স্পেনে কার্থেজের সেনাবাহিনীর দায়িত্ব নেয়ার জন্য সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত হলেন হ্যানিবাল। হ্যানিবাল শুধু দক্ষ যোদ্ধাই ছিলেন না, একজন কুশলী সমরনায়ক হিসেবেও অল্প বয়সেই তিনি যথেষ্ট নাম কুড়িয়েছিলেন। স্পেনে কার্থেজের নেতা নির্বাচিত হওয়ার আগে তিনি সেনাবাহিনীর অশ্বারোহী দলের সাথে ছিলেন এবং সেখানে নানাভাবে তার বীরত্বের প্রমাণ রেখেছিলেন। সেনাবাহিনীর দায়িত্ব নিয়ে তিনি কার্থেজের প্রভাব আরো বিস্তৃত করতে উদ্যোগী হন। হ্যানিবাল স্থানীয় বিভিন্ন শক্তিশালী গোত্র; যেমন- ওলসাডেস, ভ্যাকেই ইত্যাদিকে পরাজিত করে আইবেরিয়ান উপদ্বীপের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমের উচ্চভূমি পর্যন্ত কার্থেজের সীমানা বর্ধিত করেন।
ব্যাটল অফ ট্যাগাস
২২০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ভ্যাকেইদের পরাজিত করার পর লুণ্ঠিত সামগ্রী নিয়ে হ্যানিবাল নিউ কার্থেজের দিকে রওনা হলেন। এদিকে পরাজিত স্প্যানিশ গোত্র মিলিতভাবে কার্থেজের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করল। তাদের এক বিশাল বাহিনী হ্যানিবাল ও তার সেনাদলকে ধাওয়া করল। এই বাহিনী ছিল মূলত পদাতিক সেনা, তাদের সাহস ও উদ্যমের অভাব না থাকলেও শৃঙ্খলা ও সমরকৌশলের অভাব ছিল। পলিবিয়াস ও লিভির মতে, এই বাহিনীর সংখ্যা ছিল প্রায় এক লাখ, যা আধুনিক ঐতিহাসিকগণ অতিরঞ্জিত বলে মনে করে থাকেন।
হ্যানিবাল ও তার বাহিনী স্প্যানিশ বাহিনীর দুর্বলতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিল। একে কাজে লাগাতে হ্যানিবাল তার সেনাদেরকে নিয়ে ট্যাগাস নদী পার হয়ে অপর তীরে তার বাহিনীকে সজ্জিত করলেন। এদিকে কার্থেজিনিয়ানরা পালিয়ে যাচ্ছে ভেবে স্প্যানিশ সৈন্যরা অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা না করে নদিতে ঝাঁপ দিল তাদের পিছু ধাওয়া করতে। হ্যানিবালের কৌশল কাজে দিল। খরস্রোতা ট্যাগাস নদী পার হয়ে গিয়ে স্প্যানিশরা তীব্র সমস্যার মুখোমুখি হলো। যারা অপর পার পর্যন্ত পৌঁছল তারাও স্রোতের টানে ঠিকমত দাঁড়াতে পারার আগেই কার্থেজের অশ্বারোহী ও হস্তিবাহিনী তাদের আক্রমণ করল। তাদেরকে কচুকাটা করে হ্যানিবালের বাহিনী নদী পার হয়ে এসে অন্য পাশের স্প্যানিশদের ধ্বংস করে দিল। এই লড়াইয়ে বিজয়ের মধ্য দিয়ে স্পেনে কার্থেজের ক্ষমতা সুসংহত হলো।
স্যাগুন্টাম দখল
নিউ কার্থেজের ৪০০ কিলোমিটার উত্তরে স্যাগুন্টাম শহর। রোমের সাথে পূর্ণ যুদ্ধ শুরুর আগে হ্যানিবাল চেয়েছিল রোমের এই মিত্র নগরকে পদানত করতে। এর কারণ দুটি। ১.তাদের অর্থ-সম্পদ ছিনিয়ে নিয়ে কোষাগার সমৃদ্ধ করা, এবং ২. হ্যানিবাল যখন ইতালিতে অভিযান পরিচালনা করবেন, তখন তিনি পেছনে রোমের কোনো মিত্র রেখে যেতে চাইছিলেন না।
২১৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে পার্শ্ববর্তী গোত্র তুর্দেতানির সাথে স্যাগুন্টাম বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। তুর্দেতানিরা কার্থেজের মিত্র, এই অজুহাতে হ্যানিবাল রোমের হুশিয়ারি সত্ত্বেও স্যাগুন্টাম অবরোধ করলেন। রোম থেকে স্যাগুন্টাইনরা সহায়তা প্রত্যাশা করছিল। কিন্তু রোম এই লড়াইয়ে সরাসরি জড়াতে ইচ্ছুক না হওয়ায় অগত্যা তারা নিজেরাই শহর রক্ষার প্রস্তুতি নেয়।
রুক্ষ পার্বত্যভূমিতে অবস্থিত স্যাগুন্টাম প্রাকৃতিকভাবেই সুরক্ষিত। শহর রক্ষাকারী দেয়াল শুধুমাত্র সমতল একস্থানে কিছুটা নিচু ছিল। তবে এই দুর্বলতা স্যাগুন্টাইনরাও জানত বলে তারা এখানে তিনটি টাওয়ার নির্মাণ করে। কার্থেজের সেনারা এদিক দিয়ে বারবার দেয়াল ভাঙার প্রচেষ্টা চালাতে থাকে। একপর্যায়ে তারা দেয়ালের এক অংশ ভেঙে ফেলতে সমর্থ হয়। কিন্তু স্যাগুন্টাইন যোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। এই সুযোগে আবার স্যাগুন্টাইনরা আবার দেয়াল মেরামত করে ফেলে।
কয়েকবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তির পর হ্যানিবাল সিজ টাওয়ার ব্যবহার করেন। এবার কার্থেজের যোদ্ধারা দেয়াল ভেঙে শহরে ঢুকে পড়ে। উপায় না দেখে স্যাগুন্টাইনরা শান্তিচুক্তির আবেদন করে। হ্যানিবাল কঠোর শর্ত দেন যে, স্যাগুন্টামের অধিকৃত সমস্ত এলাকা তুর্দেতানিদের দিয়ে দিতে হবে, শহরের সব সোনা-রূপা তার হাতে তুলে দিতে হবে এবং বেঁচে থাকা নগরবাসীকে একবস্ত্রে কার্থেজের পছন্দ করা স্থানে চলে যেতে হবে।
চুক্তি স্বাক্ষরের আগেই স্যাগুন্টামের কিছু অভিজাত পরিবার তাদের সকল মূল্যবান সম্পদ আগুনে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে নিজেরা আত্মহত্যা করে। বিশৃঙ্খল এই পরিস্থিতিতে কার্থেজের সেনারা শহরে হত্যাযজ্ঞ চালায়। হ্যানিবালের নির্দেশে সমস্ত পুরুষ অধিবাসীকে হত্যা করা হয় এবং বেঁচে থাকা বাকি সবাইকে দাস হিসেবে কার্থেজিনিয়ানরা বিক্রি করে দেয়।
স্যাগুন্টাম তছনছ করে ফেলার পর রোমান প্রতিনিধিদল কার্থেজের কাছে হ্যানিবাল ও তার অনুসারীদের গ্রেফতার করে রোমের হাতে তুলে দেবার দাবী করে, নতুবা রোম যুদ্ধ ঘোষণা করবে বলে হুমকি দেয়। কার্থেজে তখন বারসিড পরিবারের জয়জয়কার। কাজেই কার্থেজের শাসকগোষ্ঠী রোমের সাথে যুদ্ধকেই হিসেবে বেছে নেয়। শুরু হয় দ্বিতীয় পিউনিক যুদ্ধ।
হ্যানিবালের ইতালি আগমন এবং সংঘর্ষের সূত্রপাত
হ্যানিবাল এক দুঃসাহসী পরিকল্পনা করলেন। তিনি ভাল করেই জানতেন ভূমধ্যসাগরে রোমান নৌবাহিনীর সাথে পাল্লা দেয়ার ক্ষমতা কার্থেজের এখন আর নেই। তাই রোম চাইলেই সমুদ্র পাড়ি দিয়ে সহজেই স্পেন বা আফ্রিকাতে হামলা করতে পারবে। রোমের ইচ্ছাও ছিল তেমন। এই উদ্দেশ্যেই রোম দুটি বাহিনী তৈরি করছিল। পাব্লিয়াস কর্নেলিয়াস সিপিওর নেতৃত্বাধীন দল রোমের মিত্র মেসালিয়ার সহযোগিতায় হামলা করবে স্পেনে, আর সিসিলিতে জড়ো হতে থাকা সেনারা টাইবেরিয়াস সেম্প্রনিয়াসের অধীনে সরাসরি কার্থেজের বিরুদ্ধে আফ্রিকাতে অভিযান চালাবে।
কিন্তু হ্যানিবাল চাইলেন শত্রুকে ইতালিতে, তার ঘরের উঠানে আক্রমণ করতে। এবং এজন্য সাগর পথে যাওয়া সম্ভব নয় বলে তিনি আল্পস পর্বতের দুর্গম পথ ধরে ইতালির উত্তরে রোমের নাকের ডগায় নেমে আসার কৌশল সাজালেন। তার এই চালে রোমের হিসাবনিকাশ এলোমেলো হয়ে যায়। তার লক্ষ্য ছিল রোম জয় করা নয়, বরং রোমান সেনাবাহিনীকে শোচনীয়ভাবে তাদের নিজেদের মাটিতে পরাস্ত করা। তার আশা ছিল এর মাধ্যমে রোমের সামরিক শক্তি খর্ব করে দেয়া সম্ভব হবে, যা তাদের অধীনস্থ নগর রাষ্ট্রগুলোকে বিদ্রোহ করতে প্রেরণা যোগাবে। এভাবে ইতালিতে রোমের একচ্ছত্র আধিপত্য নষ্ট করে দেয়া গেলে রোমান ফেডারেশনের পতন হবে এবং রোম কার্থেজের অনুকূলে শান্তিচুক্তি করতে বাধ্য হবে।
স্পেন ত্যাগের পূর্বে কার্থেজের উপনিবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হ্যানিবাল তার ভাই হাসড্রুবালের অধীনে সেনাদল নিযুক্ত করলেন। তার অধীনে ৫৭টি জাহাজের বহর দেয়া হলো, তবে এর মধ্যে ৩৭টি জাহাজ ছিল কার্যক্ষম। অন্যদিকে, আল্পসের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে হ্যানিবাল গুপ্তচর প্রেরণ করলেন। ২১৮-২১৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে তার প্রতিনিধিরা ফিরে এসে জানাল যে আল্পস পার হওয়া কঠিন, তবে অসম্ভব নয়। হ্যানিবালের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক আরেকটি সংবাদ তারা জানাল। পো নদীর অববাহিকায় বসবাসকারী অনেক গল জাতি, যেমন- বই এবং ইন্সাব্রেসরা রোমের উপর অসন্তুষ্ট। তারা রোমের বিরুদ্ধে লড়াই করতে মুখিয়ে আছে। কাজেই হ্যানিবাল যদি কার্থেজিনিয়ান বাহিনী নিয়ে ইতালিতে প্রবেশ করেন তাহলে তারাও তার দলে যোগ দেবে।
২১৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দের বসন্তে নিউ কার্থেজে শীতকালীন অবসর শেষ করে হ্যানিবাল তার বিরাট বাহিনী নিয়ে বের হয়ে এলেন। এই সেনাদলে ছিল ৯০,০০০ পদাতিক, ১২,০০০ ঘোড়সওয়ার, এবং ৩৭টি হাতি। এই বাহিনীর মূল শক্তি ছিল অশ্বারোহী সেনাদল, যার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নুমিডিয়ান যোদ্ধা। মূলত সেনাদলের এই অংশই ইতালিতে বারে বারে রোমান লিজিয়নকে পরাভূত করতে হ্যানিবালের চাবিকাঠি ছিল।
বিপদসংকুল যাত্রা
ইতালিতে প্রবেশ করতে হ্যানিবাল বেছে নিলে ঝুঁকিপূর্ণ আল্পসের রাস্তা। তার পরিকল্পনা ছিল স্পেন ও ফ্রান্সের মধ্যবর্তী পিরেনিজ পর্বতমালা অতিক্রম করে দক্ষিণ গলের রাস্তা ধরে আল্পসে পৌঁছান। সেখান থেকে পাহাড়ের মধ্যবর্তী রাস্তা ধরে ইটালির ভিতরে ঢুকে পড়া, যেখানে বন্ধু ভাবাপন্ন বই ও ইন্সাব্রেসদের সাহায্য পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা করছিলেন। তিনি জানতেন আল্পস পার হয়ে কার্থেজ বাহিনী যে ইতালিতে আসতে পারে এই চিন্তা রোমের মাথাতেই আসবে না।
২১৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দের বসন্তের শেষে বা গ্রীষ্মের শুরুতে শুরু হলে কার্থেজিনিয়ান বাহিনীর বিখ্যাত যাত্রা। পিরেনিজ পর্যন্ত রাস্তায় বিভিন্ন শত্রুভাবাপন্ন গোত্রকে পরাজিত করে হ্যানিবাল এগিয়ে গেলেন। পিরেনিজের কাছে এসে তিনি যখন পৌঁছলেন তখন যুদ্ধে হতাহত আর পলায়নকারী সেনাসদস্য মিলে তার বাহিনীর সংখ্যা নেমে এসেছে ৫০,০০০ পদাতিক আর ৯,০০০ ঘোড়সওয়ার সেনাতে, সাথে হস্তিবাহিনী।
পিরেনিজের বিপদজনক পথ পাড়ি দিতে সুবিধা হবে বিধায় হ্যানিবাল তার বাহিনীর খাদ্য বহনকারী অংশ সাথে নিলেন না। চলার পথ থেকেই প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহ করে নিতে থাকলেন। দক্ষিণ গলের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় বেশ কিছু বিরোধী গোত্র হ্যানিবালের উপর আক্রমণ করে, কিন্তু কেউই সুবিধা করে উঠতে পারেনি। এভাবে হ্যানিবাল রোন নদীর পশ্চিম তীরে এসে পৌঁছলেন। স্থানীয় গল উপজাতিদের বাধা অতিক্রম করে তিনি রোন পার হয়ে গেলেন।
এদিকে সিপিওর রোমান সেনাদল তখন স্পেনে আসার পথে মেসালিয়ার কাছাকাছি। সিপিও যখন খবর পেলেন হ্যানিবাল আগেই স্পেন ত্যাগ করেছেন, তখন তিনি তার বাহিনীর মূল অংশ তার ভাইয়ের হাতে দিয়ে নিজে ইতালিতে ফিরে গেলেন। ওদিকে হ্যানিবাল আল্পসের রুক্ষ পাহাড়ি পথ বেয়ে অগ্রসর হচ্ছিলেন। এখানে তার কাছে খবর আসলো যে, সামনের এক সংকীর্ণ রাস্তার দু’পাশে পাহাড়ের মাথায় স্থানীয় গোত্রের যোদ্ধারা ঘাঁটি করেছে হ্যানিবালের সৈনিকদের অ্যামবুশ করবে বলে। তবে হ্যানিবাল এটাও জানতে পারলেন যে, তারা বিশ্বাস করে- এই অঞ্চল অপরিচিত হওয়ায় কার্থেজিনিয়ানরা রাতে এই পথ পার হবার সাহস করবে না, তাই তারা অ্যামবুশ তুলে নিয়ে রাতের বেলা নিজেদের এলাকায় ফিরে যায়।
বাছাই করা লোক নিয়ে রাতের আঁধারে হ্যানিবাল শত্রুর ঘাঁটি দখল করে কার্থেজের সেনাবাহিনী পার করতে শুরু করলেন। এই সুযোগে স্থানীয় যোদ্ধারা চলে আসলে দেখতে পায় যে, তাদের শিবির বেদখল হয়ে গেছে। তারা সাথে সাথে কার্থেজের বাহিনীতে হামলা করে। তুমুল যুদ্ধের একপর্যায়ে হ্যানিবাল তার সঙ্গী সেনাদের নিয়ে পাহাড়ে উপর থেকে নেমে আসেন এবং স্থানীয় বাহিনীকে পরাজিত করেন। তবে এই যুদ্ধে কার্থেজের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল অনেক।
অসহনী ঠান্ডা, প্রতিকূল আবহাওয়া ও ক্ষুধা-তৃষ্ণায় জর্জরিত কার্থেজিনিয়ান সেনারা স্পেন থেকে রওনা করার পাঁচ মাস পর ইতালির গল অধ্যুষিত অঞ্চলে এসে পড়ল। এসময় হ্যানিবালের সাথে অবশিষ্ট ছিল ১২,০০০ আফ্রিকান ও ৮,০০০ স্প্যানিশ মিলিয়ে ২০,০০০ এর মতো পদাতিক আর ৬,০০০ সেনার অশ্বারোহী বাহিনী। স্থানীয় শত্রুভাবাপন্ন উপজাতিদের পরাজিত করে হ্যানিবাল রোম বিরোধী অন্যান্য গল, যেমন- বই ও ইন্সাব্রেসকে তার সেনাবাহিনীতে যুক্ত করতে চাইলেন। কিন্তু সেখানে রোমান গ্যারিসনের উপস্থিতিতে তারা শঙ্কিত থাকায় তিনি রোমান সেনাদলের মুখোমুখি হবার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন। তিনি জানতেন, রোমানদের একবার পরাজিত করতে পারলে পো নদীর অববাহিকায় বসবাসরত সমস্ত গল উপজাতি তার সাথে যোগ দেবে।