উইকেট হবে ধীর, খেলার গতি-প্রকৃতি নির্ধারিত হবে স্পিনারদের হাতেই, জয়ের জন্যে ১৬০-১৭০ রানই হবে যথেষ্ট; আইপিএলটা এবারে আমিরাতে হচ্ছে বলে এমন কিছুর শঙ্কা ছিল শুরু থেকেই। শুরুর তিন সপ্তাহে শঙ্কাগুলোর বাস্তব প্রতিফলন না ঘটলেও চতুর্থ সপ্তাহে এসে সেটাই হয়ে গিয়েছে নিয়তি।
এক নজরে আইপিএলের চতুর্থ সপ্তাহ
কলকাতা বনাম পাঞ্জাব
১৮ বলে চাই ২২ রান, হাতে উইকেট বাকি ৯টি। ক্রিজে যারা আছেন, তাদের একজন ব্যাট করছেন ৭০ রানে। আজকালকার ক্রিকেটে এসব ম্যাচ ব্যাটিং দল হারে নাকি! হারে, দলটার নাম যদি পাঞ্জাব হয়।
প্রথমে ব্যাট করে কলকাতা করেছিল ১৬৪ রান৷ রানটা অত বাড়ত না, যদি না মৌসুমে প্রথমবারের মতোন বিজলিবাতি ঝলকানো ইনিংস খেলতেন দীনেশ কার্ত্তিক। তার ২৯ বলে ৫৮ রানের ইনিংসে চড়ে কলকাতার বোলাররা পান লড়বার মতো পুঁজি।
এই রান অবশ্য হেসেখেলেই পেরিয়ে যাচ্ছিল লোকেশ রাহুলের পাঞ্জাব। আরও একবার দারুণ এক উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন রাহুল আর মায়াঙ্ক আগারওয়াল মিলে। আগারওয়াল ৫২ রানে আউট হলেও ম্যাচ পাঞ্জাবের হাতেই ছিল ১৭ ওভার অব্দি। ১৮তম ওভারে নারাইন বল হাতে নিতেই ঘুরে যায় ম্যাচের মোড়। ১৮ আর ১৯তম ওভারে পাঞ্জাব তুলতে পেরেছিল সাকুল্যে ৮ রান, সঙ্গে হারিয়েছিল ৩ উইকেট। শেষ ওভারে ১১ রান তুললেও পাঞ্জাবের সঙ্গে জয়ের ব্যবধান রয়ে গিয়েছিল ২ রানের।
এই হারে পাঞ্জাবের কপালে জুটেছে আরও এক পীড়াদায়ক রেকর্ড। প্রথম আইপিএল দল হিসেবে পরাজয়ের সেঞ্চুরি পূরণ করেছে দলটি।
বেঙ্গালুরু বনাম চেন্নাই
ফিঞ্চ আউট হয়ে গিয়েছিলেন শুরুতেই, খোলসে ঢুকে গিয়ে এবারকার আইপিএলে নিজেদের সর্বনিম্ন সংগ্রহ তুলেছিল বেঙ্গালুরু, এমনকি ১০০ পেরোতে সময় লেগেছিল ১৬ ওভার অব্দি। সেই রানটাই যে ইনিংস শেষ হতে হতে পৌঁছে গিয়েছিল ১৬৯ রানে, তার কারণ বিরাট কোহলি খেলেছিলেন ‘বিরাট’ ইনিংস। আরসিবির হয়ে ৬,০০০ রান পূর্ণ করেছিলেন এ ম্যাচেই; খেলেছিলেন ৫২ বলে ৯০ রানের ইনিংস।
দুবাইয়ের স্লো উইকেটে তার ইনিংসের জবাব দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না চেন্নাইর ব্যাটসম্যানদের। শুরুর ছয় ওভারে ২৬ তোলা দলটির ইনিংস গতি পায়নি কোনোকালেই, বেঙ্গালুরু জয় পেয়েছিল ৩৭ রানে।
হায়দরাবাদ বনাম রাজস্থান
জনি বেয়ারেস্টো আর ডেভিড ওয়ার্নারদের মতো পাওয়ার-হিটার নিয়ে গড়া সানরাইজার্স হায়দরাবাদের উদ্বোধনী জুটি পাওয়ারপ্লেতে রানটা দ্রুতই তোলেন। কিন্তু রাজস্থানের সঙ্গে ম্যাচে হায়দরাবাদ রান তুলেছিল মাত্র ২৬, যা কি না তাদের ইতিহাসেরই তৃতীয় সর্বনিম্ন। মনীশ পাণ্ডের অর্ধশতকে স্কোরটা যদিও পৌঁছেছিল ১৫৮-তে, তবে ম্যাচশেষে যথেষ্ট হয়নি এই রান।
বাটলার, স্টোকস, স্মিথরা ব্যর্থ হলেও এবারের আইপিএলকে তো নিজেকে চেনানোর মঞ্চ হিসেবে নিয়েছেন রাহুল তেওয়াটিয়া। রিয়ান পরাগের সঙ্গে দু’জনে ষষ্ঠ উইকেটে গড়েছিলেন ৮৫ রানের জোট। রাজস্থান জয় পেয়েছিল ৫ উইকেট আর ১ বল বাকি থাকতে।
দিল্লি বনাম মুম্বাই
আগের দিনই পরাজয়ের শতক পূরণ করেছিল পাঞ্জাব। পরদিনই মুম্বাইয়ের কাছে ৫ উইকেটে হেরে সে তালিকায় নাম তুললো দিল্লি।
টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নামা দলটির ইনিংস গতি পায়নি কোনোকালেই। ২৪ রানেই দুই উইকেট হারাবার পর শ্রেয়স আইয়ার আর শিখর ধাওয়ান মিলে চেষ্টা করেছিলেন ইনিংস মেরামতের। সে চেষ্টায় সফল হলেও পাল্টা আক্রমণ কিংবা শেষের ঝড় তুলতে ব্যর্থ হয়েছিলেন দু’জনই, মার্কাস স্টইনিসও পারেননি এ ম্যাচে কিছু করতে। মৌসুমে ধাওয়ানের প্রথম আর সব মিলিয়ে ৩৪তম অর্ধশতকে দিল্লি করেছিল ১৬২।
এই রান তাড়া করতে ১১৮ বল লাগলেও ম্যাচ মুম্বাইয়ের লাগামছাড়া হয়নি কখনোই। কুইন্টন ডি কক আর সূর্যকুমার যাদবের ফিফটিতে মুম্বাই পেয়েছিল পাঁচ উইকেটের জয়।
বেঙ্গালুরু বনাম কলকাতা
প্রশ্নটা আগেও অনেকে করেছেন, উত্তর খোঁজারও চেষ্টা হয়েছে বিস্তর। তবু আরও একবার প্রশ্ন জেগেছে, ‘এবি ডি ভিলিয়ার্স কি কেবলই মানুষ?’
শারজার ছোট মাঠও পারেনি কলকাতার ব্যাটসম্যানদের ঘুম ভাঙাতে। ১৯৫ রান তাড়া করতে নেমে পুরো ২০ ওভার খেলে তারা তুলেছিলেন ১১২।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর রানটা যে কেকেআরের অমন ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেল, তার খানিকটা কৃতিত্ব পাবেন অ্যারন ফিঞ্চ আর দেবদূত পাড়িকাল, পাওয়ারপ্লেটা কাজে লাগিয়ে দারুণ এক শুরু এনে দিয়েছিলেন দেখে। কিছুটা স্বীকৃতি পাবার দাবি করতে পারেন বিরাট কোহলিও, একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন বলে। তবে সেদিন সমস্ত শংসাপত্র কিনে নিয়েছিলেন একজনই, এবি ডি ভিলিয়ার্স।
যখন নেমেছিলেন বেঙ্গালুরুর রানটা ১৩তম ওভার শেষে ৯৪। ইনিংসের অবশিষ্ট ৪৬ বলে বেঙ্গালুরু তুলেছিল ঠিক ১০০। ৩৩ বল খেলে এবি ডি ভিলিয়ার্স তুলেছিলেন ৭৩ রান।
কী করে? ‘AB Can Do Everything’ লাইনে আপনি ব্যাখ্যা খুঁজে নিতে পারেন।
চেন্নাই বনাম হায়দরাবাদ
অনভিজ্ঞ মিডল-অর্ডার নিয়ে দল গড়েছিল বিধায় হায়দরাবাদ মৌসুমের শুরু থেকেই বাড়তি দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়েছিল দুই ওপেনার জনি বেয়ারেস্টো আর ডেভিড ওয়ার্নারের ওপর। ১৬৮ রান তাড়া করতে নেমে সে দায়িত্ব পালন করতে পারেননি দুজনের কেউই, তবুও যে চেন্নাইয়ের সঙ্গে হায়দ্রাবাদের পরাজয়ের ব্যবধানটা মাত্র ২০ রানের, সেটা কেন উইলিয়ামসনের ৩৯ বলে ৫৭ রানের অবদান।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে চেন্নাই ওপেনিংয়ে পাঠিয়ে দিয়েছিল স্যাম কারেনকে। সূক্ষ্ম এই বদলটা কাজ করেছিল জাদুর মতো, তার ২১ বলে ৩১ রানের ইনিংসই গেঁথে দিয়েছিল চেন্নাইয়ের জয়ের মালা। চেন্নাইয়ের স্কোরকার্ডে কোনো অর্ধশতক না থাকলেও শেন ওয়াটসন, আম্বাতি রায়ডুর দুটো চল্লিশ আর শেষদিকে ধোনি-জাদেজার ছোট্ট দু’টো ঝড়ে চেন্নাই ঠিকই দাঁড় করিয়েছিল জয়ের মতোন সংগ্রহ।
রাজস্থান বনাম দিল্লি
ঠিক কী করলে জয়ের অঙ্কটা মিলবে, রাজস্থান তা খুঁজে ফিরছে হন্যে হয়ে। এতদিন বোলিংটা ঠিকঠাক হচ্ছিল না, দিল্লির বিপক্ষে ম্যাচে তা হয়েছিল। পাওয়ারপ্লেটা বেশ কয়েক ম্যাচ ধরে কাজে লাগাতে পারছিলেন না ব্যাটসম্যানরা, এ ম্যাচে তা লাগিয়েছিলেন। তবুও দিল্লির সঙ্গে রাজস্থানের ব্যবধানটা রয়ে গিয়েছিল ১৩ রানের।
আগের ম্যাচের পঞ্চাশের ধারাবাহিকতায় এ ম্যাচে ধাওয়ান করেছিলেন ৩৩ বলে ৫৭। অর্ধশতকের দেখা পেয়েছিলেন শ্রেয়স আইয়ারও। তাদের দু’জনের ৮৫ রানের জোটেই মূলত রাজস্থান পেয়েছিল ১৬১ রানের ভিত্তি। তাড়া করতে নেমে স্টোকস-বাটলার মিলে ইনিংসের মুখবন্ধ লিখেছিলেন বেশ দারুণ। তাদের ১৮ বল স্থায়ী ৩৭ রানের জুটি ভাঙতেই রাজস্থানের ইনিংসে লেগেছিল মড়ক। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো রাজস্থান শেষতক থেমে যায় ১৪৮ রানে।
পাঞ্জাব বনাম বেঙ্গালুরু
লোকেশ রাহুল আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের কাছে কোনো গোপনপত্র পাঠিয়েছেন কিনা, সাংবাদিকেরা তা তলিয়ে দেখতে পারেন একটু ভালো করে। টুর্নামেন্টে পাঞ্জাব যে দুই জয় পেয়েছে, তার প্রতিটিই বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে; রাহুল তাই আর্জি করতেই পারেন, তাদের বাদবাকি ম্যাচগুলোও বেঙ্গালুরুর বিপক্ষেই হোক।
প্রথমে ব্যাট করে বেঙ্গালুরু তুলেছিল ১৭১। শারজার ছোট মাঠের সুবিধাটুকু যে বেঙ্গালুরু কাজে লাগাতে পারেনি, সে তো গোটা ইনিংসে মাত্র ৮ ছয় মারা দেখেই বোঝা যায়। জবাব দিতে নেমে পাঞ্জাব মেরেছিল ১৪ ছয়। ম্যাচটা মূলতঃ পাঞ্জাব জিতে গিয়েছিল এখানটাতেই।
তার আগে অবশ্য কসরত করতে হয়েছিল বেশ। আগারওয়াল-রাহুল মিলে দুর্দান্ত শুরু এনে দিয়েছিলেন আরও একবার। মৌসুমে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে পঞ্চাশ করেছিলেন গেইলও। তবে ২১ বলে চাই ১৫ রান, এমন সমীকরণকেও কঠিন বানিয়ে ফেলেছিল পাঞ্জাব। অবশ্য ম্যাচের শেষ বলে নিকোলাস পুরান ছক্কা মেরে জিতিয়েছিলেন শেষমেশ।
এই ছয় অবশ্য পুরানকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে কীর্তিমানদের সংক্ষিপ্ত এক তালিকায়। আইপিএলে ম্যাচের শেষ বলে ছক্কা মেরে দলের জয় নিশ্চিত করেছিলেন তার আগে মাত্র আটজন।
মুম্বাই বনাম কলকাতা
এক দলের ওপর অন্য দলের আধিপত্য থাকে বটে, তাই বলে এতটা! ১৬ অক্টোবর অব্দি ২৭ বার কলকাতা নাইট রাইডার্সের মুখোমুখি হয়ে ২১তম জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।
কলকাতার ব্যাটিং নিয়ে বিশেষ বলবার কিছু নেই। টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৪২ রানেই চার কিংবা ৬১ রানে কোনো দল ৫ উইকেট হারালে আর কী-ই বা বলার থাকে! যদি নিতান্তই বলতে হয়, তো প্যাট কামিন্সের কথা বলাই ভালো। কলকাতা যে ১৪৮ অব্দি পৌঁছেছিল, সে তো ব্যাট হাতে কামিন্সের দুর্বার পঞ্চাশের জন্যেই। মুম্বাইয়ের দুর্ধর্ষ ব্যাটিং লাইনআপের সামনে এ রান যে কিছুই নয়, তার প্রমাণ দিয়ে মুম্বাই ম্যাচটা বের করে নিয়ে গিয়েছিল ১৬.৫ ওভারেই। ৯ চার আর ৩ ছয়ে ডি কক করেছিলেন ৪৪ বলে ৭৮।
প্রথমে ব্যাট করলেই নিশ্চিত ম্যাচ জয়?
আগের আসরগুলোতে দেখা যেত, শুরুর অর্ধে দলগুলো রান তাড়া করতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতো। কিন্তু এবারে যেন পাশার দান গিয়েছে বদলে। ১৩তম আইপিএল আসরের অর্ধেকটা পেরিয়েছে এই চতুর্থ সপ্তাহেই, সব দলই খেলে ফেলেছে ৭টি করে ম্যাচ। আগের ধারা মেনে শুরুর সপ্তাহে টসে জিতে অধিনায়কেরা বেছে নিতে চাইছিলেন ফিল্ডিংই, কিন্তু ২৮ ম্যাচ পেরিয়ে তারাই এখন চাইছেন যেকোনো মূল্যে প্রথমে ব্যাট করতে। কেননা, চতুর্থ সপ্তাহ অব্দি হওয়া। ৩২ ম্যাচের ২৩টিই জিতেছে আগে ব্যাট করা দল। শুরুর ২৮ ম্যাচের ২১টিই আগে ব্যাট করা দল জিতে গড়েছে এক অনন্য কীর্তি। শতকরা ৭৫ ভাগ ম্যাচ জিতেছে আগে ব্যাট করা দল, এবারকার আগে কোনোবারই আইপিএল পায়নি এমন কিছুর দেখা।
পরিসংখ্যান বলছে, ৭৫ শতাংশ তো দূর অস্ত, গোটা আইপিএল সিজনেই আগে ব্যাট করা দল জিতেছে অর্ধেকের বেশি ম্যাচ, আগের বারো আসরে এমন ঘটনা ঘটেছে মাত্র দুইবার।
রান কমেছে শুরুর ২১ দিনের চেয়ে
এবারকার আইপিএলের প্রথমার্ধে প্রথমে ব্যাটিং করা দল রান তুলেছিল ১৮২ গড়ে, যা কি না আগের যেকোনো আসরের চাইতে অন্তত দশ বেশি। কিন্তু যত সময় গড়াচ্ছে, রান করা যেন কঠিন হয়ে যাচ্ছে ততই।
আইপিএলের ১৩তম আসরের তৃতীয় সপ্তাহের ৯ ম্যাচে রান হয়েছিল ৩,১৩২। সেই সংখ্যাই চতুর্থ সপ্তাহে নেমে এসেছে ২,৮৫০-য়ে। তৃতীয় সপ্তাহে যেখানে রান হয়েছিল ১৭৪ গড়ে, চতুর্থ সপ্তাহে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১৫৮.৩৩, মৌসুম শুরুর সপ্তাহর চাইতে সংখ্যাটি ৮.৫২ কম।
২০১৪ থেকে আইপিএলের বাদবাকি আসরগুলোর সঙ্গে তুলনা টেনে দেখা যাচ্ছে, এবারকার চাইতে চতুর্থ সপ্তাহে কম রান হয়েছিল কেবল ২০১৭ আর ২০১৫ মৌসুমে। এর মধ্যে ২০১৭ মরসুমে চতুর্থ সপ্তাহে রানের গড়টা ১৫৪.২৫-য়ে নেমে এসেছিল, সেবারে সাতদিনের ভেতরেই তিনটি ১০০ রানের কম দলীয় সংগ্রহ দেখেছিল বলে।
কোন ভেন্যুটা কেমন করছে?
চতুর্থ সপ্তাহ অব্দি যে ১১টি দ্বিশতক দেখেছে আইপিএলের ১৩তম আসর, তার সাতটিই এসেছে শারজাহর ছোট মাঠে। এমনকি বাউন্ডারি কিংবা ওভার-বাউন্ডারির সংখ্যাতেও বাকি দুই মাঠের চেয়ে যোজন ব্যবধানে এগিয়ে আছে শারজাহ। গ্রুপপর্বের অর্ধেকটা পেরোবার পরে দেখা যাচ্ছে, ব্যাটসম্যানেরা শারজাহতে এসে ৬৪.১ শতাংশ রান তুলেছেন চার কিংবা ছয়ে; দুবাই এবং আবুধাবির ক্ষেত্রে যে সংখ্যাটা যথাক্রমে ৫৬ এবং ৫৫.৩ শতাংশ।
তবে সাতটি ২০০ পেরোনো সংগ্রহের সবগুলোরই দেখা মিলেছিল শুরুর চার ম্যাচের মধ্যেই। প্রথম তিন ম্যাচে শারজায় যেখানে রান উঠেছিল ২১৭ গড়ে, শেষ চার ম্যাচে তা নেমে এসেছে ১৬৯.৫-য়ে। রানের এই পড়তি দশার কারণ, শেষ ম্যাচগুলোতে পিচগুলো ধীরগতির হয়েছে বলে স্পিনাররা এগিয়ে এসেছেন রান আটকাতে।
তবে প্রথম সাত ম্যাচ পর দেখা যাচ্ছে, উইকেট দখল, বোলিং গড়, কিংবা স্ট্রাইকরেট – শারজাহতে সবক্ষেত্রেই এগিয়ে আছেন পেসাররাই। একই চিত্র আবুধাবির মাঠেও, যদিও এ মাঠেই স্পিনাররা বল করেছেন সবচেয়ে বেশি। স্পিনাররা অবশ্য সবচেয়ে বেশি উইকেট পেয়েছেন দুবাইতে, তবে যথারীতি রাজ করেছেন পেসাররাই।
উইকেটটা মন্থর হচ্ছে ধীরে ধীরে। স্পিনাররা বাকি অর্ধটায় রাজত্ব করবেন; যুজবেন্দ্র চাহাল, ওয়াশিংটন সুন্দররা এমন কিছুরই আশা দেখাচ্ছেন।