১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাস, বাংলাদেশের মানুষের জীবনপণ মুক্তিসংগ্রাম চলছে। পাকিস্তানী বাহিনীকে তখন চারদিক থেকে একটু একটু করে ঘিরে ধরছে বাঙ্গালী মুক্তিসেনার দল। পাকিস্তানের মসনদে বসে ইয়াহিয়া খান বিশ্ববাসীর নজর বাংলাদেশের উপর থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। ৩রা ডিসেম্বর, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী কলকাতায় এক জনসভায় ভাষণ দিচ্ছিলেন। তখনই খবর পেলেন ভারতের নয়টি বিমান ঘাঁটিতে আক্রমণ করেছে পাকিস্তানী বিমান বাহিনী। দিল্লিতে মন্ত্রিসভার জরুরী বৈঠকে যোগ দিতে ইন্দিরা গান্ধী দিল্লি ফিরে গেলেন খুব দ্রুত। শেষ রাত নাগাদ ভারতও পাকিস্তানের ঘাঁটিতে গোলাবর্ষণ শুরু করে, সম্মুখ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে ভারত-পাকিস্তান।
৪ঠা ডিসেম্বরের তৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি আর প্রধানমন্ত্রীর যৌথ সিদ্ধান্তে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি জরুরী বার্তা প্রেরণ করা হয়। যেখানে বলা হয়-
“পাকিস্তানের সর্বশেষ আক্রমণের জবাব দিতে ভারতীয় বাহিনী এবং বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনীর মিলিত ভূমিকা সফলতর হতে পারে, যদি এই দুটি দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।” 1
ভারত ৪ তারিখ থেকেই মিত্রবাহিনী যাত্রা শুরু করে। আর ছয় তারিখ বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্কেরও শুরু হয়। মিত্রবাহিনীর নিয়মতান্ত্রিক আক্রমণের পাশাপাশি বাঙ্গালী গেরিলাদের অতর্কিত হামলায়ও পাকিস্তানী বাহিনী ধীরে ধীরে কোণঠাসা হয়ে পড়ে।
ডিসেম্বরের ৩ তারিখ ভারতের উপর আক্রমণ করার ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে মিত্রদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্টের সহায়তায় বুকভারা আশা নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন ইয়াহিয়া খান। তার নীলনকশা অনুযায়ী ‘ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ’ শুরু হয়ে গেলে এটি থামানোর জন্য হলেও কূটনৈতিক মহলে মার্কিন তৎপরতা শুরু হবে। হয়তো বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ব্যাপারটি এর মাঝেই ধামাচাপা পড়বে বলে আশা ছিলো পাকিস্তানের সামরিক শাসকদের।
পাকিস্তানের নকশায় তেমন একটা ভুল ছিলো না। ডিসেম্বরের ৪ তারিখে ‘Washington Special Action Group Meeting on Indo-Pakistan Hostilities (WSAG)’ নামে পরিষদের বৈঠকে যুদ্ধবিরতির এবং সেনা প্রত্যাহারের প্রস্তাব আনেন হেনরি কিসিঞ্জার এবং সেই প্রস্তাব নিরাপত্তা পরিষদের জরুরী বৈঠকে তোলার প্রস্তাব করেন। সেই সময় নিরাপত্তা পরিষদে আমেরিকার প্রতিনিধি আরেক দক্ষ কূটনৈতিক জর্জ বুশ। তিনি প্রস্তাব দিলেন,
“অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা, ভারত ও পাকিস্তানের সৈন্যদের নিজ নিজ সীমান্তের ভিতরে ফিরিয়ে নেওয়া এবং সেই সিদ্ধান্ত কার্যকরের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবকে ক্ষমতা দেওয়া হোক।” 2
স্নায়ুযুদ্ধের উষ্ণ হাওয়া তখন নিরাপত্তা পরিষদের কক্ষেও বইছে। মার্কিন প্রস্তাবে সোভিয়েত ইউনিয়ন এই প্রস্তাবকে ‘একতরফা’ আখ্যা দিয়ে ভেটো দেয়। মূলত পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের উপর দীর্ঘদিন ধরে করে আসা নির্যাতন, পাকিস্তানের সামরিক অভিযানের পরে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী ভারতে শরণার্থী হিসেবে যাওয়ার ভারতের ক্ষতির ব্যাপারটি বিবেচনা না করেই এই প্রস্তাব কোনোভাবেই গৃহীত হতে পারে না এই যুক্তিতেই মার্কিন প্রস্তাবে ভেটোর তালা ঝুলিয়ে দেয় সোভিয়েত।
ব্রিটেন আর ফ্রান্স অনেকটা নিরপেক্ষ দর্শক হয়ে ভোট দেওয়ার কাজটি থেকে দূরে থাকে। তবে নিরাপত্তা পরিষদে চলমান এই তোলপাড়ের সময়ে সোভিয়েত সরকার তাদের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ‘তাস’-এ আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে পূর্ব বাংলার জনগণের আইনসংগত অধিকার ও স্বার্থের স্বীকৃতির ভিত্তিতে চলমান সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের দাবী জানানো হয়। তবে এই সংঘর্ষ সোভিয়েত সীমান্তের খুব কাছে এবং সোভিয়েত রাষ্ট্রের নিরাপত্তার সাথে যুক্ত বলে বিবাদমান কোনো পক্ষের কারো সাথে জড়িত না হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এই বার্তাটি যে বিবাদে জড়িয়ে থাকা দেশ পাকিস্তানের মিত্র আমেরিকার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে এই ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ ছিলো না। 3
পাকিস্তানের সামরিক শাসকেরা যে ফন্দি নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন তা অনেকটা ভেস্তে যায় সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেটোর কারণে। আর তাই সোভিয়েত প্রশাসনকে চাপে ফেলার উপায় খুঁজতে থাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট নিক্সন সোভিয়েত নেতা ব্রেজনেভকে এক জরুরী বার্তায় বলেন-
“সোভিয়েত ইউনিয়ন যদি পাকিস্তানের অখন্ডতা রক্ষার জন্য ভারতকে সামরিকভাবে নিষ্ক্রিয় না করা হয় তবে পরবর্তী মে মাসে মস্কোতে প্রস্তাবিত সোভিয়েত-মার্কিন দ্বিপাক্ষীয় বৈঠক (১৯৭২ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিতব্য) অনুষ্ঠিত হওয়া সম্ভব নয়।” 4
একদিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের উপর চাপ বাড়ছে অন্যদিকে বাংলাদেশে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ঘাঁটির পতন ঘটছে। ডিসেম্বরের ৭ তারিখ মুক্ত হয় পাকিস্তান সেনাদের শক্তিশালী ঘাঁটি যশোর। এক এক করে বাকি শহরগুলোও মুক্তির অপেক্ষায় দিন গুনতে থাকে। গভর্ণর মালেক ইয়াহিয়াকে এক জরুরী বার্তায় জানান যে, প্রত্যাশিত বৈদেশিক সাহায্য না পেলে যুদ্ধ আর বেশি দিন নিজেদের পক্ষে ধরে রাখা যাবে না। ইয়াহিয়ার পক্ষে তখন এই বার্তাকে বহুগুণে বিবর্ধিত করে হোয়াইট হাউজে পাঠানো ছাড়া হয়তো আর কিছুই করার ছিলো না। 5
কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তখন অন্য সমস্যা দানা বাঁধছে, পত্রপত্রিকা আর গণমাধ্যমের কল্যাণে সাধারণ আমেরিকানদের কাছে পাকিস্তানী বাহিনীর গণহত্যা আর নিপীড়নের খবর স্পষ্ট হয়ে গেছে। ফলে পাকিস্তানকে কূটনৈতিকভাবে সহায়তা দেওয়ার কারণেও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে মার্কিন জনগণ। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানকে সরাসরি সামরিক সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারটি দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলা কঠিন হয়ে পড়বে। এই নিয়ে নিক্সন প্রশাসনের কপালেও তখন চিন্তার রেখা। তবে নিজের দেশে খুব ভালো সাড়া না পেলেও যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব যখন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের মঞ্চে যায় তখন যেন হালে পানি পায় যুক্তরাষ্ট্র।
ডিসেম্বরের ৭ তারিখ রাতে, ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশের বিবাদমান এলাকায় যুদ্ধবিরতি, উভয় পক্ষের সৈন্য প্রত্যাহারের এবং রাজনৈতিক সমাধানের লক্ষ্যে সম্মিলিত প্রস্তাব আনা হয়। বাইরে থেকে যুক্তিসঙ্গত এই প্রস্তাবের আড়ালে বাংলাদেশের অভ্যুদয়কে ধামাচাপা দেওয়ার ব্যাপারটি হয়তো বিশ্বনেতারা ধরতে পারেননি। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে সেই প্রস্তাব ১০৪-১১ ভোটে গ্রহণ করা হয়। উপমহাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরো গভীর পর্যবেক্ষণের কারণে এবারও ব্রিটেন আর ফ্রান্স প্রস্তাবে ভোট দানে বিরত থাকে। 6
গানবোট কূটনীতি
রণাঙ্গনে পাকিস্তানের পরাজয় ছিলো উল্লেখ করার মতো। কিন্তু সবকিছুকে ছাপিয়ে যায় যখন প্রেসিডেন্ট নিক্সন ‘সপ্তম নৌবহর’কে ভিয়েতনাম থেকে বঙ্গোপসাগরের দিকে রওনা হওয়ার আদেশ দিলেন। ডিসেম্বরের ৯ তারিখ সন্ধ্যায় এডমিরাল থমাস মুরারের নিকট নিক্সনের এই আদেশ এসে পৌঁছায়। বাংলাদেশের অভ্যুদয়কে নস্যাৎ করার পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরে ‘সপ্তম নৌবহর’ পাঠানোর নির্দেশ ভারতের জন্যও স্পষ্ট সতর্কবার্তা। 7
তবে সপ্তম নৌবহরকে বঙ্গোপসাগরে পৌঁছাতে পাড়ি দিতে হবে চার থেকে পাঁচ দিনের পথ। কিন্তু ততদিনে পাকিস্তানী বাহিনী চারদিক থেকে ঢাকায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। ডিসেম্বরের ১০ তারিখ ঢাকার সামরিক লক্ষ্যবস্তুর উপর ভারতীয় বিমানের আক্রমণের পর পাকিস্তানী বাহিনী মানসিকভাবে আরো দুর্বল হয়ে পড়ে। সেদিনই গভর্ণরের সামরিক উপদেষ্টা রাও ফরমান আলী ঢাকায় জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব পল মার্ক হেনরীর সাথে বৈঠক করেন। তিনি হেনরীকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আয়োজন করে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার পাশাপাশি পাকিস্তানী বাহিনীকে সসম্মানে পূর্ব পাকিস্তান থেকে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করার আবেদন জানান।8
পল মার্ক হেনরী ঢাকায় থাকা আমেরিকান, সোভিয়েতের পাশাপাশি ফ্রান্স আর ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূতকে এই ব্যাপারে অবহিত করেন এবং এই প্রস্তাব জাতিসংঘ সদর দপ্তরে প্রেরণ করেন। কিন্তু এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরুর আগেই মার্কিন সরকার ইয়াহিয়া খানকে এই প্রস্তাব ফিরিয়ে নেওয়ার আহ্বান করেন এবং জানিয়ে দেন ‘সপ্তম নৌবহর’ বঙ্গোপসাগর এলাকায় কয়েকদিনের মধ্যেই পৌঁছে যাবে।9
সোভিয়েত প্রতিক্রিয়া
উপমাহদেশের এই রাজনৈতিক ঘূর্ণাবর্তে যেকোনো মূহুর্তে পাকিস্তানের পক্ষে আমেরিকা এসে যোগ দিবে এই ব্যাপারটি সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছে পরিষ্কার থেকে পরিষ্কারতর হতে থাকে। তাই সোভিয়েত ইউনিয়ন তাদের ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নৌবহরের শক্তি বৃদ্ধির জন্যে সোভিয়েত পূর্ব উপকূল থেকে পাঁচটি সাবমেরিনসহ মোট ১৬টি যুদ্ধ ও সরবরাহ জাহাজ বঙ্গোপসাগরে জমায়েত করে। পাশাপাশি চীনের এই যুদ্ধে পাকিস্তানের মিত্র হিসেবে জড়িয়ে পড়ার সমূহ সম্ভাবনাকে সামনে রেখে সিংকিয়াং সীমান্তেও সৈন্য জমায়েত করা হয়। চীনকে ঠেকাতে সোভিয়েতের এই পদক্ষেপের কথা নিকোলাই পেগভ ভারতকে খুব দ্রুত অবহিত করেন।10
পারমাণবিক শক্তিধর দুই রাষ্ট্র আমেরিকা আর সোভিয়েত ইউনিয়ন যদি সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে যায় ব্যাপারটি যে কোথায় গিয়ে ঠেকবে সেই ব্যাপারে ভালোই ধারণা ছিলো চীনের। চীন ডিসেম্বরের ১২ তারিখ আমেরিকাকে জানিয়ে দেয় উপমহাদেশে কোনোরূপ সামরিক হস্তক্ষেপে তারা উৎসাহী না। বরং নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে এই নিয়ে আবারো আলোচনা করতে আগ্রহী তারা। চীনের এই সিদ্ধান্তের ফলে আমেরিকা হঠাৎ করেই পিছিয়ে যায়। সপ্তম নৌবহর তখন বঙ্গোপসাগর থেকে ২৪ ঘণ্টার দূরত্বে মালাক্কা প্রণালীতে। পরবর্তী সিদ্ধান্তের আগপর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করতে বলা হয়ে এই নৌবহরকে।11 নিয়াজীর কাছেও এই সংবাদ পৌঁছে দেওয়া হয়। ঢাকায় বসে নিয়াজীর প্রতিক্ষার মূহুর্ত দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে।12
১৪ ডিসেম্বর ঢাকার দিকে বীরবিক্রমে অগ্রসর হতে থেকে মুক্তিবাহিনী। ঢাকার কিছু অঞ্চল ছাড়া সারা দেশ শত্রুমুক্ত। এই সময় ঢাকায় পাকিস্তানী বাহিনীকে আরো দুর্বল করে দিতে পাকিস্তানী সামরিক স্থাপনায় ভারতের বিমান বাহিনীর আক্রমণ অব্যাহত থাকে। এ দিনই নিয়াজীর কাছে ‘যুদ্ধ বন্ধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুমতি নেওয়া হয়।’ এদিকে চীনের সামরিক হস্তক্ষেপের ইচ্ছা না থাকায় থামিয়ে দেওয়া সপ্তম নৌবহরকে আবার বঙ্গোপসাগরের দিকে যাত্রা করার নির্দেশ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। 13
মিত্রবাহিনীর প্রবল আক্রমণের মুখে পাকিস্তানী বাহিনীর প্রতিরোধ ঢাকার খুব অল্প জায়গায় সীমিত হয়ে পড়ে। তখন নিয়াজীর কাছে আত্মসমর্পণ বাদে আর কোনো রাস্তা খোলা ছিলো না।
অবশেষে নিয়াজীর আত্মসমর্পণের খবর নিশ্চিত হওয়ার পর ভারতীয় ইস্টার্ন কমান্ডের চীফ অফ স্টাফ মেজর জেনারেল জ্যাকব পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের দলিল আর অন্যান্য ব্যবস্থা চুড়ান্ত করার লক্ষ্যে ঢাকায় পৌঁছান। বিকাল চারটায় ভারতীয় ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান এবং ভারত-বাংলাদেশ যুগ্ম কমান্ডের অধিনায়ক জগজিৎ সিং অরোরা, বাংলাদেশের ‘ডেপুটি চীফ অফ স্টাফ’ গ্রুপ ক্যাপ্টেন আব্দুল করিম খোন্দকার সহ ভারতের সশস্ত্রবাহিনীর প্রতিনিধিরা ঢাকায় পৌঁছেন। অবশেষে রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানের পক্ষে আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন নিয়াজী আর মিত্র বাহিনীর পক্ষে জগজিৎ সিং অরোরা।
‘জয় বাংলা’ স্লোগানে প্রকম্পিত সেই আত্মসমর্পণের দিনেই বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ প্রান্তে প্রবেশ করে সপ্তম নৌবহর।14 কিন্তু ততক্ষণে বিশ্বের মানচিত্রে রক্তের অক্ষরে বাংলাদেশের নাম লেখা হয়ে গেছে। বঙ্গোপসাগরের অথৈ জলে ভেসে রইলো যুক্তরাষ্ট্রের ‘গানবোট কুটনীতির অস্ত্র’, যার কালোছায়া থেকে বাংলাদেশ তখন যোজন যোজন দূরে।
তথ্যসূত্র:
- Singh, Shilendra Kumar (1999). Bangladesh Documents,Vol. II, page: 587
- Singh, Shilendra Kumar (1999). Bangladesh Documents,Vol. II, page: 433
- The Times, December 6, ’71
- Nixon, Richard (1978). RN, the Memoirs of Richard Nixon, page: 527
- Khan, Fazal Muqeem (1973). Pakistan’s Crisis in Leadership,page: 174-5
- হাসান, মঈদুল (২০১৭)। মূলধারা’ ৭১, পৃষ্ঠাঃ ২১১
- Nixon, Richard (1978). RN, the Memoirs of Richard Nixon, page: 528
- Khan, Fazal Muqeem (1973). Pakistan’s Crisis in Leadership, page:183
- The Sunday Times, December 12, ’71
- Anderson, Jack (1972). The Anderson Papers, page: 259-62
- Kissinger, Henry (1979). The White House Years, page: 905.
- Khan, Fazal Muqeem (1973). Pakistan’s Crisis in Leadership,page:186
- The Times, December 16, ’71.
- হাসান, মঈদুল (২০১৭)। মূলধারা’ ৭১, পৃষ্ঠাঃ ২৩০
ফিচার ইমেজ: U.S. Navy photo