ডাক্তার শব্দটির প্রতিশব্দ কী? এ প্রশ্নটি জিজ্ঞেস করলে এর উত্তর কারো কাছে হবে চিকিৎসক, কারো কাছে নির্ভরতা, আবার কারো কাছে ত্রাতা। এমন একটি দৃশ্য কল্পনা করুন, যেখানে জীবন রক্ষার অপর নাম বিভীষিকা। আর সেখানে মৃত্যুর মাঝে পাওয়া যায় মুক্তির স্বাদ, জীবনের জয়গান। কী অদ্ভুত এবং করুণ, তা-ই না?
অথচ এমনই এক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন জিসেলা পার্ল, পেশায় গাইনী বিশেষজ্ঞ। অসউইৎজ কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্পে কুখ্যাত জোসেফ মেন্ডেলের অধীনে ডাক্তার হিসেবে কাজ করতে বাধ্য এই ইহুদী নারী নিজের জীবন বাজি রেখে বন্দীদের সেবা করে গিয়েছেন। অন্যান্য ডাক্তারদের সাথে তার পার্থক্য হলো, ক্যাম্পের বন্দী গর্ভবতী নারীদের প্রাণরক্ষার তাগিদে অত্যন্ত কঠিন এক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। মেন্ডেলের হাতে করুণ পরিণতি থেকে বাঁচাতে নিজ হাতে তাদের গর্ভপাত করাতেন তিনি।
১৯০৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন এই হাঙ্গেরিয়ান চিকিৎসক। ছোটবেলা থেকে জ্ঞান আহরণে অত্যন্ত আগ্রহী ছিলেন জিসেলা। ১৬ বছর বয়সে একমাত্র ইহুদী ছাত্রী হিসেবে সেকেন্ডারি স্কুল পাশ করেন। এ সময় তার চিকিৎসাশাস্ত্রের প্রতি আগ্রহ জন্মায়। মেধাবী জিসেলা বাবার কাছে তার ইচ্ছার কথা জানালে প্রথমে তিনি রাজি হননি, কারণ তিনি আশঙ্কা করছিলেন পাছে যদি চিকিৎসাবিদ্যার দরুন জিসেলা ইহুদী ধর্ম থেকে সরে যান।
জিসেলা তখন হতাশ হলেও দমে যাননি। আরো কয়েক মাস পর আবারো বাবার কাছে নিজের আগ্রহের কথা পেশ করেন। বাবার দেয়া এক প্রার্থনার বই হাতে নিয়ে তিনি বলেন, “ জীবনে যেখানে যাওয়া হোক, যেকোনো পরিস্থিতি হোক না কেন, এই বইয়ের উপর শপথ করে বলছি, মৃত্যুর আগপর্যন্ত আমি একজন সৎ এবং ভালো ইহুদী হিসেবে বেঁচে থাকবো।”
এবার মেয়ের ইচ্ছার কাছে হার মানলেন বাবা, সম্মতি জানালেন জিসেলার স্বপ্নকে। এর কয়েক বছর পর জিসেলা ডাক্তার হিসেবে তার প্রথম উপার্জনের টাকা দিয়ে বাবার নাম খোদাই করা একটি প্রার্থনার বই উপহার হিসেবে দেন তাকে। এরপর কেটে যায় আরো কয়েকটা বছর।
সময়টা তখন ১৯৪৪ সাল। জিসেলা পার্ল একজন গাইনী বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করছেন হাঙ্গেরিতে, বিয়ে করেছেন এক সার্জনকে। স্বামী, দুই সন্তান এবং দুজনের বাবা-মা সহ একান্নবর্তী পরিবার নিয়ে বাস করছেন এক ইহুদী পল্লীতে। সাজানো গোছানো সংসার নিয়ে সুখেই ছিল জিসেলা ও তার পরিবার। কিন্তু এই সুখ আর বেশিদিন টিকলো না, মুহূর্তের মধ্যে তছনছ হয়ে যায় তাদের জীবন।
সে বছরের মার্চ মাসে গেস্টাপোর কাছে ধরা পড়ে যান হাঙ্গেরিয়ান এই চিকিৎসক, তার স্বামী, কিশোর পুত্র, তার বাবা-মা সহ তার পুরো পরিবার। শুধু বেঁচে যায় তার ছোট মেয়েটি, যাকে কিনা এক পরিচিত অন্য ধর্মের পরিবারের সাথে রাখা হয়েছিল।
ধরা পড়ার পর জিসেলা এবং তার পরিবারকে পাঠানো হয় অসউইৎজ ক্যাম্পে। ক্যাম্পে নারী-পুরুষদের আলাদা করার সময় শেষবারের মতো আলিঙ্গন করেন তার বাবা ও স্বামী-সন্তানকে। এরপর তাদের সাথে আর কোনোদিন দেখা হবে না জিসেলার। অদূর ভবিষ্যতে জিসেলার কিশোর পুত্র অসউইৎজ ক্যাম্পের গ্যাস চেম্বারে মৃত্যুবরণ করবে আর ক্যাম্প মুক্ত হবার অল্প কিছুদিন আগে পিটিয়ে হত্যা করা হবে জিসেলার স্বামীকে।
অসউইৎজ ক্যাম্পের এসএস ক্যাপ্টেন হিসেবে কর্মরত ছিলেন কুখ্যাত জার্মান ডাক্তার জোসেফ মেঙ্গেল। প্রথমে মেঙ্গেল জিসেলাকে জার্মান সেনাদের জন্য রক্তদানে ক্যাম্পের বন্দীদের উৎসাহিত করা এবং আহত বন্দীদের চিকিৎসা প্রদানে কাজে লাগালেও পরবর্তীতে যখন তিনি জানতে পারেন যে জিসেলা একজন গাইনী চিকিৎসক, তখন তাকে অন্যভাবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন। জিসেলাকে আদেশ দেয়া হয় ক্যাম্পের কোন বন্দী গর্ভবতী হয়েছে তা জানাতে। মেঙ্গেল জানান, গর্ভবতী নারীদের জন্য আলাদা ক্যাম্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যেখানে তারা যথাযথ পুষ্টি এবং সেবা পাবে।
মেঙ্গেলের এ কথা শোনার পরে অনেক গর্ভবতী নারী স্বেচ্ছায় মেঙ্গেলকে জানায় সুবিধার আশায়। কিন্তু তারা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি তাদের জন্য কী অপেক্ষা করছিল।
এখানে মেঙ্গেল সম্পর্কে একটু বলে রাখা ভালো। জোসেফ মেঙ্গেল ছিলেন মানুষের উপর বিভিন্ন পরীক্ষা এবং নির্যাতনের জন্য কুখ্যাত। ক্যাম্পের বন্দীদের উপর নিষ্ঠুর সব পরীক্ষা চালাতেন এই জার্মান ডাক্তার। অসউইৎজ ক্যাম্পে যমজ শিশুদের উপর পরীক্ষা ছাড়াও গর্ভবতী নারীদের উপর নির্যাতনের কথাও পরবর্তীতে পৃথিবী জানতে পারবে।
আলাদা সুবিধার আশা দেখিয়ে যে ক্যাম্পে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তা ছিল আদতে আরেকটি মৃত্যুকূপ। সেখানে তাদের উপর চালানো হতো নানা ধরনের পরীক্ষা এবং নির্যাতন, যার একটি ছিল ব্যবচ্ছেদকরণ টেবিল। এ টেবিলের উপর এই হতভাগ্য নারীদের বেঁধে কোনোরূপ এনেস্থেশিয়া ছাড়াই জ্যান্ত ব্যবচ্ছেদ করা হতো। তারপর নির্যাতন শেষে মা ও অনাগত সন্তানকে ছুড়ে ফেলা হতো জ্বলন্ত চুল্লিতে।
বীভৎস এবং ভয়ংকর এই পরিণতির কথা জানার পর জিসেলা পার্ল হতভম্ব হয়ে যান। কীভাবে গর্ভবতী নারীদের বাঁচানো যায় তা নিয়ে চিন্তা করতে থাকেন তিনি। একটি নির্দিষ্ট সময় পর গর্ভবতী নারীদের লুকিয়ে রাখা যাবে না। তাই লুকিয়ে তাদের শিশু জন্মদান করালেও যদি নাৎসি ডাক্তাররা টের পায় তাহলে ব্যারাকের সকলকে হত্যা করা হবে। আবার অন্যদিকে যদি তিনি মেঙ্গেলের হাতে তাদের তুলে দেন তাহলে তাদেরকে অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হবে। এ ছিল এক উভয় সংকট।
নৈতিক দায়িত্ব এবং জীবন রক্ষা করা- এই দুইয়ের মধ্যে হিসাব নিকেশ করে এক সিদ্ধান্তে উপনীত হন জিসেলা। যদিও সেটা তৎকালীন সামাজিক মূল্যবোধ এবং চিকিৎসাশাস্ত্রের বিরুদ্ধে যাচ্ছিল, তারপরও সবকিছু বিবেচনা করে তিনি এই নারীদের গর্ভপাত করানোর সিদ্ধান্ত নেন।
খুব অল্প যন্ত্রপাতি দিয়ে, কোনো জীবাণুনাশক ছাড়া, ব্যথা কমানোর কোনো ওষুধ ছাড়াই ব্যারাকের মধ্যে লুকিয়ে কোনোমতে গর্ভপাত করাতেন জিসেলা।
“শতবার আমি প্রিম্যাচিয়ুর ডেলিভারি করিয়েছি। শতবার আমাকে গর্ভপাত করাতে হয়েছিলো।”, জিসেলা নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, “কেউ কোনোদিনও জানবে না এই শিশুগুলোকে হত্যা করতে আমার কেমন লেগেছিলো। কিন্তু আমি নিরুপায় ছিলাম, এ কাজটা আমি না করলে মা ও শিশু দুজনকেই খুব নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হতো।”
যদি দেখা যেত যে ক্যাম্পে এমন এক নারী এসেছে যার সন্তান ধারণ করা বেশিদিনের হয়ে গেছে এবং তাকে গর্ভপাত করানোর আর সুযোগ নেই- এসব নারীর ক্ষেত্রে জিসেলা অ্যামনেয়োটিক থলিতে ছিদ্র করে নির্ধারিত সময়ের আগেই ডেলিভারি দিতে বাধ্য করতেন। এতে করে শিশুগুলো জন্মানোর অল্প সময়ের মধ্যে মৃত্যু হতো।
জিসেলা পার্লের রচিত “I Was a Doctor in Auschwitz” বইতে গর্ভধারণের একেবারে শেষ পর্যায়ে থাকা এক নারীর কথা বলা হয়েছে। জিসেলা লুকিয়ে তার ডেলিভারি করান এবং মা ও শিশুকে নিউমোনিয়ায় আক্রান্তদের স্থানে লুকিয়ে রাখেন। জিসেলা বলেন, “আমি চেয়েছিলাম শিশুটিকে বাঁচাতে। কিন্তু তার কান্না শুনলে ক্যাম্পের পাহারারত কর্মচারীরা আমাদের ধরে ফেলতো আর ব্যারাকের সবাইকে হত্যা করতো… আমি আর তাকে লুকিয়ে রাখতে পারছিলাম না।… আমি তার ছোট্ট, উষ্ণ দেহকে আমার হাতে নিলাম, তার কপালে একটা চুমু দিয়ে… নিজ হাতে তার গলা টিপে ধরলাম… এরপর তার ছোট্ট প্রাণহীন দেহটাকে বাইরে আগুনে পোড়ানোর জন্য রাখা লাশের স্তুপের মাঝে চাপা দিয়ে আসি।”
সেই সময়ের ভয়ংকর পরিস্থিতির মুখে তার যা করা উচিত ছিল, তিনি সেটাই করেছেন বলে মনে করতেন জিসেলা। তিনি এই অভিমতে আসেন যে, অসউইৎজ সহ অন্যান্য ক্যাম্পে একজন ইহুদী ডাক্তারের কাজ প্রাণ বাঁচানো নয়, বরং মৃত্যু ত্বরান্বিত করা।
শুধু গর্ভবতী নারী নয়, নাৎসি বাহিনীর নির্যাতনের শিকার অন্যান্য বন্দী নারীদেরও সেবা দিতেন তিনি। কোনো এনেস্থেশিয়া, ওষুধ এবং যন্ত্রপাতি ছাড়াই চাবুকের আঘাতে জর্জরিত এই হতভাগ্য মানুষদের ব্যথা কমানোর চেষ্টা করতেন। ব্যথা ভোলানোর জন্য তিনি তাদের সুন্দর গল্প বলতেন, এমন একদিনের কথা বলতেন যেদিন তারা সকলে আবারো গান গাইতে পারবেন। তার মুখে এই কথা চোখ বুজে শুনতেন ক্যাম্পের বন্দীরা, অস্ত্রোপচারের ব্যথা ভোলার চেষ্টা করতেন সেদিনের স্বপ্ন দেখতে দেখতে, যেদিন তাদের আর এই কষ্ট সহ্য করতে হবে না।
ক্যাম্পের বন্দীরা তার ভূমিকার জন্য ভালোবেসে তার নাম দেয় ‘অসউইৎজের দেবদূত’।
১৯৪৫ সালে রুশ বাহিনী ক্রমশ নিকটে চলে আসার কারণে জার্মানরা অনেকটা তাড়াহুড়ো করে বন্ধ করে দেয় একেকটা গ্যাস চেম্বার ও কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প। জিসেলা পার্লকে অসউইৎজ ক্যাম্প থেকে প্রথমে হামবুর্গ, পরবর্তীতে বার্গেন-বার্লসনে স্থানান্তরিত করা হয়। যুদ্ধশেষে যখন ক্যাম্পগুলো নাৎসিমুক্ত হয়, তখন জিসেলা বেরিয়ে পড়েন তার পরিবারকে খুঁজতে। মাসের পর মাস ধরে খুঁজতে থাকেন স্বজনদের। কিন্তু হায়, যে জিসেলা পার্ল ক্যাম্পের শত মানুষের জীবন বাঁচালেন, পরিবারের সকল সদস্যের মধ্যে ক্যাম্প থেকে বেঁচে ফিরতে পারলেন তিনি একাই! (যদিও পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন যে তার মেয়েও বেঁচে ছিল।)
পরিবার হারানোর বেদনা, ক্যাম্পের বিভীষিকা এবং ভয়ংকর পরিস্থিতিতে তার নেয়া সিদ্ধান্তের জন্য অপরাধবোধ- সবকিছু মিলিয়ে প্রচণ্ড মানসিক চাপে ছিলেন তিনি। আর সহ্য করতে না পেরে ১৯৪৭ সালে তিনি আত্মহননের চেষ্টা করেন, কিন্তু বেঁচে যান।
নাৎসি ডাক্তারদের সহায়তার অভিযোগে তাকে সন্দেহ করা হলে তার ঢাল হয়ে দাঁড়ায় ক্যাম্পের বন্দীদের জবানবন্দি, যাদের তিনি একসময় নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁচিয়েছিলেন।
সে বছরই হলোকাস্টে নিহত ৬ মিলিয়ন ব্যক্তির প্রতিনিধি হিসেবে ডাক্তার এবং অন্যান্য পেশার মানুষের সাথে মতবিনিময়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পা দেন জিসেলা পার্ল। সেখানে এলিনর রুজভেল্টের সাথে তার পরিচয় হয়। এ সময় তিনি জিসেলাকে বলেন, “নিজেকে কষ্ট দেয়া বন্ধ করুন, ডাক্তারি পেশায় ফিরে আসুন।”
১৯৫১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব লাভ করেন জিসেলা। এরপর তিনি নিউ ইয়র্কে চলে আসেন এবং সেখানকার মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে কাজ শুরু করেন বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ হিসেবে। পরবর্তীতে পার্ক এভিনিউতে তিনি তার নিজের প্র্যাক্টিস শুরু করেন। পুরো তল্লাটের সবচেয়ে গরীব ডাক্তার হলেও সর্বাধিক প্র্যাক্টিসের অভিজ্ঞতা হয় তার, কেননা তার রোগীরা ছিল সব অসউইৎজ এবং বার্গেন-বার্লসন ফেরত।
১৯৭৯ সালে তিনি তার মেয়ে এবং নাতির সাথে বাস করার জন্য ইসরাইলের হার্জলিয়া চলে যান, ১৯৪৪ সালে দেয়া এক প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে। চারদিনের যাত্রা শেষে অসউইৎজ ক্যাম্পে পৌঁছানোর পর যখন জিসেলাকে শেষবারের মতো আলিঙ্গন করেছিলেন তার স্বামী তখন তাকে তিনি বলেন, “আমাদের দেখা হবে একদিন… জেরুজালেমে।” বহু বছর আগের সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে তাই ইসরাইলে চলে যান এই হাঙ্গেরিয়ান চিকিৎসক এবং ১৯৮৮ সালে মৃত্যুর আগপর্যন্ত এখানেই বাকি জীবন কাটান।
১৯৪৮ সালে তার লেখা “I Was a Doctor in Auschwitz” বইটি ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ক্যাম্পগুলোতে নারীদের উপর চলা নির্যাতন সম্পর্কিত প্রথম দলিলগুলোর একটি। এর উপর ভিত্তি করে ২০০৩ সালে নির্মিত হয় প্রখ্যাত মিনি সিরিজ “Out of the ashes”।
ক্যাম্প থেকে বেঁচে ফেরার পর জিসেলা তার বাকি জীবনটা মানুষের সেবায় সঁপে দেন। ক্যাম্পে হত্যা করতে বাধ্য হওয়া একেকটি শিশুর জন্য শত শত শিশুর ডেলিভারি দেন তিনি, ৪৩ বছর ধরে।
প্রতিবারই ডেলিভারির শুরুতে তিনি করতেন সেই একই, ছোট এক প্রার্থনা, “হে ঈশ্বর, আপনার কাছে আমার পাওনা আছে। একটি তাজা প্রাণ, একটি নবজাতক শিশু।”
৪৩ বছরে জিসেলার হাতে জন্মানো শিশুর সংখ্যা কত, জানেন? ৩০০০!
Featured image: allthatsinteresting.com