১.
হাশিম আমলার টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে ২০০৪ সালের ২৮ নভেম্বর। ভারতের বিপক্ষে কলকাতায় তিনি প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন। এই ম্যাচের পর পরবর্তীতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে দুটি টেস্ট খেলে দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। নিজের খেলা প্রথম তিনটি টেস্টে একবারও অর্ধশতক পেরোতে না পারার কারণে দলে তার জায়গা হারান। এরপর প্রায় দেড় বছর পর নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার সুযোগ পেয়ে ১৪৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন তিনি। এই ইনিংসের পর তাকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। দলের নিয়মিত মুখ হিসাবে খেলে গেছেন ২০১৯ সাল পর্যন্ত।
তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৯ সালের আগস্টে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেও তার শেষ টেস্ট ম্যাচ ছিল ২০১৯ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারিতে। শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলেন ২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে। নিজের শেষ আন্তর্জাতিক ইনিংসে অপরাজিত ৮০ রানের ইনিংস খেলে দলের বড় জয়ে অবদান রেখেছিলেন তিনি।
হাশিম আমলা টেস্টে ১২৪ ম্যাচ খেলে ২৮টি শতক এবং ৪১টি অর্ধশতকের সাহায্যে ৪৬.৬৪ ব্যাটিং গড়ে ৯,২৮২ রান করেছেন। টেস্ট ক্রিকেটে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। দক্ষিণ আফ্রিকার একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসাবে তিনি ট্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। ক্যারিয়ারের শুরুতে তাকে টেস্ট স্পেশালিষ্ট হিসাবে গণ্য করা হতো। তাই তো ওয়ানডে ক্রিকেটে ডাক পেতে আরও তিন বছর অপেক্ষা করতে হয়। রঙিন পোশাকে খেলার সুযোগ পেয়েই নিজের জাত চেনান আমলা। ১৮১টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে ২৭টি শতক এবং ৩৯টি অর্ধশতকের সাহায্যে ৪৯.৪৬ ব্যাটিং গড়ে ও ৮৮.৩৯ স্ট্রাইক রেটে ৮,১১৩ রান সংগ্রহ করেছেন।
আমলা টেস্ট এবং ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই আট হাজারের অধিক রান সংগ্রহ করেছেন ৪৫+ ব্যাটিং গড়ে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুই ফরম্যাটে কমপক্ষে আট হাজার করে রান করেছেন এমন ব্যাটসম্যানদের শুধুমাত্র হাশিম আমলা এবং এবি ডি ভিলিয়ার্সের ব্যাটিং গড় ৪৫+। ডি ভিলিয়ার্স টেস্ট ক্রিকেটে ৫০.৬৬ ব্যাটিং গড়ে এবং ওয়ানডেতে ৫৩.৫০ ব্যাটিং গড়ে রান করেছে। আমলা টেস্টে ৪৬.৬৪ এবং ওয়ানডেতে ৪৯.৪৬ ব্যাটিং গড়ে রান করেছেন। তিনি টেস্ট এবং ওয়ানডের মতো টি-টোয়েন্টিতেও সফলতা পেয়েছেন। ৪৪টি টি-টোয়েন্টি খেলে আটটি অর্ধশতকের সাহায্যে ৩৩.৬০ ব্যাটিং গড় এবং ১৩২.০৫ স্ট্রাইক রেটে ১,২৭৭ রান করেছিলেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে প্রায় ১৫ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে তিনি টেস্টে ২৮টি এবং ওয়ানডেতে ২৭টি শতক হাঁকিয়েছেন। তিনি ছাড়া মাত্র চারজন ক্রিকেটার দুই ফরম্যাটে ২৫ কিংবা তারচেয়ে বেশি শতক হাঁকিয়েছেন। শচীন টেন্ডুলকার টেস্টে ৫১টি ও ওয়ানডেতে ৪৯ টি শতক হাঁকান, রিকি পন্টিং টেস্টে ৪১টি ও ওয়ানডেতে ৩০টি শতক হাঁকান, কুমার সাঙ্গাকারা টেস্টে ৩৮টি ও ওয়ানডেতে ২৫টি শতক হাঁকান এবং বিরাট কোহলি এখন পর্যন্ত টেস্টে ২৫টি এবং ওয়ানডেতে ৪৩টি শতক হাঁকিয়েছেন।
২.
হাশিম আমলা এই দশকের শুরুতে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন। দশকের শুরুতে দুই ফরম্যাট বিবেচনায় তিনি অন্য সবার চেয়ে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু ২০১৮ সালের পর থেকে রানের মুখ দেখেননি তিনি। এই সময়ে ১৪ ম্যাচের ২৮ ইনিংসে ২৬.৮৮ ব্যাটিং গড়ে মাত্র ৬৯৯ রান সংগ্রহ করেছেন। কোন শতক হাঁকাতে পারেননি, অর্ধশতক মাত্র ছয়টি। ওয়ানডেতে ২৩ ম্যাচ খেলে একটি শতক এবং পাঁচটি অর্ধশতকের সাহায্যে ৩৬.৬০ ব্যাটিং গড়ে ৭৩২ রান করেছিলেন। ওয়ানডে ক্রিকেটে গত চার বছর থেকে নিজের স্বাভাবিক ব্যাটিং করতে পারছেন না তিনি। যেখানে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম ১০০ ম্যাচে তার ব্যাটিং গড় ৬০ ছুঁই ছুঁই ছিল, সেখানে শেষ ৬৬ ইনিংসে তার ব্যাটিং গড় ৩৯.৬৮।
একসময় হাশিম আমলা প্রতিনিয়ত বিরাট কোহলির রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়তেন। এই কাজটা একপ্রকার রুটিনে পরিণত করেছিলেন তিনি। কিন্তু গত কয়েকবছরে বিরাট কোহলির চেয়ে বেশ পিছিয়ে পড়েছেন তিনি। ওয়ানডে ক্রিকেটে দুই হাজার থেকে সাত হাজার পর্যন্ত সবকটি মাইলফলক সবচেয়ে দ্রুততম ইনিংসে অতিক্রম করেছিলেন হাশিম আমলা। বিরাট কোহলি ২০১৬ সালে ১৭ জানুয়ারি ১৬১ ইনিংসে সাত হাজার রান পূর্ণ করেছিলেন। আমলা ২০১৭ সালের ১৭ মে সেই রেকর্ড ভেঙে মাত্র ১৫০ ইনিংসে সাত হাজার রান করেন। কোহলি সাত হাজার থেকে আট হাজার রান পৌঁছাতে মাত্র ১৪ ইনিংস ব্যাট করলেও আমলার ব্যাট করতে হয় ২৬ ইনিংস, যার ফলে দ্রুততম আট হাজার রানের রেকর্ডটি নিজের দখলে রেখে দেন কোহলি।
৩.
টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটার পর ২০০৯ সাল পর্যন্ত ৩৯ ম্যাচে সাতটি শতকের সাহায্যে ৩৯.৮০ ব্যাটিং গড়ে ২,৫৮৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এরপর তিনি ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ক্যারিয়ারের সেরা সময় অতিবাহিত করেন। এই সময়ে তিনি ৪২ ম্যাচে ৬৫.৬২ ব্যাটিং গড়ে ৪,০৬৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন, শতক হাঁকিয়েছিলেন ১৬টি। এই পাঁঁচ বছরে ৪২ ম্যাচে ১৬টি শতক হাঁকানো আমলা নিজের শেষ ৪৩ ম্যাচে শতক হাঁকিয়েছিলেন মাত্র পাঁচটি। ৪৩ ম্যাচে ৩৬.৪৭ গড়ে ২,৬২৬ রান করার পর ক্রিকেটকে বিদায় জানান।
টেস্ট ক্রিকেটে ২০১০ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মোট ৩৩ জন ব্যাটসম্যান দুই হাজারের অধিক রান করেছিলেন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যাটিং গড় ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের শিবনারায়ণ চন্দরপলের। তিনি ৬৭.৭১ ব্যাটিং গড়ে ৩,০৪৭ রান করেছিলেন। তার ব্যাটিং গড় বেশি হওয়ার কারণ ছিল, তিনি ৬২ ইনিংসের মধ্যে ১৭ ইনিংসেই অপরাজিত ছিলেন। এই সময়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যাটিং গড় ছিল হাশিম আমলার, তিনি ৭০ ইনিংসে ৬৫.৬২ ব্যাটিং গড়ে রান করেছিলেন।
অন্যান্য অনেক দুর্দান্ত ব্যাটসম্যান নিজ দেশের বাইরে তেমন রান পায় না। কিন্তু হাশিম আমলা নিজের সেরা সময়ে ঘরের বাইরে বেশি রান করেছিলেন। তিনি ২০১০ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত অ্যাওয়েতে ২০টি টেস্ট ম্যাচ খেলে দশটি শতক হাঁকিয়েছেন। ৭৫.১০ ব্যাটিং গড়ে মোট ২,২৫৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। শুধুমাত্র এই সময়েই নন। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে বিদেশের মাটিতে ২০০৭ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন। এই সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকা বিদেশের মাটিতে ১৫টি টেস্ট সিরিজ খেলে একটিতেও পরাজিত হয়নি। দশটি সিরিজে জয় পেয়েছিল পাঁচটি ড্র হয়েছিল। এই ১৫ সিরিজের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা ৩৫টি টেস্ট ম্যাচ খেলে, যার মধ্যে ৩৪ টেস্টেই দলে ছিলেন হাশিম আমলা। এই ৩৪ ম্যাচে আমলা ৬২.২৮ ব্যাটিং গড়ে ৩,৩০১ রান করেছিলেন ১২টি শতক হাঁকিয়ে। এই সময়ে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সবচেয়ে বেশি রান এবং শতকের মালিক ছিলেন।
৪.
ওয়ানডে ক্রিকেটে হাশিম আমলা ২০১৭ সাল পর্যন্ত কোহলির সাথে সমানে সমানে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি ২০১০ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ১৩৪ ইনিংসে ৫১.৮৪ ব্যাটিং গড়ে ৬,৫৩৩ রান করেছিলেন। শতক হাঁকিয়েছিলেন ২৫টি। এই সময়ে তার চেয়ে বেশি রান করেছিল শুধু বিরাট কোহলি। তিনি ৪৭ ইনিংস বেশি ব্যাটিং করে ৮,৫৪৬ রান করেছিলেন।
টেস্ট ক্রিকেটে হাশিম আমলার প্রিয় ব্যাটিং পজিশন ছিল তিন নাম্বার। ওয়ানডে ক্রিকেটে ওপেনিং। তিনি ওয়ানডেতে ১৭৮ ইনিংসে ওপেনার হিসাবে ব্যাট করেছিলেন। এই পজিশনে তিনি বেশ সফলও ছিলেন, প্রায় প্রতি ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে শুভসূচনা এনে দিতেন। ওপেনিংয়ে তারচেয়ে বেশি শতক হাঁকিয়েছেন শুধুমাত্র শচীন টেন্ডুলকার (৪৫) এবং সনাৎ জয়াসুরিয়া (২৮)। শেষ কয়েকবছরে বাজে ফর্মের পরেও ওপেনিংয়ে কমপক্ষে ৫০ ইনিংস ব্যাট করা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তার গড় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তিনি ওপেনিংয়ে ৪৯.৮৯ ব্যাটিং গড়ে রান করেছিলেন। তার উপরে আছে রোহিত শর্মা। তার ব্যাটিং গড় ৫৮.১৮।
টেস্ট ক্রিকেটে তিন নাম্বার ব্যাটিং পজিশনে দক্ষিণ আফ্রিকার মূল স্তম্ভ ছিলেন হাশিম আমলা। এক দশকের বেশি সময় ধরে টপ-অর্ডারে ভরসার প্রতীক ছিলেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকা জানতো এক উইকেটের পতন ঘটলে আমলা প্রস্তুত থাকে দলের হাল ধরার জন্য। তিনে ১৭৪ ইনিংস ব্যাট করে ৪৯.৯৫ ব্যাটিং গড়ে ৭,৯৯৩ রান করেছিলেন আমলা। এই পজিশনে তারচেয়ে বেশি রান আছে শুধুমাত্র তিনজনের। কুমার সাঙ্গাকারা, রাহুল দ্রাবিড় এবং রিকি পন্টিং।
তিন নাম্বারে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে দ্বিতীয় সর্বাধিক রান সংগ্রহ করেছেন ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময়ে চারে ব্যাট করা জ্যাক ক্যালিস। তিনি তিনে ৩,৩৩৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাকে বাদ দিলে দক্ষিণ আফ্রিকার আর কোনো ব্যাটসম্যান টেস্টে তিন নাম্বারে ১,৫০০ রানও তুলতে পারেনি।
৫.
উপমহাদেশের বাইরের দেশগুলোর ব্যাটসম্যানদের বড় পরীক্ষা দিতে হয় উপমহাদেশে খেলতে আসলে। বর্তমানে ভারতের মাটিতে খেলতে এসে বেশি সমস্যায় পড়ে তারা। হাশিম আমলা এদিক থেকে বেশ এগিয়ে আছেন। তিনি ভারতের মাটিতে ১৭ ইনিংসে চারটি শতকের সাহায্যে ৬২.৭৩ ব্যাটিং গড়ে ৯৪১ রান করেছিলেন। ভারতের মাঠে নিজের প্রথম দুই সিরিজে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছিলেন তিনি।
২০০৮ সালে প্রথম সিরিজে ৬১.৪০ ব্যাটিং গড়ে ৩০৭ রান করেছিলেন। এরপরের সিরিজে তার ধারাবাহিকতা ছিল আকাশছোঁয়া। ২০১০ সালে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের তিন ইনিংসে ব্যাট করে যথাক্রমে ২৫৩*, ১১৪ এবং ১২৩* রানের ইনিংস খেলেছিলেন। সিরিজে একবার আউট হয়ে ৪৯০ রান করেছিলেন তিনি, যার ফলে তার ব্যাটিং গড় দাঁড়ায় ৪৯০.০০। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এক সিরিজে এরচেয়ে বেশি ব্যাটিং গড় আছে শুধুমাত্র ওয়ালি হ্যামন্ডের। তিনি ১৯৩৩ সালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজে ৫৬৩ রান করে মাত্র একবার আউট হয়েছিলেন।
হাশিম আমলা ঐ সিরিজে ১,০৩৩ বল মোকাবেলা করেছিলেন। এশিয়ার মাটিতে আর কোনো ব্যাটসম্যান দুই ম্যাচের সিরিজে এর চেয়ে বেশি বল মোকাবেলা করতে পারেনি। ভারতের মাটিতে আমলার পরিসংখ্যান আরও ভালো হতে পারতো, যদি না তিনি ২০১৫ সালের সিরিজে সাত ইনিংসে ১৬.৮৫ ব্যাটিং গড়ে রান না করতেন। তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতেও রান পেয়েছেন, সেখানে তিন ম্যাচে ৭৮ ব্যাটিং গড়ে রান করেছিলেন। তবে বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার মাটিতে তার পারফরমেন্স খুব একটা উজ্জ্বল নয়। এই দুই দেশে ১৬ ইনিংসে মাত্র একবার অর্ধশতক হাঁকাতে পেরেছিলেন তিনি। রান করেছিলেন ২৮.৫৩ গড়ে।
দক্ষিণ আফ্রিকা ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ শেষে বাংলাদেশ সফরে আসে। সেই সফরে হাশিম আমলা ওয়ানডে এবং টেস্টে তেমন রান পাননি। ঐ সিরিজের পর থেকেই ক্রমাগত তার ব্যাটিং গড় কমতে থাকে। শেষপর্যন্ত দুই ফরম্যাটেই ব্যাটিং গড় পঞ্চাশের নিচে নামার পর ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান।