স্লেশউইগ ছিল ড্যানিশ জাতির আবেগের জায়গা, যেখানে যুক্তিবুদ্ধি খাটত কম। ফলে লন্ডন চুক্তির বিপরীতে ডেনমার্কের জনগণ চাইত স্লেশউইগ আনুষ্ঠানিকভাবে ডেনমার্কের সরকারের নিয়ন্ত্রণে আসবে, হোলস্টেইন জাহান্নামে যাক। ওদিকে ইউরোপিয়ান পরাশক্তিগুলি স্লেশউইগের মতো ছোট একটি ডাচিকে নিয়ে ডেনমার্কের বাড়াবাড়ির কোনো কারণ খুঁজে পেত না। তাদের ধারণা ছিল লন্ডন চুক্তি এর চূড়ান্ত মীমাংসা করে দিয়েছে, কিন্তু পরবর্তীতে ডেনমার্কের একগুঁয়েমি তাদের মনোভাব পাল্টাতে বাধ্য করে।
স্লেশউইগ-হোলস্টেইন প্রশ্ন পরিণত হয়েছিল এমন জটিল এক সমস্যায়, যার মূল কারণ বুঝতে ইউরোপিয়ান কূটনীতিকদের মাথা গরম হয়ে যেত। জাঁদরেল রাজনীতিবিদদের জন্যেও এই সমস্যা ছিল চোরাবালির মতন। তৎকালীন ইংল্যান্ডের রানী ভিক্টোরিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা লর্ড পামারস্টোন একবার নাকি বলেছিলেন, “ইউরোপে তিনজন মাত্র লোক আছে যারা স্লেশউইগ-হোলস্টেইনের সমস্যা ঠিকভাবে বুঝতে পারে। একজন প্রিন্স আলবার্ট (রানী ভিক্টোরিয়ার স্বামী)। আফসোস, তিনি মারা গেছেন। আরেকজন এক জার্মান অধ্যাপক। হায়, তিনি তো পাগল হয়ে গেছেন। তৃতীয়জন আমি, কিন্তু আমি ভুলেই গেছি এই ঝামেলা কী নিয়ে।”
স্লেশউইগ-হোলস্টেইনের দ্বিতীয় যুদ্ধ বলা যায় জার্মান একীভূতকরণের পথে প্রথম লড়াই। সেদিকে যাবার আগে তৎকালীন প্রুশিয়ার সামরিক বাহিনীর দুটি বিষয়ে প্রতি একটু আলোকপাত করা দরকার, যা ইউরোপে তাদের অন্যান্য শক্তি থেকে কিছুটা হলেও এগিয়ে রেখেছিল।
প্রুশিয়ান জেনারেল স্টাফ
জেনারেল স্টাফ সামরিক ইতিহাসের একটি মাইলফলক। ১৮০৬ সালে প্রুশিয়া প্রথমবারের মতো অনানুষ্ঠানিকভাবে এর প্রচলন করে, ১৮১৪ সালে যা আনুষ্ঠানিক রূপ পায়। ১৮৫৭ সালে এর ভার নেন ফিল্ডমার্শাল হেলমুট ভন মল্টকে। তিনি ছিলেন চিফ অফ স্টাফ। ইউরোপের অন্য শক্তিগুলো তখন পর্যন্ত এরকম কোনো ব্যবস্থা ভালভাবে কার্যকর করতে পারেনি। জেনারেল স্টাফের কাজ ছিল বাহিনীর সকল শাখার মধ্যে সমন্বয় সাধন, কমান্ডারদের সাথে পরামর্শ এবং গুপ্তচরদের তথ্যের ভিত্তিতে একটি পূর্ণাঙ্গ সমরপরিকল্পনা তৈরি এবং এর সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিতকরন। জেনারেল স্টাফের আওতায় প্রুশিয়ান বাহিনী পরিচালিত হত সুশৃঙ্খলভাবে এবং জেনারেলরা সকলেই একটি সমন্বিত পরিকল্পনা অনুযায়ী যুদ্ধ চালাতেন।
ড্রেইস নিডল গান
প্রুশিয়ান সেনাবাহিনীতে উন্নত যুদ্ধাস্ত্র সরবরাহের অংশ হিসেবে ১৮৪১ সালে ড্রেইস নিডল গান প্রচলিত হয়। ১৮৪৮ থেকে সেনারা তা ব্যবহার করা শুরু করে এবং ১৮৬৪ সালের শুরুতে পুরো বাহিনীতে এটি ইনফ্যান্ট্রির প্রধান অস্ত্রে পরিণত হয়। এই বন্দুক ১৮৩৬ সালে তৈরি করেছিলেন প্রুশিয়ান অস্ত্র নির্মাতা নিকোলাস ভন ড্রেইস।
তৎকালীন ইউরোপিয়ান শক্তিগুলি মাস্কেট ছেড়ে ততদিনে ব্যবহার করছে মাযল লোডিং রাইফেল। এর লক্ষ্যভেদের ক্ষমতা ও দূরত্ব বেশ ভাল, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এই রাইফেল লোড করতে হতো নল বা মাযল থেকে। নল দিয়ে বারুদ ঠেসে ঢুকাতে সৈনিককে দাঁড়াতে হয়, কারণ শুয়ে বা বসে এই কাজ দুঃসাধ্য। যতক্ষণ সে দাঁড়িয়ে রাইফেলে গুলি ভরছে ততক্ষণ সে শত্রুপক্ষের সহজ টার্গেট। আবার এই রাইফেল থেকে খুব দ্রুত গুলিও ছোড়া যেত না।
দক্ষ একজন সৈনিক মিনিটে দুই বা তিনবার রাইফেল লোডিং শেষ করে গুলি করতে পারতেন। এই কারণে তখনকার যুদ্ধের অন্যতম একটি কৌশল ছিল “হা রে রে রে” করতে করতে শত্রুর দিকে ইনফ্যান্ট্রি চার্জ করা। শত্রু সুরক্ষিত অবস্থানে থাকলেও অভিজ্ঞ সেনানায়কের নেতৃত্বে ইনফ্যান্ট্রি চার্জ সফল করা সম্ভব ছিল, কারণ চার্জ প্রতিহত করার উপায় ছিল প্রবল গুলিবর্ষণে প্রতিপক্ষকে পিছু হটতে বাধ্য করা। মিনিটে দুই-তিনবার গুলি ছুড়লে তা সবসময় সম্ভব হত না। এজন্য বহু সৈন্যকে প্রস্তুত রাখতে হত যাতে একদলের পর আরেকদল গুলি ছুড়তে পারে।
ড্রেইস নিডল গান ছিল ব্রিচ লোডিং রাইফেল। তার মানে নল দিতে বারুদ না ভরে মাঝখানে থেকে ভেঙে রাইফেল লোড করা যেত। এ কাজ শুয়ে, বসে, দাঁড়িয়ে যেকোনোভাবেই সম্ভব। সমস্যা ছিল রাইফেলের লক্ষ্যভেদী ক্ষমতা আর দূরত্ব মাযল লোডিংয়ের থেকে কম, আবার অল্পতেই অস্ত্র গরম হয়ে যেত। কিন্তু মিনিটে গুলি ছোঁড়ার ক্ষমতা মাযল লোডিং থেকে পাঁচগুণ বেশি। ফলে অল্প সংখ্যক সৈন্যই বড় আকারের ইনফ্যান্ট্রি চার্জ ঠেকিয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখত। তবে তখন পর্যন্ত যুদ্ধের মাঠে এই অস্ত্র ব্যবহার হয়নি বলে কেউ তা বুঝতে পারেনি।
প্রুশিয়ানরা ড্রেইস রাইফেলের সমস্যা সমাধানের জন্য গবেষণায় প্রচুর অর্থ ঢেলছিল। সৈনিকেরা যাতে এই বন্দুক দিয়ে নিখুঁত লক্ষ্যভেদ করতে পারে সেজন্য নিয়মিত নিশানার প্রশিক্ষণ হত। তৎকালীন ইউরোপিয়ান পরাশক্তিগুলোর কাছে ইনফ্যান্ট্রির গুরুত্ব তখন কম, তারা নির্ভুল লক্ষ্যে কামান ছোঁড়ার উপর বেশি জোর দিচ্ছিল। প্রুশিয়ার সেই কৌশল থেকে একটু সরে এসে ইনফ্যান্ট্রি বাহিনীর আধুনিকায়নে অনেক সময় ব্যয় করে।
যুদ্ধের কারণ
১৮৫২ সালের লন্ডন চুক্তিতে স্লেশউইগ-হোলস্টেইন ডেনমার্কের অধীনে থেকে গেলেও ছিল স্বায়ত্তশাসিত। চুক্তিতে ডেনমার্ক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে এই দুই ডাচি একসাথে বিশেষ মর্যাদা সম্পন্ন অঞ্চল হিসেবে থাকবে এবং তাদেরকে সরাসরিভাবে ডেনমার্কের সরকারের অধীনে নিয়ে আসা হবে না। ফলে ড্যানিশ সংসদ ডেনমার্কের আইন পরিষদ হিসেবে কাজ করলেও দুই ডাচিতে ছিল তাদের নিজস্ব শাসনকাঠামো, কাগজে-কলমে যা উপদেষ্টা পরিষদ হলেও ডাচির মূল ক্ষমতা তাদের হাতেই ন্যস্ত ছিল।
জার্মান লিবারেলদের কথা স্লেশউইগ-হোলস্টেইন দুই-ই জার্মানির। অন্যদিকে ড্যানিশ লিবারেলরা জনগণের সাথে তাল মিলিয়ে বলত যে যা বলে বলুক স্লেশউইগ ডেনমার্কের জন্মগত অধিকার। ডাচির চরম রক্ষণশীল উপদেষ্টা পরিষদ কিন্তু পদে পদে ড্যানিশ লিবারেলদের বিরোধিতা করতে থাকে। ১৮৫৫ সালে ডেনমার্ক একটি সংবিধান প্রবর্তন করে, যেখানে রাজার অধীনে একটি অভিন্ন উপদেষ্টা পরিষদের কথা বলা হয়, যা ড্যানিশ সংসদ এবং দুই ডাচির পরিষদকে একত্রিত করবে। কিন্তু পরের বছর হোলস্টেইন এই সংবিধানের বিরুদ্ধে ভোট দেয়। ১৮৫৮ সালে জার্মান ফেডারেল ডায়েটও প্রস্তাবিত ড্যানিশ সংবিধানের বিরোধিতা করে।
এদিকে ১৮৫৭ সালের ড্যানিশ নির্বাচনে লিবারেলদের জয়ে সংসদ তাদের দিকে হেলে পড়ে। তারা তৎপর হলো এইডের নীতির আলোকে স্লেশউইগকে নিয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে। ইউরোপের তখন শক্তির মেরুকরণ পরিবর্তন হচ্ছে। দীর্ঘ কয়েক দশক পরে ক্রিমিয়ান যুদ্ধে পরাজিত রাশিয়ার প্রভাব তখন ক্ষয়িষ্ণু। আবার ফ্রান্সের দ্বিতীয় রিপাবলিকের সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন ইউরোপে পূর্বের প্রভাব ফিরে পাবার ছক কষছেন। প্রুশিয়াতে বিসমার্কের সামনে তখন প্রতিপক্ষ দুটি: জার্মান লিবারেল আর ফ্রেঞ্চ সম্রাট। স্লেশউইগ-হোলস্টেইন অধিকার করতে পারলে এক ঢিলে দুই পাখি মরবে, লিবারেলরা শান্ত হবে, আবার প্রুশিয়ার হাতও শক্তিশালী হবে।
স্লেশউইগ-হোলস্টেইন প্রশ্নে ড্যানিশ ও জার্মান জাতীয়তাবাদীরও সক্রিয় হয়ে উঠতে থাকে। ডাচির ব্যাপারে তাদের মনোভাব ছিল নিজ নিজ দেশের লিবারেলদের অনুরূপ। বিশেষ করে জার্মান জাতীয়তাবাদীরা দাবি করত স্লেশউইগ-হোলস্টেইন একটি স্বতন্ত্র জার্মান রাষ্ট্র পরিণত হোক। ১৮৬৩ সালের মার্চে লিবারেল অধ্যুষিত ড্যানিশ সংসদ নতুন একটি সংবিধান প্রণয়ন করল, যেখানে ডেনমার্ক আর স্লেশউইগকে একক রাষ্ট্র বলে দাবি করে হোলস্টেইনকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়, যা লন্ডন চুক্তির সরাসরি লঙ্ঘন। ১৩ নভেম্বর সংবিধান পাশও হয়ে যায়, অপেক্ষা ছিল রাজার স্বাক্ষরের।
রাজা সপ্তম ফ্রেডেরিক তখন ডেনভির্ক, ড্যানিশ প্রতিরক্ষা পর্যবেক্ষণ করতে গেছেন। জার্মানির সাথে আরেকটি লড়াই যে আসন্ন তা তিনি জানতেন। কিন্তু হঠাৎই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ১৫ তারিখে মারাই যান। লন্ডন চুক্তি মোতাবেক সিংহাসনে বসলেন নবম ক্রিশ্চিয়ান।
এদিকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে করে দিলেন অগাস্টেনবর্গের প্রিন্স ফ্রেডেরিক। তার পিতা অগাস্টেনবর্গের ক্রিশ্চিয়ান লন্ডন চুক্তিতে ড্যানিশ সিংহাসনের উপর দাবি তুলে নিলেও ফ্রেডেরিক তা অস্বীকার করেন। তিনি নিজেকে স্লেশউইগ-হোলস্টেইনের ডিউক ঘোষণা করে বসলেন। অত্যুৎসাহী জার্মান জাতীয়তাবাদীরা তাকে সমর্থন দিতে থাকে।
ড্যানিশ রাজা নবম ক্রিশ্চিয়ানের তখন শ্যাম রাখি না কুল রাখি অবস্থা। নভেম্বরের সংবিধান মেনে নেয়া মানে ড্যানিশ জনগণকে শান্ত করা। কিন্তু একইসাথে এর মধ্য দিয়ে জার্মানির শত্রুতা ডেকে আনা হবে। তিনি জানতেন প্রথম স্লেশউইগ-হোলস্টেইন যুদ্ধের ফলাফল ডেনমার্কের পক্ষে আসার একমাত্র কারণ ইউরোপিয়ান পরাশক্তিগুলোর সমর্থন। কিন্তু এই সংবিধান অনুমোদন করলে তারাও আর ডেনমার্ককে সাহায্য করবে না।
রাজার গড়িমসিতে জনতা ক্ষেপে গেল। জাতীয়তাবাদীদের উস্কানিতে কোপেনহেগেনে বিশাল গণ্ডগোল লেগে যাবার উপক্রম। রাজপ্রাসাদের সামনেও বিক্ষুব্ধ লোকজন জড়ো হয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ক্রিশ্চিয়ান সংবিধানে স্বাক্ষর করে স্লেশউইগকে অভিন্ন ডেনমার্কের অংশে পরিণত করেন। এদিকে জার্মান ফেডারেল ডায়েটে তখন তুমুল তর্কবিতর্ক চলছিল। সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য প্রিন্স ফ্রেডেরিকের দাবি সমর্থন করছিলেন। তার স্বপক্ষে সশস্ত্র হস্তক্ষেপে তারা রাজি। অস্ট্রিয়া আর প্রুশিয়া ফ্রেডেরিকের বিরুদ্ধে, তারা চায় লন্ডন চুক্তির পুনঃপ্রয়োগ। শেষ পর্যন্ত এক ভোটের ব্যবধানে তাদের কথাই থাকল।
১২,০০০ সেনার একটি জার্মান কনফেডারেট বাহিনী ২৩ ডিসেম্বর হোলস্টেইনে অবস্থান নেয়, তবে তারা এইডের নদী পার হয়ে স্লেশউইগে প্রবেশে বিরত থাকে। স্লেশউইগে প্রবেশ মানে ডেনমার্কের সাথে যুদ্ধ, তাই অস্ট্রিয়াও ইতস্তত করছিল। পর্দার আড়ালে বিসমার্ক অস্ট্রিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বার্নহার্ড রেশবাখকে রাজি করালেন এই কাজে। তিনি রেশবাখকে বললেন ডেনমার্ককে সমুচিত জবাব না দিলে দুই দেশেরই জাতীয়তাবাদীদের হাতে গণ্ডগোলের অস্ত্র তুলে দেয়া হবে। আর তারা যদি ডেনমার্ককে নতি স্বীকারে বাধ্য করতে পারেন তাহলে জার্মানিতে অস্ট্রো-প্রুশিয়ান প্রাধান্যের উপর কেউ কথা বলতে সাহস পাবেনা। তিনি এটাও জুড়ে দিলেন যে তৃতীয় নেপোলিয়ন ইতোমধ্যে প্রুশিয়াকে জানিয়েছেন তিনি স্লেশউইগ-হোলস্টেইনের জার্মান রাষ্ট্রে অন্তর্ভুক্তি সমর্থন করেন। প্রয়োজনে ফ্রান্স তাকে সহায়তা করবে। রেশবাখ ঘরের আঙিনায় কিছুতেই ফরাসি উপস্থিতি মেনে যে নেবেন না তা বিসমার্ক বিলক্ষণ জানতেন।
প্রুশিয়া এবং অস্ট্রিয়া ঘোষণা দিল তারা লন্ডন চুক্তি অক্ষুন্ন রাখতে চায়, যেজন্য তাদের বাহিনী স্লেশউইগে অবস্থান নেবে। তবে এই কাজ তারা করবে ইউরোপিয়ান শক্তি হিসেবে, জার্মান ডায়েটের অংশ হিসেবে নয়। ফলে ১৮৬৪ সালের জানুয়ারিতে অস্ট্রিয়া আর প্রুশিয়ার পক্ষ থেকে আলাদা আলাদা চরমপত্র কোপেনহেগেনে এসে পৌঁছে। তারা পূর্ববর্তী বছরের সংবিধান বাতিলের দাবি জানায়। নিজেদের সামরিক শক্তিতে অতিরিক্ত আস্থাশীল ড্যানিশ সংসদ চরমপত্র প্রত্যাখ্যান করল। যুদ্ধ এড়াবার আর কোনো পথ খোলা রইল না।