আর.এম.এস অলিম্পিক: টাইটানিকের ছায়া জাহাজের উপাখ্যান

বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকের কথা। কাঠের জাহাজের দিন তখন প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। ধাতুর তৈরি কাঠামো, কয়লাচালিত দানবীয় বয়লার আর সুবিশাল প্রপেলার-যুক্ত জাহাজ নির্মাণ তখন সবার মূল লক্ষ্য। কে কার চেয়ে বড় আকার আর বিলাসবহুল জাহাজ বানাতে পারবে তারই প্রতিযোগিতা সর্বত্র।

গ্রেট ব্রিটেনে হোয়াইট স্টার লাইন এবং কুনারড লাইন সেই প্রতিযোগিতা চালিয়ে আসছিল বহু বছর ধরে। ১৯০৬ সালে কুনারড লাইন তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে বড় দুটি জাহাজ লুসিটানিয়া এবং মৌরিটানিয়া নির্মাণ করে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যায়। প্রতিযোগিতায় জয়ী হতে মরিয়া হোয়াইট স্টার লাইন তাই প্রায় একই রকম দেখতে সুবিশাল তিনটি যাত্রীবাহী প্রমোদতরী নির্মাণের ঘোষণা দেয়। ইউরোপ-আমেরিকার মাঝে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দেবার উপযোগী তিনটি জাহাজের মধ্যে প্রথমটি ছিল এই অলিম্পিক, দ্বিতীয়টি টাইটানিক, এবং সর্বশেষটি ব্রিটানিক।

১৯০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে হারল্যান্ড এবং ওলফের দুটি জাহাজ কারখানায় অলিম্পিকের নির্মাণকাজ শুরু হয়। এর নির্মাণকাজ শুরু হতেই টাইটানিক নির্মাণের প্রস্তুতিও শুরু করে দেয়া হয়। ১৯০৯ থেকে ১৯১২ পর্যন্ত বলতে গেলে পাশাপাশিই নির্মাণ করা হয় অলিম্পিক আর টাইটানিক। দেখতে একেবারেই কাছাকাছি বিশাল এই জাহাজ দুটি নির্মাণে বিপাকে পড়তে হয় জাহাজ নির্মাণকারী কারখানা দুটিকে। তিনটি জাহাজ নির্মাণের জায়গা ব্যবহার করে তাদের দুটি জাহাজ বানাতে হয়। হোয়াইট স্টার লাইন ৩,০০০ শ্রমিকের পারিশ্রমিক হিসেবে তৎকালীন ৩ মিলিয়ন পাউণ্ড খরচ করে এই নির্মাণে। টাইটানিকের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবার আগেই ২০ অক্টোবর ১৯১০ সালে সমুদ্র অভিষেক ঘটে অলিম্পিকের।

তৎকালীন সময়ে অলিম্পিক ছিল সমুদ্রে চলাচলকারী সর্ববৃহৎ যাত্রীবাহী জাহাজ, এবং সেই সাথে মানুষের হাতে নির্মিত সবচেয়ে বড় জলযান। ৮৫২ ফুট দৈর্ঘ্য আর ৯২ ফুট প্রস্থের জাহাজটি তলা থেকে ছাদ পর্যন্ত উচ্চতায় ছিল ৬৫ ফুট। যদিও এক বছর পেরোতেই সবচেয়ে বড় জলযানের খেতাব অলিম্পিককে হারাতে হয় তারই ছায়া জাহাজ আরএমএস টাইটানিকের কাছে। দৈর্ঘ্যে ৩ ইঞ্চি খাটো আর ওজনে ১,০০০ টন কম হওয়ায় টাইটানিকের কাছে হেরে যায় সে।

Image Source: rms-olympic.com

প্রায় ২,৫০০ যাত্রী ধারণে সক্ষম জাহাজটি সত্যি ছিল সে যুগের জাহাজের ইতিহাসের এক অনন্য বিস্ময়। তিনটি আলাদা মানের যাত্রা সুবিধা ভোগ করতে পারত অলিম্পিকের যাত্রীরা। রাজসীক অলঙ্করণের চোখধাঁধানো সৌন্দর্যের সাথে জাহাজটিতে ছিল বেশ কয়েকটি খাবার ঘর, ধূমপান কক্ষ, পাঠাগার, ব্যায়ামাগার এবং বিশেষভাবে নির্মিত বাকানো সিঁড়ি। অলিম্পিক তার প্রথম যাত্রা শুরু করে ১৯১১ সালের ১৪ জুন তারিখে। সাউদাম্পটন থেকে শুরু নিউ ইয়র্কে পৌঁছতে সে সময় নেয় মাত্র ৫ দিন ১৬ ঘণ্টা। সেই সময় বিশাল এই জাহাজের পক্ষে এত অল্প সময়ে আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছানো ছিল রীতিমতো বিস্ময়কর ব্যাপার।

সাধারণ মানুষ আর সাংবাদিক মিলিয়ে প্রায় ৮,০০০ জন জড়ো হয় অলিম্পিকের প্রথমবারের মতো নিউ ইয়র্ক বন্দরে ভেরার দৃশ্য দেখার জন্য। অলিম্পিকের ফিরতি যাত্রার সময় তাকে বিদায় জানাতে বন্দরে উপস্থিত ছিল প্রায় ১০,০০০ মানুষ। অলিম্পিকের সেই ঐতিহাসিক প্রথম যাত্রায় অংশ নেন জাহাজের প্রধান নকশাকারী টমাস এন্ড্রুওস, হোয়াইট স্টার লাইনের অন্যতম পরিচালক ব্রুস ইস্মেয় এবং ক্যাপ্টেন ই. জে. স্মিথ। ই. জে. স্মিথ অলিম্পিকের প্রথম যাত্রায় যেমন ক্যাপ্টেন হিসেবে ছিলেন, তেমনি টাইটানিকের ঐতিহাসিক যাত্রাতেও তিনিই ক্যাপ্টেনের ভূমিকা পালন করেছিলেন। এন্ড্রুওস, ব্রুস এবং স্মিথ তিনজনই টাইটানিকের অসমাপ্ত সেই প্রথম যাত্রার অংশ ছিলেন। হাজারো যাত্রীর সাথে নকশাকারী টমাস এন্ড্রুওস এবং ক্যাপ্টেন স্মিথ সেই দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। একমাত্র ইস্মেয়ই দুঃসহ সেই দুর্ঘটনার স্মৃতি সঙ্গী করে বেঁচে ফেরেন।

প্রথম যাত্রা ঠিকঠাকভাবে শেষ করলেও দীর্ঘ কর্মজীবনে বহু ঘটনার সাক্ষী হয়েছে অলিম্পিক। যাত্রী পরিবহন শুরু করার মাসতিনেক পরেই প্রথমবারের মতো দুর্ঘটনার শিকার হয় সে। ১,৩১২ জন যাত্রী নিয়ে  নিউ ইয়র্কের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার ঘণ্টা দেড়েক পরই ঘটে এই বিপত্তি। নৌবাহিনীর জাহাজ এইচএমএস হক এর সাথে সংঘর্ষ ঘটে অলিম্পিকের। মাঝারি আকারের জাহাজ হকের সামনের অংশ দুমড়ে যায় সেই সংঘর্ষে। অলিম্পিকের ক্ষতির পরিমাণও খুব কম ছিল না। হক এর আঘাতে অলিম্পিকের কাঠামোয় দুটি গর্তের সৃষ্টি হয়। জলনিরোধক দুটি কম্পার্টমেন্টে পানি ঢুকে যাওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয় অলিম্পিককে। ধুঁকতে ধুঁকতে বন্দরে ফিরে আসতে সক্ষম হয় উভয় জাহাজই। প্রায় দু’মাস ধরে মেরামত শেষে আবারো সমুদ্রযাত্রার জন্যে প্রস্তুত হয় অলিম্পিক। তখনও পাশেই নির্মাণকাজ চলছে টাইটানিকের। মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু অংশ বানাতে বেশি লাগবে বলে টাইটানিকের জন্য নির্মিত অংশ জুড়ে দেয়া হয় অলিম্পিকে। এই দুর্ঘটনায় আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হলেও অলিম্পিক সবার মনে দৃঢ় বিশ্বাসের জন্ম দেয় যে, বড় আকারের জাহাজ কোনো দুর্ঘটনায় ডুবে যাবে না।   

Image Source: vocal.media

১৯১২ সালের এপ্রিলে যখন টাইটানিক তার ঐতিহাসিক যাত্রা আরম্ভ করে, তখন অলিম্পিক সাউদাম্পটনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে। ১৫ এপ্রিল প্রথম প্রহরে অলিম্পিকের রেডিওতে ধরা পড়ে টাইটানিকের সাহায্যের আবেদন। দুর্ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছুটা দূরে অবস্থান করলেও খবর পাওয়ার সাথে সাথে টাইটানিকের উদ্দেশ্যে রওনা হয় অলিম্পিক। কিন্তু কুনারড লাইনের অপর এক জাহাজ কার্পেথিয়া টাইটানিক থেকে কাছে থাকায় তারা প্রথম উদ্ধারকাজে অংশ নেয়।

কার্পেথিয়ার ক্যাপ্টেন এক অদ্ভুত কিন্তু বিচক্ষণ সিধান্ত নেন অলিম্পিকের ব্যাপারে। তিনি অনুরোধ করেন অলিম্পিককে দুর্ঘটনাস্থলে না আসতে। তার ধারণামতে, টাইটানিকের বেঁচে যাওয়া আতংকিত যাত্রীরা প্রায় একই রকম অলিম্পিককে দেখতে পেলে আরো আতংকিত হয়ে পড়বে। দুর্ঘটনার দু’ঘণ্টার মধ্যে টাইটানিকের কাছে পৌঁছে যায় কার্পেথিয়া এবং লাইফবোটে থাকা ৭০৫ জন যাত্রীকে উদ্ধার করে।

ভয়াবহ সেই ঘটনা পুরো বিশ্বকে নাড়িয়ে দেয়। জাহাজশিল্পে আসে ব্যাপক সংশোধন আর পরিবর্তন। অলিম্পিকের পুরো কাঠামতে নতুন করে প্রলেপের ব্যবস্থা করা হয়। পরিবর্তন আনা হয় অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জাতেও। লাইফবোটের পরিমাণ ২০ থেকে বাড়িয়ে ৬৪ করা হয় নিরাপত্তার খাতিরে।  

অলিম্পিক নতুনভাবে যাত্রী পরিবহনের কাজে নামলেও ততদিনে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দামামা বাজতে শুরু করেছে। শুরু থেকেই যুদ্ধে বেশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আরএমএস অলিম্পিক। ১৯১৪ সালের অক্টোবর মাসে এই.এম.এস ওডেইসাস নামের মিত্রপক্ষের ছোট একটি জাহাজ মাইনের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ২৫০ জন যাত্রীসহ শত্রু এলাকার মাঝে আটকা পড়ে। অলিম্পিক ওডেইসাসের যাত্রীদের উদ্ধার করে। সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্থ ওডেইসাসকে টেনে বিপদজনক এলাকা থেকে বাইরে নিয়ে আসার চেষ্টাও করে। কিন্তু সেই চেষ্টা শেষপর্যন্ত বিফল হয়, কারণ তিনবার টেনে আনবার চেষ্টার পর ওডেইসাস বিস্ফোরিত হয়ে সমুদ্রে ডুবে যায়।

১৯১৫ সালের মে মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধের বহরে অন্তর্ভুক্ত করা হয় অলিম্পিককে। অলিম্পিকের দায়িত্ব দেয়া হয় সৈন্য পরিবহন করার জন্য। এই কাজের উপযুক্ত করতে অলিম্পিকে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়। যাত্রী ধারণক্ষমতা বাড়ানোর জন্যে বিলাসবহুল বাড়তি অংশগুলো অপসারণ করে ফেলা হয়। ডেকে বসানো হয় বড় ক্যালিবারের আগ্নেয়াস্ত্র। ২,৫০০ যাত্রী ধারণক্ষমতার প্রমোদতরী পরিণত হয় ৬,০০০ সৈন্য ধারণে সক্ষম জাহাজে। কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র এবং গ্রেট ব্রিটেনের মধ্যে বিশ্বস্ততার সাথে সৈন্য পরিবহন করতে থাকে অলিম্পিক, যার কারণে তার নাম হয়ে যায় ‘ওল্ড রিলায়েবল’। নিজের কাজে আস্থাশীল হলেও বিশালাকৃতির কারণে সহজে শত্রুর চোখে পড়ে যাবার সম্ভাবনা দেখা দেয় অলিম্পিকের। এই সমস্যা দূর করতে অভিনব এক পন্থা বেছে নেয়া হয়। একে এমনভাবে রঙ করা হয় যাতে দূর থেকে দেখলে এর আকার, গতি কিংবা গন্তব্য সম্পর্কে কিছুই সহজে আন্দাজ না করা যায়।

Image Source: weibo.com

যুদ্ধের একেবারের শেষের দিকে এসে নিজের সেরা নৈপুণ্য দেখায় অলিম্পিক। ১৯১৮ সালের মে মাসে নিজেদের যাত্রাপথে সিসিলির কাছাকাছি একটি জার্মান ডুবোজাহাজের সন্ধান পান অলিম্পিকের ক্যাপ্টেন বার্টরাম হেইস। ডুবোজাহাজটি দেখতে পেয়ে ক্যাপ্টেন অদ্ভুত নির্দেশ দেন ইঞ্জিন রুমকে। সেই নির্দেশ ছিল, গতি বাড়িয়ে সরাসরি ডুবোজাহাজটির দিকে ছুটে যাওয়া! সমরাস্ত্রে সজ্জিত একটি ডুবোজাহাজের দিকে দানবীয় কোনো জাহাজের ছুটে যাওয়া নিঃসন্দেহে ছিল ভয়াবহ ব্যাপার। গোটা অলিম্পিককে ডুবোজাহাজের উপর তুলে দেন ক্যাপ্টেন। এতে ডুবোজাহাজের উপরের দিকে থাকা কননিং টাওয়ারে সরাসরি আঘাত হানে অলিম্পিক।

অর্ধনিমজ্জিত ডুবোজাহাজটি অলিম্পিকের বিশাল প্রপেলারের নিচে পড়ে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। ক্যাপ্টেন সেখানেই ক্ষান্ত হননি। সামুদ্রিক নীতিমালা অমান্য করে জার্মান ডুবোজাহাজ থেকে কোনো সৈন্যকে উদ্ধার করতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। পরবর্তীতে জানা যায়, ১০৩ নম্বর লেখা সেই ডুবোজাহাজটি আসলে অলিম্পিককে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে ওত পেতে ছিল। ডুবোজাহাজটি যখন অলিম্পিকের নজরে আসে তখন সেটি টর্পেডো ছোড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু কপাল খারাপ সেই ডুবোজাহাজের। কারণ, তখনই দেখা দেয় যান্ত্রিক গোলযোগ। যে কারণে টর্পেডো নিক্ষেপ তো দূরের বিষয়, নিজের জায়গা থেকে নড়তেও পারেনি সেটি। ২০০৮ সালে ডুবোজাহাজটির ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা হলে তাতে স্পষ্টভাবে দেখা যায় সেদিন কতটা মারাত্মক আঘাত হানতে পেরেছিল অলিম্পিক।

Image Source: Titanic.com

যুদ্ধ শেষে ১৯২০ সালের জুনে পুরনো কাজে ফিরে আসে অলিম্পিক। যুদ্ধ পরবর্তী সেই সময়টা ছিল বিশ্ব অর্থনীতির জন্য চরম সংকটময়। ‘দ্য গ্রেট ডিপ্রেশন’ নামে পরিচিত সে সময় অস্তিত্বের লড়াইয়ে টিকে থাকতে একসময়ের প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রতিষ্ঠান কুনার্ড লাইন আর হোয়াইট স্টার লাইন একীভূত হয়ে যায়। মিলিত সেই প্রতিষ্ঠানের অধীনেই কাজ অব্যহত রাখে অলিম্পিক। ত্রিশের দশকে এসে বিদায়ধ্বনি বাজতে শুরু করে তার। এমনিও সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে তখনকার আধুনিক জাহাজগুলোর তুলনায় অনেকটাই বিবর্ণ হয়ে গিয়েছিল অলিম্পিক। তার সাথের দুই জাহাজের মধ্যে টাইটানিক ডুবে যায় ১৯১২ সালে। অপর ছায়া জাহাজ ব্রিটানিক যুদ্ধাহত সৈনিক পরিবহনরত অবস্থায় মাইনের আঘাতে ডুবে যায় ১৯১৬ সালে।

১৯৩৪ সালের মে মাসে ঘটা দুর্ঘটনা অলিম্পিকের বিদায় আরো নিশ্চিত করে। কেপ কড নামের এক জায়গায় অলিম্পিকের আঘাতে ডুবে যায় একটি ছোট আকারের দিকনির্দেশনা দেবার জাহাজ। ঘন কুয়াশা ভরা রাতে নোঙর করে থাকা সেই জাহাজের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় অলিম্পিকের। বয়সে বুড়ো হয়ে গেলেও বিশাল অলিম্পিকের আঘাতে দুই টুকরো হয়ে ডুবে যায় জাহাজটি। সেখানকার কর্তব্যরত ১১ জন কর্মীর মধ্যে ৭ জন মারা যায় এই দুর্ঘটনায়। এর দায়ভার স্বভাবতই নিতে হয় অলিম্পিককে। মেরামত খরচ বেড়ে যাওয়া এবং সমসাময়িক জাহাজগুলোর তুলনায় যাত্রী পরিবহনের খরচ বেশি হওয়ায় একরকম বাতিল হয়ে পড়ে একসময়ের ওল্ড রিলায়েবল।

অবশেষে দীর্ঘ ২৪ বছরের কর্মজীবন শেষ করে অবসরে যায় জাহাজটি। ১৯৩৫ সালে কুনারড এবং হোয়াইট স্টারের সমন্বিত প্রতিষ্ঠান অলিম্পিককে বাতিল ঘোষণা করে এবং ভেঙে ফেলার জন্য বিক্রি করে দেয়। এক বছর সময় লাগে একসময়ের সবচেয়ে বড় এই জাহাজকে ভেঙে টুকরো করে ফেলতে। নিজের ছায়া জাহাজ টাইটানিকের মতো ইতিহাসে বিখ্যাত না হলেও অলিম্পিকের প্রাপ্তিও কম নয়। নিজের জীবনকালে আটলান্টিকের বুকে ২৫৭টি রাউন্ড ট্রিপ সম্পন্ন করে সে। ৪,৩০,০০০ যাত্রী পরিবহনের জন্যে মোট ১.৮ মিলিয়ন মাইল সমুদ্র পথ পাড়ি দেয় অলিম্পিক!

টাইটানিক সম্পর্কে আরও জানতে পড়তে পারেন এই বইগুলো:
১) হারিয়ে যাওয়া এবং খুঁজে পাওয়া টাইটানিক
২) কিংবদন্তির টাইটানিক

Related Articles

Exit mobile version