সৌরজগতের গ্রহদের রানী বলা হয় শনিকে। অন্যান্য যেকোনো গ্রহের চেয়ে শনির আবেদন সবচেয়ে বেশি, কারণ এর রহস্যময় বলয় বছরের পর বছর ধরে আগ্রহী করেছে বিজ্ঞানী ও সাধারণ মানুষদেরকে। ১৯৭৯ সালে পাইওনিয়ার ১১ মহাকাশযান শনি গ্রহের কাছ দিয়ে উড়ে যায় এবং সেখান থেকে শনির কিছু তথ্য পাঠায়। তবে সেসব তথ্য অপ্রতুল ছিল, তখনকার মহাকাশ প্রযুক্তিও এত বেশি উন্নত ছিল না। পাইওনিয়ারে তোলা ছবিগুলোর মানও তেমন ভালো ছিল না। তার উপর এটি ছিল ফ্লাইবাই মিশন। ফ্লাইবাই মিশনগুলোতে সাধারণত মহাকাশযানগুলো কোনো গ্রহ বা উপগ্রহের পাশ দিয়ে উড়ে যায় এবং তাতেই যতটা সম্ভব তথ্য সংগ্রহ করে পাঠায়। মহাকাশযানগুলো তখন কোনো গ্রহ বা উপগ্রহে ল্যান্ড করে না কিংবা তাদেরকে আবর্তনও করে না। ল্যান্ড করলে কিংবা আবর্তন করলে ঐ গ্রহ বা উপগ্রহ সম্বন্ধে তুলনামূলক নিখুঁত বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা যায়।
খুব আকর্ষণীয় গ্রহ শনি থেকে নিখুঁত ও বিস্তারিত তথ্য উদঘাটন করার জন্য বিশেষ কোনো মহাকাশযান প্রেরণ করা দরকার- এই চাহিদা চেপে বসেছিল বিজ্ঞানীদের মনে। মধুর এই অতৃপ্তি থেকে ছক কষা হয় একটি মিশনের, যে মিশন হবে একান্তই শনি গ্রহের জন্য। সেই ছক থেকেই পরবর্তীতে জন্ম নেয় ক্যাসিনি-হাইগেন্স মিশনের।
উল্লেখ্য, পাইওনিয়ার ১১ এর পরেও ভয়েজার ১ ও ভয়েজার ২ শনি গ্রহের কাছ দিয়ে যায়। সেগুলোও ছিল ফ্লাইবাই মিশন। তবে সেবারে ছবির মান ভালো ছিল। ভালো মানের ছবিতে শনির কয়েকটি উপগ্রহ আবিস্কৃত হয় এবং শনির বলয় সম্বন্ধে ধারণাও সামান্য পরিস্কার হয়। এ থেকে বিজ্ঞানীরা আরো আগ্রহী হয়ে ওঠেন স্বতন্ত্র একটি মিশনের জন্য। অনেক ছক কষার পর ১৯৯৭ সালে বিজ্ঞানীদের অনেক দিনের স্বপ্ন বাস্তব রূপ লাভ করে।
গবেষণা, পরিকল্পনা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও নির্মাণ শেষে ১৯৯৭ সালের ১৫ অক্টোবর ফ্লোরিডার ক্যাপ ক্যানেভারাল স্টেশন থেকে একে উৎক্ষেপণ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের নাসা, ইউরোপের ই.এস.এ এবং ইতালির এ.এস.আই মিলে এই মিশনটি পরিচালনা করে। পুরো মিশনটিকে একত্রে ক্যাসিনি-হাইগেন্স মিশন নামে ডাকা হয়।
এর নাম কেন ক্যাসিনি হলো আর হাইগেন্স কেন এলো, তার পেছনে জড়িয়ে আছে শনি গ্রহের ইতিহাস। ইতালীয় জ্যোতির্বিদ ও গণিতবিদ জিওভান্নি ডমিনিকো ক্যাসিনির নাম অনুসারে এই মহাকাশযানের নাম রাখা হয়েছে ক্যাসিনি। তিনি শনি গ্রহের চারটি উপগ্রহ এবং শনির বলয়ে বিস্তৃত বিভাজক আবিস্কার করেছিলেন। ১৬৭৫ সালে প্যারিসে বসে একটি প্রতিফলক টেলিস্কোপের সাহায্যে এই বিভাজকটি তিনি আবিস্কার করেন।
ক্যাসিনি শনি গ্রহকে আবর্তন করবে শুধু, শনিতে অবতরণ করবে না। এ ধরনের আবর্তনকারী মহাকাশযানকে বলা হয় অরবিটার। ক্যাসিনি আকারে অনেকটা বাসের সমান। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি ও ইতালির পক্ষ থেকে ক্যাসিনির ভেতরে ছোট একটি স্পেস প্রোব স্থাপন করে দেওয়া হয়, যেটি শনির উপগ্রহ টাইটানে অবতরণ করবে। যেসকল মহাকাশযান কোনো গ্রহ বা উপগ্রহে অবতরণ করে, তাদেরকে বলা হয় ল্যান্ডার। ক্যাসিনিতে স্থাপন করা এই ল্যান্ডারটির নাম হাইগেন্স প্রোব। এই নাম দেওয়া হয়েছে ডাচ জ্যোতির্বিদ ক্রিশ্চিয়ান হাইগেন্সের নাম অনুসারে। তিনি ১৬৫৫ সালে শনির চাঁদ টাইটান আবিষ্কার করেছিলেন। অরবিটার এবং ল্যান্ডার এই দুইয়ে মিলে পুরো মিশনের নাম হয়েছে ক্যাসিনি-হাইগেন্স মিশন।
পাশাপাশি শনিতে যাবার পথে ক্যাসিনি বেশ কয়েকটি গ্রহ-উপগ্রহের পাশ দিয়ে যায়। বোনাস হিসেবে সেসবের তথ্য-উপাত্তও পাঠায় পৃথিবীতে। এদিক থেকে এটি ফ্লাইবাই মিশনের কাজ করে। সে হিসেবে এটি একই সাথে অরবিটার, ল্যান্ডার ও ফ্লাইবাই মহাকাশযান।
১৯৯৭ সালে যাত্রা করে টানা ৭ বছর ভ্রমণ করে ২০০৪ সাল এটি পৌঁছায় শনির কক্ষপথে। শুক্র, পৃথিবী ও বৃহস্পতি গ্রহকে আবর্তন করে যায় এটি। পৃথিবী থেকে ক্যাসিনিকে সরাসরি শনিতে না পাঠিয়ে একটু ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে পাঠানো হয়েছে। কারণ সরাসরি পাঠালে প্রচুর পরিমাণ জ্বালানী প্রয়োজন হতো। বেশি জ্বালানী বহন করা মানে, বেশি ভারী হয়ে যাওয়া। বেশি ভারী হয়ে যাওয়া মানে, উৎক্ষেপণ অধিক চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাওয়া।
প্রশ্ন উঠতে পারে, সোজা পাঠালেই তো জ্বালানী কম লাগার কথা, কয়েকবার করে গ্রহকে প্রদক্ষিণ করিয়ে নিলে তো পথ বেশি হবে, জ্বালানী তো এভাবে আরো বেশি লাগবে। আসলে পথ বেশি হলেও জ্বালানী কমই লাগবে। এর পেছনে কাজ করছে পদার্থবিজ্ঞানের কিছু নিয়ম। কোনো বস্তু যখন কোনো ভারী গ্রহের দিকে প্রবল বেগে ধাবিত হয়, তখন গ্রহের অভিকর্ষ বলের প্রভাবে তার গতি বাড়তে থাকে। আবার বেগ বেশি হবার কারণে বস্তুটি সরাসরি গ্রহে পতিত হয় না, উপবৃত্তাকার কক্ষপথে দূরে সরে যায়। গ্রহে পতিত না হয়ে কেন সরে যাবে, তার পেছনেও কারণ আছে। কৌণিক ভরবেগের সংরক্ষণ নীতি অনুসারে এমনটা হয়। বস্তুটি সরে গেলেও, ঐ যে অভিকর্ষের প্রভাবে এর বেগ বৃদ্ধি পেয়েছিল, সেই বেগ ঠিকই থেকে যায়। বেগ বাড়ে কিন্তু তাতে কোনো জ্বালানীর প্রয়োজন হয় না। এভাবে কয়েকটি গ্রহের অভিকর্ষকে ব্যবহার করে একটি মহাকাশযানের বেগ অনেক গুণ বাড়িয়ে নেওয়া যায়।
গ্রহের অভিকর্ষকে ব্যবহার করে বেগ বাড়ানোর ঘটনাকে বলা হয় ‘গ্র্যাভিটি এসিস্ট’। ভারী গ্রহের অভিকর্ষকে ব্যবহার করে মহাকাশযানের বেগ বাড়ানোর প্রক্রিয়াকে পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ‘স্লিংশট ইফেক্ট’।
১৯৯৭ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত দীর্ঘ ২০ বছরের জীবনে ক্যাসিনি আমাদেরকে অনেক কিছু উপহার দিয়েছে। ২ মিলিয়ন আদেশ (কমান্ড) গ্রহণ করেছে, উৎক্ষেপণের পর থেকে ২ বিলিয়ন মাইল পথ ভ্রমণ করেছে, ৫১৪ গিগাবাইট বিজ্ঞান ও মহাকাশ বিষয়ক তথ্য উপাত্ত প্রেরণ করেছে, ৩,০৩৯টি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে এর দেওয়া তথ্য উপাত্ত থেকে (ভবিষ্যতে আরো বের হবে), ৭টি চাঁদ (উপগ্রহ) আবিস্কৃত হয়েছে, ২০৬টি আবর্তন সম্পন্ন করেছে, শনির উপগ্রহে ১৩২টি ফ্লাইবাই মিশন সম্পন্ন করেছে, ৩ লক্ষ ৩২ হাজারটি ছবি তুলেছে, বিশ্বের ২৬টি দেশের বিজ্ঞানীরা মিলে এতে কাজ করেছে। শুধু তা-ই নয়, এই মিশনে শনি, শনির উপগ্রহ ও অন্যান্য গ্রহ সম্বন্ধে এমন চমকপ্রদ সব তথ্য পাওয়া গেছে, যা একেবারেই নতুন করে ভাবনায় ফেলে দেয় বিজ্ঞানীদের। সেসব চমকপ্রদ আবিস্কার ও তথ্য নিয়ে বলতে গেলে স্বতন্ত্র একটি লেখা দাঁড় করাতে হবে। খুব শীঘ্রই Roar বাংলায় সেসব নিয়ে আলোচনা করা হবে।
যখন একে প্রেরণ করা হয়, তখন মিশনের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয় ২০০৮ সাল পর্যন্ত। এর ব্যবহার-উপযোগিতা ও ইতিবাচক সম্ভাবনা থাকাতে পরবর্তীতে সময়সীমা বাড়ানো হয়। প্রথমে ২০০৮ সালে, পরবর্তীতে ২০১০ সালে। উল্লেখ্য, প্রত্যেক সীমাতেই এটি সফলভাবে মিশন সম্পন্ন করেছিল।
একটি মহাকাশযান তো আর আজীবন কার্যক্ষম থাকবে না। এক সময় না একসময় এর আয়ু ফুরিয়েই আসবে। ২০০৯ সালে এর জ্বালানী শেষ হয়ে আসে। এমন অবস্থায় বিজ্ঞানীদের কিছু করার ছিল না, মহাকাশযানকে ছেড়ে দেওয়া হয় অনন্ত নক্ষত্রবীথির হাতে। কিন্তু শনির এলাকায় ক্যাসিনিকে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ছেড়ে দেওয়ার মাঝে ঝুঁকি আছে। ক্যাসিনির দেওয়া তথ্য থেকেই বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, শনির দুই উপগ্রহে আছে প্রাণ ধারণ করার মতো পরিবেশ। বড় হোক, ছোট হোক কিংবা আণুবীক্ষণিক হোক, সেখানে প্রাণ থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এমন অবস্থায় ক্যাসিনি যদি সেসব উপগ্রহের কোনোটিতে গিয়ে আছড়ে পড়ে, তাহলে তা সেসব প্রাণীর জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।
ক্যাসিনিকে শতভাগ জীবাণুমুক্ত করে প্রেরণ করা সম্ভব হয়নি। যদিও দীর্ঘদিন ধরে মহাকাশে ভ্রমণের ফলে সেসব জীবাণু মরে যাওয়াটা স্বাভাবিক, কিন্তু তারপরও কিছু কিছু জীবাণু আছে, যেগুলো প্রবল নেতিবাচক পরিবেশেও সুপ্তাবস্থায় টিকে থাকতে পারে। সেসব জীবাণু ঐ উপগ্রহে ছাড়া পেলে মুহূর্তেই মহামারী বাঁধিয়ে ফেলতে পারে। পুরাতন জীবাণু থেকে মিউটেশন করে আগত নতুন কোনো জীবাণুর উপদ্রবে পৃথিবীতেই মহামারী লেগে যায়। গ্রামের পর গ্রামব্যাপী মানুষ-পশু-পাখি মরে উজাড় হয়ে যায়। আধা পরিচিত, আধা অপরিচিত এই জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে মানুষের অনেকদিন সময় পার হয়ে যায়। সে হিসেবে একেবারে ভিন গ্রহ থেকে সম্পূর্ণ নতুন ও অজানা কোনো জীবাণু এলে, তাকে প্রতিহত করা যে কত কঠিন হবে, তা না বলে দিলেও চলে। তাছাড়া ক্যাসিনির যন্ত্রাংশ, তেজস্ক্রিয় পরমাণু ইত্যাদির মাধ্যমেও উপগ্রহের ক্ষতি সাধিত হতে পারে।
শনি ও শনির উপগ্রহ মূলত আমাদেরই সম্পদ। নিজেরা নিজেদের সম্পদ ধ্বংস করার ঝুঁকি নেবার কোনো মানে হয় না। পৃথিবীর সম্পদ না হলেও মহাকাশীয় নৈতিকতায় এটি বাধে। তাই বিজ্ঞানীরা ক্যাসিনিকে নিয়ে কী করা যায়, তা ভাবতে লাগলেন। কেউ কেউ বললেন, একে সৌরজগতের বাইরের অংশ কুইপার বেল্টের দিকে প্রেরণ করে দেওয়ার কথা। কেউ কেউ বললেন, একে কোনোভাবে বৃহস্পতি গ্রহের কক্ষপথে ঢুকিয়ে দেবার কথা। কিন্তু তা সম্পন্ন করতে গেলে যে পরিমাণ জ্বালানীর দরকার, তা নেই। আর থাকলেও আদৌ সেসব স্থানে গিয়ে কার্যক্ষম থাকতে পারবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
এমন অবস্থায় বিজ্ঞানীরা অন্য একটি সমাধানের কথা চিন্তা করলেন। এটি আপাত ধ্বংসাত্মক দেখালেও আদতে খুব কার্যকর ও চমৎকার। পরিকল্পনাটি হলো, এর গতিপথ পাল্টে শনির বায়ুমণ্ডলের উপর দিয়ে চালনা করা, তাতে বায়ুমণ্ডলের সাথে প্রবল বেগে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে ক্যাসিনি জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। পৃথিবীতেও এ ধরনের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। তারা খসা বলতে রাতের আকাশে যে ঘটনাগুলো ঘটে, সেগুলো আসলে পৃথিবীর বাইরে থেকে কোনোকিছু পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ঢুকে যাওয়া।
বায়ুর সাথে সংঘর্ষে সাধারণত বস্তুর কিছুই হয় না, যেমন আমরা দিব্যি বেঁচে-বর্তে আছি, কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। কিন্তু বস্তুর বেগ যদি খুবই বেশি হয়, তখন বায়ুর কণার সাথে প্রবল ঘর্ষণ হয়। ঘর্ষণের মাত্রা খুব বেশি হলে বস্তুটি জ্বলে-পুড়ে নিঃশেষ হয়ে যায়। ক্যাসিনির বেলাতেও শনির বায়ুমণ্ডলে নিয়ে একে পুড়িয়ে ধ্বংস করে ফেলার পরিকল্পনা করা হয়।
আগে ক্যাসিনি শনিকে আবর্তন করতো তার বলয়ের বাইরের দিক থেকে। যখন ধ্বংস করার পরিকল্পনা করা হলো, তখন এমন একটি কক্ষপথ নির্বাচন করা হলো, যেটি বলয়ের ভেতর দিয়ে যাবে। সত্যি কথা বলতে, বলয়ের ভেতর দিয়ে নয়, শনি ও শনির বলয়ের মাঝে যে ফাঁকা স্থান আছে, সেই অংশ দিয়ে। ফাঁকা স্থান দিয়ে ২২ বার আবর্তন করে অবশেষে গত ১৫ সেপ্টেম্বর এটি শনি গ্রহে ধ্বংস হয়ে যায়। এই ধ্বংসের মাঝে নেই কোনো হারানোর দুঃখ। আছে বিজয়ের উল্লাস।
ব্যাপারটি ভাবলে আসলেই কাব্যিক বলে মনে হয়। শনি থেকে কোটি কোটি কিলোমিটার দূরের একটি গ্রহ পৃথিবী থেকে প্রেরিত একটি যান এখন শনির অংশ। যত ক্ষুদ্রই হোক, ক্যাসিনির ধ্বংসাবশেষ এখন শনির পরিবারের সদস্য। ক্যাসিনির দেওয়া তথ্য থেকে সৌরজগৎ সম্বন্ধে মানুষ নতুন করে জেনেছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ আবিস্কার করেছে, পৃথিবীর সভ্যতা তাই চিরকাল মনে রাখবে ক্যাসিনিকে।
বিদায় ক্যাসিনি, বিদায়।
ফিচার ছবি- NASA