শুরু করবো একজন মহান বাঙালির কথা বলে যিনি ছিলেন প্রথম ভারতীয় সিভিল সার্ভিস অফিসার। তিনি আর কেউ নন কলকাতার ঠাকুরবাড়ির মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের পুত্র সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বড়ভাই। সিভিল সার্ভিস সবার জন্য উন্মুক্ত হওয়ার অনেক বছর পরে প্রথম ভারতীয় হিসেবে সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
তখন সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা হতো একমাত্র লন্ডনে। তাই, মধ্যবিত্ত বা নিম্নবিত্ত ভারতীয় পরিবারের কেউ মেধাসম্পন্ন হলেও সিভিল সার্ভিসে যাওয়া তার জন্যে ছিল খুবই কঠিন। সেই অসাধ্য সাধন করে দেখান সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর। এ মহান বাঙালি সিভিল সার্ভিসের প্রতিটি সদস্যের অনুকরণীয়।
বিভিন্ন কমিশনের সুপারিশে সিভিল সার্ভিসে ভারতীয়করণ প্রক্রিয়া
আইচিসন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়িত করে সিভিল সার্ভিস কিছুটা অংশগ্রহণমূলক এবং সুস্থিতিপূর্ণ হলেও সব গোষ্ঠীর ক্ষোভ পুরোপুরি প্রশমিত করা সম্ভব হয় না। সিভিল সার্ভিস সবার জন্য উন্মুক্ত হলেও সেখানে শ্বেতাঙ্গদের আধিপত্য ছিল একচেটিয়া। ভারতীয় যারা এলিট সার্ভিসে প্রবেশ করেছিলেন পদোন্নতি ও নিয়োগে তাদের সাথে বৈষম্য করা হয়। সব প্রার্থীর জয়েনিং একসাথে হলেও ভারতীরা তাদের পুরো চাকরিজীবনে জেলা জজ বা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের বেশি উপরে উঠতে পারেনি। এমতাবস্থায় স্থানীয় নতুন উদ্ভূত ইংরেজি শিক্ষায় ও কালচারে শিক্ষিত গোষ্ঠীর ক্ষোভ ও হতাশা বাড়তে থাকে।
অবাধ ও একপেশে প্রতিযোগিতার বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সিভিল সার্ভিসে দাবি উঠতে থাকে সংরক্ষণ ব্যবস্থার। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার তাতে সায় দেয় না। তাদের যুক্তি ছিল, এদেশের সব গোষ্ঠী এখনও সিভিল সার্ভিসের জন্য যোগ্যতার মানদণ্ডে যথোপযোগী নয় । ভারতে মুসলমানরা সব সময়ই ভেবে এসেছে তাদের সাথে বৈষম্য করেছে ইংরেজ সরকার ও হিন্দু নীতিনির্ধারকেরা। তারা মনে করত অবাধ প্রতিযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকলে রাজনীতি ও আমলাতন্ত্রে হিন্দু ভদ্রলোকেরা একচ্ছত্র প্রাধান্য বিস্তার করবে। সম্প্রদায়গতভাবে এমন দাবি ওঠার ভিত্তিতে সরকার ইসলিংটন কমিশন গঠন করে।
কমিশন বিষয়টি দীর্ঘ ৩ বছর ধরে পর্যবেক্ষণ ও যাচাই-বাছাইয়ের পরে রিপোর্ট পেশ করে। রিপোর্টে প্রভেন্সিয়াল ও আইসিএস উভয় সিভিল সার্ভিসেই প্রধান প্রধান সম্প্রদায়ের আনুপাতিক ও প্রতিনিধিত্বপূর্ণ নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। কংগ্রেস ও জাতীয়তাবাদী পত্রিকাগুলো রিপোর্টের তীব্র বিরোধতা করে লেখা প্রকাশ করে। তার বছর তিনেক পরে মন্টেগু-চেমসফোর্ড কমিশন গঠন করা হয়। এ কমিশন প্রস্তাব করে, আইসিএসে এক-তৃতীয়াংশ ভারতীয়দের জন্যে সংরক্ষণের। এরপর আবার আরেকটি কমিশন গঠন করা হয় ১৯২৪-এ। লী কমিশন। এ কমিশন মন্টেগু-চেমসফোর্ড কমিশনের রিপোর্ট আরেক দফা পর্যালোচনা করে এবং সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে সিভিল সার্ভিসকে ভারতীয়করণের সুপারিশ করে।
লী কমিশনের রিপোর্টে শূন্য আইসিএস পদের শতকরা ২০ শতাংশ প্রাদেশিক বা প্রভিন্সিয়াল অফিসারদের দ্বারা এবং বাকি ৮০ শতাংশ ভারতীয় ও ইংরেজ অফিসারদের দ্বারা পূরণ করার সুপারিশ করা হয়। এ কমিশনের সুপারিশের মাধ্যমেই ইন্ডিয়ান পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠন করা হয়। পরে এর নতুন নামকরণ করা হয় ফেডারেল পাবলিক সার্ভিস কমিশন। এ কমিশনের উপরেই দ্বায়িত্ব বর্তায় সিভিল সার্ভিসের রুলস প্রস্তুতের, নিয়োগ আহ্বানের, নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে প্রার্থী মূল্যায়নের এবং প্রাদেশিক ও কেন্দ্রীয় উভয় সার্ভিসে ভারতীয়দের স্বার্থ সংরক্ষণের।
১৯৩৫ এর ভারত শাসন আইনে কয়েকটি সুপিরিয়র সার্ভিসকে প্রাদেশিক সার্ভিসের এখতিয়ারে প্রদান করা হয়। ব্রিটিশ ভারতে সর্বশেষ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ১৯৪৩-এ। উত্তীর্ণ প্রার্থীরা পরের বছর অক্টোবর মাসে চাকরিতে যোগদান করে। এরাই ছিল ব্রিটিশদের নিয়োগ দেওয়া শেষ ব্যাচ।
সিভিল সার্ভিস ত্যাগী নেতাজী
ভারতের আমলাতন্ত্রের ইতিহাসে একজন ব্যক্তি বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে আছেন আইসিএস পরীক্ষা পাশ করেও সিভিল সার্ভিসে যোগদান না করার জন্য। তিনিও একজন বাঙালি। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু। ব্রিটিশদের কর্মচারী না হয়ে তিনি হয়েছিলেন ভারত থেকে ব্রিটিশদের বিতাড়িত করার সংগ্রামের একজন অন্যতম অগ্রদূত। সম্প্রতি ভারতে আরেকজন তরুণ আইএএস (ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস) অফিসার সিভিল সার্ভিসের চাকরি ছেড়ে রাজনীতিতে যোগদান করেছেন।
শাহ ফয়সাল নামের লোকটি ২০১০ এ কাশ্মীর থেকে আইএএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। ছয় বছর চাকরির পরে ২০১৬ তে চাকরি ছেড়ে ‘জম্মু এন্ড কাশ্মীর পিপলস মুভমেন্ট’ নামক দল গঠন করেন। সম্প্রতি তিনি রাজনীতি থেকেও অবসর গ্রহণ করেছেন।
নতুন দেশে আইসিএস ও সিএসপিদের আত্মীকরণ
বিশ্বযুদ্ধোত্তর ভারতে স্বাধীনতার আন্দোলন জোরেসোরে আরম্ভ হয়। ইংরেজরাও তরিঘরি করে ভারত ভাগ করে ইংল্যান্ডগামী জাহাজে উঠে পড়ে। উপমহাদেশে নতুন দুটো দেশের জন্ম হয়– ভারত ও পাকিস্তান। মোটামুটি সবকিছুই আনুপাতিক হারে দুটো দেশের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। আমলাতন্ত্রও। ১৯৪৭ এর দেশভাগের পরে আইসিএস অফিসারদের ৭০০ জন ভারতে এবং ৮২ জন মতান্তরে ৯২ জন অফিসার পাকিস্তানে যোগদান করে। সাতশজন আইসিএস নিয়ে নেহেরুজী স্বাধীনতা পরবর্তী ভারত গড়ার কাজ শুরু করেন। ভারতে এই এলিট ক্যাডারদের জন্য ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস (আইএএস) নামক নতুন একটি সার্ভিস তৈরি করে ঐ অফিসারদের আইএএসে আত্মীকরণ করা হয়।
পাকিস্তান ৮২ জনকে নিয়ে সৃষ্টি করে নতুন এলিট সার্ভিস সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান (সিএসপি)। এরাই হয় নতুন দেশ পাকিস্তানের নীতিনির্ধারক। ১৯৪৮ সাল থেকে রিক্রুট হওয়া নবীন সিএসপিদের দক্ষভাবে পেশাদারিত্বের সাথে প্রশাসন পরিচালনায় ব্রতী করেন সিএসপিতে আত্মীকৃত আইসিএসগণ। সিএসপির আরেকটি বিশেষত্ব ছিল। রিক্রুট হওয়া নবীনদের প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে অক্সফোর্ডে পাঠানো হতো। অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ হওয়ায় কয়েকবছর পরে সরকার এটি বাতিল করে।
ইস্ট পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস বা ইপিসিএস নামে আরেকটি সার্ভিস চালু করেছিল পাকিস্তান সরকার। আইসিএসদের ধারা অক্ষুণ্ণ রেখে কঠিন ও কঠোরভাবে সিএসপিরা তাদের দ্বায়িত্ব পালন করে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ১৯৭২ সালে সৃষ্টি করা হয় বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস)। ২০৯ জন সিএসপি অফিসারকে আত্মীয়করণ করা হয় বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে। স্বাধীন বাংলাদেশে ব্রিটিশ আমলের বাংলা প্রদেশের প্রাদেশিক সিভিল সার্ভিস বেঙ্গল সিভিল সার্ভিস এবং ইস্ট পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের কয়েকজন সিনিয়র সদস্যকে সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
আইসিএস ও সিএসপি আমলাগণের ব্যাপারে কয়েকটি ঐতিহাসিক মন্তব্য
আইসিএসদের খ্যাতি ছিল জগৎ জুড়ে। ব্রিটিশরা ভারত ছাড়ার মুহূর্তে মাত্র হাজারের একটু বেশি সংখ্যক আইসিএস অফিসার ছিল যাদের দিয়ে ইংরেজরা প্রায় ত্রিশ কোটি ভারতীয়দের শাসন করেছে। রাশিয়ার স্ট্যালিন আইসিএসদের প্রশংসায় ছিলেন পঞ্চমুখ। ১৯৩৫ সালে হাউস অব কমন্সে ভাষণ দেওয়ার সময় তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড এল লয়েড বলেছিলেন,
“The Indian Civil Service is the steel frame on which the whole structure of our government and our administration in India rests.”
সরদার বল্লভ ভাই প্যাটেল জাদরেল ও আপোষহীন নেতা হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন। তিনি ইন্ডিয়ান পার্লামেন্টের অধিবেশনে ভাষণে দেওয়ার সময় আইসিএসদের দক্ষতার প্রশংসা করে বলেছিলেন,
“Without them, the country would have collapsed.”
ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর পিতা মতিলাল নেহেরু আইসিএসদের ব্যাপারে মন্তব্য করেছিলেন,
“The greatest of the services in the world which has produced some of the most distinguished builders of the British Empire.”
স্বাধীন ভারতের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রথম অর্থমন্ত্রী ছিলেন দুজন আইসিএস অফিসার। তারা হলেন কেপিসি মেনন এবং চিন্তামন দেশমুখ। জওহরলাল নেহেরু প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে আইসিএসদের সিভিল সার্ভেন্ট বা জনপালনকৃত্যক হতে নির্দেশ প্রদান করেছিলেন। ’৪৭ এর পরে ভারতে আমলাতন্ত্রের ততটা আধিপত্য দেখা যায়নি যেমনটি দেখা গিয়েছিল পাকিস্তানে।
কায়েদ-এ-আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ শিক্ষিত ও ব্যক্তিত্ববান রাজনীতিবিদ হলেও অধিকাংশ সময় তিনি থাকতেন শারীরিকভাবে অসুস্থ। তিনি আমলাদের রাজনীতিবিদদের উপর নজরদারি করতে বলতেন। তার মৃত্যুর পরে পাকিস্তানের শাসনব্যবস্থায় একটি অস্থিরতার সৃষ্টি হয়। নতুন দেশে আত্মীকৃত ৮২ মতান্তরে ৯২ জন আমলার উপরে প্রচুর চাপ সৃষ্টি হয় প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার। তারা দিনরাত পরিশ্রম করে প্রশাসনে ভারসাম্য ও স্থিতিশীল অবস্থা আনয়নের চেষ্টা করেন। এদের তত্ত্বাবধায়নেই পাকিস্তান ফেডারেল পাবলিক সার্ভিস কমিশন, লাহোর সিভিল সার্ভিস একাডেমিসহ পাকিস্তান আমলের সিভিল সার্ভিস সংশ্লিষ্ট সকল কাঠামো ও প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল।
গবেষক Ann Ewing সিএসপি ও আইসিএসদের পেশাদারিত্ব ও নেতৃত্বদানের পরম্পরাকে নির্দেশ করে লিখেছিলেন,
“The Tradition of this elite service did not pass into obscurity. Of course, the new civil services set up in the newly created states of India and Pakistan were not simply a reincarnation of their common forebear, but they owed much to its traditions and standard.”
নবসৃষ্ট পাকিস্তানে আমলাদের আধিপত্য
প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান আমলাদের বা সিএসপিদের ‘জনগণের মনিব’ বলে আখ্যায়িত করা শুরু করেন। সিএসপি চৌধুরী মোহাম্মদ আলীকে সন্তুষ্ট রাখতে প্রশাসনে সেক্রেটারি জেলারেল নামক একটি পদ সৃষ্টি করা হয়। কয়েক বছর সে পদে থাকার পর তিনি অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেলে পদটিরও বিলুপ্তি ঘটানো হয়। আরেক সিএসপি অফিসার গোলাম মোহাম্মদ পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল হয়েছিলেন পরবর্তীতে।
পাকিস্তান সৃষ্টির পরে পশ্চিম পাকিস্তানী আমলাদের দৌরাত্ম্য ও কর্তৃত্ব প্রচণ্ডমাত্রায় বেড়ে যায়। যুগ্মসচিব পদমর্যাদার এক সিএসপি কর্মকর্তা আজিজ আহমেদকে পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যসচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি মুখ্যসচিব পদে থেকে ক্ষমতার যথেচ্ছ ব্যবহার করতে থাকেন। পূর্ব পাকিস্তানি সিএসপি অফিসাররা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। তাদের দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব অবমূল্যায়িত হতে থাকে। সিএসপি নিয়োগের সময় পূর্ব পাকিস্তানের প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা ও মেডিকেল টেস্টে অকারণে কম নম্বর দেওয়া হতো।
আমলাতন্ত্র প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু
বর্তমান বাংলাদেশে আমলাতন্ত্র যে পর্যায়ে পৌঁছেছে স্বাধীনতার পর পর কাঠামোগত দিক থেকে এবং কার্যক্রমে ঠিক আজকের মতো ছিল না। তখন জেলার অধীনে ছিল মহকুমা। উপজেলা ছিল না। মহকুমাকে সাব-ডিভিশনও বলা হতো। মহকুমা প্রশাসকদের বলা হতো সাব-ডিভিশনাল অফিসার বা এসডিও।
বঙ্গবন্ধু প্রশাসনকে গতিশীল করতে অনেকগুলো উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। মহকুমাগুলোকে জেলা পর্যায়ে উন্নীত করে জেলা গভর্নর পদ সৃষ্টি করার কথা ছিল। থানা প্রশাসনিক নামে আরেকটি স্থানীয় প্রশাসন তৈরি করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। হত্যাকাণ্ডের কয়েকদিন আগে এক ভাষণে বঙ্গবন্ধু আমলাদের উদ্দেশ্যে বলেন,
“আপনি চাকরি করেন, আপনার মায়নে দেয় ঐ গরীব কৃষক, আপনার মায়নে দেয় ঐ গরীব শ্রমিক, আপনার সংসার চলে ঐ টাকায়, আমি গাড়ি চড়ি ঐ টাকায়, ওদের সন্মান করে কথা বলেন, ওদের ইজ্জত করে কথা বলেন। …সরকারি কর্মচারীদের বলব– মনে রেখো, এ ব্রিটিশ কলোনি নয়, পাকিস্তানি কলোনি নয়। যে লোককে দেখবা তার চেহারাটা তোমার বাবার মতো, ভাইয়ের মতো। ওরাই সন্মান বেশি পাবে, কারণ ওরা নিজে কামাই করে খায় আর তোমরা কাজ করে। …সমাজ যেন ঘুণ ধরে গেছে! এ সমাজকে আমি চরম আঘাত করতে চাই। এই আঘাত করতে চাই যে আঘাত করেছিলাম পাকিস্তানীদের– সেই আঘাত করতে চাই এই ঘুণে ধরা সমাজব্যবস্থাকে।”
(এরপর পড়ুন পরবর্তী পর্বে)