কোনো নির্দিষ্ট জার্সি নম্বর নির্দিষ্ট কিছু ক্লাবের জন্য সাফল্য ও সম্মানজনক। খুব সাধারণ উদাহরণ দিলে, বর্তমান ফুটবলে বার্সেলোনার ১০ নম্বর জার্সি, রিয়াল মাদ্রিদে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর রেখে যাওয়া ৭ নম্বর জার্সি অথবা ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে সার্জিও আগুয়েরোর জার্সি নম্বরকে স্বাভাবিকভাবেই সাফল্যজনক ধরা হয়। আর সফলতার পাশাপাশি সম্মানের কথা তুললে চলে আসবে জাভি, ইনিয়েস্তা, রাউল, টট্টি, অরিঁদের পাশাপাশি আরও অনেক নামকরা খেলোয়াড়দের ঐতিহাসিক জার্সি নম্বর।
কিন্তু বর্তমান চেলসি দলে সাফল্য বা সম্মানের বদলে তাদের ‘৯’ নম্বর জার্সিটি একরকম ব্যর্থতার প্রতীক হয়ে আছে। সাধারণত ৯ নম্বর জার্সি দলের স্ট্রাইকারকে দেওয়া হয়। কিন্ত বিগত কয়েক বছর ধরে চেলসির এ জার্সি নম্বর তাদের জন্য অভিশাপ হিসেবেই ধরা হয়। কারণ যতবার নতুন কেউ এ জার্সি গায়ে চড়িয়েছে, চেলসির হয়ে তাদের পার করতে হয়েছে ভয়ঙ্কর সময়। আর এ ধারাবাহিকতা থেমে নেই, চলছেই। প্রচুর অর্থ ঢেলে বা প্রতিভাবান খেলোয়াড় খুঁজে এনেও চেলসির এ ‘৯’ নম্বর জার্সির অভিশাপ কাটাতে পারেননি চেলসি বোর্ড এবং রোমান আব্রাহিমোভিচের মতো ধনকুবের।
এই অভিশাপের সূচনা হয়েছিলো জিমি ফ্লয়েড হ্যাসেলব্যাঙ্ককে দিয়ে। তার আগে অনেকে ব্যর্থ হলেও মূলত ধারাবাহিক ব্যর্থতার শুরু এখানেই। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ লা লিগা থেকে অবনমিত হলে ২০০০ সালে ক্লাব রেকর্ড পরিমাণ ট্রান্সফার ফি’র বিনিময়ে তাকে দলে ভেড়ায় চেলসি। জিমি ফ্লয়েড অ্যাটলেটিকোর হয়ে আগের মৌসুমে করেছিলেন ২৪ গোল। তার এ গোল করার ক্ষমতা দেখেই সে সময় ১৫ মিলিয়ন ইউরো খরচ করেছিলো চেলসি। ৪ মৌসুম স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে থাকাকালীন জিমি ফ্লয়েড ১৭৭ ম্যাচে করেছিলেন ৮৮ গোল। খুব খারাপ পারফর্মেন্স কিন্তু নয়। তাছাড়া চেলসিতে তার সাথে ছিলেন জিয়ানফ্রাঙ্কো জোলা। তাই সব গোল তিনি একাই করার সুযোগ পাননি।
চেলসিতে প্রথম মৌসুমেই তিনি প্রিমিয়ার লিগে গোল্ডেন বুট জিতেছিলেন। চেলসির হয়ে গড়ে ২ ম্যাচে ১টি গোল করার পরিসংখ্যানই বলে চেলসি ফ্লপের তকমা তার সাথে ঠিক যায় না। তবে তার সাথেই শুরু হয়েছিলো চেলসির স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতার গল্প।
জিমি ফ্লয়েড স্ট্যামফোর্ড ব্রিজ ছেড়ে গেলে তার স্থানে আসেন মাতেজা কিজমান। তাকে দেওয়া হয় জিমি ফ্লয়েডের রেখে যাওয়া ৯ নম্বর জার্সি। পিএসভির হয়ে ১০৫ ম্যাচে ১২২ গোল করেছিলেন তিনি। তাতেই তার প্রতি আগ্রহ জন্মায় চেলসির। ১২২ গোল করা স্ট্রাইকারকে কিন্তু বেশ সস্তায় পেয়েছিলো তারা। মাত্র ৫ মিলিয়ন ইউরোর পরিবর্তে কিজমান হল্যান্ড ছেড়ে পাড়ি জমান ইংল্যান্ডে। কিন্তু কে জানতো যে, তিনি হবেন চেলসির ৯ নম্বর জার্সির অভিশাপের যুগের প্রথম শিকার?
২০০৫-০৬ মৌসুমের পুরো সময়টা তিনি পেয়েছিলেন। কিন্তু জ্বলে ওঠার লক্ষণ তার ভেতরে যেন একদমই ছিলো না। কোচের নজর কাড়তেও ব্যর্থ হলেন। ৪১ ম্যাচে মাত্র ৭ গোল করে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজ থেকে সে মৌসুম শেষেই বিদায় নেন তিনি। এবং এরপর তার ক্যারিয়ারও শুধু ধ্বংসের দিকে ধাবিত হয়েছে। সেই পিএসভির হয়ে প্রতি ম্যাচে খুনে চরিত্র হয়ে ওঠা কিজমান আর কখনোই নিজের সেরাটা ফিরে পাননি। তাছাড়া ক্লদিও রানিয়েরির সাথে জিমি ফ্লয়েড যেভাবে মানিয়ে নিয়েছিলেন, কিজমান ও হোসে মরিনহোর সম্পর্ক সেভাবে কখনই জমেনি।
এরপর আসবে হার্নান ক্রেসপোর নাম। তিনিও ছিলেন স্ট্রাইকার এবং চেলসির কোনো এক সময়ের ৯ নম্বর জার্সির একচ্ছত্র অধিপতি। ঐ সময়ের অন্যতম দামী খেলোয়াড় ইংল্যান্ডে এসেছিলেন ইতালিতে দীর্ঘ ৭ বছর কাটিয়ে। পার্মা, লাৎসিও মাতানো ক্রেসপোর ইনজুরি সমস্যা ছিলো। ইন্টারে থাকাকালীন সময়েও এ সমস্যায় ভুগেছেন তিনি, কিন্তু স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে যেন সেটা প্রকট রূপ ধারণ করলো। অনিয়মিত হবার কারণে চেলসি দলে পাকাপাকিভাবে স্থান হলো না তার।
চেলসি থেকে ইন্টার মিলান ও এসি মিলানে ধারে খেলেছেন ৩ বছর। আর বাকি যেটুকু সময় চেলসিতে সময় পেয়েছেন তাতে ৭৩ ম্যাচে করেছেন মাত্র ২৫ গোল। ৫ বছরের কাছাকাছি সময়ে চেলসি থাকলেও বর্তমানে চেলসি ফ্লপ তকমাই জুড়ে আছে ক্রেসপোর ঝুলিতে। যদিও হার্নান ক্রেসপো বেশিরভাগ সময়ে ইতালির ক্লাবেই খেলেছেন। প্রিমিয়ার লিগে একমাত্র চেলসির হয়েই খেলেছেন, আর সেখানেই রয়েছে ক্রেসপোর ক্যারিয়ারের সবথেকে দুর্বিষহ স্মৃতি।
মরিনহো তখনও চেলসির প্রধান কোচ। ক্রেসপোর ব্যর্থতার পর দলের স্ট্রাইকার হিসেবে আব্রাহিমোভিচের প্রথম পছন্দ ফার্নান্দো তোরেস। কিন্তু লিভারপুল থেকে তোরেসকে কেনার কয়েক দফা চেষ্টার পরও তাদের ভাগ্য খুললো না। মাঝথেকে চেলসি হামবুর্গ থেকে কিনলো খালিদ বুলহারোজকে। ডাচ এ খেলোয়াড় খেলতেন ডিফেন্ডার পজিশনে। কিন্তু মাঝে মাঝে একটি নম্বর তেমন কোনো সমস্যা নয়। উদাহরণ হিসেবে, বর্তমান বায়ার্ন মিউনিখ দলে স্ট্রাইকার সান্দ্রো ভাগনারের জার্সি নম্বর ২। তবে বুলহারোজের ঘটনা আরও অদ্ভুত। ডিফেন্ডার হওয়া সত্ত্বেও তিনি পেয়েছিলেন ৯ নম্বর জার্সি।
কিন্তু এই ডাচম্যান শুধু দলের সাথে খাপ খাওয়ানোর যুদ্ধই করে গেলেন। চেলসির হয়ে তার মাত্র ২০টি ম্যাচও ছিলো হতাশার। হোয়াইট হার্ট লেনে আবারও ভুলে ভরা পারফর্মেন্সের পর তার চেলসি ক্যারিয়ার একরকম সেখানেই শেষ হয়ে যায়। মরিনহোও তার উপর আগ্রহ খুব তাড়াতাড়ি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এক বছরের ভেতরই বুলহারোজ লোনে গেলেন এসি মিলানে। এরপর স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে ফিরে আসা হয়নি তার।
চেলসি সম্ভবত ৯ নম্বর জার্সির অভিশাপকে যেকোনোভাবে কাটানোর চেষ্টা করে যাচ্ছিল। সে কারণেই একজন পুরোদস্তুর মিডফিল্ডারকে ৯ নম্বর জার্সিতে মাঠে নামিয়েছিলো ব্লুজরা। ততদিনে চেলসিতে মরিনহো যুগের সমাপ্তি। আভরাম গ্রান্টের অধীনে চেলসি নতুন মোড়কে শুরু করার সময়ই স্টিভ সিডওয়েল এসেছিলেন ব্লুজদের দলে। রিডিংয়ের সাথে দারুণ একটা মৌসুম কাটানোর পর সিডওয়েল নতুন ঠিকানা খুঁজতেই ফ্রি ট্রান্সফারে এসেছিলেন চেলসিতে। কিন্তু তার অবস্থা ছিলো বুলহারোজের তুলনায় আরও খারাপ। একজন মিডফিল্ডার হবার পরও ৯ নম্বর জার্সির অভিশাপ তাকে পেয়ে বসলো। তাকে কেনা এবং হারানোতে চেলসির কোনো ক্ষতি অবশ্য হয়নি। কিন্তু এক মৌসুম পরেই সিডওয়েল যখন চেলসিকে ভগ্ন হৃদয়ে বিদায় জানালেন, তার ক্যারিয়ারে ততক্ষণে বিরাট ক্ষতি হয়ে গেছে।
আভরাম গ্রান্টের পর ২০০৯ সালে এক মৌসুমেই চেলসি কোচ পরিবর্তন করেছে ৩ বার। দলের খেলোয়াড়রাও ভুক্তভোগী হয়েছে হুটহাট এ কোচ পরিবর্তনের ফলে। ৯ নম্বর জার্সির খেলোয়াড়দের ব্যর্থতার পেছনের কারণ যদি এই দ্রুত কোচ বদলকে দায়ী করা হয়, খুব অবাস্তব কিছু কিন্তু হবে না। ২০০৯ সালেই ৩ বার কোচ বদলের পর চেলসির কোচ হন কার্লো আনচেলত্তি। আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার ফ্রাঙ্কো ডি সান্তোকে চেলসিতে এনেছিলেন লুই ফেলিপে স্কলারি। তরুণ এ খেলোয়াড়কে তখন ভবিষ্যৎ লক্ষ্য রেখেই চিন্তাভাবনা করা হয়েছিলো। আনচেলত্তি কোচ হিসেবে আসবার পর তাকে ৯ নম্বর জার্সিতে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষীণ চেষ্টা করেছিলেন। কয়েক ম্যাচ দেখে আনচেলত্তি ফ্রাঙ্কোকে নিজের চিন্তাভাবনা থেকে দূর করে দেন। ব্যাকবার্নন রোভার্সে লোনে যাওয়ার আগে ফ্রাঙ্কো ডি সান্তো চেলসির হয়ে খেলেছেন মাত্র ১৬ ম্যাচ, যার বেশিরভাগ বেঞ্চে থেকে।
২০১১ সাল। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজ মাতাচ্ছেন দিদিয়ে দ্রগবা। চেলসির কোচ আবারও পবির্বতন হলো। নতুন কোচের চেয়ারে আসলেন পর্তুগিজ আন্দ্রেস ভিলাস-বোয়াস। তবে কার্লো আনচেলত্তি থাকাকালীন সময়েই চেলসি তাদের অনেকদিনে আশা পূর্ণ করেছিলো। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার পর লিভারপুল থেকে উড়িয়ে এনেছিলো ফার্নান্দো তোরেসকে। ফার্নান্দো তোরেস তখন প্রিমিয়ার লিগের সেরা স্ট্রাইকার। লিভারপুলের হয়ে গোলের বন্য বইয়ে দিয়েছেন তিনি। তাই কয়েকবারের প্রচেষ্টায় অবশেষে তোরেস চেলসিতে আসলেন রেকর্ড পরিমাণ ৫০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে।
সমর্থকেরা ভেবেছিলো, হয়তো এবার তাদের স্ট্রাইকার খরা কাটবে, মুছে যাবে অভিশাপ। কিন্তু তা না হয়ে সময়ের সেরা স্ট্রাইকার যেন চেলসির ৯ নম্বর জার্সির অভিশাপে চাপা পড়লেন। রবার্তো ডি মাত্তেও, এমনকি তার পুরনো ক্লাবের কোচ রাফা বেনিতেজও তার সেরাটার একবিন্দু বের করতে পারেননি। লিভারপুলের হয়ে যেসব গোল কখনোই মিস করতেন না, সেগুলো পর্যন্ত ফসকে যেত তোরেসের পা থেকে। ৪ বছরে ১৭২ ম্যাচে মাত্র করেছেন ৪২ গোল। এবং এই ৪ বছর সময়ের সেরা স্ট্রাইকারের তকমা হারানোর জন্য যথেষ্ট ছিলো। হয়তো চেলসির হয়ে তোরেসের কিছু সুখস্মৃতি ও শিরোপা আছে। কিন্তু চেলসির হয়ে তোরেস কখনোই সফল ছিলেন না।
২০১৫ সালে চেলসির কোচ হয়ে আবারও আসেন হোসে মরিনহো। তোরেসের সময় ততদিনে শেষ। মরিনহোও চাননি তাকে আবারও ব্যবহার করতে। তাই তোরেস মিলানে লোনে পাড়ি জমালে চেলসির স্ট্রাইকারের স্থানটি ফাঁকা পড়ে থাকে। তাই লোনে মোনাকো থেকে নিয়ে আসলেন রাদামেল ফ্যালকাওকে। ফ্যালকাও বিগত মৌসুমেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে ব্যর্থতার স্মৃতি নিয়ে মোনাকোতে ফেরত গেছেন। সেই তাকে আবার প্রিমিয়ার লিগে ফেরত এনে এবং ৯ নম্বর জার্সি প্রদান করার সিদ্ধান্ত চেলসি ও মরিনহোর জন্য বড্ড ভুল ছিলো। ইনজুরিপ্রবণ ফ্যালকাও মৌসুমের অনেকটা সময় ছিলেন মাঠের বাইরে। তাই চেলসির ৯ নম্বর জার্সি অভিশাপের রীতি বজায় রেখে এক মৌসুমে মাত্র ১ গোল করে ব্যর্থ ফ্যালকাও ফিরে গেলেন মোনাকোতে।
এরপরে চেলসিতে একজন ফরোয়ার্ড বেশ সফলতা পেতে শুরু করেছিলেন। ডিয়েগো কস্তা হয়তো বুঝেছিলেন, ৯ নম্বর জার্সি কোনোভাবেই নেওয়া যাবে না। তাই ১৯ নম্বর জার্সি পরেই চিনি চেলসির হয়ে খেলেছেন ৩ বছর। তার গোলসংখ্যা এবং মাঠের পারফর্মেন্স খারাপ ছিলো না। তবে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে তিনি টিকতে পারেননি কোচ আন্তোনিও কন্তের সাথে বনিবনা না হওয়ার কারণে।
কস্তাকে বিদেয় করে দিয়ে কন্তে রিয়াল মাদ্রিদ থেকে কেনে আলভারো মোরাতাকে। ৯ নম্বর জার্সি পরে মোরাতা কিন্তু শুরুটা খারাপ করেননি। প্রিমিয়ার লিগে কেইন, লুকাকুদের সাথে পাল্লা দিয়ে প্রথম ১১ ম্যাচে করেছিলেন ৮ গোল। কিন্তু তারপরও নিজস্ব কিছু অসুবিধা ও ইনজুরির কারণে মোরাতা ফর্ম হারাতে থাকেন। দারুণ শুরু করেও মৌসুমের বাকি সময় তিনি ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি। তাই একজন স্ট্রাইকার হয়েও মোরাতা গত মৌসুমে ৪৮ ম্যাচে করেছেন মাত্র ১৫ গোল।
চেলসির বর্তমান অবস্থা বেশ পরিবর্তন হয়ে গেছে। রক্ষণাত্মক ফুটবল বাদ দিয়ে মাউরিজিও সারির আক্রমণাত্মক ফুটবলে অভ্যস্ত হতে শুরু করেছে তারা। মোরাতাও হয়তো মনে করেছেন, গত মৌসুমে তার সমস্যা ও ইনজুরির পেছনে দায়ী হয়তো ৯ নম্বর জার্সি। তাই নতুন মৌসুমে বদলে ফেলেছেন তার জার্সি নম্বর। কিন্তু এতকিছু বদলের পরও নতুন মৌসুমে মোরাতা নিজেকে এখনও ফিরে পাননি।
বর্তমান যুগে অভিশাপ সরাসরি জুড়ে বসে না। চেলসির এ জার্সি নম্বরের সাথে জড়িয়ে আছে ধারাবাহিক ব্যর্থতা ও অসফলতার ইতিহাস। এই ইতিহাস ও ব্যর্থতাই সকল খেলোয়াড়ের আত্মবিশ্বাস কেড়ে নেয়। মোরাতা হয়তো ঠিকই নিজেকে ফিরে পাবেন, তবে তা ২৯ নম্বর জার্সিতে। কিন্তু দীর্ঘ ১৯ বছর তো পার হয়ে গেল, চেলসির এ অভিশাপ কাটবে কবে?
ফিচার সোর্স: Squawka.com