ডেনিস বার্গক্যাম্প নামের ওলন্দাজ ফুটবলারটি কি আপনার পরিচিত? আচ্ছা,বার্গক্যাম্প থাক। রবিন ফন পার্সিকে নিশ্চয়ই মনে আছে? স্পেনকে পাঁচ গোলের ঘোল খাওয়ানো ম্যাচে তার উড়ন্ত সেই গোলের কথা কে ভুলতে পারে! ঐ গোলের পর থেকে ফন পার্সিকে ডাকা হতো ‘দ্য ফ্লায়িং ডাচম্যান’ নামে। ডেনিস বার্গক্যাম্পেরও এমন একটা নাম আছে; তাকে ডাকা হয় ‘দ্য নন-ফ্লায়িং ডাচম্যান’ নামে। মজার নাম, তাই না? তাহলে এখন এখন নামের পেছনের গল্পটা শোনাই।
বার্গক্যাম্পের বেড়ে ওঠা আয়াক্সের অ্যাকাডেমিতে। আমস্টারডাম থেকে সুরিনাম যাওয়ার পথে বিমান দুর্ঘটনায় ১৭৮ জন মারা যান। এই দুর্ঘটনায় তার আয়াক্সের দুইজন কাছের বন্ধুও ছিলেন। এই দুর্ঘটনার পর বার্গক্যাম্প মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং তার বিমানভীতির শুরু হয় সেখানেই। এরপর তিনি কখনই বিমানে চড়তে চাইতেন না। কোথাও যেতে হলে অন্য পথে যেতেন এবং চেষ্টা করতেন বিমানে না ওঠার। তিনি চলাফেরা করতেন গাড়িতে, লম্বা দূরত্বে ভ্রমণ করতেন না। এজন্য খুব বেশি দেশেও তার ঘোরা হয়নি।
১৯৯৪ সালে আমেরিকায় বিশ্বকাপ খেলতে যাবার জন্য তাকে দলের সাথে বিমানে চড়তে হয়েছিল। বার্গক্যাম্প একরকম জীবন হাতে নিয়েই নিজেকে ঠেলেঠুলে বিমানে চড়িয়েছিলেন। একবার বিমানে থাকা এক সাংবাদিক অসুস্থ হয়ে পড়েন, বিমান জরুরি ল্যান্ড করে। আবার বিমানে বোমা আছে গুজব ওঠায় সেবারও বিমান জরুরি অবতরণ করানো হয়। তার বিমানভীতি আরও মারাত্মক রূপ ধারণ করে।
আর্সেনালে থাকাকালীন সময় একবার কিয়েভে যাননি ডায়নামো কিয়েভের সাথে ম্যাচ খেলতে, কারণ বিমানে যেতে হবে। বার্গক্যাম্পবিহীন আর্সেনাল সে ম্যাচে হেরে আসে। ২০০৩ সালে শাখতার দোনেৎস্কের সাথে ম্যাচ খেলার জন্য তিনি দলের সাথে ইউক্রেন যাননি। সে ম্যাচে গানার্সরা হেরে আসে ৩ গোলের ব্যবধানে। যদিও আর্সেনালে তিনি কতটা খুশি ছিলেন, তা নিয়ে তো প্রশ্ন রয়েছেই।
কিন্তু ‘দ্য নন-ফ্লায়িং ডাচম্যান’ নামে সার্থকতা এখন নিশ্চয়ই খুঁজে পাচ্ছেন?