সলফলতার সংজ্ঞা বললে হয়তো অনেক প্রতিষ্ঠানকেই ‘সফল’ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। কিন্ত, একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান যদি কেবল ব্যবসায় ভালো করে বা সফল হয়, তাহলে তাদেরকে সফল বলা যায় না। একটি প্রতিষ্ঠানকে সফল হতে হলে দেখতে হয়, গ্রাহক ও দেশের স্বার্থে তাদের অবদান কী কী। আর এমন প্রতিষ্ঠানের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হতে পারে এ সি আই মটরস্। গ্রাহক সেবা ও দেশের উন্নয়নকে প্রাধান্য দিয়ে এই প্রতিষ্ঠানের পথচলা শুরু হয় আজ থেকে ১৪ বছর আগে, ২০০৭ সালে।
শুধু মোটরযন্ত্র ব্যবসায় তাদের অসাধারণ সাফল্যের তথ্য-উপাত্তেই আটকে রাখা যাবে না এই যাত্রাকে। এ সি আই মটরস্ সবসময়ই হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশের সংকটকালের ত্রাতা। এই যেমন, করোনা মহামারির সময়ও যখন দেশে ধানের বাম্পার ফলন হলেও বিপদ হয়ে আসে শ্রমিক সংকট- তখন সেই বিপদে ছায়া হয়ে দাঁড়ায় একেকটি এ সি আই-ইয়ানমার হার্ভেস্টার, যা একাই করে দেড়শ কৃষকের কাজ।
প্রচলিত পদ্ধতিতে ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়াই ও বস্তাবন্দী করার সময় ৬ থেকে ৭ শতাংশ ধান অপচয় হয়, যা ইয়ানমার হারভেস্টার এর মাধ্যমে হারভেস্টিং করলে ধান অপচয় এর পরিমাণ নেমে আসে ১ শতাংশের নিচে অর্থাৎ, ১,০০০ ইয়ানমার হার্ভেস্টার বাঁচায় ২০০ কোটি টাকার শ্রম খরচ আর ১০০ কোটি টাকার ফসল! ইয়ানমার রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টারের কাজের ক্ষমতাও কম নয়, একদিনেই করতে পারে ১৫ দিনের কাজ। এসব প্রযুক্তি কৃষককে বাঁচিয়ে দিচ্ছে অতিরিক্ত খরচ থেকে।
বাংলাদেশের কৃষিখাতে প্রয়োজনের অনুপাতে ৪০% কৃষি শ্রমিকের ঘাটতি রয়েছে। যে শ্রমিকরা আছেন, তারাও পরিবহন সংকটের কারণে আরেক জেলায় গিয়ে ধান কাটতে পারেন না। সেইসাথে, প্রতি বছরই ১ শতাংশ করে কমছে কৃষিজমি। এতে করে ধানের উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণের ঝুট-ঝামেলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে প্রচুর ফসল।
তারপরও কিন্তু ধানের উৎপাদন বেড়ে চলাটা থেমে নেই। প্রতি বছরই ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে ০.৩৪% হারে। আর এই হারে বাড়তে থাকলে ২০৫০ সালে দেশে ধানের উৎপাদনের পরিমাণ পৌঁছে যাবে ৪৭ দশমিক ২ মিলিয়ন টনে। বর্তমানে ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ রয়েছে বিশ্বের তৃতীয় স্থানে।
বাংলাদেশের প্রায় ৯৫% জমিতেই তাই আজ চলছে প্রযুক্তিনির্ভর চাষাবাদ। স্বস্তির নিশ্বাস তাই শুধু কৃষকের বুকে নয়, আজ সারাদেশ জুড়ে সকল মানুষের বুকে। এখন দেশের ৩ ভাগের ১ ভাগে জমিতে চাষের জন্য কৃষকেরা ব্যবহার করছেন সোনালীকা ট্র্যাক্টর এবং এ সি আই পাওয়ার টিলার। মেশিনের সাহায্যে প্রতি বিঘা জমির ফসল কাটতে এখন দরকার হয় মাত্র দেড় ঘণ্টারও কম সময়, যেখানে সাধারণ পদ্ধতিতে লেগে যায় প্রায় পুরো দিন। কৃষকেরা তাই আজ বন্যার ভয়েও কাবু হয়ে পরে না, কারণ পাকা ধান আর শ্রমিকের অভাবে নষ্ট হবার ভয়ও নেই।
আজ চাষাবাদে দেশের এক নম্বর ট্র্যাক্টর সোনালীকা, আর সবচেয়ে শক্তিশালী পাওয়ার টিলার এ সি আই পাওয়ার টিলার। এছাড়াও দ্রুত সময়ে চারা রোপণে ইয়ানমার রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার এবং ধান কাটার জন্য আছে এ সি আই রিপার। আর সেই ধান দেশের একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পৌঁছে দিতে এ সি আই মটরস্ নিয়ে এসেছে বিশ্বের এক নম্বর বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহন যান ‘ফোটন’। এ সি আই মটরস্-এর সফল এই যাত্রার প্রতিটি পদক্ষপে তাই মিশে আছে কৃষকের আস্থা আর হাসি।
আর শুধু বাণিজ্যিক ক্ষেত্রেই নয়, এ সি আইয়ের সাফল্যের ব্যাপ্তি ছাপ ফেলেছে ব্যক্তি জীবন ও দেশের সেবাতেও। দেশজুড়ে লাখো পরিবার পানির চাহিদা পূরণে ভরসা রেখেছে এ সি আই ওয়াটার পাম্প-এ। আর গ্রাম কিংবা শহর, সবখানেই সববয়সী মানুষের মন জয় করে পথ চলছে ইয়ামাহা বাইক। সেই সাথে বড় বড় প্রজেক্টে চলছে কোবেলকো, কেস, লোভোল-এর মত নামকরা ব্র্যান্ডের সব যন্ত্র, ফলে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে সুনিশ্চিত। আর এই সমস্ত কিছুকেই এক ছাতার নিচে জড়ো করেছে এ সি আই মটরস্, আর ১৪ বছরের এই সুদীর্ঘ যাত্রাপথে বদলে দিয়েছে কোটি মানুষের জীবন।
আস্থা আর ভরসার প্রতীক হিসেবে যে সুনাম এ সি আই মটরস্ অর্জন করেছে, তার পেছনে আছে ১৪ বছর জূড়ে তৈরি হওয়া অসংখ্য গল্প। সেসব গল্প অন্য দিনের জন্য তোলা থাক, আজকের লেখাটা শেষ হোক এই অসামান্য প্রতিষ্ঠানকে জানিয়ে।
অভিনন্দন এ সি আই মটরস্!