দর্শক তখনও গ্যালারিতে প্রবেশ করছে, কারণ ম্যাচটি মাত্র ১০ মিনিট মাঠে গড়িয়েছে। তমিস্লাভ মিলিচেভিচ এই ১০ মিনিটের খেলা দেখেই তার খয়েরি নোটবুক বের করলেন, যেখানে দুই দলের একাদশ তিনি আগেই লিখে রেখেছেন। লাল পেন্সিলটি বের করে, দলের একাদশ থেকে লুকা ইয়োভিচ নামট খুঁজে একটি বৃত্ত জুড়ে দিলেন নামটির পাশে। মিলিচেভিচ রেড স্টার বেলগ্রেডের অনূর্ধ্ব-১২ দলের কোচের পদে আছেন। বসনিয়ার বেজলজিনা শহর থেকে সার্বিয়ায় খেলতে আসা এ বালককে দেখে তার চোখ আটকে গেলো। তখনও সে বালকের বয়স মাত্র নয়।
মিলিচেভিচের বক্তব্য ছিলো,
‘মাত্র ১০ মিনিটের খেলা দেখে আমি বিস্মিত হয়েছিলাম। বল যেন তার পায়ে আঠার মত আটকে থাকতো। বল পায়ে সে খুবই তৃপ্ত বোধ করে, এবং সে খুব দ্রুত ভাবতে পারতো, বল নিয়ে সে কী করতে যাচ্ছে। আট বছর বয়সী এক বালক যে এভাবে খেলতে পারে, তা দেখে আমি খুবই অবাক হয়েছিলাম।
ইয়োভিচের শারিরীক ভাষা আমাকে কিছুটা গার্ড মুলারকে স্বরণ করিয়ে দিয়েছিলো। লুকা উভয় পায়ে সমান গতিতে খেলতে পারে। সে জানে, দলের সাথে এবং এককভাবে কীভাবে খেলতে হয়। আমি সেদিন দেখেছিলাম, কী দুর্দান্ত একটি গোল সে করলো। আপনি এটা শিখতে পারবেন না, কারণ এমন গোল দেবার ক্ষমতা রক্তে বহন করতে হয়। বর্তমানেও সে দুর্দান্ত গোল নিয়মিত করে যাচ্ছে।’
মিলিচেভিচের সামনে করা সেদিনের সেই গোল ইয়োভিচের ক্যারিয়ারকে ঘুরিয়ে দেয়। সেদিনের সেই গোলের কারণে ২১ বছর বয়সী লুকা ইয়োভিচ আজ বিশ্বের অন্যতম কাঙ্ক্ষিত স্ট্রাইকার। যাকে দলে ভেড়ানোর জন্য চেলসি, বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যানচেস্টার সিটির মত বড় ক্লাবগুলো আকাশছোঁয়া পরিমাণ অর্থ নিয়ে প্রস্তুত হয়ে আছে।
গাট্টাগোট্টা এবং দ্রুত। এই দুই সক্ষমতা তাকে রোমারিও ও সার্জিও আগুয়েরোর মতো স্ট্রাইকারকে মনে করিয়ে দেয়। বুন্দেসলিগায় ফ্রাঙ্কফুর্টের হয়ে এ মৌসুমে ২৬ ম্যাচে ১৭ গোল করেছেন তিনি। উয়েফা ইউরোপা লিগেও ১০ ম্যাচে ৭ গোল। সম্প্রতি সার্বিয়া জাতীয় দলেও তার অভিষেক হয়ে গেছে। ৩৬ ম্যাচে ২৪ গোল করার জন্য ইয়োভিচ সবার চোখে পড়েনি। যেমন: বার্সেলোনা তাকে ভিন্ন চোখে দেখছে, তার খেলার ধরণের জন্য। বার্সেলোনার ট্যাকটিক্সে এমন একজন স্ট্রাইকারের প্রয়োজন হয়, যিনি সমান তালে গোলের পাশাপাশি গোল সুযোগও তৈরি করবেন, এবং প্রয়োজন হলে নিজের পজিশন ছেড়ে নিচে নেমে দলকে আক্রমণ করতে সহায়তা করবে। ইয়োভিচের খেলার ধরণ ঠিক এমনই। ফ্রাঙ্কফুর্টে মাঝে মাঝেই তাকে দেখা যায়, নিজের পজিশন ছেড়ে মাঝমাঠেও ইয়োভিচ চলে এসেছেন। আর ফুটবলে এসব দক্ষতা নিজের মূল পেশাদারী সময়ের আগেই ইয়োভিচের ভেতর ফুটে উঠছে, যেমনটা সকল তরুণ প্রতিভাবানদের ভেতর সচরাচর দেখা যায় না।
বেজলজিনা থেকে ১০ মাইল দক্ষিণে বাতার নামক গ্রামে ইয়োভিচ বড় হয়েছেন তার বাবা ও বোনের সাথে। তার বাবা এক সময়ে অপেশাদার ফুটবলের সাথে ছিলেন। তিনি সবসময় ইয়োভিচকে প্রণোদিত করতেন ফুটবল দুই পায়ে সমান দক্ষ হতে। শুধু খেলতে নয়, দুই পায়েই শট নেবার দক্ষতা অর্জন করতে। ইয়োভিচ ডান পা দিয়ে শট নিতে পারতেন। তাই ছোটবেলা থেকে বাম পায়েও একই দক্ষতায় শট নেওয়ার প্রশিক্ষণ তার বাবার কাছ থেকে পেয়েছেন। ছোটবেলায় তার আইডল ফুটবলার ছিলো জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ ও রাদামেল ফ্যালকাও। একজন রেড স্টার সমর্থক হয়ে ইয়োভিচ চাইতেন, সেই দলের অ্যাকাডেমিতে খেলার। কিন্তু বেজলজিনা থেকে বেলগ্রেডের ৯০ মাইলের যাত্রা তার পথ কঠিন থেকে কঠিনতর করে তুলছিলো।
মিলিচেভিচের ভাষ্যমতে,
‘শুরুটা তার জন্য সহজ ছিলো না। প্রতিদিন তাকে বেজলজিনা থেকে বেলগ্রেড বাসে করে আসতে হতো এবং একই পথে ফিরতে হতো। ক্যারিয়ারের জন্য, প্রিয় ক্লাবে খেলার জন্য ইয়োভিচ এ বলিদান দিতে রাজি হয়েছিলেন। পাশাপাশি তার পরিবার বিশেষ করে ইয়োভিচের বাবা তার পাশে সবসময় ছিলেন। তার পরিবারের অবস্থা খুব ভালো ছিল না। তবে ইয়োভিচের পরিশ্রম দেখে আমি নিশ্চিত ছিলাম, সে করতে পারবে।’
স্লাভিসা স্টয়োনাইয়েভিচ রেড স্টারের কোচের চেয়ারে বসেন ২০১৩ সালের জুন মাসে। কোচের দায়িত্বে আসার পরই ক্লাবের উপর মহল থেকে নির্দেশ আসে ক্লাবে যে তরুণ এক ঝাঁক ফুটবলার আছে, তাদের উপর বিশেষ নজর রাখতে। ইয়োভিচের প্রতিভার কথা তখন বেলগ্রেড ফুটবল বৃত্তের বাইরে পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে গেছে। স্টয়োনাইয়েভিচ প্রায় সময় নিজেকে আবিষ্কার করতেন স্থানীয় সংবাদ প্রত্রিকার সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে। তাদের একটিমাত্র প্রশ্ন, কেন ইয়োভিচকে মূল দলে অভিষেক করানো হচ্ছে না!
ইয়োভিচের মূল দলে অভিষেক হয় ২০১৪ এর প্রথম দিকে। তবে অভিষেক হবার পরও কিছু পুরনো অভ্যাস ও আচরণের জন্য ইয়োভিচ প্রথমে কোচের কুনজরে পড়ে যান। ইয়োভিচকে নিয়ে স্টয়োনাইয়েভিচ বলেছেন,
‘সে দারুণ একজন খেলোয়াড় ছিল। তার প্রচন্ড গোলক্ষুধা, যা প্রকৃতিগত একটি উপহার। কিন্তু অনুশীলনের সময় সে খুবই ধীরগতিতে কাজ করতো, মনে হতো অবসাদ তাকে জাপটে ধরে আছে। এবং এসবের জন্য আমি কিঞ্চিত বিরক্ত হতাম।’
আসলে ক্যারিয়ারের শুরুতে ইয়োভিচ মনোযোগী ছাত্র ছিলেন না। খেলাকে তিনি শুরু থেকেই ভালোবাসতেন। কিন্তু তার কিছু অভ্যাসের কারণে তাকে অনেকেই পছন্দ করতো না। ২০১৪ সালের শুরুতে যখন তার অভিষেক হয়, ইয়োভিচের চুল কিছুটা বড় ছিল। অনুশীলনের সময়েও সে চুল ঠিক করতে ব্যস্ত হয়ে যেতেন, যা দেখে কোচ পর্যন্ত বিরক্তবোধ করতেন। একজন খেলোয়াড়ের একটি নির্দিষ্ট খাদ্যভাসের মধ্যে দিয়ে চলতে হয়। কিন্তু ইয়োভিচ ছিলেন উল্টো, তার লকারে প্রায় সময়ই চকেলেট ও চিনি জাতীয় খাবার অধিক পরিমাণে পাওয়া যেত, যা তার খাদ্যাভাসের তালিকাতেই নেই। সে সময় এ ধরণের খাবার তার খুবই পছন্দের ছিল।
২০১৪ সালে যখন ইয়োভিচের অভিষেক হয়, তখন রেড স্টার সার্বিয়া লিগ জেতার খুবই কাছে। পরবর্তীতে তিন ম্যাচ হাতে রেখেই তারা লিগ জিতে নেয়। তাই ভয়োদোদিনার বিপক্ষে খেলার জন্য তারা নোভি সাদ যাত্রা করেছিল দলের অনেককে রেখেই।
৭৩ মিনিটে যখন রেড স্টার ৩-২ গোলে পিছিয়ে স্টয়োনাইয়েভিচ তখন লুকা ইয়োভিচকে মাঠে নামান। তিন মিনিট পর নিলস নিঙ্কোভিচের পাস বুক দিয়ে নিয়ন্ত্রণে এনে দলকে ৩-৩ গোলের সমতায় আনেন। এ গোলটির সময় তার বয়স ছিল ১৬ বছর ৫ মাস ৫ দিন, যা দেয়ান স্টানকোভিচের করা গোলটির রেকর্ড ভেঙে দেয় ও ইয়োভিচ হন রেড স্টারের নতুন সব থেকে কম বয়সে গোল করা খেলোয়াড়।
স্টয়োনাইয়েভিচ পরে ব্লিচার রিপোর্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন,
‘ঐ গোলের পর আমি ইয়োভিচকে কয়েকটি কথা বলেছিলাম। আমি বলেছিলাম, ফুটবলকে উপভোগ করো, এখানে ভয়ের কিছুই নেই। আমি নিশ্চিত, তুমি যদি বক্সের ভেতর সুন্দর একটি সুযোগ পাও, তুমি অবশ্যই গোল করবে। আমার এবং তার জন্য সেটি একটি দারুণ মুহূর্ত ছিল।’
খুব তাড়াতাড়ি ইয়োভিচ ৪০ থেকে জার্সি নম্বর ৯ বেছে নেন, এবং রেড স্টার বেলগ্রেড ক্লাবের একাদশের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠেন। পরবর্তী দুই মৌসুমে ক্লাবের মূল দলের সাথে থেকে তিনি ১২ গোল করেন। ২০১৬ সালে ক্লাব অর্থগত কিছু সমস্যার সম্মুখীন হয়, তাই সে বছর ৬.৬ মিলিয়নের বদলে ইয়োভিচ পাড়ি জমান পর্তুগালের ক্লাব বেনফিকায়। সেখানে নেমানিয়া ম্যাটিচ, রজার মার্কোভিচের মত সার্বিয়ানরা ক্যারিয়ার গড়ে নিয়েছেন। কিন্তু স্টাদিও দা লুজে ইয়োভিচের ক্যারিয়ার থমকে যায়।
হুট করে আসা ইয়োভিচের জন্য দলে প্রথম একাদশে জায়গা করে নেওয়া কষ্টকর ছিল। বেনফিকায় তখন কসতাস মিতোগ্লু, রাউল গিমেনেজ, জোনাসকে সরিয়ে ইয়োভিচকে খেলানোর কোন প্রশ্নই আসে না। তাই পর্তুগালে তার অধিকাংশ সময় কেটেছে বেঞ্চে। বেনফিকার হয়ে মাত্র ২ ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন তিনি, তাও বেঞ্চ থেকে।
পরের বছরই ইয়োভিচ লোনে যান জার্মান ক্লাব আইনট্রাখ্ট ফ্রাঙ্কফুর্টে। চুক্তি অনুসারে খেলোয়াড় পছন্দ হলে ফ্রাঙ্কফুর্ট লোন শেষে নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে তাকে কিনে নিতে পারবে। গত বারো মাসে তার জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এসেছে অনেক। খেলেছেন মাত্র ২ ম্যাচ। তাই ফ্রাঙ্কফুর্টে তেমন আশা ছিল না তাকে নিয়ে। কিন্তু ইয়োভিচ যখন তাদের ক্যাম্পে যোগ দেন, ক্লাবের ম্যানেজমেন্টের ধারণা পাল্টে যায়।
তবে ইয়োভিচ ফ্রাঙ্কফুর্টে এসেছিলেন ক্রোয়েশিয়ান কোচ নিকো কোভাচের ডাকেই। তিনিই ক্লাবের বোর্ডকে বলেছিলেন ইয়োভিচকে জার্মানিতে আনতে। কোভাচ ইয়োভিচের ‘টাস্কমাস্টারে’ পরিণত হন। তিনি ইয়োভিচকে বুঝতে চেষ্টা করেন, তার খেলার ধরন আয়ত্তে এনে ধীরে ধীরে তাকে আবার ফুটবলের সংস্পর্শে নিয়ে আসেন, যা ইয়োভিচ বেনফিকায় থাকতে হারিয়ে ফেলেছিল।
লুকা ইয়োভিচ নিজেই বলেছেন,
‘নিকো আমাকে জাগিয়ে তুলেছে। আমি ফ্রাঙ্কফুর্টে এসে ১ মাসে যতটা দৌঁড়িয়েছি, পুরো ১২ মাসে পর্তুগালেও ততটা দৌঁড়াইনি।’
তবে কোভাচ ইয়োভিচকে খোসল থেকে বের করে আনলেও প্রায় সময়ই তাকে বেঞ্চে রাখতেন। তাই তিনি বায়ার্ন মিউনিখের কোচ হয়ে চলে যাবার পর ফ্রাঙ্কফুর্টের নতুন কোচের আসনে বসেন আদি হুটার। তিনি এসে ফ্রাঙ্ক্রফুর্টের খেলার ধরণ বদলে দেন। ৩-৪-১-২ ফর্মেশনে সবার উপরে রাখেন ইয়োভিচ ও আন্তে রেবিচকে, যেখানে মাঝে তবে আক্রমণের একটু নিচে সেবাস্টিয়ান হ্যালারকে দিয়ে তৈরি করেন ফ্রাঙ্কফুর্টের ভয়ঙ্কর আক্রমণত্রয়ী। যারা গত মৌসুমের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৮০টি গোল করে ফেলেছে তারা, এবং ইয়োভিচ নিজে করেছেন গড়ে ১০২ মিনিটে ১টি করে গোল।
ফ্রাঙ্কফুর্টে স্থানীয় ফুটবল সম্পর্কিত সাংবাদিক হুলিয়ান ফ্রাঙ্কিজ বলেছেন,
‘আমি জানি না, এমন খেলোয়াড় ফ্রাঙ্কফুর্টের ইতিহাসে আগে ছিল কি না। আমি বলতেও পারবো না, তার মতো আরও একটি ফুটবলারকে ফ্রাঙ্কফুর্টের সমর্থকরা আবার দেখাতে পারবে কি না।’
চিলির বিপক্ষে গত বছর ইয়োভিচের সার্বিয়া জাতীয় দলে অভিষেক হয়। ব্রাজিলের বিপক্ষে গ্রুপ স্টেজে ৮৯ মিনিটের পর নেমে বিশ্বকাপে খেলার স্বাদও পেয়ে যান গত বছরই। সার্বিয়া দলে এখন পরিচিত মুখ তিনি। জার্মানির বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচেও দলে ছিলেন। ইউরো ২০২০ বাছাইপর্বে পর্তুগালের বিপক্ষে ম্যাচটিও খেলেছেন তিনি।
চলতি মৌসুম প্রায় শেষের দিকে। ২০১৯ গ্রীষ্মকালীন দলবদল শুরু হয়ে যাবে খুব দ্রুতই। সেখানে নিজের ভবিষ্যৎ খুঁজে নিতে ব্যস্ত হবেন ইয়োভিচ। তবে নিজের ভবিষ্যৎ ঠিকানার সম্ভাবনা তিনি নিজেই বলে দিয়েছেন। ওয়ার্ল্ড স্কোয়ার ডাইজেস্টে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজে স্বীকার করেছেন,
‘আমি নিজে প্রিমিয়ার লিগের সমর্থক নই। তারা যেভাবে ফুটবল খেলে, তা আমি পছন্দ করি না। আমি জার্মানিতে খেলে যেতে চাই। আর যদি সুযোগ হয়, স্পেন ও ইতালিতে খেলার সম্ভাবনা আছে।’
তাই ম্যানচেস্টার সিটি বা চেলসির মতো দল তাকে দলে ভেড়াবার পরিকল্পনা করলে তাদের হতাশই হতে হবে।
জার্মানি হোক বা স্পেনের কোনো দল, বেনফিকায় থাকা ইয়োভিচকে আর কখনও পাবার সম্ভাবনা নেই। বর্তমানে নিজের ক্যারিয়ার সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন তিনি। বদঅভ্যাসগুলো ঝেড়ে ফেলেছেন, জীবন নিয়ে ভাবতে শিখেছেন। ২১ বছর বয়সেই জীবন সম্পর্কে এমন সচেতনতাগুলোর জন্যই রঙিন ভবিষ্যৎ হাতছানি দিয়ে ডাকছে লুকা ইয়োভিচকে।