
মন্ত্রিসভার সব সদস্য তখনও হাল ছেড়ে দেননি। সর্বশেষ প্রচেষ্টা হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্যামুয়েল পার্কার স্টিভেন্সের কাছে একটি আবেদনপত্র পাঠান। তিনি হাওয়াইয়ে অবস্থিত সকল আমেরিকান ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্টিভেন্সকে আমেরিকার হস্তক্ষেপ বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু স্টিভেন্স তার চিঠির উত্তর দেওয়ারও প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি। তিনি তখন মার্কিন সেনাদের ঘাঁটির জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচনে ব্যস্ত।
ওদিকে কমিটি অফ সেফটির সদস্যরা আবারও মিটিংয়ে বসেন। তাদের সামনে এখন শুধু একটা কাজই বাকি। রানিকে ক্ষমতাচ্যুত করার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া। কিন্তু তার জন্য তাদেরকে একজন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে হবে। অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিকেলের এই মিটিংয়ে লরিন থার্স্টন এবং উইলিয়াম ক্যাসেল উপস্থিত ছিলেন না। ফলে উপস্থিত একজন যখন সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট হিসেবে হাওয়াইয়ের শ্বেতাঙ্গ সম্প্রদায়ের মধ্যে অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি স্যানফোর্ড ডোলের (Sanford B. Dole) নাম ঘোষণা করেন, সবাই একবাক্যে তাতে সম্মতি প্রদান করেন।
স্যানফোর্ড ডোলও ছিলেন এক আমেরিকান মিশনারী দম্পত্তির সন্তান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং ‘বেয়োনেট কনস্টিটিউশন’ এর অন্যতম প্রণেতা। পরদিন, ১৭ই জানুয়ারি, মঙ্গলবার সকাল বেলা তিনি থার্স্টন এবং স্টিভেন্সের সাথে সাক্ষাৎ করেন। তাদের সম্মতি পাওয়ার পর তিনি গভর্নমেন্ট হাউজে গিয়ে সুপ্রিম কোর্ট থেকে পদত্যাগের পত্র লেখেন। কিন্তু সেই পদত্যাগপত্র জমা নেওয়ার মতো কোনো কর্তৃপক্ষ তখন আর ছিল না।
১৭ তারিখ সকালবেলা রানীর মন্ত্রিসভা হাওয়াইয়ে অবস্থিত বিদেশী রাষ্ট্রদূতদের সাথে একটি জরুরি সম্মেলনের আয়োজন করেন। মন্ত্রিদের অধীনে তখনও ৫৫০ জন সশস্ত্র সৈন্যের একটি বাহিনী ছিল। ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধে তাদেরকে কাজে লাগানো উচিত হবে কি না, সে বিষয়ে রাষ্ট্রদূতদের মতামত জানতে চাওয়াই ছিল এ বৈঠকের উদ্দেশ্য। সভায় স্টিভেন্স ছাড়া সবাই উপস্থিত হন। কিন্তু তাদের প্রত্যেকেই প্রতিরোধের বিরুদ্ধে মতামত প্রকাশ করেন।
রানী লিলিউকালানি বুঝতে পারছিলেন, তার ভবিষ্যত নির্ভর করছে কেবলমাত্র স্টিভেন্সের সিদ্ধান্তের ওপর। তিনি তার মন্ত্রিসভার সকল সদস্যকে স্টিভেন্সের সাথে গিয়ে সাক্ষাৎ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু স্টিভেন্স শুধুমাত্র অ্যাটর্নি জেনারেলের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং তাকে পরিষ্কার জানিয়ে দেন, যদি বিদ্রোহের সাথে জড়িত কারও ওপর আক্রমণ করা হয়, বা কাউকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে মার্কিন সেনাবাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে হস্তক্ষেপ করবে। স্টিভেন্সের এ বক্তব্যের মাধ্যমে হাওয়াইকে রক্ষার সর্বশেষ সম্ভাবনাও হাওয়ায় মিলিয়ে যায়।
সেদিন দুপুর দুটোর সময় বিদ্রোহীরা হাওয়াইয়ের গভর্নমেন্ট হাউজের সামনে মিলিত হয়। কমিটি অফ সেফটির সভাপতি হেনরি কুপার সবার সামনে এগিয়ে আসেন আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়ার জন্য। তার হাতে ছিল ঘোষণার খসড়া, যা সেদিন সকালেই অসুস্থ লরিন থার্স্টনের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি রচনা করেছিলেন। ৬০ জন আমেরিকান সৈন্য দ্বারা নিরাপত্তাবেষ্টিত অবস্থায় তিনি ঐতিহাসিক ঘোষণাটি পাঠ করেন, “এতদ্বারা হাওয়াইয়ের রাজনতান্ত্রিক শাসনপদ্ধতি বাতিল করা হলো।”
হেনরি কুপারের ঘোষণা শুনে উপস্থিত শ্বেতাঙ্গরা উৎসাহে ফেটে পড়ে। এর মাঝেই তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একীভূত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কাজ চালানোর জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করেন। তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট স্যানফোর্ড ডোলের অধীনে গঠিত এই সরকারে কেবলমাত্র ছয়জন বাদে পূর্ববর্তী সরকারের সকল কর্মকর্তার চাকরি বহাল থাকবে। এই চারজন হলেন পুলিশ প্রধান চার্লস উইলসন, চারজন মন্ত্রী এবং স্বয়ং রানী লিলিউকালানি।
কুপারের ঘোষণার পরপরই কাজে লেগে পড়েন নতুন প্রেসিডেন্ট এবং তার কর্মকর্তারা। তারা বিভিন্ন দেশের সরকারের সাথে যোগাযোগ শুরু করেন। মাত্র দুই ঘন্টার মধ্যেই তারা প্রথম সাড়া পান। মার্কিন দূত স্টিভেন্সের পক্ষ থেকে একজন দূত এসে একটি বার্তা পৌঁছে দেয় তাদের হাতে। এটি ছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে হাওয়াইয়ের বৈধ সরকার হিসেবে দেয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি!
রানী লিলিউকালানি এবং তার চার মন্ত্রী ও পুলিশ প্রধান তখনও আত্মসমর্পণ করেননি। কিন্তু বিদ্রোহীদের একজন, যিনি নিজেই রানীর উপদেষ্টা ছিলেন, তিনি তাদেরকে বোঝাতে সক্ষম হন, এই অভ্যুত্থান শুধুমাত্র স্থানীয় কিছু শ্বেতাঙ্গ হাওয়াইয়ান কিংবা আমেরিকানদের দ্বারা সংঘটিত বিপ্লব না। এর পেছনে আছে শক্তিমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সমর্থন ও সহযোগিতা। কাজেই আত্মসমর্পণ করা ছাড়া তাদের দ্বিতীয় কোনো পথ খোলা নেই।
রানী লিলিউকালানি সবাইকে রাজপ্রাসাদ ছেড়ে যেতে বলেন। এরপর তিনি কলম হাতে নিয়ে অত্যন্ত সুচিন্তিত এবং সাবধানে বাছাই করা শব্দ দিয়ে একটি বিবৃতি লেখেন। এটি নিঃসন্দেহে আত্মসমর্পণেরই বিবৃতি ছিল, কিন্তু এটি পদত্যাগপত্র ছিল না। তার বক্তব্যের মধ্য দিয়েই তিনি পরিষ্কারভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি কেবলমাত্র আমেরিকান চাপের মুখে বাধ্য হয়েই ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন।
বিবৃতির শুরুতেই তিনি আমেরিকার পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ করেন, এবং শেষে উল্লেখ করেন, কেবলমাত্র রক্তপাত এড়ানোর জন্যই বাধ্য হয়ে তিনি ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। এবং তিনি আশা করেন, মার্কিন সরকারের কাছে যখন সকল তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করা হবে, তখন তারা বুঝতে পারবে যে তার সাথে অন্যায় করা হয়েছে এবং তাকে ক্ষমতায় পুনর্বহাল করবে। কিন্তু সেটা কখনোই ঘটেনি। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেই এই অভ্যুত্থান ঘটিয়েছিল।
আজ থেকে সোয়াশ’ বছর আগে সংঘটিত এই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়েই আমেরিকা প্রবেশ করেছিল এক নতুন যুগে। এটা সত্য যে এই অভ্যুত্থানে লরিন থার্স্টনের মতো হাওয়াইয়ে জন্মগ্রহণ করা, হাওয়াইয়ের শ্বেতাঙ্গ নাগরিকরাই প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল। কিন্তু বাস্তবে তাদের পেছনে ছিল মার্কিন বংশোদ্ভুত হাওয়াইয়ানদের ব্যবসায়িক স্বার্থ এবং জন এল. স্টিভেন্সসহ অন্যান্য মার্কিন রাজনীতিবিদদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা।
রানী লিলিউকালানির বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানে সাহায্য করার পেছনে স্টিভেন্সের যুক্তি ছিল রানীর ‘অসাংবিধানিক’ পদক্ষেপের কারণে সৃষ্টি হতে যাওয়া ‘আতঙ্ক ও বিশৃঙ্খলা’ থেকে হাওয়াইকে ‘রক্ষা’ করা। এই একই অযুহাত আমেরিকা ব্যবহার করবে পরবর্তী শত বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে- কিউবা থেকে ইরাক পর্যন্ত। সেই কাহিনী আমরা জানব অন্য কোনো সময়।
সবগুলো পর্ব পড়ুন এখান থেকে: প্রথম পর্ব, দ্বিতীয় পর্ব, তৃতীয় পর্ব, চতুর্থ পর্ব।