১৮৮৫ সালের কথা। যুক্তরাষ্ট্রের শান্ত একটি শহর বেডফোর্ড হঠাৎ করে অশান্ত হয়ে উঠলো। বাজারের সরাইখানা থেকে শুরু করে ব্যস্ত অফিস আদালতের টেবিলেও সেই অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়লো। কর্মব্যস্ততাকে ফাঁকি দিয়ে সবাই গুঞ্জনে মেতে উঠলো। এই অস্থিরতার মূলে রয়েছে নতুন প্রকাশিত একটি পুস্তিকা। সেই সামান্য পুস্তিকার মাঝে এমন কী লুকিয়ে আছে যা হঠাৎ করে বেডফোর্ডের সাধারণ মানুষকে অস্থির করে তুললো? তা জানতে হলে আমাদের ঢুঁ মারতে হবে সেই পুস্তিকার ভেতর।
‘দ্য বিল পেপার’ শিরোনামে মাত্র তিন পাতার ক্ষুদ্র পুস্তিকাটি জুড়ে মুদ্রিত হয়েছে বেশ কয়েকটি খাপছাড়া সংখ্যা। লোকমুখে জানা গেলো, এই সংখ্যা কোনো সাধারণ আঁকিবুঁকি অংক নয়। বরং এর মাঝে লুকিয়ে আছে অঢেল গুপ্তধনের গোপন মানচিত্র। এই তথ্য জানা মাত্র, যে কারো চোখ লোভে চক চক করে ওঠার কথা। বিশেষ করে দিনরাত পরিশ্রম করা শ্রমিকরা যেন ব্যাপারটি লুফে নিলো। কাজের ফাঁকে অনেককেই দেখা গেলো হলুদ রঙের পেন্সিল হাতে নিয়ে কী যেন হিসাব করে যাচ্ছে আনমনে। ঐদিকে প্রকাশনীগুলোর বইয়ের তাকের পাশে ছোট একটি তাকে জায়গা করে নিলো বিলের গুপ্তধনের সেই রহস্যময় ধাঁধার বই। মুহূর্তের মধ্যে হাজার হাজার কপি বিক্রি হয়ে গেলো। পুরো শহর যেন মেতে উঠলো গুপ্তধন হাতিয়ে নেয়ার এক রোমাঞ্চকর নেশায়।
পাঠকরা নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন। অবাক হবারই কথা। কোনো আগাম সংকেত না দিয়েই কী এক আজগুবি গল্প ফেঁদে বসলাম! অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে, কী এই বিলের গুপ্তধন? এমন কত গুপ্তধনের গল্প শুনি। এর পেছনে হুমড়ি খেয়ে পড়ার যৌক্তিকতাই বা কোথায়? পাঠকদের সকল প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে আমাদের আরো পেছনে ফিরে তাকাতে হবে। ফিরে যেতে হবে আরো কয়েক বছর পেছনে, একদম গল্পের শুরুতে।
ভার্জিনিয়ার ভদ্রলোক থমাস বিল
পুস্তিকার নাম থেকে আমরা একজন মানুষের নাম পেয়ে থাকি। তিনি হলেন বিল। কে এই বিল? পুস্তিকার এই বিলের পুরো নাম থমাস জে বিল। থমাস বিল ছিলেন এক অভিযাত্রী দলের সদস্য। তিন সদস্য বিশিষ্ট এই অভিযাত্রী দল একদিন নিউ মেক্সিকো অঞ্চলে দৈবাৎ প্রায় ৬৫ মিলিয়ন ডলার অর্থের সমপরিমাণ স্বর্ণ এবং রূপা সম্বলিত গুপ্তধনের সন্ধান লাভ করেন। এই বিপুল পরিমাণ গুপ্তধন সরাসরি নিজেদের বাসস্থানে নিয়ে যাওয়া মোটেও সুবিধাজনক ছিল না। তার উপরে ডাকাত দলের ভয়ও ছিল। তাই তারা এক অভিনব উপায় বের করলেন।
থমাস বিলের বুদ্ধিতে তারা ভার্জিনিয়ার প্রায় হাজার মাইল বিস্তৃত এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে বিভিন্ন স্থানে সেই গুপ্তধন লুকিয়ে রাখলেন। পাহাড়ি অঞ্চলের গুহা, মাটির নিচে, কবরস্থানসহ বিভিন্ন স্থানে সেগুলো লুকিয়ে রেখে দিলেন তারা। কিন্তু সকলেই গুপ্তধন লুকিয়ে রাখার স্থানগুলোর অবস্থান বেশ ভালোভাবে মনে রেখেছিলেন। তারপর বিল সেই স্থানগুলোর নাম থেকে তৈরি করলেন দুর্বোধ্য বেশ কিছু সাংকেতিক সংখ্যা। তিন পাতার কাগজে বেশ সতর্কতার সাথে তারা সেই সংখ্যাগুলো লিপিবদ্ধ করলেন। সেই কাগজগুলো একটি বাক্সে বন্দী করে ১৮২২ সালে থমাস বিল শহরের প্রধান সরাইখানার ব্যবস্থাপক রবার্ট মরিসের নিকট আমানত রাখলেন।
মরিস বাক্সের ব্যাপারে কিছু জানতেন না। তবে তিনি বড্ড কৌতূহলী হয়ে উঠলেন। কিন্তু প্রিয় বন্ধুর প্রতি সম্মান জানিয়ে তিনি কখনো সেই বাক্স খুলে দেখেননি। ভার্জিনিয়া ছেড়ে বিল অন্যত্র যাওয়ার পর মরিসকে একটি পত্র প্রেরণ করেন। সেখানে তিনি মরিসকে বাক্সের অভ্যন্তরে লুকিয়ে থাকা কাগজ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য প্রদান করেন। বিল পত্রের শেষ উল্লেখ করেন, যদি তিনি ১০ বছরের মাথায় ফিরে না আসেন, তাহলে যেন মরিস পত্রের ধাঁধা সমাধান করে গুপ্তধন উদ্ধার করেন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, বাক্স আমানত দেয়ার পর থমাস বিল আর কখনো ফিরে আসেননি!
মরিস ১০ বছর পরেও বাক্স খুলে দেখেননি। এভাবে দেখতে দেখতে প্রায় ২০ বছর কেটে গেলো। শেষ পর্যন্ত মরিসের ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙে গেলো। তিনি বিলের আমানত রাখা বাক্স বের করে তালা খুলে ফেললেন। সাথে সাথে বেরিয়ে এলো সেই রহস্যময় সাংকেতিক নথি। লোভের কাছে পরাজিত হলেন মরিস। তিনি রাতদিন এই নথির রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করতে লাগলেন। কিন্তু বহু চেষ্টার পরও কোনো সুরাহা করতে পারেননি।
ব্যর্থতার গ্লানি ভুলতে শহরের বড় স্যালুনে গিয়ে হুইস্কি পান করতে লাগলেন তিনি। হুইস্কির নেশায় মাতাল লোকটি শেষপর্যন্ত জে বি ওয়ার্ড নামক এক বন্ধুর নিকট বিলের গুপ্তধনের কথা বলে ফেললেন। ওয়ার্ড ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন কোড এবং সংকেত সমাধান করতে পটু ছিলেন। তাই তিনি বেশ আগ্রহ নিয়ে বিলের সেই পাণ্ডুলিপিগুলো পরখ করতে থাকলেন। বিলের সেই বাক্সের ভেতর দুটো পান্ডুলিপি ছিল। একটির মাঝে বিল তার গুপ্তধন আবিষ্কারের ভ্রমণ সংক্রান্ত বিভিন্ন দিনলিপি সংকলন করেছিলেন। আর দ্বিতীয় পত্রে বিল তিনটি ভিন্ন ধরনের সংখ্যাভিত্তিক কোডের মাঝে গুপ্তধন প্রাপ্তির স্থানের নাম তুলে ধরেছেন। এই পত্রের শেষ অংশে তার অনুপস্থিতিতে গুপ্তধনের অংশীদারদেরও নাম উল্লেখ করা রয়েছে।
কিন্তু প্রায় একশত বছর ধরে চেষ্টা করার পরও কেউ বিলের সংকেত সম্পূর্ণরূপে ভেদ করতে না পারায় এখন পর্যন্ত এর হদিস পাওয়া যায়নি। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এখন পর্যন্ত এর উত্তরসূরিদের নামও জানা যায়নি, যা সাংকেতিকভাবে বিলের পাণ্ডুলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে। হয়তো বর্তমানে তাদের বংশধর কেউ বেঁচেও নেই। আরো একটি মজার ব্যাপার হচ্ছে, বিল তার পত্রে মরিসকে জানিয়েছিলেন, ১৮৩২ সালে সেইন্ট লুইসের এক বন্ধু মারফত তাকে পাণ্ডুলিপির তথ্য উদ্ঘাটনের জন্য একটি সমাধান লিপি প্রেরণ করা হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে মরিসের নিকট কেউই সমাধান লিপি নিয়ে আসেনি। সমাধান লিপির অপেক্ষায় ভার্জিনিয়ার হাজার হাজার রহস্যপিপাসু মানুষ সেদিন উন্মুখ হয়ে ছিল। কিন্তু আদৌ কি এর কোনো সমাধান আছে?
ওয়ার্ডের রহস্যভেদ
বিলের চিঠিগুলোর রহস্যভেদ করা খুব কঠিন হলেও একদম অসম্ভব কিছু না। কারণ সংখ্যার বিন্যাস দেখে বোঝা যাচ্ছিলো যে, সংখ্যাগুলো কোনো বিখ্যাত বই, পাণ্ডুলিপি কিংবা লিখিত সনদ থেকে নেওয়া হয়েছে। যদি কেউ সেই সুনির্দিষ্ট পাণ্ডুলিপিটি বের করতে সক্ষম হয়, সেক্ষেত্রে যে কেউ খুব সহজে সংখ্যার বদলে পাণ্ডুলিপি থেকে অক্ষর কিংবা শব্দ বসিয়ে পুরো সাংকেতিক চিঠিটি পুনরায় রচনা করতে পারবে। কিন্তু এখানেই যেন সব বিপদ! স্বয়ং ভার্জিনিয়ার লাইব্রেরি কিংবা বইয়ের গুদামগুলোতে ঢুঁ মারলেই হাজার খানেক বই খুঁজে পাওয়া যাবে।
তবে জে বি ওয়ার্ড নামক সেই ভদ্রলোক একদম হাল ছেড়ে দেননি। তিনি বহু গবেষণার পর একদিন বিলের দ্বিতীয় চিঠির রহস্যভেদ করতে সক্ষম হন। এই সংবাদ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে সবাই অবাক হয়ে যায়। সবাই ওয়ার্ডের বাড়িতে এসে জমায়েত হয়। তিনি অনেক বই পুস্তক ঘাঁটাঘাঁটির পরেও যখন কোনো সমাধান পাচ্ছিলেন না, তখন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত দলিল এবং পাণ্ডুলিপির মাঝে উত্তর খোঁজা শুরু করেন। তখন তার সামনে চলে আসে বিখ্যাত যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীনতা সনদ। ওয়ার্ড অবাক হয়ে আবিষ্কার করলেন, এর প্রতিটি শব্দের সাথে বিলের চিঠির সংখ্যাগুলো একদম খাপে খাপে মিলে যাচ্ছে। তিনি দ্রুত এর সম্পূর্ণ নতুন কপি রচনা করেন। যার বাংলা ভাবানুবাদ নিচে তুলে ধরা হলো:
“বিউফোর্ড চিমনি থেকে চার মাইল দূরে ব্রেডফোর্ড কাউন্টির একটি গোপন কুঠুরিতে আমি আমার অর্জিত সম্পদ লুকিয়ে রাখি। কুঠুরির অবস্থান মাটি থেকে ছয় ফুট গভীরে। এর মাঝে এক হাজার চৌদ্দ পাউণ্ড স্বর্ণ এবং তিন হাজার আটশত বারো পাউণ্ড রূপা ১৮১৯ সালের নভেম্বরে জমা করেছি। ১৮২১ সালে দ্বিতীয় কিস্তিতে নয়শত সাত পাউণ্ড স্বর্ণ এবং এক হাজার দুইশত আটাশি পাউণ্ড রূপা জমা করা হয়। কিছু রূপার বিনিময়ে সেইন্ট লুইজ থেকে মূল্যবান গয়না সংগ্রহ করা হয়েছিলো। যার মূল্য তের হাজার পাউণ্ড। কুঠুরির মাঝে লোহার ঢালার তৈরি বাক্সে পাথরের মসৃণ আবরণ দেয়া হয়েছে। প্রথম কাগজে এর অবস্থান সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা প্রদান করা হয়েছে, যা অনুসরণ করলে খুব সহজেই এর সন্ধান পাওয়া যাবে।”
গুপ্তধন নাকি মিথ্যা পণ?
একদল যখন বিলের সংখ্যা ধাঁধার পেছনে অন্ধের মতো ছুটে চলছে, তখন আরেকদল প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো, বিলের গুপ্তধনের সত্যতা কতটুকু? বিলের কাহিনীর মাঝে বেশ কিছু অসঙ্গতি এবং শক্ত প্রমাণের অভাবে অনেক বোদ্ধার মতে, এটি জে বি ওয়ার্ডের এক মিথ্যা নাটক ছাড়া আর কিছুই না। এত বিপুল পরিমাণ সোনাদানা কারো নজর এড়িয়ে সম্পূর্ণ গোপনীয়তা বজায় রেখে ঠিক কীভাবে হাজার মাইল জুড়ে বিস্তৃত এলাকায় মাটিচাপা দেয়া হলো, তা কারো বোধগম্য হচ্ছে না। জে বি ওয়ার্ড নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থে এই সম্পূর্ণ নাটক সাজিয়েছেন বলে ধারণা করেন অনেকেই।
তখন গুপ্তধন বিশ্বাসী দল থেকে পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়া হলো, বিলের গুপ্তধন মিথ্যা হওয়ার সত্যতা কতটুকু? বিলের গুপ্তধনকে মিথ্যা প্রমাণ করতে হলে এর বিরুদ্ধে আনা অসঙ্গতির অভিযোগকে বিভিন্ন যুক্তির মাধ্যমে প্রমাণ ব্যতিরেকে কেউই তাদের তত্ত্ব মেনে নেবে না। তাই বিলের গুপ্তধন মিথ্যা হওয়ার সম্ভাবনা যতটুকু, তা সত্য হওয়ার সম্ভাবনাও ঠিক ততটুকু।
ক্রিপ্টোগ্রাফার জিম গিলোগ্লি ১৯৮৯ সালে তার বিখ্যাত অনুচ্ছেদ ‘A Dissenting Opinion‘-এ বিলের গুপ্তধনের অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরেন। এর পূর্বে ১৯৮২ সালে ভাষাবিদ জো নিকেল ভার্জিনিয়া ম্যাগাজিনে বিলের গুপ্তধনের সত্যতার বিরুদ্ধে কিছু যুক্তি প্রদান করেন। জে বি ওয়ার্ডের ১৮৮৫ সালের পুস্তিকায় বিলের দ্বিতীয় চিঠির সমাধানে তিনি বেশ কিছু শব্দ ব্যবহার করেন যা বিলের চিঠি রচনার সময়ে ব্যবহৃত হতো না। এছাড়া ব্যাকরণগত দিক থেকে তা তৎকালীন ভাষারীতির সাথে মানানসই ছিল না।
কিন্তু তারপরও বিল গুপ্তধন একেবারে মিথ্যা প্রমাণ করা যায়নি। কারণ বিলের চিঠির বেমানান শব্দগুলো তখন বিভিন্ন অঞ্চলে আঞ্চলিকভাবে ব্যবহার করা হতো না, তা শক্তভাবে প্রমাণ করা যায়নি। তবে সবচেয়ে বড় অসঙ্গতি যেন থমাস জে বিলকে নিয়েই। কে এই বিল? এই প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট কোনো উত্তর নেই। কারণ থমাস বিলকে সরাসরি প্রত্যক্ষ করা মানুষের সংখ্যা নিতান্তই কম। বিলের ভাষ্যমতে, তিনি সান্তা ফে থেকে ৩০০ মাইল উত্তরে নিউ মেক্সিকো অঞ্চলে গুপ্তধনের সন্ধান লাভ করেছিলেন। যার সিংহভাগ ছিল স্বর্ণ এবং রূপা। কিন্তু ভূতাত্ত্বিকদের তথ্যানুযায়ী, এই অঞ্চলে সোনার খনি পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।
মেল ফিশারের অনুসন্ধান
যুক্তিবাদীদের নিকট বিলের গুপ্তধন বানোয়াট হলেও পৃথিবীর বিভিন্ন বিখ্যাত ক্রিপ্টোগ্রাফারদের নিকট বিলের গুপ্তধন এক অমীমাংসিত ধাঁধা। এদের দলে সবার প্রথমে যার নাম উঠে আসবে, তিনি হচ্ছেন মেল ফিশার। আতোচা অঞ্চলের একটি ডুবে যাওয়া জাহাজের গুপ্তধন সন্ধানে তিনি প্রায় ১৬ বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছিলেন। গুপ্তধনের গন্ধ পেলেই নাকি লোকটা ঝাঁপিয়ে পড়েন নতুন উদ্যমে। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে তিনি মনে মনে বলেন, “আজই সেই দিন, যেদিন আমি সফলতা পাবো”।
এই মর্মে বিশ্বাসী ফিশার ১৯৮৫ সালের ২০ জুলাই ১৬২২ সালের ডুবন্ত জাহাজের গুপ্তধন আবিষ্কার করতে সক্ষম হন। এমন আত্মবিশ্বাসী মানুষের নিকট বিলের গুপ্তধন মিথ্যা হতে পারে না। তিনি ১৯৮৯ সালের বিলের গুপ্তধন অনুসন্ধানে বের হন। যদিও তিনি তেমন কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারেননি, তবে তিনি বিভিন্ন যুক্তির মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন, বিলের গুপ্তধন বানোয়াট নয়। বরং তা লুকিয়ে আছে ভার্জিনিয়ার ভূগর্ভে। ১৯৯৮ সালে মেল ফিশারের মৃত্যু ঘটলে এর অনুসন্ধানের কাজে ভাঁটা পড়ে। তাই আজও বিলের গুপ্তধন সকলের অধরা রয়ে গেছে।
পৃথিবীর বুকে হাজারো রহস্য লুকিয়ে রয়েছে। এর মাঝে বিলের গুপ্তধন অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে বিভিন্ন সংখ্যাপ্রেমী, রহস্যপ্রেমী এবং অভিযানপ্রেমী মানুষদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে। বিলের গুপ্তধন বের করা সহজ কোনো কাজ নয়। তবে একদম অসম্ভব কিছু নয়। এর জন্য প্রয়োজন মেল ফিশারের মতো উদ্যমী কোনো অভিযাত্রী, যিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করবেন, “আজই সেই দিন, যেদিন আমি সফলতা পাবো”।
ইন্টারনেটের বদৌলতে এখন খুব সহজেই বিলের ৩টি চিঠির সন্ধান পাওয়া যায়। এমনকি এই চিঠি নিয়ে গবেষকদের অগ্রগতির খবরও জেনে নিতে পারে যেকেউ। তাহলে আর দেরি কেন? চলুন আজই বেরিয়ে পড়া যাক।
ফিচার ইমেজ: Samaritans