Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ঘুমের প্রয়োজনীয়তা

আমাদের জীবনে ঘুমের গুরুত্ব কতটা বলতে পারেন? কিংবা, আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকা প্রয়োজন কেন? কারণ, শরীর সুস্থ রাখা প্রয়োজন, সুস্থ থাকা প্রয়োজন। আর শরীর সুস্থ রাখতে আমাদের প্রয়োজন শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার। উপদ্রববিহীন ঘুম আমাদের শরীর এবং মন দুটোর জন্যই ভালো। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোসহ রোগ থেকে সুস্থ করে তোলা কিংবা মানসিক বিষাদে পর্যাপ্ত ঘুম বুস্টারের কাজ করে।

যেকোনো ধরনের ডিভাইস, যেমন- মোবাইল, ল্যাপটপ কিংবা টিভি ঠিকমত কাজ না করলে আমরা সাধারণত বন্ধ করে পুনরায় চালু করি। একইভাবে শান্তিমতো ঘুম অর্থাৎ পর্যাপ্ত বিশ্রাম আমাদের শরীর আর মন দুটোই একদম ঝরঝরে করে দেয়।

ঘুম বা পর্যাপ্ত বিশ্রামের জন্য কী করবেন?

ঘুমের জন্য নির্দিষ্ট সময় ঠিক করা, ব্যায়াম করা, ধ্যান করা, ঘুমের সময় ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে দূরে থাকা এরকম ছোটখাট বিষয় মাথায় রাখা উচিৎ। আর নিরুপদ্রব ঘুমের জন্য কী কী করবেন সেটাই আজ আপনাদের জানাব।

ব্যায়াম করুন

সকালে ঘুম থেকে উঠে কিংবা সন্ধ্যায়, দিনের বেলা কাজের ফাঁকে হালকা ইয়োগা করতে পারেন। এতে শরীরের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হবে। সাথে দেহে অক্সিজেন সরবরাহও হয় পরিমিত পরিমাণে। সকালে একটু হাঁটাচলা এবং সন্ধ্যায় কিছু সময় ইয়োগার পরামর্শও দেন বিশেষজ্ঞরা।

Image Source: Family Doctor

তবে কোনটাই অতিরিক্ত রোদে না করার জন্য অনুরোধ করা হয়। আবার, ছোটখাট শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম ঘুমের জন্য বেশ কার্যকর।

ঘুমের পরিবেশ

ধরুন, আপনার রুমে প্রচুর শব্দ আসে, কিংবা রুমটি পুরো জিনিসপত্রে ভরা; পর্যাপ্ত আলো-বাতাস নেই কিংবা অক্সিজেন সরবরাহ কম। এটা অবশ্যই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। এমনকি, ঘুমানোর বিছানা, বালিশ যদি অতিরিক্ত শক্ত হয়, তাহলেও আপনি ঘুমাতে পারবেন না। তাই রুমটি এমন হওয়া উচিৎ যেন সেখানে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের সরবরাহ থাকবে।

Image Source: Help guide

ঘুমানোর সময় পর্দা টেনে কিংবা রুমের লাইট অফ করে ঘুমাবেন অবশ্যই। মাথায় রাখুন, ঘর গুমোট গন্ধ বা দম বন্ধ পরিবেশ থাকবে না, অতিরিক্ত শব্দ আসা যাবে না এবং বিছানা ও বালিশ হতে হবে আরামদায়ক। সব উপাদান একসাথে মেলানো না গেলেও চেষ্টা করুন আদর্শ রুমে ঘুমাতে। এতে দেহ এবং মন ভালো থাকবে।

ঘুমের রুটিন

এই যুগের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো সারা রাত জেগে সারা দিন ঘুমানো। অনেকে কাজের জন্য জাগেন, কিন্তু শুধু গেম খেলা বা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে সময় পার বা মুভি দেখার জন্য কখনোই জেগে থাকা উচিৎ নয়। সাথে সাথেই কোনো প্রভাব দেখা না গেলেও ভবিষ্যৎ চিন্তা করে কাজ করা উচিৎ।

বলা হয়, একজন পূর্ণবয়ষ্ক মানুষের দিনে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমের দরকার। কাজের সময় বাদে, চেষ্টা করুন রাতে একটা নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমিয়ে পড়ার।

এছাড়া, ঘুমানোর আগে ক্যাফেইন কিংবা চা পরিহার করা উচিৎ। অতিরিক্ত ভারী কিংবা খসখসে পোশাক পড়া কিংবা খসখসে চাদরের বিছানায় ঘুমানো উচিত না। ঘুমের সময় এবং কিছু সময় আগে থেকে মোবাইলসহ সব ধরনের ডিভাইস ব্যবহার থেকে বিরত থাকা উচিত।

কেন ঘুমাবেন?

সহজ কথায়- শরীর এবং মন ভালো রাখতে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি যা দরকার তা হলো পর্যাপ্ত ঘুম।

ধরুন, ২৪ ঘন্টায় ৮ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন, সেখানে আপনি ঘুমাচ্ছেন ৪-৫ ঘন্টা। প্রথমদিকে হয়তো সমস্যা মনে হবে না, কিন্তু এটা যে ধীরে ধীরে আপনার ইমিউনিটি সিস্টেম ধ্বংস করে দেবে, তা আপনি টেরও পাবেন না।

সাময়িক সমস্যার ক্ষেত্রে, অফিস, পড়াশোনা বা ঘরের কাজে অমনোযোগী মনোভাব, সব সময় বেশ অস্বস্তি অনুভব করা, কাজের স্পৃহা না থাকা, সারাদিন ঘুম ঘুম ভাব, ক্ষুধামন্দা, দুর্বলতা অনুভব করবেন ঠিকমতো ঘুম না হলে। এছাড়াও, খিটখিটে মেজাজ, কাজে কিংবা হিসেবে ভুল, হাত-পা কিংবা মাথা ব্যথা, পেশি এবং স্নায়বিক দুর্বলতা দেখা দেয়। আবার, এটি দীর্ঘকালীন প্রভাবের ক্ষেত্রে আপনার অনেক বড় সমস্যার কারণ হতে পারে।

Image Source: Good Rx

হাই প্রেশার কিংবা লো প্রেশার, হাই বা লো ব্লাড সুগার, হরমোনাল সমস্যা থেকে শুরু করে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। তাই সাধু সাবধান!

কমপক্ষে ৭ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। এক বা দু’দিনের কম ঘুমের অভ্যাস যেন সারা জীবনের অভ্যাস না হয়ে যায়।

ছোটবেলায় একটা ইংরেজি ছড়া আমরা সবাই পড়েছি,

Early to bed and Early to Rise,
Makes a man Healthy, Wealthy and Wise.

একটু হিসাব করলেই বুঝবেন, এর কথা কত যথাযথ। নিয়মমাফিক ঘুমের অভ্যাস আপনার দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেবে, সারাদিন থাকবেন চনমনে। ঘুম ঘুম ভাব না থাকলে পড়াশোনা কিংবা কাজে মনোযোগ দিতে পারবেন। ফলে সব ক্ষেত্রে উন্নতি করতে পারবেন।

অন্যদিকে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে, সুস্থ থাকবেন, সেটাও কাজের এবং পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বাড়াবে। ক্ষুধামন্দা হবে না, মাথা ব্যথা কিংবা শরীরের অন্য কোনো সমস্যাও তুলনামূলক কম হবে।

তবে অবশ্যই পরিমিত সময় ঘুমাবেন। অতিরিক্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গিয়ে আবার বেশি ঘুমিয়ে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা আছে!

Language: Bangla

Topic: Importance of sleeping to improve immunity

References:

1. How Quality Sleep Helps Strengthen Our Immunity - Thrive Global
2. How Sleep Strengthens Your Immune System - Health Line

Feature Image: parents.com

Related Articles