বন্ধুত্ব হয় মানুষের সাথে মানুষের, বন্ধুত্ব হয় মানুষের সাথে অন্যান্য প্রাণীর। আবার ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর মধ্যেও হতে দেখা যায় বন্ধুত্ব। প্রকৃতি যেখানে নির্ধারণ করে দেয় এক প্রাণীর সাথে অন্য প্রাণীর বন্ধুত্ব অথবা শত্রুতা, সেখানে কিন্তু প্রায়ই দেখা যায় ব্যতিক্রমী কিছু চিত্র। যাদের হওয়ার কথা একে অপরের চরম শত্রু, দেখা যায় তাদের মধ্যেই গভীর বন্ধুত্ব। আরো দেখা যায়, যেসব প্রাণীর মধ্যে বন্ধুত্ব কেউ কখনো ভাবেইনি, তাদের ভেতরেই হয়ে গেছে অবিচ্ছেদ্য এক সম্পর্ক। আজ ভিন্ন ভিন্ন প্রাণীদের মধ্যে এমনই কিছু সম্পর্কের কথা বলা হবে।
শের খাঁ, বালু এবং লিও
নোয়াহ’স আর্ক এনিম্যাল স্যাংচুয়ারি হয়তো পৃথিবীর একমাত্র স্থান, যেখানে বালু নামের এক আমেরিকান কালো ভাল্লুক, লিও নামের আফ্রিকান সিংহ এবং শের খাঁ নামের এক রয়েল বেঙ্গল বাঘকে একসাথে দেখতে পাওয়া যায়।
পুলিশ আটলান্টার এক বাড়িতে এক মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে গেলে এই তিনটি প্রাণীকে মুমূর্ষু অবস্থায় আবিষ্কার করে। সে সময় তারা মাত্র ক’মাস বয়সী বাচ্চা ছিল। কিন্তু বাচ্চা থাকা অবস্থাতেও তাদের উপর অনেক নির্যাতন করা হয়েছিল। বাঘের বাচ্চাটি অপুষ্টিতে ভুগছিল এবং তার ওজন ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় খুবই কম। সিংহ শাবকটির নাক ছিল ক্ষতবিক্ষত অবস্থায়। তবে সবচেয়ে করুণ অবস্থা ছিল ভাল্লুকটির। ছোট থাকা অবস্থাতেই তার দেহে একটি বর্ম আঁটসাঁট করে লাগানো হয়েছিল। কিন্তু সে দৈহিকভাবে বড় হতে থাকলেও তার সেই বর্ম আলগা করা হয়নি। যার ফলে বালু বড় হতে থাকলেও বর্মটি তার দেহে সে অবস্থাতেই থেকে যায় এবং বালুর দেহ সেই বর্মটির উপর দিয়েই বৃদ্ধি পেতে থাকে।
নোয়াহ’স আর্ক এনিম্যাল স্যাংচুয়ারি তে আনার পর বালুর সেই বর্ম সার্জারি করে সরানো হয়েছে এবং সেটাই একমাত্র মুহূর্ত যখন বালু তার দুই বাল্যবন্ধু শের খাঁ এবং লিওর থেকে আলাদা ছিল। বর্তমানে তারা একসাথে খেলে, খায় এবং ঘুমায়। কষ্টের মধ্য দিয়ে বড় হওয়ার ফলে তাদের মধ্যে যে বন্ধন তৈরি হয়েছে, তা আসলেই অবিচ্ছেদ্য।
ম্যাবেল এবং কুকুরছানা
একটি মুরগির কতখানি দুর্ভাগ্য হলে তার একটি ঘোড়ার সাথে সংঘর্ষ হতে পারে? ম্যাবেল নামের মুরগিটির ক্ষেত্রে ঠিক তাই হয়েছিল। যার ফলে সে পায়ে গুরুতর আঘাত পেয়ে রাস্তায় পড়ে ছিলো। তবে কারো রাতের খাবারে পরিণত হবার আগেই এডওয়ার্ড এবং রস টেট তাকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে আসেন। তাদের বাসায় আগে থেকেই একটি কুকুর ছিল, যার নাম নেটলে। এবং নেটলে কয়েকদিন আগেই দুইটি বাচ্চার গর্বিত মা হয়েছে।
এডওয়ার্ড এবং রস ম্যাবেলকে বাসায় আনার পর থেকে অবাক হয়ে লক্ষ করলেন সুযোগ পেলেই মুরগিটি কুকুরছানা দুটির লিটারে গিয়ে বসছে। এবং তাদেরকে নিজের পালকের ওম দিচ্ছে। এবং এরপর থেকে আরো খেয়াল করলেন যে যখনই নেটলে বাইরের আঙিনায় যায় বা কোনো কারণে ঘর থেকে বেরোয় করে, ম্যাবেল তৎক্ষনাৎ কুকুরছানা দুটোর উপর গিয়ে বসে ঠিক একটি মা মুরগি যেভাবে তার বাচ্চাদের উপরে বসে নিজে উষ্ণ হয় এবং তার বাচ্চাদের উষ্ণতা দেয়। নেটলেও ব্যাপারটি লক্ষ করেছে এবং তা মেনেও নিয়েছে। তাই সে এখন বাচ্চাদের দায়িত্ব ম্যাবেলের উপর ছেড়ে দিয়ে নিজে বাইরের আঙ্গিনায় সময় কাটাতেই বেশি ভালবাসে।
টাইনি এবং স্নিফার
আপনি কখনো গ্রামে থেকে থাকলে হয়তো লক্ষ করবেন যে যখনই রাতের বেলা কোন শেয়ালের ডাক শোনা যায়, আশেপাশে থেকে কুকুরের ডাকও শোনা যায়। শেয়ালের ডাক শুনেই তারা যেন ছুটে যায় লড়াই করতে। এই শত্রুতা হয়তো প্রকৃতিই নির্ধারণ করে দিয়েছে কুকুর এবং শেয়ালের মধ্যে। কিন্তু টাইনি এবং স্নিফারের ক্ষেত্রে তা পুরোই ভিন্ন চিত্র!
টাইনি নামের কুকুরটির মালিক হলেন টরগিয়ের বার্জ। তিনি পেশায় একজন ফটোগ্রাফার, বাস করেন নরওয়ের এক বনের পাশেই। কোনো একভাবে টাইনির সাথে এই শেয়ালটির একদিন বনে দেখা হয়ে যায় এবং সাথে হয়ে যায় বন্ধুত্বও। বার্জ একদিন বিষয়টা খেয়াল করেন এবং বন্য শেয়ালটির নাম দেন স্নিফার।
তিনি খেয়াল করে দেখেন যে, শেয়াল আর কুকুরদের মধ্যে আকৃতি এবং প্রকৃতিগত দিক থেকে অনেক মিল। তাই স্নিফারকে তিনি ‘বনের কুকুর’ হিসেবে ভূষিত করেন। এমনকি তিনি এদের সুন্দর সুন্দর মুহূর্তগুলো ক্যামেরাবন্দী করে রাখার পাশাপাশি একটি বইও প্রকাশ করেন। যার নাম ‘দ্য ফক্স এন্ড দ্য ডগ’। বইটিতে তিনি টাইনি এবং স্নিফারের এই অন্যরকম বন্ধুত্বের কথা বর্ণনা করেছেন।
জিরাফ এবং উটপাখি
তাদের ভেতর মিল বলতে রয়েছে তাদের লম্বা গলায় এবং চলনভঙ্গিতে। এ দুই কারণেই হোক বা অন্য কিছুর জন্য; বি নামের জিরাফ এবং উইলমা নামের উটপাখিটির মধ্যে তৈরি হয়েছে অসাধারণ বন্ধুত্বের সম্পর্ক। তারা একসাথে বাস করে টাম্পা বে’র বুশ গার্ডেনে। এই চিড়িয়াখানার রক্ষীরাও কখনো এদেরকে আলাদা দেখেনি! যেখানেই উইলমাকে দেখা গিয়েছে তার আশেপাশেই বিকেও বসে থাকতে দেখা গিয়েছে।
তারা অন্যান্য প্রাণী যেমন আফ্রিকান হাতি, বিভিন্ন পাখি, জিরাফ, জেব্রা, গণ্ডার ইত্যাদীর সাথে প্রায় ৬৫ একর জমিতে একসাথে বসবাস করে। যদিও অন্যান্য প্রাণীরা যেখানে তারা তাদের স্বজাতির সাথেই থাকতে বেশি পছন্দ করে, সেখানে বি এবং উইলমা একদম আলাদা। তারা যেন নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে একসাথে থাকার। যখন চিড়িয়াখানাটির তত্ত্বাবধায়ক জেসন গ্রিনকে জিজ্ঞেস করা হয় কীভাবে তাদের মধ্যে এমন সম্পর্ক তৈরি হলো? তিনি বলেন, একসাথে থাকার দরুন প্রাণীদের একে অপরের কাছে আসার সম্ভাবনা অনেক বেশিই; আর জিরাফ এবং উটপাখি প্রকৃতিগতভাবেই কৌতূহলী প্রাণী! তারা একে অপরকে যাচাই করে দেখতে কখনো লজ্জা পায় না।
হয়তো এমন কৌতূহলের বশেই বি এবং উইলমার ভেতর হয়ে গিয়েছিল এমন অসাধারণ সম্পর্ক!
আফ্রিকান হাতি এবং কালো কুকুর
বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে দৈহিক আকৃতি যে কোনো বাধাই নয়, তার প্রমাণ মেলে বাবল এবং বেলার এমন আদুরে সম্পর্কে। বাবল হলো ৯০০০ পাউন্ড ওজনের আফ্রিকান হাতি এবং বেলা হলো ল্যাব্রেডর প্রজাতির কুকুর। তারা উভয়েই দক্ষিণ ক্যারোলিনার মার্টল বিচ সাফারিতে বসবাস করে।
বাবলকে এই সাফারি পার্কে আনা হয়েছিল ১৯৮৩ সালে। তারপর ২০০৭ সালে হাতিটির জন্য একটি সুইমিং পুল নির্মাণ করা হয়। যে ঠিকাদার এই সুইমিং পুলটি নির্মাণ করেছিলেন, কাজ শেষে চলে যাবার আগে বেলা নামের কুকুরটিকে ফেলে রেখে যান। এবং এখানেই বাবলের সাথে বেলার পরিচয় হয় এবং দুজনের মধ্যে গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব।
তারা একসাথে ঘুরতে পছন্দ করে। তবে সবচাইতে বেশি ভালবাসে সুইমিং পুলটিতে খেলাধুলা এবং সাঁতার কাটতে। কোনো কোনো সময় দেখা যায় বাবল তার শুঁড় দিয়ে বল ছুড়ে দিচ্ছে দূরে এবং মাথায় চড়ে থাকা বেলা লাফ দিয়ে সেই বলটি সংগ্রহে ছুটে যাচ্ছে। তারা নিজেরা যেমন একে অপরের সঙ্গ পছন্দ করে, তেমনি তাদের এমন সম্পর্ক, খেলাধুলা, একসাথে চলাফেরা অন্যান্য দর্শনার্থীরাও দারুণ উপভোগ করে।
টর্ক এবং শ্রেক
শ্রেক নামের পেঁচাটির বয়স যখন মাত্র তিনদিন, তখন তাকে তার মায়ের কাছ থেকে আলাদা করে নেয়া হয়। কারণ- প্রথমত, পেঁচাটি ছিল বিরল প্রজাতির এবং দ্বিতীয়ত, পেঁচাদের মধ্যে নিজের বাচ্চাকে খেয়ে ফেলার প্রবণতাও রয়েছে। তারপর জন পিকটন, শ্রেককে নিজের বাসায় নিয়ে আসেন দেখাশোনা করার জন্য।
জনের সংগ্রহে থাকা পশুপাখিদের পাহারা দেয় তার পোষা কুকুর টর্ক। টর্ক এবং শ্রেকের মধ্যে ধীরে ধীরে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে যখন জন তাদের দুজন কে একই ঘরে একসাথে খেতে দিতে শুরু করেন। মাঝে মাঝে দুজনকে কাছে নিয়ে এসে ধরে রাখতেন যাতে টর্ক শ্রেকের গন্ধের সাথে পরিচিত হয়ে যায়। বর্তমানে টর্ক নিজের মেয়ের মতো করে শ্রেককে আগলে রাখে। শ্রেক যেখানেই ঘুরে বেড়াক না কেন টর্ক তাকে চোখে চোখে রাখে যাতে কোনো বিপদ তাকে স্পর্শ করতে না পারে।
বিড়াল এবং শেয়াল
রহস্যময় এই জীবজগতে প্রকৃতিগতভাবেই কিছু প্রাণী আছে যারা একে অপরের শত্রু। তারা খুব ভালভাবেই জানে কীভাবে একে অপরের দূরত্ব বজায় রাখতে হয়। কিন্তু কথায় আছে প্রকৃতি সবসময়েই কোনো না কোনো চমক রেখে দেয় মানুষের জন্য।
বিড়াল ও শেয়ালের এমন বন্ধুত্বের সম্পর্কও হয়তো প্রকৃতির এক চমক।
এই বিড়াল ও শেয়াল দু’টি প্রাণীই বেশ আদুরে। কিছু জেলে এদের প্রথম তুর্কির লেক ভ্যান উপকূলে দেখতে পান। এদের উদ্দেশে তারা মাছ ছুঁড়ে দেন। এবং অবাক হয়ে দেখেন দুজনে বেশ ভাগাভাগি করেই মাছগুলো খেলো! এরপর থেকে মাছের লোভে এদের প্রায়ই সেই উপকূলে দেখতে পাওয়া গিয়েছে। এবং সেই সুযোগে জেলেরা বেশ কিছু সুন্দর মুহূর্তের ছবিও তুলে রেখেছেন। এরা একসাথে ছুটোছুটি, খেলাধুলা এবং মাছ খেতে ভালবাসে।
ম্যানি এবং ক্যান্ডি
পৃথিবীর সবচাইতে ভাগ্যবান শুকরছানা হয়তো ম্যানিকেই বলা যেতে পারে। পশ্চিম জার্মানির একটি মাঠে মাত্র কয়েক সপ্তাহ বয়সেই তার মা তাকে ফেলে রেখে চলে যায়। ক্ষুধার্ত ম্যানিকে ডালাস পরিবার দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে। প্রায় মৃত্যুর কোল থেকে তাকে ফেরত আনতে সক্ষম হন তারা।
তাদের পোষা কুকুর ক্যান্ডির সাথে ম্যানির সাক্ষাতের পর দুজন খুব দ্রুতই বন্ধুতে পরিণত হয়ে যায়। তারা এক সাথে লুকোচুরি খেলতে, বনে ছুটোছুটি করতে এবং বিভিন্ন কায়দায় লাফালাফি করতে ভালবাসে। ম্যানি এমনকি ক্যান্ডির মত করে ঘেউ ঘেউ ডাক দেয়ারও চেষ্টা করে!
ডালাস পরিবার ম্যানির ভবিষ্যৎ নিয়ে যথেষ্ট সচেতন। তারা চান না ম্যানি কারো খাবারের প্লেটে উঠুক। তাই তারা ম্যানিকে নিজেদের কাছে রেখেও দিতে পারেন বা কোনো প্রাণী সংরক্ষণ পার্কে রেখেও আসতে পারেন।
সুরিয়া এবং রস্কো
বাবা-মাকে হারানোর পর সুরিয়া নামের ওরাংওটাংটি এতোটাই বিষণ্ণ হয়ে পরে যে সে খাওয়াদাওয়া বাদ দিয়ে দেয়। কোনো প্রকার চিকিৎসা পর্যন্ত করা যাচ্ছিলো না তাকে। সবাই ভেবেছিলো সে হয়তো এভাবেই মারা যাবে। কিন্তু সবকিছু বদলে যায় যখন সুরিয়া একটি গৃহহীন কুকুর রস্কোর দেখা পায়।
তাদের বন্ধুত্ব শুরু আজ থেকে প্রায় আট বছর আগে, যখন রস্কো ‘বিরল এবং বিপন্ন প্রাণী সংরক্ষণ’ নামক প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের অনুসরণ করে মার্টল বীচে চলে আসে। সুরিয়া কুকুরটিকে দেখতে পেয়ে কাছে আসে, এবং বন্ধুত্ব করে ফেলে। তারপর থেকে তারা একে অপরের খুবই কাছের বন্ধুতে পরিণত হয়। তারা এক সাথে সুইমিং পুলে গোসল করতে, ঘুরে বেড়াতে এবং বইয়ের ছবি দেখতে পছন্দ করে।
শিম্পাঞ্জী ও দু’টি বাচ্চা বাঘ
মিত্রা এবং শিভা নামের দু’টি বাঘের জন্ম হয় এক হারিকেন ঝড়ের সময়। ঝড়ে তাদের আশ্রয়স্থল ভেসে যাওয়ায় বাচ্চা দু’টিকে মায়ের কাছ থেকে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু তা বলে যে তারা মায়ের যত্ন পায়নি তা কিন্তু নয়। অঞ্জনা নামের শিম্পাঞ্জী তাদেরকে মায়ের মত আদর যত্ন দিয়েই বড় করেছে।
বাচ্চা দু’টোকে যখন নিয়ে আসা হয় তখন অঞ্জনার বয়স ছিল মাত্র দু বছর। তখন থেকেই সে তার মালিক চায়না ইয়র্কের সাথে বসবাস করে। কারন অঞ্জনাকেও এই ব্যক্তিটি আশ্রয় দিয়েছিলেন এবং তারপর থেকে অঞ্জনা তাকে ছেড়ে যায়নি। ইয়র্কের কাছে থেকে অঞ্জনা অন্যান্য প্রাণী দেখাশোনা করার প্রায় সকল পদ্ধতিই শিখে ফেলেছিল। যার ফলে চায়না ইয়র্ক না থাকলেও সে শিভা এবং মিত্রার দেখাশুনা খুব ভালভাবেই করতে পারতো।
বর্তমানে শিভা, মিত্রা এবং অঞ্জনা দক্ষিণ ক্যারোলিনার ‘বিপন্ন এবং বিরল প্রাণী রক্ষণাবেক্ষণ প্রতিষ্ঠান’ এর তত্ত্বাবধানে রয়েছে।