ক্রিকেট বিশ্বে প্রত্যেক দেশ নিজেদের ঘরের মাঠের সুবিধা কাজে লাগায়। নিজেদের পছন্দমতো কিম্বা চেনা-জানা পরিবেশে খেলার সুযোগ পেয়ে প্রতিপক্ষকে খুব সহজেই গুড়িয়ে দেয়। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বিশ্বে শক্তিশালী এক দল। ঘরের মাটিতে নিউজিল্যান্ড বরাবরই অপ্রতিরোধ্য। বিশেষ করে উপমহাদেশের দেশগুলোর জন্য নিউজিল্যান্ডের মাটিতে নিউজিল্যান্ড ভয়ংকর প্রতিপক্ষ। সেসময় শুধুমাত্র মাঠের খেলাটা নয়, সেখানকার আবহাওয়ার সাথে মানিয়ে নেওয়াটাও অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। ক্রাইস্টচার্চ, হ্যামিল্টন, ওয়েলিংটন কিংবা নেপিয়ারে প্রচণ্ড বাতাসের সাথে মানিয়ে নিয়েই সফরকারী দলকে খেলতে হয়। শুধুমাত্র উপমহাদেশের দলগুলো নয়, নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদেরকে হারাতে ঘাম ঝরাতে হয় ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।
কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বেলায় হিসাবটা পুরো উল্টো। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওডিআই, টেস্ট সিরিজ জয়ের পাশাপাশি একমাত্র টি-টুয়েন্টি ম্যাচটাও তারা জিতে নিলো দাপটের সাথে। এবারই প্রথম নয়, ৫ বছর আগে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টি-টুয়েন্টি, ওডিআই এবং টেস্ট সিরিজ তিনটাই জিতে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
২০১২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে টেস্ট এবং ওডিআই সিরিজে পরাজিত হওয়ার পর মাঝখানের ৫ বছরে ঘরের মাঠে অন্য কোনো দলের কাছে সিরিজ হারেনি নিউজিল্যান্ড। ৫ বছর পর আবারো দক্ষিণ আফ্রিকাতেই আটকে গেলো তারা। কিছুদিন আগে ঘরের মাঠে পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের পর বেশ ফুরফুরে মেজাজেই ছিল কিউইরা। আর অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকাও ছন্দে ছিল, টেস্ট ক্রিকেটে গত বছর একপর্যায়ে ১ নাম্বার থেকে র্যাংকিংয়ের ৭ নাম্বার দলে পরিণত হয়েছিল তারা। শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজ এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজ জয়ের পর নিউজিল্যান্ড সফরে আসে তারা। অন্যদিকে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওডিআই সিরিজ হারার পর শেষ ৬টি দ্বিপাক্ষিক সিরিজে অপরাজিত থেকেই নিউজিল্যান্ড সফরে আসে দক্ষিণ আফ্রিকা।
একমাত্র টি-টুয়েন্টি ম্যাচ
সফরের একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যায়। তাই কোনোরকম প্রস্তুতি ম্যাচ ছাড়াই টি-টুয়েন্টি ম্যাচ দিয়ে নিউজিল্যান্ড সফর শুরু করে প্রোটিয়ারা। অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে টসে জিতে প্রোটিয়াদের ব্যাটিংয়ে পাঠায় কিউইরা।
দুর্দান্ত ফর্মে থাকা কুইন্টন ডি কককে রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান ট্রেন্ট বোল্ট। উদ্বোধনী উইকেট জুটিতে আসা ১৫ রানের মধ্যে ডি ককের ঝুলিতে কোনো রান ছিলো না। অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিসকে নিয়ে আরেক ওপেনার হাশিম আমলা ৮৭ রানের জুটি বাঁধেন, যার মধ্যে ডু প্লেসিসের অবদান ৩৬ রান। হাশিম আমলার ৪৩ বলে ৬২, ডি ভিলিয়ার্সের ১৭ বলে ২৬ এবং জেপি ডুমিনির ১৬ বলে ২৯ রানের সুবাদে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮৫ রান সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। দক্ষিণ আফ্রিকার রান সংখ্যা আরো বেশি হতে পারতো যদি না ট্রেন্ট বোল্ট ৪ ওভারে মাত্র ৮ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার না করতেন।
নিউজিল্যান্ড ১৮৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। ম্যাচের কোনো সময়েই মনে হয়নি তারা ম্যাচটি জিততে যাচ্ছে। মাত্র ৮০ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর নিউজিল্যান্ড একশ রানের ডিঙি টপকাতে পারে কিনা সেটাই দেখার বিষয় ছিলো।
শেষ দিকে টিম সাউদির ৬ বলে ৩ ছয়ে ২০ রানের ইনিংসের কল্যাণে ১০৭ রান করে নিউজিল্যান্ড। কিউইদের ব্যাটিং লাইনআপ একাই ধ্বসিয়ে দেন লিমিটেড ওভারের বিশ্বসেরা বোলার ইমরান তাহির। মাত্র ২৪ রান দিয়ে ৫ উইকেট শিকার করেন তিনি। টি-টুয়েন্টিতে মাত্র ৩১ ম্যাচে ৫০ উইকেট শিকার করে দ্বিতীয় দ্রুততম বোলার হিসাবে এই মাইলফলক অতিক্রম করেন তিনি। একমাত্র টি-টুয়েন্টিতে ৭৮ রানের জয় দিয়ে সফর শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
ওডিআই সিরিজ
দক্ষিণ আফ্রিকা নিজেদের শেষ ১১টি ওডিআইতে অপরাজিত এবং দ্বিপাক্ষিক সিরিজের শেষ ১৪টি ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা হারের স্বাদ পায়নি। অন্যদিকে গত ৫ বছরেও নিউজিল্যান্ড তাদের মাটিতে ওডিআই সিরিজ হাতছাড়া করেনি। ৫ বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ হেরেছিল তারা।
বৃষ্টি বিঘ্নিত প্রথম ম্যাচে ১ বল বাকি থাকতে ৪ উইকেটের জয় তুলে নিয়ে নিজেদের অপরাজিত থাকার রেকর্ড অক্ষুণ্ণ রাখে দক্ষিণ আফ্রিকা। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৬ রানে হারিয়ে সিরিজে সমতা আনে নিউজিল্যান্ড। এবি ডি ভিলিয়ার্স টসে জিতে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠান। ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পেয়ে সুযোগটা ভালোভাবেই কাজে লাগায় স্বাগতিকরা। অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের ৬৯ রানের ইনিংসের পর অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান রস টেইলরের ১০২* রান এবং জিমি নিশামের ৭১* রানের ইনিংসের সুবাদে ৪ উইকেটে ২৮৯ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। নাথান অ্যাস্টলের ১৬টি ওডিআই শতকের রেকর্ড ভেঙে ১৭টি ওডিআই শতক হাঁকিয়ে নিউজিল্যান্ডের হয়ে নতুন রেকর্ড গড়েন রস টেইলর।
কুইন্টন ডি কক, ডুমিনি, ভিলিয়ার্স এবং মিলাররা উইকেটে সেট হওয়ার পরেও বড় ইনিংস খেলতে না পারার কারণে জয়ের আশা জাগিয়ে তুলতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। মাত্র ২১৪ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে তারা ছিটকে গিয়েছিল। কিন্তু নবম উইকেট জুটিতে প্রেটোরিয়াস এবং ফেহলুকওয়ো তখনো দক্ষিণ আফ্রিকাকে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন। প্রেটোরিয়াস মাত্র ২৭ বলে ৫০ রান করার পর ৪৯ তম ওভারের শেষ বলে আউট না হলে ম্যাচের ফলাফল ভিন্ন হতে পারতো। শেষ পর্যন্ত মাত্র ৬ রান দূরে থাকতে থেমে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
সিরিজের তৃতীয় ওডিআইতে নিউজিল্যান্ডকে দাঁড়াতেই দেয়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৫৯ রানের বড় ব্যবধানে জয় তুলে নিয়ে সিরিজে ২-১ এ এগিয়ে যায় সফরকারীরা। সিরিজের চতুর্থ একদিনের ম্যাচটি ছিল কিউই ওপেনার গাপটিলময়। প্রোটিয়াসদের একাই উড়িয়ে দেন তিনি। ইনজুরি কাটিয়ে নিউজিল্যান্ড দলে ফিরেই খেলেন বিস্ফোরক এক ইনিংস। দক্ষিণ আফ্রিকার দেওয়া ২৮০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৩৮ বলে ১৫টি চার এবং ১১টি ছয়ের সাহায্যে ১৮০* রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন তিনি। মার্টিন গাপটিল ওডিআইতে এর আগে ২৩৭* রান এবং ১৮৯* রানের ইনিংস খেলেছিলেন। ক্রিকেট বিশ্বের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ওডিআইতে তিনবার ১৮০+ রানের ইনিংস খেলার কৃতিত্ব একমাত্র গাপটিলের দখলেই।
গাপটিলের অতিমানবীয় ব্যাটিংয়েরর সুবাদে প্রোটিয়াদের ৭ উইকেটে হারিয়ে ৫ ম্যাচের সিরিজে ২-২ এ সমতা আনে নিউজিল্যান্ড। অকল্যান্ডে সিরিজ নির্ধারণী শেষ ম্যাচে টসে জিতে স্বাগতিকদের ব্যাটিংয়ে পাঠান ডি ভিলিয়ার্স। ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে নিউজিল্যান্ড। রাবাদা, তাহিরদের বোলিং তোপের মুখে পড়ে মাত্র ১৪৯ রানে গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। দলের হয়ে ব্রাউনলি, স্যান্টনার এবং নিশাম তিনজনই সমান ২৪ রান করে করেন এবং সর্বোচ্চ ৩২ রান করেন গ্রান্ডহোম। কিন্তু কেউই নিজেদের ইনিংস বড় করতে পারেন নি। কাগিসো রাবাদা ২৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট এবং ইমরান তাহির ১০ ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার করেন।
ম্যাচ জিতলেই ওডি’আই র্যাংকিংয়ে নাম্বার ওয়ান দলের খেতাব পাওয়ার পাশাপাশি সিরিজ নিজেদের পকেটে পুরতে পারবে- এমন সমীকরণে ব্যাট করতে নেমে ৮৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু ফাফ ডু প্লেসিস অপরাজিত ৫১* রান এবং ডেভিড মিলার অপরাজিত ৪৫* রান করে নিরাপদেই প্রোটিয়াদের গন্তব্যে পৌঁছে দেন। এই দুজন চতুর্থ উইকেট জুটিতে অবিচ্ছিন্ন ৬২* রান যোগ করে প্রোটিয়াসদের ৬ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেছেন।
এই জয়ে ৫ ম্যাচের সিরিজে ৩-২ এ জিতে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। এই জয়ের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা টানা ৭টি সিরিজে অপরাজিত থাকে।
টেস্ট সিরিজ
টি-টুয়েন্টি এবং ওডিআই সিরিজ জয়ের পর সাদা পোশাকের ডু প্লেসিস বাহিনী ছিলো বেশ ফুরফুরে। গত বছর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সিরিজ জয় এবং নিজেদের মাটিতে শ্রীলঙ্কা এবং নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলো তারা। তাই তো ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা ডি ভিলিয়ার্সকে ছাড়াই মাঠে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। নিজেদের শেষ তিনটে টেস্ট সিরিজ ভিলিয়ার্সকে ছাড়াই জিতেছিল তারা, তাই ভিলিয়ার্সকে বিশ্রাম দিয়েই একাদশ সাজায় তারা। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ড গত ৫ বছরেও নিজেদের মাটিতে টেস্ট সিরিজ হারেনি। কিন্তু ৫ বছর আগে যে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছেই হারতে হয়েছিল তাদের!
৩ ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টে ডুনেডিনে ইউনিভার্সিটি ওভালে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ১ম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ওপেনার ডেন এলগার ছাড়া আর কেউই বড় ইনিংস খেলতে পারেন নি। এলগার ২৯৯ বল মোকাবেলা করে ১৪০ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়া ডু প্লেসিস এবং বাভুমা অর্ধশতক হাঁকান। ট্রেন্ট বোল্ট ৪টি এবং প্যাটেল ৩ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩০৮ রানে বেঁধে রাখে। জবাবে কেন উইলিয়ামসনের ১৩০ রানের ইনিংস এবং রাভাল ও ওয়াটলিংয়ের অর্ধশতকে প্রথম ইনিংসে ৩৪১ রান সংগ্রহ করে ৩৩ রানের লিড নেয় নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা ১০২ ওভারে ৬ উইকেটে ২২৪ রান করলে সিরিজের প্রথম টেস্ট অমীমাংসিত ভাবে শেষ হয়। এলগার ১৪০ এবং ৮৯ রানের ইনিংসের সুবাদে ম্যাচ সেরার পুরস্কার পান।
সিরিজের প্রথম টেস্টে ইনজুরির কারণে অভিজ্ঞ পেসার টিম সাউদির সার্ভিস থেকে বঞ্চিত হয়েছিল নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় টেস্টে তিনি ফিরলেও ট্রেন্ট বোল্ট এবং রস টেইলর ইনজুরির কারণে খেলতে পারেন নি। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে হেনরি নিকোলসের ১১৮ রান ব্যতীত আর কেউই উল্লেখযোগ্য রান করতে পারেন নি। ডুমিনি ৪ উইকেট এবং মরকেল, রাবাদা ও মাহারাজ ২টি করে উইকেট শিকার করলে প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ড ২৬৮ রানেই থেমে যায়। জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকাও ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। শুরুতেই মিডিয়াম পেসার কলিন ডে গ্রান্ডহোম ৩ উইকেট শিকার করলে মাত্র ৯৪ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে সফরকারীরা। ৭ম উইকেট জুটিতে আস্থার প্রতীক কুইন্টন ডি কক এবং টেম্বা বাভুমা ১৬০ রান যোগ করে প্রোটিয়াদের ভালোভাবেই ম্যাচে ফেরায়।
বাভুমা ৮৯ এবং ডি কক ৯১ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেও কাজের কাজটুকু করে যান আগেই। তবুও সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপ করতেই পারেন তারা। শেষ ব্যাটসম্যান হিসাবে খেলতে নামা মরনে মরকেল ৪০ রান করে প্রথম ইনিংসে ৯১ রানের লিড এনে দেন দক্ষিণ আফ্রিকাকে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে মাহারাজের বোলিং তোপের মুখে পড়ে নিউজিল্যান্ড। মাত্র ১৭১ রানে গুটিয়ে গিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৮১ রানের মামুলি টার্গেটের সামনে দাঁড় করায় তারা। মাহারাজ একাই ৬ উইকেট শিকার করেন। ৮১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২ উইকেট হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই ইনিংসে ৮ উইকেট শিকার করে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতে নেন মাহারাজ।
সিরিজের শেষ টেস্ট ম্যাচে রস টেইলর, ট্রেন্ট বোল্ট এবং টিম সাউদিকে ছাড়াই মাঠে নামে নিউজিল্যান্ড। অনভিজ্ঞ পেস অ্যাটাক নিয়ে খেলতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিপদে ফেলে দেয় নিউজিল্যান্ড। ম্যাট হেনরি ৪ উইকেট, নেইল ওয়াগনার ৩ উইকেট শিকার করলে প্রথম ইনিংসে ৩১৪ রানে থেমে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এদিনও দক্ষিণ আফ্রিকার ত্রাতা হিসাবে আবির্ভূত হন কুইন্টন ডি কক। তার ৯০ রানের ইনিংসের সুবাদে ৩০০ রানের কোটা অতিক্রম করে প্রোটিয়ারা।
জবাবে কেন উইলিয়ামসনের অনবদ্য ১৭৬ রানের ইনিংস এবং রাভালের ৮৮ রানের ইনিংসের উপর ভর করে প্রথম ইনিংসে ৪৮৯ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে ১৭৫ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। মাত্র ৫৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ইনিংস ব্যবধানে হারার আশঙ্কা জাগিয়ে তোলে। কিন্তু হ্যামিল্টন টেস্টের শেষদিনে বৃষ্টির কারণে একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। যার কারণে ম্যাচটি অমীমাংসিত ভাবেই শেষ হয়ে যায়। মাঠে গড়ালে হয়তো সিরিজ বাঁচাতে পারতো নিউজিল্যান্ড। শেষ টেস্ট ড্র হওয়ার ফলে দক্ষিণ আফ্রিকা ১-০ তে সিরিজ জিতে নেয় এবং র্যাংকিংয়ে দুইয়ে উঠে আসে।
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে নিউজিল্যান্ডকে হারানো যেকোনো দলের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়মিত স্বাগতিকদের হারিয়ে সিরিজ জিতছে। বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে দক্ষিণ আফ্রিকার ভাগ্য সহায় থাকে না বলেই শেষ দুই বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরেই বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
তথ্যসূত্র
১) espncricinfo.com/southafrica/engine/series/1020019.html