পিটার দ্য গ্রেটের ৩৫০ তম জন্মদিনে মস্কোতে একটি ছবি প্রদর্শনীর আয়োজন হয়, তুলে ধরা হয় পিটার দ্য গ্রেটের বীরত্ব। তরুণ উদ্যোক্তাদের সামনে বক্তব্য রাখার সময় পুতিন নিজেকে পিটার দ্য গ্রেটের সাথে তুলনা করেন, সামঞ্জস্য টানেন পিটার দ্য গ্রেটের সেন্ট পিটার্সবার্গ জয় আর নিজের ইউক্রেন অভিযানের মধ্যে। পিটার দ্য গ্রেট অষ্টাদশ শতাব্দীতে সুইডেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দখল নেন সেন্ট পিটার্সবার্গের, রাশিয়াকে গড়ে তোলেন ইউরোপের রাজনীতির শক্তিশালী খেলোয়াড় হিসেবে। আধুনিক সময়ে পুতিনও রাশিয়াকে নিয়ে একই ধরনের স্বপ্ন দেখেন, সামরিক অভিযান চালিয়েছেন জর্জিয়াতে, দখল করেছেন ক্রিমিয়া, অভিযান চলছে ইউক্রেনে।
পিটার দ্য গ্রেট ছিলেন একজন বিখ্যাত জার, যিনি রাশিয়ার রাজতন্ত্রকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। অষ্টাদশ শতাব্দীর সেই সময়ের পরে আরো তিনটি শতাব্দী পার করেছে রাশিয়া, রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয়ে কমিউনিজমের ব্যর্থ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে রাশিয়াতে রিপাবলিকান শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হয়। গত দুই দশক ধরে পুতিন রাশিয়াতে এমন একটি কাঠামোকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যেখানে সাংবিধানিকভাবে একটি আইনসভা রয়েছে, কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় সরকার রয়েছে। সাংবিধানিকভাবে, এসব জনপ্রতিনিধিদের নির্বাচনে জিতে দায়িত্ব নেওয়ার কথা, প্রেসিডেন্ট পদের জন্যও নির্বাচন আয়োজনের বিধান রয়েছে। এমন একটি রিপাবলিকান কাঠামোর রাষ্ট্রপ্রধান কেন নিজেকে একজন জারের সাথে তুলনা করেন?
পুতিন ও রাশিয়া
যেখানে পুতিন আছে, রাশিয়াও সেখানে আছে;
যেখানে পুতিন নেই, সেখানে রাশিয়াও নেই।– ভাচেস্লাভ ভলদিন, ক্রেমলিনের মুখপাত্র (২০১৪)
রাশিয়া কয়েকশো বছর ধরে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেছে, রাষ্ট্র হিসেবে উপস্থিতি প্রায় হাজার বছরের। ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়াকে মাত্র দুই দশক ধরে শাসন করছেন, পুতিনের যুগ পেরিয়েও রাশিয়া নিজের অস্তিত্ব ধরে রাখবে রাষ্ট্র হিসেবে। রাজনীতিবিজ্ঞানের একজন পাঠকের কাছে প্রশ্ন জাগতে পারে, এরকম একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রের উপস্থিতি একজন ব্যক্তির উপর কীভাবে নির্ভরশীল হতে পারে? ক্রেমলিনের মুখপাত্র কি বাড়িয়ে বলছেন?
প্রকৃতপক্ষে, ক্রেমলিনের মুখপাত্র একেবারেই বাড়িয়ে বলছেন না। রাশিয়ান পার্লামেন্ট ডুমার সাবেক সদস্য সার্গেট মারকভের মতে, রাশিয়ার রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল, রাজনৈতিক নেতারা খুবই শক্তিশালী। এভাবেই পুতিন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ে বড় হয়ে গেছেন, হয়ে গেছেন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ে শক্তিশালী। দুর্বল প্রতিষ্ঠানগুলো রাশিয়ার ঐক্য আর সামাজিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে পারবে না। ফলে, পুতিনের অনুপস্থিতিতে ‘হয়তো’ রাশিয়া রাষ্ট্র হিসেবেই ভেঙে পড়বে।
ভ্লাদিমির পুতিন গত দুই দশক ধরে রাশিয়াকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। রাজনৈতিক দুর্ঘটনা না ঘটলে পুতিন হয়তো আরো কয়েক বছর রাশিয়াকে নেতৃত্ব দেবেন, সম্ভাবনা আছে আজীবন প্রেসিডেন্টশিপ গ্রহণেরও। দুই দশকের শাসনামলেই পুতিন মেয়াদের দিক থেকে আধুনিক রাশিয়ার অধিকাংশ শাসককে ছাড়িয়ে গেছেন। তার সমান সময় ক্ষমতায় থাকতে পারেননি লেনিন, মিখাইল গর্ভাচেভ, বরিস ইয়েলৎসিনের মতো শাসকেরাও। মার্ক্সিজম, লেনিনইজম, স্ট্যালিনিজমের পরে বর্তমানে রাশিয়াতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে পুতিনইজম।
পুতিনইজম
অন্যান্য রাজনৈতিক দর্শনের মতো পুতিনইজম পরিপূর্ণ কোনো রাজনৈতিক দর্শন না, শাসনতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠিত কোনো দর্শনও নয়। পুতিনইজম একটি দৃষ্টিভঙ্গি, যেটি পুতিন এবং তার আশেপাশের মানুষেরা ধারণ করেন। পুতিনিস্টরা শক্তিশালী রাষ্ট্রের ধারণায় বিশ্বাস করেন, বিশ্বাস করেন আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে রাশিয়ার একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারে।
রাশিয়াতে পুতিন নিজের দর্শন প্রতিষ্ঠা করেছেন, গুরুত্ব দিয়েছেন রাশিয়ান সংস্কৃতির উপর। রাশিয়ার অর্থনীতিকে পুতিন প্রথাগতভাবে তেল আর গ্যাসের উপরই নির্ভরশীল রেখেছেন, বহন করেছেন সোভিয়েত আমলের কর্তৃত্ববাদী লিগ্যাসিকে। পুতিনইজম আন্তর্জাতিক পরিসরে রাশিয়াকে একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী দেশ বানিয়েছে, অভ্যন্তরীণ কাঠামোকে বানিয়েছে একটি দুর্বল রাষ্ট্র হিসেবে। রাজনৈতিক দর্শনের দিক থেকে পুতিনইজম মার্ক্সিজম বা লেনিনইজমের চেয়ে ম্যাথারিজম আর রিগ্যানিজমের সাথে বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ।
শক্তিশালী পুতিন
র্যাশনাল চয়েজ থিওরি অনুসারে, মানুষ তার কাছে বিদ্যমান তথ্যের উপর ভিত্তি করে নিজের স্বার্থ আদায় করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করে। পুতিনের শাসনামলকে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকই র্যাশনাল চয়েজ থিওরির আলোকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। এই ঘরানার বিশ্লেষকদের বক্তব্য হচ্ছে, পুতিন নিজের আর নিজের অনুগত অলিগার্কদের স্বার্থ আদায় করছেন ক্ষমতায় থেকে, নিজেদের অর্থনৈতিক অবস্থা পরিবর্তন করে নাম লেখাচ্ছেন বিলিয়নিয়ারদের ক্লাবে। পুতিনইজমকে এই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয় ক্লিপ্টোক্রেসি হিসেবে।
আবার, ম্যাক্স ওয়েবারের মতে, মানুষ কেবল ব্যক্তিস্বার্থ মাথায় রেখেই কাজ করে না, ব্যক্তিস্বার্থ মানুষের সম্পূর্ণ মোটিভ আর কাজকে সফলভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে না। পুতিনইজমকে কেবল র্যাশনাল চয়েজ থিওরি দিয়ে দেখলেও একই ভুল হবে। ব্যক্তিস্বার্থ পুতিনইজমের ক্ষুদ্র অংশকে ব্যাখ্যা করে, সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা করতে পারে না।
ক্রেমলিনকেন্দ্রিক ‘হাইপার-প্রেসিডেন্সিয়ালইজম’
পুতিন শক্তিশালী রাষ্ট্রের ধারণায় সমর্থন করেন, সমর্থন করেন তার আশেপাশে থাকা রাজনৈতিক আর আমলাতান্ত্রিক অভিজাতরাও। কারণ পুতিনিস্টরা বিশ্বাস করেন, রাশিয়ার নাগরিকেরা দুর্বল। ফলে, ক্রেমলিন যদি তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ না করে, তাহলে অন্য কেউ করবে। পুতিনিস্টদের এই দর্শন রাশিয়াতে এমন একটি শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে, যেটি ক্রেমলিনকে কেন্দ্র করে আবির্ভূত হয়। সকল সিদ্ধান্ত যায় ক্রেমলিন থেকে, ক্রেমলিনের মাধ্যমেই নিয়ন্ত্রণ করা হয় আইন, বিচার আর নির্বাহী বিভাগ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এই ব্যবস্থাকে বলেন ‘হাইপার-প্রেসিডেন্সিয়ালইজম’। কেন্দ্রীভূত শাসনতান্ত্রিক কাঠামো ক্রেমলিনকে যতটা শক্তিশালী করেছে, ততটাই দুর্বল করেছে রাষ্ট্রের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে। ফলে, সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্র একটি দুর্বল কাঠামোতে পরিণত হয়েছে।
কর্তৃত্ববাদের ইতিহাস
রাশিয়াতে কর্তৃত্ববাদের একটি লম্বা আর প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস রয়েছে। ষোড়শ শতাব্দীতে জার ইভান দ্য টেরিবল ছিলেন একজন স্বৈরশাসক, অষ্টাদশ শতাব্দীর পিটার দ্য গ্রেট এবং ক্যাথরিন দ্য গ্রেটও ছিলেন স্বৈরশাসক। পরবর্তী সময়ে শাসন করা নিকোলাস আর আলেকজান্ডাররাও ছিলেন স্বৈরাচারী। সোভিয়েত রাশিয়ার সময়ে কমিউনিস্টরাও ছিলেন স্বৈরাচারী। নব্বইয়ের দশকে রাশিয়া ইতিহাসে উল্টো পথে হাঁটে, রাশিয়াতে প্রতিষ্ঠিত হয় গণতান্ত্রিক কাঠামো। গণতন্ত্রায়নের প্রক্রিয়া অবশ্য শুরু হয় মিখাইল গর্ভাচেভের আমলেই, যেটি পূর্ণতা পায় সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির মাধ্যমে। রাশিয়াতে কর্তৃত্ববাদী শাসন ফিরে এসেছে ভ্লাদিমির পুতিনের মাধ্যমে, ভ্লাদিমির পুতিনের পুতিনইজমের মাধ্যমে।
নির্বাচনী কর্তৃত্ববাদ
ভ্লাদিমির পুতিন কর্মজীবনের বড় এক অংশ কাটিয়েছেন কেজিবিতে; নব্বইয়ের দশকটা কেটেছে এফএসবি আর সেন্ট পিটার্সবার্গের মেয়রের অফিসে দায়িত্ব সামলে। রাজনৈতিক অঙ্গনে পুতিনের বিচরণ ছিল কম, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার আগে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণও ছিল কম। পুতিন এখন যাদের দিয়ে নিজের প্রশাসন পরিচালনা করছেন, তাদের অনেকেরও একই ধরনের ক্যারিয়ার রয়েছে আমলাতন্ত্রে। পুতিনের মস্কো প্রশাসন রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা অপছন্দ করে, অপছন্দ করে রাজনৈতিক বিপ্লবও। প্রথাগত রাজনৈতিক নেতৃত্ব তাই পুতিনের রাশিয়াতে উঠে আসছে না।
রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার প্রতি পুতিনের ক্রেমলিন প্রশাসনের মনোভাব প্রকাশ ঘটেছে নির্বাচনের ক্ষেত্রেও। সাংবিধানিকভাবে রাশিয়াতে সবগুলো স্তরে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেই বাধ্যবাধকতা পূরণে পুতিনের অধীনে থাকা রাশিয়াতে নির্বাচন হয় আমলাতান্ত্রিক উপায়ে, যাকে বর্তমানে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা ‘নির্বাচনী কর্তৃত্ববাদ’ বলছেন। নির্বাচনী কর্তৃত্ববাদে নির্বাচন আইনি প্রক্রিয়াতে সুষ্ঠু হয়, কিন্তু নির্বাচন প্রকৃত অর্থে অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য হয় না। লেভিটস্কি ও জিবলাট এই প্রক্রিয়াকে তিনটি ধাপে ভাগ করেছেন। শুরুতে রাষ্ট্রের রেফারিদের হাত করা হয়, পরবর্তীতে বিরোধী পক্ষগুলোকে নির্মূল করে দেওয়া হয়। সর্বশেষ ধাপে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে ক্ষমতাসীন দলের নিরঙ্কুশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
রাশিয়াতে নির্বাচনী কর্তৃত্ববাদ জনগণের ক্ষমতাকে সীমিত করেছে। ক্রেমলিন চাইলে যে কাউকে নির্বাচনে জিতিয়ে আনতে পারে। নাগরিকরা শত চেষ্টা করলেও নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে পারেন না। ফলাফলে, ক্রেমলিনের কর্তা পুতিন শক্তিশালী হয়েছেন, নাগরিকদের অধিকারহীনতায় রাষ্ট্র দুর্বল হয়েছে।
ক্ষমতার ভারসাম্য
আধুনিক রাষ্ট্রকাঠামোতে জাতিরাষ্ট্রে তিনটি প্রধান ভাগ থাকে; আইন বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগ। শাসনতন্ত্রের এই বিভাগগুলো একে অপর থেকে স্বাধীন থাকলে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা করা যায়, রাষ্ট্রকে আটকানো যায় কর্তৃত্ববাদী হওয়া থেকে। নব্বইয়ের দশকে রাশিয়াতে যখন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিকাশ শুরু হয়, তখন রাশিয়াতেও প্রতিটি বিভাগ আলাদাভাবে ভূমিকা রাখা শুরু করে নাগরিক স্বাধীনতা আর রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিতে।
ভ্লাদিমির পুতিন রাজনীতির সাথে কম যুক্ত থাকলেও অর্থোডক্স খ্রিষ্টান ধর্ম, রাশিয়ার রক্ষণশীল সংস্কৃতি আর জাতীয়তাবাদের মিশ্রণ ঘটিয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান। বেশ কয়েক বছর তার অ্যাপ্রুভাল রেটিং ওঠানামা করেছে আশির ঘরে, পুতিন হয়ে ওঠেন পৃথিবীর অন্যতম ক্ষমতাশালী ব্যক্তি। সময়ের সাথে রাশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে, কমে আসে পুতিনের জনপ্রিয়তাও। ক্ষমতায় টিকে থাকতে পুতিনকে নিতে হয় ক্রিমিয়া দখলের রাজনৈতিক ঝুঁকি, যার ফলাফল হিসেবে আসে পশ্চিমা দেশগুলোর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা।
সময়ের সাথেই রাশিয়াতে বিরোধী দল শক্তিশালী হয়েছে, জনমত পুতিনের বিরুদ্ধে গেছে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে পুতিনকে বেছে নিতে হয়েছে শক্তি প্রয়োগের পদ্ধতি। বিরোধী দলগুলোর সাথে পশ্চিমা দেশগুলোর যোগাযোগের অভিযোগ তোলে ক্রেমলিন, এই অভিযোগ নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে দেয় অবারিত ক্ষমতা প্রয়োগের সু্যোগ। ফলে পশ্চিমা জনমত জরিপ সংক্রান্ত সংস্থাগুলোর রেটিংয়ে পুতিন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ব্যক্তি হয়ে উঠলেও তিনি নাগরিকদের রাজনৈতিক অধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতার নিশ্চয়তা সেভাবে দিতে পারেননি। ক্রেমলিন আর নাগরিকরা মুখোমুখি দাঁড়ালে রাশিয়াতে তাই সবসময় ক্রেমলিনই জিতে যাবে।