
বেলজিয়ামের নরসুন্দররা এখন গ্রাহকের চুল কেটে সেগুলো ফেলে দিচ্ছেন না। বরং, ব্যাগে পুরে ছুটছেন এনজিও হেয়ার রিসাইকেলের হাতে তুলে দিতে। কেন?
কেন আবার! পরিবেশ রক্ষার জন্যে। নরসুন্দরদের কাছ থেকে নেওয়া এই চুল দিয়ে চারকোনাকৃতির একটি উপাদান তৈরি করে এনজিওটি, যেটি ব্যবহার করা যাবে পরিবেশরক্ষামূলক নানা কাজে। এটি যেমন পরিবেশ দূষণকারী তেল ও হাইড্রোকার্বন শুষে নেবে, তেমনি বায়ো-কম্পোজিট ব্যাগের রূপ নিয়ে পরিবেশকে রাখবে সুরক্ষিত।
চুল পুনর্ব্যবহারের এই প্রকল্পের সহ-প্রতিষ্ঠাতা প্যাট্রিক জ্যানসেন জানান, ১ কেজি ওজনের চুল সাধারণত ৭-৮ লিটার তেল ও হাইড্রোকার্বন শুষে নিতে পারে। ড্রেনের ময়লা নদীতে পৌঁছানোর আগেই সেখানে এই উপাদানে তৈরি ম্যাট বা মাদুর রেখে পানিকে দূষিত হওয়া থেকে থামানো যাবে।
“স্থানীয়ভাবে তৈরি হওয়ায় আমাদের পণ্যগুলো অনেক বেশি দায়িত্বের সাথে তৈরি… এগুলোর কোনোটাই বাইরে থেকে আমদানী করা পণ্য না। স্থানীয়ভাবে স্থানীয় সমস্যা দূর করতেই এটা বানিয়েছি আমরা।” বলেন তিনি।
মূলত, চুল নিজের ওজনের অনেক বেশি বেশি ওজন বহন করতে পারে। একইসাথে চুলের আছে ফ্যাট ও হাইড্রোকার্বন শোষণের ক্ষমতাও। চুল পানিতে মিশে যেতে পারে এবং কেরাটিন ফাইবারের কারণে অনেক বেশি ইলাস্টিসিটি ধারণ করে বিধায় পরিবেশ দূষণ রোধ করতে এটি অনেক বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
নরসুন্দররাও এই কাজে আগ্রহ নিয়েই এগিয়ে আসছেন। শুধু তা-ই না, হেয়ার রিসাইকেল নামের এনজিওকে তাদের দোকান থেকে চুল নিয়ে যাওয়ার জন্য আর্থিকভাবে সহযোগিতাও করছেন তারা। মূলত, চুল ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়ার চেয়ে ভালো কোনো কাজে আসুক এমনটাই তাদের চাওয়া। হেয়ার রিসাইকেলও সেই অনুযায়ীই গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখে কাজ করে চলেছে। স্বীকৃতি বা কোনো অনুদান নয়, এভাবেই ছোট পরিসরে হলেও পৃথিবীর পরিবেশ রক্ষায় কিছুটা হলেও অবদান রাখতে চায় এনজিওটি।