গতানুগতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোতে সাধারণত শহুরে আফগান নারীদের অধিকার নিয়েই বেশি আলোচনা করা হয়। আড়ালে রয়ে যায় গ্রামীণ আফগান নারীদের চাওয়া-পাওয়ার কথা। অথচ এরাই মূলত আফগানিস্তানের প্রতিনিধিত্বশীল নারী। কারণ আফগানিস্তানের ৭০% মানুষই গ্রামে বসবাস করে। সেই নারীদের কথাই নিউ ইয়র্কার ম্যাগাজিনের একটি দীর্ঘপাঠ প্রবন্ধে তুলে এনছেন সাংবাদিক আনন্দ গোপাল।
সেই সাথে প্রবন্ধটিতে উঠে এসেছে আমেরিকান বাহিনীর এবং তাদের সহযোগী আফগান ন্যাশনাল আর্মির সীমাহীন অমানবিকতার কথা, আফগান জনগণের উপর চালানো তাদের গণহত্যার কথা এবং তালেবানদের বিজয়ের পেছনের কারণগুলোর কথা।
আমাদের এই সিরিজটি দীর্ঘ এই চমৎকার প্রবন্ধটিরই অনুবাদ। মোট সাতটি পর্বে করা অনুবাদ সিরিজটির এটি তৃতীয় পর্ব। সবগুলো পর্বের লিঙ্ক এখানে: ১ম পর্ব | ২য় পর্ব | ৩য় পর্ব | ৪র্থ পর্ব | ৫ম পর্ব | ৬ষ্ঠ পর্ব | ৭ম পর্ব
আফগানিস্তানে আক্রমণের পর অল্প সময়ের মধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তালেবানকে উৎখাত করে এবং কাবুলে হামিদ কারজাইয়ের সরকার প্রতিষ্ঠা করে। আমির দাদো আমেরিকান স্পেশাল ফোর্সের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করে এবং হেলমন্দ প্রদেশের গোয়েন্দা প্রধান হিসেবে নিয়োগ লাভ করে। তার এক ভাই ছিল সাংগিন জেলার গভর্নর এবং আরেক ভাই ছিল সাংগিনের পুলিশ প্রধান।
হেলমন্দে আমেরিকান দখলদারিত্বের প্রথম বছর শান্তিপূর্ণ ছিল। মাঠগুলো পুনরায় পপি গাছে ছেয়ে গিয়েছিল। শাকিরার কোলে তখন দুটি ছোট বাচ্চা, নিলুফার এবং আহমেদ। তার স্বামী ততদিনে পাকিস্তান থেকে ফিরে এসেছে এবং সাংগিন বাজারে আফিমের নির্যাসের ব্যাগ ফেরি করার কাজ নিয়েছে। কিন্তু এখন আমেরিকানদের সাহায্যে নির্বাসন থেকে ফিরে এসে দাদো যখন পুনরায় ক্ষমতায় বসেছে, তখন তাদের জীবন আবার সেই গৃহযুদ্ধের দিনগুলোতে ফিরে গেছে।
শাকিরার পরিচিত প্রায় সবাই দাদো সম্পর্কে একটি ঘটনা জানত। একবার তার যোদ্ধারা দুই যুবকের কাছে ট্যাক্স দাবি করেছিল। তাদেরকে হয় ট্যাক্স দিতে হবে, অথবা দাদোর ব্যক্তিগত মিলিশিয়ায় যোগ দিতে হবে। সরকারি পদে থাকা সত্ত্বেও দাদো সে সময় ব্যক্তিগত মিলিশিয়া বাহিনী বজায় রেখেছিল। যুবক দুজন যখন তাদের দাবি মানতে অস্বীকৃতি জানায়, তখন যোদ্ধারা তাদেরকে পিটিয়ে হত্যা করে এবং তাদের লাশ গাছ থেকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ঝুলিয়ে দেয়। এক গ্রামবাসী স্মৃতিচারণ করে, “আমরা দড়ি কেটে তাদেরকে নামাতে গিয়েছিলাম, তাদের শরীর পুরো ফেঁড়ে ফেলা হয়েছিল, তাদের পাকস্থলী বেরিয়ে এসেছিল।” অন্য একটি গ্রামে দাদোর বাহিনী ঘরে ঘরে গিয়ে তালেবান বলে সন্দেহ করা লোকদেরকে হত্যা করছিল। একজন প্রবীণ পণ্ডিত, যিনি কখনও তালেবান আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না, তাকেও তারা গুলি করে হত্যা করে।
আমেরিকানদের মিত্র বাছাই করা দেখে শাকিরা হতভম্ব হয়ে পড়েছিল। “এটাই কি তাদের পরিকল্পনা ছিল?” আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল সে। “তারা কি এখানে শান্তি আনতে এসেছিল, নাকি তাদের ভিন্ন কোনো লক্ষ্য ছিল?” সে তার স্বামীকে সাংগিন বাজারে আফিম নেওয়া বন্ধ করে দেওয়ার জন্য জোরাজুরি করছিল। তার স্বামী তাই দক্ষিণের গেরেশ্কে তার ব্যবসা স্থানান্তর করে। কিন্তু এক বিকেলে সে খবর নিয়ে আসে, গেরেশ্কে যাওয়াও এখন আর সম্ভব হবে না। কারণ অবিশ্বাস্য হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নাইন্টি থার্ড ডিভিশনকে পুনরুজ্জীবিত করেছে এবং সেটিকে ঐ প্রদেশে তাদের নিকটতম সহযোগী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
ডিভিশনের বন্দুকধারী যোদ্ধারা পুনরায় সেতুর উপর যাত্রীদের থামাতে শুরু করে এবং তাদের কাছ থেকে যা পায় তা লুট করতে শুরু করে। এখন অবশ্য তাদের সবচেয়ে লাভজনক উদ্যোগ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া পুরস্কারের অর্থ সংগ্রহ করা। হেলমন্দের ইতিহাস রচয়িতা এক সাবেক ব্রিটিশ অফিসার মাইক মার্টিনের মতে, প্রতিটি তালেবান কমান্ডারকে আমেরিকানদের হাতে তুলে দেওয়ার বিপরীতে নাইন্টি থার্ড ডিভিশনের যোদ্ধারা দুই হাজার ডলার পর্যন্ত উপার্জন করত।
অবশ্য এটি একধরনের চ্যালেঞ্জও তৈরি করেছিল। কারণ সে সময় ধরিয়ে দেওয়ার মতো সক্রিয় তালেবানের সংখ্যা বলতে গেলে ছিলই না। “আমাদের গ্রামের তালেবান সদস্যদেরকে আমরা চিনতাম,” শাকিরা বলেছিল। “তারা কেউ গেরিলা যুদ্ধে লিপ্ত ছিল না। তারা কিছু না করে বাড়িতে বসে ছিল।” মার্কিন স্পেশাল ফোর্সের একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল স্টুয়ার্ট ফেরিস, যিনি সে সময় ঐ এলাকায় নিযুক্ত ছিলেন, তিনিও একজন মার্কিন সেনা-ঐতিহাসিককে বলেছিলেন, “ঐ পর্যায়ে কার্যত কোনো প্রতিরোধই ছিল না।”
কাজেই নাইন্টি থার্ড ডিভিশনের মতো মিলিশিয়ারা নিরীহ মানুষকে মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করতে শুরু করে। ২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তারা হাজি বিসমিল্লাহকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করে। হাজি বিসমিল্লাহ ছিলেন কারজাই সরকারের গেরেশ্ক জেলার পরিবহন পরিচালক। তার উপর দায়িত্ব ছিল শহরের টোল আদায় করা। নাইন্টি থার্ড ডিভিশনের অভিযোগ পেয়ে আমেরিকানরা তাকে তুলে নিয়ে গুয়ান্তানামো কারাগারে প্রেরণ করে। বিসমিল্লাহকে নির্মূল করার পর নাইন্টি থার্ড ডিভিশন টোল আদায়ের উপর একচেটিয়া কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে।
দাদোর কর্মকাণ্ড ছিল আরও আগ্রাসী। ২০০৩ সালের মার্চে মার্কিন সৈন্যরা একটি স্কুল এবং স্বাস্থ্য ক্লিনিক পুনর্নির্মাণের ব্যাপারে আলোচনা করার জন্য সাংগিনের গভর্নর তথা দাদোর ভাইয়ের সাথে সাক্ষাৎ করে। ফিরে যাওয়ার সময় তাদের গাড়িবহরের উপর হামলা হয় এবং হেলমন্দে প্রথম আমেরিকান হিসেবে স্টাফ সার্জেন্ট জ্যাকব ফ্রেজিয়ার ও সার্জেন্ট অরল্যান্ডো মোরালেস নিহত হয়। মার্কিন কর্মীদের সন্দেহ, এই হামলার জন্য তালেবান দায়ী ছিল না, দায়ী ছিল দাদো।
এই সন্দেহের কথা পরে দাদোর এক সাবেক কমান্ডার আমার কাছে নিশ্চিত করেছিল। সে জানিয়েছিল, তার বস এই হামলার আয়োজন করেছিল আমেরিকানদেরকে নিজের উপর নির্ভরশীল রাখার জন্য। কিন্তু তা সত্ত্বেও দাদোর বাহিনী যখন সত্যিকারের হত্যাকারীকে আটক করার দাবি করে, তখন আমেরিকানরা সেই কথিত হত্যাকারী, মোল্লা জলিল নামের প্রাক্তন এক তালেবান যোদ্ধাকে গুয়ান্তানামো কারাগারে প্রেরণ করে। জলিলের গুয়ান্তানামোর গোপন নথি থেকে জানা যায়, দাদোর বাহিনী যে নিজেদের হামলায় জড়িত থাকার প্রমাণ আড়াল করার জন্যই জলিলকে ফাঁসিয়েছিল, সেটা মার্কিন কর্মকর্তারাও জানত।
মার্কিন বিশেষ বাহিনীর সাথে দাদোর সম্পর্কের উপর এই ঘটনা কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। “সন্ত্রাসীদেরকে” ধরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে আমেরিকানদের কাছে দাদোর মূল্য ছিল অনেক বেশি। ততদিনে তারা একই সাথে টহল দিতে শুরু করেছিল। ঐ হামলার পরপরই দাদোর মিলিশিয়া এবং মার্কিন স্পেশাল ফোর্সের যৌথ বাহিনী সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের খোঁজে শাকিরাদের গ্রামে তল্লাশি চালায়। সৈন্যরা তাদের বাড়িতে বেশিক্ষণ অবস্থান করেনি, কিন্তু সে তার মন থেকে রাইফেলের নলের দৃশ্য দূর করতে পারছিল না। পরের দিন সকালে সে ঘরের পাটি উঠিয়ে ফেলে এবং ঘষে ঘষে বুটের দাগ পরিষ্কার করে ফেলে।
শাকিরার বন্ধুবান্ধব এবং প্রতিবেশীরা এত বেশি ভীত ছিল যে, তাদের মুখ খোলার সাহস ছিল না। কিন্তু জাতিসংঘ দাদোর অপসারণের জন্য চাপ দিতে শুরু করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বারবার তাদের এই প্রচেষ্টায় বাধা প্রদান করে। ইউএস মেরিন কোরের একজন গাইড যুক্তি দেখায়, যদিও দাদো ছিল “জেফারসনিয়ান ডেমোক্রেট হওয়ার পথ থেকে অনেক দূরে”, তবুও তার রুঢ় ন্যায়বিচারের যে ধরন, সেটা ছিল “বিদ্রোহী পশতুনদেরকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সময়ের বিচারে উত্তীর্ণ সমাধান।”
হেলমন্দের অধিবাসীদেরকে যখন মিথ্যা অজুহাতে তুলে নিয়ে যাওয়া শুরু হয়, তখন শাকিরার স্বামী ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দেয়। মোহাম্মদ নাসিম নামে পার্শ্ববর্তী গ্রামের এক কৃষককে মার্কিন বাহিনী গ্রেফতার করে গুয়ান্তানামোতে পাঠিয়ে দিয়েছিল, কারণ তার নাম ছিল এক তালেবান কমান্ডারের নামের মতো। এহসানউল্লাহ নামে কারজাই সরকারের এক কর্মকর্তা মার্কিন ঘাঁটিতে গিয়েছিল দুই তালেবান সদস্যের ব্যাপারে খবর দিতে। কিন্তু সেখানে কোনো অনুবাদক উপস্থিত না থাকায় উদ্ভুত বিভ্রান্তির মধ্যে তাকেই গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরবর্তীতে গুয়ান্তানামোতে প্রেরণ করা হয়। মার্কিন বিশেষ বাহিনীর সাথে স্থানীয় গোত্রগুলোর একটি সংঘর্ষের পর নাসরুল্লাহ নামের এক সরকারি কর সংগ্রাহককে দৈব-চয়নের ভিত্তিতে একটি বাস থেকে নামিয়ে আটক করা হয় এবং এরপর গুয়ান্তানামোতে প্রেরণ করা হয়। “আমেরিকানদের সাথে আমার কোনো বিরোধ ছিল না,” পরবর্তীতে সামরিক ট্রাইব্যুনালে বলেছিল সে। “কিন্তু আমি জানতাম না শেষ পর্যন্ত আমাকেই কিউবায় আসতে হবে।”
নাসরুল্লাহ শেষ পর্যন্ত দেশে ফিরে আসতে পেরেছিল, কিন্তু অনেক বন্দীরই আর কখনো ফেরা হয়নি। গেরেশ্কের আব্দুল ওয়াহিদ নাইন্টি থার্ড ডিভিশনের হাতে আটক হয়েছিল। মারাত্মকভাবে মারধোরের পর তারা তাকে মার্কিন বাহিনীর হেফাজতে পৌঁছে দেয়। সেখানে তাকে একটি খাঁচার ভেতরে আটক রাখা হয় এবং সেই খাঁচার ভেতরেই তার মৃত্যু হয়। মার্কিন সামরিক কর্মীরা তার বুকে ও পেটে পোড়া দাগ এবং তার নিতম্বে এবং কটি-সন্ধিতে আঘাতের ক্ষত লক্ষ্য করেছিল। অবমুক্ত করা গোপন তদন্ত নথি অনুযায়ী মার্কিন বিশেষ বাহিনীর সৈন্যরা মন্তব্য করেছিল, ওয়াহিদের ক্ষতগুলো ছিল নাইন্টি থার্ড ডিভিশন দ্বারা ব্যবহৃত “স্বাভাবিক জিজ্ঞাসাবাদ পদ্ধতি”র সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এক সার্জেন্ট বলেছিল, সে অন্যান্য বন্দীদেরও একই রকম আঘাতের ছবি সরবরাহ করতে পারবে। কিন্তু তা সত্ত্বেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নাইন্টি থার্ড ডিভিশনকে সাহায্য করা অব্যাহত রাখে। এটি ছিল লেহি আইনের পরিষ্কার লঙ্ঘন, যা আমেরিকান কর্মীদের মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী যেকোনো বাহিনীকে জ্ঞাতসারে সমর্থন করতে বাধা প্রদান করে।
২০০৪ সালে জাতিসংঘ সরকারপন্থী মিলিশিয়াগুলোকে নিরস্ত্র করার জন্য একটি কর্মসূচি চালু করে। নাইন্টি থার্ড ডিভিশনের এক কমান্ডার এই পরিকল্পনার কথা জানতে পারে এবং তাদের মিলিশিয়ার একটি অংশকে আমেরিকানদের সাথে চুক্তিবদ্ধ একটি “প্রাইভেট সিকিউরিটি কোম্পানি” হিসেবে পুনর্বিন্যাস করে। এর ফলে ডিভিশনের যোদ্ধাদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশই নিজেদের সশস্ত্র রাখতে সক্ষম হয়। অপর এক-তৃতীয়াংশ সড়ক নির্মাণের সাথে জড়িত কর্মীদের সুরক্ষা প্রদানের কাজে নিয়োজিত টেক্সাসভিত্তিক একটি সংস্থার সাথে চুক্তি করে তাদের অস্ত্র রক্ষা করে। কারজাই সরকার যখন এই প্রাইভেট গার্ডদের পুলিশ দিয়ে প্রতিস্থাপন করার চেষ্টা করে, তখন নাইন্টি থার্ড ডিভিশনের ঐ নেতা একটি হামলার আয়োজন করে পনেরোজন পুলিশকে হত্যা করে এবং প্রাইভেট গার্ডদের চুক্তি পুনর্বহাল করতে সাহায্য করে। ডিভিশনের অবশিষ্ট এক-তৃতীয়াংশ নিজেদের প্রাক্তন সহকর্মীদের কাছ থেকেই চাঁদাবাজির হুমকি পেয়ে অস্ত্রসহ পালিয়ে যায় এবং তালেবানের সাথে যোগ দেয়।
মার্কিন নেতৃত্বাধীন কোয়ালিশন বাহিনীর বার্তাগুলো ক্রমবর্ধমান বিদ্রোহকে স্বাধীনতার বিরুদ্ধে চরমপন্থীদের লড়াই হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছিল। কিন্তু ন্যাটোর যেসব নথিপত্র আমি পেয়েছিলাম, সেখানে স্বীকার করা হয়েছিল যে, ইসহাকজাই গোত্রের সদস্যরা দাদ মোহাম্মদ খান তথা আমির দাদোর হাতে এত বেশি নিপীড়নের শিকার হয়েছিল যে, তাদের কোয়ালিশন বাহিনীকে বিশ্বাস করার “কোনো ভালো কারণ নেই”।
বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে গ্রাম রক্ষার জন্য পান কিল্লায়ের প্রবীণরা তাদের ছেলেদের অস্ত্র হাতে তুলে নিতে উৎসাহিত করতে শুরু করে। তাদের অনেকে সাবেক তালেবান সদস্যদের সাথেও যোগাযোগ করে। শাকিরা চাইছিল তার স্বামীও কিছু একটা করুক- গ্রাম পাহারা দিতে সাহায্য করুক, অথবা তাদেরকে পাকিস্তানে সরিয়ে নিয়ে যাক, কিন্তু তার স্বামী পাত্তা দিচ্ছিল না।
পাশের একটি গ্রামে মার্কিন বাহিনী যখন জনপ্রিয় এক গোত্রীয় নেতার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে হত্যা করে এবং তার পুত্রকে পঙ্গু করে দিয়ে চলে যায়, তখন সেখানকার মহিলারা পুরুষদের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বলতে থাকে, “তোমাদের মাথায় বড় বড় পাগড়ি আছে, কিন্তু তোমরা কাজের কাজ কী করেছ? তোমরা আমাদেরকে রক্ষা করতে পারছ না, তারপরেও নিজেদেরকে পুরুষ বলে দাবি করছ?”
পরবর্তী পর্বে থাকছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন কোয়ালিশন বাহিনীর একের পর এক অভিযানের মুখে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া শাকিরা কীভাবে একপর্যায়ে মরিয়া হয়ে ওঠে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য, সেই কাহিনী। পড়তে ক্লিক করুন এখানে।