৭ অক্টোবর, ২০০১। নাইন-ইলেভেনের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধ। এই যুদ্ধের অংশ হিসেবে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র আর তার মিত্ররা শুরু করে অপারেশন এনডিউরিং ফ্রিডম। প্রথম দিনেই অপারেশনের অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হয় পাইলটবিহীন সামরিক বিমান, বর্তমানে যেটি সামরিক ড্রোন নামে পরিচিত। সিআইএ পরিচালিত প্রথম ড্রোন হামলার লক্ষ্য ছিলেন শীর্ষ তালেবান নেতা মোল্লা মোহাম্মদ ওমর। সিআইএর পরিচালিত সেই অভিযান ব্যর্থ হয়, বেঁচে যান সেই নেতা। কিন্তু এরপর থেকে নিয়মিতই আফগানিস্তানে আল-কায়েদা আর তালেবানদের দমনে ব্যবহৃত হয়েছে ড্রোন প্রযুক্তি, এই প্রযুক্তি যুক্তরাষ্ট্র ব্যবহার করছে অন্যান্য যুদ্ধফ্রন্টেও।
অপারেশন এনডিউরিং ফ্রিডম একবিংশ শতাব্দীর ইতিহাসে জায়গা করে নেবে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বধ্যভূমি তৈরির রঙিন আখ্যান হিসেবে। স্বদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আত্মত্যাগের অমর কাব্য হিসেবে। এর পাশাপাশি, এই যুদ্ধটি প্রথাগত যুদ্ধের ধরন বদলে দিয়েছে, মানুষচালিত সামরিক বিমানগুলোর বিকল্প উঠে আসা শুরু হয়েছে এই যুদ্ধের মাধ্যমে।
যুক্তরাষ্ট্রের সমৃদ্ধ অস্ত্রশিল্পের অন্যতম সেরা সংযোজন এই দূর থেকে নিয়ন্ত্রণযোগ্য সামরিক ড্রোনগুলো। অস্ত্র বাণিজ্যে বরাবরই শীর্ষে ছিল যুক্তরাষ্ট্র, নিজেদের সামরিক উদ্ভাবনগুলো রপ্তানি করেছে বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোতে। তবে অস্ত্র রপ্তানিতে শীর্ষে থাকলেও এমকিউ-৯ এর মতো ড্রোনগুলো কোনো মিত্র দেশেই এখনও বিক্রি শুরু করেনি তারা।
তবে যুক্তরাষ্ট্র ড্রোন রপ্তানি না করলেও বসে থাকেনি অন্যান্য সামরিক শক্তি, উদ্ভাবনী চেষ্টা চালিয়েছে আঞ্চলিক শক্তিগুলোও। এর মধ্যেই ড্রোন উৎপাদন শুরু করেছে রাশিয়া, যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে চীনের তৈরি ড্রোনও। উদ্ভাবনী কাজে এগিয়ে থাকা ইসরায়েলও নিজস্ব সামরিক কারখানাতে তৈরি করেছে ড্রোন, ব্যবহার করছে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিতে। তবে নিজস্ব প্রযুক্তিতে ড্রোন উৎপাদনে সবচেয়ে বড় সাফল্য দেখিয়েছে অটোমান সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকার তুরস্ক।
তুরস্কের ড্রোনের প্রথম ব্যবহার দেখা যায় সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে। বাশার আল আসাদের সরকারকে ড্রোন প্রযুক্তির সহায়তা দেওয়া শুরু করে রাশিয়া। শুরুতে ইদলিবের বিদ্রোহীদের ড্রোন ব্যবহার করে কোণঠাসা করে ফেলে দামেস্কে, বিভিন্ন সময়ে নিহত হন প্রায় অর্ধশতাধিক তুর্কি সৈন্য। ইদলিবে যুদ্ধের পরিস্থিতি বদলে যায় তুরস্ক ড্রোন আক্রমণ শুরু করলে। ড্রোনের মাধ্যমে তুরস্ক আসাদ সরকারের অধীনে থাকা সামরিক যানগুলোকে ধ্বংস করে, সামরিক যানগুলোকে জ্যাম করে দিয়েছে, হত্যা করেছে আসাদের অনুগত শত শত যোদ্ধাকে। ফলে রাশিয়ার ড্রোনের সহায়তায় যে এলাকাগুলো দখল করেছিল আসাদের বাহিনী, সেসব থেকে পিছু হটতে হয় তার বাহিনীকে।
যুদ্ধফ্রন্টে তুরস্কের সামরিক ড্রোনের পরবর্তী ব্যবহার হয় লিবিয়াতে। জেনারেল হাফতারের বাহিনীকে সমর্থন করতে যুদ্ধফ্রন্টে চীনা ড্রোন নিয়ে আসে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ড্রোনগুলোতে সংযুক্ত ছিল লেজার গাইডেড মিসাইল। ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্রুত বড় আকারের সফলতা পায় হাফতারের নেতৃত্বাধীন লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মি। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে গভর্মেন্ট অব ন্যাশনাল একর্ডের পক্ষে ড্রোন প্রযুক্তি নিয়ে হাজির হয় তুরস্ক, যুদ্ধ ফ্রন্টগুলোতে শুরু হয় তুর্কি ড্রোন বায়রাকাত টিবি২ আর আঙ্কা-এস এর ব্যবহার।
তুরস্কের ড্রোন সর্বশেষ আলোচনায় এসেছে নাগার্নো-কারাবাখের বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে আজারবাইজান-আর্মেনিয়ার যুদ্ধে। সিরিয়া আর লিবিয়ার মতো এই যুদ্ধেও আজারবাইজানের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় আবির্ভূত হয় তুরস্কের ড্রোন প্রযুক্তি, নিশ্চিত করে আজারবাইজানের বিজয়।
ড্রোন প্রযুক্তিতে তুরস্কের এই উন্নতিতে ‘ড্রোন বিপ্লব’ হিসেবে আখ্যায়িত করছেন অনেক নিরাপত্তা বিশ্লেষক। এই প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা বদলে দিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিকে, বদলে দিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর নিরাপত্তা কাঠামোও। তুরস্কের ড্রোন বিপ্লবের ফলে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তার কাঠামোতে রাজনৈতিক পরিবর্তনগুলো নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে একটি আর্টিকেল লিখেছেন প্রখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ফ্রান্সিস ফুকোয়ামো। ‘আমেরিকান পারপাস’ ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আর্টিকেলটি রোর বাংলার পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যের ড্রোন বিপ্লব
২০১০ সালের দিকে যখন আমি প্রথমবারের মতো ড্রোন নিয়ে খেলার সুযোগ পাই, ফাইনান্সিয়াল টাইমসে আমি আমার অনুমানগুলো নিয়ে একটি লেখা লিখি। আমার অনুমান ছিল, আমি যেভাবে ড্রোন চালাতে পারছি, আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রভাবকগুলো এভাবে ড্রোন চালাতে পারলে তার প্রভাব আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে পড়বে। সেই সময়ে ড্রোন প্রযুক্তির উপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের, তাদের সঙ্গী হয়েছিল ইসরায়েল। কিন্তু আমার কাছে তখনই মনে হয়েছিল, এই ড্রোন প্রযুক্তি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে অনিবার্যভাবে সংঘাতের ধরন বদলে দেবে। আমার কাছে তখন মনে হয়েছিল, ড্রোন প্রযুক্তি নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে হত্যায় কার্যকরভাবে ব্যবহৃত হতে পারে। সম্প্রতি হেনরি সকলস্কির রিপোর্টগুলো বলছে, ড্রোনের সাহায্যে নিরাপত্তার সাথে সংশ্লিষ্ট স্থাপনাগুলোর পাশাপাশি পারমাণবিক চুল্লির মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাতেও আক্রমণ চালাতে পারে। এই সংকটগুলো এখনো বড় সংকট হিসেবে আবির্ভূত হয়নি, কিন্তু ড্রোনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানচিত্র বদলে দেওয়া সম্ভব।
সাম্প্রতিক সময়ে এই ড্রোন বিপ্লবের মূল কারিগর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপে এরদোয়ান। তুরস্ক তাদের অভ্যন্তরীণ সামরিক কারখানাতে ড্রোন প্রযুক্তির উৎকর্ষ ঘটিয়েছে এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন যুদ্ধফ্রন্টে এই প্রযুক্তির ব্যবহার করছে। তুরস্ক তার উদ্ভাবিত ড্রোনগুলো যেমন লিবিয়া, সিরিয়া আর নাগরানো-কারাবাখে ব্যবহার করেছে, তেমনি ব্যবহার করছে নিজ দেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী পিকেকে রুখতেও। এই প্রক্রিয়াতে তুরস্ক আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়াতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এবং এটি বিভিন্ন ইস্যুতে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া বা চীনের ভূমিকাকে সীমিত করতে পারছে।
তুরস্কের ড্রোন আঙ্কা-এস তৈরি করেছে তুরস্কের মহাকাশ শিল্পের প্রতিষ্ঠান তুসাস দ্বারা। এর বাইরে, বায়রাকতার টিবি২ মডেলের ড্রোন তৈরি করেছে বায়কার মাকিনা কোম্পানি, যার নেতৃত্বে রয়েছেন এমআইটি ফেরত সেলজুক বায়রাকতার। তিনি আবার এরদোয়ানের মেয়ের জামাই। তুরস্কের নিজস্ব প্রযুক্তিতে ড্রোন তৈরির প্রাথমিক প্রেরণা এসেছিল ১৯৭৫ সালে তুরস্কের উপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা থেকে, ভূমিকা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নিজের উৎপাদিত ড্রোন সরবারহে অনীহারও। তুরস্ক ইসরায়েল থেকে ড্রোন আমদানি করলেও এটি তুর্কিদের সন্তুষ্ট করতে পারেনি। আবার ড্রোন তৈরি করা তুলনামূলকভাবে সহজ। সম্প্রতি উদ্ভাবিত তুরস্কের ড্রোন প্রযুক্তিগুলো বেশ আগ্রহ জাগানিয়া। টিবি২ মডেলের ড্রোন একটানা ২৪ ঘন্টা অভিযান চালাতে পারে। তুরস্কের এই ড্রোনগুলো পুনরুদ্ধার অভিযানের পাশাপাশি ব্যবহৃত হচ্ছে অ্যাটাক মিশনেও।
তুরস্কের ড্রোনগুলোর কার্যকারিতা পরীক্ষার প্রথম সুযোগ হয় সিরিয়াতে, ২০২০ সালের মার্চ মাসে। রাশিয়ার মদদে আসাদ সরকারের চালানো অভিযানে ৩৬ জন্য তুর্কি সেনা মারা যায়, বিপরীতে বড় আকারে সামরিক অভিযান চালায় তুরস্ক। পরবর্তীত প্রকাশিত ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, তুরস্কের সামরিক ড্রোনগুলো একের পর এক সামরিক যান ধ্বংস করছে, যার মধ্যে ছিল ১০০ এর বেশি ট্যাংক, ছিল সামরিক যানবাহন। অভিযানে প্রায় গুঁড়িয়ে যায় সিরিয়ার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম।
ইদলিবে তুরস্কের এই অভিযান বাশার আল আসাদের প্রতি অনুগত সামরিক বাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য করে, ইদলিবে নিশ্চিত হয় শরণার্থীদের নিরাপত্তা। এরপর তুরস্কের ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহার ঘটে লিবিয়াতে, ২০২০ সালের মে মাসে। স্নগযুক্ত আরব আমিরাতের সমর্থন থাকা লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মিকে পিছু হটতে বাধ্য করে যুদ্ধক্ষেত্রে ড্রোনের ব্যবহার। সর্বশেষ, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া নাগর্নো-কারাবাখ সংকটেও তুরস্কের ড্রোনগুলো প্রায় ২০০ ট্যাংক, ৯০টির উপরে সামরিক যান ধ্বংস করে দেয়, ১৮২টি আর্টিলারি যানকে বাধ্য করে পিছু হটতে। এই সাফল্য তুর্কি জাতীয়তাবাদের অংশ হয়ে যায় পরবর্তীতে।
আমার কাছে মনে হয়, তুরস্কের এই সামরিক উত্থানে মধ্যপ্রাচ্যের ভূমি কাঠামোকে বদলে দিতে পারে, যা বিদ্যমান রাজনৈতিক কাঠামোর জন্য হুমকিস্বরূপ হতে পারে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রকৃতি যেভাবে বিমানবাহী রণতরিগুলো বদলে দিয়েছিল, কিংবা ড্রেডনট যুদ্ধক্ষেত্রে যেভাবে তার পূর্ববর্তী শ্রেণিগুলোকে অচল করে দিয়েছিল, সেভাবেই তুরস্ক মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের প্রকৃতি ও কাঠামো বদলে দিতে পারে।
গালফ যুদ্ধে ১৯৯১ সালে ও ২০০৩ সালে দুবার ইরাককে পরাজিত করা হয়। এই যুদ্ধগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যের সম্মিলিত স্থলবাহিনীগুলো ট্যাংককে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে। ট্যাংককেন্দ্রিক স্থলবাহিনীর ধারণার অস্তিত্ব ছিল বহু বছরের, যেহেতু মনে করা হতো কেবলই ট্যাংকই ট্যাংককে ধ্বংস করতে পারে। এখানে একটি ক্ষুদ্র ব্যাপার উল্লেখ করা যায়। ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েল মিশরের অল্প কিছু ট্যাংকই ধ্বংস করতে পেরেছিলো, কারণ আকাশ থেকে ট্যাংকের মতো ক্ষুদ্র টার্গেটে আঘাত হানা সবসময়ই চ্যালেঞ্জিং। পরবর্তী সময়ে ট্যাংকবিধ্বংসী প্রযুক্তির উন্নয়নের জোর দেওয়া হয়। তবুও ট্যাংক ধ্বংস করার জন্য এ-১০ এর মতো ব্যয়বহুল বিমান ব্যবহার করতে হয়। যার ফলে যুদ্ধের খরচ বেড়ে যায় এবং এর পাশাপাশি যুক্ত হয় বিমান প্রতিরক্ষার খরচ।
২০২০ সালে তুরস্কের আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে উত্থানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে ড্রোন প্রযুক্তি। দেশটি তিনটি সংঘাতের গতিপথ নির্ধারণ করে দিয়েছে এবং আগামী দিনগুলোতে এরকম আরো পদক্ষেপ নেওয়ার প্রত্যাশা রাখে। একসময় যেখানে মনে হচ্ছিল, মধ্যপ্রাচ্যে শিয়া-সুন্নি বিভাজনের উপর দ্বিপোলার কাঠামো গড়ে উঠবে, তুরস্কের উত্থান সেই সমীকরণকে বদলে দিচ্ছে, তৈরি করছে মাল্টি-পোলার মধ্যপ্রাচ্য। তুরস্ক এখনও কোনো স্থায়ী মিত্র গড়ে তোলেনি। এটি লিবিয়াতে গালফের সুন্নি রাষ্ট্রগুলোর বিরোধিতা করেছে, রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ কিনলেও সিরিয়াতে মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে রাশিয়ার। পাশাপাশি, ন্যাটোর সদস্যপদ থাকার পরেও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক প্রতিনিয়ত উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে, তুরস্ক টিবি২ ড্রোন বিক্রি করেছে ইউক্রেনের কাছে।
এর ভালো কিছু ফলাফলও রয়েছে। সিরিয়ার ইদলিবে তুরস্কের হস্তক্ষেপ সেখানে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের সম্ভাব্য গণহত্যার হাত থেকে বাঁচিয়েছে। ইদলিব প্রদেশ আসাদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেলে সেটি আবারও ইউরোপের জন্য নতুন করে শরণার্থী সংকট তৈরি করত, লিবিয়াতে জেনারেল হাফতারও সামগ্রিকভাবে ভালো কিছু উপহার দিতে পারতেন না। আবার নাগার্নো-কারাবাখে তুরস্কের ভূমিকা আর্মেনিয়ার জন্য শরণার্থী সমস্যা তৈরি করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের বৈচিত্র্যময় সংকটগুলোর সমাধান করা সবসময়ই কষ্টকর। এজন্যই, প্রায় একযুগ ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে সিরিয়াতে।
যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন পলিসির সমালোচকদের অনেকে এখনো সেই যুগে বাস করেন, যেসময় ড্রোন প্রযুক্তির একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ছিল যুক্তরাষ্ট্র আর ইসরায়েলের হাতে। কিন্তু, পৃথিবী এগিয়ে গেছে এবং ড্রোন যুদ্ধক্ষেত্রের বহুল ব্যবহৃত অস্ত্র হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। পরবর্তী দশ বছরের মধ্যে এটি যুদ্ধক্ষেত্রের প্রধান অস্ত্র হিসেবে আবির্ভূত হবে।