পরপর তিনবার ঘন্টা বাজালেন ফ্লিট। এরপর টেলিফোন করলেন সিক্সথ অফিসার জেমস মুডির কাছে।
“কেউ কি এখানে আছো?”
“হ্যাঁ। কি দেখতে পাচ্ছ তুমি?”
“আইসবার্গ। একদম সামনেই।”
মুডি তৎক্ষণাৎ মুরডকের কাছে ছুটে চললেন বার্তাটি পৌছে দেওয়ার জন্য। বার্তা শুনে মুরডক মুহুর্তের জন্য বরফের মত জমে গেলেন। কিন্তু ঝড়ের গতিতে চিন্তা চলছে মাথায়।
কোয়ার্টার মাস্টার রবার্ট হিচেনকে বললেন অতি দ্রুত জাহাজের দিক পরিবর্তন করতে। তিনি তাকে আকস্মিকভাবে বামে মোড় নেওয়ার নির্দেশ দিলেন এবং জাহাজটিকে সম্পূর্ণ উল্টাদিকে চালাতে বা বন্ধ করে দিতে বলেন। জাহাজের টেলিগ্রাফে এরকম একটি বার্তা গেল, “Full Astern”। কিন্তু এটা বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। কেন্দ্রীয় টার্বাইনকে এত দ্রুত বিপরীতমুখী করা সম্ভব না। এ কারণে জাহাজের রাডারের সামনের কেন্দ্রীয় প্রপেলারও গেল থেমে। জাহাজের রাডারটিও যে কারণে কিছুক্ষণের জন্য অচল হয়ে গেল এবং জাহাজটি পুরোপুরি ঘুরতে পারল না। কিন্তু হাতে আছে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মতো সময়।
ততক্ষণে অবশ্য অনেক দেরী হয়ে গেছে। অল্পের জন্য আইসবার্গটিকে আর এড়িযে যেতে পারলো না জাহাজটি। জাহাজের ডানদিক আইসবার্গের সাথে প্রচন্ড ঘষা খেয়ে চলতে থাকলো। টাইটানিকের প্রায় ৯০ মিটার অংশ জুড়ে চিড় দেখা দিল। জাহাজের সামনের অংশে তখন আইসবার্গ থেকে অনেক বরফখন্ড ভেঙে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। ক্যাপ্টেন স্মিথ পাথরের মতো শক্ত হয়ে তাকিয়ে আছেন সেদিকে।
ফায়ারম্যান ফ্রেডরিক ব্যারেট কাজ করছিলেন ৬ নাম্বার বয়লার রুমে। হঠাৎ তিনি বজ্রপাতের শব্দের মতো কিছু একটা শুনতে পেলেন যেন সেটা তার দিকেই এগিয়ে আসছে। দেখতে পেলেন টাইটানিকের পাশ চিড়ে দ্রুতবেগে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। পুরো বয়লার রুম দেখতে না দেখতেই প্লাবিত হয়ে গেল। তিনি এবং তার একজন সহকর্মী ৫ নাম্বার সেকশনের দরজার দিকে ছুটে চললেন। তারা ঢোকার পরপরই দরজা বন্ধ হয়ে গেল। বলা যায় অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন ফ্রেডরিক ব্যারেট।
প্রথম শ্রেণীর যাত্রীদের কাছে মনে হল সব কিছু যেন একটু কেঁপে উঠল হঠাৎ করে। তবে সংঘর্ষ যেখানে হয়েছে তার আশেপাশের লোকেরা বেশ ভালভাবেই ব্যাপারটি টের পেয়েছেন। তৃতীয় শ্রেণীর যাত্রীরা ধাক্কাটি টের পেয়েছেন সবচেয়ে বেশি। তারা আতংকিত হয়ে বেড়িয়ে এলেন কেবিন থেকে।
প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর যাত্রীদের কেউই অবশ্য ব্যাপারটিকে তেমন গুরুত্ব দিয়ে নিল না। কেউ কেউ জাহাজের ডেকের উপর আছড়ে পরা বরফের টুকরোগুলো নিয়ে খেলাধুলা শুরু করে দিলেন। জাকব অ্যাস্টর তার স্ত্রীকে গিয়ে বললেন, সামান্য একটু সমস্যা হয়েছে। কিছুক্ষণ পর জাহাজ আবার চলা শুরু করবে। জাহাজ তখন থেমে আছে।
ক্যাপ্টেন স্মিথ টাইটানিকের ডিজাইনের দায়িত্বে থাকা আর্কিটেক্ট থমাস এনড্রুসকে পরিস্থিতি সম্পর্কে বললেন। টাইটানিককে ভাসিয়ে রাখার জন্য এর মধ্যে ১৬টি পানি নিরোধক প্রকোষ্ঠ ছিল। এর ভিতর অন্ততঃ ৪টি প্রকোষ্ঠ পানিতে পূর্ণ হয়ে গেলেও জাহাজটি ভেসে থাকতে পারে। থমাস দেখলেন পাঁচটি প্রকোষ্ঠ ইতিমধ্যে পানিতে পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। এবং বাকিগুলোও দ্রুত প্লাবিত হতে শুরু করেছে। অর্থাৎ টাইটানিক নিশ্চিতভাবেই ডুবতে যাচ্ছে। আর হয়ত দুই ঘন্টার মতো ভেসে থাকতে পারবে সে।
১৫ এপ্রিল রাত ১২টা ৫ মিনিট। খুব দ্রুতই ডুবে যাচ্ছে টাইটানিক। এর বিভিন্ন অংশে দ্রুতবেগে প্লাবিত হয়ে যাচ্ছে। তৃতীয় শ্রেণীর কেবিনগুলোতে পানি ঢুকে পড়ছে। এরপর হঠাৎ করেই পানি ঢোকার পরিমান কমে গেল। এক ঘন্টা ধরে সামনের দিকে মাত্র ৫ ডিগ্রীর মতো কাত হলো টাইটানিক। সবাই মনে করতে লাগল উদ্ধারকারী জাহাজ আসার আগ পর্যন্ত হয় ভেসে থাকতে পারবে জাহাজটি। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই তাদের আশাভঙ্গ হতে লাগল। জাহাজের নিম্নাংশ আবার খুব দ্রুত পানিতে নিমজ্জিত হতে শুরু করেছে। জাহাজটি তখন ১০ ডিগ্রীর মতো কাত হয়ে গেছে খুব কম সময়ের মধ্যেই।
ক্যাপ্টেন স্মিথ লাইফবোট গুলো নামানোর আদেশ দিলেন এবং রেডিও অপারেটরদেরকে বিপদ সংকেত পাঠানোর নির্দেশ দিলেন। টাইটানিকের রেডিও অপারেটররা মোর্স কোডের মাধ্যমে CQD মেসেজ পাঠাতে লাগলেন। তাদের পাঠানো বিপদ বার্তাটি ছিল এরকম – “SOS SOS CQD CQD – MGY We are sinking fast passengers being put into boats MGY”। শোনা যায় টাইটানিক ডুবে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তারা বার্তা পাঠিয়েই যাচ্ছিল যাতে সাহায্যের জন্য কোনো জাহাজ এগিয়ে আসে। তারপর টাইটানিকের সাথে সাথে তারাও হারিয়ে গিয়েছিলেন চিরদিনের মতো।
জাহাজের কর্মচারীরা একে একে সব ক্রু এবং যাত্রীদের রুমের দরজায় ধাক্কা দিয়ে জেগে উঠতে বলছে যাতে তারা বোট ডেকের দিকে যায়। লাইফ বোটগুলোতে ততক্ষণে যাত্রী উঠানো শুরু হয়েছে। তবে শুধুমাত্র নারী এবং শিশুরা উঠতে পারছেন লাইফবোটে। লাইফবোট পূর্ণ হয়ে যেতেই সেগুলো দড়ি দিয়ে পানিতে নামানো হচ্ছে।
বেনজামিন গগেনহেমকে ধাক্কা দিয়ে জাগিয়ে তুললেন তার স্ত্রী। বললেন জাহাজের সাথে একটি আইসবার্গের ধাক্কা লেগেছে। ঘুম ঘুম অবস্থায় বেঞ্জামিন প্রথমে এই কথাকে অবশ্য তেমন গুরুত্ব দিয়ে নেননি। এ সময় রুম থেকে বেরিয়ে এলেন ইসিডর স্ট্রাউস এবং তার স্ত্রী আইডা স্ট্রাউস। নেভ্রাটিলকে দেখা গেল সাথে একজন লোক নিয়ে ছুটছেন তার কেবিনের দিকে যেখানে তার ছেলেরা আছে।
হ্যানাহ তুমাহ তার ছেলে এবং মেয়েকে নিয়ে উপরের ডেকে উঠতে চাইলেন, কারণ তৃতীয় শ্রেণীর পুরোটাই ততক্ষণে পানিতে ভেসে গেছে। কিন্তু জাহাজের কর্মচারীরা তাদের বাঁধা দিলেন। প্রায় সবগুলো গেইট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে যাতে তৃতীয় শ্রেণীর কোনো যাত্রী উপরে না উঠতে পারে। হ্যানাহ তখন ধারালো কিছু একটা দিয়ে তার হাত কেঁটে ফেললেন এবং তাদের জিজ্ঞেস করলেন প্রথম শ্রেণী এবং তৃতীয় শ্রেণীর যাত্রীদের রক্তের রঙ আলাদা কিনা।
প্রথম শ্রেণীর যাত্রী হওয়ার সুবাদে আইডা স্ট্রাউস পারতেন লাইফ বোটে উঠে যেতে। তার এক কর্মচারী মহিলা তখন লাইফ বোটে উঠেও গিয়েছে। আইডা যখন এক পা লাইফবোটে দিতে যাবে তখনই তার চোখ গেল স্বামী ইসিডরের দিকে। মুহুর্তে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ফেললেন তিনি। লাইফ বোট থেকে ফিরে গেলেন ডুবন্ত টাইটানিকে, তার স্বামীর কাছে। বললেন, “আমরা ৪০ বছর ধরে একসাথে আছি, জীবনের বাকিটা সময়ও একসাথেই থাকতে চাই।”
পুরো জাহাজটিতে তখন আবেগঘন পরিস্থিতি। স্ত্রী তার স্বামীকে শেষবারের মতো বিদায় জানিয়ে লাইফবোট উঠছেন। বাচ্চারা কান্নাকাটি করছে। তারা তাদের বাবাকে ছেড়ে কোনভাবেই লাইফবোটে উঠতে চাইছে না। বেঞ্জামিনসহ আরও অনেক মানুষ সাহায্য করছেন তাদেরকে লাইফবোটে উঠাতে।
এমন সময়ে মানুষের মনে সাহস যোগানোর দায়িত্ব নেয় টাইটানিক ব্যান্ড। ওয়ালিস হার্টলির নেতৃত্বে এ ব্যান্ডটি প্রথমদিকে ফার্স্টক্লাস লাউঞ্জে বাজাত। এখন তারা চলে এসেছে ডেকের সামনের অর্ধেকের কোথাও। শোনা যায় যাত্রীদেরকে ভয়শুন্য ও সাহসী করে তুলতে জাহাজটি ডুবার পূর্বমূহুর্ত পর্যন্ত তারা বাদ্য বাজিয়ে গিয়েছিল। টাইটানিকের সাথে সাথে ব্যান্ডটির সকল সদস্যও চিরতরে সমুদ্রে বিলীন হয়ে যায়।
নেভ্রাটিল কেবিনে গিয়ে তার ছেলেদের জাগিয়ে তুললেন। তারপর তাদেরকে পোশাক পরিয়ে বাইরে নিয়ে এলেন। তারপর একটি লাইফবোটে উঠিয়ে দিলেন তাদেরকে। তার আগে শেষবারের মতো দুই ছেলেকে বললেন, “তোমাদের মা যখন তোমাদেরকে খুঁজে পাবে তখন তাকে বলো আমি তাকে অনেক ভালোবাসতাম এবং এখনো ভালোবাসি। আমার কেন যেন মনে হয়েছিল সে একসময় আমার কাছে ফিরে আসবে। তারপর আমরা সবাই মিলে নতুন একটি শহরে সুখে বসবাস করতে থাকবো। কিন্তু তা আর হলো না।”
পরিস্থিতি যতই খারাপের দিকে যেতে লাগল জাহাজের লোকজন ততই আগ্রাসী ও বিশৃঙ্খল হয়ে উঠল। যারা যত বেশি স্বার্থপর হতে পারল, তারাই লাইফবোটে জায়গা পেল। ওই রাতটি সৎ মানুষদের জন্য খুব উপযুক্ত ছিল না। জোসেফ ইসময় তার স্ত্রীকে নিয়ে বোট ডেকে চলে এসেছেন। লাইফ বোটে উঠতে পারবে শুধু নারী এবং শিশুরা। কিন্তু তিনি সেসবের তোয়াক্কা না করে স্ত্রী ও তার সেক্রেটারীকে নিয়ে একটি লাইফবোটে উঠে যান। তার স্ত্রী এবং তারা তিনজনসহ ওই লাইফ বোটে মাত্র ১২ জন লোক ছিল, যদিও প্রতিটি লাইফবোট ৪০ জনকে বহন করতে পারতো। শোনা যায় জোসেফ ইসময়ের লাইফবোটটি যখন ধীরে ধীরে ডুবতে থাকা টাইটানিক থেকে দূরে সরে যাচ্ছিল, তখন তার সঙ্গে থাকা ক্রু চেয়েছিল ফিরে গিয়ে পানি থেকে কিছু লোককে উদ্ধার করে নিয়ে আসতে। কিন্তু গরডন তাকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়ে তা করা থেকে বিরত রাখেন। তিনি হয়ত ভয় পেয়েছিলেন এই ভেবে যে লাইফবোটে বেশী মানুষ উঠলে লাইফবোটটি ডুবে যেতে পারে। এটিই ছিল শেষ লাইফবোট যেটি সফলভাবে টাইটানিককে ছেড়ে যেতে পেরেছিল।
জ্যাকব অ্যাস্টরকে দেখা গেল নির্বিকারচিত্তে দাঁড়িয়ে সিগারেট ফুকছেন। তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে এইমাত্র লাইফবোটে উঠিয়ে দিয়ে এসেছেন। আইডা এবং ইসিডর হাত ধরে দাড়িয়ে আছেন ডেকের উপর। বেনজামিন গগেনহেম তার সহকারীকে নিয়ে প্রস্তুত জীবনের শেষ মুহুর্তটির জন্য। ক্যাপ্টেন স্মিথকে আশেপাশে কোথাও দেখা গেল না। নেভ্রাটিল দেখলেন তার ছেলেদের নিয়ে লাইফবোটটি ধীরে ধীরে দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে যাচ্ছে। তাদের সাথে আর কোনোদিন দেখা হবে না তার।
শেষ লাইফবোটগুলো টাইটানিকের অন্তিম দৃশ্যের সাক্ষী হলো। রকেট ছোড়া হলো জাহাজ থেকে যাতে শেষ মুহুর্তে কোনো সাহায্য পাওয়া যায়। এমন সময় একটু দূরে কিসের যেন আলো দেখা গেল। এটা কি চোখের ভ্রম? নাকি সত্যিই কোন জাহাজ ছিল সেখানে? এ প্রশ্নের উত্তর মেলেনি আজও।
প্রপেলারকে দৃশ্যমান করে দিয়ে জাহাজের পেছনের দিক উপরের দিকে উপরে উঠতে থাকলো এই সময়ে এবং শেষ পর্যন্ত দিকে জাহাজের সামনের দিকের ডেক পর্যন্ত পানি উঠে গেল। জাহাজের পেছনের দিক থেকে ধীরে ধীরে পানি আরো উপরের দিকে উঠতে থাকে। জাহাজের বৈদ্যুতিক সিস্টেম বন্ধ হয়ে গেল। চারদিকে তখন অন্ধকার।
টাইটানিক তখন মাঝখান দিয়ে দুই ভাগ হয়ে গেছে প্রচন্ড ভারের কারণে। জাহাজের সম্মুখভাগ তখন সম্পূর্ণরুপে পানির নিচে। জাহাজের পেছনের অংশ ধীরে ধীরে খাড়া হতে হতে একেবারে লম্বভাবে খাড়া হয়ে গেল। এমন সময় জাহাজের পিছনের অংশটুকু এমনভাবে কিছুক্ষণের জন্য ভেসে রইল যেন মনে হবে এই অর্ধেক অংশটুকু হয়ত এখন ভেসে থাকবে। লাইফবোটে থাকা যাত্রীরা এরকম একটি নিষ্ঠুর কৌতুকে আশায় বুক বাঁধলেন। কিন্তু তা আর হল না। টাইটানিকের পিছনের অংশটুকুও ডুবে যেতে শুরু করলো এক মিনিট পরেই।
রাত তখন ২টা ২০ মিনিট। আটলান্টিকের অতল গহবরে হারিয়ে গেল মানুষের অহংকার টাইটানিক। কয়েক মিনিট সময় লাগল জাহাজের পুরো অংশ প্রবল গতিবেগে আটলান্টিকের তলদেশে আছড়ে পড়তে। এ সময়টুকুর মধ্যে জাহাজটির সামনের দিকের অনেক অংশ প্রচন্ড চাপে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেছে। আটলান্টিকের তলদেশে প্রায় ৩ হাজার ৮০০ মিটার গভীরে পনের বর্গমাইল জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়লো চল্লিশ হাজার টন স্টীলের টাইটানিক।
একটু আগেও যেখানে ছিল বিশাল এক জাহাজে প্রাণচাঞ্চল্য, এখন তা পরিণত হল মৃত্যুপুরীতে। মাইনাস ২ ডিগ্রীর মতো তাপমাত্রার পানিতে অনেক যাত্রী তখনও মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করছে। তারা জাহাজের বিভিন্ন ভাঙা অংশ আকড়ে ধরে চেষ্টা করল ভেঁসে থাকার জন্য। কিন্তু বেঁচে থাকার সব প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হল তাদের। একের পর এক তারা ধীরে ধীরে মারা যেতে লাগল প্রচন্ড ঠান্ডায় জমে।
শেষবারের মতো পুরুষকন্ঠের একটি আর্তনাদ শোনা গেল – “My God! My God!”।
দেখতে দেখতে শেষ লাইফবোটটিও একসময় দূরে মিলিয়ে গেল।
পরিশিষ্ট
১৫ এপ্রিল রাত ৪:০০ টার দিকে টাইটানিকের যাত্রীদেরকে লাইফবোট থেকে উদ্ধার করে জাহাজ কার্পেথিয়া। টাইটানিক ডুবছে এরকম বার্তা পাওয়ার সাথে সাথেই কার্পেথিয়া দ্রুতগতিতে ঝুঁকিপূর্ণ পথে রওনা হয় সাহায্যের জন্য। যদিও অনেক দেরি হয়ে গেছে ততক্ষণে।
কার্পেথিয়া উদ্ধারকৃত যাত্রীদের নিয়ে ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক পৌছায়। ডকে তখন অপেক্ষা করে আছে প্রায় চল্লিশ হাজারের মতো উৎসুক মানুষ।
সবাই ততক্ষণে জেনে গেছে প্রায় ১৫০০ যাত্রী নিয়ে আটলান্টিকে সলিল সমাধি হয়েছে স্বপ্নের জাহাজ টাইটানিকের।
টাইটানিক সিরিজের আগের পর্বঃ
১) টাইটানিক নির্মাণের পেছনের ইতিহাস
২) টাইটানিকের প্রথম সমুদ্রযাত্রা: সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্ক
তথ্যসূত্র
১) en.wikipedia.org/wiki/RMS_Titanic
২) en.wikipedia.org/wiki/Sinking_of_the_RMS_Titanic
২) history.com/topics/titanic
৩) encyclopedia-titanica.org